কাগজি লেবুর সময়টি বর্ষাকাল, তবে শীতের মৌসুমেও বাজারে গেলে অনেক বিক্রেতার কাছেই মেলে দেশি জাতের এই লেবু।
সেটা কী করে সম্ভব?
কাগজি জেনে যে লেবু কিনছেন সেটা কতটা খাঁটি, ঠকার সম্ভাবনাই বা কতটা- সেই প্রশ্ন নিয়ে এবার লেবুর পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে নিউজবাংলার টিম।
কারওয়ানবাজারের লেবু ব্যবসায়ী মো. ইব্রাহিম জানান, কাগজি লেবুর নামে প্রতারণা চলছে অহরহ। এজন্য দেখে এবং যাচাই করে কেনার পরামর্শ তার।
ইব্রাহিম বলেন, ‘আগেরথে (আগে থেকে) যারা খায়া আসছে তারা চিনব। কাগজির একটা আলাদা সেন্ট আছে, নতুন যারা দোকানদার তারা বেশি লাভের জইন্য কাগজির নতুন সংস্করণডা দিয়া দেয়। কাস্টমার এগুলা খাইতে যাইয়া যখন দ্যাখে কাগজির সাথে অ্যাডজাস্ট হইচ্ছে না, তখন অরজিনাল কাগজি নিয়া ধন্ধে পড়ি যায়, বিশ্বাস করতি পারে না।’
আসল কাগজি লেবুর নতুন সংস্করণ কোনটা- সেটা জানালেন আরেক ব্যবসায়ী মো. জামাল উদ্দিন।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘টাঙ্গাইলের নতুন ফলন বাজারে কাগজি লেবু নামে চলে। সাইজে, দেখতে একরকম হইলেও কাডলে বোঝা যাইবো, সেন্টেরও ব্যাপার আছে। যেইডা অরিজিনিয়াল কাগজি, ওইডার মধ্যে বিচি থাকে। যেগুলা টাঙ্গাইলা লেবু সেগুলার মধ্যে বিচি থাকে না। এছাড়া বাইরে থেইকা চেনার উপায় নাই।’
ফলে দেখা যাচ্ছে, খুব দক্ষ না হলে চেহারা দেখে আসল কাগজি বেছে নেয়া সত্যিই কঠিন। বর্ষার সময় ছাড়া বাজারে কাগজি আসেও কম, তাই এ সময়ে ভেজালের আশঙ্কা বেশি।
ব্যবসায়ী ইব্রাহিম বলেন, ‘কাগজির ফলনটা হই্লো খুব স্লো, কম ধরে। কাগজির সিজন হইলো বর্ষাকাল। যত দিন যাবে, কাগজি ধরা বন্ধ হই যাবে। একটা বাগানের মধ্যে দেখা যাবে ১০ হালি ১৫ হালি ২০ হালি। এগুলা ভাঙতে (গাছ থেকে তুলতে) বেশি লোক, কস্টিং খরচটা বেশি লাগে।’
কাগজি ছাড়াও বাজারে এলাচি লেবু বেশ জনপ্রিয়। তবে এ লেবু বেশি কেনেন হোটেল ব্যবসায়ীরা।
এলাচি লেবুর পাইকারি বিক্রেতা মো. আবুল কাশেম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কাগজি ছুডো, রসও কম। আর এলাচিতে রস-টস বেশি, সাপ্লাই চলে বেশি। এডির লগে অন্যগুলা মিলায়া হোটেলে খাওয়াইতে পারে।’
তিনি জানান, এলাচির মধ্যে বিচি নাই এবং এটা বেশি টক।
লেবুর দাম
প্রতি পন এলাচি লেবুর পাইকারি দাম ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। এক পনে ৮০টি লেবু থাকে। চট্টগ্রাম এবং সিলেটে এই লেবুর উৎপাদন বেশি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
কাগজির দাম কতো জানতে চাইলে ইব্রাহিম নিউজবাংলাকে জানান, ‘কাগজির মাথি মানে বড়গুলার পন ৬০০-৭০০ টাকা। ঢাকায় কাগজি লেবুর চালান বেশি আসে রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও টাঙ্গাইলের মধুপুর থেকে।
লেবুর দাম সাইজের ওপর নির্ভর করে বলে জানান ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘এখন লেবুর দাম বেশি, সিজন নাই, সামনে আরও দাম বাড়বে, বর্ষায় দাম কম থাকে।’
বাসায় লেবু সংরক্ষণের উপায় বাতলে দিয়ে তিনি বলেন, ‘মাডিতে রাখলে বাতাস না রাখলে সাপ্তাখানেক থাকে, ফ্রিজে রাখলে লাল হইয়া যায়। আমরা পলিথিন পেচাইয়া রাইখা দি। তাতে সাপ্তাখানেক টাটকা থাকে।’