বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বায়োফ্লকে মাছ চাষে বাম্পার

  •    
  • ১৯ নভেম্বর, ২০২০ ১০:০৮

পাশাপাশি তিনটি ১৩ ফুট প্রস্থের ও সাড়ে তিন ফুট গভীর পানি ভর্তি চৌবাচ্চা বা হাউজে করা হচ্ছে মাছ চাষ। প্রতিটি হাউজে প্রায় ১০ হাজার লিটার পানি ধরে। তাতে নানা প্রজাতির ও বিভিন্ন আকারের মাছের পোনা ছাড়া হয়।

সীমিত জায়গা ও স্বল্প খরচে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন পাবনার তিন বন্ধু। এক বছরেই তারা লাভের মুখ দেখেছেন। এখন তারা অন্যদের অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছেন।

তিন বন্ধু হলেন মো. কবির, মাসুদ রানা ও কবিরুজ্জামান। বাড়ি পাবনা সদর উপজেলার কাশিপুর গ্রামে।

পাশাপাশি তিনটি ১৩ ফুট প্রস্থের ও সাড়ে তিন ফুট গভীর পানি ভর্তি চৌবাচ্চা বা হাউজে করা হচ্ছে মাছ চাষ। প্রতিটি হাউজে প্রায় ১০ হাজার লিটার পানি ধরে। তাতে নানা প্রজাতির ও বিভিন্ন আকারের মাছের পোনা ছাড়া হয়।

প্রতিটি চৌবাচ্চায় একাধিক পাইপের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে মাছ চাষের এই পদ্ধতির নাম বায়োফ্লক।

এ প্রযুক্তিতে উপকারী ব্যাকটেরিয়া মাছের অব্যবহৃত খাদ্য, মল-মূত্র থেকে নিঃসৃত অ্যামোনিয়াকে ব্যবহার করে অণুজীব প্রোটিনে রূপান্তর করে। তাই বাড়তি খাবার খরচ অতি কম। পাশাপাশি খাদ্য অপচয় রোধ হয়।

যেখানে প্রচলিত পদ্ধতিতে মাছ চাষে ৬০ ভাগ খরচই হয় খাবারের পেছনে, সেখানে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে কার্বোহাউড্রেট ও প্রোবায়োটিক সরবরাহই যথেষ্ট।

এক বছর আগে ইউটিউবে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ দেখে ভারতে গিয়ে এ বিষয়ে ধারণা নিয়ে আসেন মাসুদ রানা। পরে তারা তিন বন্ধু মিলে শুরু করেন এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ।

নিজের অভিজ্ঞতার বিষয়ে মাসুদ রানা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইউটিউব দেখে আমি সর্বপ্রথম শুরু করি। যখন আমি এটা শুরু করি, তখন বাংলাদেশে এটা আমি পাইনি।

‘ইন্ডিয়ান প্রতিবেদন দেখার পরে আমি সেখানে যাই। অনেক কিছু জেনে দেশে ফিরে এসে মাছ চাষ শুরু করি। প্রায় বছরখানেকের মধ্যে দুটি চালান হারভেস্ট করেছি। মোটামুটি একটা লাভজনক ব্যবসা।’

মাত্র তিন থেকে চার মাসের মধ্যে মাছগুলো বিক্রি করা যায়। এ পদ্ধতিতে মাছ চাষে লাভও হয় বেশি।

আরেক বন্ধু কবিরুজ্জামান বলেন, তারা চারটি চৌবাচ্চায় মাছ চাষ শুরু করেন। প্রতিটি চৌবাচ্চার জন্য ৩২ হাজার টাকা খরচ হয়। চার মাস পর প্রতিটি চৌবাচ্চার মাছ বিক্রি করেন ৬০ হাজার টাকায়। তাতে গড়ে চারটিতে এক লাখ ২০ হাজার টাকা লাভ হয়।

তিনি বলেন, ‘মাছ ছাড়ার চার মাসেই এটা বিক্রি করার উপযোগী হয়। খুবই কম পয়সায় বেকার যুবক যারা আছেন, তারা পড়াশোনার পাশাপাশি এটা করতে পারেন।’

মাসুদ রানা বলেন, তাদের তিন বন্ধুর চাষ দেখে আরও অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তারাও তরুণ উদ্যোক্তাদের অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছেন।

নতুন উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে বর্তমান সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে আগ্রহী ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সার্বিক সহযোগিতা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুর রউফ বলেন, ‘কেউ যদি মাছ চাষে আগ্রহী হয়, তাহলে আমরা তাদের প্রশিক্ষণ দেব। তাদের নানা সহযোগিতা দেব। কারিগরি জ্ঞান দিয়ে তাদের সহযোগিতা করব।’

উদ্যোক্তাদের জন্য তার দোয়ার খোলা জানিয়ে জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ বলেন, ‘তাদের বলছি ২৪ ঘণ্টা আমার দরজা খোলা। তোমরা আমার কাছে আসো।

‘তবে এই মাছ চাষটি নতুন। শহরেও কেউ কেউ এটা করে সফল হয়েছেন। পাবনায় যারা এই উদ্যোগ গ্রহণ করবে, জেলা প্রশাসন তাদের পাশে থাকবে।’

এ বিভাগের আরো খবর