ঘূর্ণিঝড় বুলবুল, আম্পানসহ পরপর কয়েকটি দুর্যোগের পর নিম্নচাপের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিতে গত মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। তবে এবারের বৃষ্টিকে আশীর্বাদ বলছেন খুলনা অঞ্চলের চাষিরা।
স্থানীয় কৃষক ও কৃষি অফিস জানায়, এখন ক্ষেতে ধানের থোড় বা মোচা বের হয়েছে, এ সময়ের বৃষ্টি ধানের উৎপাদন বাড়বে।
বটিয়াঘাটার কৃষক বাদল রায় জানান, ‘১২ বিঘা জমিতে আমন আবাদ করেছেন। ধানের গোছা ভালো হয়েছে। তবে শঙ্কায় ছিলেন মোচায় মাজরা পোকার আক্রমণ নিয়ে।’
তিনি বলেন, ‘দিন কয়েক আগে থেকে জমিতে মাজরা পোকার আক্রমণ দেখতে পাই। কয়েকদিনে বৃষ্টিতে পোকার আক্রমণ কমেছে। এতে ধানের উৎপাদন ভাল হবে।’
বটিয়াঘাটা উপজেলার আরেক কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘গত বছর কারেন্ট পোকার আক্রমণে বিঘাপ্রতি এক মণ ধানও পাইনি। বৃষ্টিতে কারেন্ট পোকা থাকে না। এবারের বৃষ্টি আমাদের জন্য আশীর্বাদ।’
বটিয়াঘাটা এলাকা স্থানীয় জাতের ধানের জন্য বিখ্যাত। এবার মিজানুর রহমান ২০ বিঘা জমিতে বাশফুল বালাম, রানী সেলুট, চিনি খানাই ও জটাই ধানের আবাদ করেছেন। তিনি ১২ বিঘাতেই করেছেন রানী সেলুট ধানের আবাদ।
উপজেলার গুপ্তমারী গ্রামের কৃষক রনজিত কুমার রায় জানান, গত বছর চার বিঘা জমিতে ধান আবাদ করলেও পোকার আক্রমণে নষ্ট হয়ে যায়।
তিনি এবার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলশীমালা জাতের ধান বীজ সংগ্রহ করে আবাদ করেন। বৃষ্টিতে ধানের ফলন ভালো হবে বলে আশা করছেন তিনি।
বটিয়াঘাটা উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হাই নিউজবাংলাকে বলেন, গত বছর উপজেলায় ১৭ হাজার চারশ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ হয়েছিল। এ বছর আরও দুইশ হেক্টর জমিতে আবাদ বেড়েছে।তিনি বলেন, ‘গত বছর ধানের থোড় আসার পরেই পোকার আক্রমণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এবারও পোকার আক্রমণের খবর পেয়েছি। তবে আশার কথা, বৃষ্টিতে পোকার মরেছে।’
খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক হাফজুর রহমান বলেন, এই বৃষ্টিতে শীতের আগাম সবজির ক্ষতি হলেও ধানের জন্য খুব উপকার হয়েছে।