মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষা ও জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ড পরিহার করলে আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ সরকারকে স্বীকৃতি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।
সংবাদমাধ্যমের এক প্রশ্নের উত্তরে রোববার তিনি এ কথা বলেন।
পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, চীন তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত এমন খবর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে ব্লিনকেনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ সরকার যদি মানুষের মৌলিক অধিকার সমুন্নত রাখে ও জঙ্গিবাদকে আশ্রয় না দেয়, তাহলে আমরা স্বীকৃতি দিয়ে তাদের সঙ্গে কাজ করতে পারি।’
একই সঙ্গে যুক্ত করেন, ‘যে সরকার তার নারী ও মেয়েদের মৌলিক অধিকার রক্ষা করে না, যদি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আশ্রয় দেয় তবে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশগুলো যে স্বীকৃতি দেবে, এটা সহজেই ভেবে নেয়া যাবে না।’
আমেরিকার শীর্ষ কয়েকজন কূটনীতিক যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন চ্যানেলে রোববার মন্তব্য করেছেন, তালেবানরা যেভাবে কাবুলে প্রবেশ করেছে তাতে দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি তাজিকিস্তানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।
ব্লিনকেন সতর্ক করে বলেন, “তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকারকে ‘আন্তর্জাতিক সহায়তা সহজেই দেয়া হবে না; তাদের ওপর আরোপ করা অরবোধ ওঠানো হবে না, তাদের ভ্রমণ সীমিত করে দেয়া হবে’ যদি তারা মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত না করে এবং সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেয়।’
যখন সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী বলেন, তিনি আফগানের নতুন সরকারকে স্বীকৃতি না দেয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছেন বিবৃতিতে।
তখন ব্লিনকেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব আমাদের কূটনৈতিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক যেসব বিষয় রয়েছে এগুলোর ব্যবহার করা। এটা নিশ্চিত করা যে, সে অধিকারগুলো টিকিয়ে রাখা হয়েছে।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, যদি তালেবানরা এসব অধিকার রক্ষা না করে তবে তাদের একটা বড় ধরনের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
সে সময় সিএনএন-এর সাংবাদিক জ্যাক ট্যাপার ব্লিনকেনকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সম্প্রতি দেয়া বিবৃতির কথা মনে করে দেন। বলেন, ‘‘বিবৃতিতে জো বাইডেন বলেছিলেন সহজেই কাবুল সরকার পরাজিত হবে না। প্রেসিডেন্ট এত বড় ‘ভুল’ করলেন কীভাবে?’’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিনকেন বলেন, ‘আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র তার লক্ষ্য পূরণ করেছে। ২০০১ সালের ৯/১১ হামলায় দায়ী ওসামা বিন লাদেনকে ২০১১ সালে হত্যা করা হয়েছে, আল-কায়েদাকে পরাজিত করেছে, এখন সময় হয়েছে আফগান ত্যাগ করার।’
আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো তাদের সেনা প্রত্যাহারের পর দেশটির অধিকাংশ প্রাদেশিক রাজধানী ও শহর দখল করে নেয় তালেবান যোদ্ধারা।
রোববার দেশটির রাজধানী কাবুল দখল করে। প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ দখল করে নেয় তালেবান। তার আগে কাবুল ঘিরে ফেলে ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু করেন তালেবান ও আফগান নেতারা।
এরই মধ্যে দেশ ছেড়ে তাজিকিস্তান পালিয়ে যান আফগান রাষ্ট্রপতি আশরাফ ঘানি ও তার সহযোগীরা। সেই সঙ্গে কাবুল বিমানবন্দরে হাজার হাজার আফগান দেশ ছাড়ার জন্য ভিড় করছেন।