ব্যাংক খাতে দাম বৃদ্ধির পর দিনই পতনের ধারাবাহিকতা থেকে বের হতে পারল না চাঙা পুঁজিবাজারও। বস্ত্র খাতে। তালিকাভুক্ত ৩৬ মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে প্রথমটির লভ্যাংশ চমৎকৃত করলেও এই খাতেও দরপতনে তৈরি হয়েছে বিস্ময়।
তবে সবচেয়ে বড় বাজার মূলধনের ব্যাংক খাতে দরপতনেও লভ্যাংশের অপেক্ষায় থাকা প্রধান প্রধান খাত বস্ত্র, প্রকৌশল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, ওষুধ ও রসায়ন এবং খাদ্য ও আনুষঙ্গিকের পাশাপাশি তথ্য প্রযুক্তির চাঙাভাবে টানা পঞ্চম দিনের মতো বাড়ল পুঁজিবাজার।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার বিমা খাতের শেয়ারধারীদেরকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে। টানা প্রায় দুই মাস ধরে সংশোধনের মধ্যে কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে এই খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্সের অবস্থান এখন সাড়ে ছয় হাজার পয়েন্টের ঘর ছাড়িয়ে যাওয়ার পথে। সূচকের অবস্থান এখন ২০১১ সালের ২৭ জুলাইয়ের পর সর্বোচ্চ। সেদিন সূচক ছিল ৬ হাজার ৬২৭ পয়েন্ট। সেখান থেকে ৩১ পয়েন্ট কমে শেষ হয়েছে আজকের লেনদেন।
তখন অবশ্য ডিএসইএক্স সূচক ছিল না, সে সময় সূচকের নাম ছিল ডিএসই সূচক। ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি চালু হয় ডিএসইএক্স সূচক।
এই ডিএসই ও ডিএসইএক্স সূচকের তুলনা করলে দেখা যায়, চালুর দিন ডিএসইএক্স সূচক ছিল ৪ হাজার ৫৫। তবে সেদিন ডিএসই সূচকের মানদণ্ডে তা ছিল ৪ হাজার ১৭১ পয়েন্ট।
সূচক ৬০ পয়েন্ট বৃদ্ধি পাওয়ার দিন লেনদেনেও দেখা গেছে ঊর্ধ্বগতি। প্রায় দুই মাস পর লেনদেন আবার ছাড়াল আড়াই হাজার কোটি টাকার ঘর। এর আগে গত ১০ জুন ২ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা আর তার আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এই লেনদেন ছিল ২০১০ সালের মহাধসের পর সর্বোচ্চ।
আগের কর্মদিবস মঙ্গলবার ব্যাংক খাতের উত্থান আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসে। ২০২০ সালে অর্থবছরে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা নগদ লভ্যাংশ, চলতি বছর আরও বেশি মুনাফা করে আলোচনায় থাকা এই খাতটির ঝিমিয়ে থাকার মধ্যে সেদিন ৩১টি কোম্পানির সবগুলোর দাম বৃদ্ধি ঘটে।
পুঁজিবাজারের চাঙাভাবের মধ্যে এই খাতটির শেয়ার দর অবমূল্যায়িত বলেই ধারণা করা হয়। এর আগে গত ২৭ মেও একই দিন সব কটি কোম্পানির দাম বৃদ্ধির চিত্র দেখেছিল পুঁজিবাজার। সেদিনও এই খাতের বিনিয়োগকারীরা আশাবাদী হয়ে উঠেন যে, খাতটি হয়ত ভালো করবে। কিন্তু পরের দিনেই দাম কমে যায় আর ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে ২০টির দামই এখন সেই ২৭ মের দামের চেয়ে কমে।
ব্যাংক খাতে কোনো একদিন দাম বৃদ্ধি পেলেও পরে তা ধরে রাখতে না পারার এই বিষয়টি ঘটল আবার। এদিন ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে আটটির দাম বেড়েছে নগণ্য পরিমাণে। এর বিপরীতে কমেছে ১৭টির দর। শতকরা হিসেবে দাম খুব বেশি কমেছে এমন নয়, তার পরেও দ্বিগুণ সংখ্যক শেয়ারের দাম হারানো নিশ্চিতভাবেই হতাশ করেছে এই খাতের বিনিয়োগকারীদের। বাকি ৬টি ব্যাংক দাম ধরে রাখতে পেরেছে।
মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। এই খাতের প্রথম কোম্পানি হিসেবে এনএলআই ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড চলতি বছরের জুনে সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ইউনিট প্রতি ১ টাকা ৭৫ পয়সা লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এই লভ্যাংশ পুঁজিবাজারের অন্য খাতের কোম্পানির এর চেয়ে কিছুটা বেশি হারে লভ্যাংশের চেয়ে ভালো। কারণ, ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত লভ্যাংশের জন্য কর দিতে হয় না বিনিয়োগকারীদের, যেখানে অন্য খাতে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ আয়কর কেটে রাখা হয়।
এই খাতের ৩০টি ফান্ডের লভ্যাংশ ঘোষণা এখন সময়ের ব্যাপার। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই আসছে আরেও ১৩টির ঘোষণা।
ফান্ডগুলো চাঙা পুঁজিবাজারে গত এক বছরে রেকর্ড পরিমাণ মুনাফা করেছে। আর এখন লভ্যাংশ সব বিতরণ করতে হয় নগদে ফলে বেশ ভালো লভ্যাংশের আশা করা হচ্ছে।
এনএলআই দেখিয়েছে এবার লভ্যাংশ কেমন হতে পারে, কী নীতিমালায় হবে। তারা চমৎকৃত করার পর লেনদেনের শুরুতে এই খাতটি চাঙা হয়েছিল বটে, কিন্তু শেষ বেলায় দর হারিয়ে বসে বেশিরভাগ ফান্ড।
দিন শেষে ১১টি ফান্ডের দর বৃদ্ধির বিপরীতে মূল্য হারায় ১৩টি। দর ধরে রাখে বাকি ১২টি। এর মধ্যে লভ্যাংশ ঘোষণা করা এনএলআই এর দাম কমেছে ইউনিটপ্রতি ৬০ পয়সা।
টিকল না ব্যাংকের বাড়তি দর
আগের দিন সব কটি ব্যাংকের দাম বাড়ার কারণে এই খাতটি নিয়ে যে আগ্রহ তৈরি হয়েছিল, তাতে ধাক্কা লাগল দ্বিতীয় দিনই। বেশিরভাগ শেয়ারের দাম কমার পাশাপাশি লেনদেনও অর্ধেক হয়ে গেছে।
যদিও দাম বৃদ্ধি ও কমার হার খুব একটা বেশি না। সবচেয়ে বেশি কমা এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ার দর হারিয়েছে ২.৩৯ শতাংশ। শেয়ার দর ২৯ টাকা ২০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ২৮ টাকা ৫০ পয়সা।
রূপালী ব্যাংকের শেয়ার দর ৩২ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ২.১৪ শতাংশ কমে হয়েছে ৩১ টাকা ৯০ পয়সা।
আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর ২ শতাংশ কমে ৫ টাকার শেয়ার দিন শেষে হয়েছে ৪ টাকা ৯০ পয়সা।
ইউসিবি ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ১.৮১ শতাংশ। শেয়ার প্রতি দর ১৬ টাকা ৫০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ১৬ টাকা ২০ পয়সা।
ডাচ বাংলা ব্যাংকের শেয়ার দর ৮৫ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ১.৭৪ শতাংশ কমে হয়েছে ৮৪ টাকা ৪০ পয়সা।
ব্যাংক এশিয়ার শেয়ার দর কমেছে দেড় শতাংশ। শেয়ার প্রতি দর ২০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ১৯ টাকা ৭০ পয়সা।
এ তালিকায় আছে ওয়ান ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক।
এদিন দর বৃদ্ধি পাওয়া ব্যাংকের তালিকায় ছিল ব্র্যাক ব্যাংক, যার শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে দশমিক ৪০ শতাংশ। উত্তরা ব্যাংকের শেয়ার দরও বেড়েছে একই হারে। ট্রাস্ট ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে দশমিক ৮৫ শতাংশ। ব্যাংকটির শেয়ার দর ৩৫ টাকা ২০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৫ টাকা ৫০ পয়সা।
এই খাতে হাতবদল হয়েছে মোট ১১৮.৭০ কোটি টাকা যা আগের দিন ছিল ২৪৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ লেনদেন কমেছে ১২৮ কোটি টাকার মতো।
আগ্রহের কেন্দ্রে তিন খাত
এদিন যত লেনদেন হয়েছে তার ৪৩.৮২ শতাংশই হয়েছে তিনটি খাতে। এগুলো হলো বস্ত্র, প্রকৌশল এবং ওষুধ ও রসায়ন।
এই তিনটি খাতের ১১৪টি কোম্পানির অর্থবছর শেষ হয়েছে। যদিও একটি অংশের কোম্পানির উৎপাদন বন্ধ বা লোকসানে আছে, তার পরেও এসব কোম্পানিকে ঘিরে আগ্রহের শেষ নেই। কারণ, এগুলোর বোর্ড পুনর্গঠন করে আবার চালু করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আবার যেগুলো মুনাফায় আছে, সেগুলোর বেশিরভাগ করোনার মধ্যেও বেশ ভালো মুনাফা করেছে।
এই তিন খাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বস্ত্র খাতে ৩৯৮ কোটি ২০ টাকা। আগের দিন এই খাতে হাতবদল হয়েছিল ২৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকা। এক দিনেই লেনদেন বেড়েছে ১২২ কোটি ১০ লাখ টাকা।
১০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানির অর্ডার পাওয়ার পর গত সোমবার এই খাতে উত্থান দেখা দিলেও মঙ্গলবার ঘটে দর পতন। বুধবার ব্যাংক বন্ধ থাকায় পুঁজিবাজারে লেনদেন ছিল বন্ধ। আর এই বিরতির শেষে সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ এই খাতেই।
দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটি ছিল বস্ত্র খাতের ঢাকা ডাইং, যার শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ১০ শতাংশ, দাম ২৪ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২৬ টাকা ৪০ পয়সা।
অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের দর ৯.৮৭ শতাংশ বেড়ে শেয়ার দর ১৬ টাকা ২০ পয়সা থেকে হয়েছে ১৭ টাকা ৮০ পয়সা।
সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের দর ৯.৮১ শতাংশ বেড়ে ২১ টাকা ৪০ পয়সা থেকে হয়েছে ২৩ টাকা ৫০ পয়সা।
মালেক স্পিনিং মিলসের দর ৩০ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ৯.৭০ শতাংশ থেকে হয়েছে ৩৩ টাকা ৯০ পয়সা।
৫৮টি কোম্পানির মধ্যে ছয়টির দর কমেছে, পাল্টায়নি চারটির, বেড়েছে বাকি ৫৮টির।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে প্রকৌশল খাতে ৩৭৭ কোটি ২০ লাখ টাকা। আগের কর্মদিবসে যা ছিল ৩১২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।
এই খাতে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বন্ধ কোম্পানি অ্যাপোলো ইস্পাতের। ৯.১৭ শতাংশ বেড়ে ১০ টাকা ৯০ পয়সার শেয়ার হয়েছে ১১ টাকা ৯০ পয়সা।
জিপিএইচ ইস্পাতের দর ৮.৫০ শতাংশ বেড়ে ৪৯.৪ টাকা থেকে হয়েছে ৫৩.৬ টাকা।
নাহি অ্যালুমিনিয়ামের দর ৬.৭৫ শতাংশ, কপারটেকের ৬.৩১, কাশেম ইন্ডাস্ট্রিজের দর বেড়েছে ৬ শতাংশ।
সব মিলিয়ে এই খাতে বেড়েছে ৩২টি শেয়ারের দর, কমেছে ১০টির। যেগুলোর দর কমেছে, সেগুলোর দাম কমার হার খুবই কম।
তৃতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ৩২৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা। আগের দিন যা ছিল ২৩৭ কোটি ৮ লাখ টাকা। এই খাতে লেনদেন কমলে বেড়েছে বেশিরভাগ শেয়ারের দর।
এই খাতের ৩১টি কোম্পানির মধ্যে একটির লেনদেন স্থগিত বহুদিন ধরে। বাকিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ২২টির আর কমেছে ৭টির দর।
এই ৩০টি কোম্পানির সিংগভাগই মুনাফায় আছে, আর এগুলোর অর্থবছরও শেষ হয়েছে ৩০ জুন। যে কোনো দিন আসবে বোর্ড সভার খবর। আর সেই সভা শেষে ঘোষণা হবে লভ্যাংশ।
এই খাতে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে সেন্ট্রাল ফার্মার। ৯.৫৭ শতাংশ বেড়ে ১৮ টাকা ৮০ পয়সার শেয়ার হয়েছে ২০ টাকা ৬০ পয়সা।
৮.৫৭ শতাংশ বেড়ে ফার কেমিক্যালের দাম ১৬ টাকা ৩০ পয়সা থেকে হয়েছে ১৭ টাকা ৭০ পয়সা।
৭.৪৮ শতাংশ বেড়েছে লিব্রা ইনফিউশনের দর। ৬৬০ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বেড়ে শেয়ার দর হয়েছে ৭০৯ টাকা ৮০ পয়সা।
ওরিয়ন ইনফিউশনের দাম বেড়েছে ৭.১৬ শতাংশ। ৭২ টাকা ৬০ পয়সা থেকে শেয়ার দর হয়েছে ৭৭ টাকা ৮০ পয়সা।
একই গ্রুপের ওরিয়ন ফার্মার দাম বেড়েছে ৬.৮৯ শতাংশ। ৬৩ টাকা ৮০ পয়সার শেয়ার বেড়ে হয়েছে ৬৮ টাকা ২০ পয়সা।
হারানো দর কিছুটা হলেও ফিরে পেল বিমা খাত
লেনদেনের শুরুতে বিমা খাতের শেয়ারের দর পতন হলেও দিন শেষে বেড়েছে সিংহভাগ বিমা কোম্পানির শেয়ার দর।
দিন শেষে এই খাতের ১০টি কোম্পানির দর কমার বিপরীতে বেড়েছে ৩৩টির। লেনদেন হয়েছে ১৭১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।
আগের কর্মদিবসে এই খাতের ১১টির দাম বাড়ার বিপরীতে কমেছিল ৩৯টির। লেনদেন হয়েছিল ১৮০ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
বিমা খাতের সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের ৫.৮৯ শতাংশ। এছাড়া ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৫.৭২ শতাংশ। ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্সের ৫.১১ শতাংশ, প্রগতি লাইফের ৪.৮৮ শতাংশ, এছাড়া সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের দর বেড়েছে ৪.৬৫ শতাংশ।
সিটি, গ্লোবাল, প্রাইম ও ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৩ শতাংশের বেশি।
অন্যান্য খাতের লেনদেন
ব্যাংক বহির্ভুত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের দর বেড়েছে ৬টির, কমেছে ১৩টির। লেনদেন হয়েছে ১০২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। আগের কর্মদিবসে এই খাতে ১১টির দর বাড়ার বিপরীতে কমেছিল ৬টির আর লেনদেন ছিল ১৪৮ কোটি ৫০ লাখ টাকার।
খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের ২০টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে বাকি চারটির। লেনদেন হয়েছে ১১৭ কোটি ১৫ লাখ টাকা। আগের দিন এই খাতে ১২টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছিল ৭টির, লেনদেন ছিল ১০৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৮টির, কমেছে ৫টির। লেনদেন হয়েছে ১৪৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
সবচেয়ে বেশি দাম বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির মধ্যে শীর্ষে আছে এই খাতের সিভিও পেট্রোক্যামেকেল যার দাম বেড়েছে ১০ শতাংশ।
আগের কর্মদিবসেও এই খাতে ১৭টি কোম্পানির দাম বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছিল ৬টির লেনদেন ছিল ১৩৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
একটি ফান্ডের চমকপ্রদ লভ্যাংশ ঘোষণার দিনও বেশিরভাগ ফান্ডের দর হারানোর দিন মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে লেনদেন অবশ্য বেড়েছে। ১১টির দর বৃদ্ধি, ১৩টির হ্রাস আর ১২টির দর অপরিবর্তিত থাকার দিন হাতবদল হয়েছে ১৪২ কোটি ৮ লাখ টাকা।
আগের কর্মদিবসে দিন এই খাতে ১৩টির দাম বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছিল ৯টির, লেনদেন হয়েছিল ১০৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
বিবিধ খাতে এদিনও বেশ ভালো লেনদেন হয়েছে। ১৪টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১০টির, কমেছে ৩টির। হাতবদল হয়েছে মোট ১৮৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।
আগের কর্মদিবসে ৭টি করে কোম্পানির দর বৃদ্ধি ও কমার দিন লেনদেন ছিল ১৮৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।
এদিন আগ্রহের নতুন মোড় দেখা গেছে তথ্য প্রযুক্তি খাতে। ১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১০টিরই। কমেছে অন্যটির। হাতবদল হয়েছে মোট ৭৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
সূচক ও লেনদেন
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬০ দশমিক ২০ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫৯৬ দশমিক ০৭ পয়েন্টে।
শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ১৪ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৩৯ পয়েন্টে।
বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৯ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩৮৫ পয়েন্টে।
ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৫১১ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই আগের দিনের তুলনায় ১৭৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ১৮৮ পয়েন্টে। লেনদেন হয়েছে মোট ৮১ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:মেহেরপুরে ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে অমি খাতুন (২২) নামের এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী নিহত হয়েছেন।
আজ বুধবার সকাল ১০ টার সময় সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের রাস্তায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
অমি খাতুন মেহেরপুর সদর উপজেলার রামদাসপুর ভিটিরমাঠ গ্রামের স্কুল শিক্ষক রাহিনুলের স্ত্রী এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মেজবাহ উদ্দীন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, অমি খাতুন ও তার স্বামী রাহিনুল ইসলাম মেহেরপুর শশুর বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল যোগে রামদাসপুর গ্রামে ফিরছিলেন। তারা ফতেপুর নামক স্থানে পৌছালে দ্রত গতির একটি ট্রাক পিছন থেকে ধাক্কা দেয়। এসময় মোটরসাইকেল থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় অমি খাতুনের।
মেহেরপুর সদর থানার ওসি মেজবাহ উদ্দীন জানান, বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আইনী প্রক্রিয়া শেষে নারীর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্ডর করা হবে।
জুলাই-আগস্ট আন্দোলন ঘিরে হত্যা-গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক সাত মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করে আগামী বছরের ৮ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) বেলা সোয়া ১১টার পর এ আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১। এদিন সকালে কেরাণীগঞ্জ, কাশিমপুর ও নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে কড়া নিরাপত্তায় পৃথক মামলায় সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ মোট ১৬ জনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। এরপর পর্যায়ক্রমে তাদের এজলাসে তোলা হয়।
অন্য আসামিরা হলেন– সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, গোলাম দস্তগীর গাজী, আমির হোসেন আমু, কামরুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক এমপি সোলাইমান সেলিম, সাবেক এমপি শাজাহান খান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী, সালমান এফ রহমান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার।
এর আগে গত ২০ জুলাই এ মামলায় তদন্তের জন্য আরও তিন মাস সময় আবেদন করেন তিনি। পরে আবেদন মঞ্জুর করে আজকের দিন নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে এ সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে প্রতিবেদন জমা না দেওয়ায় সময় চাইলে আগামী বছরের ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত তদন্ত শেষ করতে নির্দেশ দেন চেম্বার আদালত।
এদিকে, আজ সকাল থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। সতর্ক অবস্থায় ছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। প্রায় সবাইকে তল্লাশি চালিয়ে ট্রাইব্যুনালে ঢুকতে দেওয়া হয়।
এর আগে গত ২০ এপ্রিল ১৯ সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। ওইদিন এ ঘটনা তদন্তে আরও তিন মাস সময় চান প্রসিকিউশন। পরে ২০ জুলাই দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল। গত ১৮ ফেব্রুয়ারিও ১২ সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দুই উপদেষ্টাসহ ১৯ আসামিকে হাজির করা হয়েছিল। শুনানি শেষে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু), হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের হাতে দেওয়া কালি মুছে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল সোয়া ১০টার দিকে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি ঢাকা পোস্টকে এ মন্তব্য করেন। এ ইস্যুতে তারা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, কথা ছিল শিক্ষার্থীদের হাতে দেওয়া কালি মুছবে না। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে কালি মুছে যাচ্ছে। এই ইস্যুতে আমরা একটু পর অভিযোগ দিচ্ছি।
ইমরান রায়হান নামে এক শিক্ষার্থী জানান, কেউ ঘুণাক্ষরেও বলতে পারবেন আমি ভোট দিয়েছি? অথচ আমি মাত্রই ভোট দিয়ে এলাম। একটু ঘষা দিয়েই কালি তুলে ফেলা যাচ্ছে।
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু), হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এদিন সকাল থেকে শুরু হয় ভোটগ্রহণ এবং চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ওএমআর ব্যালট পদ্ধতিতে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদ ভবনে স্থাপন করা হয়েছে ১৫টি ভোটকেন্দ্র ও ৬১টি ভোটকক্ষ। চাকসুর ২৬টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪১৫ জন প্রার্থী, আর হল ও হোস্টেল সংসদের ২৪টি পদের জন্য লড়বেন ৪৯৩ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ২৭ হাজার ৫১৬ জন।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ ২০২৫ এর সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলা প্রশাসন ও কুলাউড়া শিশু একাডেমির আয়োজনে পরিষদ হল রুমে সমাপনী দিবসে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আবুল বাসার এর সভাপতিত্বে এবং ইসরাত জাহান নওরিনের উপস্থাপনায় দিবসের সমাপনীতে পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মহিউদ্দিন। তিনি বলেন আজকের শিশুরাই আগামী দিনে দেশ গঠনের নেতৃত্ব দেবে। তাই তাদেরকে সু- শিক্ষা ও সু-নাগরিক হিসাবে গড়ে তোলা আমাদের দায়িত্ব।
বিশেষ অতিথি ছিলেন রুদ্রবীণা সংগীত বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ডঃ রজত কান্তি ভট্টাচার্য , প্রভাষক সুরজিৎ কুমার । আরও বক্তব্য রাখেন প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল দেবনাথ, সংগীত প্রশিক্ষক সুমিত্রা ভট্টাচার্য, নৃত্য প্রশিক্ষক দেলোয়ার হোসেন দুর্জয়, প্রাক প্রাথমিক প্রশিক্ষক সেবিন আক্তার, সংগীত শিল্পী নান্টু দাস ও হোসনে আরা বেগম। পরে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ২৬ জনকে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রায় ৩৫০ জন শিশু ও অভিভাবক অংশগ্রহণ করেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই ভারতে অবস্থান করছেন তিনি। তবে অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে দেশ ও বিদেশে নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিভিন্ন মিটিং এ যুক্ত হয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে উসকানি দিতে দেখা গেছে হাসিনাকে।
এদিকে ২০২৪ সালের শেষভাগে ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ নামের একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত একটি জুম বৈঠককে কেন্দ্র করে এই রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা গড়ে ওঠে। ২০২৪ সালে ১৯ ডিসেম্বর ওই ভার্চুয়াল সভায় দেশ ও বিদেশ থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়।
সিআইডির ফরেনসিক ও গোয়েন্দা বিশ্লেষণে দেখা যায়, ওই সভায় অংশগ্রহণকারীরা অন্তর্বর্তীকালীন বৈধ সরকার উৎখাতের আহ্বান, গৃহযুদ্ধ উসকে দেয়ার পরিকল্পনা এবং পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় আনার ঘোষণা দেন।
এই তথ্য পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হলে, ২০২৫ সালের ৪ মার্চ মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে সিআইডিকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার তদন্ত ও অভিযোগ দায়েরের অনুমতি প্রদান করে। পরবর্তীতে ২৭ মার্চ রমনা থানায় সিআর মামলা নং-২২২/২০২৫ দাখিল হয়, যার ধারাগুলো- বাংলাদেশ দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১২১, ১২১(ক), ১২৪(ক)।
পাঁচ মাসেই সিআইডির তদন্ত শেষ করে অভিযোগপত্র দাখিল করার পর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় হাসিনাসহ ২৮৬ জনের বিচার শুরু হচ্ছে। আদালত আসামিদের অনুপস্থিতিতেই বিচারকার্য পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষিত তিনটি প্রধান এজেন্ডা- সংস্কার, নির্বাচন ও বিচার বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার তদন্ত কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জন আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির রাষ্ট্রদ্রোহ সম্পর্কিত ধারায় (১২১/১২১ক/১২৪ক) অভিযোগপত্র দাখিল করেছে সংস্থাটি। এ মামলার বিচারকার্য শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নং-১৮, ঢাকায় মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আসামিদের অধিকাংশ অনুপস্থিত থাকায় আদালত জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশের মাধ্যমে তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ প্রদান করেন।
ফরেনসিক পরীক্ষার প্রতিবেদনে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ড. রাব্বি আলমসহ দলটির কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক পর্যায়ের বেশ কিছু প্রভাবশালী নেতার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এ ছাড়া গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে দেশে থাকা সন্দেহভাজনদের অবস্থান শনাক্ত করে বিভিন্ন জেলা কারাগারে থাকা ৯১ জনকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। বাকি ১৯৫ জন আসামি এখনো পলাতক বলে জানা গেছে।
গতকালকের শুনানিতে প্রধান আসামিসহ অধিকাংশ অভিযুক্ত আদালতে অনুপস্থিত থাকায়, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে ‘প্রকাশ্য সমন ও গণবিজ্ঞপ্তি’ জারি করার আবেদন করা হয়। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন প্রকাশের মাধ্যমে আসামিদের হাজির হতে আহ্বান জানানোর নির্দেশ দেন।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারা অনুপস্থিত থাকলে, ফৌজদারি কার্যবিধির ৫১২ ধারার আওতায় অনুপস্থিতিতেই বিচার পরিচালনা করা হবে বলে আদালত উল্লেখ করেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন—রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হওয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও বিচারিক ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। এটি যেমন অন্তর্বর্তী সরকারের ‘বিচার ও দায়বদ্ধতা’ এজেন্ডার বাস্তব প্রতিফলন, তেমনি রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের জবাবদিহির আওতায় আনার দৃঢ় সঙ্কেতও।
রাজবাড়ীতে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পদ্মা নদীতে মা ইলিশ ধরার অপরাধে ১১ জেলেকে আটক করেছে দৌলতদিয়া নৌপুলিশ। এ সময় ৪০ লাখ বর্গমিটার কারেন্ট জাল এবং ১৫ কেজি ইলিশ জব্দ করা হয়।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দৌলতদিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ওসি) ত্রিনাথ সাহা।
তিনি বলেন মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড, মৎস্য কর্মকর্তা এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের উপস্থিতিতে গোয়ালন্দঘাট থানার পদ্মা নদীতে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে ১১ জন জেলেকে মা ইলিশ ধরার সময় হাতেনাতে আটক করা হয়। একই সময়ে প্রায় ৪০ লাখ বর্গমিটার কারেন্ট জাল ও ১৫ কেজি ইলিশ মাছ জব্দ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আটককৃত ১১ জন জেলের প্রত্যেককে ১৪ দিন করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজা প্রদান করেন। জব্দকৃত কারেন্ট জাল আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। মাছ এতিমখানায় বিতরণ করা হয়।
ঢাকার বাতাস আজ ‘অস্বাস্থ্যকর’। ১৬৭ স্কোর নিয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে রাজধানী ঢাকা। তালিকায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে থাকা শহর দুটি ভারতের।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ১০টায় সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান নির্ধারণ সংস্থা আইকিউএয়ার থেকে এ তথ্য নেওয়া হয়েছে।
আইকিউএয়ারের দেওয়া তথ্যে দেখা গেছে, দূষিত শহরের তালিকায় প্রথম অস্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর, স্কোর ২৬০, দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি, বায়ুর মানের স্কোর ২২৪, তৃতীয় স্থানে রয়েছে কলকাতা, স্কোর ১৬৮। ১৬৩ স্কোর নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে কাতারের রাজধানী দোহা। দূষিত বাতাসে শীর্ষ দশে থাকা অপর শহরগুলোর বাতাসের মানের স্কোর ১৫৭ থেকে ১৩৯ এর মধ্যে।
আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, স্কোর শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকলে বায়ুর মান ‘ভালো’ বলে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে মাঝারি বা ‘সহনীয়’ ধরা হয় বায়ুর মান। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরকে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠী’র (অসুস্থ বা শিশু-বৃদ্ধ) জন্য অস্বাস্থ্যকর ধরা হয়। আর স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত থাকলে সে বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়।
স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ বলে বিবেচনা করা হয় এবং ৩০১ এর বেশি হলে তা ‘দুর্যোগপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়।
মন্তব্য