২০২০ সালে চাপে থাকা মার্কেন্টাইল ব্যাংক চলতি বছরের ছয় মাসে কেবল ঘুরে দাঁড়িয়েছে এমন নয়, প্রায় দেড় গুণ আয় করেছে। শতকরা হিসেবে আয়ে প্রবৃদ্ধি আরও বেশি গত কয়েক বছর ধরেই ক্রমাগত ভালো করতে থাকা প্রিমিয়ার ব্যাংক।
করোনা মহামারির দ্বিতীয় বছর চলাকালে চাপের মধ্যেও ব্যাংকগুলো এই দুটি ব্যাংকের মতোই ভালো করছে।
বছরের প্রথম ছয় মাসে এখন পর্যন্ত যে হিসাব পাওয়া গেছে, তাতে বেশিরভাগ ব্যাংক গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ভালো আয় করেছে।
এই চমক অবশ্য গত বছর করোনাকালেও দেখা গেছে। ২০২০ সালের মার্চে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর সাধারণ ছুটিতে ৬৬ দিন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে যাওয়ার পর ব্যাংকগুলোর আয়ে ধস নামে কি না, তা নিয়ে কথা উঠে।
তবে শেষ পর্যন্ত মহামারির বছরে আগের বছরের চেয়ে বেশি আয় করে চমক দেখায় ব্যাংকিং খাত। আর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো এবার বিনিয়োগকারীদেরকে লভ্যাংশ দিয়েছে অনেকটাই আশাতীত।
চলতি বছর পুঁজিবাজারে প্রথম প্রান্তিকের যে ঘোষণা এসেছে, সেখানেও দেখা গেছে, বেশিরভাগ ব্যাংকের আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে অনেক বেশি বেড়েছে।
দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষ হয়েছে গত ৩০ জুন। এর হিসাব এখনও প্রকাশ করেনি ব্যাংকগুলো। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তগুলো এই হিসাব প্রকাশ করার জন্য ৩০ কার্যদিবস সময় নেবে।
তবে ব্যাংকগুলো জুন ক্লোজিং শেষে অনিরীক্ষিত যে হিসাব বিবরণী প্রস্তুত করেছে, তা থেকে কিছু তথ্য সব সময়ই পাওয়া যায়।
নিউজবাংলা ১৯টি ব্যাংকের অর্ধবার্ষিকী মুনাফার হিসাব পেয়েছে। এর মধ্যে ১৭টি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত, আর একটি তালিকাভুক্ত হয়নি এখনও। আর একটি বিদেশি ব্যাংক।
এই ১৬টি ব্যাংকের সবগুলোই এবার গত বছরের একই সময়ের চেয়ে বেশি আয় করেছে।
শতকরা হিসেবে আয়ের প্রবৃদ্ধিতে এগিয়ে অতালিকাভুক্ত মেঘনা ব্যাংক। এই ব্যাংকটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ছয় গুণ মুনাফা করেছে।
আর মুনাফায় প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে কম হয়েছে ইসলামী ব্যাংকের। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ কোটি টাকা বেশি আয় করেছে তারা। আর টাকার অংকে সবচেয়ে বেশি আয় করেছে তারাই। এক হাজার কোটি টাকারও বেশি পরিচালন মুনাফা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।
আয় থেকে ব্যয় বাদ দিয়ে যে মুনাফা থাকে, সেটিই কোনো ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা। পরিচালন মুনাফা কোনো ব্যাংকের প্রকৃত মুনাফা নয়। এ মুনাফা থেকে খেলাপি ঋণ ও অন্যান্য সম্পদের বিপরীতে প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) সংরক্ষণ এবং সরকারকে কর পরিশোধ করতে হয়।
প্রভিশন ও কর-পরবর্তী এ মুনাফাই হলো একটি ব্যাংকের প্রকৃত বা নিট মুনাফা। বছর শেষে ব্যাংকারদের দেয়া ইনসেনটিভ বোনাসও কিছু ব্যাংক পরিচালন মুনাফার মধ্যে হিসাব করে থাকে।
কোন ব্যাংকের কত মুনাফা
মেঘনা ব্যাংক গত ছয় মাসে পরিচালন মুনাফা করেছে ৭০ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা করেছিল মাত্র ১২ কোটি টাকা। মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪৮৩ শতাংশ।
এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক গত ছয় মাসে পরিচালন মুনাফা করেছে ১৫০ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা করেছিল ৯১ কোটি টাকা। মুনাফায় প্রবৃদ্ধি ৬৪.৮৩ শতাংশ।
প্রিমিয়ার ব্যাংক জুন শেষে পরিচালন মুনাফা করেছে ৩০০ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা করেছিল ১৮৬ কোটি টাকা। মুনাফায় প্রবৃদ্ধি ৬১.২৯ শতাংশ।
মার্কেন্টাইল ব্যাংক গত ছয় মাসে পরিচালন মুনাফা করেছে ৩৫৮ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা করেছিল ২৪৩ কোটি টাকা। মুনাফায় প্রবৃদ্ধি ৪৭.৩২ শতাংশ।
সাউথইস্ট ব্যাংক গত ছয় মাসে পরিচালন মুনাফা করেছে ৪৮২ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা করেছিল ৩৪২ কোটি টাকা। মুনাফায় প্রবৃদ্ধি ৪০.৯৩ শতাংশ।
ব্যাংক এশিয়া গত ছয় মাসে পরিচালন মুনাফা করেছে ৪৮৪ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা করেছিল ৩৫১ কোটি টাকা। মুনাফায় প্রবৃদ্ধি ৩৭.৮৯ শতাংশ।
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক গত ছয় মাসে পরিচালন মুনাফা করেছে ২২৫ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা করেছিল ১৭৫ কোটি টাকা। মুনাফায় প্রবৃদ্ধি ২৮.৫৭ শতাংশ।
পূবালী ব্যাংক গত ছয় মাসে পরিচালন মুনাফা করেছে ৫০৫ কোটি টাকা। গত বছর একই সময় যা ছিল ৪০০ কোটি টাকা। মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৬.২৫ টাকা।
ডাচ বাংলা ব্যাংক গত ছয় মাসে পরিচালন মুনাফা করেছে ৫০৪ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা করেছিল ৪১৭ কোটি টাকা। মুনাফায় প্রবৃদ্ধি ২০.৮৬ শতাংশ।
ঢাকা ব্যাংক বছরের ছয় মাসে মুনাফা করেছে ৩০৩ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা করেছিল ২৬৩ কোটি টাকা। মুনাফায় প্রবৃদ্ধি ১৫.২০ শতাংশ।
যমুনা ব্যাংক গত ছয় মাসে পরিচালন মুনাফা করেছে ৩০১ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা করেছিল ২৬২ কোটি টাকা। মুনাফায় প্রবৃদ্ধি ১৪.৮৮ শতাংশ।
সাউথবাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক গত ছয় মাসে পরিচালন মুনাফা করেছে ৮০ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা করেছিল ৭০ কোটি টাকা। মুনাফায় প্রবৃদ্ধি ১৪.২৮ শতাংশ।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক গত ছয় মাসে পরিচালন মুনাফা করেছে ২৮০ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা করেছিল ২৪৭ কোটি টাকা। মুনাফায় প্রবৃদ্ধি ১৩.৩৬ শতাংশ।
এনসিসি ব্যাংক গত ছয় মাসে পরিচালন মুনাফা করেছে ৩১৫ কোটি টাকা যা গত বছর একই সময় ছিল ২৯০ কোটি টাকা। মুনাফায় প্রবৃদ্ধি ৮.৬২ শতাংশ।
এক্সিম ব্যাংক গত ছয় মাসে পরিচালন মুনাফা করেছে ৩৪০ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা করেছিল ৩১৭ কোটি টাকা। মুনাফায় প্রবৃদ্ধি ৭.২৫ শতাংশ।
মধুমতি ব্যাংক গত ছয় মাসে পরিচালন মুনাফা করেছে ১২৭ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা করেছিল ১২৪ কোটি টাকা। মুনাফায় প্রবৃদ্ধি ২.৪১ শতাংশ।
আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক গত ছয় মাসে পরিচালন মুনাফা করেছে ৩১০ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা করেছিল ৩০৫ কোটি টাকা। মুনাফায় প্রবৃদ্ধি ১.৬৩ শতাংশ।
বরাবরের মতো ব্যাংকগুলোর মধ্যে মুনাফার শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে ইসলামী ব্যাংক। গত ছয় মাসে পরিচালন মুনাফা করেছে ১০২০ কোটি টাকা। ২০২০ সালের প্রথম ছয় মাসে পরিচালন মুনাফা করেছিল ১০০৭ কোটি টাকা। মুনাফায় প্রবৃদ্ধি ১.২৯ শতাংশ।
বাংলাদেশে কার্যক্রম চালানো পাকিস্তানি ব্যাংক ন্যাশনাল ব্যাংক অফ পাকিস্তানও দেখিয়েছে চমক। তারা অর্ধবার্ষিক হিসাবে মুনাফা করেছে ২১ কোটি ১৩ লাখ টাকা। গত বছর এই সময় লোকসান ছিল ২২ কোটি টাকা
ব্যাংকাররা যা বলছেন
কঠিন পরিস্থিতিতেও ব্যাংকিং খাত কীভাবে ভালো করছে তার কারণ জানিয়েছেন ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসান এইচ মনসুর। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে বিনিয়োগ নেই, ঋণ বিতরণ কমে গেছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণগ্রহীতাদের ঋণ পরিশোধে জুন পর্যন্ত ছাড় দেয়া হয়েছে। এর ফলে প্রভিশনিংয়ে ব্যাংকগুলো কিছুটা ছাড় পেয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে ব্যাংকের আয়ে।’
ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আরফান আলী বলেন, ‘ব্যাংকের ব্যবসা যে ভালো হচ্ছে, এ রকম না। ডিপোজিট এখন পর্যাপ্ত রয়েছে। কম রেটেও পাওয়া যাচ্ছে। ফিক্সড ডিপোজিটে ইন্টারেস্ট রেট লো। করোনার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া সুবিধার কারণে ব্যাংকগুলো বাড়তি প্রভিশনিং (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) করে নাই। এ কারণে মুনাফা বাড়তি দেখাতে পেরেছে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মূল কারণ হলো আমানতে সুদহার অনেক কম। ঋণ বিতরণ একদম হচ্ছে না, সেটা নয়। যাতায়াত ভাতা, আনুষঙ্গিক খরচ, বিভিন্ন অনুষ্ঠান এগুলো কমিয়েছে। তবে ব্যাংকের ব্যয় যে খুব কমেছে, সেটা নয়।’
আরও পড়ুন:কুড়িগ্রামে রৌমারী উপজেলার রৌমারী সদর ইউনিয়নের কালোর ও জিঞ্জিরাম নদী দ্বারা বিচ্ছিন্ন সীমান্তবর্তি ভন্দুরচর গ্রামে পরিকল্পিত ভাবে একই পরিবারের তিনজনক হত্যা করা হয় গত ২৪জুলাই। এই ঘটনার প্রতিবাদে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৬জুলাই শনিবার দুপুরে রৌমারী উপজেলার সর্বস্তরের জনগনের ব্যানারে এই কর্মসূচি করা হয়। রৌমারী টু ঢাকা মহাসড়কে ঘন্টাব্যাপি বিক্ষোভ ও মানববন্ধন পালন করে স্বজন ও এলাকাবাসী। এসময় বক্তব্য রাখেন, ওয়াজেদ আলী,ইকতার হোসেন, আনোয়ার হোসেন,নিহত বুলু মিয়ার স্ত্রী আসকেতারা বেওয়া,কন্যা শাপলা বেগম,ফুলবাবুর স্ত্রী ফুলোরানী বেওয়া এবং নুরুল আমিনের স্ত্রী আনজু আরা বেওয়া প্রমুখ।
উল্লেখ্য,গত ১৯ জুলাই ভন্দুর চরের রাজু আহমেদের গরু প্রতিবেশি শাহজামালের বীজতলার ধানের চারা খেয়ে ফেলে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাহজামালের লোকজন গরু বেঁধে রাখতে বলে। এরই জেরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রায় ২০/২৫জনের একটি দল শাহজামালের বাড়িতে হামলা চালিয়ে মহিলাদেরকে মারধর করে ও বাড়িঘর ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় ২০জুলাই আহত নুরজাহান বাদী হয়ে রৌমারী থানায় একটি অভিযোগ করেন। কিন্তু সেই অভিযোগ আমলে না নিয়ে বাদীপক্ষকে মীমাংসা করে নিতে বলে পুলিশ। থানায় অভিযোগ দেবার জের ধরে গত ২৪জুলাই আবারও রাজু আহমেদের গ্রপের সদস্যরা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় প্রতিপক্ষ শাহজামালদের উপর। দিনদুপুরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে একই পরিবারের তিন সদস্যকে হত্যা করে। নিহতরা হলেন,শাহজামালের দুই ভাই ফুলবাবু,বুলু মিয়া এবং ভাতিজা নুরুল আমিন। উভয় পক্ষের প্রায় ১০জন আহত হয়। এই ঘটনায় গত ২৬ জুলাই নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী রৌমারী থানা ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে।
পরে শাহজামাল বাদী হয়ে ২৪জুলাই ৩৪জনের নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা ৮/১০জনকে আসামী করে রৌমারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮জনকে গ্রেফতার করেছে।
এই বিষয়ে রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লুৎফর রহমান ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকদের উদ্দেশে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আপনাদের মতে চিকিৎসা খাতে ৪-৫ বিলিয়ন ডলারের একটা বাজার আছে। এই বাজার আপনারা নিতে পারেন না? কেন মানুষ চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে চায়? ভারত, ব্যাংককে এমন মানুষও চিকিৎসা নিতে যায়, যারা কখনও ঢাকায় আসেনি। তারা বিরক্ত ও নিরুপায় হয়ে যায়। তাদের যাওয়া বন্ধ করেন। এখানে সেবা দিলে মানুষ কখনোই বিদেশ যাবে না। যাওয়ার কোনও কারণই নাই। এই বাজার দখল করলে আপনাদের লাভ, দেশেরও লাভ।
শনিবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর শহীদ আবু সাইদ ইন্টারন্যাশনাল কনভনেশন সেন্টারে বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির অভিষেক ও বার্ষিক সাধারণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, অনেক চিকিৎসক অনর্থক টেস্ট দেন। আমার বাসার হেল্পিং হ্যান্ড, গরিব ছেলে, ঢাকার একটি হাসপাতালে ১৪টি টেস্ট দিয়েছে। সে রাগ করে বাড়ি চলে গেছে। সেখান থেকে টেস্ট ছাড়া ভালো হয়ে ফেরত এসেছে। ওখানে তার পরিচিত ডাক্তার ছিল। এই অত্যাচার বন্ধ হয় নাই। গরিব রোগীদের অনর্থক ১৪-১৫টা টেস্ট দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ করা দরকার। আরেকটা বিষয় হলো, নির্দিষ্ট ওষুধ কিনতে হবে, কেন? পৃথিবীতে কোন জায়গায় প্রাইভেট ক্লিনিকে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির জন্য নির্দিষ্ট সময় থাকে ডাক্তারের। আপনারা কি ওষুধ কোম্পানির দালাল, এ দেশের বড় বড় হাসপাতালের ডাক্তাররা কি ওষুধ কোম্পানির মধ্যসত্ত্বভোগী? কোন জায়গায় নামান আপনারা নিজেদের!
আইন উপদেষ্টা বলেন, আরেকটা অভিযোগ করা হয়, টেস্টের রেজাল্ট ভুল। অনেক জায়গায় অনেক ভালো রেজাল্ট হয়, আমি খারাপ জায়গার কথা বলছি। একটা জেনারেল কমপ্লেইন যেটা আমার কাছে হৃদয়বিদারক লাগে, নার্সদের ব্যবহার খারাপ। নার্সদের মন খারাপ থাকে, হাসপাতালের কর্মচারীদের মন খারাপ থাকে, তারা ক্ষিপ্ত হয়ে থাকেন, ভালো সেবা দিতে চায় না। কেন চায় না– নার্সদের বেতন ১২ হাজার টাকা, আপনারা কি কম টাকা লাভ করেন? আপনারা যারা অনেকে হাসপাতালের মালিক আছেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি, আপনাদের কোটি টাকার বাগানবাড়ি থাকতে পারে, নার্সদের ভালো বেতন দিতে পারেন না? নার্স যদি ১২ হাজার টাকা বেতন পায়, তাহলে কি ভালো সেবা দেবে? সে তো বিরক্ত হয়ে থাকবে। আপনারা লাভ করেন কিন্তু ন্যায্যভাবে করেন।
তিনি বলেন, আজ মানুষ ভারত-থাইল্যান্ড যেতে চায় না। আপনাদের চিকিৎসা দেওয়ার সক্ষমতা আছে। আপনারা করোনাকালে প্রমাণ করেছেন। নিজের জীবন উৎসর্গ করে সেবা দিয়েছেন। কর্মীর যদি বেতন বাড়িয়ে দেন সামান্য লাভ থেকে কতো টাকা চলে যাবে? যদি ১০০ কোটি টাকা লাভ করেন, তাহলে ১০ শতাংশ কম লাভ হয়। ১০ শতাংশ কম লাভের বিনিময় সেই কর্মী যে সেবা দেবে সেটা দিয়ে পূরণ হয়ে যায়। আপনারা এদিকে একটু লক্ষ্য রাখবেন।
শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার রাতে দেওয়া এক শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি সকলের সুস্বাস্থ্য, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করেন।
শুভেচ্ছা বার্তায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, জন্মাষ্টমী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত পুণ্যতিথি ও গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব। এটি শুধু আনন্দ-উৎসবের দিন নয়, বরং ভ্রাতৃত্ব, সৌহার্দ্য ও শান্তির বাণী ছড়িয়ে দেওয়ার এক মহামিলন ক্ষেত্র।
তিনি বলেন, জন্মাষ্টমী সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জন্য অবারিত উৎসবের প্রাঙ্গণ সৃষ্টি করে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বাংলাদেশের সমাজ সংস্কৃতির মূল ভিত্তি হলো ধর্মীয় সম্প্রীতি। ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করেছে। আমরা সব ধর্মের মানুষের সমঅধিকারে বিশ্বাসী। হিংসা, বিদ্বেষ, অশান্তি, হানাহানি, বৈষম্য ও অবিচার দূর করে সমাজকে শান্তিময় করে তুলতে আমাদের সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব এ সময় দেশবাসীর প্রতি সম্প্রীতি, শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করার আহ্বান জানান।
ময়মনসিংহের ভালুকায় বিশেষ অভিযানে ৪৩ পিস ইয়াবাসহ চার মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় উপজেলার জামিরদিয়া এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
থানা সূত্রে জানা যায়, ভালুকা মডেল থানার একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চারজনকে হাতেনাতে আটক করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন—জামিরদিয়ার মোঃ আবুল হোসেনের ছেলে মোঃ সজিব মিয়া (২৬), একই এলাকার মোঃ নাবিল হোসেন নবীর ছেলে মোঃ আলী হোসেন ওরফে নাজমুল (২৫), গাজীপুরের শ্রীপুরের উদয়খালী এলাকার মোঃ মফিজ উদ্দিনের ছেলে মোঃ রফিকুল ইসলাম (২৭) এবং ডুমবারিরচালা এলাকার মোঃ রফিকুল ইসলামের ছেলে মোঃ নাঈম খান (২৫)।
এসময় সময় তাদের কাছ থেকে ৪৩ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে ভালুকা মডেল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়।
ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, মাদক নির্মূলে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি। এ ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে চালানো হবে।
নওগাঁর আত্রাই নদীর একটি স্থানে কয়েক সেন্টিমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে ঢুকছে পানি।
শনিবার (১৬ আগস্ট) সকালে মান্দা উপজেলার কসব ইউনিয়নের তালপাতিলা এলাকায় এই বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যায়। এতে তালপাতিলা গ্রামসহ আশেপাশের চকবালু, চকরামপুরসহ কয়েকটি গ্রামে পানি প্রবেশ করে। পানি বন্দী হয়ে পড়েন কয়েকশ পরিবার।
স্থানীয়রা বলছে, এই একই স্থানে গেলো বছর ভেঙ্গে যায়। এরপর মাসখানেক আগে বেড়িবাঁধের এই অংশটুকু মেরামত করা হয়। কিন্তু নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আবার ভেঙে গেছে।
বেড়িবাঁধ ভাঙ্গার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শক করেছেন মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আখতার জাহান সাথী। এসময় তিনি উক্ত দ্রুত সময়ের মধ্যে বেড়িবাঁধ মেরামতের আশ্বাস দেন।
এদিকে দুপুর ১২টার দিকে দেওয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী আত্রাই নদীর মান্দা উপজেলার জোত বাজার পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ও রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে বিপদ সীমার ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও নওগাঁর ছোট যমুনা ও পুনর্ভবা নদীর পানি বিদসীমার নিচে থাকলেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার উপরে প্রবাহিত হওযায় মান্দা উপজেলার চকরামপুর, উত্তর চকরামপুর, কয়লাবাড়ী, জোকাহাট, দ্বারিয়াপুর, নুরুল্লাবাদ, পারনুরুল্লাবাদ ও তালপাতিলা এলাকার অন্তত ১০টি বেড়িবাঁধকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ মূল বাধের লক্ষ্মীরামপুর, আয়াপুর, পাঁজরভাঙ্গা, পলাশবাড়ী, মিঠাপুর, নিখিরাপাড়া ও গোয়ালমান্দাসহ অন্তত ২০টি পয়েন্টকে উচ্চ ঝুঁকির তালিকায় রাখা হয়েছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষিমার্কেট পরিদর্শন করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি দেশব্যাপী নিষিদ্ধ পলিথিনের উৎপাদন, পরিবহন ও বিপণন রোধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই মার্কেট পরিদর্শন করেন ।
আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদপুরের কৃষিমার্কেটে যান। এরপর তিনি কৃষিমার্কেটের বিভিন্ন দোকান পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দোকানিদের পলিথিন ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করেন এবং পলিথিন ব্যবহারের ভয়াবহতা তুলে ধরেন ।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে পাথর কোয়ারি থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন ও লুটের ঘটনায় মামলা করেছে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি)।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিএমডি মহাপরিচালক আনোয়ারুল হাবিব বাদী হয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় এই মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত ১৫০০ থেকে ২০০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, অজ্ঞাতনামা কিছু দুষ্কৃতিকারীর মাধ্যমে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময় থেকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার গেজেভুক্ত পাথর কোয়ারি থেকে অবৈধ বা অননুমোদিতভাবে সম্প্রতি কোটি কোটি টাকার পাথর লুট করা হয়েছে মর্মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, পাথর লুটপাটে অজ্ঞাত ১৫০০ থেকে ২০০০ ব্যক্তি জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে, যাদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়নি। সরকারের গেজেটভুক্ত কোয়ারি থেকে লুট বা চুরি এ ধরনের কর্মকাণ্ড খনি ও খনিজ সম্পদ (নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন) আইন, ১৯৯২-এর ধারা ৪(২) (ঞ) এবং খনি ও খনিজ সম্পদ বিধিমালা ২০১২-এর বিধি ৯৩ (১)-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিগোচর হওয়ায় মৌখিক নির্দেশনায় খনি ও খনিজ সম্পদ (নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন) আইন, ১৯৯২ এর ৫ ধারা অপরাধে ও দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ৩৭৯ নম্বর ধারা ও ৪৩১ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা প্রয়োজন। এ অবস্থায় সরকারি স্বার্থে ভোলাগঞ্জ কোয়ারি থেকে পাথর লুট ও চুরির ঘটনায় দায়ী অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে।
সম্প্রতি সিলেটের দুই পর্যটনকেন্দ্র কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর ও গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং থেকে পাথর লুটের ঘটনা ঘটে। সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি করা এ ঘটনায় হাইকোর্ট পাথর উদ্ধার করে যথাস্থানে প্রতিস্থাপন এবং লুটেরাদের তালিকা আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেন।
এরপর সিলেটসহ সারা দেশে সাঁড়াশি অভিযানে নামে র্যাব, পুলিশসহ যৌথবাহিনী। গত তিন দিনে জাফলং ও সাদাপাথর থেকে লুট হওয়া পাথরের মধ্যে মোট ১ লাখ ৯ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এর মধ্যে অবশ্য নারায়ণগঞ্জ থেকে গত বৃহস্পতিবার রাতে উদ্ধার হওয়া ৪০ হাজার টন পাথরও রয়েছে।
সর্বশেষ সিলেট জেলার জৈন্তাপুর থানাধীন আসাম পাড়া এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ পাথর উদ্ধার করেছে র্যাব। র্যাব-৯-এর টহল দল, সাদা পোশাকধারী সদস্য এবং সিলেট জেলা প্রশাসনের সহায়তায় একটি যৌথ আভিযানিক দল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আসাম পাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে আনুমানিক ৭ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
মন্তব্য