ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ফরিদপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মনজুর হোসেন বুলবুলের বরাদ্দ উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
একটি সড়ক নির্মাণের এক মাসের মধ্যে সেটির একটি অংশ পানিতে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া নির্মাণের ১০ দিনের মধ্যে ইটের রাস্তার বিভিন্ন অংশ ধসে গেছে। বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) করা হয়েছে সংসদ সদস্যর কাছের লোকজনদের। এ কারণে প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম হলেও ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি।
২০২০-২১ অর্থবছরে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলায় ফরিদপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. মনজুর হোসেন বুলবুল বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ দেন। অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা/কাবিটা) কর্মসূচির আওতায় টগরবন্দ ইউনিয়নের পানাইল নিচুপাড়ায় একটি মাটির রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের তৃতীয় কিস্তির বরাদ্দের পরিমাণ ১০ লাখ টাকা। ওই প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ইফতেখার আলম।
আরেকটি প্রকল্প চরবাকাইলে মাটির রাস্তায় মাটির কাজ ও ইটের সোলিং নির্মাণ কাজের বরাদ্দ দেওয়া হয় ১০ লাখ টাকা। ওই প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি খন্দকার জাহিদুল ইসলাম ওরফে জয় বকুল। টগরবন্দ ইউনিয়নে আরেকটি মাটির রাস্তা নির্মাণেও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১০ লাখ টাকা।
এছাড়া পানাইল আরেকটি রাস্তার ইটের সোলিং করা ও প্যালাসাইডিং নির্মাণ কাজে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। পানাইল কবরস্থানে মাটি ভরাটের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ৫ লাখ টাকা। ওই প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি সুলতান মাহামুদ। এছাড়া চরকাতলাসুর ৭ নং ওয়ার্ডে মাটির রাস্তা নির্মাণে বরাদ্দ দেওয়া হয় ২ লাখ টাকা। পানাইল পশ্চিম পাড়ায় একটি ইটের রাস্তা নির্মাণে বরাদ্দ দেওয়া হয় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। চরডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ ভরাট প্রকল্পে ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দসহ বিভিন্ন প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়া হয়।
সরেজমিনে টগরবন্দ ইউনিয়নের পানাইল নিচুপাড়া ইমরুলের বাড়ি থেকে কাশেমের বাড়ির অভিমুখে মাটির রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়েছে বিলের মধ্যে নিচু জায়গায়। ইতিমধ্যেই পানি বাড়ায় একটি অংশ বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া রাস্তাটিতে কোনোরকমে মাটি ফেলা হয়েছে। সমানও করা হয়নি রাস্তাটি।
স্থানীয় বাসিন্দা ওবায়দুর রহমান জানান, বিলের মধ্যে দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করায় বর্ষামৌসুমে সম্পূর্ণ তলিয়ে যাবে। পানি বাড়ায় ইতিমধ্যেই রাস্তাটির মাঝের একটি অংশ বিলীন হয়ে গেছে। জনসাধারণের যাতায়াতের সুবিধার জন্য রাস্তাটি নির্মাণ করা হলেও এখন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। রাস্তা পারাপার হতে পানির মধ্যে দিয়ে চলাচল করতে হয়।
ওই প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ইফতেখার আলমের সঙ্গে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। পরবর্তীতে ফোন ধরেন তার মেয়ে। তিনি জানান, তার বাবা বাসায় নেই। কখন আসবেন তিনি জানেন না। বলে ফোনের লাইন কেটে দেন তিনি।
টগরবন্দ ইউনিয়নের পানাইল নজির আহম্মেদের বাড়ি থেকে চরডাঙ্গা আলমগীর হোসেনের বাড়ি পর্যন্ত মাটির রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তাটির মাঝখানে একটি অংশ কেটে রাখা হয়েছে। এলাকাবাসী জানায়, ওইখানে একটি কালভার্ট বসানো হবে। এ জন্য কেটে রাখা হয়েছে।
ওই সড়ক দিয়েও চলাচল করতে কোমর সমান পানি পার হয়ে পারাপার হতে হয় জনসাধারণকে। এদিকে এই রাস্তাটি নির্মাণের সময় যে মাটি লেগেছিল, তা নেওয়া হয় রাস্তার পাশের জমি থেকে। ওই সময় জমির মালিকদের বলা হয়েছিল, ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। নামমাত্র ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দা রমজান শেখ বলেন, রাস্তা নির্মাণের পর নামমাত্র ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, যাদের জমি থেকে মাটি নেওয়া হয়েছে, সেই জায়গায় এখন হাঁটুপানি। কোনো ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হবে না ওই জমিতে। তিনি আরো জানান, এই রাস্তা নির্মাণের সময় সংসদ সদস্যের চাচাতো ভাই দেখাশোনা করেছেন। এ কারণে ভয়ে কেউ কিছু বলেনি।
পানাইল পশ্চিমপাড়ার আলী মোল্যার বাড়ি থেকে মুরাদ জমাদ্দারের বাড়ি পর্যন্ত ইটের রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তাটির বিভিন্ন অংশ ধসে গেছে। রাস্তা নির্মাণের মাত্র ১০ দিনের মধ্যে ধসে গেছে একাধিক জায়গা। ওই রাস্তা দিয়ে স্থানীয়দের এখন পায়ে হেঁটে চলাচল করতেও সমস্যা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা লিমন শেখ জানান, রাস্তার বিভিন্ন অংশ ধসে যাওয়ায় চলাচলে খুব কষ্ট হচ্ছে। ভ্যানে কোনো মালামাল বাড়িতে আনতে পারছেন না তিনি। এর চেয়ে মাটির রাস্তাই তাদের ভালো ছিল। তিনি জানান, প্রকল্পটির পিআইসি ছিলেন খন্দকার জাহিদুল ইসলাম ওরফে জয় বকুল। রাস্তা ধসে যাওয়ার পরপরই তাকে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও রাস্তা সংস্কারের কাজ হয়নি।
ফরিদপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. মনজুর হোসেন বুলবুলের বরাদ্দ প্রকল্পগুলোর বেশিভাগের বাস্তবায়ন কমিটিতে রয়েছেন খন্দকার জাহিদুল ইসলাম ওরফে জয় বকুল। স্থানীয়দের অভিযোগ, সংসদ সদস্যের আস্থাভাজন হওয়ায় বেশিরভাগ নির্মাণকাজই করে থাকেন খন্দকার জাহিদুল ইসলাম ওরফে জয় বকুল। আর বেশিরভাগ কাজেই অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে চায় না।
খন্দকার জাহিদুল ইসলাম বলেন, পানাইলের যে অংশে ইটের সোলিংয়ের রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে, সেটি নিচু হওয়ায় আশপাশের বাড়ি থেকে বৃষ্টির ঢলের পানি এসে রাস্তার উপরে পড়ে। মেশিন দিয়ে কেটে ফেলানো নতুন বালি ধসে যায়। তবে ওই ক্ষতিগ্রস্ত অংশটুকু মেরামত করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রকল্পের ব্যাপারে জানতে চাইলে জাহিদুল ইসলাম বলেন, নিয়ম মেনেই প্রকল্পের কাজ করা হচ্ছে, তবে কিছু প্রকল্প নিচু এলাকায় হওয়ায় সমস্যা হয়েছে, সেগুলো সমাধান করা হচ্ছে। প্রকল্পের কাজে কোনো অনিয়ম করা হয়নি।
পানাইল কবরস্থানে মাটি ভরাটের প্রকল্পটিতেও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি (পিআইসি) সুলতান মাহামুদ বলেন, ‘এখনও প্রকল্পের কাজ চলমান। বৃষ্টির কারণে মাটি ভরাটের কাজ সাময়িক বন্ধ। অনিয়মের প্রশ্নই আসে না। সঠিকভাবেই কাজ সম্পন্ন করা হবে।’
টগরবন্দ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিক ফকির বলেন, ‘স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সাথে সংসদ সদস্যর কোনো যোগাযোগ নেই। সংসদ সদস্য তার নিজস্ব কিছু লোকজন দিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ করিয়ে থাকেন। এ কারণে উন্নয়নমূলক কোনো কাজের ব্যাপারে আমরা খোঁজ খবর রাখি না। অনিয়ম হলেও আমরা দেখতে যাই না। প্রতিবাদ করেও কোনো লাভ নেই।’
আলফাডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম আকরাম হোসেন বলেন, ‘স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সাথে এমপি মহোদয়ের কোনো যোগাযোগ নেই। তিনি স্থানীয় বিএনপি, জামায়াতের লোকজনদের নিয়ে চলাফেরা করে থাকেন। আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মীর সাথে তার কোনো কথাবার্তাও হয় না।’
তিনি বলেন, ‘এলাকায় তার নিজস্ব কিছু লোকজন রয়েছে, তাদের নামেই প্রকল্পগুলোর বরাদ্দ দেওয়া হয়। এমনকি একেকজনের নামে একাধিক প্রকল্পও দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম হয়েছে লোকমুখে শুনেছি। যেহেতু তিনি আমাদের সাথে সম্পর্ক রাখেন না, সে কারণে ওই কাজগুলোর ব্যাপারে আমরা কোনো খোঁজ খবর রাখি না।’
প্রকল্পের নির্মাণকাজের বিষয়ে আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান বলেন, ‘এলাকায় অনেক উন্নয়ন কাজ করছেন এমপি মনজুর হোসেন বুলবুল। বিভিন্ন প্রকল্পের অনিয়মের ব্যাপারে অভিযোগ উঠেছে। আমি বর্তমানে ঢাকায় আছি, এলাকায় গিয়ে সকল প্রকল্প পরিদর্শন করব। যারা এই প্রকল্পগুলোর কাজ করছেন, তারা যদি অনিয়ম করে থাকেন, তাহলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রণব পান্ডে বলেন, ‘বিভিন্ন প্রকল্পের বিষয়ে অনিয়মের অভিযোগ লোকমুখে শুনেছি। প্রকল্পগুলোর বিল এখনও দেওয়া হয়নি। সরেজমিনে গিয়ে কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করে বিল দেয়া হবে।’
আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ এলাহী বলেন, ‘এই প্রকল্পগুলোর বরাদ্দ একটু দেরিতে আসায় বর্ষা মৌসুমেই কাজ করতে হচ্ছে। এ কারণে কিছু কিছু জায়গায় সমস্যা হয়েছে বলে শুনেছি। কাজ এখনও সম্পন্ন হয়নি, চলমান রয়েছে। কাজ শেষ হলে সরেজমিনে পরিদর্শন শেষেই বিল প্রদান করা হবে। অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। নিয়ম অনুযায়ী যেভাবে প্রকল্পগুলো সম্পন্ন করার কথা সেভাবেই পিআইসিদের কাছ থেকে কাজ বুঝে নেওয়া হবে। তারপরেই বিল প্রদান করা হবে।’
এ বিষয়ে কথা বলতে ফরিদপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. মনজুর হোসেন বুলবুলের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নি।
তবে তার এপিএস মমিন ইমনের সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি জানান, ‘কিছু প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে, কিছু প্রকল্পের কাজ এখনও চলমান রয়েছে। কিছু জায়গায় বর্ষার পানির কারণে সমস্যা হয়েছে, সেগুলো দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন:মানিকগঞ্জ শহরের প্রবেশপথে যানজট নিরসনে ও পথচারীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
পৌরসভা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড ও পৌর সুপার মার্কেটের সামনের সড়ক ও ফুটপাত থেকে শতাধিক হকার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান করা হয়।
প্যানেল মেয়র তসলিম মিয়া জানান, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অস্থায়ী কিছু ব্যবসায়ীরা ফুটপাত ও সড়কের একাংশ দখল করে ব্যবসা করে আসছেন। এতে করে শহরে যানজটের সৃষ্টি হয় এবং পথচারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। পথচারীদের সুবিধার্থে যানজট দূর করতেই এই উচ্ছেদ অভিযান।
উচ্ছেদ অভিযানে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জহিরুল আলম, পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ মো. তসলিম মিয়া ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রাজিয়া সুলতানাসহ থানা পুলিশ ও পৌরসভার কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠির রাজাপুরে নদীর তীর থেকে এক ভ্যানচালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো যুবকের মামুন হোসেন, যার বয়স ২৫ বছর। তিনি রাজাপুরের পশ্চিম সাতুরিয়া গ্রামের মোকসেদ আলীর ছেলে।
ভ্যানচালক মামুন দুই দিন আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন জানিয়ে রাজাপুর থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, ‘স্থানীয়দের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে সাতুরিয়া গ্রামের ইদুরবাড়ি এলাকায় কচা নদীর তীর থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেয়া হয়। লাশের ময়নাতদন্তসহ পরবর্তী সময়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে, তবে এটি হত্যা নাকি দুর্ঘটনা, সেটি তদন্তে বের হবে।’
এ পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কেউ অভিযোগ করেনি। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পূর্ব পূয়ালী গ্রামের আব্দুর রহিম হাওলাদারের একমাত্র ছেলে রাব্বি হাওলাদার।
২৫ বছর বয়সী রাব্বির দুটি কিডনিই নষ্ট। ডাক্তারের পরামর্শ তার কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে। বর্তমানে তার চিকিৎসার জন্য প্রায় ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
রাব্বির কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য এতো টাকা লাগবে শোনার পর থেকেই তার কৃষক বাবা সাহায্যের জন্য ছুটছেন চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ স্থানীয় বিত্তবানদের কাছে। কেন না তার সবকিছুই বিক্রি করে দিলেও এক থেকে দেড় লাখ টাকার বেশি জোগাড় করার সামর্থ্য হচ্ছে না।
রাব্বি বর্তমানে ঢাকার মিরপুর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এমন অবস্থায় কৃষক বাবা তার সন্তানকে বাঁচাতে দেশবাসীর কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন। দেশের বিত্তবানরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেই হয়ত বেঁচে যাবে তার সন্তান।
রাব্বির পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাব্বি হাওলাদার কয়েক মাস আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (সেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে যান তার পরিবার। সেখানে চিকিৎসক তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেন রাব্বির দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত চিকিৎসা চলছিল রাব্বির, কিন্তু কিছুদিন আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে মিরপুর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এরই মধ্যে প্রায় আড়াই লাখ টাকার ওপরে শুধু হাসপাতাল ও ওষুধের বিল দিতে হয়েছে। দরিদ্র এই পরিবারটি আত্মীয়স্বজনসহ সবার সহায়তায় ওই বিল দেয়া সম্ভব হয়।
রাব্বির মা রেভা বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘এভাবে আর কয়দিন চিকিৎসা করাতে পারব জানি না। কারণ আমাদের সামর্থ্য শেষ হয়ে এসেছে। শুধু টাকার অভাবে তাকে ভালো কোনো হাসপাতালেও নিতে পারছি না, কিন্তু কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য অপারেশনের ধকল সহ্য করার মতো সুস্থ অবস্থায় আনা খুব জরুরি।’
রাব্বির বাবা আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে অনুরোধ করা হচ্ছে আপনাদের ভালোবাসা ও সাহায্য আমাদের খুব প্রয়োজন। কারণ শুধু টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় আমার একমাত্র ছেলে অকালে ঝরে যাবে তা আমার জীবন থাকতে মানতে পারছি না।’
তাকে কেউ সাহায্য করতে চাইলে ০১৯৯৭-২২৮৯৭৫ ও ০১৯৮৭-৩৬৬৫৬৮ (বিকাশ-পার্সোনাল) নাম্বারে পাঠাতে পারেন ও যোগাযোগ করতে পারেন।
আরও পড়ুন:ময়মনসিংহের ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন।
এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উপজেলার উজানপাড়া এলাকায় বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ত্রিশাল থানার ওসি কামাল হোসেন জানান, বেলা ১১টার দিকে মাদানী সিএনজি পাম্প সংলগ্ন উজানপাড়ায় একটি বাস ইউটার্ন নেয়ার সময় অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই বছর বয়সী এক মেয়ের মৃত্যু হয়। ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে ৩৩ বছর বয়সী অটোরিকশার চালক শরিফুল ইসলাম ও অন্য একজনের মৃত্যু হয়।
তিনি জানান, এ দুর্ঘটনায় আহত চারজনের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে, যারা হলেন ত্রিশালের রুদ্র গ্রামের জালাল উদ্দিনের ৪৫ বছর বয়সী স্ত্রী মনি আক্তার ও একই গ্রামের শামীম আহমেদের ৪৫ বছর বয়সী স্ত্রী সাহিদা আক্তার।
ফরিদপুর সদরে যৌনপল্লি থেকে দুই তরুণীকে উদ্ধার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় ওই পল্লির এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মো. হাসানুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার রাতে এসব তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃত পারুল বেগম ওরফে পারু (৪৮) জেলার রথখোলা যৌনপল্লির বাসিন্দা।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন আপন (৩০), জহির (৩০) ও ববি (৩৮)।
গ্রেপ্তার না হওয়া এ তিনজনের মধ্যে ববি যৌনপল্লির সর্দারনি হিসেবে পরিচিত। আপন ও জহিরের পূর্ণাঙ্গ পরিচয় পাওয়া যায়নি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পার্লারে ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে চাঁদপুরের কচুয়া থানা এলাকা থেকে এক তরুণীকে গত ১০ মার্চ ঢাকায় নিয়ে আসেন আপন। দুই দিন সেখানে রেখে তাকে (তরুণী) তিন ব্যক্তির হাতে তুলে দেন তিনি। ওই তিন ব্যক্তি ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় তরুণীকে রথখোলা যৌনপল্লিতে এনে পারুর কাছে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। পরের দিন একটি সাদা কাগজে তরুণীর স্বাক্ষর নিয়ে জানানো হয়, এখন থেকে তিনি যৌনপল্লির লাইসেন্সধারী সদস্য।
এতে আরও বলা হয়, মেয়েটিকে পারুর বাসায় রেখে ববি ও অন্যদের মাধ্যমে জোর করে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হয়। এর মাঝে মেয়েটি বাড়িতে যোগাযোগের জন্য একজন খদ্দেরকে তার ছোট বোনের মোবাইল নম্বর দেন। পরে ওই খদ্দেরের মোবাইল কলের মাধ্যমে মেয়েটির সন্ধান পায় তার পরিবার। এরপর তার মা ও ফুফা রথখোলায় এসে তাকে দেখতে পেয়ে স্থানীয় থানা পুলিশকে জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পুলিশ যৌনপল্লিতে অভিযান চালানোর পর ফেনীর পূর্ব ছাগলনাইয়ার আরেক তরুণীও তাকে উদ্ধারে পুলিশের সাহায্য চান। ওই তরুণী জানান, তাকেও চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে ঢাকার মিরপুরের একটি বাসায় এক রাত রেখে রথখোলা যৌনপল্লিতে এনে পারুর কাছে বিক্রি করা হয়।
কোতোয়ালি থানার ওসি হাসানুজ্জামান জানান, যৌনপল্লিতে তরুণীকে নেয়ার ঘটনায় তার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফাহিম ফয়সাল মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে অভিযান চালিয়ে পারুল বেগম ওরফে পারুকে গ্রেপ্তার করে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে।
নোয়াখালীর কবিরহাটে পুকুরের পানিতে ডুবে সহোদর দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের রামেশ্বপুর গ্রামের ছর আলী মাঝি বাড়ির পুকুরে বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো দুই শিশু হলো সাত বছর বয়সী বিবি ফাতেমা বেগম ও তার চার বছরের ভাই আবিদ হোসেন। শিশুদ্বয় ছর আলী মাঝি বাড়ির আবদুল হাইয়ের সন্তান।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি হুমায়ন কবির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘দুই ভাই-বোন সকালে ঘরের পাশে পুকুরে দাঁত ব্রাশ করতে যায়। এ সময় হাত-মুখ ধোয়ার সময় একজন পুকুরে পড়ে গেলে আরেকজন উদ্ধার করতে পানিতে নামে।
‘পরে দুজনই পানিতে ডুবে যায়। একপর্যায়ে পরিবারের সদস্যরা দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত বলে জানান।’
তিনি আরও বলেন, ‘মরদেহ স্বজনরা নিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়।’
আরও পড়ুন:ইস্টার সানডে, শবে কদর ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১৯ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি)।
আগামী ৩১ মার্চ থেকে শুরু হওয়া ছুটি শেষ হবে ১৮ এপ্রিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো.মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার এ তথ্য জানানো হয়।
এতে উল্লেখ করে বলা হয়, ‘৩১ মার্চ থেকে ১৮ এপ্রিল ১৯ দিন সকল ধরনের ক্লাস কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ৩১ মার্চ ইস্টার সানডে উপলক্ষে এক দিন এবং ৭ থেকে ১৮ এপ্রিল ১২ দিন পবিত্র শবে কদর ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস বন্ধ থাকবে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকাকালীন সকল ধরনের সিকিউরিটি ও জরুরি সেবাসমূহ বহাল থাকবে।’
মন্তব্য