ইসরায়েলের নতুন জোট সরকারের সম্ভাব্য অংশ হতে যাচ্ছে ইসলামপন্থি রাজনৈতিক দল ‘ইউনাইটেড আরব লিস্ট’। ইসরায়েলি পার্লামেন্টের অনুমোদন পেলে, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ১২ বছরের ক্ষমতার অবসান ঘটাবে এই জোট। ইসরায়েলি মন্ত্রিসভায় প্রথম আরব রাজনীতিক হিসেবে দেখা যাবে মনসুর আব্বাসকে।
কট্টর ইসলামি সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুডের আদর্শে অনুপ্রাণিত ‘ইউনাইটেড আরব লিস্ট’ ক্ষমতায় যেতে কীভাবে ইহুদি জাতীয়তাবাদীদের সঙ্গে গাটছড়া বেঁধেছে, সে বিষয়ে একটি বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে আরব নিউজ। নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য সেটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন রুবাইদ ইফতেখার।
কথায় আছে শাসন করা মানে বাছাই করা। আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, ইসরায়েলের নতুন জোট সরকারের সম্ভাব্য অংশ হতে যাওয়া ‘ইউনাইটেড আরব লিস্ট’ নেতা মনসুর আব্বাসকে সামনের কয়েক মাসে কয়েকটি কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে।
আব্বাস গত বুধবার মধ্যপন্থি ইয়েশ আতিদ পার্টির ইয়াইর লাপিদ ও ডানপন্থি ইয়েমিনার নাফতালি বেনেটের নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দেয়ার ঘোষণা দেন।
ইয়েমিনার মতো ইহুদি জাতীয়তাবাদী দলের সঙ্গে একটি ইসলামি দলের যোগ দেয়ার খবরটি ফিলিস্তিন বা বৃহত্তর আরব বিশ্বের নজর এড়ায়নি।
এ ঘটনাকে জটিল মুহূর্তে মুসলিম ব্রাদারহুড থেকে অনুপ্রেরণা পাওয়া কোনো দলের কাছে আদর্শের চেয়ে ক্ষমতা ও স্বার্থকে উপরে স্থান দেয়ার আরেকটি উদাহরণ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. হামদান আল শেহরি আরব নিউজকে বলেন, ‘খবরটা চমকপ্রদ না। ব্রাদারহুডের সহযোগী দলগুলো তাদের রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য সব সময়েই সব রকম পন্থা অবলম্বন করেছে।’
তিনি যোগ করেন, ‘নিজ দেশের সরকার ছাড়া অন্য যে কারও সঙ্গে মুসলিম ব্রাদারহুডের সহযোগিতার দীর্ঘ নাটকের আরেকটি পর্ব হলো এই সমঝোতা।’
তবে স্বার্থসিদ্ধির এই ঘটনা কতদিন টেকে সেটাই এখন দেখার বিষয়। ইসরায়েলি পার্লামেন্ট কেনেসেটের অনুমোদন পেলে, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ১২ বছরের ক্ষমতার অবসান ঘটাবে এই জোট। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল গঠনের পর কোনো আরব পার্টির ইসরায়েলি সরকারের অংশ হওয়ার প্রথম ঘটনাও হবে এটি।
আব্বাস যদি মন্ত্রী হন তাহলে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভায় প্রথম আরব রাজনীতিক হবেন তিনি। ইহুদি-ইসরায়েলি ভোটার ও রাজনীতিবিদেরা এর আগে এ ধরনের অংশগ্রহণকে রাষ্ট্রের ইহুদি আদর্শের সঙ্গে আপসের বড় একটি পদক্ষেপ বলে গণ্য করেছেন।
নির্বাচনে জয়ের পর উত্তর ইসরায়েলের মাগহারে সমর্থকদের সঙ্গে ইউনাইটেড আরব লিস্ট নেতা মনসুর আব্বাসের উল্লাস
আরব রাজনীতিকরাও হয়ত কিছুটা নার্ভাস। কারণ তারা এমন একটা দেশের সরকারের অংশ হতে যাচ্ছেন, যেটির বৈধতা ও রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকার অধিকারের বিষয়টি অধিকাংশ আরব দেশ ও মুসলিম বিশ্বে অত্যন্ত বিতর্কিত।
এই রাজনীতিকদের মধ্যে যেমন নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টির দ্রুজ সদস্যরা রয়েছেন, তেমনি আছেন সেকুলার হাদাশ কমিউনিস্টরা। একইভাবে আছেন দক্ষিণ ইসরায়েলের প্রান্তিক ও সংখ্যালঘু বেদুইন জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা, যাদের অনেকেই ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সে (আইডিএফ) স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেন।
এরপরই আছে আব্বাসের ইউনাইটেড আরব লিস্ট, যেটিকে হিব্রু ভাষায় সংক্ষেপে বলা হয় রাম। ইসরায়েলের ইসলামিক মুভমেন্টের একাংশ হচ্ছে ইউনাইটেড আরব লিস্ট যাকে মুসলিম ব্রাদারহুডের সহযোগী ধরা হয়।
অন্যদিকে, গাজা উপত্যকার পরিচালক ও পশ্চিম তীরে অত্যন্ত জনপ্রিয় জঙ্গি গোষ্ঠী হামাস তাদের বন্ধু ও উৎস হিসেবে মুসলিম ব্রাদারহুডের কথা গোপনের চেষ্টা খুব একটা করে না। আর ইউনাইটেড আরব লিস্টও এই মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে সম্পর্কিত। মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও সৌদি আরবসহ বেশ কয়েকটি দেশ মুসলিম ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
২০১৫ সালে ইসরায়েল সরকার ইসলামিক মুভমেন্টকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। সংগঠনের উত্তরাঞ্চলের উম আল ফাহম শহরের নেতা রায়েদ সালাহকে সহিংসতার জন্য বেশ কয়েকবার জেল খাটতে হয়েছে।
২০১৯ সালে কেনেসেটে নির্বাচিত মাঘার গ্রামের ডেন্টিস্ট আব্বাস তার চেয়ে কিছুটা নমনীয় স্বভাবের। প্রচলিত আছে যে, সংগঠনের দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যপন্থি অংশ থেকে তার আগমন, তবে তিনি একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের (আইসিজি) ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত বিষয়ক জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক মাইরাভ জনসজাইন আরব নিউজকে বলেন, ‘নাফতালি বেনেটের সঙ্গে মানসুর আব্বাসের কাজ করার সিদ্ধান্ত অবাক করার মতো নয়, কারণ তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে নেতানিয়াহুকে সহযোগিতা করে আসছিলেন।’
বেনেট সফটওয়্যার কোম্পানির মালিক হয়ে কোটিপতি বনে যাওয়ার আগে সায়েরাত মাটকাল ও মাগলানের মতো আইডিএফের স্পেশাল ফোর্সেস ইউনিটের হয়ে বহু যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর চার বছরের ক্ষমতাকালের প্রথম দুই বছর দায়িত্বে থাকবেন।
বেনেট-আব্বাসের জোট ‘জয়েন্ট লিস্ট অ্যালায়েন্স অফ আরব পার্টিস’ নিয়ে মন্তব্য করার সময় জোনসজাইন বলেন, ‘বামপন্থি ফিলিস্তিনি দলগুলোর চেয়ে ইহুদি ডানপন্থি দলগুলোর সঙ্গে আব্বাসের মিল বেশি।’
তিনি যোগ করেন, ‘এই জোট আসলে কেমন করবে সেটা এখন দেখার অপেক্ষা। এই জোটের সৃষ্টি ইসরায়েলি রাজনীতিতে বামপন্থি ইহুদিদের নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া ও নেতানিয়াহুর আধিপত্যের কারণে সৃষ্টি হওয়া অচলাবস্থার সংকেত দেয়।’
সত্যি কথা বলতে, ‘ইউনাইটেড আরব লিস্ট’ রাজনৈতিক ক্ষমতা ভাগাভাগির সুযোগ দেখে লাফিয়ে ওঠা প্রথম ইসলামপন্থি দল নয়। বহু ইসলামপন্থিই বলেছেন, গণতন্ত্র পশ্চিমাদের আবিষ্কার ও আল্লাহ প্রদত্ত আইনের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। যদিও তাদের বাস্তব কার্যক্রমে এই দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োগ কম।
একেবারেই অবাক করার মতো বিষয় নয় যে, গণতান্ত্রিক নির্বাচন ও সরকার ব্যবস্থায় ইসলামপন্থিদের অংশগ্রহণের ফল বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিপর্যয় ডেকে এনেছে।
মুসলিম ব্রাদারহুডের নিজ ঘর মিশরে, ২০১১ সালের আরব বসন্তে প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের পতনের পর নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রস্তাবে দলের কিছু সিনিয়র নেতা বেঁকে বসেন।
ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টির (এফজেপি) সাহায্যে নির্বাচিত হওয়ার পর মুহাম্মদ মুরসির সরকারে তারা একটি বিক্ষুব্ধ সময় কাটান। যা তাদেরকে মোবারকবিরোধী আন্দোলন শুরু করা শিক্ষিত তরুণদের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। নারী ও দেশের খ্রিষ্টান সংখ্যালঘুদের সঙ্গেও দূরত্ব তৈরি হয়।
এই সংগঠনের গণতন্ত্রের প্রতি দায়বদ্ধতাকে প্রশ্নের ঊর্ধ্বে রাখতে পারেননি সমালোচকেরা। তাদের কাছে মুরসির সরকার গঠনের সিদ্ধান্তকে মনে হয়েছে এক ধরনের নৈরাশ্যবাদী ক্ষমতার লোভ।
তিউনিশিয়ায় ২০১১ সালে বেন আলি সরকারের পতনের পর কার্যকর সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সমঝোতার সঙ্গে একটি ইসরায়েলবিরোধী, জাতীয়তাবাদবিরোধী, প্যান-ইসলামিক ইসলামপন্থি বৈশ্বিক দর্শনের পুনর্মিলন ঘটাতে ঘাম ঝরাতে হচ্ছে দেশটির সংসদের স্পিকার রাশেদ ঘানুশিকে।
মুসলিম ব্রাদারহুডের কিছু নেতা ব্রিটেনে থাকেন। দেশটির সিনিয়র সরকারি কর্মচারী ও কূটনীতিকেরা আন্তর্জাতিক ইসলামিক নেটওয়ার্কের পর্যালোচনায় এর অংশ বিশেষে ‘সহিংস চরমপন্থার সঙ্গে এক দ্ব্যর্থবোধক সম্পর্ক’ খুঁজে পেয়েছেন।
তুরস্কেও কয়েকজন মুসলিম ব্রাদারহুড নেতার বাস। দেশটির সরকার প্রধান রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান, যার রাজনৈতিক দল একেপিকে ধরা হয় নিও-অটোমান, তিনি কট্টর জাতীয়বাদীদের সঙ্গে রাজনৈতিক সখ্য গড়ে তুলেছেন।
নেতানিয়াহুকে হটিয়ে ইসরায়েলের ক্ষমতায় পরিবর্তন আনতে বিরোধীদের একমঞ্চে আনতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেন ইয়েশ আতিদ পার্টির নেতা ইয়াইর লাপিদ (উপরে বাঁয়ে)। ছবি: এএফপি
ইসরায়েলে সরকারের অংশ হয়ে আব্বাস ঠিক কী পাচ্ছেন সেটা এখনও পরিষ্কার নয়। গত মাসে গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরে বসবাসকারী ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংঘর্ষের পর তাকে সাবধানে হিসাব করতে হবে।
১০ মে থেকে টানা ১২দিন হামাসের সহযোদ্ধারা আইডিএফের সঙ্গে মিসাইল ও গুলি বিনিময় করে। সংঘর্ষে প্রায় ২৫০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন যাদের অধিকাংশই শিশু ও নারী। হামাসের রকেট হামলায় মারা যান অন্তত ১২ জন ইসরায়েলি নাগরিক।
সংঘর্ষ চলাকালীন ইসরায়েলের মিশ্র বসতির শহর জাফা, লোদ, হাইফা, আক্রে ও নাজারেথে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভ, যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও দালান-কোঠায় ভাংচুর সামলাতে ইসরায়েলি বর্ডার পুলিশের ব্যাটালিয়নগুলোকে দ্রুত দেশের মধ্যে নিয়ে আসা হয়।
ইসরায়েলে বসবাসরত ফিলিস্তিনের মধ্যে বেকারত্বের হার উচ্চ, যেটাকে তারা বৈষম্য হিসেবেই দেখে। মোট জনসংখ্যার ২১ ভাগ হওয়ার পরও তারা ইসরায়েলি ইহুদিদের চেয়ে কম শিক্ষিত ও ধনী। তবে পশ্চিম তীর, গাজা ও আরব বিশ্বের অন্যান্য জায়গায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের চেয়ে তাদের জীবনমান উন্নত।
এমন কঠিন পরিস্থিতিতে ইসরায়েলি জনগণ, ইসরায়েল, পশ্চিম তীর ও গাজায় বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের কাছে সরকারে আব্বাসের অন্তর্ভুক্তি বাস্তবিক ও প্রতীকী ভাবে কী পরিবর্তন আনবে?
আইসিজির বিশ্লেষক জোনসজাইন এই বিষয়ে আরব নিউজকে বলেন, ‘একদিকে যেমন ফিলিস্তিনি একটি দলের জোটের অংশ হওয়া ট্যাবুগুলো ভাঙছে ও ভবিষ্যতের জন্য উদাহরণ তৈরি করছে; তেমনি অন্যদিকে, এটাও বিশ্বাস করার কারণ নেই যে, এতে করে ফিলিস্তিনি নাগরিকদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক ও ধ্বংসাত্মক রাষ্ট্রীয় নীতিতে মৌলিক কোনো পরিবর্তন আসবে।’
আরও পড়ুন:এক ব্রিটিশ কর্মকর্তা অনিচ্ছাকৃতভাবে আফগান আবেদনকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস করার পর গোপন একটি পরিকল্পনার মাধ্যমে হাজার হাজার আফগান নাগরিককে যুক্তরাজ্যে নিয়ে আসা হয়েছিল। সম্প্রতি সেই তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করার পর যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের জন্য যেসব আফগান নাগরিক আবেদন করেছিলেন, তাদের মধ্যে প্রায় ১৯ হাজার জনের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়ে যায়। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের আগস্টে সেই ফাঁস হওয়া কিছু তথ্য ফেসবুকের মাধ্যমে প্রকাশ্যে চলে আসে। তখন বিষয়টি ব্রিটিশ সরকারের নজরে আসে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ওই ঘটনার নয় মাস পর ফাঁস হওয়া তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের জন্য একটি নতুন পুনর্বাসন প্রকল্প চালু করা হয়। ওই প্রকল্পের আওতায় এখন পর্যন্ত সাড়ে চার হাজার আফগান যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন।
তবে তথ্য ফাঁস ও পুনর্বাসনের বিষয়টি এতদিন গোপন রাখা হয়েছিল। কারণ সরকার এ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ ঠেকাতে একটি ‘সুপার ইনজাঙ্কশন’ জারি করে বিষয়টির জনসমক্ষে প্রকাশ হওয়া প্রতিহত করেছিল।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) হাইকোর্টের এক বিচারক গোপনীয়তা আদেশ প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। এরপরই তথ্য ফাঁস, সরকারের পদক্ষেপ এবং এই প্রকল্পের অধীনে কতজন আফগান যুক্তরাজ্যে বসবাসের অনুমতি পেয়েছেন—এসব নিয়ে প্রথমবারের মতো বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ্যে আসে।
ফাঁস হওয়া তথ্যের মধ্যে ছিল আবেদনকারীদের নাম, যোগাযোগের তথ্য ও কিছু পারিবারিক তথ্য, যা তালেবানদের কাছ থেকে হুমকির কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে তথ্য ফাঁসের জন্য যিনি দায়ী ছিলেন, সেই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করেনি ডাউনিং স্ট্রিট।
এ বিষয়ে এক সরকারি মুখপাত্র বলেন, ‘ব্যক্তিগত বিষয়ে আমরা কোনো মন্তব্য করব না।’
ব্রিটিশ সরকার আরও জানিয়েছে, ফাঁস হওয়া তালিকায় থাকা ৬০০ আফগান সেনা এবং তাদের পরিবারের ১ হাজার ৮০০ সদস্য এখনো আফগানিস্তানে রয়েছেন বলে ধারণা করছে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এই কর্মসূচি বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, তবে এখনো আফগানিস্তানে অবস্থান করা আবেদনকারীদের দেওয়া পুনর্বাসনের প্রস্তাবগুলো বিবেচনায় রাখা হবে।
সরকারি তথ্যমতে, গোপন এই কর্মসূচির নাম ছিল ‘আফগান রিলোকেশন রুট’। এই কর্মসূচির ব্যয় এখন পর্যন্ত ৪০০ মিলিয়ন পাউন্ড এবং ভবিষ্যতে আরও ৪০০ থেকে ৪৫০ মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় হতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছে।
ব্রিটিশ সরকার জানায়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক অজ্ঞাত কর্মকর্তার অনিচ্ছাকৃত ভুলে তথ্যগুলো ফাঁস হয়েছিল। যাদের তথ্য ফাঁস হয়েছে, এ বিষয়ে মঙ্গলবারই তাদের জানানো হয়েছে।
হাউস অব কমনসে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হিলি তথ্য ফাঁসের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘এটি ঘটেছিল সরকার অনুমোদিত সিস্টেমের বাইরে একটি স্প্রেডশিট ইমেইল করার কারণে।’
এটিকে তিনি ‘গুরুতর বিভাগীয় ভুল’ হিসেবে উল্লেখ করেন। কনজারভেটিভ পার্টির নেতা কেমি ব্যাডেনকও তার দলের পক্ষ থেকে ওই ঘটনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তবে পুলিশ জানিয়েছে, এ নিয়ে কোনো ফৌজদারি তদন্তের প্রয়োজন নেই।
হিলি বলেন, এ ঘটনা ছিল আফগানিস্তান থেকে লোকজন সরিয়ে নেওয়ার সময় ঘটে যাওয়া অনেকগুলো তথ্য ফাঁসের একটি। এতে শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, সরকারি কর্মকর্তা ও এমপিদের নামও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
মঙ্গলবার হাইকোর্টের একটি রায় প্রকাশ্যে আসার পর বিচারক চেম্বারলেইন বলেন, এটি পুরোপুরি সম্ভব যে ফেসবুক গ্রুপে ফাঁস হওয়া নথির কিছু অংশ যারা দেখেছেন, তাদের মধ্যে কেউ কেউ তালেবান অনুপ্রবেশকারী ছিলেন বা তালেবান-ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছেন।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে আশঙ্কা করা হয়েছিল, তালিকায় যেসব ব্যক্তি বা তাদের পরিবারের সদস্যদের নাম রয়েছে, তারা মৃত্যু বা গুরুতর ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন। এমনকি এই সংখ্যা এক লাখ পর্যন্ত হতে পারে।
তবে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিচালিত এক পর্যালোচনায় বলা হয়, কেবল ফাঁস হওয়া তথ্যের কারণে কাউকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হতে পারে—এমন সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ প্রাথমিকভাবে যেভাবে ভাবা হয়েছিল, তথ্য তার থেকে কম ছড়িয়েছে। অবশ্য এই কারণে কতজনকে গ্রেপ্তার বা হত্যা করা হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত করেনি মন্ত্রণালয়।
ওই পর্যালোচনায় এই গোপন প্রকল্পকে ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করা হয় এবং তথ্য ফাঁসের ঝুঁকি ‘সীমিত’ ছিল বলে মত দেওয়া হয়।
এ ছাড়া, এই তথ্য ফাঁসের কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের একটি ইমেইল পাঠিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যেমন: নিজের অনলাইন কার্যক্রমে গোপনীয়তা রক্ষা কিংবা অপরিচিত ব্যক্তিদের কোনো বার্তার জবাব না দেওয়া ইত্যাদি।
হিলি জানান, যারা ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্যে স্থানান্তরিত হয়েছেন, তাদের অভিবাসন পরিসংখ্যানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
পুরো ঘটনাপ্রবাহ ছিল ‘অভূতপূর্ব’
বিবিবির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালের আগস্টে যখন মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তান ছেড়ে আসে এবং তালেবানরা সরকারি ক্ষমতা দখলে নেয়, তখন এই ঘটনার সূত্রপাত ঘটে।
ফাঁস হওয়া তালিকায় ছিল আফগান রিলোকেশনস অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্স পলিসিতে আবেদনকারীদের নাম। তালেবারনা প্রতিশোধ নিতে পারেন বলে যেসব আফগানরা আশঙ্কায় ছিলেন, তাদের দ্রুত আবেদন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যুক্তরাজ্যে আনার জন্য এ নীতি চালু করেছিল ব্রিটিশ সরকার।
এই পুনর্বাসন কার্যক্রমের মাধ্যমে ৩৬ হাজার আফগান যুক্তরাজ্যে স্থানান্তরিত হন। ২০২২ সালে ব্রিটিশ ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির এক তদন্তে এটিকে ‘ব্যর্থতা’ ও ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়।
তথ্য ফাঁসের পর যখন সরকার নতুন প্রকল্প চালু করে, তখন সংবাদমাধ্যমগুলো দ্রুত বিষয়টি আঁচ করতে পারে। এরপর সরকার আদালতের কাছে সংবাদমাধ্যমগুলোকে তথ্য ফাঁস সংক্রান্ত কোনো কিছু প্রকাশে বাধা দেওয়ার জন্য আদেশ চেয়ে আবেদন করে।
পরে আদালত এমন একটি আদেশ দেয়, যা শুধু তথ্য ফাঁসের বিবরণ নয়, এই আদেশ জারি হওয়ার তথ্য নিয়েও সংবাদ প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ফলে এতদিন বিষয়টি প্রকাশ্যে আসেনি।
চীনের বিচার মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে প্রকাশিত একটি বিতর্কিত অ্যাকাডেমিক জার্নাল প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস (ওইউপি)। দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশনায় থাকা কিছু প্রবন্ধে ডিএনএ সংগ্রহ সংক্রান্ত নৈতিক মানদণ্ড নিয়ে উদ্বেগ থাকায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফরেনসিক সায়েন্স রিসার্চ (এফএসআর)-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, চলতি বছরের শেষ নাগাদ জার্নালটির প্রকাশনা বন্ধ করবে ওইউপি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ২০২৫ সালের পর থেকে এফএসআরের কোনো গবেষণাপত্র প্রকাশ করবে না ওইউপি। প্রকাশিত সর্বশেষ সংখ্যাটি হবে ভলিউম ১০, ইস্যু ৪।
এফএসআর হচ্ছে চীনের অ্যাকাডেমি অব ফরেনসিক সায়েন্সের একটি জার্নাল, যা দেশটির বিচার মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়। ফরেনসিক মেডিসিন বিষয়ে এটি চীনের একমাত্র ইংরেজি ত্রৈমাসিক জার্নাল হিসেবে পরিচিত। ওইউপি ২০২৩ সাল থেকে এটি প্রকাশ করে আসছে।
এফএসআরে প্রকাশিত বেশ কয়েকটি প্রবন্ধ এরই মধ্যে সমালোচনার মুখে পড়েছে। চীনে নজরদারির আওতায় থাকা উইঘুর ও অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘুদের জেনেটিক তথ্য নিয়ে গবেষণার অভিযোগে এসব প্রবন্ধ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়।
সমালোচকদের ভাষ্য, এসব গবেষণায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা হয়তো তাদের ডিএনএ নমুনা গবেষণায় ব্যবহারের জন্য স্বেচ্ছায় সম্মতি দেননি। তাছাড়া, এসব কর্মকাণ্ড সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর ওপর নজরদারি আরও বাড়াতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হয়।
২০২০ সালে চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের উরুমচিতে বসবাসরত ২৬৪ জন উইঘুরের রক্তের নমুনা নিয়ে একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়। গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়, সংশ্লিষ্টদের সম্মতিতেই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল এবং নমুনাদাতাদের পরিচয় গোপন রাখা হয়েছিল।
তবে সেই গবেষণার প্রধান লেখকের সঙ্গে চীনের নিরাপত্তা সংস্থার সম্পৃক্ততা ছিল এবং তিনি জিনজিয়াং পুলিশ কলেজ থেকে গবেষণা অনুদান পেয়েছিলেন।
২০২৪ সালে এক্সপ্রেশন অব কনসার্ন (উদ্বেগ প্রকাশ) শিরোনামে একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করে ওইউপি, যেখানে প্রশ্ন তোলা হয়— জিনজিয়াংয়ের উইঘুররা আদৌ কোনো গবেষণায় অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানানোর স্বাধীনতা পান কি না। তবে এখন পর্যন্ত ওই গবেষণাপত্রটি প্রত্যাহার করা হয়নি।
ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ নিয়ে নৈতিক উদ্বেগ থাকায় ওইউপি ২০২৩ সাল থেকে এফএসআরে প্রকাশিত দুটি গবেষণাপত্র প্রত্যাহার করে। এ গবেষণাগুলোর সঙ্গেও চীনা পুলিশ কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে জানা গেছে।
ফরেনসিক বিজ্ঞান গবেষণা সাধারণত পুলিশ কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। তবে চীনে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলো কোনো ভারসাম্যমূলক নিয়ন্ত্রণের আওতায় না থাকায়, এসব গবেষণা আন্তর্জাতিক নৈতিক মানদণ্ড পূরণ করে কি না— তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
প্রসঙ্গত, উইঘুররা দীর্ঘদিন ধরে চীনা কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারির মধ্যে রয়েছে। ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে প্রায় ১০ লাখ উইঘুরকে তথাকথিত ‘কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে’ আটকে রাখার অভিযোগ রয়েছে।
জিনজিয়াংয়ে চীন সরকারের এসব পদক্ষেপ মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে বলে সতর্ক করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য পরীক্ষার আড়ালে উইঘুরদের ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে তাদের ওপর নজরদারি আরও জোরদার করা যায়।
এফএসআর-এর সঙ্গে ওইউপির সংশ্লিষ্টতা ও ডিএনএ সংগ্রহের নৈতিকতা নিয়ে প্রথম প্রশ্ন তোলেন বেলজিয়ামের ইউনিভার্সিটি অব লুভেনের প্রকৌশল অধ্যাপক ইভ মোরো। তিনি বলেন, ‘ওইউপির পদক্ষেপের জন্য আমি কৃতজ্ঞ, তবে তারা গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয় উপেক্ষা করেছে।’
তবে এফএসআর-এর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করতে রাজি হয়নি ওইউপি।
গত কয়েক বছরে চীনের জেনেটিক গবেষণা সংক্রান্ত প্রবন্ধের নৈতিকতা নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যালোচনা বেড়েছে। মানবাধিকার ইস্যুতে উদ্বেগের কারণে একটি শীর্ষস্থানীয় বৈজ্ঞানিক প্রকাশনা সংস্থা গত বছর চীনের ১৮টি গবেষণাপত্র প্রত্যাহার করে নেয়।
মোরো বলেন, ‘ফরেনসিক জেনেটিক্স এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন, কারণ এ গবেষণাই পুলিশি ডিএনএ শনাক্তকরণ ও ডেটাবেইসকে শক্তি জোগায়।’
তাঁর মতে, ডিএনএ শনাক্তকরণ অপরাধ সমাধানে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি হলেও এটি গোপনীয়তা ও নৈতিকতার প্রশ্নও তোলে। মোরো আরও বলেন, ‘জিনজিয়াং ও তিব্বতে সংখ্যালঘুদের ওপর ব্যাপক নজরদারি থাকার কারণে, চীনে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী নৈতিক গবেষণা ও মানবাধিকারের প্রয়োগ নিশ্চিত করা অত্যন্ত কঠিন।’
আর্থিক নীতিমালা ভঙ্গের দায়ে বার্সেলোনা, চেলসি, অ্যাস্টন ভিলা, অলিম্পিক লিওঁ ও রোমাকে বড় অঙ্কের জরিমানা করেছে ইউরোপীয় ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফা। পাশাপাশি এই ক্লাবগুলোর বিরুদ্ধে উয়েফার প্রতিযোগিতায় নতুন খেলোয়াড় নিবন্ধনের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
উয়েফার ক্লাব ফিন্যান্সিয়াল কন্ট্রোল বডি (সিএফসিবি) এই জরিমানা করেছে। উয়েফা বলছে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ক্লাব ফুটবলে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে চায় সংস্থাটি।
উয়েফার আর্থিক নিরীক্ষা অনুযায়ী, ২০২৪ সালের উয়েফার নির্ধারিত আর্থিক লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় ক্লাবগুলো এই জরিমানার মুখে পড়েছে। পরের মৌসুমে ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি হলে আরও বড় জরিমানা গুনতে হতে পারে ক্লাবগুলোকে।
এক বিবৃতিতে সিএফসিবি জানিয়েছে, ‘সম্পদ বিক্রি, খেলোয়াড় বিনিময় এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষের মধ্যে খেলোয়াড় স্থানান্তরের মাধ্যমে যে আয় হয়, তা ক্লাবের হিসাব-নথিতে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না।’
ক্লাব বিশ্বকাপে আজ ব্রাজিলের ক্লাব পালমেইরাসকে হারিয়ে সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছে ইংলিশ জায়ান্ট চেলসি। এমন খুশির দিনেও ক্লাবটিকে দুঃসংবাদ শুনতে হলো।
এই জরিমানার সবচেয়ে বড় অঙ্ক গুনতে হচ্ছে চেলসিকে। ক্লাবটিকে সর্বোচ্চ ৩১ মিলিয়ন ইউরো (৩৬.৫ মিলিয়ন ডলার) জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে আয়ের বিধি লঙ্ঘনের দায়ে ২০ মিলিয়ন ইউরো এবং স্কোয়াড গড়তে ব্যয়ের নীতিমালা ভঙ্গের অভিযোগে আরও ১১ মিলিয়ন জরিমানা করা হয়েছে। এটি এক মৌসুমে কোনো ক্লাবকে উয়েফার করা সর্বোচ্চ জরিমানা।
তবে এই শাস্তি এখানেই শেষ নয়; নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ক্লাবের আর্থিক শৃঙ্খলা নিশ্চিত না করতে পারলে তাদের আরও ৬০ মিলিয়ন ইউরো (৭১ মিলিয়ন ডলার) অতিরিক্ত জরিমানা গুনতে হতে পারে।
অন্যদিকে, গত কয়েক বছর ধরে আর্থিক সংকটে ভুগতে থাকা বার্সেলোনার ঘাড়ে চেপেছে ১৫ মিলিয়ন ইউরো (১৭.৭ মিলিয়ন ডলার) জরিমানা খড়্গ।
এর আগেও একবার উয়েফার জরিমানার কবলে পড়েছিল বার্সেলোনা। ২০২৩ সালে আয়ের তথ্য গোপন করার অভিযোগে কাতালান ক্লাবটিকে ৫ লাখ ইউরো জরিমানা করেছিল সংস্থাটি।
এ ছাড়া অর্থনৈতিক সংকটে ধুঁকতে থাকা ফরাসি ক্লাব লিওঁকে জরিমানা করা হয়েছে সাড়ে ১২ লাখ ইউরো। নির্দিষ্ট আর্থিক লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হলে ভবিষ্যতে আরও বড় অঙ্কের জরিমানা দিতে হতে পারে এই ক্লাবটিকেও।
আমেরিকান ব্যবসায়ী জন টেক্সটরের মালিকানাধীন লিওঁ বর্তমানে আর্থিক দুরবস্থার কারণে ফরাসি ঘরোয়া লিগ ‘লিগ আ’ থেকে অবনমনের বিরুদ্ধে লড়ছে। আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে ক্লাবটির করা আপিলের শুনানি হওয়ার কথা। তাছাড়া, উয়েফা-নির্ধারিত লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হলে লিওঁ আগামী মৌসুমে ইউরোপা লিগ থেকেও বাদ পড়তে পারে।
এই ক্লাবগুলোর পাশাপাশি আরেক ইংলিশ ক্লাব অ্যাস্টন ভিলাকে ১১ মিলিয়ন ইউরো এবং ইতালির রোমাকে ৩ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা গুনতে হবে।
উয়েফার শর্ত অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট ক্লাবগুলোকে দুই থেকে চার বছরের নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে উয়েফার আয়ের নীতিমালার সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্য ফেরাতে হবে।
সিরিয়ায় ওপর ইসরাইলের ধারাবাহিক হামলার নিন্দা জানিয়ে তা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি।
তেহরান থেকে এএফপি এই খবর জানিয়েছে।
বুধবার এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘ইসরাইল ‘লাগামহীন আগ্রাসন’ চালাচ্ছে যার কোনো সীমা নেই। বিশ্ববাসীকে, বিশেষ করে এই অঞ্চলকে একত্রিত হয়ে ইসরাইলের এই আগ্রাসন থামাতে হবে।’
আরাগচি আরও বলেন, ‘ইরান সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার পক্ষে রয়েছে এবং সবসময় সিরীয় জনগণের পাশে থাকবে।’
গত মাসেই ইরান ও তাদের চিরশত্রু ইসরাইল এক মাসব্যাপী যুদ্ধে জড়ায়। এর পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার বলেছেন, যৌন অপরাধী জেফ্রি এপস্টিনকে নিয়ে বিচার বিভাগের তদন্তে যেসব ‘বিশ্বাসযোগ্য’ তথ্য রয়েছে, তা প্রকাশ করা উচিত। এপস্টিন ইস্যুতে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ট্রাম্পের নিজের রক্ষণশীল সমর্থকদের ভেতরে তীব্র ক্ষোভ দানা বাঁধছে এমন সময় তার এই বক্তব্য এলো।
ট্রাম্পের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ধনী ও প্রভাবশালীদের রক্ষায় এপস্টিন-সম্পর্কিত কেলেঙ্কারির তথ্য চাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, যা নিয়ে ট্রাম্পের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে এবারই সবচেয়ে বড় সমর্থন বিভাজনের মুখে পড়েছেন তিনি।
হোয়াইট হাউজে এপস্টিন মামলার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি বিষয়টি খুব ভালোভাবে সামলেছেন। এটা তার ওপর নির্ভর করছে। তিনি যা বিশ্বাসযোগ্য মনে করবেন, তা তিনি প্রকাশ করবেন।’
তবে একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, এপস্টিন-সংক্রান্ত এইসব নথি মূলত তার ডেমোক্র্যাটিক পূর্বসূরিদের ‘বানানো’। যদিও নির্বাচনের সময় একাধিকবার তিনি বলেছিলেন, এইসব নথি তিনি ‘সম্ভবত’ প্রকাশ করবেন।
ট্রাম্পের এই মন্তব্য তার পূর্ববর্তী অবস্থানের এক ধাপ নমনীয় রূপ। এর আগে তিনি ওভাল অফিসে ও অনলাইনে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, এপস্টিন নিয়ে তার সমর্থকদের এই আগ্রহ তিনি বুঝতে পারছেন না এবং তারা যেন এই বিষয়টি থেকে এগিয়ে যায়।
তিনি বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না, কেন জেফ্রি এপস্টিনের ঘটনা কারো আগ্রহের বিষয় হবে। এটা খুবই বিরক্তিকর বিষয়।’
ট্রাম্পের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ (মাগা) আন্দোলনের অনুগত অংশের বহুদিন ধরেই বিশ্বাস যে, ডিপ স্টেটের অভিজাতরা এপস্টিনের ডেমোক্র্যাট ঘনিষ্ঠ প্রভাবশালী বন্ধুদের রক্ষায় সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
এপস্টিন ইস্যুতে ষড়যন্ত্রমূলক নানা তত্ত্বকে তার প্রশাসন কার্যত নাকচ করে দেওয়ার পর থেকেই সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়তে থাকে।
এফবিআই ও বিচার বিভাগ এ মাসের শুরুতে প্রকাশিত এক স্মারকে জানায়, তারা কোনো ‘ক্লায়েন্ট তালিকা’ বা ব্ল্যাকমেইল সংক্রান্ত প্রমাণ খুঁজে পায়নি। তারা আরও জানায়, এপস্টিনের মৃত্যুর কারণ ছিল আত্মহত্যা, এবং তদন্ত-সম্পর্কিত আর কোনো তথ্য প্রকাশ করা হবে না।
এই প্রথম ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে এপস্টিন-সম্পর্কিত বিভিন্ন ডানপন্থী ষড়যন্ত্র তত্ত্ব সরাসরি অস্বীকার করা হলো। অথচ এর আগে, এমনকি ডানপন্থীদের নিয়োগ করা শীর্ষ এফবিআই কর্মকর্তারাও এসব তত্ত্ব উসকে দিয়েছিলেন।
এই ইস্যুতে প্রশাসনের অভ্যন্তরেও বিভাজন দেখা গেছে। পাম বন্ডি ও এফবিআই’র ডেপুটি ডিরেক্টর ড্যান বংগিনোর মধ্যে বিস্ফোরক বাক-বিতণ্ডা হয়েছে বলে জানা গেছে। বংগিনো পদত্যাগের কথাও ভাবছেন।
ট্রাম্পের নিরুত্তাপ প্রতিক্রিয়া সমর্থকদের ক্ষোভ প্রশমনে ব্যর্থ হয়েছে। ডানপন্থী বহু প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব এখনো তাঁকে তীব্র সমালোচনায় বিদ্ধ করছেন।
এমনকি ফক্স নিউজ উপস্থাপক ও ট্রাম্পের পুত্রবধূ লারা ট্রাম্পও প্রশাসনের কাছ থেকে ‘আরও স্বচ্ছতা’ দাবি করেছেন।
মার্কিন কংগ্রেসে ট্রাম্পের সবচেয়ে বড় মিত্র, স্পিকার মাইক জনসনও মঙ্গলবার এপস্টিন ইস্যুতে প্রশাসনের তথ্য প্রকাশের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। বেনি জনসনের ইন্টারনেট শোতে তিনি বলেন, ‘সবকিছু প্রকাশ করা হোক, জনগণ সিদ্ধান্ত নিক।’
তিনি পাম বন্ডি যেন তার বক্তব্যে অসঙ্গতির কারণ ‘ব্যাখ্যা দিতে এগিয়ে আসেন’।
বন্ডি গত ফেব্রুয়ারিতে ফক্স নিউজকে বলেছিলেন, তার ডেস্কে এপস্টিনের ‘ক্লায়েন্ট তালিকা’ রয়েছে পর্যালোচনার জন্য, কিন্তু পরে তিনি আবার বলেন, এমন কোনো তালিকা আসলে নেই।
২০১৯ সালে নিউইয়র্কের এক কারাগারে এপস্টিন আত্মহত্যা করেন। তার বিরুদ্ধে নাবালিকাদের যৌন উদ্দেশ্যে পাচারের অভিযোগ ছিল।
নির্বাচনের আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি এপস্টিন-সম্পর্কিত নথি প্রকাশে ‘কোনো সমস্যা’ দেখেন না।
জিজ্ঞেস করা হলে যে, এপস্টিনুসংক্রান্ত কোনো নথিতে তাঁর নাম আছে কি না, ট্রাম্প বলেন, ‘না’, এবং যোগ করেন, বন্ডি তাকে ‘খুব সংক্ষিপ্তভাবে অবহিত করেছেন।’
সিরিয়ার দক্ষিণের সুবাইদা প্রদেশে গত সপ্তাহের শেষ দিকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৩৫০ জন ছাড়িয়েছে।
দামেস্ক থেকে এএফপি জানিয়েছে, সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস নামে যুক্তরাজ্যভিত্তিক এক যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থা বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) এই তথ্য জানিয়েছে। এর আগে নিহতের সংখ্যা ৩০০ বলে জানানো হয়েছিল।
সংস্থাটি জানিয়েছে, রোববার থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৭৯ জন দ্রুজ যোদ্ধা এবং ৫৫ জন সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছেন। এই সাধারণ মানুষদের মধ্যে ২৭ জনকে সরাসরি গুলি করে হত্যা করেছে প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সদস্যরা। সংঘর্ষে প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১৮৯ সদস্য এবং ১৮ জন বেদুইন যোদ্ধাও প্রাণ হারিয়েছেন।
অবজারভেটরি জানিয়েছে, সুবাইদায় নিহতদের মধ্যে একজন মিডিয়া কর্মীও রয়েছেন, তার নাম হাসান আল-যাবি।
সিরিয়ান সাংবাদিক ইউনিয়ন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ‘অবৈধ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর’ গুলিতে তার মৃত্যু হয়। তবে তিনি কোন সংবাদমাধ্যমে কাজ করতেন, তা উল্লেখ করা হয়নি।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক এই পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ার ভেতরে তাদের নিজস্ব তথ্যসূত্রের ওপর নির্ভর করে কাজ করে।
তারা আরও জানিয়েছে, দক্ষিণ সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলায় ১৫ জন প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সদস্য নিহত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন বহুজাতিক পানীয় নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কোকা-কোলা যুক্তরাষ্ট্রে কোকা-কোলার পণ্যে খাঁটি আখের চিনি ব্যবহারের বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে কোকা-কোলার পানীয় প্রস্তুতে হাই-ফ্রুকটোজ কর্ন সিরাপ (এইচএফসিএস) ব্যবহার করা হয়। এটি একটি বিকল্প মিষ্টিকারক। এটি দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়র এবং তার নেতৃত্বাধীন ‘মেক আমেরিকা হেলদি অ্যাগেন’ আন্দোলনের সমালোচনার লক্ষ্য হয়ে এসেছে।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ লেখেন, ‘আমি কোকা-কোলার সঙ্গে কথা বলেছি যাতে তারা যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদিত কোকে খাঁটি আখের চিনি ব্যবহার করে। তারা এতে সম্মত হয়েছে। আমি কোকা-কোলা কর্তৃপক্ষের কাছে কৃতজ্ঞ। এটি একটি চমৎকার পদক্ষেপ হবে, দেখবেন, এটি নিঃসন্দেহে ভালো সিদ্ধান্ত!’
তবে ট্রাম্প এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যক্তিগত প্রণোদনার ব্যাখ্যা দেননি, বিশেষত এটি তার প্রিয় পানীয় ডায়েট কোক-এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
উল্লেখ্য, হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর তিনি ওভাল অফিসে আবার সেই বিশেষ বোতামটি বসিয়েছেন যা চাপলে তার জন্য ডায়েট কোক এনে দেওয়া হয়।
কোকা-কোলা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করেনি। সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতিতে তারা জানায় :
‘আমরা আমাদের প্রতীকী কোকা-কোলা ব্র্যান্ড নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উৎসাহের প্রশংসা করি। শিগগিরই আমাদের কোকা-কোলা পণ্যের নতুন উদ্ভাবনী উপস্থাপনাগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে।’
১৯৭০-এর দশকে কর্ন সিরাপ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কর্ন চাষে সরকারি ভর্তুকি এবং আখের চিনি আমদানিতে শুল্কের কারণে এটি আরও বিস্তৃতভাবে ব্যবহার শুরু হয়।
তবে কর্ন সিরাপ থেকে সরে আসার এই সিদ্ধান্ত মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলীয় কর্ন বেল্টের কৃষকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে। এই অঞ্চলটি ট্রাম্পের রাজনৈতিক ঘাঁটি হিসেবেও পরিচিত।
এইচএফসিএস ও সুক্রোজ (আখের চিনি) উভয়েই মূলত ফ্রুকটোজ ও গ্লুুকোজ দিয়ে তৈরি। তবে এইচএফসিএস-এ এই দুটি শর্করা আলাদাভাবে থাকে (মিশ্রণে সাধারণত ৫৫% ফ্রুকটোজ ও ৪৫% গ্লুকোজ), আর সুক্রোজে এরা রসায়নিকভাবে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত।
২০২২ সালের এক পর্যালোচনা অনুসারে, এই দুটি উপাদানের মধ্যে ওজন বৃদ্ধি বা হৃদ্রোগের ঝুঁকি সম্পর্কিত প্রভাবের পার্থক্য তেমন নয়। তবে এইচএফসিএস গ্রহণকারীদের মধ্যে দেহের প্রদাহের মাত্রা কিছুটা বেশি দেখা গেছে।
তবে, অনেক মার্কিন ভোক্তা মনে করেন আখের চিনিতে তৈরি কোক (যেমন মেক্সিকান কোক) স্বাদে বেশি ‘প্রাকৃতিক’। এজন্য এটি মার্কিন বাজারে উচ্চ দামে বিক্রি হয়।
অন্যদিকে, ট্রাম্পের প্রিয় ডায়েট কোকে ব্যবহৃত হয় অ্যাসপারটেম, যা আন্তর্জাতিক ক্যান্সার গবেষণা সংস্থা (ওঅজঈ) এর মতে একটি ‘সম্ভাব্য কার্সিনোজেন’ (ক্যান্সারের কারণ হতে পারে এমন উপাদান) হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ।
মন্তব্য