× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বিশেষ
বিডিনিউজে এলআর গ্লোবালের বিনিয়োগের উদ্দেশ্য মানি লন্ডারিং বিএসইসির তদন্ত
google_news print-icon

‘বিডিনিউজে এলআর গ্লোবালের বিনিয়োগের উদ্দেশ্য মানি লন্ডারিং’

বিডিনিউজে-এলআর-গ্লোবালের-বিনিয়োগের-উদ্দেশ্য-মানি-লন্ডারিং
বিডিনিউজের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী (বাঁয়ে) ও এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা রিয়াজ ইসলাম
বেআইনি এই বিনিয়োগে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে বিএসইসির তদন্ত কমিটি। তারা বলছে, আর্থিকভাবে ধুঁকতে থাকা বিডিনিউজের শেয়ারের দাম মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে ১২ হাজার ৪০০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এটি পুরোপুরি উদ্দেশ্যমূলক। এমন অবস্থায় মিউচ্যুয়াল ফান্ডের টাকা এলআর গ্লোবালের ব্যবস্থাপনায় থাকা আর নিরাপদ নয়।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এ এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশের বিনিয়োগে মানি লন্ডারিং আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ পেয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তদন্ত কমিটি। মিউচ্যুয়াল ফান্ড বিধিমালা লঙ্ঘন করে জনগণের অর্থ রুগ্ন প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি ও প্রতারণার মধ্যে ফেলে দেয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি বিডিনিউজে বিনিয়োগ করা ছয়টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের অর্থ দ্রুত ফেরত আনার সুপারিশ করেছে বিএসইসির তদন্ত কমিটি। তারা বলছে, আর্থিকভাবে ধুঁকতে থাকা বিডিনিউজের শেয়ারের দাম মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে ১২ হাজার ৪০০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এটি পুরোপুরি উদ্দেশ্যমূলক। এমন অবস্থায় মিউচ্যুয়াল ফান্ডের টাকা এলআর গ্লোবালের ব্যবস্থাপনায় থাকা আর নিরাপদ নয়।

আর্থিক সংকটে ভুগতে থাকা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা বদল হয় ২০০৬ সালে। প্রতিষ্ঠানটিকে বাঁচাতে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেন এডিএন টেলিকমের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফ মাহমুদ। ২০১৯ সালের মে মাসে আসিফ মাহমুদ নিজের হাতে থাকা ৮০ হাজার শেয়ার ৮০ লাখ টাকায় (প্রতি শেয়ারের দাম ১০০ টাকা) তৌফিক ইমরোজ খালিদীর কাছে বিক্রি করে প্রতিষ্ঠান থেকে সরে দাঁড়ান। ফলে আগের ২০ হাজার শেয়ারসহ মোট ১ লাখ শেয়ারের পুরোটার মালিকানা চলে যায় তৌফিক ইমরোজ খালিদীর কাছে।

এর মাত্র তিন মাসের মধ্যে তৌফিক ইমরোজ খালিদী তার নামে থাকা কোম্পানির ২০ হাজার শেয়ার ২৫ কোটি টাকায় এবং আরও ২০ হাজার নতুন শেয়ার ইস্যু করে ২৫ কোটি টাকায় এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা (সিআইও) রিয়াজ ইসলামের কাছে বিক্রি করেন। তিন মাস আগের হিসাবে শেয়ারপ্রতি ১০০ টাকা হিসেবে ৪০ হাজার শেয়ারের দাম ৪০ লাখ টাকা হওয়ার কথা থাকলেও সেগুলো বিক্রি হয়েছে ৫০ কোটি টাকায়। এ ক্ষেত্রে ১২ হাজার ৪০০ টাকা প্রিমিয়ামসহ প্রতিটি শেয়ার বিক্রি করা হয় ১২ হাজার ৫০০ টাকায়।

এ বিষয়ে গত বছরের শেষ দিকে বিএসইসির একটি তদন্ত প্রতিবেদনের অনুলিপি পেয়েছে নিউজবাংলা। বিএসইসির তিনজন উপপরিচালক মোহাম্মদ এমদাদুল হক, মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান ও এএসএম মাহমুদুল হাসানকে নিয়ে গঠিত এ তদন্ত কমিটি বিএসইসি চেয়ারম্যানের কাছে প্রতিবেদনটি জমা দেয় ২০২০ সালের ৩ নভেম্বর।

‘বিডিনিউজে এলআর গ্লোবালের বিনিয়োগের উদ্দেশ্য মানি লন্ডারিং’
বিডিনিউজে এলআর গ্লোবালের বিনিয়োগ নিয়ে বিএসইসির তদন্ত প্রতিবেদন

যেভাবে ব্যাপক অনিয়ম

বিএসইসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিডিনিউজের ৮০ শতাংশ শেয়ারের মালিক ছিলেন আসিফ মাহমুদ, বাকি ২০ শতাংশ ছিল তৌফিক ইমরোজ খালিদীর। প্রতিষ্ঠানটি ক্রমাগত লোকসানে থাকায় একপর্যায়ে আসিফ মাহমুদ তার তার পুরো শেয়ার বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন।

এ সময় ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দিদারুল আলমকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পদ মূল্যায়ন করে দেয়ার অনুরোধ করা হয়। দিদারুল আলম তখন সম্পদ মূল্যায়নের একটি খসড়া প্রতিবেদন তৈরি করে তৌফিক ইমরোজ খালিদীকে পাঠান, যেখানে কোনো চুক্তি, মূল্যায়ন ফি এবং সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তের স্বাক্ষর ছিল না।

তদন্ত প্রতিবেদনে এ বিষয়ে দিদারুলকে উদ্ধৃত করা বলা হয়, কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তির আগে সম্পদ মূল্যায়নের এ ধরনের খসড়া প্রতিবেদন তৈরি করা খুব সাধারণ একটি ঘটনা। বিডিনিউজ কর্তৃপক্ষের অনুরোধে ‘সরল বিশ্বাসে’ এ ধরনেরই একটি খসড়া পাঠানো হয়েছিল। কোনো ধরনের স্বাক্ষর ছাড়া পাঠানো ওই খসড়াটির উদ্দেশ্য ছিল, বিডিনিউজের সঙ্গে সম্পদ মূল্যায়নের আনুষ্ঠানিক চুক্তি করা। কিন্তু তৌফিক ইমরোজ খালিদী সেই খসড়া দেখিয়েই এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা রিয়াজ ইসলামের কাছে ১২ হাজার ৪০০ শতাংশ বেশি দামে শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দেন।

প্রতিষ্ঠানে বেতন নেই, শেয়ার বিক্রি ৫০ কোটি টাকায়

বিডিনিউজের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী ২০১৯ সালের ২২ মে আসিফ মাহমুদের কাছে থাকা ৮০ হাজার শেয়ার ১০০ টাকা অভিহিত মূল্যে ৮০ লাখ টাকায় কিনে নেন।

বিএসইসির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র-অভিবাসী রিয়াজ ইসলাম সেখানেই পরিবারের সঙ্গে থাকেন। তিনি এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা। রিয়াজ ইসলাম ২০১৯ সালে ১০ সেপ্টেম্বর তৌফিক ইমরোজ খালিদীর বাসায় যান। সেখানে বিডিনিউজে রিয়াজের বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনা হয়।

পরে রিয়াজ ইসলাম ৫০ কোটি টাকায় ৪০ হাজার শেয়ার কেনেন। যেখানে তৌফিক ইমরোজ খালিদীর ছিল ২০ হাজার শেয়ার এবং নতুন ইস্যু করা হয় আরও ২০ হাজার শেয়ার। এ-সংক্রান্ত খবর গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির ‘নিজস্ব তহবিল’ থেকে ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগের খবরে ২০১৯ সালের ১৩ অক্টোবর জরুরিভিত্তিতে বিএসইসির ৭০০তম কমিশন সভা আহ্বান করা হয়। সেই সভা থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশকে বিনিয়োগ-সম্পর্কিত সমস্ত দলিল উপস্থাপন করার নির্দেশ দেয়া হয়।

এরই মধ্যে ২০১৯ সালের ২৯ নভেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন বিএসইসিকে একটি চিঠি দিয়ে তৌফিক ইমরোজ খালিদীর সম্পদের সঙ্গে সংগতিহীন বিপুল আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে তথ্য জানতে চায়। বিএসইসি এরপর দুদকে পাঠানো চিঠিতে জানায়, বিষয়টি নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় তদন্ত কার্যক্রম চলছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এলআর গ্লোবাল এর আগেও ২০১৪ সালে আরেকটি প্রতিষ্ঠানে ৪৮ কোটি ৫৬ লাখ ৮০ হাজার ৫০০ টাকা বিধিবহির্ভূতভাবে বিনিয়োগ করে। বিষয়টি নিয়ে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে কমিশনের ৫৩৯তম সভায় আলোচনার পর এলআর গ্লোবালকে জরিমানা করা হয়। এলআর গ্লোবাল জরিমানার ১৫ শতাংশ পরিশোধের পাশাপাশি উচ্চ আদালতে রিট করে, যা শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

বিডিনিউজে বিনিয়োগে অনিয়েমর বিষয়টি তদন্তে স্বশরীরে অনুসন্ধানও চালিয়েছেন বিএসইসির তদন্ত কমিটির সদস্যরা। এলআর গ্লোবাল ও বিডিনিউজের কার্যালয়েও তারা পরিদর্শন করেন। তবে প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের সময় রিয়াজ ইসলাম ও তৌফিক ইমরোজ খালিদীর কাউকেই পাওয়া যায়নি।

এই দুটি প্রতিষ্ঠান থেকে গুরুত্বপূর্ণ নথি জব্দ করা হয়। পাশাপাশি রিয়াজ ও খালিদীকে জবাব দিতে লিখিত প্রশ্ন দিয়ে আসে তদন্ত কমিটি। সেসব প্রশ্নের লিখিত জবাব, জব্দ করা নথি পরে বিশ্লেষণ করে এই কমিটি।

‘বিডিনিউজে এলআর গ্লোবালের বিনিয়োগের উদ্দেশ্য মানি লন্ডারিং’
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী

উদ্দেশ্য মানি লন্ডারিং

বিডিনিউজে এলআর গ্লোবালের বিনিয়োগ করা ৫০ কোটি টাকার প্রায় পুরোটাই এসেছে তাদের নিয়ন্ত্রিত ছয়টি মিউচ্যুয়াল ফান্ড থেকে। পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত নয়, এমন কোনো প্রতিষ্ঠানে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের পাবলিক মানি এভাবে বিনিয়োগের মাধ্যমে সিকিউরিটি ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (মিউচ্যুয়াল ফান্ড) বিধিমালা, ২০০১-এর ৫৬ বিধির পরিষ্কার লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে।

১০ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনে বলা হয়, বিডিনিউজে এলআর গ্লোবালের নিজস্ব বিনিয়োগ মাত্র ১ কোটি টাকা। বাকি ৪৯ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে ছয়টি মিউচ্যুয়াল ফান্ড থেকে। প্রতিবেদনে ১২ হাজার ৪০০ শতাংশ বেশি দামে কোন প্রতিষ্ঠান কতটি শেয়ার কিনেছে, তার বিবরণও দেয়া হয়েছে।

এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি ৮০০ শেয়ার কিনেছে ১ কোটি টাকায়। ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড ৫ হাজার ১৬৬টি শেয়ার কিনেছে ৬ কোটি ৪৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকায়। গ্রিনডেল্টা মিউচ্যুয়াল ফান্ড ৬ হাজার ৪১৪টি শেয়ার কিনেছে ৮ কোটি ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকায়।

এ ছাড়া, এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামী মিউচ্যুয়াল ফান্ড ৪ হাজার ৩৪৮টি শেয়ার কিনেছে ৫ কোটি ৪৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায়। এমবিএল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড ৪ হাজার ৩৯৬টি শেয়ার কিনেছে ৫ কোটি ৪৯ লাখ ৫০ হাজার টাকায়। এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান ১৪ হাজার ৯৮টি শেয়ার কিনেছে ১৭ কোটি ৬২ লাখ ২৫ হাজার টাকায়। এনসিসিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড-ওয়ান ৪ হাজার ৭৭৮টি শেয়ার কিনেছে ৫ কোটি ৯৭ লাখ ২৫ হাজার টাকায়।

তদন্ত প্রতিবেদনে বিডিনিউজকে একটি ‘রুগ্ন প্রতিষ্ঠান’ আখ্যায়িত করে বলা হয়, এই প্রতিষ্ঠান ২০১৭ সালে থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর দেড় থেকে আড়াই কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের বেতন অনিয়মিত। অথচ এমন একটি লোকসানি প্রতিষ্ঠানে তিন মাসের ব্যবধানে ১০০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতিটি শেয়ারের সঙ্গে ১২ হাজার ৪০০ টাকা প্রিমিয়াম যুক্ত হওয়া অস্বাভাবিক।

এতে বলা হয়, রিয়াজ ইসলাম অবশ্যই জানতেন যে তার বন্ধু আসিফ মাহমুদ বিডিনিউজের প্রতিটি শেয়ার ১০০ টাকা দরে তৌফিক ইমরোজ খালিদীর কাছে বিক্রি করেছেন। তারপরেও এলআর গ্লোবাল মিউচ্যুয়াল ফান্ডের টাকা ‘অদক্ষতা ও প্রতারণার মাধ্যমে’ স্থানান্তর করেছে, যা শেয়ারহোল্ডারদের সঙ্গে প্রতারণা। মানিলন্ডারিংয়ের উদ্দেশ্যে এটি করা করা হয়ে থাকতে পারে।

এতে আরও বলা হয়, সম্পদ মূল্যায়ন প্রতিবেদনে কী আছে সেটি এখানে বড় বিবেচনার বিষয় নয়, এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য হলো, মিউচ্যুয়াল ফান্ডের অর্থ এ ধরনের কোনো প্রতিষ্ঠানে (পুঁজিবাজারে অ-তালিকাভুক্ত) বিনিয়োগ করা যায় কিনা? মিউচ্যুয়াল ফান্ডের অর্থের প্রকৃত মালিক এর বিনিয়োগকারীরা। এই অর্থের মালিক এলআর গ্লোবাল নয়।

অনুসন্ধানের সময়ে বিডিনিউজের পাশাপাশি রংপুর ডিস্ট্রিলারিতেও একই ধরনের অনিয়মের মাধ্যমে এলআর গ্লোবালের ১০ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রমাণ পায় বিএসইসির তদন্ত কমিটি। রংপুর ডিস্টিলারির ৮০ লাখ শেয়ার তারা কিনেছে ১২.৫০ টাকা দরে। বিএসইসির তদন্ত কমিটি বলেছে, এই অনিয়মের পুরো দায় এলআর গ্লোবালের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা রিয়াজ ইসলাম, চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার (সিএফও) রোনাল্ড ম্যাকি গোমেজ, হেড অফ লিগ্যাল অ্যান্ড কমপ্ল্যায়েন্স মনোয়ার হোসেনসহ বিনিয়োগ কমিটির সব সদস্যের।

‘বিডিনিউজে এলআর গ্লোবালের বিনিয়োগের উদ্দেশ্য মানি লন্ডারিং’
এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা রিয়াজ ইসলাম

মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বিনিয়োগকারীরা ক্ষুব্ধ

বিডিনিউজের মতো রুগ্ন ও লোকসানি প্রতিষ্ঠানে বিপুল বিনিয়োগে ক্ষুব্ধ ও শঙ্কায় এলআর গ্লোবালের নিয়ন্ত্রণাধীন ছয়টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বিনিয়োগকারীরা।

বিএসইসির তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, এই বিনিয়োগটি ছিল মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগকারী ও পুঁজিবাজারের স্বার্থবিরোধী। মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগকারীরা বিডিনিউজের এই বিনিয়োগ থেকে সামনের বছরগুলোতে কোনো ধরনের লভ্যাংশ ফেরত পাবেন না। ১০০ টাকা অভিহিত মূল্যের বিডিনিউজের সম্পদের বিপরীতে শেয়ারপ্রতি মূল্যে ২০১৯ সালে লোকসান ছিল ৪৪১ টাকা ৪ পয়সা। ২০১৮ সালে লোকসান ছিল ২৫০ টাকা এবং ২০১৭ সালে ছিল লাভ ছিল ৯ টাকা ১২ পয়সা।

অথচ এমন একটি লোকসানি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের জন্য এলআর গ্লোবাল ২২ মে ২০১৯ থেকে ১ আগস্ট ২০১৯ সময়ে শেয়ার প্রতি মূল্য বাড়িয়েছে ১২ হাজার ৪০০ ‍শতাংশ।

বিডিনিউজে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এলআর গ্লোবাল সম্পূর্ণ অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে বলেও মন্তব্য করা হয় তদন্ত প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, ‘খারাপ উদ্দেশ্যে’ এ বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। এলআর গ্লোবালের বিনিয়োগের ঘোষণার আগে ২০১৯ সালের ১ আগস্ট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান রিয়াজ ইসলাম ও মনোয়ার হোসেন।

বিডিনিউজে বিনিয়োগ নিয়ে মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগকারী কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ক্ষোভ ও উদ্বেগও তুলে ধরা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে। ভিআইপিবি অ্যাস্টেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি বলেছে, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ জন্য তারা এলআর গ্লোবালকে আইনি নোটিশও পাঠিয়েছে।

ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা জানিয়েছে তদন্ত কমিটিকে। তারা বলেছে, এই বিনিয়োগটি অনেক উচ্চ মূল্যে করা হয়েছে এবং এটি মিউচ্যুয়াল ফান্ড নীতিমালার লঙ্ঘন। অন্যদিকে, ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং ফিন্যান্স করপোরেশন লিমিটেড বলেছে, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, একইসঙ্গে তাদের ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটি একটি ‘সন্দেহজনক’ বিনিয়োগ।

‘বিডিনিউজে এলআর গ্লোবালের বিনিয়োগের উদ্দেশ্য মানি লন্ডারিং’
এলআর গ্লোবালের চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার (সিএফও) রোনাল্ড ম্যাকি গোমেজ (বাঁয়ে), হেড অব লিগ্যাল অ্যান্ড কমপ্ল্যায়েন্স মনোয়ার হোসেন

কড়া পদক্ষেপের সুপারিশ

বিডিনিউজে এলআর গ্লোবালের ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগের তদন্ত শেষে চারটি সুপারিশ করেছে বিএসইসির কমিটি। তারা বলেছে, বিডিনিউজ ও রংপুর ডিস্টিলারিতে বিনিয়োগ করায় এলআর গ্লোবালের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা রিয়াজ ইসলাম, চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার (সিএফও) রোনাল্ড ম্যাকি গোমেজ, হেড অব লিগ্যাল অ্যান্ড কমপ্ল্যায়েন্স মনোয়ার হোসেনসহ বিনিয়াগ-সম্পর্কিত কমিটির সবাইকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা উচিত।

বিডিনিউজ ও রংপুর ডিস্টিলারিতে করা বিনিয়োগের অর্থ ছয়টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডে ফেরত আনার সুপারিশও করা হয়েছে। এ ছাড়া, তদন্ত কমিটি বলেছে, বিডিনিউজ ও রংপুর ডিস্টিলারি থেকে বিনিয়োগ ফিরিয়ে আনার সব খরচ এলআর গ্লোবালকে বহন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে তহবিল থেকে কোনো খরচ করা যাবে না।

তদন্ত কমিটির সুপারিশে বলা হয়, মিউচ্যুয়াল ফান্ডের টাকা এলআর গ্লোবালের বতর্মান ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে রাখা নিরাপদ নয়। এজন্য সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (মিউচ্যুয়াল ফান্ড) বিধিমালা, ২০০১ এর ৫১ বিধি অনুযায়ী ফান্ডটিকে তারল্যে রূপান্তর করা যেতে পারে অথবা শেয়ারহোল্ডারদের চাহিদার ভিত্তিতে সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (মিউচ্যুয়াল ফান্ড) বিধিমালা, ২০০১ এর ৩১ বিধি অনুযায়ী সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি পরিবর্তন করা যেতে পারে।

বিদেশি অংশীদারদেরও প্রতারিত করেছে এলআর গ্লোবাল

তৌফিক ইমরোজের হাতে জনগণের অর্থ তুলে দেয়া রিয়াজ ইসলামের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলছে তার বিদেশি অংশীদাররাও। বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় রিয়াজ ইসলামের নামে থাকা সব শেয়ার কিনে নেয়ার আগ্রহ দেখিয়ে এ বিষয়ে বিদেশি অংশীদাররা বিএসইসির অনুমতি চেয়েছে।

এলআর গ্লোবালের অংশীদার গ্যাভিন উইলসন গত ২২ ফেব্রুয়ারি বিএসইসিকে পাঠানো এক চিঠিতে রিয়াজ ইসলামের প্রতারণা ও অনিয়মের নানা তথ্য তুলে ধরে প্রতিকার চান। চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে এলআর গ্লোবাল কীভাবে পরিচালিত হচ্ছে এবং এর আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে বহু বছর ধরে তারা অবগত নন।

আরও পড়ুন: বিডিনিউজ থেকে ফেরত যাচ্ছে এলআর গ্লোবালের বিনিয়োগ: বিএসইসি চেয়ারম্যান

গ্যাভিন উইলসনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে এলআর গ্লোবালের ৪৭ দশমিক ৭ শতাংশের অংশীদার নিউইয়র্কভিত্তিক এলআর ম্যানেজারস ইনভেস্টমেন্টস। বাকি ৫২ দশমিক ৩ শতাংশের অংশীদার রিয়াজ ইসলাম। তবে রিয়াজ তাদের সঙ্গে সব ধরনের তথ্য আদান-প্রদান ও যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন।

গ্যাভি উইলসন লিখেছেন, ‘গত আট বছরে কোম্পানির অংশীদার এবং ৪৭ দশমিক ৭ শতাংশের মালিক হওয়া সত্ত্বেও ডিভিডেন্ড হিসেবে আমাদের একটি টাকাও দেওয়া হয়নি। যদিও তারা প্রতিবছর ডিভিডেন্ড ঘোষণা করছে।’

বিদেশি এই অংশীদার আরও বলেন, ‘এ ছাড়া আমরা বুঝতে পারছি যে, রিয়াজ ইসলাম তার বিদেশি অংশীদারদের সঙ্গে প্রতারণা করে কোম্পানির বেতন-ভাতা, বোনাস এবং বিভিন্ন খরচ নিয়মিত গ্রহণ করছেন।’

সংশ্লিষ্টরা এবং কর্তৃপক্ষ যা বলছে

বিএসইসির তদন্তের বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য জানতে বিডিনিউজের প্রধান সম্পাদক ও মালিক তৌফিক ইমরোজ খালিদীর দুটি ফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।

অন্যদিকে, এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশে যোগোযোগ করা হলে প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইব্রাহিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রিয়াজ ইসলাম এখন দেশে নেই। ফলে দেশে থাকাকালীন তিনি যে নম্বর ব্যবহার করতে সেটি বন্ধ আছে। ’

বিদেশি নম্বরটি দেয়ার অনুরোধ জানালে তিনি বলেন, ‘এটি আমি করতে পারব না।’

বিষয়টি নিয়ে এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ লিমিটেডের চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার (সিএফও) রোনাল্ড ম্যাকি গোমেজ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাচ্ছি না। তবে মনোয়ার সাহেব এ বিষয়ে বলতে পারবেন।’

যোগাযোগ করা হলে এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ লিমিটেডের হেড অফ লিগ্যাল অ্যান্ড কমপ্ল্যায়েন্স মনোয়ার হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিডিনিউজে বিনিয়োগের সংবাদ প্রকাশের পর বিএসইসি আমাদের কাছে যত ধরনের কাগজপত্র চেয়েছে আমরা সব সরবরাহ করেছি। তারা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করেছে, তবে তদন্ত রিপোর্ট দেয়া হয়েছে কিনা সেটি আমরা এখনও জানি না। ’

তিনি বলেন, ‘তদন্তে রিপোর্টে বোর্ড পুনর্গঠনের প্রস্তাব দিয়ে থাকলেও সেটি নিশ্চয় আমাদেরকে জানানো হবে। জানানো হলে পরবর্তীতে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে সেটি সম্পর্কে বলা যাবে। ’

তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা।

তিনি বলেন, ‘বিষয়টি তিন চার বছর আগের। আমাদের আগের কমিশন একটি তদন্ত কমিটি করেছিল। আমাদের সময়ে এ বিষয়ে কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়নি।’

‘বিডিনিউজে এলআর গ্লোবালের বিনিয়োগের উদ্দেশ্য মানি লন্ডারিং’
বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম

তদন্ত প্রতিবেদনে মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে, এক্ষেত্রে কমিশনের পদক্ষেপ কী হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদনে বেশ কয়েকটি বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। তাদের কাছ থেকে অর্থ ফেরত নেয়া, জরিমানা করা ইত্যাদি। তারা ইতোমধ্যে জরিমানার টাকা প্রদান করেছে। তাদের বিরুদ্ধে কিছু মামলা ছিল সেগুলোরও সমাধান হচ্ছে এবং বিডিনিউজের কাছ থেকে এলআর গ্লোবালের বিনিয়োগ ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।’

এলআর গ্লোবালে যেসব বিনিয়োগকারী ছিল তাদের সুরক্ষার বিষয়টি জানতে চাইলে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা খবর নিয়ে দেখেছি এখন কোনো বিনিয়োগকারী নেই। তারা তাদের ইউনিট বিক্রি করে চলে গেছে।’

সম্প্রতি একজন বিদেশি ফান্ডের মালিকানা দাবি করে যে চিঠি দিয়েছেন সে বিষয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘এটি নিয়েও আমরা কাজ করছি। আমরা তাকে বলেছি উনার কাছে কী কী কাগজপত্র আছে সেগুলো আমাদের কাছে জমা দিতে। আর মালিকানার বিষয়টি আমাদের নয়, এটি জয়েন্ট স্টকের বিষয়।’

আরও পড়ুন

বিশেষ
Very intense fire in Chuadanga Pabna Rajshahi

রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা, পাবনায় অতি তীব্র দাবদাহ

রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা, পাবনায় অতি তীব্র দাবদাহ দাবদাহের মধ্যে পাবনার একটি অঞ্চলে টিউবওয়েল থেকে পানি পান করছেন তৃষ্ণার্ত লোকজন। ছবি: নিউজবাংলা
তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র দাবদাহ এবং টাঙ্গাইল, বগুড়া, বাগেরহাট, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলার পাশাপাশি রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগ এবং ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে, যা অব্যাহত থাকতে পারে।

দেশের তিন জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র এবং পাঁচ জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।

পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ নিয়ে বলা হয়, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র দাবদাহ এবং টাঙ্গাইল, বগুড়া, বাগেরহাট, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলার পাশাপাশি রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগ এবং ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে, যা অব্যাহত থাকতে পারে।

দেশের কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেখানে মৃদু তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বইছে ধরা হয়।

তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তীব্র দাবদাহ ধরা হয়। অন্যদিকে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে বলা হয় অতি তীব্র দাবদাহ।

চুয়াডাঙ্গায় শুক্রবার বেলা তিনটায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ। একই দিনে পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

তাপমাত্রার বিষয়ে অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।

আরও পড়ুন:
দাবদাহে নষ্ট হচ্ছে পাটক্ষেত
৪২ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে পাবনার তাপমাত্রা
তাপপ্রবাহ থাকছেই, বৃষ্টি হলেও হতে পারে
চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২.৭ ডিগ্রি, মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ
দুই জেলায় অতি তীব্র, ১৬টিতে তীব্র দাবদাহ

মন্তব্য

বিশেষ
Even if the heat wave remains it may rain

তাপপ্রবাহ থাকছেই, বৃষ্টি হলেও হতে পারে

তাপপ্রবাহ থাকছেই, বৃষ্টি হলেও হতে পারে গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন, নগরীতে পানিতে লাফাচ্ছে শিশুরা। ছবি: নিউজবাংলা
রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল, বগুড়া, বাগেরহাট, যশোর, কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

দেশের বিভিন্ন স্থানে যেভাবে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা অব্যাহত থাকতে পারে। এর মধ্যে কোথাও কোথাও বৃষ্টিরও সম্ভাবনা রয়েছে।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এতে বলা হয়, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল, বগুড়া, বাগেরহাট, যশোর, কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়োহাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।

অধিদপ্তর বলছে, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।

আবহাওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। আগামী পাঁচ দিনেও আবহাওয়াও প্রায় একই থাকতে পারে।

শুক্রবার দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়া ২০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশের কোথাও বৃষ্টি হয়নি বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

মন্তব্য

বিশেষ
Thailand visit milestone in bilateral relations PM

থাইল্যান্ড সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক: প্রধানমন্ত্রী

থাইল্যান্ড সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক: প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডের গভর্নর হাউসে শুক্রবার বৈঠকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসন ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই সরকারি সফর আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে, যা আমাদের দুই দেশের মধ্যে ফলপ্রসূ অংশীদারত্বের এক নতুন যুগের সূচনা করেছে।’

থাইল্যান্ডে রাষ্ট্রীয় সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির গভর্নর হাউসে শুক্রবার থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে তিনি এ মন্তব্য করেন বলে বার্তা সংস্থা ইউএনবির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, খাদ্য নিরাপত্তা, পর্যটন, জনস্বাস্থ্য, জ্বালানি ও আইসিটি খাতে সহযোগিতা জোরদারের সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে অনুভব করি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, খাদ্য নিরাপত্তা, পর্যটন, জনস্বাস্থ্য, জ্বালানি, আইসিটি, জনগণ থেকে জনগণে যোগাযোগ ও সংযোগের ক্ষেত্রে এবং বিমসটেকের অধীনে আমাদের সহযোগিতা জোরদার করার সুযোগ রয়েছে।’

এর আগে দুই নেতা গভর্নর হাউসে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে যোগ দেয়ার আগে ১৫ মিনিটের জন্য একান্ত বৈঠক করেন।

বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি—একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও একটি লেটার অফ ইনটেন্ট (এলওআই) সই করা হয়।

মধ্যাহ্নভোজে শেখ হাসিনা বলেন, নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বন্ধুত্ব আমাদের ঐতিহাসিক, ভাষাগত ও অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, টেকসই উন্নয়ন, জনগণ থেকে জনগণে যোগাযোগ ও সংযোগসহ সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে আমাদের দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী থাভিসিন ও তিনি পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা করতে এবং দুই দেশের সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার মধ্যে আরও আলাপ-আলোচনাকে উৎসাহিত করতে সম্মত হয়েছি। একইভাবে দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগের প্রসার ও সুবিধার্থে আমাদের সব রকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘শুক্রবার ঢাকা ও ব্যাংকক যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই করেছে, তা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একটি দৃঢ় কাঠামো প্রদান করবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, সফরটি ‘প্রতিবেশী’ নীতির বৃহত্তর ফোকাসের অংশ, যা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গতি আরও নবায়নের জন্য দুই দেশকে চমৎকার সুযোগ করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে, এই সফর আমাদের দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীর করতে সাহায্য করবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, এই সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পূর্ণ সম্ভাবনায় অত্যন্ত প্রয়োজনীয় গতি সঞ্চার করবে।

তিনি বলেন, ‘এই সরকারি সফর আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে, যা আমাদের দুই দেশের মধ্যে ফলপ্রসূ অংশীদারত্বের এক নতুন যুগের সূচনা করেছে।

‘আগামী দিনগুলোয় আমাদের জনগণ ও দেশের পারস্পরিক সুবিধার জন্য আমাদের সম্পর্কের নতুন গতি বজায় রাখতে হবে।’

আরও পড়ুন:
বাংলাদেশের হাসপাতাল, অর্থনৈতিক অঞ্চলে থাই বিনিয়োগ চান শেখ হাসিনা
থাইল্যান্ডে থাভিসিন-শেখ হাসিনা বৈঠক
যুদ্ধকে ‘না’ বলুন: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে, লাল গালিচা সংবর্ধনা
থাইল্যান্ডের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ত্যাগ

মন্তব্য

বিশেষ
Prime Minister wants Thailands investment in hospital economic zone of Bangladesh

বাংলাদেশের হাসপাতাল, অর্থনৈতিক অঞ্চলে থাই বিনিয়োগ চান শেখ হাসিনা

বাংলাদেশের হাসপাতাল, অর্থনৈতিক অঞ্চলে থাই বিনিয়োগ চান শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে শুক্রবার গভর্নমেন্ট হাউসে দেশটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীরা। ছবি: বাসস
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশি চিকিৎসাকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি তাকে বাংলাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণেরও প্রস্তাবও দিয়েছি।’

বাংলাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণ করতে থাইল্যান্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কেও থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ কামনা করেছেন।

বার্তা সংস্থা ইউএনবির প্রতিবেদনে জানানো হয়, থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে শুক্রবার গভর্নমেন্ট হাউসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশি চিকিৎসাকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি তাকে বাংলাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণেরও প্রস্তাবও দিয়েছি।’

বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি, একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও একটি লেটার অফ ইনটেন্টে (এলওআই) সই করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ককে বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। আমাদের বন্ধুত্ব আমাদের ঐতিহাসিক, ভাষাগত ও অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত।

‘সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে আমাদের দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

এ নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গতিশীল অর্থনীতির সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে থাইল্যান্ডকে আমরা এক গুরুত্বপূর্ণ ও গতিশীল অংশীদার হিসেবে দেখি।’

বাণিজ্য সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের বর্তমান পরিসর বাড়ানোর জন্য দীর্ঘ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও ব্যবসা সহজীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমি প্রধানমন্ত্রীকে (থাভিসিন) আশ্বস্ত করেছি। আমি থাই পক্ষকে আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ করার ও শুধু থাইল্যান্ডের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছি।’

আরও পড়ুন:
জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় প্রতিশ্রুত অর্থ ছাড়ের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
ন্যাপ এক্সপো উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
কাউকে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করতে দেব না: প্রধানমন্ত্রী
দেশীয় খেলাকে সমান গুরুত্ব দিন: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী

মন্তব্য

বিশেষ
Severe fire in 16 districts very severe

দুই জেলায় অতি তীব্র, ১৬টিতে তীব্র দাবদাহ

দুই জেলায় অতি তীব্র, ১৬টিতে তীব্র দাবদাহ গরমের মধ্যে রাজধানীর হাতিরঝিলে নামা শিশুদের উচ্ছ্বাস। ফাইল ছবি
তাপমাত্রার বিষয়ে অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।

দেশের দুটি জেলায় অতি তীব্র ও ১৬টিতে তীব্র দাবদাহ চলছে জানিয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, সেটি অব্যাহত থাকতে পারে।

রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানিয়েছে।

পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।

বৃষ্টিপাতের বিষয়ে জানানো হয়, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ নিয়ে বলা হয়, চুয়াডাঙ্গা ও যশোর জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলা এবং খুলনা বিভাগের অন্যান্য জেলার (১০ জেলার মধ্যে বাকি আটটি) ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ঢাকা, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, বগুড়া, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

দেশের কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেখানে মৃদু তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বইছে ধরা হয়।

তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তীব্র দাবদাহ ধরা হয়। অন্যদিকে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে বলা হয় অতি তীব্র দাবদাহ।

তাপমাত্রার বিষয়ে অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।

আরও পড়ুন:
নতুন করে ৭২ ঘণ্টার ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি
দাবদাহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার নির্দেশ
গাছহীন সড়কটি যেন ‘উত্তপ্ত কড়াই’
দাবদাহ থেকে মুক্তি মিলবে কবে
তাপমাত্রা ও অস্বস্তি বাড়তে পারে

মন্তব্য

বিশেষ
Sheikh Hasina at the office of the Prime Minister of Thailand to participate in the bilateral meeting

থাইল্যান্ডে থাভিসিন-শেখ হাসিনা বৈঠক

থাইল্যান্ডে থাভিসিন-শেখ হাসিনা বৈঠক গভর্নমেন্ট হাউসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাই সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দলের দেয়া গার্ড অফ অনার পরিদর্শন করেন। ছবি: বাসস
বৈঠকে দুই পক্ষ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ও আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ইউএনবি জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গভর্নমেন্ট হাউসে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান থাই প্রধানমন্ত্রী।

বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই পক্ষ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ও আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।

বৈঠকের পর দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এশিয়ার দুই দেশের মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় নথিতে সই করা হয়। দুই নেতার মধ্যে প্রায় ১৫ মিনিট একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

গভর্নমেন্ট হাউসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাই সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দলের দেয়া গার্ড অফ অনার পরিদর্শন করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভর্নমেন্ট হাউসের অতিথি বইয়ে সই করার আগে স্রেথা থাভিসিন তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে তাকে পরিচয় করিয়ে দেন।

গভর্নমেন্ট হাউস ত্যাগ করার আগে শেখ হাসিনা সেখানে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন।

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে ছয় দিনের সরকারি সফরে বুধবার ব্যাংককে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আরও পড়ুন:
ন্যাপ এক্সপো উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
কাউকে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করতে দেব না: প্রধানমন্ত্রী
দেশীয় খেলাকে সমান গুরুত্ব দিন: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী
ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকে না: প্রধানমন্ত্রী

মন্তব্য

বিশেষ
Savar residents want metro rail up to the memorial

স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত মেট্রোরেল চান সাভারবাসী

স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত মেট্রোরেল চান সাভারবাসী ছবি: নিউজবাংলা
সড়কের উপর দিয়ে সম্ভব না হলে মাটির নিচ দিয়ে মেট্রোরেলের যে প্রকল্প রয়েছে, সেই প্রকল্পে সাভারকে যুক্ত করার দাবি জানানো হয়।

মেট্রোরেলের চলমান প্রকল্পটি সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় নাগরিক সমাজ।

বৃহস্পতিবার সকালে সাভার উপজেলা পরিষদের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় মেট্রোরেলের এমআরাটি-৫ ও এমআরটি-৬-এর চলমান প্রকল্পটি হেমায়েতপুর থেকে নবীনগর জাতীয় স্মৃতিসৌধ অথবা দিয়াবাড়ি থেকে সাভারের রেডিও কলোনি পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এই প্রকল্পে সরকার যদি কোনোরকম জটিলতা মনে করে তাহলে এমআরটি-৬ প্রকল্প উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে বিরুলিয়া হয়ে সাভার রেডিও কলোনি পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা যেতে পারে। পর্যায়ক্রমে তা নবীনগর জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবিও জানান তারা।

কর্মসূচিতে সড়কের উপর দিয়ে সম্ভব না হলে মাটির নিচ দিয়ে মেট্রোরেলের যে প্রকল্প রয়েছে, সেই প্রকল্পে সাভারকে যুক্ত করার দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধন কর্মসূচির সভাপতিত্ব করেন সাভার নাগরিক কমিটির সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সভাপতি কামরুজামান খান।

তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেলের প্রকল্প সাভার পৌর এলাকার শেষ সীমানা পর্যন্ত সম্প্রসারণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বরাবর আবেদন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিবকে এ ব্যাপারে অবগতপত্র দেয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে রেলমন্ত্রী, সচিব ও মহাপরিচালকে পত্র দিয়ে এবং সরাসরি সবকিছু অবগত করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সুবিধাবঞ্চিত সাভারবাসী রেলসেবা পাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছে। সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সাভারের লাখ লাখ মানুষ মেট্রেরেলের সুবিধা প্রত্যাশা করেন। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া হক, সাভার নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষানুরাগী সালাহউদ্দিন খান নঈম, সাভার পৌর আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মিজানুর রহমান মাসুদ, সংস্কৃতিকর্মী স্বরণ সাহা, প্রভাত ডি রোজারিও, বন্ধুরহাট যুব সংগঠনের আলোকুর রহমান, জাগরণী থিয়েটারের সভাপতি আজিম উদ্দিনসহ আরও অনেকে।

মন্তব্য

p
উপরে