বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন জাহিদ হাসান। ভোরের আলস্যে ঘুম ভাঙতে একটু দেরি হয়ে যায় তার। থাকেন সিদ্ধেশ্বরীতে। গন্তব্য বনানী। আড়মোড়া ভেঙে রাস্তায় এসে ডাকেন উবার।
একটু অপেক্ষার পর একটি গাড়ির সন্ধান দিল উবার। ফোন করতেই চালক জানালেন, ‘টাকা ক্যাশে দেবেন নাকি বিকাশে?’ জাহিদের তখন অফিস পৌঁছানোর তাড়া। চালকের উদ্দেশে বললেন, ‘যেভাবে আপনার সুবিধা।’
আবারও প্রশ্ন এলো। এবার জানতে চাওয়া হলো, ‘কোন দিকে যাবেন?’
জাহিদ বললেন, ‘বনানীর দিকে।’ তবে এই গন্তব্য পছন্দ হলো না চালকের। তাই না করে দিলেন জাহিদকে।
বেশ বিরক্ত হলেন জাহিদ। উবারে যে রিকোয়েস্ট বাতিল করে দেবেন, সেটাও হচ্ছে না।
কারণ, অ্যাপটি এমনভাবে বানানো, যাত্রী যদি নিজের ইচ্ছায় কোনো রাইড রিকোয়েস্ট বাতিল করেন, সে ক্ষেত্রে তাকে জরিমানা গুনতে হয়।
অপরদিকে চালক যেতে রাজি না হলেও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে চান না তারা। কারণ, তাতে তার রেটিং কমে যাবে। ফলে তাড়াহুড়োর মধ্যে যাত্রীকে ক্ষতিটা মেনে নিয়ে আরেকটি উবার বা বিকল্প ব্যবস্থায় গন্তব্যে যেতে হয়।
জাহিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এমন হয়রানি যদি চলতে থাকে, তবে এই সেবা দিয়ে আমার কী লাভ হবে?’
গণপরিবহনে ভোগান্তি থেকে রক্ষা পেতে উবারসহ রাইড শেয়ারিং সার্ভিসগুলোকে স্বাগত জানিয়েছিল নগরবাসী। কিন্তু বছর কয়েকের ব্যবধানে বদলে গেছে সেই ধারণা।
যাত্রীদের অভিযোগ, উবারে প্রতিনিয়ত বাড়ছে হয়রানি।
তিন ধরনের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে যাত্রীদের। বিকাশে পেমেন্ট নিতে অনীহা, লোকেশন পছন্দ না হওয়া আর যাত্রীদের রিকোয়েস্ট বাতিল করতে বাধ্য করা।
এ বিষয়ে উবারের বক্তব্য জানতে চাইলে সময়ক্ষেপণ করলেও সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য তারা দেয়নি।
দেশে রাইড শেয়ারিংয়ের শুরু ২০১৫ সালে। গণপরিবহনের হয়রানি থেকে রেহাই পেতে নগরে নতুন সুবিধা রাইড শেয়ারিংয়ের প্রতি আকৃষ্ট হয় যাত্রীরা। একই বছর আসে দেশি রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান ‘পাঠাও’।
বেশি আলোচনা হয় বহুজাতিক সেবা প্রতিষ্ঠান ‘উবার’ চালু নিয়ে। অ্যাপের মাধ্যমে গাড়ি কল দিয়ে স্বল্প খরচে যেকোনো জায়গায় যাওয়ার সুবিধা রাজধানীতে ট্যাক্সির অভাব অনেকটাই পূরণ করেছিল।
তবে সেবাটির ‘মধুচন্দ্রিমা’ বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। একের পর এক হয়রানির অভিযোগ বাড়তে থাকে রাইড শেয়ারিং সেবার বিরুদ্ধে।
উবার কিছু পদক্ষেপ ও সুবিধা যোগ করলেও তা অল্প দিনের জন্য স্থায়ী হয়। নতুন করে অভিযোগ আসতে থাকে যখন বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে চালকের টাকা পরিশোধের কথা বলা হয়।
নিউজবাংলার অনুসন্ধানে উবারের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগগুলো স্পষ্ট হয়। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, গন্তব্য বাছাইয়ে চালকের যথেচ্ছাচার। গন্তব্য পছন্দ না হলে চালকেরা যেতে অস্বীকৃতি জানান। এ নিয়ে যাত্রীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি নিয়মিত চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী সরোয়ার হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যাত্রীর গন্তব্যের সঙ্গে চালকের পছন্দ মেলে না। আর এতে চালক বারবার ট্রিপ ফরোয়ার্ড করতে থাকেন, যা একধরনের ভোগান্তি। এ ছাড়া চালকের অহেতুক বিরক্তি প্রকাশ ও অসদাচরণও মেনে নিতে হয়।
তিনি বলেন, ‘সেবা পাচ্ছি টাকার বিনিময়ে। তবে কেন এত ভোগান্তি হবে?’
সরোয়ার আরও অভিযোগ করেন, একবার এক চালক তার এক হাজার টাকার নোট ভাঙতি দিতে পারেননি। তখন তিনি বিকাশে পেমেন্টের কথা বললে তাতেও চালক রাজি হননি। বাধ্য হয়ে তাকে দোকান থেকে কিছু কিনে টাকা ভাঙাতে হয়েছে।
মেরুল বাড্ডায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত তাকরিম আহমেদ অভিযোগ করেন, ‘চালকের প্রান্ত থেকে সমস্যা হলেও যাত্রীদের ট্রিপ ক্যানসেল করতে বাধ্য করা হয়। গন্তব্যের মিল না হলে চালক ট্রিপ ক্যানসেল করতে বলেন।’
তিনি বলেন, ‘রিকোয়েস্ট পাঠালে চালক যাত্রীর গন্তব্য দেখতে পান না। তিনি গন্তব্য জানার পর যেতে না চাইলে ট্রিপ ক্যানসেল করতে বলেন, যা আমার জন্য জরিমানা। এ ক্ষেত্রে আমাকে বাধ্য হয়ে ক্যানসেল করতে হয়। এটা অনেক বড় ধরনের হয়রানি।’
গত বছর ১১ আগস্ট করোনা থেকে সুরক্ষা পেতে ক্যাশ টাকার পরিবর্তে বিকাশে পেমেন্টের কথা ঘোষণা করে উবার। তখন বলা হয়, এতে নগদ বা ভাঙতি টাকার ঝামেলা ছাড়াই রাইডের ভাড়া যাত্রীর বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিশোধ করা যাবে।
বিশেষ করে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে যাত্রী ও চালক উভয়কে রক্ষা করতে ক্যাশলেস এই পেমেন্ট ব্যবস্থা যুক্ত করা হয়।
তবে বিকাশের মাধ্যমে ভাড়া পরিশোধ মানতে নারাজ চালকেরা। তাদের কথা, এই পেমেন্টের টাকা হাতে পেতে তাদের অনেক বেশি সময় লেগে যায়। ক্যাশ টাকা হাতে পেলে তাদের সুবিধা বেশি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চালক নিউজবাংলাকে বলেন, সব চালকের ব্যবহার বা আচার-আচরণ এক হবে না। মাঝে মাঝে যাত্রীরাও গন্তব্য নিয়ে ঝামেলা করেন। তবে তারা মেনে নেন যে, বিকাশে পেমেন্ট দিলে তাদের টাকা পেতে ঝামেলা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উবারের এক চালক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা তো লোকেশন দেখতে পারি না। এমন অনেক সময় হয় যে দিনের শেষ ট্রিপ নেব নিজের বাসার কাছাকাছি। তখন যদি গন্তব্য না মেলে তবে ফরোয়ার্ড করে দিই।
‘এটা আমার ক্ষেত্রে হয়। অন্যদের কথা জানি না। কিন্তু লোকেশন না দেখতে পাওয়া একটা বড় সমস্যা আমাদের জন্য।’
উবার জবাব দেয় না
বাংলাদেশে উবারের নিজস্ব কার্যালয় নেই। বেঞ্চমার্ক পিআর নামে একটি জনসংযোগ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে উবারের কর্মকাণ্ড সমন্বয় করে।
এসব অভিযোগের জবাব পেতে বেঞ্চমার্ক পিআর-এর সঙ্গে ১১ ফেব্রুয়ারি যোগাযোগ করে লিখিত প্রশ্ন পাঠানো হয়। তখন বেঞ্চমার্ক পিআর থেকে জানানো হয়, এই প্রশ্নগুলো তারা উবারকে পাঠাবে।
এরপর ১৬ ফেব্রুয়ারি বেঞ্চমার্ক পিআরের সঙ্গে আবার যোগাযোগ করা হলে তারা উবারের ২০২০ সালের ‘ফিরে দেখা’ নামে একটি বিবৃতি পাঠায়, যেখানে সমস্যাগুলো নিয়ে কোনো উত্তর ছিল না।
বেঞ্চমার্ক পিআরের পরিচালক (পাবলিক অ্যাফেয়ার্স) এ এফ এম আসাদুজ্জামান নিউজবাংলাকে জানান, তারা প্রশ্নগুলো উবারকে পাঠিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত উবার থেকে কোনো উত্তর তারা পাননি।
কবে উত্তর পাওয়া যাবে, জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘উবার প্রশ্ন যাচাইবাছাই করে। আমরা এখান থেকে পাঠিয়েছি। ওরা বলল, আমরা দেখছি।’
তীব্র গরম থেকে বাঁচতে ও বৃষ্টির আসায় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় নেচে গেয়ে ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করেছেন স্থানীয়রা। লোকজন।
উপজেলার চন্দ্রখানা বালাটারি গ্রামে শনিবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত বিয়ের অনুষ্ঠান চলে।
ওই এলাকার বাসিন্দা সাহাপুর আলীর স্ত্রী মল্লিকা বেগমের আয়োজনে বিয়েতে অসংখ্য নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। নাচ গানের মধ্যে দিয়ে ব্যাঙের বিয়ে শেষে বরণ ডালায় ব্যাঙ দুটিকে নিয়ে পুরো গ্রাম ঘুরে বেড়ান তারা। এ সময় গ্রামবাসীদের কাছ থেকে চাল ডাল সংগ্রহ করে বিয়েতে অংশগ্রহণকারীদের খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়।
বিয়ের আয়োজনকারী মল্লিকা বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কিছুদিন ধরে তীব্র গরম। তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কারণে আমরা কষ্টে রয়েছি; গ্রামের মানুষজন অস্তিত্বতে আছে। কেউই কোনো কাজ কামাই করতে পারছেন না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আগের যুগের মানুষরা ব্যাঙের বিয়ে দিলে বৃষ্টি হতো। সেই বিশ্বাস থেকেই আজ ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করেছি।’
বিয়ে দেখতে আসা জাহিদ নামের একজন বলেন, “আমার জীবনে প্রথম ব্যাঙের বিয়ে দেখলাম। খুবই ভালো লেগেছে। ‘বৃষ্টির জন্য ব্যাঙের বিয়ে’ বিষয়টি প্রথম জানলাম।”
বৃদ্ধ আজিজুল হক বলেন, ‘বৃষ্টি না হওয়ার কারণে আবাদের ক্ষতি হচ্ছে। তাই বৃষ্টির আশায় ব্যাঙের বিয়েতে অংশগ্রহণ করেছি।’
রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘কুড়িগ্রামে বেশ কিছুদিন ধরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। আজ (শনিবার) জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।’
আরও পড়ুন:মুন্সীগঞ্জ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে এক বছরের শিশু হুমাইরা আক্তারের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকালে সদর উপজেলার মদিনা বাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মদিনা বাজারের উত্তর পাশে খানকা শরীফের সামনের সড়কে দুটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে।
এ সময় রাস্তার পাশে এক বছরের শিশু সন্তান হুমাইরাকে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা হাবিবা বেগমের ধাক্কা খান অটোরিকশার সঙ্গে। এতে শিশু হুমাইরা মায়ের কোল থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। শিশুটিকে দ্রুত মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় অটোরিকশা দুটি আটক করা হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া দুই চালককে আটকের চেষ্টা চলছে।
চলমান তাপপ্রবাহে সারা দেশের সঙ্গে পুড়ছে রাজধানী ঢাকাও। প্রচণ্ড গরমে দুর্বিষহ নগর জীবন। এ অবস্থায় রাজধানীর সড়ক-মহাসড়কে পানি ছিটাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। ডিএনসিসির চিফ হিট অফিসারের পরামর্শে এমন উদ্যোগ নিয়েছে সিটি কর্তৃপক্ষ।
শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বায়ু দূষণ রোধ ও তীব্র দাবদাহে শহরকে ঠাণ্ডা রাখতে ডিএনসিসির ওয়াটার স্প্রে (পানি ছিটানো) কার্যক্রম পরিদর্শন করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।
এ সময় তিনি বলেন, ‘দুটি স্প্রে ক্যানন প্রধান সড়কে পানি ছিটাবে। এগুলো বেশ বড় হওয়ায় গলির সড়কে প্রবেশ করতে পারবে না৷ গলির সড়কে পানি ছিটানোর জন্য দশটি ব্রাউজার কাজ করবে। এগুলোর মাধ্যমে সড়কগুলো ভিজিয়ে ঠাণ্ডা রাখা হবে।
‘এছাড়াও ডিএনসিসির পার্কগুলোতে স্প্রে ক্যাননের মতো কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছি। এক সপ্তাহের মধ্যে পার্কগুলোতে কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থা করা হবে।’
এ সময় তিনি বলেন, ‘চিফ হিট অফিসার (সিএইচও) বুশরা আফরিনের পরামর্শে চলমান তীব্র দাবদাহে জনগণকে স্বস্তি দিতে সড়কে পানি ছিটানো এবং ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডে বিনামূল্যে খাবার পানি সরবরাহের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনটি বিশেষ ভ্যানগাড়ি (৫০০ লিটার পানির ট্যাংক সংবলিত) পথচারীদের পানি পান করানোর জন্য নামানো হয়েছে। ভ্যানগুলো বিশুদ্ধ খাবার পানি নিয়ে ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরবে। এই ভ্যানগুলো ছোট আকারে করা হয়েছে যেন শহরের অলিগলিতে প্রবেশ করতে পারে।’
চিফ হিট অফিসারের কার্যক্রম সম্পর্কে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘চিফ হিট অফিসার আমাদের পরামর্শ দিচ্ছেন। হিট অফিসার একজন একক ব্যক্তি। তিনি তো কাজগুলো বাস্তবায়ন করবেন না। তিনি পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু কাজগুলো আমাদের সবাইকে করতে হবে। তার পরামর্শেই জনগণকে স্বস্তি দিতে আমরা এই কাজগুলো করছি।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অনেকে বলছেন যে চিফ হিট অফিসার সিটি করপোরেশন থেকে বেতন পাচ্ছেন। বাস্তবে সিটি করপোরেশন থেকে তিনি একটি টাকাও পান না। এমনকি সিটি করপোরেশনে তার কোনো বসার ব্যবস্থাও নেই।
‘হিট অফিসার নিয়োগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান অ্যাড্রিয়েন আরশট-রকফেলার ফাউন্ডেশন রেসিলিয়েন্স সেন্টার (আরশট-রক)। প্রতিষ্ঠানটি সারা বিশ্বে সাতজন চিফ হিট অফিসার নিয়োগ করেছে এবং তারা সবাই নারী।’
ওয়াটার স্প্রে পরিদর্শনকালে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসি'র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী ও প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান উপস্থিত ছিলেন।
মুন্সীগঞ্জে হিটস্ট্রোকে সাখাওয়াত হোসেন মুকুল নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি প্রাণ-আরএফএল কোম্পানির মাঠ পর্যায়ের বিপনন বিভাগে কর্মরত ছিলেন।
২৭ বছর বয়সী মুকুলের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলায়।
প্রাণ-আরএফএল কোম্পানির মুন্সীগঞ্জ শহরের সেলস রিপ্রেজেনটেটিভ মোহাম্মদ রোকন জানান, শনিবার দুপুরে মুন্সীগঞ্জ শহরের অদূরে মুন্সীরহাট এলাকায় মাঠ পর্যায়ে কর্মরত অবস্থায় তীব্র গরমের কারণে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন মুকুল। সঙ্গে সঙ্গে তাকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালে নিয়ে এলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. ফেরদৌস হাসান জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগে পথেই তার মৃত্যু হয়েছে। নিহতের হিটস্ট্রোকের লক্ষণ রয়েছে বলে জানান তিনি।
নিহতের মরদেহ তার নিজ জেলায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
আকস্মিক কালবৈশাখীর তাণ্ডবে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ও শমশেরনগর ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে আরও বেশ কিছু বাড়িঘর। ঝড়ের পর খোলা আকাশের নিচে দিনযাপন করছে অর্ধশতাধিক পরিবার।
এ ছাড়াও গাছপালা উপড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙেছে এবং তার ছিঁড়ে পড়ে। এতে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে ওই অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
শুক্রবার রাত ৩টার দিকে এই ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হয়। প্রায় সাড়ে ১৫ ঘণ্টা পর শনিবার বিকেল ৪টার দিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কালবৈশাখীর তাণ্ডবে উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের পতনঊষার, ধূপাটিলা, উসমানগড়, ব্রাহ্মণঊষারসহ ৮টি গ্রামের প্রায় শতাধিক ঘর এবং শমশেরনগর ইউনিয়নের কেছুলুটি, ভাদাইরদেউল গ্রামে আরও কয়েকটি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। অসংখ্য গাছ-বাঁশ উপড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ও লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
পতনঊষার ইউনিয়নের নেছার মিয়া, ময়নুল মিয়া, খুশবা বেগম, লিপি বেগম, রহমান মিয়া, সুফিয়ান মিয়া, কালাম মিয়া, আনু মিয়া, ফখরুল মিয়াসহ অসংখ্য পরিবার দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন।
ক্ষতিগ্রস্তরা বলেন, গতরাতে কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে তীব্র শিলাবৃষ্টি হয়। মুহুর্তের মধ্যে তাদের ঘরবাড়ি উড়িয়ে নিয়ে যায়। আমরা এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি। সহোযোগিতা না পেলে আমাদের রাস্তায় থাকতে হবে।’
পতনঊষার ইউপি সদস্য তোয়াবুর রহমান জানান, আকস্মিক ঝড়ে পতনঊষার গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যাদের বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে সেসব দরিদ্র পরিবারের জীবনধারণ কঠিন হয়ে পড়েছে।
পতনঊষার ইউপি চেয়ারম্যান অলি আহমদ খান বলেন, ‘কালবৈশাখী ঝড়ে আমার ইউনিয়নে প্রচুর পরিমাণ বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। অনেক পরিবার খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। তাদের দ্রুত সহায়তার প্রয়োজন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাহেবকে অবহিত করা হয়েছে।’
মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কমলগঞ্জ জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক গোলাম ফারুক মীর বলেন, ‘ঝড়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কয়েকটি খুঁটি ভেঙে পড়েছে। অনেক স্থানে তার ছিঁড়ে গেছে। এসব জায়গায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার জন্য কাজ চলছে।’
এ বিষয়ে কমলগঞ্জ ইউএনও জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘পতনঊষার ইউপি চেয়ারম্যান বাড়িঘর বিধ্বস্তের কথা বলেছেন। তবে পরিপূর্ণ হিসাব জানা যায়নি। চেয়ারম্যানদেরকে বলা হয়েছে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে দেয়ার জন্য। দ্রুত তাদের সহোযোগিতা করা হবে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর বনানীতে মাঝ সড়কে চলন্ত অবস্থায় যাত্রীবাহী বাসে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নির্বাপনে কাজ করে।
জানা গেছে, শনিবার বিকেলে জে কে এন্টারপ্রাইজ পরিবহনের একটি বাস বনানী আর্মি স্টেডিয়ামের সামনে একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিলে মোটরসাইকেলের ট্যাঙ্কি বিস্ফোরিত হয়ে বাসটিতে আগুন ধরে যায়।
ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তা খালেদা ইয়াসমিন জানান, বিকেল ৪টা ২ মিনিটে যাত্রীবাহী একটি বাসে আগুন লাগার খবর আসে। পরে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নির্বাপন করে। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা-শেরপুর রুটে চলাচল করা জে কে এন্টারপ্রাইজ পরিবহনের বাসটি বনানী আর্মি স্টেডিয়ামের সামনে একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। পরে মোটরসাইকেলটিকে টেনে-হিঁচড়ে বাসটি অনেক দূর নিয়ে আসে। এতে মোটরসাইকেলের তেলের ট্যাঙ্ক বিস্ফোরিত হয়ে বাসটিতেও আগুন লেগে যায়। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলের চালক গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গায় অব্যাহত অতি তীব্র তাপপ্রবাহে ওষ্ঠাগত হয়ে পড়েছে জনজীবন। ভ্যাপসা গরমে অস্বস্তি বেড়েছে কয়েকগুণ।
শনিবার বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গা জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তীব্র থেকে অতি তীব্র আকার ধারণ করছে জেলার তাপপ্রবাহ। গরমে একটু স্বস্তি পেতে গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছে মানুষ। তবে, ভ্যাপসা গরমে স্বস্তি নেই কোথাও। আবহাওয়ার এমন বিরূপ আচরণের সঙ্গে কোনোভাবেই খাপ খাওয়াতে পারছে না জেলাবাসী। কেউ আবার পান করছেন ফুটপাতের অস্বাস্থ্যকর পানীয়। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করছে প্রাণিকূল। হাসপাতালে বাড়ছে গরমজনিত রোগীর সংখ্যা।
দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ডের ইজিবাইক চালক হারেজ আলী বলেন, ‘কঠিন তাপ পড়চি। সূর্য মনে হচ্চি মাতার উপর চলি এসিচে। আমরা গরীব মানুষ, পেটের দায়ে বাইরি বের হয়িচি। মাজে মাজে রাস্তার পাশের দুকান থেকি শরবত খেয়ি ঠান্ডা হচ্চি।’
চলমান দাবদাহে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে সেচ কার্যক্রম; নষ্ট হচ্ছে ধান, আম, লিচু ও কলাসহ মাঠের অন্যান্য ফসল।
মৌসুমের প্রায় সময়জুড়েই উত্তপ্ত থাকে চুয়াডাঙ্গা। এবারও চৈত্রের মধ্যভাগ থেকে শুরু হওয়া তাপমাত্রার এমন দাপট বৈশাখের আবহাওয়াকে জটিল করে তুলছে। এ যেন মরুর উষ্ণতা অনুভব করছে মানুষ।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘এ মাসের শেষের কয়েকদিন তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য