× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

সোশ্যাল মিডিয়া
জান ও জবান এর ঘূর্ণিতর্ক ফেসবুকে
google_news print-icon

‘জান ও জবান’-এর ঘূর্ণিতর্ক ফেসবুকে

জান-ও-জবান-এর-ঘূর্ণিতর্ক-ফেসবুকে
ব্যানারের এই 'জান ও জবান' নিয়ে ফেসবুকে চলছে বিতর্কের ঝড়। ছবি: সংগৃহিত।
কারাগারে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর প্রতিবাদ সমাবেশের একটি ব্যানারে লেখা ছিল ‘জান ও জবানের স্বাধীনতা চাই’। আর এরপর থেকেই ‘জান ও জবান’ শব্দবন্ধ নিয়ে তোলপাড় চলছে ফেসবুকে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় আইনটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছে লেখক, শিল্পী, সংস্কৃতিকর্মী ও একাধিক বামপন্থি সংগঠন। তবে এই আন্দোলনেই বিতর্ক উঠেছে একটি স্লোগানের দুটি শব্দ ঘিরে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে পাল্টাপাল্টি সমালোচনা। এমনকি আন্দোলনকারীদের মধ্যেই তৈরি হয়েছে দুটি পক্ষ।

মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর পরদিন ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে শাহবাগে বেলা ৩টায় ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ৪টায় সমাবেশ করেন লেখক, শিল্পী, সংস্কৃতিকর্মীরা। বিভিন্ন বামপন্থি সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও ছিলেন সেখানে।

প্রতিবাদ সমাবেশের একটি ব্যানারে লেখা ছিল ‘জান ও জবানের স্বাধীনতা চাই’। আর এরপর থেকেই সেই ‘জান ও জবান‘ নিয়ে তোলপাড় চলছে ফেসবুকে।

বিতর্কের সূত্রপাত হয় বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায় এবং সুইডেন প্রবাসী লেখক ও উইমেন চ্যাপ্টার সম্পাদক সুপ্রীতি ধরের স্ট্যাটাসের সূত্রে।

এর মধ্যে দিলীপ রায়ের স্ট্যাটাসটি ছিল আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে ‘গায়েবানা জানাজা'র আয়োজন নিয়ে। ২৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ৪২ মিনিটে দিলীপ রায় স্ট্যাটাস দেন, ‘সারাদিন মিটিং মিছিল করে আসার পর ফেসবুকে কূটক্যাচাল করতে ইচ্ছে করছে না। তারপরও শুধু একটা প্রশ্ন করতে চাই- এটি একটি সাধারণ জিজ্ঞাসা। অপরাধ নেবেন না।

গায়েবানা জানাজা যদি ধর্মীয় না হয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি হয়ে থাকে, সেই কর্মসূচির নেতৃত্ব কি দিলীপ রায় দিতে পারবে?’

ভোর ৬টা ২৪ মিনিটে সুপ্রীতি ধর লেখেন, “জান ও জবান’-এর স্বাধীনতা চেয়ে আন্দোলনের ডাক দেয়া হয়েছে। এই দুটো শব্দই আমার কানে বাজছে। এতো বয়স হয়ে গেলেও মনে হয় না খুব বেশি বার/কখনও আমি এই দুটি শব্দ ব্যবহার করেছি। কথা বলার স্বাধীনতা চেয়েছি, লেখার স্বাধীনতা চেয়ে এসেছি এতোকাল। শব্দ, ভাষাও যে সাম্প্রদায়িক হয়, এ দুটো তার প্রমাণ।”

আন্দোলনে ‘জান ও জবান’ দুটি উদ্দেশ্যপূর্ণ শব্দের ব্যবহারকে ইঙ্গিত করে তার এই বক্তব্য সমর্থন করেন নেটিজেনদের অনেকে। সুপ্রীতি ধরের স্ট্যাটাসে আইনজীবী ইমতিয়াজ মাহমুদ লেখেন, ‘এটা হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা। ধর্মকে ব্যবহারের সফটকোর কায়দা। মওলানা ভাসানি স্টাইল। কে করেছে? আমি শুনিনি।’

ইমতিয়াজ মাহমুদ একটি আলাদা পোস্টে লেখেন, ‘...জান-জবান নিয়ে কি আমার অসুবিধা আছে? না, বিষয়টা অসুবিধার নয়, আশঙ্কার। আশঙ্কাটা কিসের?...বাংলাদেশে একদল লোক আছে যারা মওলানা ভাসানিকে খুব পছন্দ করেন, যে কোন অবস্থায় ভারতের বিরোধিতা করেন আর যে কোন অবস্থায় আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করেন।...এরা কারা? আপনিই হিসাব করে দেখেন। বিএনপি জামাত এবং ওদের জোটের দলগুলি, সাবেক চীনপন্থি দল ও গ্রুপগুলি এবং এদের অনুগামী বা সমর্থক সমর্থকরা। এরা বাঙালিকে কেবল বাঙালি হিসাবে একটি জাতী হিসাবে দেখতে চায় না বা দেখতে পারে না, এরা বাঙালী মুসলমান ও বাঙালি হিন্দুর মধ্যে পার্থক্য করেন এবং বাংলাদেশকে বাঙালী মুসলমানের দেশ হিসাবে দেখতে পছন্দ করেন।

‘আমি মাওলানা ভাসানিকে পছন্দ করিনা। কেন করিনা? কারণ আমার জ্ঞান বুদ্ধিতে তিনি একজন সাম্প্রদায়িক নেতা ছিলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা প্রশ্নে তাঁর ভূমিকা একটু ম্লান ছিল এবং স্বাধীনতার পর দেশের সংবিধানে তিনি ধর্মনিরপেক্ষতার পরিবর্তে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম মানুষের বিশ্বাসের প্রতিফলন দেখতে চেয়েছিলেন। চীনের প্রতি আনুগত্য ও ভারতের প্রতি বিদ্বেষ তাঁর রাজনৈতিক অবস্থানকে একটু জটিল তো করেছিলই, তাঁর উপর আবার তাঁর নিজের পীর হিসবে মুরিদ গ্রহণ করা, মানুষকে তাবিজ দেওয়া, পড়াপানি দেওয়া, এইসব আছে। আবার বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর ঘাতকদের প্রতি তাঁর ব্লেসিং, জিয়াউর রহমানকে সমর্থন, জিয়াউর রহমানের সমর্থন নিয়ে লং মার্চ এইসবও আছে।’

ইমতিয়াজ মাহমুদ লেখেন, ‘...আমি মনে সেক্যুলার মানুষ, আমি চাই দেশ সেক্যুলার হোক, রাষ্ট্র চলুক ইহজাগতিক নিয়মে। আমি মানুষকে হিন্দু মুসলমানে ভাগ করতে চাই না, বাঙালিকেও হিন্দু মুসলমানে ভাগ করতে চাই না। আমি মনে করিনা যে মাদ্রাসা শিক্ষকরা অনেক স্মার্ট আর রবীন্দ্রনাথ আমার শত্রু। আমি দেশের সমাজতন্ত্র চাই, দুনিয়াজুড়ে সমাজতন্ত্র চাই, বাজার অর্থনীতির পতন চাই। আমি মনে করি সমাজতন্ত্র অর্জন সম্ভব, সমাজতন্ত্র প্রয়োজন এবং বাজার অর্থনীতি উৎখাত করা সম্ভব। কঠিন বটে, কিন্তু অসম্ভব নয়। আমি এটাও মনে করি যে মার্ক্স সাহেবের থিসিস এখনও সঠিক। এবং আমি চাই না রাজনীতিতে কেউ ধর্মের ব্যবহার করুক।’

বাকস্বাধীনতা আদায়ের জন্য যে মঞ্চ তৈরির চেষ্টা, তাতে ‘জান ও জবান’ শব্দের ব্যবহার উদ্দেশ্যমূলক এবং সাম্প্রদায়িক মনে করে স্ট্যাটাস দেন দৈনিক সমকালের ফিচার সম্পাদক ও কবি মাহবুব আজীজ, দৈনিক দেশ রূপান্তর-এর যুগ্ম সম্পাদক গাজী নাসিরুদ্দিন খোকনসহ অনেকে।

মাহবুব আজীজ লেখেন, “কথা বলবার অধিকার আদায়ের জন্য যে মঞ্চ তৈরির চেষ্টা-- তাতে ‘জান ও জবান’ শব্দের ব্যবহার সাম্প্রদায়িকতাকে উসকে দেয়। ভাষা সুতীব্রভাবে রাজনৈতিক -- জান, জবান বা সিনা, সিলসিলা -- এসব শব্দ যারা ব্যবহার করে; তাদের রাজনৈতিক গন্তব্য অবশ্যই সাম্প্রদায়িকতার পক্ষে।”

‘জান জবানের স্বাধীনতা চাই’ দাবি তুলে আন্দোলনকারীরা এর মধ্যে খাটিয়া মিছিল ও গায়েবানা জানাজা করলে সাংবাদিক গাজী নাসিরুদ্দিন খোকন স্ট্যাটাস দেন, “বামপন্থীরা গায়েবানা জানাজা করল। এটিতো আর মৃত ব্যক্তির আত্মার শান্তি কামনায় করা হয়নি। রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল। তাতে দেশের অন্য ধর্মের লোকদের এক্সক্লুড করে দেয়া হল। তারপর নাকি আন্দোলনের ডাক দেয়া হয়েছে ‘জান ও জবান’ রক্ষার দাবি নিয়ে। দৃশ্যত ভাসানী ভাসানী মনে হলেও এর স্পিরিচুয়াল গুরু সন্দেহাতীতভাবে ফরহাদ মজহার। ভাষার বিউপনিবেশিকরণের নামে ধর্মবিদ্বেষ ছড়ানোই এই স্লোগানের অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য। মজার ব্যাপার ফরহাদের এই সমস্ত বিদ্বেষের সাবস্ক্রাইবার হচ্ছে বামপন্থী পরিচয় দেওয়া প্রতিক্রিয়াশীলরা। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বামপন্থীরাও যদি ইনক্লুসিভ হতে না পারে তাহলে ভেদবুদ্ধিই রাজনীতি শাসন করবে। দিব্যচোখে এদেশের পরিণতি দেখা যায়। আরেকটা পাকিস্তান ইজ ইন দ্য অফিং।”

সোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারী অনেকেই এসব স্ট্যাটাসে তাদের প্রতিক্রিয়া ও মতামত দেন। সুপ্রীতি ধরের স্ট্যাটাসে খান আসাদ নামের একজনের মন্তব্য ছিল, “ব্যাপারটা খেয়াল করেছি। প্রথমে ফরহাদ মজহার এলো ‘জ্বিহাদ হচ্ছে শ্রেণীসংগ্রাম’ তত্ত্ব নিয়ে। তারপর পিনাকী ভটচাজ এলো সংখ্যাগুরু ‘মুসলমানের’ সাথে ঐক্য করার ‘কৌশল’ বোঝাতে। এরপর এখন ‘মুসলমানদের’ সাথে রিলেট করা যায়, এমন স্লোগান খোঁজা হচ্ছে। হোক এগুলো। পার্ট অফ দি প্রসেস। কিন্তু আন্দোলনে ‘সাম্প্রদায়িক ভাষা’ সম্পর্কে প্রশ্ন তোলায় যে উষ্মা ও গালাগাল দেখছি, সেটা আমাকে খুবই বিস্মিত করেছে। এই ধরনের বুদ্ধিবৃত্তিক সহিঞ্চুতা তো ফ্যাসিস্টদের থাকে।”

‘জান ও জবান’-এর এই তর্কের সূত্র ধরে লেখক ও ব্লগার অমি রহমান পিয়াল লেখেন, “বাংলা ভাষার মাসের শেষ দিনটায় দারুণ এক বলাৎকার উপহার দিলো বিপ্লবীরা। তারা মুশতাকরে ভাষা সৈনিক বইলা দাবি করছে, সেটা করতেই পারে। কিন্তু ইনকিলাবি জোশে নতুন কিছু শব্দ যোগ করছে বাংলার রাজনীতিতে, শ্লোগানে, পোস্টারে। যদিও তাগো নেতারা বলতেছে ডানপন্থী জামাত শিবির ও বিম্পি যেন তাদের দূরের না ভাবে এবং ইসলামী আন্দোলনকারীরা যেন নাস্তিক বইলা তাগো দূরে ঠেইলা না দেয় সেই নৈকট্য আনতেই তারা এইসব ভাষা প্রয়োগ করতেছে। তো আমরা ইনসানিয়াত, ইনসাফ, নফসানিয়াত, মাগরমছলি, জান কি বাজি ইত্যাদি অনেক নতুন জবান শিখলাম আলহামদুলিল্লাহ। পরে গুগল মাইরা দেখি এইসব নামে সুপারহিট সব উর্দু সিনেমা আছে! মারহাবা...”

এর বিপরীত পক্ষও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান ফেসবুকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে হেমাঙ্গ বিশ্বাস, সলিল চৌধুরী আর আব্দুল লতিফের গানের লিরিক, নজরুলের রাজবন্দীর জবানবন্দিসহ নানা সাহিত্যিক রেফারেন্স। মোটা দাগে দুই ধরনের বক্তব্য ও বিশ্লেষণ পাওয়া যাচ্ছে এসব স্ট্যাটাসে।

এক পক্ষ ‘সাধারণ মানুষের মুখের ভাষা’কে আন্দোলনের স্লোগানে ব্যবহারের সমালোচনাকারীদের ‘সাম্প্রদায়িক ও সরকারপন্থি’ হিসেবে অভিযুক্ত করছেন। আরেক পক্ষ ভাষার চিরকালীন পরিবর্তনশীলতা, বিদেশি শব্দের সাথে সহজাত মিথস্ক্রিয়া এবং এর ঐতিহাসিক রাজনৈতিক ব্যবহারের বিভিন্ন বিষয় সামনে আনছেন।

লেখক, অ্যাক্টিভিস্ট ও কবি ফারুক ওয়াসিফ লেখেন, ‘জান ও জবান যাদের কলুষিত, তারা একদিন শহীদ মিনারকেও সাম্প্রদায়িক বলবে, যেহেতু শহীদ আরবী আর মিনার ফারসি ভাষা থেকে আসা বাংলা শব্দ।’

কবি সোহেল হাসান গালিব ফেসবুকের এই তর্কে ‘ভাষা-সাম্প্রদায়িকদের’ উদ্দেশ করে “ভাষা-সাম্প্রদায়িকতা: প্রসঙ্গ জান ও জবান” শিরোনামে পোস্টে লেখেন, “কিছুদিন আগে আমার এক বন্ধু আক্ষেপসহ আমাকে জানালেন তিনি কবিতায় ‘আব্বা’ শব্দ ব্যবহার করেছেন বলে এক প্রগতিশীল ‘হিন্দু’ কবি বলেছেন, লেখাটা সাম্প্রদায়িক হয়ে গেছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘আব্বা’ শব্দের রিপ্লেসমেন্ট হিশেবে তার সেকুলার সাজেশনটা কী? বন্ধু বললেন, সে তাকে ‘বাবা’ লিখতে বলছে। আমি তখন বললাম, তাকে বলেন ‘বাবা’ শব্দটা তো তুর্কি। আরবির বদলে তুর্কি লেখাটা কি ঠিক হবে?…’

তিনি লেখেন, “জান ও জবান’-এর বিরোধিতা যারা করছেন, তারা সেই পুরনো সাম্প্রদায়িক ব্যাধিতে আক্রান্ত। এ যুগের ভারতচন্দ্র হিশেবে এইটুকু আমি নিশ্চিত করতে পারি।”

কবি ব্রাত্য রাইসু স্ট্যাটাস দেন, “জান’ ও ‘জবান’ শব্দ একসঙ্গে বসার কারণে এর ইসলামি উৎস প্রকট হইয়া উঠছে। তাতে ক্ষতি কী? এই শব্দ দুইটার কারণে যারা আন্দোলনে অনীহ তারাই সাম্প্রদায়িক।

‘শব্দের অবশ্যই মুসলিম ও হিন্দু উৎস আছে, থাকবে। তার ব্যবহারকারী হিসাবে আপনি যখন মুসলমান তাই হিন্দু শব্দ ব্যবহার করবেন না বইলা ঘোষণা দিবেন তখন আপনি সাম্প্রদায়িক। আবার হিন্দু হইলে মুসলমান শব্দ ব্যবহারে আপত্তি যখন জানাইতেছেন তখনও আপনি সাম্প্রদায়িক। কিন্তু যখন আপনি একই সঙ্গে মুসলমান ও ইসলামি শব্দে আপনার আপত্তি তখন আপনি দুই নম্বর। আপনি পরিচয় লুকাইতেছেন। তাইলে কারা সাম্প্রদায়িক ও ভণ্ড?

‘যারা জান ও জবানে আপত্তি করতেছেন, তারাই। ’

‘জান ও জবান’ শব্দবন্ধের বিরোধিতার সমালোচনা করে দেশ রূপান্তরের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আরিফুজ্জামান তুহিন লেখেন, ‘সুপ্রীতি ধর কহিলেন!! তসলিম নাসরিন সরাসরি বিজেপিকে সমর্থন করেন। তসলিমার সমর্থক নারীবাদীরাও বিজেপি সংঘ পরিবারের সমর্থক কট্টোর হিন্দু মৌলবাদী। এতে সুপ্রীতি ধর কেন গোস্যা হলেন বুঝতে পারছিনা। আপনি একটা আন্দোলনকে সাম্প্রদায়িক বলে দেগে দিলেন সেটা তুচ্ছ ঘটনা? এভাবেইতো ভারতে কৃষক আন্দোলনকে টুকরে টুকরে গ্যাং, খালিস্তান, মাওবাদী দেগে দিচ্ছে মোদি বিজেপি সংঘ পরিবার।

তিনি লেখেন, “আমরা জানি কারা আমাদের মুখ চেপে ধরতে চায়? আপনার মুখের ভাষা ‘অতি বাম’ আসলে আপনার নেত্রীর ভাষা।

আমরা জানি আপনাদের রসুনের কোয়াগুলো ঠিক কোথায় এসে বাসা বেধেছে। আমরা অপেক্ষা করি সেদিনের, যেদিন কৃষক ও শ্রমিক তার ভাষা দিয়ে আপনার জবানের জবাব দেবে। আর কান্নাকাটি কইরেন না। আন্দোলন করছেন যারা তারা আন্দোলনই করবে,যারা মামলা কারাগারে তারা তা বহন করবে। দুরে থেকে নিরাপদে থেকে তারা নারীবাদ বেঁচবে না। কারণ তারা শ্রম বেচতে জানে, আর্দশ না।”

অন্যদিকে জার্মান প্রবাসী কবি ও অ্যাক্টিভিস্ট, সাহিত্য পত্রিকা অংশুমালীর সম্পাদক জোবায়েন সন্ধী সুপ্রীতি ধরের স্ট্যাটাস এর জবাবে লেখেন, “চশমাটা খুলে ফেলুন! ওরে, তোরা কেউ আর যাসনে ওই ‘শহীদ’ ‘মিনার’-এ। ‘জান’ কিংবা ‘জবান’ এই শব্দগুলো যে সাম্প্রদায়িক, এটা সুপ্রীতি ধর দাবি করেছেন। নিজেকে নারীবাদি দাবি করা সুপ্রীতি ধর উওমেন চ্যাপ্টার নামক পোর্টাল চালান। এই নারী যে ভাষা ও সাম্প্রদায়িক বিশেষজ্ঞ, সেটা আজ নতুন করে জানতে পারলাম।’’

জোবায়েন সন্ধী লেখেন, “তিনি (সুপ্রীতি) যে আওয়ামী লীগের পারপাস সার্ভ করেন সেই ‘আওয়ামী’ শব্দটায় কোনো সাম্প্রদায়িক গন্ধ পাননা। হক ও মজলুম শব্দে সাম্প্রদায়িক গন্ধ পেলেও তাঁর মেয়ের নামের শেষে ‘হক’ থাকায় তিনি কোনো সাম্প্রদায়িক গন্ধ পাননা।

সুপ্রীতির দাবি অনুযায়ী ‘ইনকিলাব’ কিংবা ‘জিন্দাবাদ’ তো মহা সাম্প্রদায়িক শব্দ!...”

এর মধ্যেই ব্লগার ও গণসংহতি আন্দোলনের কর্মী সৈকত মল্লিক স্ট্যাটাস দেন, “জান ও জবানের স্বাধীনতা চাই। ‘নফসানিয়াত’ নিপাত যাক, ‘ইনসানিয়াত’ মুক্তি পাক। ইনসাফ কায়েমের লড়াইয়ে শামিল হোন।”

বামপন্থী অ্যাক্টিভিস্ট ও লেখক ফিরোজ আহমেদ ফেসবুকে লেখেন, “ধাড়িগুলোকে নামিয়েছে মোস্তাক ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করতো, এই ব্রহ্মাস্ত্র নিয়ে। অতীতে বেশ কাজে এলেও এবারে ওষুধ ধরেনি। তখন ছানাপোনাগুলোকে নামিয়েছে ঠিক ১৮০ কৌনিক দূরত্বের ‘জান-জবান’ উর্দু, এই ঢাল নিয়ে।

“আওয়ামী’ ‘লীগের’ এই দুইটি আলাদা ‘মোসাহেব’ বাহিনীই বেশ পারঙ্গম। আরে ভাই, জান-জবান শুনে উর্দু মনে হয়, তোমাদের কেউ মানা করেছে ‘বাকস্বাধীনতা রক্ষা করো, মোস্তাকের খুনীদের বিচার করো, অবৈধ দখলদার আসন ছাড়ো’ এইভাবে শুদ্ধ বাংলায় সমাবেশ ডাকতে? নিমন্ত্রণ পেলে আমিও যাবো, বিশুদ্ধ বাংলায় বক্তব্য দিয়ে আসবো।”

ফিরোজ আহমেদ ফেসবুকে লেখেন, “কী জাবর কেটে তারা সময় কাটায়, সেটা দেখেই তো বোঝা যায় কারা আসলে কোন প্রাণী, কী তারা চায়। *অত্যন্ত লজ্জিত ‘মোসাহেব’ এই ফার্সী শব্দটা রেখে দিতে হলো বলে। চাটুকার, দলদাস, দলকানা ইত্যাদি বাংলা শব্দকে আমার কাছে একটু আক্রমণাত্মক আর অভদ্র মনে হয়। ক্ষমা করবেন বাংলাভাষীবৃন্দ।”

বাংলা ভাষায় আরবি-ফারসি-উর্দু-তুর্কি শব্দের সহজাত ব্যবহার এবং জান-জবান এর ব্যবহারকে ‘সাম্প্রদায়িক’ হিসেবে আখ্যানের পেছনের মনস্তত্ত্ব নিয়ে বিশ্লেষণমূলক স্ট্যাটাস দিয়েছেন অনেকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম ‘জান ও জবান’ নিয়ে ফেসবুকের হুলুস্থুলে লেখেন, ‘‘বাজারে ‘জান’ ও ‘জবান’ নিয়া হুলুস্থুল চলতেছে। এ লাইনে করে-খাওয়া পাবলিক হিসাবে দুই-এক কথা বলা জরুরি মনে করছি। এক. এ আলাপটা আদতে ‘বিদেশি’ ভাষার আলাপ। যারা দশ ক্লাস ডিঙ্গাইছেন, তাদের সবারই মনে থাকার কথা, বাংলা ব্যাকরণ বইতে ‘শব্দের উৎসগত শ্রেণিবিভাগ’ বলে এক চিজ আছে। এটাও ভুলে যাওয়ার কারণ নাই, ইংরেজি ব্যাকরণে এ লাইনে কোনো বাতচিত ছিল না।"

তিনি লেখেন, "জটিলতায় না গিয়া কই, আপনারা পিছন ফিরা মনে করতে পারবেন, বাংলা ব্যাকরণটা সাজানো হইছে এই ‘বিদেশি’ আর ‘অবিদেশি’ ক্যাটেগরি বা বর্গ দিয়া। এর পেছনের রাজনীতি ও রাজনৈতিক র্অথনীতি বিস্তর আছে। সেদিকে না গিয়া বলি, ‘বিদেশি’ শব্দ বইলা ভাষায় আসলে কিছু থাকে না। এটা ভাষাবিজ্ঞানের খুবই প্রাথমিক আলাপ। ‘বোতল’ শব্দটা বিদেশি নয়; কারণ, দুনিয়ার কোনো ভাষায় এ রূপতত্ত্ব ও ধ্বনিতত্ত্বে ব্যাখ্যাযোগ্য কোনো শব্দ নাই। ইংরেজিতে যে নাই, তা আপনারা সকলেই জানেন। কাজেই যারা ‘বিদেশি’ ক্যাটেগরিতে আলাপটা করেছেন, পক্ষে বা বিপক্ষে, বাংলা হইয়া গেছে বা হয় নাই ইত্যাদি বলে, তারা জেনে বা না জেনে ইতিমধ্যে সাম্প্রদায়িকতার খপ্পরে থাকা ব্যাকরণের খপ্পরে পড়েছেন। এখানে বলে রাখি, ‘বিদেশি’ কথাটা শুধু বাংলা ব্যাকরণের না, ইতিহাস ও অন্য অনেক শাস্ত্রেরও ঘোষিত বা অঘোষিত ভিত্তিভূমি। কাজেই সংস্কৃতি, রাজনীতি, সাংস্কৃতিক রাজনীতি ইত্যাদি চর্চায় আপনি এ গোলমাল এড়াতে চাইলে ‘সাধু’ সাজলেই কেবল হবে না, এই সাম্প্রদায়িক ‘বিদেশি’ ধারণাটাকেই গুড়িয়ে দিতে হবে। দুই. এ আলাপে ‘আরবি’ ও ‘ফারসি’ শব্দ দুটো দেদার ব্যবহৃত হয়েছে। ভুল। দুশ বছর ধরে সবচেয়ে ভদ্রলোকেরাও কথাটা এভাবে বলায় এখনকার ভদ্রলোকেরা কথাগুলো ব্যবহার করেছেন, আর দাবি করেছেন, তিনি আরবি-ফারসিতে সমস্যা মনে করছেন না, কাজেই তিনি অসাম্প্রদায়িক।"

অধ্যাপক আজম লেখেন, "আসলে পুরা আলাপটাই ভয়াবহভাবে গোলমেলে। বাংলায় ব্যবহৃত এসব শব্দের সাথে ‘আরবি-ফারসি’র সম্পর্ক খুবই সামান্য অথবা একেবারেই নাই। যে ভাষা থেকে বাংলা এবং ভারতীয় অন্য অসংখ্য ভাষায় শব্দগুলো ঢুকেছে সে ভাষাটির নাম হিন্দুস্থানি -- ইংরেজির আগে ভারতের সবচেয়ে প্রতাপশালী লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা। এ কথা মাথায় নেয়ার সাথে সাথে আপনি দুশ বছরের এ বাতচিতের গোড়ার ব্যারামটা বুঝে ফেলবেন। ‘আরবি-ফারসি’ ‘বিদেশি’ ভাষা এবং প্রধানত মুসলমানদের সাথে যুক্ত। হিন্দুস্থানি খাঁটি ভারতীয় মাল, এবং এসেন্সিয়ালি ভারতের হিন্দু-মুসলমানসহ সব জনগোষ্ঠীর সাথে যুক্ত। কাজেই হিন্দুস্থানিকে ভাসুর বানাইয়া ‘আরবি-ফারসি’র নাম জবানে এস্তমাল করতে পারলেই একসাথে অনেকগুলা কেল্লা ফতে করা যায়। গত দুশ বছর ধইরা এ ঘটনা নানা ফর্মে ঘটতেছে। যারা ফেসবুকের আলাপ ফলো করেছেন, তাদের ব্যাপারটার ব্যাপকতা বুঝতে দেরি হওয়ার কথা না। ৩। অনেকে ভাষার সাথে সাম্প্রদায়িকতা, রাজনীতি ইত্যাদির সম্পর্ক নাই বলে ফতোয়া বিতরণ করেছেন। ভালো নিয়তেই করেছেন। তাদের জন্য শুভকামনা।"

তিনি লেখেন, "এরা শুধু একটাই সমস্যা করেছেন। ভাষাকে জামার মতো ভেবেছেন, যাকে ধুয়ে-মুছে সাফ-সুতরা করিয়ে নেয়া যায়, এবং চাইলে যে কোনো সুগন্ধী মাখিয়ে অন্য ফ্লেবার দেয়া যায়। না। ভাষা ওই জিনিস না। এটা জীবনের প্রধান প্রকাশ; কাজেই জীবনের মাপই এর মাপ। জীবনে যা যা আছে ভাষাতেও তার সবই আছে।

এ দিক থেকে যারা ‘জান’ ও ‘জবান’ শব্দের একত্র-ব্যবহারে ভিরমি খেয়েছেন, তাদের পজিশন, আমি বলব, রাজনৈতিকভাবে শুদ্ধ নাও হতে পারে, কিন্তু ভাষার চরিত্রের দিক থেকে বিলকুল সহি। এ ব্যবহার রাজনৈতিকভাবে, বিশেষত সাংস্কৃতিক রাজনীতির দিক থেকে, কাজে কাজেই ক্ষমতা-সম্পর্কের দিক থেকে, অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ। ”

কবি মজনু শাহ স্ট্যাটাস দেন, “Bengali words, come from others!

চায়ের কাপে বিস্কুট ডুবিয়ে খাওয়ার সময় হঠাৎ মাথায় এল যে এই চা চীনা শব্দ। আবার বিস্কুট ফরাসি শব্দ। বিস্কুটের সাথে থাকা চানাচুর হিন্দি। চায়ে যে চিনি ও পানি থাকে, সেখানে পানি হিন্দি । আবার চা ভর্তি পেয়ালাটা ফারসি কিন্তু কাপটা ইংরেজি। এদিকে ইংরেজি শব্দটাই আবার পর্তুগিজ।”

তিনি লেখেন, ‘চা চীনা হলেও কফি কিন্তু তুর্কি শব্দ। আবার কেক পাউরুটির কেক ইংরেজি, পাউরুটি পর্তুগীজ। খানাপিনায় যাই। বলে রাখি, খানাপিনা হিন্দী আর দাম গ্রীক। রেস্তোরাঁ বা ব্যুফেতে গিয়ে পিৎজা, বার্গার বা চকোলেট অর্ডার দেয়ার সময় কখনো কি খেয়াল করেছেন, রেস্তোরা আর ব্যুফে দুইটাই ফরাসী ভাষার, সাথে পিৎজাও। পিৎজায় দেয়া মশলাটা আরবি। মশলায় দেয়া মরিচটা ফারসি!

বার্গার কিংবা চপ দুটোই আবার ইংরেজি। কিন্তু চকোলেট আবার মেক্সিকান শব্দ। অর্ডারটা ইংরেজি। যে মেন্যু থেকে অর্ডার করছেন সেটা আবার ফরাসী। ম্যানেজারকে নগদে টাকা দেয়ার সময় মাথায় রাখবেন, নগদ আরবি, আর ম্যানেজার ইতালিয়ান। আর যদি দারোয়ানকে বকশিস দেন, দারোয়ান ও তার বকশিস দুটোই ফারসি।…

‘পুরো স্ট্যাটাস মনে না থাকলে অন্তত এটা মনে রাখবেন যে মন শব্দটা আরবি। নামে আসি। মজনু (মাজনুন) আরবি, শাহ ফারসি, বাংলা অর্থ, পাগল প্রেমিকের মাজার/দরগাহ । দরগাহ আবার ফারসি। শব্দের কেচ্ছা-কাহিনী এখানেই খতম। তবে কেচ্ছাটা আরবি, কাহিনীটা হিন্দি, উভয়ের খতমটা আরবিতে। মাফ চাইলাম না বা সরি বললাম না, কারণ মাফটা আরবি আর সরিটা ইংরেজি।’

কবি রক মনু লেখেন, “গোরস্থান বা হিন্দুস্থান নাকি গোরস্তান আর হিন্দুস্তান? জে কোনটাই হইতে পারে, কিন্তু কি আছিল আর কেমনে আর কেন পাল্টাইলো অনেকের লেখায়, শেই ইতিহাশটা মজার!

“আরো দুয়েকটা শব্দও আনা জাইতে পারে আলাপে; নিশিত বা ভোমর নাকি নিশিথ আর ভ্রমর? ছিলেট/মৌলভিবাজারের ভানু শেখের লেখা গান আছিলো, ‘নিশিতে জাইও ফুলবনে রে ভোমরা...’। এইটা চুরি করছিলেন জসিমউদ্দিন; চুরি কেন কইলাম? ভানু শেখের গানে তার দস্তখত আছিলো, লালনের গানে জেমন থাকে না, ‘শিরাজ শাই ডেকে বলে লালনকে...’ তেমন দস্তখত বা আরো আগে ‘কাশিরাম দাশ ভনে...’, তেমনটা রেওয়াজ আছিলো শেই জামানায়; আশলে এই জামানায়ও, জামানার আলাপটা ভুয়া, এখনো বাউল আর ফকিরা গানে আকছার পাইবেন এমন, আপনের টাইপের মামলা এইটা, জামানার ততো না!...’’

লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট পারভেজ আলম লেখেন, “বদলোকে কয় বাঙলা ভাষার কি জাত এই সংসারে? ভাষার কোন জাত নাই এ সংসারে। বাঙলা ভাষারও নাই। বাঙলা ভাষার দিকে তাকাইতে হবে প্রেমিকের মতো। বাঙলা ভাষার মধ্যে হাজির থাকা বিভিন্ন বংশের শব্দ ভান্ডারকে তখন আপনার আপন মনে হবে। যারা ভাষার দিকে জাতিবাদী বা সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিতে তাকান, তারা বিভিন্ন শব্দের মধ্যে হিন্দুয়ানী, মুসলমানি, দেশী, বিদেশী এমন নানান রকম পরিচয়ই খালি খুঁজে পান। শব্দের মধ্যে তারা দেখেন খালি ‘জাতের চিহ্ন’।

ভাষারে পৈতা পরাইতে চাওয়া অথবা সুন্নতে খতনা করাইতে চাওয়া সাম্প্রদায়িকদের গায়ে জ্বালা ধরিয়ে দেবার জন্যে, নিজ নিজ পক্ষকে সাম্প্রদায়িক-জাতিবাদীদের প্রভাব মুক্ত রাখার জন্যে বাঙলা ভাষায় হাজির থাকা সকল শব্দকে ভালবাসুন, বেশি বেশি ব্যবহার করুন। নিজের ভাষার প্রাচুর্যকে কবুল করুন। তখন দেখবেন যে - জান ও জবান - এমন আরো কতো স্লোগান - টুপ করে, হুট করে, ধপ করে, অথবা একটা নাদের মতো করে - নাজেল হতে থাকবে আমাদের ভাষার মধ্যে। …”

কবি আলতাফ শাহনেওয়াজ লেখেন, “জান’, ‘জবান’–এর সমস্যা কি? ভাষা ও শব্দকে কেন সাম্প্রদায়িকরূপে দেখা হবে? আমরা মাঝেমাঝেই বলি যে, ‘আমার কণ্ঠ রোধ করা হচ্ছে।’

একই কথা আবার এভাবেও বলি যে, ‘আমার জবান বন্ধ করতে চাও?’ এই যে একবার ‘কণ্ঠ’ আর একবার ‘জবান’ ব্যবহার করা গেল, এতে—এই দুই শব্দের মধ্য দিয়ে কি কোনো সাম্প্রদায়িক মনোভাবকে নির্দিষ্ট করা গেল? যাচ্ছে?

মনে হয় না। একেবারেই মনে হয় না। আমরা যেমন ‘জল’ বলি, আবার ‘পানি’ও বলি। এটা আমাদের ভাষা বৈচিত্র্যের অংশ।…”

এর বাইরে এই তর্কের ঊর্ধ্বে উঠে আন্দোলনের মূল ইস্যুতে জোর দেয়ার তাগিদও দিয়েছেন অনেকে।

কলামিস্ট, সাংবাদিক ও লেখক মনজুরুল হক স্ট্যাটাস দেন, “প্রশ্ন হচ্ছে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ বাতিল করতে হবে। এটা বাতিল হলে কী আর নির্যাতন-নিপীড়ন হবে না? অবশ্যই হবে। সেসবের জন্য গন্ডায় গন্ডায় আইন আছে। তারপরও এই কালো আইন বাতিলের আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলনের আগে ‘রিদমিক স্লোগান’ হিসেবে এসেছে- ‘জান ও জবানের স্বাধীনতা চাই’। এই স্লোগানকে কেউ কেউ ‘সাম্প্রদায়িকতা দোষে দুষ্ট’ বলছেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের বাক-বিতণ্ডা চরমে। মধ্যিখানে গুরুত্ব হারাল মূল ইস্যু-কুখ্যাত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ বাতিলের দাবী।

তিনি লেখেন, ‘এই স্লোগানসম্বলিত পোস্টারে কুখ্যাত আইনটি বাতিলের দাবী নেই। এটাই হওয়ার কথা। আপনারা বলবেন; ভাষার আবার ধর্ম কি? আছে, আছে। মজহার সায়েব যখন জিহাদকেই শ্রেণিসংগ্রাম বলে বিভ্রান্ত করেন, তখন সেটা ধর্মের কোটিং দিয়েই হয়। শব্দ যদি নিরীহ আর নিরপরাধ হতো তাহলে সর্বহারা শ্রেণির হাতে বন্দুক উঠলে আপনারা রে রে করে ওঠেন কেন?...’

স্ট্যাটাসের শেষ অংশে তিনি লেখেন,

‘আপনারা বন্দুকের সামনেও যেতে পারেন না।

আপনারা বন্দুক হাতে নেওয়া মানতে পারেন না।

কী করে জান-জবানের স্বাধীনতা আদায় করবেন?’

এই প্রতিবেদনে ফেসবুকের স্ট্যাটাসের বানান ও ভাষারীতি একই রাখা হয়েছে। তবে কোনো কোনো দীর্ঘ স্ট্যাটাস সংক্ষিপ্ত আকারে দেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন:
মুশতাক ‘মাদক’ নিতেন কি না তদন্তে বেরিয়ে আসবে: তথ্যমন্ত্রী
মুশতাকের মৃত্যু: সচিবালয়মুখী বিক্ষোভে পুলিশের বাধা
মুশতাকের মৃত্যুর প্রতিবাদকারীদের মুক্তির দাবি
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি বাম জোটের 
মুশতাকের মৃত্যু তদন্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কমিটি

মন্তব্য

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত সংবাদ

সোশ্যাল মিডিয়া
Very intense fire in Chuadanga Pabna Rajshahi

রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা, পাবনায় অতি তীব্র দাবদাহ

রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা, পাবনায় অতি তীব্র দাবদাহ দাবদাহের মধ্যে পাবনার একটি অঞ্চলে টিউবওয়েল থেকে পানি পান করছেন তৃষ্ণার্ত লোকজন। ছবি: নিউজবাংলা
তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র দাবদাহ এবং টাঙ্গাইল, বগুড়া, বাগেরহাট, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলার পাশাপাশি রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগ এবং ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে, যা অব্যাহত থাকতে পারে।

দেশের তিন জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র এবং পাঁচ জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।

পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ নিয়ে বলা হয়, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র দাবদাহ এবং টাঙ্গাইল, বগুড়া, বাগেরহাট, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলার পাশাপাশি রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগ এবং ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে, যা অব্যাহত থাকতে পারে।

দেশের কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেখানে মৃদু তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বইছে ধরা হয়।

তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তীব্র দাবদাহ ধরা হয়। অন্যদিকে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে বলা হয় অতি তীব্র দাবদাহ।

চুয়াডাঙ্গায় শুক্রবার বেলা তিনটায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ। একই দিনে পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

তাপমাত্রার বিষয়ে অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।

আরও পড়ুন:
দাবদাহে নষ্ট হচ্ছে পাটক্ষেত
৪২ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে পাবনার তাপমাত্রা
তাপপ্রবাহ থাকছেই, বৃষ্টি হলেও হতে পারে
চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২.৭ ডিগ্রি, মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ
দুই জেলায় অতি তীব্র, ১৬টিতে তীব্র দাবদাহ

মন্তব্য

সোশ্যাল মিডিয়া
Even if the heat wave remains it may rain

তাপপ্রবাহ থাকছেই, বৃষ্টি হলেও হতে পারে

তাপপ্রবাহ থাকছেই, বৃষ্টি হলেও হতে পারে গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন, নগরীতে পানিতে লাফাচ্ছে শিশুরা। ছবি: নিউজবাংলা
রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল, বগুড়া, বাগেরহাট, যশোর, কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

দেশের বিভিন্ন স্থানে যেভাবে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা অব্যাহত থাকতে পারে। এর মধ্যে কোথাও কোথাও বৃষ্টিরও সম্ভাবনা রয়েছে।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এতে বলা হয়, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল, বগুড়া, বাগেরহাট, যশোর, কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়োহাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।

অধিদপ্তর বলছে, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।

আবহাওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। আগামী পাঁচ দিনেও আবহাওয়াও প্রায় একই থাকতে পারে।

শুক্রবার দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়া ২০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশের কোথাও বৃষ্টি হয়নি বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

মন্তব্য

সোশ্যাল মিডিয়া
Thailand visit milestone in bilateral relations PM

থাইল্যান্ড সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক: প্রধানমন্ত্রী

থাইল্যান্ড সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক: প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডের গভর্নর হাউসে শুক্রবার বৈঠকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসন ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই সরকারি সফর আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে, যা আমাদের দুই দেশের মধ্যে ফলপ্রসূ অংশীদারত্বের এক নতুন যুগের সূচনা করেছে।’

থাইল্যান্ডে রাষ্ট্রীয় সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির গভর্নর হাউসে শুক্রবার থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে তিনি এ মন্তব্য করেন বলে বার্তা সংস্থা ইউএনবির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, খাদ্য নিরাপত্তা, পর্যটন, জনস্বাস্থ্য, জ্বালানি ও আইসিটি খাতে সহযোগিতা জোরদারের সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে অনুভব করি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, খাদ্য নিরাপত্তা, পর্যটন, জনস্বাস্থ্য, জ্বালানি, আইসিটি, জনগণ থেকে জনগণে যোগাযোগ ও সংযোগের ক্ষেত্রে এবং বিমসটেকের অধীনে আমাদের সহযোগিতা জোরদার করার সুযোগ রয়েছে।’

এর আগে দুই নেতা গভর্নর হাউসে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে যোগ দেয়ার আগে ১৫ মিনিটের জন্য একান্ত বৈঠক করেন।

বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি—একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও একটি লেটার অফ ইনটেন্ট (এলওআই) সই করা হয়।

মধ্যাহ্নভোজে শেখ হাসিনা বলেন, নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বন্ধুত্ব আমাদের ঐতিহাসিক, ভাষাগত ও অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, টেকসই উন্নয়ন, জনগণ থেকে জনগণে যোগাযোগ ও সংযোগসহ সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে আমাদের দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী থাভিসিন ও তিনি পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা করতে এবং দুই দেশের সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার মধ্যে আরও আলাপ-আলোচনাকে উৎসাহিত করতে সম্মত হয়েছি। একইভাবে দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগের প্রসার ও সুবিধার্থে আমাদের সব রকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘শুক্রবার ঢাকা ও ব্যাংকক যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই করেছে, তা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একটি দৃঢ় কাঠামো প্রদান করবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, সফরটি ‘প্রতিবেশী’ নীতির বৃহত্তর ফোকাসের অংশ, যা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গতি আরও নবায়নের জন্য দুই দেশকে চমৎকার সুযোগ করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে, এই সফর আমাদের দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীর করতে সাহায্য করবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, এই সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পূর্ণ সম্ভাবনায় অত্যন্ত প্রয়োজনীয় গতি সঞ্চার করবে।

তিনি বলেন, ‘এই সরকারি সফর আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে, যা আমাদের দুই দেশের মধ্যে ফলপ্রসূ অংশীদারত্বের এক নতুন যুগের সূচনা করেছে।

‘আগামী দিনগুলোয় আমাদের জনগণ ও দেশের পারস্পরিক সুবিধার জন্য আমাদের সম্পর্কের নতুন গতি বজায় রাখতে হবে।’

আরও পড়ুন:
বাংলাদেশের হাসপাতাল, অর্থনৈতিক অঞ্চলে থাই বিনিয়োগ চান শেখ হাসিনা
থাইল্যান্ডে থাভিসিন-শেখ হাসিনা বৈঠক
যুদ্ধকে ‘না’ বলুন: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে, লাল গালিচা সংবর্ধনা
থাইল্যান্ডের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ত্যাগ

মন্তব্য

সোশ্যাল মিডিয়া
Prime Minister wants Thailands investment in hospital economic zone of Bangladesh

বাংলাদেশের হাসপাতাল, অর্থনৈতিক অঞ্চলে থাই বিনিয়োগ চান শেখ হাসিনা

বাংলাদেশের হাসপাতাল, অর্থনৈতিক অঞ্চলে থাই বিনিয়োগ চান শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে শুক্রবার গভর্নমেন্ট হাউসে দেশটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীরা। ছবি: বাসস
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশি চিকিৎসাকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি তাকে বাংলাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণেরও প্রস্তাবও দিয়েছি।’

বাংলাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণ করতে থাইল্যান্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কেও থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ কামনা করেছেন।

বার্তা সংস্থা ইউএনবির প্রতিবেদনে জানানো হয়, থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে শুক্রবার গভর্নমেন্ট হাউসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশি চিকিৎসাকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি তাকে বাংলাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণেরও প্রস্তাবও দিয়েছি।’

বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি, একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও একটি লেটার অফ ইনটেন্টে (এলওআই) সই করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ককে বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। আমাদের বন্ধুত্ব আমাদের ঐতিহাসিক, ভাষাগত ও অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত।

‘সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে আমাদের দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

এ নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গতিশীল অর্থনীতির সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে থাইল্যান্ডকে আমরা এক গুরুত্বপূর্ণ ও গতিশীল অংশীদার হিসেবে দেখি।’

বাণিজ্য সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের বর্তমান পরিসর বাড়ানোর জন্য দীর্ঘ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও ব্যবসা সহজীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমি প্রধানমন্ত্রীকে (থাভিসিন) আশ্বস্ত করেছি। আমি থাই পক্ষকে আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ করার ও শুধু থাইল্যান্ডের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছি।’

আরও পড়ুন:
জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় প্রতিশ্রুত অর্থ ছাড়ের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
ন্যাপ এক্সপো উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
কাউকে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করতে দেব না: প্রধানমন্ত্রী
দেশীয় খেলাকে সমান গুরুত্ব দিন: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী

মন্তব্য

সোশ্যাল মিডিয়া
Severe fire in 16 districts very severe

দুই জেলায় অতি তীব্র, ১৬টিতে তীব্র দাবদাহ

দুই জেলায় অতি তীব্র, ১৬টিতে তীব্র দাবদাহ গরমের মধ্যে রাজধানীর হাতিরঝিলে নামা শিশুদের উচ্ছ্বাস। ফাইল ছবি
তাপমাত্রার বিষয়ে অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।

দেশের দুটি জেলায় অতি তীব্র ও ১৬টিতে তীব্র দাবদাহ চলছে জানিয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, সেটি অব্যাহত থাকতে পারে।

রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানিয়েছে।

পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।

বৃষ্টিপাতের বিষয়ে জানানো হয়, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ নিয়ে বলা হয়, চুয়াডাঙ্গা ও যশোর জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলা এবং খুলনা বিভাগের অন্যান্য জেলার (১০ জেলার মধ্যে বাকি আটটি) ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ঢাকা, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, বগুড়া, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

দেশের কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেখানে মৃদু তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বইছে ধরা হয়।

তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তীব্র দাবদাহ ধরা হয়। অন্যদিকে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে বলা হয় অতি তীব্র দাবদাহ।

তাপমাত্রার বিষয়ে অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।

আরও পড়ুন:
নতুন করে ৭২ ঘণ্টার ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি
দাবদাহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার নির্দেশ
গাছহীন সড়কটি যেন ‘উত্তপ্ত কড়াই’
দাবদাহ থেকে মুক্তি মিলবে কবে
তাপমাত্রা ও অস্বস্তি বাড়তে পারে

মন্তব্য

সোশ্যাল মিডিয়া
Sheikh Hasina at the office of the Prime Minister of Thailand to participate in the bilateral meeting

থাইল্যান্ডে থাভিসিন-শেখ হাসিনা বৈঠক

থাইল্যান্ডে থাভিসিন-শেখ হাসিনা বৈঠক গভর্নমেন্ট হাউসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাই সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দলের দেয়া গার্ড অফ অনার পরিদর্শন করেন। ছবি: বাসস
বৈঠকে দুই পক্ষ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ও আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ইউএনবি জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গভর্নমেন্ট হাউসে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান থাই প্রধানমন্ত্রী।

বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই পক্ষ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ও আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।

বৈঠকের পর দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এশিয়ার দুই দেশের মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় নথিতে সই করা হয়। দুই নেতার মধ্যে প্রায় ১৫ মিনিট একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

গভর্নমেন্ট হাউসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাই সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দলের দেয়া গার্ড অফ অনার পরিদর্শন করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভর্নমেন্ট হাউসের অতিথি বইয়ে সই করার আগে স্রেথা থাভিসিন তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে তাকে পরিচয় করিয়ে দেন।

গভর্নমেন্ট হাউস ত্যাগ করার আগে শেখ হাসিনা সেখানে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন।

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে ছয় দিনের সরকারি সফরে বুধবার ব্যাংককে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আরও পড়ুন:
ন্যাপ এক্সপো উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
কাউকে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করতে দেব না: প্রধানমন্ত্রী
দেশীয় খেলাকে সমান গুরুত্ব দিন: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী
ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকে না: প্রধানমন্ত্রী

মন্তব্য

সোশ্যাল মিডিয়া
Savar residents want metro rail up to the memorial

স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত মেট্রোরেল চান সাভারবাসী

স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত মেট্রোরেল চান সাভারবাসী ছবি: নিউজবাংলা
সড়কের উপর দিয়ে সম্ভব না হলে মাটির নিচ দিয়ে মেট্রোরেলের যে প্রকল্প রয়েছে, সেই প্রকল্পে সাভারকে যুক্ত করার দাবি জানানো হয়।

মেট্রোরেলের চলমান প্রকল্পটি সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় নাগরিক সমাজ।

বৃহস্পতিবার সকালে সাভার উপজেলা পরিষদের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় মেট্রোরেলের এমআরাটি-৫ ও এমআরটি-৬-এর চলমান প্রকল্পটি হেমায়েতপুর থেকে নবীনগর জাতীয় স্মৃতিসৌধ অথবা দিয়াবাড়ি থেকে সাভারের রেডিও কলোনি পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এই প্রকল্পে সরকার যদি কোনোরকম জটিলতা মনে করে তাহলে এমআরটি-৬ প্রকল্প উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে বিরুলিয়া হয়ে সাভার রেডিও কলোনি পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা যেতে পারে। পর্যায়ক্রমে তা নবীনগর জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবিও জানান তারা।

কর্মসূচিতে সড়কের উপর দিয়ে সম্ভব না হলে মাটির নিচ দিয়ে মেট্রোরেলের যে প্রকল্প রয়েছে, সেই প্রকল্পে সাভারকে যুক্ত করার দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধন কর্মসূচির সভাপতিত্ব করেন সাভার নাগরিক কমিটির সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সভাপতি কামরুজামান খান।

তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেলের প্রকল্প সাভার পৌর এলাকার শেষ সীমানা পর্যন্ত সম্প্রসারণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বরাবর আবেদন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিবকে এ ব্যাপারে অবগতপত্র দেয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে রেলমন্ত্রী, সচিব ও মহাপরিচালকে পত্র দিয়ে এবং সরাসরি সবকিছু অবগত করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সুবিধাবঞ্চিত সাভারবাসী রেলসেবা পাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছে। সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সাভারের লাখ লাখ মানুষ মেট্রেরেলের সুবিধা প্রত্যাশা করেন। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া হক, সাভার নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষানুরাগী সালাহউদ্দিন খান নঈম, সাভার পৌর আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মিজানুর রহমান মাসুদ, সংস্কৃতিকর্মী স্বরণ সাহা, প্রভাত ডি রোজারিও, বন্ধুরহাট যুব সংগঠনের আলোকুর রহমান, জাগরণী থিয়েটারের সভাপতি আজিম উদ্দিনসহ আরও অনেকে।

মন্তব্য

p
উপরে