× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
How the discovery of DNA changed the world of thought of scientists
google_news print-icon

ডিএনএ আবিষ্কারে যেভাবে পাল্টাল বিজ্ঞানীদের চিন্তার জগৎ

ডিএনএ-আবিষ্কারে-যেভাবে-পাল্টাল-বিজ্ঞানীদের-চিন্তার-জগৎ
ডিএনএ-তে সংরক্ষিত তথ্য জীবন্ত কোষে ব্যবহৃত হয়। এর মধ্য দিয়ে প্রাণের গহিনে লুকিয়ে থাকা রহস্য প্রথমবারের মতো উদঘাটিত হতে চলেছে। ছবি: বিবিসি
ডিএনএ থেকে প্রোটিন উৎপাদনের প্রক্রিয়া এতটাই জটিল যে, তা দেখলে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যেতে হয়। ফলে যে কারো পক্ষে প্রাণের উৎস কী ব্যাখ্যা করতে যাওয়াটা আরও কঠিন হয়ে পড়ল। কারণ এত জটিল প্রক্রিয়া কীভাবে একা একা শুরু হয়েছিল তা কল্পনা করাটাও বিজ্ঞানীদের জন্য দুরূহ হয়ে উঠল।

বিবিসি আর্থ-এ প্রকাশিত মাইকেল মার্শাল এর লেখা দ্য সিক্রেট অফ হাউ লাইফ অন আর্থ বিগ্যান অবলম্বনে এই লেখা। থাকছে কয়েক পর্বে।

১৯৫০-এর দশকের শুরুর দিকেই বিজ্ঞানীরা ‘আমাদের প্রাণ সরাসরি ঈশ্বরের দান’ বহুদিনের পুরোনো এই ধারণা থেকে সরে আসতে থাকেন। তার পরিবর্তে তারা প্রাণ কীভাবে নিজে নিজেই প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হলো সেই রহস্য উন্মোচনে আগ্রহী হয়ে উঠলেন।

যুগান্তকারী ওই পরীক্ষার জন্য অবশ্যই স্ট্যানলি মিলারকে ধন্যবাদ। বিজ্ঞানীরা প্রাণের উৎস অন্বেষণে মিলারের পরীক্ষা থেকে ভবিষ্যৎ গবেষণার রসদ পেয়ে গেলেন।

মিলার যখন ভিন্ন ভিন্ন বস্তু থেকে প্রাণের উপাদান বানাতে ব্যস্ত ছিলেন তখন কিছু বিজ্ঞানী জিন কীসের তৈরি তা খুঁজতে গবেষণারত ছিলেন। এর মধ্যেই বিজ্ঞানীরা প্রাণকোষের অনেক অণুজীবকে চিহ্নিত করতে পেরেছেন। চিনি, চর্বি, আমিষ, নিউক্লিক অ্যাসিড, যেমন- ডি-অক্সিরিবোনিউক্লিক অ্যাসিড বা সংক্ষেপে ডিএনএ আবিষ্কার হয়ে গেছে এত দিনে।

আজকে আমরা নিশ্চিতভাবেই জানি ডিএনএ আমাদের জিন বহন করে। কিন্তু ডিএনএ আবিষ্কার ১৯৫০-এর দশকের বিজ্ঞানীদের জন্য একটা বড় আঘাত ছিল। কারণ এর আগে তারা আমিষের জটিল গঠন দেখে সেটাকেই জিন ভেবেছিলেন।

১৯৫২ সালে আলফ্রেড হারশে এবং মার্থা চেস বিজ্ঞানীদের সেই ভুল ভেঙে দেন। তারা ওয়াশিংটনের কার্নেগি ইনস্টিটিউটে শুধু প্রোটিন আর ডিএনএ বহনকারী ক্ষুদ্র ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করছিলেন। পুনরুৎপাদনের জন্য ভাইরাসটি ব্যাকটেরিয়ার মাঝে সংক্রমিত হতে হবে। পরীক্ষায় দেখা গেল সংক্রামক ভাইরাস থেকে শুধু ডিএনএ ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে প্রবেশ করেছে, কিন্তু প্রোটিন বাইরেই রয়ে গেল। ফলে পরিষ্কার করেই বোঝা গেল, ডিএনএ-ই হলো জিন বা বংশগতির মৌলিক উপাদান।

হারশে এবং মার্থা চেস এর এই আবিষ্কারের পর এবার ডিএনএ কীভাবে কাজ করে এবং তার গঠন কেমন তা আবিষ্কারের জন্য বিজ্ঞানীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেল। পরের বছরই ডিএনএ রহস্যের সমাধান করে ফেললেন কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির ফ্রান্সিস ক্রিক ও জেমস ওয়াটসন। দীর্ঘ পরিশ্রমসাধ্য গবেষণায় তাদের সাহায্য করেন রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিন।

তাদের আবিষ্কার ছিল ২০ শতকের সবচেয়ে বড় বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারগুলোর একটি। প্রাণের উৎপত্তির রহস্য সমাধানে চলমান গবেষণার গতিপথও বদলে দিল এই আবিষ্কার। কারণ তাদের এই আবিষ্কার জীবন্ত কোষের ভেতরে লুকিয়ে থাকা অবিশ্বাস্য এক জটিলতার রহস্য উন্মোচন করে ফেলে।

ক্রিক ও ওয়াটসন বুঝতে পেরেছিলেন ডিএনএ হলো দুটি প্যাঁচানো মইসদৃশ বস্তু, যারা আবার নিজেদের মধ্যেও সর্পিল আকৃতিতে জড়িয়ে থাকে। প্যাঁচানো মইয়ের দুই প্রান্ত নিউক্লিওটাইড নামের মলিকিউল দিয়ে গঠিত। ডিএনএর গঠন ব্যাখ্যা করে কীভাবে আমাদের কোষ ডিএনএকে অনুসরণ করে। অন্যভাবে বলা যায়, ডিএনএ উন্মোচন করে কীভাবে বাবা-মা তাদের জিন বা বংশগতির প্রতিলিপি তৈরি করে এবং পরবর্তী প্রজন্মের মাঝে তা ছড়িয়ে দেয়।

জীবনের শুরু থেকেই এই প্রক্রিয়ায় বাবা-মা তাদের সন্তানদের মাঝে জীবনের বৈশিষ্ট্য প্রবাহিত করতে থাকে। ক্রিক ও ওয়াটসন আবিষ্কার করলেন সেই আদি এককোষী ব্যাকটেরিয়া থেকে কীভাবে ধাপে ধাপে বংশগতির প্রতিলিপি তৈরি করে প্রাণিজগৎ আজকের অবস্থানে এসে পৌঁছেছে।

ক্রিক ও ওয়াটসন ১৯৫৩ সালে তাদের গবেষণালব্ধ এই নতুন জ্ঞানবিজ্ঞান সাময়িকী ‘নেচার’-এ প্রকাশ করেন। ক্রিক ও ওয়াটসনের আবিষ্কারের ফলে পরের বছরগুলোতে জৈবরসায়নবিদ বিজ্ঞানীরা ডিএনএ ঠিক কী তথ্য বহন করে সেটার আদ্যোপান্ত খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। তারা দেখতে চাইলেন কীভাবে ডিএনএ-তে সংরক্ষিত তথ্য জীবন্ত কোষে ব্যবহৃত হয়। এর মধ্য দিয়ে প্রাণের গহিনে লুকিয়ে থাকা রহস্য প্রথমবারের মতো উদঘাটিত হতে চলেছে।

জানা গেল ডিএনএ-র একটাই কাজ। কোনো কোষের ভেতরে থাকা ডিএনএ সেই কোষকে বলে দেয় কীভাবে প্রোটিন তৈরি করতে হবে। প্রোটিন ছাড়া আপনার খাদ্য হজম হবে না, আপনার হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে যাবে এবং আপনি নিঃশ্বাস নিতে পারবেন না।

কিন্তু ডিএনএ থেকে প্রোটিন উৎপাদনের প্রক্রিয়া এতটাই জটিল যে, তা দেখলে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যেতে হয়। ফলে যে কারো পক্ষে প্রাণের উৎস কী ব্যাখ্যা করতে যাওয়াটা আরও কঠিন হয়ে পড়ল। কারণ এত জটিল প্রক্রিয়া কীভাবে একা একা শুরু হয়েছিল তা কল্পনা করাটাও বিজ্ঞানীদের জন্য দুরূহ হয়ে উঠল।

প্রতিটি প্রোটিনই মূলত অ্যামাইনো অ্যাসিডের বিশাল শিকল এবং একটা বিশেষ শৃঙ্খলার বাঁধনে তারা পরস্পরের সঙ্গে আবদ্ধ। অ্যামাইনো অ্যাসিডের ক্রম নির্ধারণ করে দেয় প্রোটিনের ত্রিমাত্রিক আকার এবং এর কাজ।

সর্পিল ডিএনএর ভেতরে প্রাণের প্রয়োজনীয় তথ্য সাংকেতিক আকারে লিপিবদ্ধ থাকে। সুতরাং যখন একটা কোষকে কোনো নির্দিষ্ট প্রোটিন সৃষ্টি করতে হয় তখন সে অ্যামাইনো অ্যাসিডের শিকলের নাগাল পেতে তার ডিএনএর মধ্যে সংরক্ষিত জিন থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য বিশ্লেষণ করতে শুরু করে।

তবে এখানে একটা টুইস্ট আছে। ডিএনএ প্রাণের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই কোষ ডিএনএকে সংরক্ষণ করতে নিরাপদে জমিয়ে রাখে। যে জন্য কোষ ডিএনএর তথ্যকে প্রতিলিপি করে আরএনএ (রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড) অণুতে স্থানান্তর করে। আরএনএ হলো ডিএনএর ক্ষুদ্র অংশ। ডিএনএর তুলনায় আরএনএ অণু ছোট। ডিএনএর সর্পিল মইতে আরএনএর একটা মাত্র সুতার মতো প্রান্ত থাকে। আরএনএর মধ্যে সংরক্ষিত তথ্য প্রোটিনে পরিণত হয় এবং প্রচুর পরিমাণ ‘রাইবোসোম’ প্রোটিন গঠন করে। প্রতিটি জীবিত কোষে এই সৃষ্টি প্রক্রিয়া চলতে থাকে। এমনকি অতি সাধারণ ব্যাকটেরিয়াও এই প্রক্রিয়ার বাইরে নয়। খাবার ও নিঃশ্বাস নেয়ার মতোই গুরুত্বপূর্ণ এই প্রক্রিয়া।

ফলে প্রাণের উৎস ব্যাখ্যা করতে গেলে আমাদের অবশ্যই ডিএনএ, আরএনএ ও রাইবোসোম প্রোটিন এই তিন উপাদানের জটিল মিথস্ক্রিয়া বুঝতে হবে। কীভাবে তাদের উৎপত্তি হলো, কেমন করেই বা তারা পরস্পর সংগঠিত হয়ে কাজ শুরু করে। এই আবিষ্কারের পর প্রথম প্রাণ গঠিত হয়েছিল আরএনএ দিয়ে এই ধারণা বিজ্ঞানে খুব প্রভাবশালী তত্ত্ব হিসেবে হাজির হয়।

ক্রিক ও ওয়াটসনের এই আবিষ্কারের পর হঠাৎ করেই যেন ওপারিন ও হালডেনের ধারণা সাদামাটা প্রতীয়মান হয়ে গেল। একই সঙ্গে মিলারের যে যুগান্তকারী পরীক্ষার মাধ্যমে উৎপন্ন হয়েছিল অ্যামাইনো অ্যাসিড, যা দিয়ে প্রোটিন সৃষ্টি সম্ভব; সেটাকেও মনে হলো অসম্পূর্ণ ও ভাসাভাসা।

জন সাদারল্যান্ড বলেন, ‘ডিএনএ থেকে আরএনএ, আরএনএ থেকে প্রোটিন, জিনের ভেতরে এই যে জটিল রাসায়নিক কাণ্ড-কারখানা তা আমাদের বিস্ময়ে বিমূঢ় করে দেয়। আমাদের ভাবিয়ে তোলে, কীভাবে আমরা প্রাণকোষের ভেতরে থাকা এই উপাদানগুলো প্রাণশূন্য বস্তু থেকে একসঙ্গে সৃষ্টি করে দেখাব এবং প্রমাণ হাজির করব যে, এই যে এভাবেই প্রাণের উৎপত্তি হয়েছিল পৃথিবীতে?

এ পর্যন্ত আলোচিত বিজ্ঞানীরা যদি ধরি প্রাণের উৎস গবেষণার রাস্তা তৈরি করেছেন তাহলে ব্রিটিশ রসায়নবিদ লেজলি ওরগেলকে বলতে হবে প্রথম বিজ্ঞানী, যিনি সেই রাস্তায় হাঁটা শুরু করেন। লেজলি ওরগেলই প্রথম ক্রিক এবং ওয়াটসনের ডিএনএর মডেল নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। ১৯৬৮ সালে লিখিত এক গবেষণাপত্রে তিনি দাবি করেন, প্রাণের শুরুতে প্রোটিন বা ডিএনএ কিছুই ছিল না। প্রাণ সৃষ্টি হয়েছিল পুরোপুরি আরএনএ দিয়ে এবং ফ্রান্সিস ক্রিক নিজেও ওরগেলের এই দাবিকে সমর্থন করেন।

ওরগেলের দাবি যদি সঠিক হয়, তাহলে প্রথম আরএনএ মলিকিউলের অবশ্যই অভিযোজন ক্ষমতা থাকতে হবে এবং তাকে নিজেই নিজের প্রতিলিপি তৈরি করতে পারতে হবে।

প্রাণের যাত্রা শুরু হয়েছিল আরএনএ দিয়ে- এই ধারণা এখন বিজ্ঞানে খুবই প্রভাবশালী তত্ত্ব। কিন্তু জন্ম দিয়েছে কিছু বৈজ্ঞানিক তর্কযুদ্ধের, যেসব আজ অবধি চলছে।

প্রাণের যাত্রা শুরু হয়েছিল আরএনএ দিয়ে, এই দাবি করেই ওরগেল ক্ষান্ত হননি, তিনিই সবার আগে প্রস্তাব করেন আরএনএ নিজেকে নিজেই পুনরুৎপাদন করতে পারে, যা প্রাণের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। অন্যভাবে বলা যায় তিনি শুধু প্রাণ কীভাবে সৃষ্টি হয়েছিল সেটাই বলেননি, প্রাণ আসলে কী- এই প্রশ্নেরই প্রায় সমাধান করে ফেলেছেন তিনি। কিন্তু এ পর্যায়ে বিজ্ঞানীরা প্রাণের সৃষ্টি রহস্য নিয়ে আবার দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেলেন।

অনেক জীববিজ্ঞানী ওরগেলের ‘প্রাণ নিজেই নিজের প্রতিলিপি তৈরি করে’ দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করলেন। ডারউইনের বিবর্তনবাদের সারাংশ ছিল নিজের অসংখ্য প্রতিলিপি বা সন্তান জন্মদানের মাধ্যমেই শুধু প্রাণী নিজের বংশ রক্ষা করতে পারে।

কিন্তু প্রাণের অন্যান্য বৈশিষ্ট্যগুলোও সমানভাবে জরুরি মনে হলো। যেমন: প্রাণ বেঁচে থাকার জন্য একটি জীবন্ত প্রাণীর মধ্যে ঘটতে থাকা রাসায়নিক বা বিপাকীয় প্রক্রিয়াও (মেটাবোলিজম)। বেঁচে থাকতে হলে চারপাশের পরিবেশ থেকে শক্তি সঞ্চয় করতে হয়। আবার অনেক জীববিজ্ঞানী মনে করেন, প্রাণের প্রথম বৈশিষ্ট্য হলো এর ভেতরে চলমান রাসায়নিক বা বিপাকীয় প্রক্রিয়া (মেটাবোলিজম) এবং প্রাণের নিজের প্রতিলিপি তৈরি করার ক্ষমতার (বংশগতি বা জীন) উদ্ভব হয়েছে অনেক পরে। এখান থেকেই বিতর্ক ও বিভক্তির শুরু।

১৯৬০ সাল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা প্রাণের উৎপত্তি নিয়ে গবেষণায় দুই দলে বিভক্ত। ‘জীব কোষের ভেতরে চলমান রাসায়নিক বা বিপাকীয় প্রক্রিয়া নাকি বংশগতি তথা নিজের প্রতিলিপি তৈরি করার সক্ষমতা প্রথমে সৃষ্টি হয়েছে’ এই প্রশ্নই বিজ্ঞানীদেরকে দুই ভাগে বিভক্ত করে দেয়।

তৃতীয় আরেকদল বিজ্ঞানী বললেন, প্রাণ সৃষ্টিতে প্রথমেই জীব কোষের উপাদানগুলোকে জড়ো হতে হয়েছে। উপাদানগুলো জড়ো হওয়া ছাড়া কোষের ভেতরে চলমান রাসায়নিক বা বিপাকীয় প্রক্রিয়াও শুরু হওয়া সম্ভব নয়। তাদের মতে প্রাণ সৃষ্টিতে প্রথমেই একটি কোষের প্রয়োজন, যে কোষের কথা ওপারিন এবং হালডেন কয়েক দশক আগেই জোরালোভাবে বলে গেছেন। যা হয়তো চর্বি জাতীয় স্বচ্ছ তরল পর্দায় আবৃত ছিল।

প্রাণের উৎপত্তি সংক্রান্ত এই তিনটি ধারণা নিয়ে আজও বিজ্ঞানীদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক এবং গবেষণাগারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। বিজ্ঞানীরা নিজেদের ধারণার স্বপক্ষে নিরন্তর গবেষণা করছেন, এমনকি অনেক সময় অন্ধভাবে নিজেদের মতের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপনও করছেন। প্রায়ই দেখা যায় একদল বিজ্ঞানী আত্মপক্ষ সমর্থন করে অন্য বিজ্ঞানীদেরকে নির্বোধ বলতেও দ্বিধা করছেন না। ফলে প্রাণের উৎপত্তি নিয়ে বিজ্ঞানসভার বিতর্ক সাংবাদিকদের পত্রিকার চটকদার কলাম আর সাধারণ পাঠকদের মুখরোচক গল্পেও পরিণত হয়েছে।

ওরগেলকে ধন্যবাদ। তিনি প্রথম ধারণা দিলেন, বংশগতি নয় বরং প্রাণের যাত্রা শুরু হয়েছিল আরএনএ দিয়ে। তারপর এলো ১৯৮০-র দশক, জীব বিজ্ঞানের চমক লাগানো আবিষ্কারের যুগ। যার ফলে আরএনএ তত্ত্ব আরও জোরালো হলো।

লেখক: সাংবাদিক

[email protected]

পরের পর্বে থাকছে: নিজের প্রতিরূপ সৃষ্টিতে সক্ষম প্রথম অণুজীবের সন্ধানে

আরও পড়ুন:
পৃথিবীতে প্রাণ রহস্যের সমাধান আর কতদূর?
‘সূর্যই ঘুরছে পৃথিবীর চারদিকে’, আমানতের দাবি কেন ভুল
‘ক্রিস্টাল পৃথিবীতে’ ব্যাখ্যাতীত সব রহস্যের সমাধান!

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
Science Festival begins at St Gregorys School

সেন্ট গ্রেগরী স্কুলে বিজ্ঞান উৎসব শুরু

সেন্ট গ্রেগরী স্কুলে বিজ্ঞান উৎসব শুরু সেন্ট গ্রেগরী স্কুল অ্যান্ড কলেজে বৃহস্পতিবার বেলুন উড়িয়ে বিজ্ঞান মেলার উদ্বোধন করা হয়। ছবি: নিউজবাংলা
মেলার ইভেন্টগুলোর মধ্যে রয়েছে অলিম্পিয়াড, সায়েন্স প্রজেক্ট ডিসপ্লে, বিজ্ঞানভিত্তিক ওয়াল ম্যাগাজিন কম্পিটিশন ও প্রোজেক্ট আইডিয়া প্রেজেন্টেশন। প্রতিটি ইভেন্টের জন্য স্পট রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা রয়েছে।

ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সেন্ট গ্রেগরী স্কুল অ্যান্ড কলেজে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী বার্ষিক বিজ্ঞান উৎসব। বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে এই মেলা।

শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানমনস্ক করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সেন্ট গ্রেগরী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের গ্রেগরিয়ান সায়েন্স ক্লাব এই আয়োজন করেছে।

বিজ্ঞান মেলায় সেন্ট গ্রেগরী উচ্চ বিদ্যালয়, সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার্স গার্লস হাই স্কুল, বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, উইলস লিটল ফ্লাওয়ার্স, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নিচ্ছে।

সেন্ট গ্রেগরী স্কুলে বিজ্ঞান উৎসব শুরু

মেলার ইভেন্টগুলোর মধ্যে রয়েছে অলিম্পিয়াড, সায়েন্স প্রজেক্ট ডিসপ্লে, বিজ্ঞানভিত্তিক ওয়াল ম্যাগাজিন কম্পিটিশন ও প্রোজেক্ট আইডিয়া প্রেজেন্টেশন। প্রতিটি ইভেন্টের জন্য স্পট রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা রয়েছে।

বিজ্ঞানমেলায় অংশগ্রহণকারী দলগুলোকে ৫টি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির জন্য কিডস গ্রুপ, পঞ্চম-ষষ্ঠ শ্রেণির জন্য জুনিয়র গ্রুপ, সপ্তম-অষ্টম শ্রেণির জন্য ইন্টারমিডিয়েট গ্রুপ, নবম-দশম শ্রেণির জন্য সিনিয়র গ্রুপ এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির জন্য কলেজ গ্রুপ নির্ধারণ করা হয়েছে।

সেন্ট গ্রেগরী স্কুলে বিজ্ঞান উৎসব শুরু

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ব্রাদার উজ্জ্বল প্লাসিড পেরেরা সি. এস. সি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মো. শাহজাহান। বিশেষ অতিথি ছিলেন কোতোয়ালি থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফারহানা শাহীন লিপি।

মেলায় প্রায় ২৫০-৩০০টি প্রজেক্ট প্রদর্শিত হয়। পাশাপাশি আয়োজক কমিটি প্রায় ৩৩৫টি পুরস্কারের ব্যবস্থা রেখেছে। প্রজেক্টগুলো মূল্যায়ন করবেন বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২৫ জন শিক্ষক।

সেন্ট গ্রেগরী স্কুলে বিজ্ঞান উৎসব শুরু

৯ই মার্চ শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মেলার সমাপ্তি ঘটবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মো. শৌকত আকবর।

সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং-এর অধ্যাপক গ্রেগরিয়ান ড. মো. শহিদুল ইসলাম এবং সিএসআরএম-এর পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম।

মন্তব্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
Ants cannot fly due to lack of money

টাকার অভাবে চলতে পারছে না ‘পিপীলিকা’

টাকার অভাবে চলতে পারছে না ‘পিপীলিকা’ বাংলা ভাষায় বিশ্বের প্রথম সার্চ ইঞ্জিন পিপীলিকার লোগো। ছবি: পিপীলিকা
অর্থ সংকটে ধুঁকছে শাবির সাড়া জাগানো চার উদ্ভাবন। তিন বছর ধরে বন্ধ রয়েছে বিশ্বের একমাত্র বাংলা সার্চ ইঞ্জিন ‘পিপীলিকা’। প্লে-স্টোরে থাকলেও নিস্ক্রিয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন ‘একুশে বাংলা কি-বোর্ড’। ফান্ডিং সংকটে আটকে গেছে দ্রুত ক্যানসার শনাক্তের ‘ননলিনিয়ার অপটিকস’ ডিভাইসটিও। অর্থ ও জনবলের অভাবে এগোতে পারেনি বাংলায় কথা বলা রোবট ‘রিবো’।

২০১৩ সালে বিশ্বের প্রথম বাংলা সার্চ ইঞ্জিন তৈরি করে সাড়া ফেলে দেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। এই সার্চ ইঞ্জিনের নাম দেয়া হয় ‘পিপীলিকা’। তবে গত তিন বছর ধরে থমকে আছে এর কার্যক্রম। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অর্থ সংকটে সার্চ ইঞ্জিনটির কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

কেবল সার্চ ইঞ্জিন ‘পিপীলিকা’ই নয়, একই অবস্থা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন ‘একুশে বাংলা কি-বোর্ড’-এরও। প্লে-স্টোরে অ্যাপটি থাকলেও তা একপ্রকার নিস্ক্রিয়। দ্রুত ক্যানসার শনাক্তের সম্ভাবনাময় ‘ননলিনিয়ার অপটিকস’ ডিভাইসটিও অর্থ সংকটে আটকে গেছে। করোনা মহামারি এবং অর্থ ও জনবলের অভাবে এগোতে পারেনি বাংলায় কথা বলতে পারা রোবট ‘রিবো’।

দেশের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে তেত্রিশ বছর আগে সিলেটে প্রতিষ্ঠিত হয় শাহজালা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কিছু উদ্ভাবন সকলের প্রশংসা কুড়ায়। উদ্ভাবনী কার্যক্রমের মাধ্যমে দ্রুত দেশের অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠে পরিণত হয় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে গত কয়েক বছর ধরেই নেই নতুন কোনো উদ্ভাবন। এমনকি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে থমকে আছে পুরনোগুলোও।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন শিক্ষার্থীদের ওপর অ্যাকাডেমিক চাপ অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে তারা গবেষণা, উদ্ভাবনসহ সৃজনশীল কাজে যুক্ত হতে পারছেন না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকেও এ ব্যাপারে এখন কোনো উৎসাহ দেয়া হয় না।

পিপীলিকা

২০১৩ সালের ১৩ এপ্রিল ১১ জন ডেভেলপার মিলে তৈরি করেন বিশ্বের প্রথম এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র বাংলা সার্চ ইঞ্জিন পিপীলিকা। পিপীলিকার প্রকল্প পরিচালনায় ছিলেন এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের তৎকালীন অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। মুখ্য গবেষক ও টিম লিডার হিসেবে কাজ করেন মো. রুহুল আমীন সজীব।

শাবির আইআইসিটি বিভাগ জানায়, বাংলা সার্চ ইঞ্জিন ‘পিপীলিকা’ সংক্রান্ত কিছু সার্ভিস গ্রহণের বিনিময়ে সরকারের এটুআই (অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশন) প্রোগ্রাম থেকে ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ৮ কিস্তিতে মোট ১ কোটি ৭১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৬৬ টাকা দেয়া হয়। শেষ কিস্তির (৯ম কিস্তি) ২১ লাখ ৭৪ হাজার ৬৫৩ টাকা পিপীলিকাকে পরিশোধের আগেই সরকারের এটুআই প্রোগ্রামের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এরপর থেকেই অর্থ সংকটে পিপীলিকা বন্ধ রয়েছে।

আগের মতো ৫-৬ জন পূর্ণকালীন আইটি/সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগের মাধ্যমে কাজ করানোর জন্য মাসিক ৩-৪ লাখ টাকা অনুদান পেলে পিপীলিকার উন্নয়ন কাজ চলমান রাখা যাবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

এই প্রজেক্টটির বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে টিম লিডার মো. রুহুল আমীন সজীব বলেন, ‘আমি এখন এই প্রকল্পের সঙ্গে সংযুক্ত নই।’

শাবির আইআইসিটির পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘এই প্রজেক্টের ফান্ডিং আসত সরকারের কাছে থেকে। ২০২০ সাল থেকে আমাদের প্রজেক্ট সংশ্লিষ্ট সবকিছু সঠিক সময়ে পাঠালেও কোনো অর্থ পাইনি। সর্বশেষ আমাদের প্রায় ২২ লাখ টাকা আটকে আছে।’

তিনি বলেন, ‘টাকা ছাড়া তো আমরা গবেষক ও কর্মচারীদের কাজ করাতে পারি না। আমরা যতটুকু সম্ভব দিয়েছি। তবুও তাদের বেশ কিছু টাকা বকেয়া রয়েছে। কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের আর টাকা দেয়া হয়নি। আবার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও কিছু বলা হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আর্থিক সাপোর্ট না পাওয়ায় কারণে বর্তমানে তা বন্ধ আছে। বিষয়টি নিয়ে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী, সচিব ও এটুআইয়ের পিডিসহ সকলের দ্বারে দ্বারে গিয়েছি, কিন্তু কাজ হয়নি। আমাদের সব রিসোর্স আছে। সরকারের কাছে থেকে আবার সাপোর্ট পেলে আমরা তা সচল করতে পারব।’

এটুআই প্রোগ্রামের তৎকালীন প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, “যতটুকু মনে পড়ে ‘পিপীলিকা’ সার্চ ইঞ্জিনটা যেমন প্রত্যাশা করা হয়েছিল, সেই মানের হয়নি। এজন্য ফান্ডিং বন্ধ করা হয়। এ বিষয়ে বর্তমান পিডি ভালো বলতে পারবেন।’

বর্তমান পিডি (যুগ্মসচিব) মো. মামুনুর রশীদ ভূঁইয়া বলেন, ‘এটি আমার জানা নাই। এটা আসলে কী অবস্থায় আছে, খোঁজ নিয়ে জানার চেষ্টা করব।’

একুশে বাংলা কি-বোর্ড

কি-বোর্ড নিজেই বুঝে ফেলবে ব্যবহারকারী কী লিখতে চাইছেন- ২০১৮ সালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন এমন কি-বোর্ড কি-বোর্ড উদ্ভাবন করেন শাবি শিক্ষার্থীরা। এর নাম দেয়া হয় ‘একুশে বাংলা কিবোর্ড’।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংযোজনের পাশাপাশি দ্রুত টাইপিং ও স্পর্শ করে লেখার ব্যবস্থা রয়েছে এ কি-বোর্ডে। ফলে টাইপ না জানলেও যে কেউ সহজেই বাংলা টাইপিং শিখতে পারে এর মাধ্যমে।

২০২০ সালে কি-বোর্ডটির উদ্ভাবক তৎকালীন শাবির সিএসই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বিশ্বপ্রিয় চক্রবর্তী বিদেশে চলে গেলে সেটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। প্লে-স্টোরে অ্যাপটি থাকলেও নিস্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছে।

প্রজেক্টটির বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে বিশ্বপ্রিয় চক্রবর্তী বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত আমাদের কাছে এই প্রজেক্টের কোনো আপডেট নেই। আমি দেশের বাইরে চলে যাওয়ার পর এ ব্যাপারে আর কোনো কাজ করা হয়নি।’

ননলিনিয়ার অপটিকস

রক্তের নমুনা পরীক্ষা করার মাধ্যমে ক্যানসার শনাক্তকরণ পদ্ধতি উদ্ভাবনেও রয়েছে শাবিপ্রবির সাফল্য। অল্প খরচে ও কম সময়ে ‘ননলিনিয়ার অপটিকস’ নামের উদ্ভাবিত এ পদ্ধতিতে রক্তের একটি পরীক্ষার মাধ্যমে মাত্র ১০ থেকে ২০ মিনিটেই ক্যানসার শনাক্ত করা সম্ভব হবে বলে দাবি ছিল উদ্ভাবকদের।

হায়ার এডুকেশন কোয়ালিটি এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্টের (হেকেপ) আওতায় শাবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সেসময়কার অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হকের নেতৃত্বে একদল গবেষক ক্যানসার শনাক্তকরণের এ সাশ্রয়ী প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন।

গবেষক দলের অন্য সদস্যরা হলেন- অধ্যাপক ড. শরীফ মো. শরাফ উদ্দিন, মনজ কান্তি বিশ্বাস ও এনামুল হক।

প্রজেক্টটির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শরীফ মো. শরাফ উদ্দিন বলেন, ‘ফান্ডিংসহ অনেক সমস্যা আছে। মূলত ফান্ডিংয়ের জন্য আমরা আটকে গেছি। বিশ্বব্যাংকের একটি প্রজেক্ট শিগগিরিই চালু হবে। সম্ভবত পিডি নিয়োগ হয়ে গেছে। ওটা হলেই আমরাও ফান্ড পেয়ে যাব।

‘বর্তমানে আপগ্রেডের কাজ চলছে। ফান্ডিং পেলে আমরা ক্লিনিক্যালি ব্যবহারের উপযুক্ত করে তুলব।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল, কোনো ডিভাইসের মাধ্যমে এটাকে সর্বসাধারণের ব্যবহাপযোগী করে তোলা। হেকাপের আওতায় কাজটি চলছিল, পরে হিট আসার কথা ছিল। সেভাবে প্রস্তুতিও নিয়েছি আমরা। পরবর্তী প্রজেক্ট পেলে আমরা বাকি কাজ করে ফেলতে পারব।’

প্রকল্পটি একেবারে বন্ধ হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কাজ আমাদের মতো করে চলছে।’

রোবট রিবো

২০১১ সাল থেকে শাবির তৎকালীন অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও শিক্ষার্থী নওশাদ সজীব উদ্যোগে ১১ জনের একটি দল রোবট নিয়ে কাজ শুরু করে।

২০১৫ সালে বার্ষিক সায়েন্স ফিকশন ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শনের জন্য বাংলাদেশ সায়েন্স ফিকশন সোসাইটি রোবোসাস্টকে মানবসদৃশ রোবট তৈরির করতে ১ লাখ টাকা অনুদান দেয়। দলটি বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো মানবসদৃশ রোবট তৈরি করে, যার নাম দেয়া হয় ‘রিবো’।

রোবটটি ২৪ ডিগ্রি কোণে স্বাধীনভাবে ঘুরতে, নাচতে, মুখের অঙ্গভঙ্গির প্রকাশ, হ্যান্ডশেক, হাত উপর-নিচে তোলা, বাংলায় কথা বলা, এমনকি নিজের নামও বলতে পারত। বাংলাদেশ ও মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যে কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারত।

রোবটটি তৈরিতে নেতৃত্ব দেয়া শাবির সিএসই বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী নওশাদ সজীব বর্তমানে বিদেশে রয়েছেন।

দলের সদস্য মেহেদী হাসান রূপক বলেন, ‘আমরা ঢাকায় প্রোগ্রাম করেছিলাম। সেখানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রীও ছিলেন। তিনি বলেছিলেন ফান্ডিং করবেন। আমরা তখন উনাকে একটা আবেদনপত্রও দিয়েছিলাম। পরে করোনা ও জনবল সংকটে আর এগোতে পারিনি। এর মধ্যে আমাদেরও পড়ালেখা শেষ হয়ে যায়।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কবির হোসেন বলেন, ‘এই উদ্ভাবনগুলোর বর্তমান অবস্থার বিষয়ে আমি খোঁজখবর নেব। প্রয়োজনে সরকারের উচ্চ পর্যায়েও আমরা কথা বলব।’

উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত কর্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

মন্তব্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
Finding palliative drugs over chemo in cancer treatment

ক্যানসারের চিকিৎসায় ‘কেমোর চেয়ে স্বস্তির’ ওষুধের সন্ধান

ক্যানসারের চিকিৎসায় ‘কেমোর চেয়ে স্বস্তির’ ওষুধের সন্ধান
আর্থারের পরিবার এ চিকিৎসাকে ‘আশার আলো’ আখ্যা দিয়ে দিয়ে বলেছে, এই ওষুধ তাকে বেশি অসুস্থতা বোধ না করিয়েই কাজ করেছে। এ ছাড়া হাসপাতালের পরিবর্তে বাসাতেও এই চিকিৎসা দেয়া যায়। এতে শিশুটি তার পরিবারের সঙ্গে আরও বেশি সময় দিতে পারছে।

ক্যানসারের চিকিৎসায় যুক্তরাজ্যের শিশুরা কেমোথেরাপির চেয়ে স্বস্তি দেয় এমন এক ওষুধ ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে।

লন্ডনের গ্রেট অরমন্ড স্ট্রিট হসপিটালে ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত ১১ বছর বয়সী শিশু আর্থারকে দিয়ে এই ওষুধ প্রয়োগ শুরু হয় বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বুধবার জানানো হয়েছে।

আর্থারের পরিবার এ চিকিৎসাকে ‘আশার আলো’ আখ্যা দিয়ে দিয়ে বলেছে, এই ওষুধ তাকে বেশি অসুস্থতা বোধ না করিয়েই কাজ করেছে। এ ছাড়া হাসপাতালের পরিবর্তে বাসাতেও এই চিকিৎসা দেয়া যায়। এতে শিশুটি তার পরিবারের সঙ্গে আরও বেশি সময় দিতে পারছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ব্লিনাটুমোমাব বা ব্লিনা নামের এ ওষুধ এখন শিশুদের পাশপাশি ক্যানসারে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্কদের চিকিৎসারও লাইসেন্স পেয়েছে। শিশুদের ক্ষেত্রে নিরাপদে ব্যবহার করা যাচ্ছে ওষুধটি।

শিশু আর্থারের পরিবার বলছে, তা জন্য ব্লিনাটুমোমাব বা ব্লিনা একমাত্র আসল বিকল্প ছিল। এক পর্যায়ে কেমোথেরাপি যখন ব্যর্থ হয় এবং সে খুব দুর্বল হয়ে পড়ে তখন তার জন্য ওই ওষুধ খুব কার্যকর স্বস্তির কারণ হয়।

যুক্তরাজ্য জুড়ে প্রায় ২০টি কেন্দ্র বি-সেল অ্যাকিউট লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া (বি-এএলএল) আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসায় এটি অফ-লেবেল ব্যবহার করছে। ওষুধটি একটি ইমিউনোথেরাপি যা ক্যান্সার কোষ খুঁজে বের করে, যাতে শরীরের নিজস্ব ইমিউন সিস্টেম তাদের চিনতে পারে এবং ধ্বংস করতে পারে।

ব্লিনা একটি পাতলা প্লাস্টিকের টিউবের মাধ্যমে পরিচালিত তরলের একটি ব্যাগে থাকে যার মাধ্যমে রোগীর বাহুতে অনেক মাস ধরে শিরায় প্রবাহিত থাকে। একটি ব্যাটারি চালিত পাম্প নিয়ন্ত্রণ করে দ্রুত ওষুধটি রক্তে প্রবেশ করে, একটি ব্যাগ অনেক দিন স্থায়ী হতে পারে।

বিবিসি বলছে, ব্লিনার কিট একটি ছোট ব্যাকপ্যাকে বহন করা যেতে পারে। কেমোথেরাপির বিপরীতে এখন এই ওষুধ বেশি স্বস্তির কারণ হয়েছে আর্থারের মতো অনেক রোগীর জন্য।

আরও পড়ুন:
ক্যানসারের অন্যতম কারণ খাদ্যে ভেজাল ও বায়ুদূষণ
‘সূর্যের আলো থেকে হতে পারে ত্বকের ক্যানসার’
ড্রাগ ট্রায়ালে ক্যানসার অদৃশ্য

মন্তব্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
2023 is going to be the hottest in 100 million years

সোয়া লাখ বছরের মধ্যে উষ্ণতম ‘হতে যাচ্ছে’ ২০২৩

সোয়া লাখ বছরের মধ্যে উষ্ণতম ‘হতে যাচ্ছে’ ২০২৩ রোদে ফেটে চৌচির হয়ে যাওয়া মাঠে চলাচল। ফাইল ছবি
ইইউর কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস (সিথ্রিএস) জানায়, অক্টোবরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙে যায় গত মাসে। এর আগে ২০১৯ সালের অক্টোবর স্মরণকালের উষ্ণতম অক্টোবর ছিল বলে জানিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা।

বিশ্বে বিগত এক লাখ ২৫ হাজার বছরের মধ্যে ২০২৩ সালের উষ্ণতম বর্ষ হওয়া ‘দৃশ্যত নিশ্চিত’ বলে বুধবার জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বিজ্ঞানীরা।

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন নিয়ে প্রকাশিত ডেটা অনুযায়ী, চলতি বছরের অক্টোবর স্মরণকালের সবচেয়ে উষ্ণ অক্টোবর হওয়ার পর বিজ্ঞানীরা উল্লিখিত তথ্য জানিয়েছেন।

ইইউর কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস (সিথ্রিএস) জানায়, অক্টোবরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙে যায় গত মাসে। এর আগে ২০১৯ সালের অক্টোবর স্মরণকালের উষ্ণতম অক্টোবর ছিল বলে জানিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা।

সিথ্রিএসের ‍উপপরিচালক সামান্থা বুরগেস এ বছরের অক্টোবরের তাপমাত্রা ‘অতি চরমভাবাপন্ন’ আখ্যা দিয়ে বলেন, গত মাসে তাপমাত্রা দশমিক চার ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি হওয়ার মধ্য দিয়ে আগের রেকর্ড ভেঙে যায়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, মানবীয় বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ফলে বায়ুমণ্ডলে অব্যাহত গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন, চলতি বছরে এল নিনোর প্রভাবে পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণায়নের ফলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বেড়েছে।

সিথ্রিএস জানায়, চলতি বছরের অক্টোবরে ভূপৃষ্ঠে বায়ুর তাপমাত্রা ছিল ১৮৫০ থেকে ১৯০০ সাল নাগাদ একই মাসের তাপমাত্রার চেয়ে এক দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।

ইইউর সার্ভিসটি জানায়, তাপমাত্রার রেকর্ডভাঙা অক্টোবরের অর্থ হলো ২০২৩ সাল যে স্মরণকালের উষ্ণতম বছর হতে যাচ্ছে, তা ‘দৃশ্যত নিশ্চিত’।

মন্তব্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
Two researchers won the Nobel Prize in Chemistry

ন্যানোটেকনোলজি নিয়ে গবেষণায় রসায়নে নোবেল পেলেন তিনজন

ন্যানোটেকনোলজি নিয়ে গবেষণায় রসায়নে নোবেল পেলেন তিনজন রসায়নে ২০২৩ সালের নোবেল পুরস্কারজয়ী মোঙ্গি বাওয়েন্ডি, লুইস ব্রুস ও অ্যালেক্সেই একিমভ। ছবি: রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস
রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস বুধবার তিন বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে।

চলতি বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন গবেষক।

রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস বুধবার এ তিন বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে।

নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে জানানো হয়, কোয়ান্টম ডটস নিয়ে আবিষ্কার ও সংশ্লেষণের জন্য ২০২৩ সালের নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে মোঙ্গি বাওয়েন্ডি, লুইস ব্রুস ও অ্যালেক্সেই একিমভকে।

ওয়েবসাইটে বলা হয়, একিমভ ও ব্রুস স্বতন্ত্রভাবে কোয়ান্টম ডটস সৃষ্টিতে সক্ষম হন। আর বাওয়েন্ডি রাসায়নিক উৎপাদনে আমূল পরিবর্তন আনেন।

কোয়ান্টাম ডটস বা কিউডিস সেমিকন্ডাক্টর ন্যানোক্রিস্টাল হিসেবেও পরিচিত। এগুলো সেমিকন্ডাক্টর কণা, যেগুলো আকারে কয়েক ন্যানোমিটার। ন্যানোটেকনোলজি ও বস্তুবিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই কিউডিস।

রসায়নে এবারের নোবেল পুরস্কারজয়ী মোঙ্গি জি. বাওয়েন্ডির জন্ম ১৯৬১ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে (এমআইটি) কাজ করছেন।

যৌথভাবে রসায়নের আরেক নোবেলজয়ী লুইস ই. ব্রুসের জন্ম ১৯৪৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইর ক্লিভল্যান্ডে। তিনি নিউ ইয়র্কের কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে কর্মরত।

উল্লিখিত দুজনের সঙ্গে এবার রসায়নে নোবেল পাওয়া আরেক ব্যক্তি অ্যালেক্সেই আই. একিমভের জন্ম ১৯৪৫ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে। তিনি নিউ ইয়র্কভিত্তিক ন্যানোক্রিস্টালস টেকনোলজি ইনকরপোরেটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত।

রসায়নে ১৯০১ সাল থেকে নোবেল পুরস্কার দেয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১১৪ জন এ শাস্ত্রে নোবেল পান।

এ শাস্ত্রে ২৫ বার নোবেল পুরস্কার তুলে দেয়া হয়েছে দুজন করে ব্যক্তিকে। এ শাস্ত্রে দুবার নোবেল পুরস্কার পান ফ্রেডেরিক স্যাঙ্গার ও ব্যারি শার্পলেস।

সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে ৩৫ বছর বয়সে রসায়নে নোবেল পান ফ্রেডেরিক জোলিয়ট, যিনি ১৯৩৫ সালে এ পুরস্কার পান। সবচেয়ে বেশি ৯৭ বছর বয়সে রসায়নে নোবেল পুরস্কার পান জন বি. গুডএনাফ। পুরস্কারের ইতিহাসে সর্বজ্যেষ্ঠ নোবেলজয়ীও তিনি।

সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের নামে ও তার রেখে যাওয়া অর্থে ১৯০১ সাল থেকে নোবেল পুরস্কার দেয়া শুরু হয়। প্রতি বছর চিকিৎসা, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, সাহিত্য, শান্তি ও অর্থনীতিতে দেয়া হয় বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কার। ১৮৯৫ সালে এক উইলে ‘মানবজাতির সর্বোচ্চ সেবায় অবদান রাখা’ ব্যক্তিদের জন্য এই পুরস্কার নিবেদিত করেছেন তিনি।

এবার নোবেল পুরস্কারের মধ্যে চিকিৎসাশাস্ত্রের পুরস্কারটি সোমবার সুইডেনের স্টকহোমে ঘোষণা করা হয়। মঙ্গলবার ঘোষণা করা হয় পদার্থবিজ্ঞানের পুরস্কার। বুধবার রসায়নের পর বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হবে সাহিত্যের পুরস্কার।

আগামী শুক্রবার অসলো থেকে ঘোষণা করা হবে বহুল কাঙ্ক্ষিত নোবেল শান্তি পুরস্কার। আর অর্থনীতির পুরস্কারটি ঘোষণা করা হবে ৯ অক্টোবর।

আরও পড়ুন:
পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন ৩ বিজ্ঞানী
করোনার টিকা উদ্ভাবনে ভূমিকায় চিকিৎসায় নোবেল পেলেন দুই গবেষক

মন্তব্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
Russian and American astronauts arrived together at the International Space Station

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে রুশ ও আমেরিকার নভোচারী

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে রুশ ও আমেরিকার নভোচারী আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) পৌঁছেছেন দুই রুশ ও এক আমেরিকান নভোচারী। ছবি: রয়টার্স
রাশিয়ার মহাকাশ সংস্থা রসকসমসের তথ্য অনুযায়ী, মহাকাশযানটি তিন ঘণ্টা পর শুক্রবার আইএসএসে পৌঁছায়। সেখানে তারা তিন রাশিয়ান, দুই আমেরিকান, এক জাপানি নভোচারী ও ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার এক প্রতিনিধির সাঙ্গে যোগ দেন।

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) পৌঁছেছেন দুই রুশ ও এক আমেরিকান নভোচারী।

রুশ-আমেরিকা সম্পর্কে টানাপোড়েনের মধ্যেই উভয় দেশের নভোচারীরা যৌথভাবে মহাকাশ কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন।

রাশিয়ার মহাকাশ সংস্থা রসকসমসের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার রোসকসমস মহাকাশচারী ওলেগ কোনোনেনকো ও নিকোলাই চুবসহ নাসার নভোচারী লোরাল ও’হারা কাজাখস্তানের বাইনোকুর কসমোড্রোম থেকে সয়ুজ এমএস-২৪ মহাকাশযানে ওঠেন।

মহাকাশযানটি তিন ঘণ্টা পর আইএসএসে পৌঁছায়। সেখানে তিন রাশিয়ান, দুই আমেরিকান, এক জাপানী নভোচারী ও ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার এক প্রতিনিধির সাঙ্গে যোগ দেন।

রাশিয়ার প্রায় ৫০ বছর পর চালানো চন্দ্রাভিযান গত মাসে ব্যর্থ হওয়ার পর মহাকাশ স্টেশনে গেল নভোচারীরা।

আইএসএস আমেরিকা ও রাশিয়ার সহযোগিতার একটি ব্যতিক্রমী ভেন্যু। রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি হয়।

নভোচারীরা এমএস-২৩ মহাকাশযানে করে পৃথিবীতে ফিরে আসবেন বলে জানায় রসকসমস। সূত্র: বাসস

আরও পড়ুন:
৯৩ বছর বয়সে বিয়ে করলেন চাঁদে পা দেয়া দ্বিতীয় মানব
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন ছাড়ছে রাশিয়া

মন্তব্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
Indias solar spacecraft took a selfie with the Earth and the Moon

পৃথিবী ও চাঁদের সঙ্গে সেলফি তুলে পাঠাল ভারতের সৌরযান

পৃথিবী ও চাঁদের সঙ্গে সেলফি তুলে পাঠাল ভারতের সৌরযান ইসরো প্রকাশ করেছে এই ছবি
দেখা যায়, ঘন কালো আকাশে আলোয় উদ্ভাসিত পৃথিবীর একদিক। তার ডানদিকে চোখে পড়ছে একটি চলমান বিন্দু। সেটি চাঁদ বলে জানিয়েছে ইসরো। পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করার মুহূর্ত ধরা পড়েছে ক্যামেরায়।

মহাশূন্যে সেলফি তুলে পাঠিয়েছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর সৌরযান আদিত্য এল-১। চন্দ্রাভিযানের ঠিক পর পরই সৌর অভিযানে নেমেছে দেশটি।

ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্ট ‘এল-১’-এর পথে রওনা দেয়ার সময় পৃথিবী থেকে ১৫ লাখ কিলোমিটার দূরে পৃথিবী ও চাঁদের সঙ্গে ছবি তুলে পাঠিয়েছে ওই সৌরযান।

বৃহস্পতিবার ইসরো এ ছবি প্রকাশ করেছে বলে এনডিটিভর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। টুইটারে ছবিগুলো ভিডিও আকারে প্রকাশ করেছে ইসরো।

পোস্টে লেখা হয়েছে, আদিত্য এল-১ অভিযান: প্রত্যক্ষদর্শী! আদিত্য এল-১ সূর্যের ল্যাগ্রেঞ্জ এল-১ পয়েন্টের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। পথে সেলফি তুলল, ছবি তুলল পৃথিবী এবং চাঁদেরও।

৪১ সেকেন্ডের ওই ভিডিওর শুরুতে ভারতীয় সৌরযানের তোলা সেলফি তুলে ধরা হয়েছে। তাতে সৌরযান আদিত্য-এর ভিইএলসি এবং সুইট দৃশ্যমান।

এর পর ভারতীয় সৌরযানে বসানো ক্যামেরার তোলা পৃথিবী এবং চাঁদের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করা হয়। তাতে দেখা যায়, ঘন কালো আকাশে আলোয় উদ্ভাসিত পৃথিবীর একদিক। তার ডানদিকে চোখে পড়ছে একটি চলমান বিন্দু। সেটি চাঁদ বলে জানিয়েছে ইসরো। পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করার মুহূর্ত ধরা পড়েছে ক্যামেরায়।

গত ২ সেপ্টেম্বর অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে আদিত্য এল-১ সৌরযানের উৎক্ষেপণ হয়। এখনও পর্যন্ত পৃথিবীর চারদিকে দুবার চক্কর কেটেছে সেটি।

সূর্যের ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্ট এল-১-এ পৌঁছানোর আগে, আরও দুবার গতি বাড়িয়ে চক্কর কাটবে এই যান। ১২৫ দিন পর ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্ট এল-১-এ পৌঁছনোর কথা ভারতের সৌরযানের।

মহাশূন্যে সূর্য এবং পৃথিবীর মতো দুই বস্তুর পারস্পরিক আকর্ষণ এবং বিকর্ষণের ফলে যে স্থিতিশীল অঞ্চল গড়ে ওঠে, তাকেই বলে ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্ট। এই ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্টকে মহাকাশযানের পার্কিং স্পটও বলা হয়। সেখানে কম জ্বালানি খরচ করে, মহাজাগতিক কর্মকাণ্ডের ওপর নির্বিঘ্নে নজরদরি চালানো যায়।

সূর্যের ওপর নজরদারি চালানোর জন্য, গণিত বিশারদ জোসেফ লুইস ল্যাগ্রেঞ্জ এই ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্ট এল-১ আবিষ্কার করেন।

ইসরো জানিয়েছে, ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্ট এল-১ থেকে কোনো রকম বাধা-বিঘ্ন ছাড়াই সূর্যকে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব। এর মাধ্যমে সূর্যের বায়ুমণ্ডলে ঠিক কী ঘটছে, মহাকাশের সার্বিক আবহাওয়ায় তার কী প্রভাব পড়ছে, তৎক্ষণাৎই সব তথ্য হাতে পাওয়া সম্ভব।

মন্তব্য

p
উপরে