দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের গতি আরও বাড়াতে পাঁচ বছর আগে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। মূলত কাস্টমস প্রক্রিয়াকে সহজ করার মাধ্যমে ওয়ান স্টপ বা একই জায়গা থেকে সব সেবা দিতে এ পরিকল্পনা নেয়া হয়।
‘ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো’ নামে বাস্তবায়নাধীন এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে সরকারি-বেসরকারি খাতের সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনকে একই প্ল্যাটফর্মে সংযুক্ত করে সেবা নিশ্চিত করা।
চলতি বছরের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তেমন কোনো অগ্রগতি নেই।
এনবিআর কর্মকর্তারা বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারিসহ নানা কারণে কাজ পিছিয়ে গেছে। এ প্রকল্পের মূল কাজ সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
এখন আমদানি-রপ্তানির জন্য বাণিজ্য সম্পর্কিত পারমিট, সনদ, শুল্কসহ যে কোনো সেবা নিতে যেতে হয় বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন সিসিআইএফ, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার কাছে।
ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো সিস্টেম চালু হলে একই জায়গা থেকে সব সেবা পাওয়া যাবে। তখন আমদানি-রপ্তানিকারকেদের প্রয়োজনীয় কাজে অন্য সংস্থার কাছে ধরনা দিতে হবে না।
৫৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে আলোচ্য প্রকল্পটি নেয়া হয় ২০১৭ সালে। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংকের ঋণ ৫০০ কোটি টাকা। বাকি ৮০ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকারের।
বর্তমানে দেশে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সঙ্গে সরাসরি জড়িত প্রায় সাড়ে ৩ লাখ প্রতিষ্ঠান।
এনবিআর কর্মকর্তারা বলেছেন, ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে আমদানি-রপ্তানি করতে যা কিছু প্রয়োজন, তা এক জায়গায় পাওয়া যাবে। এতে ব্যবসার খরচ কমবে।
আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত সব সেবাকে একই ছাদের নিচে আনতে ২০১৮ সালে সরকারি-বেসরকারি খাতের ৩৯টি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সাথে সমঝোতা স্মারক বা এমওইউ স্বাক্ষর করে এনবিআর। এর পর থেকে প্রকল্পটির কাজ তেমন এগোয়নি।
সূত্র বলেছে, ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো সিস্টেম চালু করতে হলে এর জন্য বিশেষ সফটওয়্যার তৈরি করতে হবে। এটা করা হলে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ইন্টিগ্রেশন বা ডিজিটাল সংযোজন স্থাপন করা যাবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট এনবিআরের নীতি নির্ধারক পর্যায়ের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সফটওয়্যার ডেভেলপ করার জন্য এরই মধ্যে দরপত্র ডাকা হয়েছে। তিনটি স্থানীয় প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে সর্বনিম্ম প্রতিষ্ঠানকে বাছাই করে একটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেয়া হবে। এখন মূল্যায়ন চলছে। চূড়ান্ত বাছাইয়ের পর সর্বনিম্ম দরদাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আগামী বছরের মার্চে চুক্তি সই হতে পারে।’
এনবিআর বলেছে, শুল্ক আদায় প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করার জন্য ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো একটি আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর পদ্ধতি। প্রকল্পটি সম্পূর্ণ বাস্তবায়িত হলে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের গতি বাড়বে। এ পদ্ধতিতে অটোমেশন পদ্ধতির মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত যত রকমের লেনদেন আছে, তা এক জায়গায় হবে।
আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর এ পদ্ধতিতে অ্যাডভান্স রুলিং প্রবর্তনের সুযোগ থাকবে। এর মাধ্যমে আমদানিকারক বা নতুন উদ্যোক্তারা পণ্যের শ্রেণিকরণ বা এইচএস কোড এবং তাদের পণ্য আমদানির উৎস সম্পর্কে আগেই জানতে পারবে। এতে পণ্য আমদানি সহজ হবে।
ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো বাস্তবায়নে বেশি গুরুত্ব দেয়ার জন্য গত অর্থবছরের বাজেটে বলা হয়েছিল, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে দ্রুত অগ্রগতির চাকা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশের অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছে।
এ পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যের সুবিধার্থে শুল্ককে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার বিকল্প নেই।
এতে আরও বলা হয়, ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো যথাসময়ে কার্যকর করা গেলে বাংলাদেশ দ্য ইজ অব ডুয়িং বিজনেস র্যাঙ্কিংয়ের ক্ষেত্রে উন্নতি করবে, বিনিয়োগ সহজতর হবে এবং দেশের অর্থনীতির চাকা আরও ত্বরান্বিত হবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।
বর্তমানে বিভিন্ন কাস্টমস ও বন্দরগুলোর মাধ্যমে আমদানি পণ্য খালাসে গড়ে আট থেকে দশ দিন এবং রপ্তানি পণ্যের জন্য পাঁচ থেকে ছয় দিনের প্রয়োজন হয়।
এনবিআরের তথ্যমতে, ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো পদ্ধতি চালু হলে এ ক্ষেত্রে সময় কমে আসবে অর্ধেকে।
ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি সামস মাহমুদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো পদ্ধতির দ্রুত বাস্তবায়ন চাই। কারণ, এ সিস্টেম চালু হলে ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ হবে, পাশপাশি বাড়বে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ।’
এনবিআরের সাবেক সদস্য ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে পারলে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির পাশাপাশি রপ্তানি ও আমদানি কার্যক্রমের ঝামেলা কমবে। ফলে ব্যবসার ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।’
তবে তিনি মনে করেন, আমদানির ক্ষেত্রে এখনও পণ্যের শ্রেণিকরণ বা এইচএস কোড নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। ছোট-বড়-মাঝারি সব ব্যবসায়ী এতে হয়রানি শিকার হচ্ছেন। তাই, ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো বাস্তবায়ন করার আগে এইচএস কোডকে সুষম (হারমোনাইজড) করতে হবে। এটা না করলে ন্যাশনাল সিঙ্গেল সিস্টেমের কোনো সুফল পাবে না ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন:কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় ঢলে পড়া এক পর্যটককে মৃত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে শনিবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে ওই পর্যটক অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে জানান সাগরে গোসলরত পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সি সেইফ লাইফ গার্ডের সুপারভাইজার মো. ওসমান গণি।
প্রাণ হারানো মতিউর রহমানের (৪০) বাড়ি কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায়।
ওসমান গণি বলেন, ‘শনিবার সকাল থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে সি সেইফ লাইফ গার্ডের কর্মীরা গোসলরত পর্যটকদের নিরাপত্তায় দায়িত্বরত ছিলেন। সকাল পৌনে ৯টার দিকে সৈকতের বালিয়াড়িতে ওই পর্যটক ঘোরাঘুরি করছিলেন। একপর্যায়ে ফোনে কথা বলার সময় তিনি বালিয়াড়িতে ঢলে পড়ে অবচেতন হন।’
তিনি জানান, লাইফ গার্ড কর্মীরা ঘটনাটি দেখে তাৎক্ষণিক ওই পর্যটককে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আশিকুর রহমান বলেন, ‘সকাল ৯টার পরপরই সৈকতের লাইফ গার্ড কর্মীরা এক পর্যটককে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন, কিন্তু হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু ঘটে।’
আরএমও বলেন, তীব্র গরমে হিট স্ট্রোকে নাকি অন্য কোনো কারণে ওই পর্যটক মারা গেছেন, তা ময়নাতদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।
মতিউরের মরদেহ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে বলেও জানান এ চিকিৎসক।
আরও পড়ুন:বাগেরহাটের খুলনা-মোংলা মহাসড়কে ট্রাকের চাপায় তিন ভ্যানযাত্রী নিহত হয়েছেন।
উপজেলার চেয়ারম্যান বাড়ি মোড় এলাকায় শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো তিনজন হলেন বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ঝনঝননিয়া গ্রামের সাঈদ মোড়ল (৪৫), একই গ্রামের মো. আজাদ (৩৫) ও কুমরাই গাববুনিয়া গ্রামের মো. মনি (৪৫)।
এ ঘটনায় ট্রাকটির চালক যশোরের চৌগাছার চানাদা-আফরা গ্রামের বাসিন্দা গাজি সাফায়েত হোসেনকে (১৮) আটক ও ট্রাকটি জব্দ করা হয়।
বাগেরহাট জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাবুল আক্তার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সকালে মোংলাগামী একটি ট্রাক বিপরীত দিক থেকে আসা একটি যাত্রীবাহী ভ্যানকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলে একজন নিহত ও দুইজন গুরুতর আহত হন। পরে আহতদের রামপাল উপজেলা হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে তাদের মৃত্যু হয়।
তিনি জানান, দুর্ঘটনার পরপরই পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে সাঈদ মোড়লের মরদেহসহ আহত দুইজনকে ট্রাকের চাকার নিচ থেকে উদ্ধার করে রামপাল উপজেলা হাসপাতালে পাঠায়।
খুলনা-মোংলা জাতীয় মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:দেশের তিন জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র এবং পাঁচ জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ নিয়ে বলা হয়, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র দাবদাহ এবং টাঙ্গাইল, বগুড়া, বাগেরহাট, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলার পাশাপাশি রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগ এবং ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে, যা অব্যাহত থাকতে পারে।
দেশের কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেখানে মৃদু তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বইছে ধরা হয়।
তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তীব্র দাবদাহ ধরা হয়। অন্যদিকে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে বলা হয় অতি তীব্র দাবদাহ।
চুয়াডাঙ্গায় শুক্রবার বেলা তিনটায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ। একই দিনে পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
তাপমাত্রার বিষয়ে অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:মাদারীপুরের কালকিনিতে প্রবাসীর বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় মামলা করায় ফের হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় ‘হাতবোমার’ আঘাতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ কানাইপুরে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
স্থানীয়রা জানান, গত ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় দক্ষিণ কানাইপুরের প্রয়াত মালেক সরদারের ছেলে দুবাই প্রবাসী রিপন সরদার বাড়িতে আসেন। এ খবর পেয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষ একই এলাকার আনসার হাওলাদারের ছেলে দেলোয়ার হাওলাদার লোকজন নিয়ে রিপনের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় ঘরে থাকা মূল্যবান আসবাবপত্র ভাঙচুর ও লুট করে নিয়ে যায় হামলাকারীরা।
এ ঘটনায় পরবর্তীতে গত ২৩ এপ্রিল রিপন সরদারের স্ত্রী রুনিয়া বেগম বাদী হয়ে কালকিনি থানায় ২২ জনের নামে একটি মামলা করেন।
স্থানীয়দের ভাষ্য, এরই জেরে শুক্রবার সন্ধ্যায় রিপনের চাচাত ভাই ও আলীনগর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান শাহীদ পারভেজের সমর্থক জামাল সরদার স্থানীয় বাজারে যান। মাঝপথে সাবেক চেয়ারম্যান মিলন সরদারের কর্মী মহসিন লোকজন নিয়ে কুপিয়ে তাকে জখম করে বলে অভিযোগ ওঠে।
পরে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় একাধিক হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন অন্তত ১৫ জন।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলাউল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এলাকায় উত্তেজনা থাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রিপন হাওলাদারের আগের ঘটনার মামলা দায়েরকে কেন্দ্র করেই এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন:দাবদাহ আর বৃষ্টিহীনতায় পুড়ছে মাদারীপুরের পাটক্ষেত। বৈশাখের তপ্ত রোদে পাটক্ষেত নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। পাটের জমিতে ঘন ঘন সেচ দেয়ায় যেমন উৎপাদন খরচ বাড়ছে, তেমনি খরায় জমির আগাছা পরিষ্কার করতে পারছেন না কৃষকরা।
এমনটা চলতে থাকলে উৎপাদন অনেকটা হুমকির মুখে পড়বে বলেও আশঙ্কা কৃষকদের।
সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের মধ্যচক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দিনের তীব্র দাবদাহে পাট গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। ক্ষেতেই মরে যাচ্ছে পাট গাছ। কোথাও শুকিয়ে মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। ফলে ঘন ঘন সেচ দিয়েও গাছের আশানুরূপ পরিবর্তন আনতে পারছেন না।
অনাবৃষ্টির কারণে পাট গাছের বৃদ্ধি না হওয়ায় জমিতে আগাছার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্বিগুণ হারে।
কৃষকরা জানান, এবার প্রতি বিঘা পাট চাষ করতে খরচ হয়েছে ১৯ হাজার ৫০০ টাকার মতো। যা গতবারের চেয়ে অন্তত দুই হাজার বেশি। এরপরে গাছ শুকিয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষার জন্য সেচ দিচ্ছেন তারা। ফলে আরও বাড়তে পারে উৎপাদন ব্যয়।
খোয়াজপুরের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কয়েকদিনের প্রচণ্ড গরমে মাঠ ফেটে চৌচির। পাটগাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। একটুখানি বড় হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন চললে এবার পাট আবাদ ধসে পড়বে। অনেকেই সেচ দিলেও এক দুই দিন পরে আবার শুকিয়ে যায়। এতে মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে উঠছে।’
আর মাদারীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় এবার ৩৭ হাজার ৪০২ হেক্টর জমিতে পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এরই মধ্যে অধিকাংশ জমিতে বপন কাজ শেষ হয়েছে এবং অনেক স্থানে চারা বড় হয়ে গেছে, কিন্তু রোগের কারণে পাটের ক্ষতি হওয়ায় চাষিদের বিকেলে পানি সেচ দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক আবদুল মতিন বিশ্বাস বলেন, ‘এই গরমে পাটের কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই, তবে কৃষকদের বলছি, যেন বিকেলে সেচের মাধ্যমে পাট গাছ জীবিত রাখে। এতে গাছ মরবে না।’
মাদারীপুর জেলায় অন্যতম অর্থকরী ফসল হিসেবে পাটের অবস্থান শীর্ষে। গত বছর পাটের মূল্য ভাল পাওয়ায় কৃষকরাও এবার বেশি জমিতে পাট চাষ করেছেন।
আরও পড়ুন:রাজধানীর খিলগাঁওয়ের গোড়ানে খেলতে গিয়ে একটি ভবনের ছাদ থেকে পড়ে এক শিশু নিহত হয়েছে।
শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে পাঁচ তলা ভবনটির ছাদ থেকে পড়ে নিহত হয় সে।
নিহত শিশুর নাম খাদিজা আক্তার (৫)। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শিশুটির ফুফা মোহাম্মদ ইসহাক মিয়া (২০ বছর)।
খাদিজার বাবা মোহাম্মদ ফয়সাল আহমাদ জানান, দুপুরে পাঁচ তলার ছাদে খাদিজা খেলাধুলা করার সময় ছাদ থেকে নিচে পড়ে যায়। এ সময় খাদিজার ফুফা দৌড়ে ধরতে গেলে তিনিও নিচে পড়ে যান।
তিনি জানান, পরে তাদেরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খাদিজা রাত সাড়ে ৮টার দিকে মারা যায় এবং ফারিয়ার ফুফাকে ভর্তি রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া থানা এলাকায়। খিলগাঁওয়ের গোড়ান নবাবীর মোড় বতর্মানে১৪৮ /১ রায়হান সাহেবের বাড়ির ভাড়াটিয়া আমরা।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মহম্মদ বাচ্চু মিয়া বলেন, শিশুটির মরদেহ ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত ছাড়া স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে বলে খিলগাঁও থানার সাথে কথা হয়েছে।
তীব্র থেকে অতি তীব্র মাত্রায় পাবনা জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। অসহনীয় দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত তিন-চার দিন তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও শুক্রবার চলতি মৌসুমে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
এদিন পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যা জেলায় চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত রবিবার (২১ এপ্রিল) ঈশ্বরদীতে প্রথমবার ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, জেলার তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অতি তীব্র তাপদাহে পাবনার মানুষের দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে কৃষক, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, ইটভাটার শ্রমিকসহ দিনমজুরদের জন্য অসহ্য হয়ে পড়েছে। এছাড়াও তীব্র গরমে ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুসহ সব বয়সের মানুষ।
মন্তব্য