নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া নতুন সদস্য বাছাইয়ে চরম সতর্কতা অবলম্বন করছে। ধরা পড়ার ভয়সহ নানা কারণে দাওয়াত কার্যক্রমে সংগঠনটি গুরুত্ব দিচ্ছে পাঁচ বিষয়ে।
সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়া জঙ্গিদের কাছে থেকে পাওয়া ‘ট্রেনিং সিলেবাস’ অনুসারে তারা ভিতু, কৃপণ, বাচাল, ঘরকুনো লোকজনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলে যুক্তদের নিজ সংগঠনে নিতে আগ্রহী নয়। এই পাঁচ শ্রেণির ব্যক্তিদের সংগঠনের জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করছে তারা। সংক্ষেপে তাদের উল্লেখ করা হয়েছে ‘মরণব্যাধি’ নামে।
র্যাবের দেয়া তথ্য অনুসারে, নতুন জঙ্গি সংগঠনটি সদস্য সংগ্রহে দুটি পদ্ধতি অনুসরণ করছে। যার একটি দাওয়াতুল আম্মাহ (ব্যাপক দাওয়াত), অপরটি দাওয়াতুল খাচ্ছা (একক দাওয়াত)।
ট্রেনিং সিলেবাস অনুযায়ী তারা একক দাওয়াতকে গুরুত্ব দিচ্ছে। কাউকে দাওয়াত দেয়ার জন্য টার্গেট করা থেকে শুরু করে জিহাদের কৌশল শেখানো পর্যন্ত ৬টি ধাপে কাজ করে সংগঠনের দাওয়াতি শাখার সদস্যরা। যার মধ্যে রয়েছে টার্গেট ও নির্বাচন, সম্পর্ক ও যাচাইকরণ, ইমান জাগ্রতকরণ, চিন্তার বীজ বপন করা, মানহাজ ও যুদ্ধকৌশল।
কাউকে টার্গেট করে দাওয়াত দেয়ার প্রথম ধাপ ‘মারহালা’। এ সময় টার্গেট নির্বাচন ও বিশ্লেষণের কাজ করা হয়। মূলত এই ধাপেই পাঁচ ধরনের ব্যক্তিদের ‘মরণব্যাধি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে তারা।
সিলেবাসে বলা হয়েছে, সর্বপ্রথম টার্গেট করতে হবে আমি কাকে কাকে দাওয়াত দেব, তারপর টার্গেট ব্যক্তিদের পাঁচটি ‘মরণব্যাধি’ বিশ্লেষণের মাধ্যমে নির্বাচন করতে হবে।
যার মধ্যে পাঁচ মরণব্যাধির একটি পাওয়া যাবে, তাকে সৈনিক হওয়ার অযোগ্য হিসেবে ধরা হবে। এমন ব্যক্তিদের দাওয়াত দেয়া হলে লাভের থেকে ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি থাকে বলে সিলেবাসে মত দেয়া হয়েছে।
পাঁচ শ্রেণির ব্যক্তিদের জঙ্গিদের পক্ষে নেয়া কঠিন বলেই মনে করছেন তাদের নীতিনির্ধারকেরা। এ জন্যই লিখিত নির্দেশনার মাধ্যমে সতর্ক করা হয়েছে সংগঠনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।
এ বিষয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মো. আব্দুর রশীদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নিঃসন্দেহে জঙ্গিরা এখন বৈজ্ঞানিক উপায়ে মগজ ধোলাই করার চেষ্টা চালাচ্ছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, যেসব প্রকৃতির লোকদের প্রভাবিত করা কঠিন, যাদের হিজরত করতে নিয়ে যাওয়া দুষ্কর হয়ে যায়, তাদের জঙ্গিরা দাওয়াত দেয়া বা দলভুক্ত করা থেকে বিরত থাকে।
‘তারা মনে করছে, যে ব্যক্তি ভিতু অথবা ঘরকুনো সে হিজরতে যেতে চাইবে না। কৃপণ ব্যক্তি দলে অর্থায়ন করবে না। নিজেদের জন্য ঝুঁকি বিবেচনায় জঙ্গিরা এসব ব্যক্তিকে এড়িয়ে চলতে চায়।’
সম্প্রতি কুমিল্লা থেকে বেশ কয়েকজন তরুণ নিখোঁজ হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনুসন্ধান শুরু করে। তখন উগ্রবাদে জড়িয়ে ঘর ছেড়ে বের হওয়ার প্রস্তুতিকালে ৪ তরুণকে আটক করা হয়।
একই সময়ে হিজরতে গিয়ে ফিরে আসা এক তরুণের দেয়া তথ্য ও গোয়েন্দা অনুসন্ধানে জানা যায়, জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া নামে নতুন একটি জঙ্গি সংগঠনের কথা। বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের নেতা ও সদস্যদের নিয়ে ২০১৭ সালে এ সংগঠনের কার্যক্রম শুরু হয়। যারা জঙ্গিবাদ বিস্তারের জন্য নতুন সদস্য সংগ্রহ করছে।
ধারাবাহিক অভিযানে এক মাসের মধ্যে এই সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাসহ ৩২ জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব ও ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। এ ছাড়াও ৫৫ জনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা।
র্যাব জানিয়েছে, পার্বত্য অঞ্চলে সক্রিয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) আশ্রয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে নতুন জঙ্গিদের অনেকে। প্রতি মাসে নগদ ৩ লাখ টাকা ও কেএনএফ সদস্যদের খাবার খরচ বহন করার চুক্তিতে সেখানে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
জঙ্গি এবং কেএনএফ সদস্যদের গ্রেপ্তারে গত ৯ অক্টোবর থেকে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে বলে জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, ‘হুজিবি, জেএমবি ও আনসার আল ইসলাম নিষিদ্ধ হওয়ায় তাদের অনুসারীরা এখন নতুন নামে সংগঠিত হতে চাচ্ছে। তারা সদস্য সংগ্রহে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কোমলমতি তরুণদেরকে টার্গেট করেছে। সশস্ত্র হামলার প্রস্তুতি নিতে তরুণদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে, তাদের মোটিভেশনাল কার্যক্রম চালাতেই নেয়া হচ্ছে দুর্গম অঞ্চলে। এ চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারে দেশের বিভিন্নস্থানে অভিযান চলমান।’
কুমিল্লা থেকে হিজরতে যাওয়া আবরারুল হককে শনাক্তের পর ডিএমপির সিটিটিসি গত ১৩ সেপ্টেম্বর মগবাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। তার দেয়া তথ্যে জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষস্থানীয় নেতা ডাক্তার শাকির বিন ওয়ালীকে রামপুরার হাজীপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘জঙ্গি তৎপরতা চালাতে ৭০-৮০ জন যুবককে সদস্য করেছে একটি গ্রুপ। তাদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
আরও পড়ুন:পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুরে অগ্রণী ব্যাংকের শাখা থেকে ১০ কোটি ১৩ লাখ টাকা লোপাটের অভিযোগে শাখা ম্যানেজারসহ তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
শুক্রবার তাদের বরখাস্ত করা হয় বলে শনিবার দুপুরে জানান অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী সার্কেলের জেনারেল ম্যানেজার আফজাল হোসেন।
বরখাস্ত হওয়া ব্যাংক কর্মকর্তারা হলেন- কাশিনাথপুর শাখার ব্যবস্থাপক (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) হারুন বিন সালাম, সিনিয়র অফিসার আবু জাফর ও ক্যাশ অফিসার সুব্রত চক্রবর্তী।
আফজাল হোসেন বলেন, ‘ব্যাংক পরিদর্শনে গিয়ে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা খোয়া যাওয়ার সত্যতা পাওয়া যায়। পরে পুলিশে অভিযোগ দিলে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে একটি তদন্ত দল পুরো বিষয়টির তদন্ত করছে। দলটির প্রধান হলেন সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার আনোয়ার হোসেন। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর অভিযুক্ত ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের শুক্রবার বিকেলে পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়। বিচারক আনোয়ার হোসেন সাগর গ্রেপ্তারকৃতদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন:মুন্সীগঞ্জ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে এক বছরের শিশু হুমাইরা আক্তারের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকালে সদর উপজেলার মদিনা বাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মদিনা বাজারের উত্তর পাশে খানকা শরীফের সামনের সড়কে দুটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে।
এ সময় রাস্তার পাশে এক বছরের শিশু সন্তান হুমাইরাকে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা হাবিবা বেগমের ধাক্কা খান অটোরিকশার সঙ্গে। এতে শিশু হুমাইরা মায়ের কোল থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। শিশুটিকে দ্রুত মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় অটোরিকশা দুটি আটক করা হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া দুই চালককে আটকের চেষ্টা চলছে।
রাজধানীর বনানীতে মাঝ সড়কে চলন্ত অবস্থায় যাত্রীবাহী বাসে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নির্বাপনে কাজ করে।
জানা গেছে, শনিবার বিকেলে জে কে এন্টারপ্রাইজ পরিবহনের একটি বাস বনানী আর্মি স্টেডিয়ামের সামনে একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিলে মোটরসাইকেলের ট্যাঙ্কি বিস্ফোরিত হয়ে বাসটিতে আগুন ধরে যায়।
ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তা খালেদা ইয়াসমিন জানান, বিকেল ৪টা ২ মিনিটে যাত্রীবাহী একটি বাসে আগুন লাগার খবর আসে। পরে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নির্বাপন করে। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা-শেরপুর রুটে চলাচল করা জে কে এন্টারপ্রাইজ পরিবহনের বাসটি বনানী আর্মি স্টেডিয়ামের সামনে একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। পরে মোটরসাইকেলটিকে টেনে-হিঁচড়ে বাসটি অনেক দূর নিয়ে আসে। এতে মোটরসাইকেলের তেলের ট্যাঙ্ক বিস্ফোরিত হয়ে বাসটিতেও আগুন লেগে যায়। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলের চালক গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
মাদারীপুরে ইজিবাইকের সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতে সেটিকে পাশ দিতে গিয়ে যাত্রীবাহী একটি বাস খাড়ে পড়ে যায়। এতে অল্পের জন্যে জীবন রক্ষা পেয়েছে বাসের অন্তত ৬৫ যাত্রীর। তবে এ ঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত ৩০ জন।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুর জেলার ঘটকচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এসে বাস ও আহতদের উদ্ধার করে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, হাওলাদার পরিবহনের একটি বাস প্রায় ৬৫ জন যাত্রী নিয়ে বরিশাল থেকে সাতক্ষীরার উদ্দেশে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে ঘটকচর এলাকায় আসলে একটি ইজিবাইক রাস্তার মাঝে চলে আসে। দুর্ঘটনা এড়াতে ইজিবাইকটিকে পাশ দিতে বাসচালক দ্রুত মোড় নেয়ায় বাসটি রাস্তার পাশের খাদে চলে যায়। তবে খাদটি বেশি গভীর না হওয়ায় প্রাণে রক্ষা পেয়েছে বাসের যাত্রীরা। তবে আঘাত পেয়ে বাসের ভিতরে থাকা যাত্রীদের হাত-পায়ে একাধিক স্থানে কেটে গেছে। এ ঘটনায় ছোট-বড় মিলে প্রায় ৩০ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে মোস্তফাপুর হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয়দের সহযোগিতায় যাত্রীদের উদ্ধার করে।
দুর্ঘটনাকবলিত বাসটির যাত্রী সজীব হোসেন বলেন, ‘আমি অফিশিয়াল কাজে সাতক্ষীরা যাচ্ছিলাম। ঘটকচর স্ট্যান্ডের কিছুটা দূরে আসার সঙ্গে সঙ্গে হঠাৎ একটা ধাক্কা খেয়ে দুমড়ে মুচড়ে গেলাম। পরে দেখি বাসটি খাদে পড়ে গেছে। আমার নাকে কিছুটা আঘাত পেয়েছি। অন্য যাত্রীদেরও বেশ আঘাত লেগেছে।’
তিনি বলেন, ‘ইজিবাইক পাশ দিতে গিয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়কে ইজিবাইক নছিমন বন্ধ করা উচিত।’
এ ব্যাপারে মোস্তফাপুর হাইওয়ে থানার ওসি মোহাম্মদ মারুফ রহমান বলেন, ‘বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে অন্তত ৬৫ জন যাত্রী। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে গিয়ে দুর্ঘটনাকবলিতদের উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ইজিবাইকটি আটক করা যায়নি।’
আরও পড়ুন:ফরিদপুরের মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ১ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বারের সম্পৃক্ততার তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় মধুখালীর ঘটনা পরবর্তী সামগ্রিক বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ডিসি কামরুল আহসান তালুকদার।
সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামান তপন ও ওয়ার্ড মেম্বার অজিত কুমার সরকারকে ধরিয়ে দিতে পারলে বা তাদের ধরতে কোনো প্রকার তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে আর্থিক পুরস্কারের ঘোষণা দেন তিনি।
ডিসি বলেন, ‘চেয়ারম্যান ও মেম্বার এখন পলাতক। এরই মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের শনাক্ত করতে বিভিন্ন জেলায় অভিযান পরিচালনা করেছে। বিমানবন্দর ও সীমান্তে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে, যাতে তারা দেশত্যাগ করতে না পারে।
‘এ বিষয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে ধরিয়ে দিতে যেকোনো প্রকার তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে তাদের পুরস্কৃত করা হবে।’
গত ১৮ এপ্রিল রাতে ডুমাইন ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের পঞ্চপল্লীতে মন্দিরে আগুন লাগার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সন্দেহের জেরে দুই শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আহত হন আরও পাঁচ শ্রমিক।
পিটুনিতে হতাহতের ঘটনায় তিনটি মামলা করা হয়। এরই মধ্যে তিন মামলায় পুলিশ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
আরও পড়ুন:মাদারীপুরের কালকিনিতে প্রবাসীর বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় মামলা করায় ফের হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় ‘হাতবোমার’ আঘাতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ কানাইপুরে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
স্থানীয়রা জানান, গত ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় দক্ষিণ কানাইপুরের প্রয়াত মালেক সরদারের ছেলে দুবাই প্রবাসী রিপন সরদার বাড়িতে আসেন। এ খবর পেয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষ একই এলাকার আনসার হাওলাদারের ছেলে দেলোয়ার হাওলাদার লোকজন নিয়ে রিপনের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় ঘরে থাকা মূল্যবান আসবাবপত্র ভাঙচুর ও লুট করে নিয়ে যায় হামলাকারীরা।
এ ঘটনায় পরবর্তীতে গত ২৩ এপ্রিল রিপন সরদারের স্ত্রী রুনিয়া বেগম বাদী হয়ে কালকিনি থানায় ২২ জনের নামে একটি মামলা করেন।
স্থানীয়দের ভাষ্য, এরই জেরে শুক্রবার সন্ধ্যায় রিপনের চাচাত ভাই ও আলীনগর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান শাহীদ পারভেজের সমর্থক জামাল সরদার স্থানীয় বাজারে যান। মাঝপথে সাবেক চেয়ারম্যান মিলন সরদারের কর্মী মহসিন লোকজন নিয়ে কুপিয়ে তাকে জখম করে বলে অভিযোগ ওঠে।
পরে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় একাধিক হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন অন্তত ১৫ জন।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলাউল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এলাকায় উত্তেজনা থাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রিপন হাওলাদারের আগের ঘটনার মামলা দায়েরকে কেন্দ্র করেই এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন:গাইবান্ধায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন আশরাফ আলী নামের এক রিকশাচালক। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলামকে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার সুন্দরগঞ্জ-কুপতলা সড়কের ৭৫ নম্বর রেলগেট নামক এলাকায় এ ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ড ঘটে। পরে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে সাদেকুলকে কারাগারে পাঠানো হয়।
৫০ বছর বয়সী রিকশাচালক আশরাফ আলী সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়নের সাহার ভিটার গ্রামের মৃত ফয়জার রহমানের ছেলে। অন্যদিকে ছিনতাই ও হত্যায় অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলাম কুপতলা ইউনিয়নের রামপ্রসাদ গ্রামের বাসিন্দা।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাসুদ রানা।
ওসি জানান, প্রতিদিনের মতোই বৃহস্পতিবার রাতে রিকশা নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন আশরাফ আলী। তিনি কুপতলা এলাকার ৭৫ নম্বর রেলগেটে পৌঁছালে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সাদেকুল ইসলাম তার পথ রোধ করে ছুরি ধরে রিকশা এবং চাবি কেড়ে নিয়ে তাকে চলে যেতে বলেন। আশরাফ আলী এতে রাজি না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে প্রথমে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত সাদেকুল আশরাফ আলীর পেটে ছুরিকাঘাত করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে চিকিৎসার জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি বলেন, ‘এ ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে ওই রাতেই অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলামকে আটক করা হয়। একই সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে রিকশাটিও উদ্ধার করা হয়। পরে আজ (শুক্রবার) দুপুরে সাদেকুলকে একমাত্র আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। মামলায় আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুপুরেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।’
মন্তব্য