শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে আমদানি করা প্রায় ৩৭ কোটি টাকা মূল্যের দুই কনটেইনার বিদেশি মদ জব্দ করার পর র্যাব জানাল যে এর পেছনে রয়েছে একটি পারিবারিক সিন্ডিকেট। বাবা ও দুই ছেলের ওই সিন্ডিকেট ভুয়া গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠানের পণ্যের নামে দুবাই থেকে মদের এই বিশাল চালান দেশে আনার চেষ্টা করে।
ইতোমধ্যে এই ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তাদের মধ্যে সিন্ডিকেট পরিচালনাকারী দুই ছেলের একজন রয়েছেন। তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মুদ্রা।
রোববার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, শনিবার র্যাব-১১ গোপন সূত্রে সংবাদের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চেকপোস্ট বসানো হয়। এ সময় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অভিমুখী দুটি কনটেইনারে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ জব্দ করা হয়। দুই কনটেইনারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৩৬ হাজার ৮১৬ বোতল বিদেশি মদ ছিল। ভ্যাটসহ এর মূল্য প্রায় ৩৭ কোটি টাকা।
আমদানিকারকের নাম-ঠিকানা যাচাই করে দেখা যায়, তারা মূলত ঈশ্বরদী ও কুমিল্লার একটি ভুয়া গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠানের সুতা ও ববিনের ঘোষণা দিয়ে এসব মদ আমদানি করেছিল। মদ জব্দের পর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে প্রথমে নাজমুল মোল্লা ও সাইফুল ইসলাম নামে দুজনকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে সিন্ডিকেটের হোতা আজিজুল ইসলাম, মিজানুর রহমান আশিক ও আবদুল আহাদের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়। আশিক ও আহাদ হলেন দুই ভাই এবং আজিজুল ইসলাম তাদের বাবা।
র্যাব মুখপাত্র জানান, শনিবার রাতে সিন্ডিকেট প্রধান পিতা-পুত্রদের রাজধানীর ওয়ারীর বাসায় অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন দেশের বিপুল পরিমাণ মুদ্রা জব্দ করা হয়। টাকার মূল্যে যা প্রায় এক কোটি। টাকা জব্দ করা হলেও সেখান থেকে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রোববার সকালে রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকা থেকে ছোট ছেলে আবদুল আহাদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
আবদুল আহাদের প্রাথমিক স্বীকারোক্তির উল্লেখ খন্দকার আল মঈন জানান, এই পিতা-পুত্র সিন্ডিকেট মূলত বিদেশ থেকে ইলেকট্রনিক পণ্য আমদানি করে। এ জন্য চট্টগ্রাম বন্দরে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে তাদের সখ্য গড়ে উঠেছিল। পরবর্তীতে তারা দুবাই থেকে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে এই বিশাল মদের চালান আনে এবং এগুলো আবার তাদের সিন্ডিকেটের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের মাধ্যমে বন্দর থেকে খালাস করিয়ে নেয়।
এই মদের চালান মুন্সীগঞ্জে তাদের ওয়্যারহাউসে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পরবর্তীতে সেখান থেকে বিভিন্ন স্বনামধন্য বারে সেগুলো সরবরাহ করার কথা ছিল।
আহাদ ধরা পড়লেও তার পিতা আজিজ ও বড় ভাই আশিককে গ্রেপ্তার করতে পারেনি র্যাব। তারা দুজন শনিবার ভোরে দুবাই চলে যান। আহাদও দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করছিলেন বলে জানায় র্যাব।
এ ঘটনায় আর কারা জড়িত রয়েছে তা জানতে তদন্ত চলবে উল্লেখ করে খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টকে আমরা খুঁজছি। পাশাপাশি এত বড় অবৈধ চালান কেন বন্দরের স্ক্যানিংয়ে ধরা পড়ল না এটাও খতিয়ে দেখবে শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ। তাহলে বন্দরের কারা কারা এর সঙ্গে জড়িত তা বেরিয়ে আসবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে র্যাব মুখপাত্র বলেন, ‘এসব মদ কোন কোন বারে সরবরাহ করার কথা ছিল তা-ও যাচাই করা হবে। আসামি আহাদ যেহেতু বারগুলোর কথা বলেছেন তাই আমরা আগে যাচাই করব তার তথ্য ঠিক আছে কি না। এরপর তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ ঘটনায় একাধিক মামলা হবে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:মুন্সীগঞ্জ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে এক বছরের শিশু হুমাইরা আক্তারের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকালে সদর উপজেলার মদিনা বাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মদিনা বাজারের উত্তর পাশে খানকা শরীফের সামনের সড়কে দুটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে।
এ সময় রাস্তার পাশে এক বছরের শিশু সন্তান হুমাইরাকে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা হাবিবা বেগমের ধাক্কা খান অটোরিকশার সঙ্গে। এতে শিশু হুমাইরা মায়ের কোল থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। শিশুটিকে দ্রুত মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় অটোরিকশা দুটি আটক করা হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া দুই চালককে আটকের চেষ্টা চলছে।
রাজধানীর বনানীতে মাঝ সড়কে চলন্ত অবস্থায় যাত্রীবাহী বাসে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নির্বাপনে কাজ করে।
জানা গেছে, শনিবার বিকেলে জে কে এন্টারপ্রাইজ পরিবহনের একটি বাস বনানী আর্মি স্টেডিয়ামের সামনে একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিলে মোটরসাইকেলের ট্যাঙ্কি বিস্ফোরিত হয়ে বাসটিতে আগুন ধরে যায়।
ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তা খালেদা ইয়াসমিন জানান, বিকেল ৪টা ২ মিনিটে যাত্রীবাহী একটি বাসে আগুন লাগার খবর আসে। পরে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নির্বাপন করে। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা-শেরপুর রুটে চলাচল করা জে কে এন্টারপ্রাইজ পরিবহনের বাসটি বনানী আর্মি স্টেডিয়ামের সামনে একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। পরে মোটরসাইকেলটিকে টেনে-হিঁচড়ে বাসটি অনেক দূর নিয়ে আসে। এতে মোটরসাইকেলের তেলের ট্যাঙ্ক বিস্ফোরিত হয়ে বাসটিতেও আগুন লেগে যায়। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলের চালক গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
মাদারীপুরে ইজিবাইকের সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতে সেটিকে পাশ দিতে গিয়ে যাত্রীবাহী একটি বাস খাড়ে পড়ে যায়। এতে অল্পের জন্যে জীবন রক্ষা পেয়েছে বাসের অন্তত ৬৫ যাত্রীর। তবে এ ঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত ৩০ জন।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুর জেলার ঘটকচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এসে বাস ও আহতদের উদ্ধার করে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, হাওলাদার পরিবহনের একটি বাস প্রায় ৬৫ জন যাত্রী নিয়ে বরিশাল থেকে সাতক্ষীরার উদ্দেশে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে ঘটকচর এলাকায় আসলে একটি ইজিবাইক রাস্তার মাঝে চলে আসে। দুর্ঘটনা এড়াতে ইজিবাইকটিকে পাশ দিতে বাসচালক দ্রুত মোড় নেয়ায় বাসটি রাস্তার পাশের খাদে চলে যায়। তবে খাদটি বেশি গভীর না হওয়ায় প্রাণে রক্ষা পেয়েছে বাসের যাত্রীরা। তবে আঘাত পেয়ে বাসের ভিতরে থাকা যাত্রীদের হাত-পায়ে একাধিক স্থানে কেটে গেছে। এ ঘটনায় ছোট-বড় মিলে প্রায় ৩০ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে মোস্তফাপুর হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয়দের সহযোগিতায় যাত্রীদের উদ্ধার করে।
দুর্ঘটনাকবলিত বাসটির যাত্রী সজীব হোসেন বলেন, ‘আমি অফিশিয়াল কাজে সাতক্ষীরা যাচ্ছিলাম। ঘটকচর স্ট্যান্ডের কিছুটা দূরে আসার সঙ্গে সঙ্গে হঠাৎ একটা ধাক্কা খেয়ে দুমড়ে মুচড়ে গেলাম। পরে দেখি বাসটি খাদে পড়ে গেছে। আমার নাকে কিছুটা আঘাত পেয়েছি। অন্য যাত্রীদেরও বেশ আঘাত লেগেছে।’
তিনি বলেন, ‘ইজিবাইক পাশ দিতে গিয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়কে ইজিবাইক নছিমন বন্ধ করা উচিত।’
এ ব্যাপারে মোস্তফাপুর হাইওয়ে থানার ওসি মোহাম্মদ মারুফ রহমান বলেন, ‘বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে অন্তত ৬৫ জন যাত্রী। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে গিয়ে দুর্ঘটনাকবলিতদের উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ইজিবাইকটি আটক করা যায়নি।’
আরও পড়ুন:ফরিদপুরের মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ১ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বারের সম্পৃক্ততার তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় মধুখালীর ঘটনা পরবর্তী সামগ্রিক বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ডিসি কামরুল আহসান তালুকদার।
সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামান তপন ও ওয়ার্ড মেম্বার অজিত কুমার সরকারকে ধরিয়ে দিতে পারলে বা তাদের ধরতে কোনো প্রকার তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে আর্থিক পুরস্কারের ঘোষণা দেন তিনি।
ডিসি বলেন, ‘চেয়ারম্যান ও মেম্বার এখন পলাতক। এরই মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের শনাক্ত করতে বিভিন্ন জেলায় অভিযান পরিচালনা করেছে। বিমানবন্দর ও সীমান্তে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে, যাতে তারা দেশত্যাগ করতে না পারে।
‘এ বিষয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে ধরিয়ে দিতে যেকোনো প্রকার তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে তাদের পুরস্কৃত করা হবে।’
গত ১৮ এপ্রিল রাতে ডুমাইন ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের পঞ্চপল্লীতে মন্দিরে আগুন লাগার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সন্দেহের জেরে দুই শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আহত হন আরও পাঁচ শ্রমিক।
পিটুনিতে হতাহতের ঘটনায় তিনটি মামলা করা হয়। এরই মধ্যে তিন মামলায় পুলিশ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
আরও পড়ুন:মাদারীপুরের কালকিনিতে প্রবাসীর বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় মামলা করায় ফের হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় ‘হাতবোমার’ আঘাতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ কানাইপুরে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
স্থানীয়রা জানান, গত ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় দক্ষিণ কানাইপুরের প্রয়াত মালেক সরদারের ছেলে দুবাই প্রবাসী রিপন সরদার বাড়িতে আসেন। এ খবর পেয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষ একই এলাকার আনসার হাওলাদারের ছেলে দেলোয়ার হাওলাদার লোকজন নিয়ে রিপনের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় ঘরে থাকা মূল্যবান আসবাবপত্র ভাঙচুর ও লুট করে নিয়ে যায় হামলাকারীরা।
এ ঘটনায় পরবর্তীতে গত ২৩ এপ্রিল রিপন সরদারের স্ত্রী রুনিয়া বেগম বাদী হয়ে কালকিনি থানায় ২২ জনের নামে একটি মামলা করেন।
স্থানীয়দের ভাষ্য, এরই জেরে শুক্রবার সন্ধ্যায় রিপনের চাচাত ভাই ও আলীনগর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান শাহীদ পারভেজের সমর্থক জামাল সরদার স্থানীয় বাজারে যান। মাঝপথে সাবেক চেয়ারম্যান মিলন সরদারের কর্মী মহসিন লোকজন নিয়ে কুপিয়ে তাকে জখম করে বলে অভিযোগ ওঠে।
পরে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় একাধিক হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন অন্তত ১৫ জন।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলাউল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এলাকায় উত্তেজনা থাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রিপন হাওলাদারের আগের ঘটনার মামলা দায়েরকে কেন্দ্র করেই এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন:গাইবান্ধায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন আশরাফ আলী নামের এক রিকশাচালক। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলামকে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার সুন্দরগঞ্জ-কুপতলা সড়কের ৭৫ নম্বর রেলগেট নামক এলাকায় এ ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ড ঘটে। পরে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে সাদেকুলকে কারাগারে পাঠানো হয়।
৫০ বছর বয়সী রিকশাচালক আশরাফ আলী সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়নের সাহার ভিটার গ্রামের মৃত ফয়জার রহমানের ছেলে। অন্যদিকে ছিনতাই ও হত্যায় অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলাম কুপতলা ইউনিয়নের রামপ্রসাদ গ্রামের বাসিন্দা।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাসুদ রানা।
ওসি জানান, প্রতিদিনের মতোই বৃহস্পতিবার রাতে রিকশা নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন আশরাফ আলী। তিনি কুপতলা এলাকার ৭৫ নম্বর রেলগেটে পৌঁছালে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সাদেকুল ইসলাম তার পথ রোধ করে ছুরি ধরে রিকশা এবং চাবি কেড়ে নিয়ে তাকে চলে যেতে বলেন। আশরাফ আলী এতে রাজি না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে প্রথমে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত সাদেকুল আশরাফ আলীর পেটে ছুরিকাঘাত করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে চিকিৎসার জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি বলেন, ‘এ ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে ওই রাতেই অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলামকে আটক করা হয়। একই সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে রিকশাটিও উদ্ধার করা হয়। পরে আজ (শুক্রবার) দুপুরে সাদেকুলকে একমাত্র আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। মামলায় আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুপুরেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।’
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখায় প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগে শাখা ম্যানেজারসহ ৩ কর্মকর্তাকে আটকের পর কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আনোয়ার হোসেন সাগর। এদিন দুপুরে তাদের আদালতে প্রেরণ করে সাঁথিয়া থানা পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের জিআরও এএসআই মাহবুবুর রহমান জানান, বিকেলে সাঁথিয়া থানা থেকে এনে তাদের আদালতে তোলা হয়। এ সময় কেউ তাদের জন্য জামিন আবেদন করেননি। ফলে আদালত তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আটককৃতরা হলেন- অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার ব্যবস্থাপক (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) সুজানগর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা হারুন বিন সালাম, সিনিয়র অফিসার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর এলাকার বাসিন্দা আবু জাফর এবং ক্যাশিয়ার বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সুব্রত চক্রবর্তী।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী বিভাগীয় অফিস থেকে ৫ সদস্যবিশিষ্ট অডিট টিম কাশিনাথপুর শাখায় অডিটে আসে। দিনভর অডিট করে তারা ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আর্থিক অনিয়ম পান। এ বিষয়ে সাঁথিয়া থানায় ওই শাখার ম্যানেজার (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) হারুন বিন সালাম, ক্যাশ অফিসার সুব্রত চক্রবর্তী ও সিনিয়র অফিসার আবু জাফরকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দিলে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে তাদের তিনজনকে আটক করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অডিটে অনিয়ম ধরা পড়লে তাদের আটক করে সাঁথিয়া থানা পুলিশকে খবর দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আজ (শুক্রবার) দুপুরে জিডির ভিত্তিতে আটককৃতদের আদালতে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে দুদক আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য