‘ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগে গত জুনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঁচ মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ৫ জন। এর বাইরে এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ৩ মামলায় ৩১ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
সবচেয়ে বড় সহিংসতা হয়েছে নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজে। ওই প্রতিষ্ঠানের এক ছাত্রের ফেসবুক পোস্টের জেরে গুজব ছড়িয়ে জুতার মালা পরিয়ে অপদস্থ করা হয় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে। গাইবান্ধায় বিক্ষোভ মিছিল থেকে ক্ষমতাসীন দলের সভা মঞ্চে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। এ ছাড়া বাগেরহাটে বিক্ষোভ থামাতে গিয়ে আহত হন অন্তত ১২ পুলিশ সদস্য।
দেশে এসব ঘটনার সপ্তাহ দুয়েক আগে ভারতে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) আলোচিত নেতা নূপুর শর্মা। তার মন্তব্যে ভারতের মুসলমানদের পাশাপাশি গোটা মুসলিম বিশ্বে ক্ষোভ ছড়ায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে নূপুরকে দল থেকে বহিষ্কার করে বিজিপি। ওই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় বাংলাদেশেও। ধর্ম অবমাননার অভিযোগে জুনের মধ্যভাগে বেশ কয়েকটি মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটে।
বিজেপির বহিষ্কৃত নেত্রী নূপুর শর্মার আপত্তিকর মন্তব্যের জেরে উত্তেজনা ছড়ায় বাংলাদেশেও। ছবি: সংগৃহীত
নড়াইলে সহিংসতা, শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার
নূপুর শর্মার সমর্থনে ১৭ জুন ফেসবুকে পোস্ট দেন নড়াইল মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের এক হিন্দু শিক্ষার্থী। এ ঘটনার জেরে পরদিন দিনভর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, সহিংসতা চলে। গুজব ছড়িয়ে দেয়া হয় ওই শিক্ষার্থীর পক্ষ নিয়েছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস।
এরপর পুলিশ পাহারায় স্বপন কুমার বিশ্বাসকে ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে দাঁড় করিয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় একদল ব্যক্তি। শিক্ষক স্বপন কুমার হাত উঁচিয়ে ক্ষমা চাইতে থাকেন। পরে তাকে তুলে নেয়া হয় পুলিশের গাড়িতে।
মোবাইল ফোনে ধারণ করা এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের সামনে শিক্ষকের এমন অপদস্থ হওয়ার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয় সারা দেশে।
শুরুতে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় তাদের সামনে শিক্ষকের গলায় জুতার মালা পরানো হয়নি। তবে নিউজবাংলার অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শওকত কবীরের সামনেই জুতার মালা পরানো হয় অধ্যক্ষের গলায়। এ ঘটনায় প্রথমে ওসি শওকতকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পরে সরিয়ে নেয়া হয় মির্জাপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক শেখ মোরছালিনকে।
নূপুর শর্মার সমর্থনে পোস্ট দেয়া হিন্দু শিক্ষার্থী রাহুল দেব রায়ের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রাহুলের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন মির্জাপুর হাজিবাড়ী দাখিল মাদ্রাসার সহকারী মৌলভী শিক্ষক মো. ফারুক হোসেন।
ধর্ম অবমাননার মামলার প্রায় দেড় সপ্তাহ পর শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় আরেকটি মামলা করে পুলিশ। সেই মামলায় মঙ্গলবার পর্যন্ত পাঁচজন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
সিলেটে গ্রেপ্তার কলেজছাত্র
নূপুর শর্মার সমর্থনে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ায় অভিযোগে গত ১৭ জুন সিলেটে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শ্রাবণ সাঁওতাল রাজ জাফলং চা বাগানের বাসিন্দা ও স্থানীয় একটি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র।
তার বিরুদ্ধে গোয়াইনঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইমরুল কবীর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন। এই মামলায় কারাগারে আছেন রাজ।
ভারতীয় রাজনীতিবিদ নূপুর শর্মাকে সমর্থন করে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ায় গ্রেপ্তার শ্রাবণ সাঁওতাল। ছবি: নিউজবাংলা
গোয়াইনঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ওমর ফারুক মামলাটির তদন্তের দায়িত্বে আছেন। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তার (রাজ) বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত চলছে। রাজের ফেসবুক পোস্টটি কোথা থেকে দেয়া হয়েছে তা যাছাই করে দেখার জন্য আমরা সিআইডির সাইবার অপরাধ বিভাগকে পাঠিয়েছি। সেখান থেকে এখনও রিপোর্ট আসেনি। ওই রিপোর্ট আসার পর অভিযোগপত্র দেয়া হবে।’
বাগেরহাটে গ্রেপ্তার ছাত্রী কারাগারে
বাগেরহাটের চিতলমারীতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার অভিযোগে এক কলেজছাত্রী রনিতা বালাকে ১৯ জুন হেফাজতে নেয় পুলিশ। সেদিন থানায় হামলা চালায় একদল মানুষ। এতে আহত হন অন্তত ১২ পুলিশ সদস্য।
ওই ছাত্রীর বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে মামলা করেন শেরেবাংলা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সুমন মুন্সি। ওই মামলায় রনিতা কারাগারে আছেন।
অন্যদিকে চিতলমারী থানায় হামলার ঘটনায় ৫৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২৫০ জনকে আসামি করে ২১ জুন মামলা করে পুলিশ। এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ২১ জন।
বাগেরহাট জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের প্রধান সমন্বয়কারী পুলিশ পরিদর্শক এস এম আশরাফুল আলম জানান, অভিযুক্ত ছাত্রী জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তার ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়েছিল। পরে তদন্তে পাওয়া যায়, মেয়েটি নিজেই ওই পোস্ট দেন।
কলেজছাত্রীর বিরুদ্ধে করা মামলাটি তদন্ত করছেন চিতলমারী থানার পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মধুসূধন বিশ্বাস। মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ওই ছাত্রীর বিরুদ্ধে ১৫৩/২৯৮ ধারায় মামলা হয়েছে। তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর তার সহপাঠী, শিক্ষক ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি। জানতে পেরেছি, বুঝে হোক আর না বুঝে হোক তিনি ধর্ম নিয়ে প্রায়ই নানা কথা বলতেন। এই মাসেই আমি মামলার চার্জশিট দেয়ার পরিকল্পনা করছি।’
খুলনা দুই মামলায় গ্রেপ্তার দুই যুবক
খুলনা ডুমুরিয়া উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামের কিংকর কুণ্ডুর বিরুদ্ধে ১৪ জুন তার ফেসবুক আইডি থেকে মহানবী (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ ওঠে।
এর দুই দিন পর স্থানীয় কয়েক যুবক তার বাড়িতে হামলা করে ও খড়ের গাদায় আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও পুলিশ গিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
ওই রাতেই কিংকর কুণ্ডুকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। পরে তার বিরুদ্ধে ডুমুরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর হোসেন মামলা করেন।
ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কনি মিয়া বলেন, ‘কিংকর কুণ্ডুর বিরুদ্ধে যে এজাহার হয়েছে, সেখানে কয়েকটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে। সেখানে কিংকরের বাড়িতে যারা হামলা চালিয়েছে তাদের অজ্ঞাত আসামি ধরে সব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। হামলার জন্যও কয়েকটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে। তবে এখনও কেউ গ্রেপ্তার হননি।
‘কিংকর কুণ্ডু কারাগারে আছেন। মামলাটির তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দেয়া হবে।’
খুলনায় আরেক ঘটনায় ইসলামি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারীর একটি ওয়াজের পোস্টে বিতর্কিত কমেন্ট করার অভিযোগে ২৮ জুন কয়রা উপজেলায় উৎপল মণ্ডলকে হেফাজতে নেয় পুলিশ।
কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ বি এম এস দোহা বলেন, ‘ওই যুবকের ফেসবুক কমেন্টকে কেন্দ্র করে কিছু মানুষ তাদের ভাগবা এলাকার বাড়িতে হামলা করতে যায়। তবে পুলিশ গিয়ে সেখান থেকে পাঁচজনকে আটক করে নিয়ে আসে। হেফাজতে নেয়া হয় উৎপলকেও।’
‘তার বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও জনরোষ তৈরির অভিযোগে কয়রা থানার উপপরিদর্শক মো. ইব্রাহিম মামলা করেছেন। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
গাইবান্ধায় সহিংসতার মামলায় গ্রেপ্তার
নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদে গাইবান্ধায় ১০ জুন জুমার নামাজের পর বিক্ষোভে নামে কয়েকটি ইসলামি দল। জেলা ইমাম-ওলামা পরিষদ, ইসলামি শাসনতন্ত্র আন্দোলনসহ কয়েকটি দলের ব্যানারে শত শত নেতা-কর্মী এতে অংশ নেন।
মিছিলটি শহরের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে বের হয়ে কাচারিবাজার মসজিদের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সমাবেশ করেন তারা।
ওই সমাবেশস্থলের পাশে শহীদ মিনার চত্বরে পৌর আওয়ামী লীগের পূর্বনির্ধারিত সম্মেলন চলছিল। মিছিলকারীরা সম্মেলনস্থলের মাইক বন্ধ করতে বলেন। একপর্যায়ে তারা মাইক, চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর শুরু করেন ও ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলেন।
এ ঘটনায় ১২ জুন মামলা করেন পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াজেদ হাসান শাওন। মামলায় ৮ জনের নাম উল্লেখসহ দেড় শতাধিক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার পরপরই এজাহারনামীয় চার আসামিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘মামলাটির তদন্ত চলছে। তাছাড়া মামলার পর অভিযান চালিয়ে এজাহারনামীয় চারজনসহ মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছেন। অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের শনাক্তসহ বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’
যশোরে যুবককে পিটুনি
নূপুর শর্মার সমর্থনে ফেসবুকে পোস্ট শেয়ারের অভিযোগ ওঠে যশোরের চুড়িপট্টি এলাকার একটি জুয়েলারি দোকানের কর্মচারী অনুপ সাহার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ১৩ জুন বিকেলে জেলা পোস্ট অফিসসংলগ্ন মসজিদের সামনে তাকে পিটুনি দেয় স্থানীয়রা। পরে তাকে পুলিশে দেয় তারা।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মনিরুজ্জামান জানান, বিক্ষুব্ধ জনতার কাছ থেকে ওই যুবককে পুলিশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে তার ফেসবুকে আইডি যাচাই করে স্ট্যাস্টাস কিংবা শেয়ারের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। এ জন্য তাকে ৫৪ ধারায় আদালতে তোলা হয়। সেদিনই তিনি জামিনে ছাড়া পান।
আরও পড়ুন:বাগেরহাটে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী এক কিশোরিকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রতিবেশী এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জেলার শরণখোলায় বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ফয়জুল ইসলাম ওরফে মিজানকে গ্রেপ্তার করে।
ওই কিশোরীকে শুক্রবার দুপুরে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শরণখোলা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুব্রত কুমার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শরণখোলা উপজেলার একটি গ্রামে ওই কিশোরীর বাবা গত ২৩ সেপ্টেম্বর সুন্দরবনে মাছ ধরতে যায়। এ সময় তার মা তাকে পাশের ফুফুর বাড়িতে রেখে ছেলেকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য খুলনায় যান।
এ সুযোগে গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে প্রতিবেশী ফয়জুল ইসলাম মিজান ওই কিশোরিকে ধর্ষণ করে। খুলনা থেকে তার মা বাড়িতে আসলে ওই কিশোরী ধর্ষণের কথা খুলে বলে।
পুলিশ পরিদর্শক বলেন, ‘ঘটনা শুনে কিশোরীর মা শরনখোলা থানায় মামলা করলে আমাদের অভিযানে গভীর রাতে অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হয়। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে ইজিবাইকে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় দুইজন নিহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ইজিবাইকে থাকা আরও চারজন।
ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে মুকসুদপুর উপজেলার দাশেরহাট এলাকার বি কে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো দুজন হলেন কাশিয়ানী উপজেলার আকমাল শেখের স্ত্রী রানু বেগম ও একই ইউনিয়নের হায়াত শেখ।
দুর্ঘটনায় আহত হন ইজিবাইকের চালক ফুল মিয়া, যাত্রী লামিয়া, জাবেদা ও খুকি বেগম।
ভাঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের এসআই মো. আবু নোমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা দোলা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস খুলনার দিকে যাচ্ছিল। বাসটি ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের মুকসুদপুর উপজেলার দাশেরহাট এলাকার বি কে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছালে অন্য একটি বাসকে ওভারটেক করতে গিয়ে কাশিয়ানী থেকে ছেড়ে আসা মুকসুদপুরগামী একটি ইজিবাইকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হন।’
তিনি জানান, ওই সময় বাসটিকে এক কিলোমিটার ধাওয়া করে আগুন ধরিয়ে দেন স্থানীয়রা। এ কারণে মহাসড়কের এক কিলোমিটারজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ১৫ মিনিটের চেষ্টায় বাসের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহত যাত্রীদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা আবু নোমান।
আরও পড়ুন:একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ২০১২ সালের ২ মে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আসামি আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে সহায়তাকারী সাবেক জামায়াত নেতা ও তৎকালীন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফকে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব। এরপর কারাগার থেকে বের হয়েই সবার চোখের সামনে গড়ে তোলেন বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) সাম্রাজ্য। সেই এনজিও দেশ-বিদেশ থেকে আনছে বিপুল অর্থ।
বাচ্চু রাজাকারকে সহায়তাকারী কীভাবে দেশের সব গোয়েন্দা সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে এনজিও চালাচ্ছেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির।
ঘটনার সময় ২০১২ সালের ৩০ মার্চ। ওই দিন একটি মাইক্রোবাস করে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারকে প্রথমে আগারগাঁওয়ের নিজের বাসায় লুকিয়ে রাখার পর ওই বছরের ২ এপ্রিল হিলি সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেন আবু ইউসুফ। এরপর কী করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বাচ্চু রাজাকার পালিয়ে গেলেন, তা নিয়ে দেশে শুরু হয় হইচই।
আবু ইউসুফ র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীটি জানায়, গ্রেপ্তার আবু ইউসুফ পিসল্যান্ড কোম্পানির একটি মাইক্রোবাসে করেই বাচ্চু রাজাকারকে পালাতে সহযোগিতা করেছিলেন।
ওই গাড়িতে ছিলেন বাচ্চু রাজাকারের ছেলে মুহাম্মদ মুশফিক বিল্লাহ জিহাদ, আবু ইউসুফ ও বাচ্চু রাজাকার। এরপর আদালতে নিজের জবানবন্দিতেও তার অপরাধ স্বীকার করেন আবু ইউসুফ। পরে এই অপরাধের দায়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হন তিনি।
এরপর কেটে গেছে প্রায় ১১ বছর। এখন কী করছেন সেই আবু ইউসুফ, কোথায় আছেন তিনি, এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজ করে জানা গেছে, তিনি এখন গড়ে তুলেছেন এনজিও সাম্রাজ্য। রাজধানীর শ্যামলী এক নম্বর রোডের ওয়ান বাই বি ঠিকানায় অ্যাসোসিয়শেন ফর ম্যাস এডভাসমেন্ট নেটওয়ার্ক (আমান) নামের একটি এনজিও পরিচালনা করেন তিনি। কাজ করছেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আমান ছাড়াও চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার, আল ইমদাদ ফাউন্ডেশনের নামে কয়েকটি সহযোগী সংস্থাও চালাচ্ছেন এই আবু ইউসুফ।
এসব বিষয়ে কথা হয় আবু ইউসুফের সঙ্গে। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমার এই প্রতিষ্ঠান রেজিস্ট্রেশন হয়েছে ১৯৯৫ সালে। ২০০২ সাল পর্যন্ত এটা লোকাল ফান্ডে চলে। এরপর এটা বন্ধ হয়ে যায়। তারপর ২০১২ সালে আমি গ্রেপ্তার হয়ে ২ মাস ২২ দিন কারাকারে ছিলাম।
‘পরে ২০১৫ সালে এটা (এনজিও) আবার শুরু করি। এটা এখন দেশি-বিদেশি ফান্ডে চলে। আমেরিকা, ইংল্যান্ড আর সাউথ আফ্রিকা থেকে টাকা আসে।’
বাচ্চু রাজাকারের পালিয়ে যাওয়ায় সহযোগিতার মামলার এখন কী অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওই মামলা হাইকোর্ট স্টে দিয়েছে। সময়টা সঠিক মনে নেই, তবে সম্ভবত ২০১৫-২০১৬ সালে হাইকোর্ট এটা স্টে করে।’
‘গ্রেপ্তারের সময় আপনি জবানবন্দিতে স্বীকার করেছিলেন বাচ্চু রাজাকারকে আপনি পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন।’
উল্লিখিত তথ্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, স্বীকার করেছিলাম।’
‘সে সেময় জামায়াতে ইসলামী আপনার পক্ষে স্টেটমেন্ট দিয়েছিল?’ বলা হলে তিনি বলেন, ‘মনে হয় দিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি এনজিও ব্যুরোর সকল নিয়ম কানুন মেনেই ফান্ড রিসিভ করি এবং ব্যয় করি। আমি স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বনায়ন, খাদ্যসহ আরও কয়েকটি বিষয় নিয়ে কাজ করি। আমার কাজে কোনো সমস্যা নেই, থাকলে তো সরকার এটা বন্ধ করে দিত।’
এনজিও পরিচালনা নিয়ে বিস্ময়
আবু ইউসুফের এনজিও পরিচালনা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই রকম একজন অপরাধী কীভাবে হাইকোর্ট থেকে স্টে অর্ডার নিয়ে দেশের সকল গোয়েন্দা সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে এনজিও পরিচালনা করছে, সেটা অবশ্যই সরকারকে খতিয়ে দেখতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা নিয়ে একটা তদন্ত হওয়া উচিত। তদন্ত হলে জানা যাবে কীভাবে সে এত বড় একটা অপরাধ করেও বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং এনজিও ব্যবসা করছে। আমাদের আইনেই আছে, ফৌজদারি দণ্ডবিধিতেই আছে ক্রাইমকে যে সহযোগিতা করে, ক্রিমিনালকে যে সহযোগিতা করে, সেও সমানভাবে অপরাধী। আবু ইউসুফ বাচ্চু রাজাকারকে পালাতে সাহায্য করেছে। তাই সেও অপরাধী।’
শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘যেহেতু এটা যুদ্ধাপরাধের মামলা, তাই এখন ট্রাইব্যুনালকে সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে হাইকোর্টে এই স্টে কনটেস্ট করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টে আপিল করলে এটা উঠে যাবে। তখন তাকে গ্রেপ্তার করতে কোনো বাধা থাকবে না।’
র্যাবের ভাষ্য
এ বিষয়ে র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আবু ইউসুফকে সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে র্যাব গ্রেপ্তার করেছিল। গ্রেপ্তারের পর তাকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে তিনি সম্ভবত এনজিও ব্যুরোর অনুমতিতেই আবার এনজিওর কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
‘এই এনজিও পরিচালনার মাধ্যমে তার কোন অপরাধের তথ্য যদি গোয়েন্দা সংস্থা কিংবা এনজিও ব্যুরো পায়, ওই সকল তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরও পড়ুন:শেরপুরে কঙ্কাল চোর চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শেরপুর জেলা পুলিশ সুপার মোনালিসা বেগম বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তার ছয়জন হলেন- মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের রাসেল হাওলাদার, নরসিংদীর রায়পুরের সোহেল রানা, শেরপুর জেলার সদর উপজেলার আবদুর রহিম, একইজেলার নকলা উপজেলার সোহেল, নালিতাবাড়ি উপজেলার গোলাম রব্বানী ও বিল্লাল হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, শেরপুর জেলায় দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন স্থানে কবরস্থান থেকে কঙ্কাল চুরির ঘটনা ঘটে আসছিল। ফলে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছিল।
চলতি মাসেই দুটি পৃথক কবরস্থান থেকে কঙ্কাল চুরির ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে শেরপুর সদর ও নকলা থানায় দুটি মামলা হয়। মামলার পর শেরপুর জেলা পুলিশ কঙ্কাল চোর চক্রকে ধরতে মাঠে নামে।
সদর থানার ওসি বছির আহমেদ বাদল ও এসআই নাঈম মিয়াসহ পুলিশের একটি স্পেশাল টিম বৃহস্পতিবার শেরপুর, নকলা ও ঢাকায় অভিযান চালিয়ে কঙ্কাল চুরির মূলহোতাসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে। চক্রটি কঙ্কাল চুরি করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করত বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।
সাংবাদিকদের পুলিশ সুপার বলেন, ‘কঙ্কাল চোরেরা বিভিন্ন সময় জেলার বিভিন্ন কবরস্থানে কঙ্কাল চুরি করে আসছিল। এরা রাত ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত এক বছরের পুরনো কবর, বজ্রপাত ও বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে মৃত কবর থেকে কঙ্কাল চুরি করে আসছিল।
‘পরে কঙ্কালগুলো ব্যাগে ভরে বাসে করে ঢাকায় নিয়ে ৪ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি করতো। এসব কঙ্কাল সিদ্ধ করে কেমিক্যাল মিশিয়ে প্রক্রিয়া করে ইন্টার্নি ও ডাক্তারদের কাছে বিক্রি করা হয়। গ্রেপ্তার চোরদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।‘
চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় এক পুলিশ পরিদর্শক নিহত ও ২১ জন আহত হয়েছেন।
সীতাকুণ্ডের সুলতানা মন্দির এবং মিরসরাইয়ের ছোট কমলদহ এলাকায় বৃহস্পতিবার পৃথক এ দুটি দুর্ঘটনা ঘটে।
সীতাকুণ্ড কুমিরা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শাহাদাত হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, চুয়াডাঙ্গা জেলায় কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক এস এম জাহিদ ইকবাল পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মাইক্রোবাসে ঢাকা থেকে বান্দরবান যাওয়ার পথে সকাল ৮টার দিকে ছোট কমলদহ এলাকায় তার মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের মাঝখানে উল্টে যায়। এ সময় ৯ জন আহত হন।
তিনি বলেন, ‘হাইওয়ে পুলিশ সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করালে চিকিৎসক জাহিদকে মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (চমেক) মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
অপর দুর্ঘটনা সম্পর্কে বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার এএসআই গোলাম রাব্বানী জানান, ভোর সাড়ে ৪টার দিকে কক্সবাজারগামী বাস সীতাকুণ্ডের সুলতানা মন্দির এলাকায় একটি লরিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে বাসের ১২ যাত্রী গুরুতর আহত হন। তাদের উদ্ধার করে সীতাকুণ্ড স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, ‘দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দুটি জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’
মুন্সিগঞ্জে মিরকাদিম পৌরসভায় দুই মাস বয়সী এক শিশুকে ঘর থেকে চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পৌরসভার গোপালনগর এলাকায় বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে শিশু চুরির এ ঘটনা ঘটে।
নবজাতক মো. আযান স্থানীয় শরীফের ছেলে। এ বিষয়ে চুরি হওয়া শিশুর মামা মোক্তার সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সকালে মা শ্রাবণী বেগম তার দুই মাসের ছেলে আযানকে বসতঘরে খাটে ঘুমিয়ে রেখে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে যান। এ সময় ঘরের ভেতরে অন্য কেউ ছিলেন না, বাড়ির অন্যরাও নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় শিশুকে চুরির ঘটনাটি ঘটে। শ্রাবনী বেগম ঘরে এসে দেখে আযান আর ঘরে নেই। পরে খোঁজাখুঁজি করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
শিশুর মামা মোক্তার বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে পারিবারিকভাবে কারো কোনো বিরোধ নেই। তবে কেউ আমার ভাগ্নেকে চুরি করে থাকতে পারে। আমরা আমাদের ভাগনেকে ফিরে চাই।’
মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে শিশুকে খুঁজে বের করা হবে যত দ্রুত সম্ভব।
আরও পড়ুন:কুমিল্লায় প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত মিলাদ মাহফিলে আওয়ামী লীগের একটি পক্ষের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী আবদুল মান্নানের বাড়িঘরে ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। এ ঘটনায় অন্তত পাঁচজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে লাকসাম উপজেলার গাজীমুড়া কামিল মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।
ওই ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রকাশিত ওই ফুটেজে দেখা যায়, হামলা হওয়া বাড়ির সামনে ইটপাটকেল এবং বাড়ির ভেতরে ঘরের মেঝেতে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ।
ঘটনার বর্ণনায় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী আবদুল মান্নান বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে আমি সামাজিকভাবে দোয়ার আয়োজন করি। বিকেল ৪টায় আমাদের মূল কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা ছিল। এর আগে মানুষ আসা শুরু করে।
‘দুপুর আড়াইটার দিকে খালি গায়ে ও মুখোশ পরা কিছু লোক রামদা, চাইনিজ কুড়াল নিয়ে আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। হামলায় মনির নামে এক ফল বিক্রেতাসহ পাঁচজন গুরুতর আহত হয়েছেন। নিরীহ মনিরকে হয়তো বাঁচানো যাবে না।’
হামলাকারীরা মোটরসাইকেল ও পিকআপে করে আসে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা সবাই আওয়ামী লীগের একটি অংশের লোকজন।‘
এ বিষয়ে জানতে লাকসাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইউনুস ভূঁইয়ার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মহব্বত আলীও ফোন ধরেননি।
লাকসাম থানার ওসি মাহফুজ আলম বলেন, ‘একটি পক্ষ মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় কিছু বাজে কথা বলায় অপর পক্ষ উত্তেজিত হয়ে পড়ে। দুটি গ্রামের মধ্যে বিরোধের জেরে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জেনেছি। পুলিশ ঘটনাস্থলে আছে। আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য