× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Teacher Tinku released from A League in Narail incident
google_news print-icon

অধ্যক্ষ লাঞ্ছনার ঘটনায় শিক্ষক টিংকুকে আ.লীগ থেকে অব্যাহতি

অধ্যক্ষ-লাঞ্ছনার-ঘটনায়-শিক্ষক-টিংকুকে-আলীগ-থেকে-অব্যাহতি
শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসকে লাঞ্ছনার ঘটনায় দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ। গ্রাফিক্স মামুন হোসাইন/নিউজবাংলা
টিংকুকে দেয়া নড়াইল সদর আওয়ামী লীগের নোটিশে বলা হয়, ‘বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়, মিডিয়ার খবরে আপনাকে জড়িত করে সংবাদ পরিবেশিত হচ্ছে। সে কারণে আপনি এর দায়িত্ব এড়াইতে পারেন না এবং আমরা মনে করি আপনি সভাপতি হিসেবে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। উপরোক্ত কারণে আপনাকে উক্ত বিষয়ে এই পত্র পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে নিম্ন স্বাক্ষরকারীদ্বয়ের নিকট লিখিত কারণ দর্শাইতে বলা গেল এবং অদ্য হইতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া গেল।’

নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জুতার মালা পরানোর ঘটনায় ওই প্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষককে স্থানীয় আওয়ামী লীগের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার নড়াইল সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অচীন কুমার চক্রবর্তী ও সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর নোটিশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

দলের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়া আক্তার হোসেন টিংকু ওই কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক। তিনি নড়াইল সদরের বিছালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।

কী আছে নোটিশে

টিংকুকে দেয়া নড়াইল সদর আওয়ামী লীগের নোটিশে বলা হয়, ‘এতদ্বারা আপনাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা যাচ্ছে যে, গত ১৮ জুন/২২ তারিখে মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের এক ছাত্রের মোবাইলে স্ট্যাটাস নিয়ে এক সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। উল্লেখ্য আপনি উক্ত কলেজের একজন শিক্ষক এবং ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় আপনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরিশেষে দেখা যায়, আপনার উপস্থিতিতে উক্ত কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষককে জুতার মালা পরিয়ে বাহির করে আনা হয়, যাহা নিন্দনীয়, শিক্ষকসমাজকে হেয়প্রতিপন্ন করার শামিল।’

এতে আরও বলা হয়, ‘বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়, মিডিয়ার খবরে আপনাকে জড়িত করে সংবাদ পরিবেশিত হচ্ছে। সে কারণে আপনি এর দায়িত্ব এড়াইতে পারেন না এবং আমরা মনে করি আপনি সভাপতি হিসেবে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

‘উপরোক্ত কারণে আপনাকে উক্ত বিষয়ে এই পত্র পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে নিম্ন স্বাক্ষরকারীদ্বয়ের নিকট লিখিত কারণ দর্শাইতে বলা গেল এবং অদ্য হইতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া গেল। ইউনিয়নের সহসভাপতি মশিয়ার রহমানকে দায়িত্ব দেয়া গেল।’

অধ্যক্ষ লাঞ্ছনার ঘটনায় শিক্ষক টিংকুকে আ.লীগ থেকে অব্যাহতি
নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক টিংকুকে দেয়া নোটিশ। ছবি: সংগৃহীত

ফেসবুকে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মার সমর্থনে কলেজের এক হিন্দু শিক্ষার্থীর পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে গত ১৮ জুন দিনভর নড়াইল সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, সহিংসতা চলে। গুজব ছড়িয়ে দেয়া হয় ওই শিক্ষার্থীর পক্ষ নিয়েছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস।

এরপর পুলিশ পাহারায় বিকেল ৪টার দিকে স্বপন কুমার বিশ্বাসকে ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে দাঁড় করিয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় একদল ব্যক্তি। শিক্ষক স্বপন কুমার হাত উঁচিয়ে ক্ষমা চাইতে থাকেন। পরে তাকে তুলে নেয়া হয় পুলিশের গাড়িতে।

মোবাইল ফোনে ধারণ করা এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে তীব্র ক্ষোভ।

ঘটনা তদন্তে কমিটি করেছে জেলা প্রশাসন। এই কমিটিতে নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুবায়ের হোসেনের নেতৃত্বে আছেন নড়াইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শওকত কবির ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম ছায়েদুর রহমান।

আরও পড়ুন: শিক্ষককে জুতার মালা: ঘুম ভাঙল প্রশাসনের, হারাচ্ছেন না পদ

কী বেরিয়ে এসেছে নিউজবাংলার অনুসন্ধানে

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে হেনস্তার পেছনে কলেজে অভ্যন্তরীণ বিরোধের বিষয়গুলোও অনুসন্ধান করছে এই তদন্ত কমিটি। কমিটির সদস্য নড়াইল জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম ছায়েদুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওই দিনের ঘটনার সঙ্গে শিক্ষকদের কেউ জড়িত কি না আমরা খোঁজার চেষ্টা করছি। ঘটনার ধারাবাহিকতায় বিষয়টি আমাদের এ রকম মনে হচ্ছে।

‘এত শিক্ষক থাকতে যখন ঘটনাটি অল্পের মধ্যে ছিল, তখন বিষয়টি সবাই মিলে চেষ্টা করলে সমাধান করা যেত। ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ বিষয়টি জটিল করার দিকে নিয়ে এটা করেছি কি না, সে বিষয়টি আমাদের অনুসন্ধানের মধ্যে আছে। আমি বিষয়টি এখনও পরিষ্কার হতে পারিনি।’

তিনি বলেন, ‘তদন্তে এমন কিছু এখনও প্রমাণ করতে পারিনি। তবে যারা আমাদের সাক্ষাৎ দিয়েছেন, তারা বলছেন অভ্যন্তরীণ কোনো ঝামেলা থাকতে পারে।’

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, ‘কলেজে বেশ কয়েক বছর ধরে অধ্যক্ষের পদ ফাঁকা আছে। স্বপন কুমারের আগে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন আক্তার হোসেন টিংকু নামের আরেক শিক্ষক। পরে তাকে সরিয়ে স্বপন কুমার বিশ্বাসকে দায়িত্ব দেয়া হয়।

‘আমরা শুনেছি, এদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোনো বিরোধ থাকতে পারে। তবে স্পষ্ট করে কেউ কিছু বলেনি। হয়তো তাদের অন্তরে বিরোধিতা ছিল। প্রকাশ্যে কিছু ছিল না।’

আরও পড়ুন: পুলিশের সামনে শিক্ষকের গলায় জুতার মালা কীভাবে?

আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে স্বপন কুমার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিতে বাধ্য হন গত বছরের ২৭ এপ্রিল। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আক্তার হোসেন জুনিয়র ছিলেন, তার ওপরে ছিলেন স্বপন কুমার বিশ্বাস। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি নির্দেশনা আছে, অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে অন্যজন দায়িত্ব পালন করবেন। সে কারণে তাকে (আক্তার) সরিয়ে নতুন একজনকে অধ্যক্ষ করা হয়েছিল।’

আইনটি সম্পর্কে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) বেসরকারি কলেজ শাখার উপপরিচালক (কলেজ-২) মো. এনামুল হক হাওলাদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২০১১ সালের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক পরিপত্রে বলা হয়, বেসরকারি কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতা অনুসরণ করতে হবে।’

অধ্যক্ষ লাঞ্ছনার ঘটনায় শিক্ষক টিংকুকে আ.লীগ থেকে অব্যাহতি
শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসকে লাঞ্ছনার ঘটনায় তৈরি হয়েছে ক্ষোভ। গ্রাফিক্স মামুন হোসাইন/নিউজবাংলা

আক্তার হোসেনের পরিবর্তে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিতে অনীহা ছিল স্বপন কুমারের। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট অচীন চক্রবর্তী। তবে আইনি বাধ্যবাধকতার কারণেই পদটি গ্রহণ করতে হয় স্বপন কুমারকে।

অচীন চক্রবর্তী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আক্তার হোসেনের আগে কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন রওশান আলী। তিনি দুর্নীতির দায়ে অব্যাহতি পেয়েছিলেন। তখন স্থানীয় সংসদ সদস্য (নড়াইল-১ আসনের এমপি কবিরুল হক) কলেজের সভাপতি ছিলেন, তিনি আক্তার হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেন। আক্তার কয়েক বছর দায়িত্বে ছিলেন।

‘পরে কলেজের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা সেলিম। তিনি পর্যালোচনা করে দেখেন, নীতিমালায় আছে অধ্যক্ষ না থাকলে টপ মোস্ট সিনিয়র শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পাবেন। এরপর তিনি নীতিমালা অনুসারে স্বপনকে দায়িত্ব নিতে বলেন।

‘তিনি (স্বপন কুমার) রাজি ছিলেন না। তবে নীতিমালায় আছে, উপযুক্ত কারণ ছাড়া টপ মোস্ট সিনিয়র দায়িত্ব না নিতে চাইলে তার শাস্তি হবে। তাই তিনি দায়িত্ব নিতে বাধ্য হন।’

অধ্যক্ষ লাঞ্ছনার ঘটনায় শিক্ষক টিংকুকে আ.লীগ থেকে অব্যাহতি
স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আক্তার হোসেন টিংকু। ছবি: সংগৃহীত

নীতিমালার এই দিকটি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) বেসরকারি কলেজ শাখার উপপরিচালক (কলেজ-২) মো. এনামুল হক হাওলাদারও নিশ্চিত করেছেন।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কেউ দায়িত্ব গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করলে তা অসদাচরণ হিসেবে গণ্য হবে। এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ (পরিচালনা পর্ষদ) তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারে। ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হলে ভুক্তভোগী শিক্ষক মাউশিতে অভিযোগ করতে পারেন। এরপর মাউশি থেকে তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পরিচালনা পর্ষদকে নির্দেশ দেয়া হয়।’

মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট অচীন চক্রবর্তীর দাবি, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পরিবর্তন নিয়ে স্বপন কুমারের সঙ্গে আক্তার হোসেনের কোনো দ্বন্দ্ব নেই। তবে কলেজে শিক্ষকদের মধ্যে আগে থেকে দ্বন্দ্ব আছে। কলেজে বিভিন্ন জটিলতার কারণে স্বপন কুমার এরই মধ্যে তিনবার দায়িত্ব ছেড়ে দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তবে আইনি বাধ্যবাধকতায় তিনি পদটি ছাড়তে পারেননি।

অচীন চক্রবর্তী বলেন, ‘স্বপন বাবু খুব ভালো মানুষ। সে কারও সাত-পাঁচে জড়ায় না, কারও সঙ্গে দ্বন্দ্বও বাধায় না। সে আগেও তিনবার আমাকে বলেছে, এই ঝামেলার জায়গায় থাকতে চায় না। বলেছে তার শরীর ভালো নেই।’

ঘটনার দিন প্রভাবশালী শিক্ষকরা ছিলেন নিশ্চুপ

মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র রাহুল দেব রায় গত ১৭ জুন রাতে ফেসবুকে নূপুরকে প্রশংসা করে একটি পোস্ট দেন। পরদিন রাহুলের বিষয়ে অভিযোগ নিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে যান একদল শিক্ষার্থী। কলেজের চারপাশ ঘিরে জড়ো হয় হাজারো বিক্ষুব্ধ মানুষ।

এমন পরিস্থিতিতে পরামর্শের জন্য স্বপন কুমার কলেজের কয়েক শিক্ষককে ডেকে নিলেও তারা নিশ্চুপ ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। একপর্যায়ে এলাকায় গুজব ছড়িয়ে পড়ে, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফেসবুকে পোস্ট দেয়া ছাত্রের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

আরও পড়ুন: অধ্যক্ষের গলায় জুতার মালা ওসির সামনেই

এ বিষয়ে স্বপন কুমার বিশ্বাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকালে কিছু ছাত্র আমাকে ঘটনাটি জানালে আমি তিনজন শিক্ষককে ডেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করি। তাদের মধ্যে ছিলেন কলেজের পরিচালনা পরিষদের সদস্য ও অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক শেখ আকিদুল ইসলাম, পরিচালনা পরিষদের আরেক সদস্য ও কৃষি শিক্ষা বিভাগের শিক্ষক কাজী তাজমুল ইসলাম। বাকি আরেক জন হলেন স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আক্তার হোসেন টিংকু।’

অধ্যক্ষ লাঞ্ছনার ঘটনায় শিক্ষক টিংকুকে আ.লীগ থেকে অব্যাহতি
মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জুতার মালা পরানোর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ছবি: সংগৃহীত

স্বপন কুমার বলেন, ‘কলেজের যেকোনো অঘটন ঘটলে আমি সব থেকে আগে এই তিন শিক্ষককে জানাই। প্রতিবারের মতো সেদিনও একইভাবে তাদের জানালাম।

‘স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেয়ার বিষয় নিয়ে আমি তাদের সঙ্গে আলোচনা করলাম। তবে তারা নীরব ছিলেন। কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এরই মধ্যে কলেজে গুজব ছড়িয়ে পড়ে আমি ওই ছাত্রকে সাপোর্ট করছি। তখন কিছু ছাত্র কলেজে উত্তেজনা সৃষ্টি করে।’

কলেজের শিক্ষকদের অভ্যন্তরীণ বিরোধ পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করতে সাহায্য করেছে বলে মনে করছেন পরিচালনা পরিষদের সভাপতিও।

আরও পড়ুন: শিক্ষককে জুতার মালা: ছাত্রের বিরুদ্ধে এজাহারেরলেখকপুলিশ

তিনি বলেন, ‘যেকোনো ক্লাব, স্কুল, কলেজ, বাজার, রাজনীতিক যা বলেন সবখানে পক্ষ-বিপক্ষ আছে। সেই রকম একটি বিষয় আমাদের কলেজেও আছে। কলেজের কোনো বিষয় নিয়ে স্বপন বাবুর সঙ্গে আক্তার হোসেনের কোনো দ্বন্দ্ব নেই। তবে আক্তার হোসেনের হয়তো উদ্দেশ্য ছিল স্বপন বাবু সরে গেলে সে প্রিন্সিপাল হতে পারবে। এটা হয়তো আশা।

‘তবে কলেজের ১৮ জুনের ঘটনাটি এলাকার জামায়াত-বিএনপির লোকজনই ঘটিয়েছে। তারা চারপাশের পাঁচ থেকে সাতটি গ্রাম থেকে নছিমন ভরে ভরে লোক এনেছে। আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, জামায়াত-বিএনপিরাই এসব করেছে। তারা হ্যান্ড মাইক নিয়ে এসে জামায়াত স্টাইলে এসব করেছে।’

কলেজের ভেতর থেকেই বাইরে গুজব ছড়ানো হয়ে থাকতে পারে বলেও সন্দেহ করছেন অচীন চক্রবর্তী।

কলেজের কোনো শিক্ষক জড়িত থাকতে পারেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘থাকতে পারে মে বি। এটা ইন্টারনালি ইনফর্ম করে দিছে। এখন সারা দেশে জামায়াত-বিএনপি খুবই সোচ্চার। টেলিফোন পেলেই চলে আসে।’

অচীন চক্রবর্তীর দাবি, স্বপন কুমারের সঙ্গে কলেজের কোনো শিক্ষকের দ্বন্দ্ব নেই। তবে শিক্ষক আক্তার হোসেনের সঙ্গে শেখ আকিদুল ইসলাম নামের আরেক শিক্ষকের দ্বন্দ্ব আছে। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে এই শেখ আকিদুলকেও পরামর্শের জন্য ডেকেছিলেন স্বপন কুমার।

আরও পড়ুন:
শিক্ষক নির্যাতন বন্ধ না হলে আন্দোলনের ঘোষণা
লাঞ্ছিত স্বপন কুমার অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেন বাধ্য হয়ে
শিক্ষক হত্যা: জিতুকে ১০ দিনের রিমান্ডে চায় পুলিশ
শিক্ষক হত্যা: আশুলিয়ার সেই কলেজের গভর্নিং বডি স্থগিত
শিক্ষক হত্যা-লাঞ্ছনায় প্রতিবাদ চবি শিক্ষকদের

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Another 120 people from Libya have been brought back home

লিবিয়া থেকে আরও ১২৩ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে

লিবিয়া থেকে আরও ১২৩ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে

লিবিয়া থেকে স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করা আরও ১২৩ অনিবন্ধিত বাংলাদেশি নাগরিককে গতকাল বৃহস্পতিবার দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসব বাংলাদেশির সবাই বুরাক এয়ারের একটি বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইটে (ইউজেড ০২২২) সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান।

উল্লেখ্য, প্রত্যাগতদের অধিকাংশই মানবপাচারের শিকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে, ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সমন্বিত উদ্যোগে প্রত্যাবাসন কার্যক্রমটি বাস্তবায়িত হয়েছে।

দেশে ফেরার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইওএম-এর প্রতিনিধিরা তাদের স্বাগত জানান ।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধিকাংশ বাংলাদেশি সমুদ্রপথে ইউরোপে পৌঁছানোর উদ্দেশে অনিবন্ধিতভাবে লিবিয়ায় প্রবেশ করেছিলেন। লিবিয়ায় অবস্থানকালে তাদের অনেকেই মানব পাচারকারীদের দ্বারা অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হন।

সরকারি কর্মকর্তারা এসব অভিবাসীকে পরামর্শ দেন, যেন তারা অন্যদের এই ধরনের বিপজ্জনক ও অবৈধ পথে বিদেশ গমনের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করেন এবং ভবিষ্যতে এমন যাত্রা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন।

পুনর্বাসন সহায়তার অংশ হিসেবে আইওএম প্রত্যেককে নগদ ৬ হাজার টাকা, জরুরি খাদ্য সহায়তা, প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা এবং প্রয়োজনে অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করেছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বর্তমানে লিবিয়ার বিভিন্ন বন্দিশিবিরে আটক থাকা অন্যান্য বাংলাদেশির নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের কাজ চলছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইওএম যৌথভাবে এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে।

মন্তব্য

তদন্ত কমিশনের সংবাদ সম্মেলন

গুমের শিকার ব‍্যক্তিদের চার ধরনের পরিণতি হতো

গুমের শিকার ব‍্যক্তিদের চার ধরনের পরিণতি হতো

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই গুম করা হতো বলে জানিয়েছেন গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। গুমের শিকার ব্যক্তিদের সম্ভাব্য ৪ ধরনের পরিণতি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে সংবাদ সম্মেলনে গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিটির সভাপতি এসব তথ্য জানান। কমিশনে দাখিল করা অভিযোগ বিশ্লেষণে এসব তথ্য দেন তিনি।

তিনি বলেন, গুমের শিকার ব্যক্তিদের সম্ভাব্য যে ৪ ধরনের পরিণতি হয়েছে, তা হলো: ১. গুমের শিকার ব্যক্তিকে হত্যা করা। ২. বিচারের আগেই মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করে জঙ্গি তকমা দিয়ে বাংলাদেশেই বিচারাধীন বা নতুন ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতার দেখানো।৩. তাকে সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাঠিয়ে সে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা করা। ৪. ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে, অল্পসংখ্যক ক্ষেত্রে মামলা না দিয়ে ছেড়ে দেওয়া।

গুম কমিশনের ২য় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন গত ৪ জুন প্রধান উপদেষ্টা বরাবর জমা দেওয়ার পর আজ দুপুরে রাজধানীর গুলশানে গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মইনুল ইসলাম চৌধুরী এ সব কথা বলেন।

গুম কমিশনের সভাপতি বলেন, বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকারের আমলে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি এবং ভিন্ন মতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে পদ্ধতিগত দমননীতির অংশ হিসেবে গুমকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরেও বহু অপরাধী ও তাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকায় অনেক জোরালো প্রমাণ ও নিদর্শন ধ্বংস, অনেক ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক অসহযোগিতা, সাক্ষীদের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানারকম ভীতিকর ও আতঙ্কজনক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। তবুও বহু ভুক্তভোগী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের অভিযোগ ও অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন। তারা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিস্তারিতভাবে সে কাহিনি তুলে ধরেছেন।

গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির সভাপতি আরো বলেন, বিগত সরকারের শাসনামলে গুম একটি সুশৃঙ্খল ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপে ‘জঙ্গিবাদবিরোধী’ অভিযানের ছায়াতলে ইসলামি উগ্রবাদের হুমকিকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করা, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন ও শাসন দীর্ঘায়িত করার উদ্দেশে পরিচালিত হয়েছিল। ভুক্তভোগীদের মধ্যে ছিলেন- মেধাবী শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক কর্মী ও সাংবাদিক থেকে সাধারণ জনগণ।

মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এ প্রক্রিয়ায় তারা ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাকে অস্ত্র বানিয়েছিল। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও নিরাপত্তা বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাবাধীন করে এবং নির্যাতন ও গোপন আটকের সংস্কৃতি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে চালু করেছিল। এমনকি সাধারণ নাগরিকদের বেআইনি পন্থায় বারবার ভারতীয় বাহিনীর হাতেও তুলে দেওয়া হয়েছিল।

কমিশন অফ ইনকোয়ারি অ্যাক্টের ধারা ১০ এ(১) ও (২) অনুযায়ী কমিশনে দাখিলকৃত ১৩১টি অভিযোগের বিষয়ে আইন মোতাবেক জিডি রেকর্ডপূর্বক ভিকটিমদের সন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পুলিশ মহাপরিদর্শক বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, গোপন আটক কেন্দ্রের অস্তিত্ব এখন আর অস্বীকার করা যায় না। সকল ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগীরা প্রায় একই ধরনের প্রক্রিয়ার শিকার হয়েছেন। পদ্ধতিগত নির্যাতন, সন্ত্রাসী হিসেবে প্রচার, একই ধরনের আইন অনুযায়ী অভিযোগ দায়ের ও একই ধরনের ভাষায় বর্ণনা। বিভিন্ন পটভূমি থেকে আসা ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতার এই সামঞ্জস্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে স্পষ্ট করে।

তিনি বলেন, প্রতিবেদনে ১৯ শতাংশ ফেরত না আসা ১২ জন ভিকটিমের বিষয়ে অগ্রগতি তুলে ধরেছি, যাদের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধান সম্পন্ন হয়েছে। তাদের গুমের জন্য কারা দায়ী, তা প্রাথমিকভাবে আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। চলমান অনুসন্ধানের স্বার্থে এই মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।

ফিরে না আসা ভিকটিমদের বিষয়ে অপরাধী ও গুমের অপরাধ সংঘটনের স্থানসহ নানাবিধ বিষয়ে তথ্যের ঘাটতি বা পুরোনো কললিস্ট না পাওয়াসহ নানারকম বিলম্বঘটিত প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হলেও কমিশন আন্তরিকতার সঙ্গে অনুসন্ধান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

প্রতিবেদনে কমিশন সন্ত্রাসবিরোধী যে সব মামলায় অপব্যবহার হয়েছে, তা ন্যায় বিচারের মানদণ্ড বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতনের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়ার মতো উপযুক্ত কাউন্টার টেরোরিজম মেথড বের করার জন্য দুটি সুপারিশ করা হয়।

এ সময় গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির সদস্য অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত বিচারক মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকার কর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কমিশনের সদস্য নাবিলা ইদ্রিস, মানবাধিকার কর্মী ও কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The accused in the murder case

আদালত থেকে পালাল হত্যা মামলার আসামি

আদালত থেকে পালাল হত্যা মামলার আসামি

ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের এজলাস থেকে হাজতখানায় নেওয়ার পথে পুলিশকে মারধর করে পালিয়েছেন হত্যা মামলার এক আসামি।

আসামি শরিফুল ইসলাম (২২) দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ থানার হরিপুর গ্রামের মৃত শফিক আহম্মেদের ছেলে। তিনি রাজধানীর খিলগাঁও থানার জিসান হোসেন (১৪) হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার পর সংশ্লিষ্ট আদালতের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কনস্টেবল শহিদুল্লাহকে মারধর করে ছুটে পালিয়ে যান আসামি শরিফুল। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার ইনচার্জ এসআই রিপন।

তিনি বলেন, আসামিকে আদালত থেকে হাজতখানায় নেওয়ার সময় পুলিশকে আঘাত করে তিনি পালিয়ে যায় আসামি শহিদুল।

ডিএমপির প্রসিকিশন বিভাগের এডিসি মাইন উদ্দিন বলেন, আসামির হাতে হাতকড়া পরানো ছিল। তিনি ধাতব কিছু দিয়ে হাতকড়া ঢিলা করে কৌশলে খুলে ফেলে। পরে পুলিশ কনস্টেবলের হাতে আঘাত করে পালিয়ে যায়।

তিনি বলেন, আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। কোতোয়ালি থানাকে জানানো হয়েছে আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য। তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলমান।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The 5th Annual Senate Meeting in the BUP

বিইউপিতে ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভা অনুষ্ঠিত

বিইউপিতে ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভা অনুষ্ঠিত

১৯ জুন ২০২৫ তারিখে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) এর ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভা বিইউপির বিজয় অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিইউপির উপাচার্য ও সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ মাহ্বুব-উল আলম, বিএসপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, এমফিল, পিএইচডি।

সভার শুরুতে বিইউপির উপাচার্য ও সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ মাহ্বুব-উল আলম বিদায়ী সদস্যদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং নবনিযুক্ত সদস্যদের স্বাগত জানান। পরে বিইউপির ট্রেজারার এয়ার কমডোর মোঃ রেজা এমদাদ খান, জিইউপি, বিইউপি, এনডিসি, পিএসসি, জিডি(পি), ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট ১৩৪ কোটি ৮ লক্ষ টাকা ও ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের ১৩৪ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন।

সিনেট সদস্যগণ ট্রেজারার এর বক্তৃতার ওপর আলোচনা করেন এবং সর্বসম্মতিক্রমে বাজেট প্রস্তাব অনুমোদন করেন। এছাড়াও সিনেট সভায় ১৭তম বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপিত ও সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়। ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভাটি সার্বিকভাবে সঞ্চালনা করেন বিইউপির রেজিস্ট্রার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ রাব্বি আহসান, এনডিসি, পিএসসি।

সভায় সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মাহ্বুব তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিইউপি বয়সে নবীন হলেও এর শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও গবেষকগণের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও গবেষণা ভিত্তিক কার্যক্রমের অর্জনসমূহ জাতীয় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সুনাম বয়ে আনছে। যুগোপযোগী শিক্ষা প্রদান, গবেষণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নিত হওয়ার লক্ষ্যে অত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক একটি সুনির্দিষ্ট Academic Strategic Plan –২০৫০ প্রণয়ন করা হয়েছে।

Academic Strategic Plan এর মাধ্যমে পাঠ্যক্রমের আধুনিক মান নির্ধারণ, Outcome Based Education (OBE) কারিকুলাম প্রনয়ণ, গবেষণা, উদ্ভাবন, প্রকাশনা ও গবেষণা সহায়তার সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

মাননীয় উপাচার্য সকলকে অবহিত করেন যে বিইউপি’র গবেষণাভিত্তিক অগ্রযাত্রায় BUP Research Centre (BRC) অংঙ্গীভূত ফ্যাকাল্টি ও অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহে গবেষণা, উদ্ভাবন ও পরামর্শমূলক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার লক্ষ্যে কাজ করছে। 'Inspiring Innovation for Advancing Knowledge' শ্লোগানকে ধারণ করে, BUP Research Centre, গবেষকদের মানসম্মত গবেষণায় উৎসাহ দিচ্ছে এবং শিল্প-প্রতিষ্ঠান ও একাডেমিয়ার মধ্যে সংযোগ স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

এছাড়াও তিনি উল্লেখ করেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষকদের গবেষণালব্ধ জ্ঞান প্রসারের উদ্দেশ্যে বিইউপি থেকে ৫টি জার্নাল প্রতিবছর নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে যা সকলের মাঝে সমাদৃত। সিনেট চেয়ারম্যান আরও উল্লেখ করেন যে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষার পাশাপাশি একজন সুশৃঙ্খল, নৈতিকতা সম্পন্ন সু-নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিইউপি বদ্ধপরিকর এবং সে লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের চারিত্রিক গুণাবলি ও আত্মিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সকল প্রোগ্রামের পাঠ্যক্রমে নৈতিক শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে Need Based Education - কেও গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হচ্ছে। তিনি বলেন যে, আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের মানসম্মত কারিকুলাম ও শিক্ষা পরিবেশের পাশাপাশি বৈচিত্র‍্যময় সাংস্কৃতিক সান্নিধ্যের গুরুত্বকে সামনে রেখে বিইউপি'তে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, নবপ্রজন্মের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সততা, চরিত্র গঠন ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং দেশপ্রেম জাগ্রত করতে পড়াশোনার পাশাপাশি বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য, জাতীয় দিবসগুলোর তাৎপর্য ও মাহাত্ম্য তুলে ধরে বিইউপি’র বিভিন্ন আলোচনা সভা, সিম্পোজিয়াম, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনের কথা উল্লেখ করেন।

এই সিনেট সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং বিইউপির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
BNP does not support the electoral college in the presidential election

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইলেকট্রোরাল কলেজব্যবস্থা সমর্থন করে না বিএনপি

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইলেকট্রোরাল কলেজব্যবস্থা সমর্থন করে না বিএনপি

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রস্তাবিত ইলেকট্রোরাল কলেজব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘জনগণের ভোটাধিকার হরণে এই ব্যবস্থাকে আরেকটি ছলচাতুরী হিসেবে দেখা হচ্ছে।’

গতকাল বুধবার বিকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য কমিশনের যে প্রস্তাব তাতে একটা ইলেক্টোরাল কলেজ করা হবে। এবং প্রায় ওনাদের ভাষ্য অনুযায়ী ৭০ হাজারের মতো ভোটার থাকবে। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার পর্যায়ের প্রতিনিধিগণ এখানে ভোটার হবেন। এবং রাষ্ট্রপতিকে সৎ, দক্ষ ও অভিজ্ঞ একজন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য ওখানে প্রস্তাব করা হয়েছে।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাবে আগের মতোই একমত নয় বিএনপি।

এই কাউন্সিলের জবাবদিহি না থাকায় সমর্থন করে না বিএনপি। এই কাউন্সিলে আরেকটি ভারসাম্যহীন অবস্থা তৈরি হবে বলে মনে করি আমরা।’

স্বাধীন বিচারব্যবস্থার দাবি জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘স্বাধীন বিচারব্যবস্থা হলে ভারসাম্যহীনতা দূর হবে, ফ্যাসিবাদ দমন করবে। প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য, অন্য সাংবিধানিক পদ, সংস্থা স্বাধীন করতে পারলে সমস্যা থাকবে না।’

বিএনপি মনে করে সুশাসন নিশ্চিত করতে ন্যায়পাল করা যেতে পারে। বিদ্যমান ব্যবস্থা বজায় রেখে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ হলে তাদের যোগ করা যেতে পারে, বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আইন সংশোধন করা যেতে পারে। জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। বিএনপি মনে করে, দুদক ও মানবাধিকার কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করতে বিদ্যমান আইনগুলো সংস্কারের প্রয়োজন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Bhawal Chandipur Agrakhola road is like a death

ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়ক যেন মরণফাঁদ

চরম দুর্ভোগে এলাকাবাসী   
ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়ক যেন মরণফাঁদ

কেরানীগঞ্জের শাক্তা ও তারানগর ইউনিয়নের বুক চিরে চলা ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়কের বেহাল দশায় নিত্যদিন ভোগান্তিতে পড়ছে হাজারো মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে সড়কজুড়ে এখন গর্ত আর ধুলাবালি। সামান্য বৃষ্টিতে কাদায় যানবাহন আটকে যায়, আর শুকনো মৌসুমে উড়ে ধূলোর ঝড়।

রাস্তাটির বেহাল অবস্থার কারণে প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচারী ও যানবাহনের চালকরা। ছোট-বড় গর্তে হোঁচট খেয়ে পড়ে আহত হন অনেক পথচারী। অন্যদিকে, যানবাহন চলাচলের অযোগ্য এই সড়কে প্রতিনিয়তই নষ্ট হয়ে পড়ে ভ্যান, অটোরিকশা, ট্রাকসহ বিভিন্ন গাড়ি। আকিজ ফাউন্ডেশন স্কুল, মেকাইল মাদ্রাসা ও অগ্রখোলা কমিউনিটি হাসপাতালের সামনের অবস্থা এতটাই খারাপ যে মাঝে মাঝেই উল্টে যায় যাত্রী বোঝাই যানবাহন ।

সড়কের করুণ অবস্থার কারণে অনেক চালক ও পথচারী এখন পাশের বেলনা, কলাতিয়া ও নয়াবাজার হয়ে বিকল্প রাস্তায় যাতায়াত করছেন। এতে সময়, অর্থ ও দুর্ভোগ বাড়ছে।

এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কেরানীগঞ্জ ছাড়াও নবাবগঞ্জ, দোহার, সিরাজদিখানসহ দক্ষিণবঙ্গের হাজার হাজার মানুষ মোহাম্মদপুর হয়ে রাজধানীতে প্রবেশ করে। অথচ বছরের পর বছর ধরে অবহেলায় পড়ে আছে সড়কটি।

স্থানীয় বাসিন্দা কবির হোসেন বলেন, ‘রাস্তাটার অবস্থা এমন যে, অটোরিকশা সিএনজিতে ওঠা মানেই কোমর ভাঙা। মাঝে মাঝেই যানবাহন পড়ে মানুষ আহত হয়। স্কুলের বাচ্চারা পর্যন্ত ভয়ে এই রাস্তায় যেতে চায় না। কোন এমপি-মন্ত্রী একবার এই রাস্তা দিয়ে গেলে বুঝত কষ্টটা কেমন।

একই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পণ্যবাহী ট্রাকচালক রাকিব হাওলাদার। তিনি বলেন, একবার গর্তে পড়লে গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায়। ট্রাকে থাকা জিনিসপত্র পড়ে যায়, এভাবে থাকলে এই রাস্তা দিয়ে আর চলাচল করা সম্ভব নয়। এটি দ্রুত সংস্কার করা উচিত।

এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ বলেন, সড়কটি ইতোমধ্যে ডিপিপিতে অনুমোদন পেয়েছে। তাই এখন সংস্কার করা হচ্ছেনা। বছরের শেষ দিকে ২০ ফুট প্রশস্ত করে এবং আরও শক্তিশালী করে কাজ শুরু হবে। তখন রাস্তাটি আরো টেকসই হবে।

এদিকে এলাকাবাসীর দাবি, সংস্কার কাজ শুরুর আগ পর্যন্ত অন্তত গর্ত ভরাট করে সাময়িক চলাচলের উপযোগী করে তুলতে হবে। নইলে প্রতিদিন দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Twenty four bucks the family of four runs a family of four

আড়াইশ টাকা আয়ে চারজনের সংসার চালায় কিশোর তোফাজ্জল!

আড়াইশ টাকা আয়ে চারজনের সংসার চালায় কিশোর তোফাজ্জল!

একটা ভাঙাচোরা বাইসাইকেলই তার ভরসা। এ সাইকেল চালিয়ে ১৫ কিলোমিটার দুরের দুর্গম খাসিয়া পল্লীতে কাজ করে দুই-আড়াইশ টাকা রোজগার করে কিশোর তোফাজ্জল (১৪)। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ৯নং ইসলামপুর ইউনিয়নের কাঁঠালকান্দী গ্রামের আলী আহমেদ (৬৫) এর ছেলে তোফাজ্জল হোসেন। পরিবারে সে একমাত্র উপার্জনক্ষম। বাবা হার্টের রোগী, বোন আয়েশা খাতুন (২৫) মানসিক ভারসাম্যহীন আর বয়োবৃদ্ধ দাদী সমিতা বিবি (৮২) দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী।

তোফাজ্জল কান্নাজড়িত কন্ঠে এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রতিদিনি সকালে ভাঙাচোরা একটি সাইকেল নিয়ে ১৫ কিলোমিটার দুরের খাসিয়া পল্লীতে কাজে যাই। সন্ধ্যায় ফিরি। যা রোজগার হয়, দুবেলাও খেতে পাইনা। এ দুনিয়ায় আল্লাহ ছাড়া আমাদের আর কেউ নাই। প্রতিবেশী ফজল মিয়া, আবু শহীদ এ পরিবারের দুরাবস্থার কথা জানিয়ে বলেন, প্রকৃতই তারা খুব অসহায় ও মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। তিনজনই অসুস্থ। মাঝে মধ্যে আমরা যতটা সম্ভব সহযোগিতা করার চেষ্টা করি।

সরেজমিন তোফাজ্জলদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি আবাসন প্রকল্পের ছোট্ট একটি ঘরে মেঝেয় জীর্ণ-শীর্ণ কাঁথায় শুয়ে আছেন সমিতা বিবি। অপুষ্টি আর ক্ষুধার যন্ত্রণায় ক্লান্ত। ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। যা বললেন বোঝা গেলো, ডালভাত খেয়ে ঈদের দিন পার করেছি। ক্ষিদের জ্বালায় রাতে ঘুম আসে না। একরত্তি নাতি আর কিইবা করবে। তবু যা করছে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। চাল ডাল আনলে ওষুধ আনতে পারে না। তবু প্রায়ই অনাহারে থাকতে হয়। ঈদে চান্দে প্রতিবেশীরা কেউ খাবার দেয়, কেউ সামান্য টাকা-পয়সা দেয়। এইভাবেই টিকে আছি।

স্থানীয়দের সহযোগিতাই একমাত্র ভরসা। মানুষের সাহায্যে দুমুঠো ভাত খেতে পারেন, যদি কেউ সাহায্যে না করে তাহলে না খেয়েই থাকতে হয়। তার বিলাপে চোখে জল চলে আসে। এ যেন দারিদ্র্যের এক করুণ চিত্র। এই অসহায় নারীর জীবন কাটছে অভাব আর কষ্টে। পা ভেঙে এক বছর ধরে শয্যাশায়ী। ছেলে আলী আহমেদও হার্টের রোগী। কোন কাজকর্ম করতে পারেন না। তাই ১৩/১৪ বছরের নাতি তোফাজ্জলের কাঁধেই সংসারের ভার। দুর্গম খাসিয়া পুঞ্জিতে কাজ করে দিনে আয় করে দুই-আড়াইশ টাকা মাত্র। এ টাকায় দুবেলা খাবার যোগানোই মুশকিল। তার ওপর অসুস্থ দাদি, বাবা আর মরার উপর খাঁড়ার ঘা মানসিক প্রতিবন্ধী বড় বোন আয়েশা খাতুন।

ইসলামপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক আহমেদ জানান, একসময় তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিলো না। কয়েক বছর আগে সরকারি আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে এ পরিবারের জন্য একটি ঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোফাজ্জলদের দুরাবস্থা জেনে অনেকে খাদ্য সামগ্রী দিয়ে তাদের সহায়তা করছেন। তবে বয়োবৃদ্ধ সমিতা বিবি ও মানসিক প্রতিবন্ধী আয়েশা খাতুনের সুচিকিৎসা ও তোফাজ্জলদের আত্মনির্ভরশীল হওয়ার ব্যবস্থা জরুরি।

মন্তব্য

p
উপরে