বরগুনায় অফিস দখল নিয়ে ট্রাকশ্রমিকদের দুই সংগঠন মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুটি সংগঠনের শ্রমিকরা শহরের টাউনহলে মুখোমুখি অবস্থান নেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে জেলা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বরগুনার টাউনহল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বেসিক ট্রেড ইউনিয়ন ও আন্তজেলা ট্রাকশ্রমিকদের দুটি গ্রুপ কার্যালয় দখল নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে।
বরগুনা আন্তজেলা ট্রাকশ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন বরগুনা পৌরসভার প্যানেল মেয়র রইসুল আলম রিপন। আর বেসিক ট্রেড ইউনিয়ন বরগুনা জেলা শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম।
বরগুনা আন্তজেলা ট্রাকশ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সদস্য আব্দুল হালিম মোল্লা বলেন, ‘বুধবার গভীর রাতে বরগুনা সদর উপজেলার চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত টাউনহল মোড়ে আন্তজেলা ট্রাকশ্রমিক ইউনিয়নের অফিস কার্যালয় ভাঙচুর করে ভেতরের আসবাবপত্র লুট করে।
‘খবর পেয়ে সকালে আন্তজেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রইসুল আলম রিপনের পক্ষে দুই শতাধিক ট্রাকশ্রমিক টাউনহল চত্বরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করেন। বেলা ২টা পর্যন্ত রিপনের পক্ষে শ্রমিকরা সেখানে অবস্থান নিয়ে আন্তজেলা ট্রাকশ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়টি নিজেরা নিয়ন্ত্রণ নিতে চেষ্টা করেন।’
ট্রাকশ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রমিক নেতা মঞ্জুরুল আলম জন বলেন, ‘উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বরিশাল থেকে বেসিক ট্রেড ইউনিয়ন বরগুনা জেলা শাখার নামে একটি সংগঠন নিয়ে আসেন। ওই সংগঠনের সভাপতি হিসেবে তিনি আন্তজেলা ট্রাকশ্রমিক ইউনিয়ন অফিস দখলে নেন।
‘পরবর্তী সময়ে তার নেতৃত্বে যুবদল নেতা শাহ আলম, টায়ার রাজু জুলহাস, যুবরাজসহ কয়েকজন বেসিক ট্রেড ইউনিয়নের নামে লোড বড় ট্রাক থেকে এক হাজার, ছোট ট্রাক থেকে ৫০০ এবং ট্রান্সপোর্টের অফিস থেকে এক হাজার করে চাঁদা আদায় করতে থাকেন। এ ছাড়া দুটি ফেরিঘাটে অবৈধ ইজারা দিয়ে ট্রাক থেকে চাঁদাবাজি করতে থাকেন।’
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি বরগুনায় উৎপাদিত তরমুজ পরিবহনের জন্য ট্রাকভর্তি এক হাজার করে টাকা চাঁদা নির্ধারণ করে। এ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। বিষয়টি আমরা বরগুনার পুলিশ সুপারকে জানালে তিনি বেসিক ট্রেড ইউনিয়নকে অফিস ছেড়ে দিতে নির্দেশ দেন। বুধবার রাতে অফিসের দেয়াল ভেঙে ভেতরের আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে যায়। এর প্রতিবাদে শ্রমিকরা আজকে জড়ো হয়েছেন এবং তারা তাদের অফিস ফেরত পেতে চান।’
বেসিক ট্রেড ইউনিয়নের সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম চাঁদা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ‘গত বছরের শুরুতে আন্তজেলা ট্রাকশ্রমিক ইউনিয়নের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে আমার কাছে আসে। আমি শ্রমিকদের স্বার্থে বেসিক ট্রেড ইউনিয়নের দায়িত্ব নিয়ে শ্রমিকদের সংগঠিত করে চাঁদা থেকে রক্ষা করেছি।
‘তরমুজ পরিবহনের মৌসুম আসায় আন্তজেলা ট্রাকশ্রমিক ইউনিয়ন ফের চাঁদাবাজির প্রস্তুতি নিয়ে রাতে আমাদের অফিস ভেঙে সকাল থেকে সেটি দখলের চেষ্টা করছে। আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নিয়েছি। এ নিয়ে শ্রমিক নেতা ও জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত দেবেন আমরা তাই মানব।’
বরগুনা আন্তজেলা ট্রাকশ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রইসুল আলম রিপন বলেন, ‘সারা দেশের মতো বরগুনায়ও আন্তজেলা ট্রাকশ্রমিক ইউনিয়ন শ্রমিকদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। হঠাৎ বেসিক ট্রেড ইউনিয়নের নামে একটি সংগঠন আমাদের কার্যালয় দখলে নিয়ে চাঁদাবাজি শুরু করে। আমরা বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানিয়েছি এবং তাদের সহায়তায় আমরা আমাদের অফিসে ফিরতে চাই।’
বরগুনার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর মল্লিক বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আমরা শ্রমিক নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেছি। আশা করি বিষয়টি সমাধান হবে।’
জলদস্যুর কবল থেকে মুক্ত জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ চট্টগ্রাম বন্দরে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে। জাহাজে বহন করা ৫৫ হাজার টন কয়লা খালাস ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এটি এখন দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দর থেকে আমিরাতের আরেক বন্দর মিনা সাকার উদ্দেশে যাত্রা করেছে। সেখানে পণ্য লোড করার পর জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে রওনা করবে।
মে মাসের মাঝামাঝিতে ২৩ নাবিকসহ জাহাজটি চট্টগ্রামে পৌঁছবে বলে ধারণা করছে মালিক পক্ষ কেএসআরএম গ্রুপ।
২৩ নাবিকসহ জাহাজটি ২১ এপ্রিল বিকেলে আল হামরিয়া বন্দরের বহির্নোঙরে নোঙর করে। জেটিতে নোঙর ফেলে ২২ এপ্রিল। এরপর শুরু হয় কয়লা খালাসের প্রক্রিয়া।
কেএসআরএম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আল হামরিয়া বন্দরে পণ্য খালাস করে শনিবার রাতে জাহাজটি মিনা সাকার নামে আরেকটি বন্দরের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। সেখান থেকে নতুন পণ্য নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে এমভি আবদুল্লাহ। মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ২৩ নাবিকসহ জাহাজটি চট্টগ্রামে নোঙর করবে বলে আমরা আশা করছি।’
প্রসঙ্গত, ১২ মার্চ সোমালিয়ার দস্যুরা ভারত মহাসাগর থেকে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি জিম্মি করে। পরে মুক্তিপণ দিয়ে জাহাজটি ১৩ এপ্রিল রাতে ছাড়া পায়। অর্থাৎ জিম্মি করার ৩২ দিন পর জাহাজটি মুক্তি পায়।
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকলে হাত, দাঁত ও চাপার হাড্ডি ভেঙে যমুনা নদীতে নিক্ষেপের হুমকিদাতা আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। একইসঙ্গে চেয়ারম্যান প্রার্থী রফিকুল ইসলামকে (আনারস) শো-কজ করেছেন জেলা রিটার্ননিং কর্মকর্তা।
শনিবার জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ শানিয়াজ্জামান তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। জেলা প্রশাসক মো. শফিউর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আটককৃতরা হলেন সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক ও সুজাত আলী কলেজের অধ্যক্ষ সাইদুল হাসান সাইদ এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার মোতাহার হোসেন জয়।
লিখিত বক্তব্যে শানিয়াজ্জামান তালুকদার জানান, চেয়ারম্যান প্রার্থী রফিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে তার দুই কর্মী যে বক্তব্য দিয়েছেন তা উস্কানিমূলক ও হুমকিস্বরূপ। বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে চেয়ারম্যান প্রার্থী রফিকুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। একইসঙ্গে হুমকিদাতা দু’জনের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন সরিষাবাড়ী থানায় মামলা করেন।
মামলা হওয়ার পর শনিবার দুপুরে গোয়েন্দা পুলিশ সাইদুল হাসান সাইদ ও খন্দকার মোতাহার হোসেন জয়কে গ্রেপ্তার করে। একইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে বলেও জানানো হয়।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাতে চেয়ারম্যান প্রার্থী রফিকুল ইসলামের নির্বাচনী পথসভায় অধ্যক্ষ সাইদুল হাসান বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে যারা কথা বলে তাদের জবান আমরা বন্ধ করে দেব। আমরা আগামী ৮ মে'র নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ থাকবো। আমরা অন্য কোনো মার্কার কোনো এজেন্ট দিতে দেবো না। রফিক সাহেবকে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে আজকেই ঘোষণা দিলাম।’
প্রতিপক্ষের লোকদের হুশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘সাবধান হয়ে যান, আমাদের মাঝে অসন্তোষ ও হানাহানির চেষ্টা করবেন না। আপনাদের দাঁত ভেঙে দেয়া হবে। যাদের দাঁত নেই, তাদের চাপার হাড্ডি ভেঙে দেয়া হবে।’
এরপর পিংনা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার মোতাহার হোসেন জয় একই সভায় বলেন, ‘অন্য কোনো মার্কার এজেন্ট কোনো কেন্দ্রে দিতে দেব না। এজেন্ট দিলে তার হাত বাড়ি দিয়ে ভেঙে আমরা যমুনা নদীতে নিক্ষেপ করবো।’
এ সময় সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী রফিকুল ইসলামকে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
আগামী ৮ মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হিসেবে রফিকুল ইসলাম (আনারস) ও তালেব উদ্দিন (দোয়াত-কলম) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুরে অগ্রণী ব্যাংকের শাখা থেকে ১০ কোটি ১৩ লাখ টাকা লোপাটের অভিযোগে শাখা ম্যানেজারসহ তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
শুক্রবার তাদের বরখাস্ত করা হয় বলে শনিবার দুপুরে জানান অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী সার্কেলের জেনারেল ম্যানেজার আফজাল হোসেন।
বরখাস্ত হওয়া ব্যাংক কর্মকর্তারা হলেন- কাশিনাথপুর শাখার ব্যবস্থাপক (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) হারুন বিন সালাম, সিনিয়র অফিসার আবু জাফর ও ক্যাশ অফিসার সুব্রত চক্রবর্তী।
আফজাল হোসেন বলেন, ‘ব্যাংক পরিদর্শনে গিয়ে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা খোয়া যাওয়ার সত্যতা পাওয়া যায়। পরে পুলিশে অভিযোগ দিলে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে একটি তদন্ত দল পুরো বিষয়টির তদন্ত করছে। দলটির প্রধান হলেন সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার আনোয়ার হোসেন। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর অভিযুক্ত ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের শুক্রবার বিকেলে পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়। বিচারক আনোয়ার হোসেন সাগর গ্রেপ্তারকৃতদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন:তীব্র গরম থেকে বাঁচতে ও বৃষ্টির আসায় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় নেচে গেয়ে ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করেছেন স্থানীয়রা। লোকজন।
উপজেলার চন্দ্রখানা বালাটারি গ্রামে শনিবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত বিয়ের অনুষ্ঠান চলে।
ওই এলাকার বাসিন্দা সাহাপুর আলীর স্ত্রী মল্লিকা বেগমের আয়োজনে বিয়েতে অসংখ্য নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। নাচ গানের মধ্যে দিয়ে ব্যাঙের বিয়ে শেষে বরণ ডালায় ব্যাঙ দুটিকে নিয়ে পুরো গ্রাম ঘুরে বেড়ান তারা। এ সময় গ্রামবাসীদের কাছ থেকে চাল ডাল সংগ্রহ করে বিয়েতে অংশগ্রহণকারীদের খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়।
বিয়ের আয়োজনকারী মল্লিকা বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কিছুদিন ধরে তীব্র গরম। তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কারণে আমরা কষ্টে রয়েছি; গ্রামের মানুষজন অস্তিত্বতে আছে। কেউই কোনো কাজ কামাই করতে পারছেন না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আগের যুগের মানুষরা ব্যাঙের বিয়ে দিলে বৃষ্টি হতো। সেই বিশ্বাস থেকেই আজ ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করেছি।’
বিয়ে দেখতে আসা জাহিদ নামের একজন বলেন, “আমার জীবনে প্রথম ব্যাঙের বিয়ে দেখলাম। খুবই ভালো লেগেছে। ‘বৃষ্টির জন্য ব্যাঙের বিয়ে’ বিষয়টি প্রথম জানলাম।”
বৃদ্ধ আজিজুল হক বলেন, ‘বৃষ্টি না হওয়ার কারণে আবাদের ক্ষতি হচ্ছে। তাই বৃষ্টির আশায় ব্যাঙের বিয়েতে অংশগ্রহণ করেছি।’
রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘কুড়িগ্রামে বেশ কিছুদিন ধরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। আজ (শনিবার) জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।’
আরও পড়ুন:মুন্সীগঞ্জ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে এক বছরের শিশু হুমাইরা আক্তারের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকালে সদর উপজেলার মদিনা বাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মদিনা বাজারের উত্তর পাশে খানকা শরীফের সামনের সড়কে দুটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে।
এ সময় রাস্তার পাশে এক বছরের শিশু সন্তান হুমাইরাকে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা হাবিবা বেগমের ধাক্কা খান অটোরিকশার সঙ্গে। এতে শিশু হুমাইরা মায়ের কোল থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। শিশুটিকে দ্রুত মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় অটোরিকশা দুটি আটক করা হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া দুই চালককে আটকের চেষ্টা চলছে।
মুন্সীগঞ্জে হিটস্ট্রোকে সাখাওয়াত হোসেন মুকুল নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি প্রাণ-আরএফএল কোম্পানির মাঠ পর্যায়ের বিপনন বিভাগে কর্মরত ছিলেন।
২৭ বছর বয়সী মুকুলের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলায়।
প্রাণ-আরএফএল কোম্পানির মুন্সীগঞ্জ শহরের সেলস রিপ্রেজেনটেটিভ মোহাম্মদ রোকন জানান, শনিবার দুপুরে মুন্সীগঞ্জ শহরের অদূরে মুন্সীরহাট এলাকায় মাঠ পর্যায়ে কর্মরত অবস্থায় তীব্র গরমের কারণে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন মুকুল। সঙ্গে সঙ্গে তাকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালে নিয়ে এলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. ফেরদৌস হাসান জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগে পথেই তার মৃত্যু হয়েছে। নিহতের হিটস্ট্রোকের লক্ষণ রয়েছে বলে জানান তিনি।
নিহতের মরদেহ তার নিজ জেলায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
আকস্মিক কালবৈশাখীর তাণ্ডবে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ও শমশেরনগর ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে আরও বেশ কিছু বাড়িঘর। ঝড়ের পর খোলা আকাশের নিচে দিনযাপন করছে অর্ধশতাধিক পরিবার।
এ ছাড়াও গাছপালা উপড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙেছে এবং তার ছিঁড়ে পড়ে। এতে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে ওই অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
শুক্রবার রাত ৩টার দিকে এই ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হয়। প্রায় সাড়ে ১৫ ঘণ্টা পর শনিবার বিকেল ৪টার দিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কালবৈশাখীর তাণ্ডবে উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের পতনঊষার, ধূপাটিলা, উসমানগড়, ব্রাহ্মণঊষারসহ ৮টি গ্রামের প্রায় শতাধিক ঘর এবং শমশেরনগর ইউনিয়নের কেছুলুটি, ভাদাইরদেউল গ্রামে আরও কয়েকটি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। অসংখ্য গাছ-বাঁশ উপড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ও লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
পতনঊষার ইউনিয়নের নেছার মিয়া, ময়নুল মিয়া, খুশবা বেগম, লিপি বেগম, রহমান মিয়া, সুফিয়ান মিয়া, কালাম মিয়া, আনু মিয়া, ফখরুল মিয়াসহ অসংখ্য পরিবার দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন।
ক্ষতিগ্রস্তরা বলেন, গতরাতে কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে তীব্র শিলাবৃষ্টি হয়। মুহুর্তের মধ্যে তাদের ঘরবাড়ি উড়িয়ে নিয়ে যায়। আমরা এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি। সহোযোগিতা না পেলে আমাদের রাস্তায় থাকতে হবে।’
পতনঊষার ইউপি সদস্য তোয়াবুর রহমান জানান, আকস্মিক ঝড়ে পতনঊষার গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যাদের বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে সেসব দরিদ্র পরিবারের জীবনধারণ কঠিন হয়ে পড়েছে।
পতনঊষার ইউপি চেয়ারম্যান অলি আহমদ খান বলেন, ‘কালবৈশাখী ঝড়ে আমার ইউনিয়নে প্রচুর পরিমাণ বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। অনেক পরিবার খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। তাদের দ্রুত সহায়তার প্রয়োজন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাহেবকে অবহিত করা হয়েছে।’
মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কমলগঞ্জ জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক গোলাম ফারুক মীর বলেন, ‘ঝড়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কয়েকটি খুঁটি ভেঙে পড়েছে। অনেক স্থানে তার ছিঁড়ে গেছে। এসব জায়গায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার জন্য কাজ চলছে।’
এ বিষয়ে কমলগঞ্জ ইউএনও জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘পতনঊষার ইউপি চেয়ারম্যান বাড়িঘর বিধ্বস্তের কথা বলেছেন। তবে পরিপূর্ণ হিসাব জানা যায়নি। চেয়ারম্যানদেরকে বলা হয়েছে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে দেয়ার জন্য। দ্রুত তাদের সহোযোগিতা করা হবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য