বিক্রেতা বিক্রি করবেন কেজি দরে, তবে দুই কেজি চাইলে দেবেন না।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রগতি ইনস্যুরেন্স ভবনের উল্টোপাশে তরমুজ সাজিয়ে বসেছেন মোহাম্মাদ আমান। দাম জানতে চাইলে বলেন, ‘পিস ৩০০, কেজি ৪০ টাকা।’
দুই কেজি দেন- শুনে আমান বলেন, ‘পিসই বেচি। এহন অনেকেই কেজিতে চায়। কেজিতে নিতে হইলেও মনে করেন যে আস্তা নিতে হইব।’
যে তরমুজটির দাম ৩০০ টাকা হেঁকেছেন, সেটি মেপে সাড়ে সাত কেজি পাওয়া গেল। ৪০ টাকা কেজি দরে ফলটির দাম দাঁড়ায় ৩০০ টাকাই।
আপনারা তরমুজ কীভাবে কেনেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পিসই কিন্যা আনি। পিস বেচি। যেডা এট্টু ছোড হেইগুলা কেজিতে নেয়।’
যখন আলাপ চলছিল ঠিক তখনই এক ক্রেতা এসে জানতে চাইলেন, তরমুজের কেজি কত? আমান বললেন, ‘৩০০ টাকা পিস নিতে পারবেন এক দাম।’
আরেকটু সামনে এগিয়ে দেখা গেল ডিজিটাল স্কেল মেশিনে মেপে তরমুজ বিক্রি করছেন এক বিক্রেতা। তার নাম সুমন হোসেন। দাম চাইলেন ‘৩০ টাকা কেজি।’
দুই কেজি দেন- তখন আবার বেঁকে বসলেন সুমন। বলেন, ‘এডা তো গোডাটাই নিতে হইব। কাডি (কেটে) বিক্রি করা যাইত নঁ।’
তরমুজ কীভাবে কিনে আনেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঠিকা কিনি আনি শত (১০০ পিস)।’
পিস হিসাবে কিনে কেজি দরে বিক্রি করা তো আইনে বাধা- এ কথা বললে সুমন বলেন, ‘আইনের কথা কইয়া লাভ আছেনি? আইন তো আছেই।’
পিস হিসাবে বিক্রি করে লাভ নাকি কেজিতে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উনিশ, বিশ আরি। কহনো কেজিতে কহনও ঠিকায় লাভ।’
কেজি-আস্ত বিতর্ক চলছেই
কয়েক বছর ধরে কেজি দরে তরমুজ বিক্রি নিয়ে তুমুল যে বিতর্ক, সেটি আরও একটি মৌসুমে দেখা যাচ্ছে।
কেজি হিসাবে কিনলে ক্রেতার চোখে দেখে অনুমান করে কিনে ঠকার সুযোগ নেই। তবে কৃষি বিপণন আইন অনুযায়ী ফলটি পাইকারি বাজারে গোটা হিসাবে বিক্রি হয় বলে খুচরায় কেজি দরে বিক্রির সুযোগ নেই।
বড় আকারের একমাত্র ফল হিসেবে কেজি দরে বিক্রির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে তরমুজের ক্ষেত্রে। আবার অন্য যেসব ফল কেজি হিসাবে বিক্রি হয়, সেগুলো ক্রেতা চাইলে এক কেজি, দুই কেজি বা যেকোনো একক নিতে পারেন। কিন্তু এখানে তা নয়। কেজি হিসাবে বিক্রি করছেন বিক্রেতা, কিন্তু ক্রেতাকে নিতে হবে আস্ত ফলটাই।
পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে খুচরা বিক্রেতার মাত্রাতিরিক্ত মুনাফা করা ঠেকানোর কোনো কার্যকর উপায় এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। আবার খুচরা বিক্রেতাদের বেশভূষা ক্রেতাদের অনেক ক্ষেত্রেই তাদের প্রতি সমব্যথী করে তোলে।
ফলের ক্ষেত্রে পাইকারি থেকে খুচরা বাজারে দামের পার্থক্য হতে পারবে, সেটিও আইনে বলা আছে। অন্য ফলের তুলনায় তরমুজে মুনাফা করা যাবে কম- এটাও আইনের বিধান। এ ক্ষেত্রেও আইনের লঙ্ঘন হচ্ছে।
সোমবার রাজধানীর বাদামতলী আড়ত, কারওয়ান বাজারের পাইকারি ও খুচরা বাজার এবং বাড্ডার মহল্লার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরায় সব জায়গায় কেজি দরেই বিক্রি হয়। তবে আড়তে বিক্রি হয় গোটা হিসাবে।
আকারভেদে তরমুজ তিন কেজি থেকে ১২ কেজি বা তার চেয়ে বেশি ওজনের দেখা গেছে। খুচরায় বিক্রেতারা দাম চাইছেন ৩০ থেকে ৫০ টাকা দরে।
ছোট ফলের দাম কম, আর আকারে বড় হলে কারওয়ান বাজারে দর ৩৫ থেকে ৪০ আর মহল্লার বাজারে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।
বাদামতলীর যে চিত্র
রাজধানীর ফলের আড়ত পুরান ঢাকার বাদামতলী। বিক্রেতাদের যেন দম ফেলার সময় নেই।
বায়তুল আমান জামে মসজিদের সামনে রাখা হয়েছে সারি সারি তরমুজের স্তূপ। কোথাও নামছে ট্রাক থেকে। কোথাও খুচরা বিক্রেতারা সেখান থেকে ফল কিনে মিনি ট্রাকে তুলছেন।
খানিক সামনে গেলেই দেখা মিলল তরমুজের আরেক স্তূপ। বুড়িগঙ্গা নদীর ঘাটে এসে ভিড়েছে ট্রলারবোঝাই তরমুজ। বেশ কয়েকজন শ্রমিককে দেখা গেল সেই তরমুজ তুলে তারা আড়তে নামাচ্ছেন।
অন্যদিকে তরমুজের চেয়ে আপেল, কমলা, আঙুর ও মাল্টার ক্রেতা-বিক্রেতা ছিল চোখে পড়ার মতো।
সেখানকার বায়তুল আমান মসজিদের পাশে তরমুজের বিশাল সারি। হাজার হাজার ফল স্তূপ করে রাখা।
মা-বাবার দোয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক সাইফুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কেউ শত নেয়, কেউ হাজার নেয়। পিসের হিসাব। বড় সাইজ (১২ থেকে ১৫ কেজি ওজনের) হইলে দর হয় ৩৫ হাজার (প্রতি ১০০)। কোনোটার দর হয় ৩০ হাজার। আবার মাঝারি সাইজ ২৫ হাজার কোনোটার ২০ হাজার (আট থেকে ১০ কেজি)। ছোট সাইজের মধ্যে ১৫ হাজার ১০ হাজার আবার ৫ হাজারও আছে।’
একটি বড় আকারের তরমুজ দেখিয়ে এই দোকানি বলেন, ‘ওই মালডার ওজন আছে ১২ কেজি, দোকানে বেচবে ৬০০ টাকা। আমাগো বিক্রি আছে ৩০০ টাকা। হেরা দোকানে খুচরা নিলে কেজি ৫০ টাকা বেচে।’
তিনি জানান, এখানে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী আর চর কপালপাড়া থেকে তরমুজ আসছে। চাহিদা কেমন- এমন প্রশ্নে বলেন, ‘দুই দিনে প্রায় ২২০০ থেকে ২৩০০ পিস মাল বেচছি। বেচাবিক্রি ভালো আছে।’
আরেক তরমুজ বিক্রেতা নুরুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দশ হাজার টাকা দর (ছোট আকারের ১০০)। আবার আড়তদারি আছে এক হাজার টাকা।’
পাশেই আকারে ছোট তরমুজ দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা বিক্রি করতেছি পাঁচ হাজার টাকা দর। তার মানে ৫০ টাকা পিস। খরচ নিয়ে পড়ে ৫৫ টাকা।’
মেসার্স শাহজাহান ফুড এজেন্সির আড়তদার মোহাম্মাদ শাহজাহান বড় আকারের তরমুজ দেখিয়ে বলেন, ‘৩৩০ টাকা পিস পাইকারি। ওজন ১১ থেকে ১০ কেজি হবে। কেজি হিসাবে ৫০ টাকা বেচে। ১০ টাকা তো লাভ করতে হয়। খরচ আছে আরও। একটা তরমুজ নষ্ট হইয়া যাইতে পারে। ফাইটা যায়।’
‘কৃষি বিপণন আইন অনুযায়ী ফলের ক্ষেত্রে কেজিতে ১০ টাকা লাভ করতে পারবেন এমন বিধান রয়েছে। তবে তরমুজের ক্ষেত্রে বিশেষ নির্দেশনা আছে। কেজিপ্রতি তিন থেকে পাঁচ টাকার বেশি লাভ করতে পারবেন না। আর কেজি বা পিস যেভাবেই কিনবেন সেভাবেই বেচতে হবে।’
খুচরা বিক্রেতা যা বলছেন
বাদামতলী থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে জনসন রোডে ইউসুফ কনফেকশনারির ফলের দোকানে বড় আকারের তরমুজ সাজিয়ে রেখেছেন মোহাম্মাদ হোসেন। দাম কত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘৫০ টাকা কেজি।’
পিস হিসাবে কিনে কেজি হিসাবে বিক্রি করা আইন অনুযায়ী অন্যায়- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘ঠিকাও বেচি আবার কেজিও বেচি। যে যেমনে লয়।’
কারওয়ান বাজার কিচেন মার্কেটের সঙ্গে ফুটপাতে তরমুজ নিয়ে বসেছেন এক বিক্রেতা। এক ক্রেতা কিনতে চাইলে দাম চাইলেন ৪০ টাকা কেজি।’
কেজি দরে বিক্রির কারণ জানতে চাইলে বলেন, ‘পিস হিসাবেও বেচি, আবার কেজি হিসাবেও বেচি। যে যেমনে নেয়।’
আইনে কী বলে
কৃষি বিপণন আইন অনুযায়ী ফলের ক্ষেত্রে কেজিতে ১০ টাকা লাভ করতে পারবেন এমন বিধান রয়েছে। তবে তরমুজের ক্ষেত্রে বিশেষ নির্দেশনা আছে। কেজিপ্রতি ৩ থেকে ৫ টাকার বেশি লাভ করতে পারবেন না। আর কেজি বা পিস যেভাবে কিনবে, সেভাবেই বেচতে হবে।
দুই বছর ধরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর জেলায় জেলায় অভিযান চালিয়ে তরমুজ বিক্রেতাদের জরিমানা করছে। এবারও কারওয়ান বাজারে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হয়েছে। তবে পাড়া-মহল্লায় কেজিতে বিক্রি, এটাই স্বাভাবিক চিত্রে পরিণত হয়েছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাগফুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কেজি হিসাবে বিক্রি করলে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
কোথায় এ রকম ঘটনা পেয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কারওয়ান বাজার, শান্তিনগর।’
কতজনকে কত টাকা জরিমানা করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। আমরা প্রতিদিন কম-বেশি জরিমানা করে থাকি।’
সর্বোচ্চ সাজা কতটুকু জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মূল্যতালিকা না থাকলে ৫০ হাজার। কেজি দরে বিক্রি করলেও সর্বোচ্চ সাজা ৫০ হাজার টাকা।’
আরও পড়ুন:চুয়াডাঙ্গায় অব্যাহত অতি তীব্র তাপপ্রবাহে ওষ্ঠাগত হয়ে পড়েছে জনজীবন। ভ্যাপসা গরমে অস্বস্তি বেড়েছে কয়েকগুণ।
শনিবার বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গা জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তীব্র থেকে অতি তীব্র আকার ধারণ করছে জেলার তাপপ্রবাহ। গরমে একটু স্বস্তি পেতে গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছে মানুষ। তবে, ভ্যাপসা গরমে স্বস্তি নেই কোথাও। আবহাওয়ার এমন বিরূপ আচরণের সঙ্গে কোনোভাবেই খাপ খাওয়াতে পারছে না জেলাবাসী। কেউ আবার পান করছেন ফুটপাতের অস্বাস্থ্যকর পানীয়। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করছে প্রাণিকূল। হাসপাতালে বাড়ছে গরমজনিত রোগীর সংখ্যা।
দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ডের ইজিবাইক চালক হারেজ আলী বলেন, ‘কঠিন তাপ পড়চি। সূর্য মনে হচ্চি মাতার উপর চলি এসিচে। আমরা গরীব মানুষ, পেটের দায়ে বাইরি বের হয়িচি। মাজে মাজে রাস্তার পাশের দুকান থেকি শরবত খেয়ি ঠান্ডা হচ্চি।’
চলমান দাবদাহে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে সেচ কার্যক্রম; নষ্ট হচ্ছে ধান, আম, লিচু ও কলাসহ মাঠের অন্যান্য ফসল।
মৌসুমের প্রায় সময়জুড়েই উত্তপ্ত থাকে চুয়াডাঙ্গা। এবারও চৈত্রের মধ্যভাগ থেকে শুরু হওয়া তাপমাত্রার এমন দাপট বৈশাখের আবহাওয়াকে জটিল করে তুলছে। এ যেন মরুর উষ্ণতা অনুভব করছে মানুষ।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘এ মাসের শেষের কয়েকদিন তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।’
আরও পড়ুন:মাদারীপুরে ইজিবাইকের সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতে সেটিকে পাশ দিতে গিয়ে যাত্রীবাহী একটি বাস খাড়ে পড়ে যায়। এতে অল্পের জন্যে জীবন রক্ষা পেয়েছে বাসের অন্তত ৬৫ যাত্রীর। তবে এ ঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত ৩০ জন।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুর জেলার ঘটকচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এসে বাস ও আহতদের উদ্ধার করে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, হাওলাদার পরিবহনের একটি বাস প্রায় ৬৫ জন যাত্রী নিয়ে বরিশাল থেকে সাতক্ষীরার উদ্দেশে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে ঘটকচর এলাকায় আসলে একটি ইজিবাইক রাস্তার মাঝে চলে আসে। দুর্ঘটনা এড়াতে ইজিবাইকটিকে পাশ দিতে বাসচালক দ্রুত মোড় নেয়ায় বাসটি রাস্তার পাশের খাদে চলে যায়। তবে খাদটি বেশি গভীর না হওয়ায় প্রাণে রক্ষা পেয়েছে বাসের যাত্রীরা। তবে আঘাত পেয়ে বাসের ভিতরে থাকা যাত্রীদের হাত-পায়ে একাধিক স্থানে কেটে গেছে। এ ঘটনায় ছোট-বড় মিলে প্রায় ৩০ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে মোস্তফাপুর হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয়দের সহযোগিতায় যাত্রীদের উদ্ধার করে।
দুর্ঘটনাকবলিত বাসটির যাত্রী সজীব হোসেন বলেন, ‘আমি অফিশিয়াল কাজে সাতক্ষীরা যাচ্ছিলাম। ঘটকচর স্ট্যান্ডের কিছুটা দূরে আসার সঙ্গে সঙ্গে হঠাৎ একটা ধাক্কা খেয়ে দুমড়ে মুচড়ে গেলাম। পরে দেখি বাসটি খাদে পড়ে গেছে। আমার নাকে কিছুটা আঘাত পেয়েছি। অন্য যাত্রীদেরও বেশ আঘাত লেগেছে।’
তিনি বলেন, ‘ইজিবাইক পাশ দিতে গিয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়কে ইজিবাইক নছিমন বন্ধ করা উচিত।’
এ ব্যাপারে মোস্তফাপুর হাইওয়ে থানার ওসি মোহাম্মদ মারুফ রহমান বলেন, ‘বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে অন্তত ৬৫ জন যাত্রী। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে গিয়ে দুর্ঘটনাকবলিতদের উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ইজিবাইকটি আটক করা যায়নি।’
আরও পড়ুন:বৃহত্তর চট্টগ্রামে রোববার থেকে ৪৮ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বৃহত্তর গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্যপরিষদ।
বাসের ধাক্কায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থী নিহত ও অপর একজন আহত হওয়ার ঘটনার জের ধরে গাড়ি পোড়ানোর প্রতিবাদে এই ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্যপরিষদের আহ্বায়ক ও হাটহাজারী পৌরসভার প্রশাসক মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী মঞ্জু শনিবার বলেন, ‘কয়েক দিনে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে আমাদের তিনটি বাস পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। গাড়ি পোড়ানো ও সড়কে নৈরাজ্যের প্রতিবাদসহ চার দফা দাবি আদায়ে আগামীকাল (রোববার) সকাল ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা, তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান এবং কক্সবাজার জেলায় এই ধর্মঘট পালিত হবে।’
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে সোমবার বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই চুয়েট শিক্ষার্থী নিহত হন। এর প্রতিবাদে ওইদিন থেকেই ১০ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় বাসে আগুন দেয়া হয়।
বুধবার ওই বাসের চালককে পুলিশ গ্রেপ্তার করলে শিক্ষার্থীরা কিছুটা শান্ত হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ২০ জনের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে তিন ঘণ্টা বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেখানে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসের মূল ফটকের সামনের সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ১১ মে পর্যন্ত চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার বিকেলে চুয়েট সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে শিক্ষার্থীদের হলত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই সময়ে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করতে পারবেন। যদিও জরুরি সিন্ডিকেট সভায় নেয়া সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সে সঙ্গে দাবি আদায়ে আবারও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
নওগাঁর সাপাহার উপজেলার আশড়ন্ড গ্রামের আম চাষি রবিউল ইসলাম ১০ বিঘা জমিতে আমের চাষ করেছেন। গত কয়েক দিনের তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে আমের গুটি ঝড়ে পড়েছে। পানি ও ওষুধ স্প্রে করেও মিলছে না সুফল।
শুধু রবিউল নয়, নওগাঁর সব আম বাগানগুলোতে বর্তমানে একই অবস্থা।
আমের নতুন রাজধানী হিসেবে খ্যাত নওগাঁর আম চাষিরা জানান, টানা দুই সপ্তাহ ধরে গরম ও তাপপ্রবাহে কারণে ঝরে পড়ছে আমের গুটি। পানি সেচসহ নানা পদ্ধতি অবলম্বন করেও ঝরে পড়া থেকে ঠেকানো যাচ্ছে না আমের গুটি। তাই চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।
এমন অবস্থায় কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন বাড়তি যত্ন নিলে গুটি পড়া রোধ অনেকটাই সম্ভব।
নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর নওগাঁয় ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আম চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৩০০ হেক্টর বেশি। প্রতি হেক্টর জমিতে ১৪ দশমিক ২৪ টন হিসেবে ৪ লাখ ৩১ হাজার ৫০০ টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
জেলার বিভিন্ন উপজেলার আমবাগান ঘুরে দেখা যায়, এবার আশানুরূপভাবে আমের দেখা নেই। আমের গুটি ঝরে পড়ে আছে রোদের তীব্রতায়।
চাষিরা জানান, খরা দীর্ঘস্থায়ী হতে থাকলে গুটিও ঝরতে থাকবে।
বৈশাখের শুরু থেকে তাপদাহে পুড়ছে নওগাঁ। শনিবার বেলা ১১টায় নওগাঁয় তাপমাত্রার পারদ উঠে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটিই জেলায় চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বলে জানায় জেলার বদলগাছী স্থানীয় আবহাওয়া অফিস।
আম চাষি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘১২ বিঘা জমিতে আমের বাগান আছে আমার। এবার সব গাছে মুকুল কম এসেছিল। যেটুকু ছিল, তা নিয়ে আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু চলতি মাসের শুরু থেকে তীব্র গরমে অধিকাংশ গাছের গুটি ঝরে গেছে। অনেক গাছ গুটিশূন্য হয়ে আছে। এতে উৎপাদন অনেক কম হবে বলে ধারণা করছি।’
পোরশা উপজেলার আম চাষি মোজাম্মেল ইসলাম বলেন, ‘এবার ৩০ বিঘা জমিতে চাষ করেছি। গাছে গুটি কম থাকায় হতাশা ও দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছি। গত বছর প্রচুর আম হয়েছিল। সে তুলনায় এবার অনেক কম পাব। অধিকাংশ গুটি ঝরে গেছে। ফলনে মারাত্মক বিপর্যয় দেখা দেবে বলে মনে করছি।’
নিয়ামতপুর উপজেলার আম চাষি বিজন ঘোষ বলেন, ‘এবার ১৫ বিঘা জমিতে আমের চাষ করেছি। গুটি পড়া রোধে পানি, ওষুধ দেয়ার পরও তীব্র গরম আর রোদের কারণে আমগুলো ঝরে পড়ছে। গাছে আম টেকানো যাচ্ছে না। আবার কালবৈশাখি ঝড় হলে আম নষ্ট হতে পারে মারাত্মকভাবে।’
সাপাহার উপজেলার স্থানীয় বরেন্দ্র অ্যাগ্রো পার্কের উদ্যোক্তা সোহেল রানা বলেন, ‘এ এলাকা এমনিতেই পানি সংকটাপন্ন এলাকা। এর মধ্যে শুরু হয়েছে তীব্র তাপপ্রবাহ, কোনো বৃষ্টি নেই। এ অবস্থা আরও কয়েকদিন চলতে থাকলে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ গাছ থেকে আমের গুটি ঝরে যাবে।
‘যে সব বাগানগুলোতে সেচের ব্যবস্থা আছে সে সব বাগানগুলোতে সেচ দেয়া হচ্ছে। আর যে সব বাগানে সেচের ব্যবস্থা নেই, সে সব বাগানগুলো থেকে আম ঝরে যাচ্ছে।’
এমন অবস্থায় তিনি সরকারের কাছে বাগানগুলোতে যেন সেচের ব্যবস্থা করে দেয়া হয় তার দাবি জানান।
এ বিষয়ে নিয়ে কথা হলে নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মেহেদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতি বছরই স্বাভাবিকভাবে এমন সময় গাছ থেকে আমের গুটি ঝরে পড়ে, তবে এই সময়ে গাছে বাড়তি পরিচর্যা করলে অস্বাভাবিকভাবে গুটি ঝরে পড়া বন্ধ হবে।
‘আম গাছের গোড়ায় পর্যাপ্ত সেচের পাশাপাশি প্রয়োজনে গাছের পাতায় পানি স্প্রে করা যেতে পারে। আমরা মাঠ পর্যায়ে চাষিদের আমের গুটি ঝরা রোধে সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমের উৎপাদনে বিপর্যয়ে কোনো আশঙ্কা নেই। কারণ আমের গুটি ঝরে যাওয়ার পরও যে পরিমাণ আম থাকবে তা দিয়েই আমাদের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব, তবে এমন পরিস্থিতিতে আমরা আম চাষিদের মাঠ পর্যায়ে নানাভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।’
আরও পড়ুন:বরিশালের বাকেরগঞ্জে শনিবার পল্লী বিদ্যুতের ছিঁড়ে পড়ে থাকা তারে স্পৃষ্ট হয়ে দুই শিশু সন্তানসহ এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
বেলা পৌনে ১২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানান বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আফজাল হোসেন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।
প্রাণ হারানো তিনজন হলো উপজেলার নিয়ামতি ইউনিয়নের ঢালমারা গ্রামের রিয়াজ মোল্লার স্ত্রী সনিয়া বেগম (২৫), তার ৯ বছর বয়সী ছেলে সালমান ও ১২ বছরের মেয়ে রেজবীনা।
বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আফজাল হোসেন বলেন, ‘ছিঁড়ে পড়া বিদ্যুতের তারে স্পৃষ্ট হয়ে মা ও তার দুই শিশু সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলে রয়েছি। বিস্তারিত জেনে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ইউএনও মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, ‘বাগানের ওপর দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পানির মধ্যে পড়ে রয়েছে। পাশে লেবু গাছ রয়েছে।
‘প্রথমে শিশু ছেলে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়। তাকে রক্ষা করতে মা ও বোন গিয়ে তারাও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে।’
ইউএনও জানান, ঘটনাস্থলে তিনিসহ পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম রয়েছেন। তারা ঘটনার তদন্ত করছেন। এ ঘটনায় দায়িত্বের অবহেলার প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নিয়ামতি ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোস্তফা কামাল হাওলাদারের স্ত্রী মমতাজ বেগম জানান, বাড়ির পাশে বাগানের ওপর দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে ডোবায় পড়ে ছিল। দুই ভাই-বোন লেবু ছিঁড়ে খেলছিল। ওই সময় লেবু ডোবায় পড়ে যায়। ওই লেবু আনতে ছেলে নেমে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। তখন মেয়ের চিৎকারে মা এসে তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। তখন মাকে ধরে মেয়েও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়।
তার কীভাবে ছিঁড়ে পড়ে ছিল, তা কেউ জানাতে পারেনি জানিয়ে মমতাজ বেগম বলেন, ‘বিদ্যুতের লোকদের বলা হয়েছিল বাগানের ওপর দিয়ে যাওয়া তার যেকোনো সময় ছিঁড়ে পড়তে পারে, কিন্তু তারা গুরুত্ব দেয়নি।’
পল্লী বিদ্যুত সমিতি-১ বাকেরগঞ্জ জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার সুবাস চন্দ্র দাস বলেন, ‘ঘটনা তদন্তে পৃথক দুইটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তাদের রোববারের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
স্থানীয়দের অভিযোগের বিষয়ে সহকারী জেনারেল ম্যানেজার বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন না পেলে বিষয়টি বলতে পারব না।’
আরও পড়ুন:ময়মনসিংহ সদরে বাসের সঙ্গে সিএনজি চালিত অটোরিকশার ধাক্কায় দুইজন নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন।
উপজেলার আলালপুর এলাকা শনিবার বেলা ১১টার দিকে সদরের আলালপুর এলাকায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. মাঈন উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘জেলার তারাকান্দা থেকে যাত্রীবাহী একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ময়মনসিংহের দিকে যাচ্ছিল। ময়মনসিংহ সদরের আলালপুর এলাকা পর্যন্ত আসতেই বিপরীত দিক থেকে আসা শেরপুরগামী একটি বাসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই দুইজন মারা যান।’
তিনি জানান, এ সময় আশপাশের লোকজন আহত অবস্থায় চারজনকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
নিহতদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে বলেও জানান ওসি মাঈন উদ্দিন।
ফরিদপুরের মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ১ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বারের সম্পৃক্ততার তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় মধুখালীর ঘটনা পরবর্তী সামগ্রিক বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ডিসি কামরুল আহসান তালুকদার।
সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামান তপন ও ওয়ার্ড মেম্বার অজিত কুমার সরকারকে ধরিয়ে দিতে পারলে বা তাদের ধরতে কোনো প্রকার তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে আর্থিক পুরস্কারের ঘোষণা দেন তিনি।
ডিসি বলেন, ‘চেয়ারম্যান ও মেম্বার এখন পলাতক। এরই মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের শনাক্ত করতে বিভিন্ন জেলায় অভিযান পরিচালনা করেছে। বিমানবন্দর ও সীমান্তে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে, যাতে তারা দেশত্যাগ করতে না পারে।
‘এ বিষয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে ধরিয়ে দিতে যেকোনো প্রকার তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে তাদের পুরস্কৃত করা হবে।’
গত ১৮ এপ্রিল রাতে ডুমাইন ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের পঞ্চপল্লীতে মন্দিরে আগুন লাগার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সন্দেহের জেরে দুই শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আহত হন আরও পাঁচ শ্রমিক।
পিটুনিতে হতাহতের ঘটনায় তিনটি মামলা করা হয়। এরই মধ্যে তিন মামলায় পুলিশ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য