রাজধানীর বিজয় সরণি ওভারব্রিজের নিচে দাঁড়িয়ে নানা বয়সী ও শ্রেণি-পেশার মানুষ। টিসিবির ট্রাক থেকে কিছুটা কম দামে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনার জন্য অপেক্ষা করছেন তারা।
বুধবার বেলা ১টার দিকে ৩০-৩৫ জনের জটলা থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বাড়ছিল। আবার অনেকে অধৈর্য হয়ে চলেও যাচ্ছিলেন। কেউবা টানা দাঁড়িয়ে থাকতে না পেরে পাশের গলি ও ফুটপাতে বসে পড়েন।
তাদের একজন রিকশাচালক শাফায়েত নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাজারে জিনিসের যা দাম, ইনকামে আর কুলায় না বাপু। দোকান থেইকে কিনতে গেলে ডাবল টাকা খরচ অয়। ইনকামও আগের মতো নাই।
‘আগে বউটা গার্মেন্টসে চাকরি করত। দুই বছর ধরে চাকরি নাই। তাই বউ-পোলাপাইন বাড়িত পাঠাইয়া দিছি। আগে বাসায় ছিলাম, এখন গ্যারেজে থাকি। মাস শেষে বাড়িতে যামু। তাই তেল, চিনি, ডাইল কিইন্না রাকমু মনে করছিলাম। এর লাইগা ৩ ঘণ্টা ধইরা দাঁড়ায় আছি। আরও ঘণ্টাখানেক দেখমু, তার পরও ট্রাক না আইলে চাইলা যামু।’
দেশের গড় আয় বাড়লেও তা নিম্নবিত্ত মানুষের লাভ-লোকসানের হিসাবে ধরা দেয় না। একই অবস্থা মধ্যবিত্তেরও।
অপেক্ষারত আরেকজন পঞ্চাশোর্ধ্ব হাসিনা বেগম বলেন, ‘দুই পোলা, এক পোলার বউ, দুই নাতি আছে বাসায়। এক পোলা সিকিউরিটির চাকরি করে। আরেকটা কারখানায় পিয়নের কাম করে। কোম্পানি করোনায় বেতন কমায় দিছিল, আর বাড়ায় নাই। পোলাগো একটু সাহায্য করার লাইগা এহানতুন তেল-চিনি কিনি। এয়ানে তেল দুই লিটার নেয় ২২০ টাকা, ডাইল-চিনি নেয় ৬০ টাকা। বাজারে গেলে মাতা ঘুরায়। দোয়ানে তেল ১৭০ টাকা, চিনি ৮০ টাকা, ডাইল ১২০ টাকা লাগব।’
শাফায়েত ও হাসিনা বেগম যখন সংসার চালাতে গিয়ে নিজেদের ত্রাহি অবস্থার কথা জানাচ্ছিলেন, তার আগের দিনই সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জানিয়েছে যে গত এক বছরে মানুষের গড় আয় বেড়েছে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা। শুধু গতকালের হিসাবেই বেড়েছে প্রায় ৩ হাজার টাকা। একজন মানুষের গড় আয় এখন প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার টাকা। আগের বছরও তা ছিল ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
এ নিয়ে কথা বললে হাসিনা বেগম বলেন, ‘আমারডা বাড়ে নাই? আর যদি বাড়েই তাহলে আমার ভাগেরটা গেল কোনে?’
বাস্তবতা হচ্ছে, দেশের গড় আয় বাড়লেও তা নিম্নবিত্ত মানুষের লাভ-লোকসানের হিসাবে ধরা দেয় না। একই অবস্থা মধ্যবিত্তেরও।
কথা হলো বাসযাত্রী চাঁদপুরের বাসিন্দা ফজলে রাব্বীর সঙ্গে। ঢাকার মোহাম্মদপুরে মা-বাবা ও স্ত্রী নিয়ে বসবাস করেন তিনি। মহাখালীর একটি প্রতিষ্ঠানে গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে কাজ করেন। রাব্বি জানালেন, ‘করোনার প্রায় এক বছর প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। চাকরি ছিল না, আয়ও ছিল না। এখন চাকরি মিললেও বেতন কমে গেছে প্রায় ৬ হাজার টাকা।
‘এক বছর আয়-রোজগার বন্ধ থাকলেও সংসার খরচ তো থেমে থাকেনি। পৈতৃক জমি বিক্রি করে এক বছরের সংসার খরচ চালাইতে হইছে।’
কোনো পণ্যের দাম এক বছরের ব্যবধানে বাড়ার হিসাবই মূল্যস্ফীতি। গত ডিসেম্বরে তা ৬ শতাংশ ছাড়িয়ে ৬.০৫ শতাংশ হয়েছে। নভেম্বরে এই হার ছিল ৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ।
মূল্যস্ফীতি
বিবিএসের হিসাবে চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই বাড়ছে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ সূচক মূল্যস্ফীতি। কোনো পণ্যের দাম এক বছরের ব্যবধানে বাড়ার হিসাবই মূল্যস্ফীতি। গত ডিসেম্বরে তা ৬ শতাংশ ছাড়িয়ে ৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ হয়েছে। নভেম্বরে এই হার ছিল ৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ।
দাম বাড়ায় ক্ষেত্রেবিশেষে শহরকেও ছাড়িয়ে গেছে গ্রাম। ৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতির অর্থ হচ্ছে- গত বছরের ডিসেম্বরে যে পণ্য কিনতে ১০০ টাকা লাগত এখন তা কিনতে লাগছে ১০৬ টাকা। এ সময় খাবার ছাড়া অন্যান্য পণের দাম বেড়েছে ৭ শতাংশ। আর খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
গত এক বছরের গড় হিসাবে ডিসেম্বর শেষে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ। যদিও সরকার চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে গড় মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৩ শতাংশে বেঁধে রাখার লক্ষ্য নিয়েছে।
জিনিসপত্রের দাম আসলে কেমন
বাজারে জিনিসপত্রের দামের হিসাব রাখে টিসিবি। তবে তাদের হিসাবটা নিত্যপ্রয়োজনীয় মোট পণ্যের একটি অংশমাত্র। তবে সংস্থাটি বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধির যে হিসাব দিয়েছে, তা মূল্যস্ফীতির হিসাবের সঙ্গে মেলে না। বেশির ভাগ পণ্যের দাম বৃদ্ধির হারই মূল্যস্ফীতির হিসাবের কয়েক গুণ।
চালের দাম বেশি বলে ভাত ছেড়ে আটা-ময়দায় ঝুঁকবেন তারও উপায় নেই। টিসিবির হিসাব বলছে- এক বছরে খোলা আটা ১১.২৯ শতাংশ বেড়ে সর্বোচ্চ ৩৬ টাকা, প্যাকেট আটা ২৬.৮৭ শতাংশ বেড়ে ৪৫ টাকা, খোলা ময়দা ৩৭.৬৮ শতাংশ বেড়ে ৫০ টাকা এবং প্যাকেট ময়দা ২৭.৩৮ শতাংশ বেড়ে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
টিসিবি তথা সরকারি হিসাব বলছে, মানুষকে সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে তেল, চাল ও মুরগির দাম। এক কেজি মোটা চাল কিনতেও এখন ৪৮ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। সরু চাল এক বছর আগে ছিল ৬০-৬২ টাকা কেজি। এখন তা ৬৮-৭০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। সে হিসাবে দাম বেড়েছে ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
চালের দাম বেশি বলে ভাত ছেড়ে আটা-ময়দায় ঝুঁকবেন তারও উপায় নেই। টিসিবির হিসাব বলছে- এক বছরে খোলা আটা ১১ দশমিক ২৯ শতাংশ বেড়ে সর্বোচ্চ ৩৬ টাকা, প্যাকেট আটা ২৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ বেড়ে ৪৫ টাকা, খোলা ময়দা ৩৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ বেড়ে ৫০ টাকা এবং প্যাকেট ময়দা ২৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেড়ে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
২০২০ সালের নভেম্বরের শুরুতে খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ৯০ টাকার আশপাশেই ছিল। এর পর থেকেই বাড়তে থাকে দাম, যা এখন ১৫৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ১০৫ টাকার বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়। এ সময়ে খোলা ও বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ৭০ শতাংশের মতো।
টিসিবি বলছে, দাম বাড়ায় পিছিয়ে নেই ডালও। বড় দানার মসুর ডাল এক বছর আগে ছিল সর্বোচ্চ ৭০ টাকা। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। মাঝারি মানের ডাল ৯০ টাকা থেকে বেড়ে ১১০ এবং দেশি বা ছোট দানার মসুর ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সে হিসাবে বড় দানায় ৪৪ এবং মাঝারিতে ২৬ শতাংশ দাম বেড়েছে। অ্যাংকর বা বুট ডালের দামও ১৮ শতাংশ বেড়ে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গত বছরের এ সময় দেশি পিঁয়াজের দাম কিছুটা বেশি ছিল, কেজি ৩৫ থকে ৪০ টাকা। এবার বিক্রি হচ্ছে ২৪ থেকে ৩৫ টাকায়। তবে আমদানি করা যে পিঁয়াজ ওই সময় ২০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। দাম বেড়েছে দ্বিগুণ বা ১০০ শতাংশ।
জিনিসপত্রের দাম কিন্তু একদিনে বাড়েনি। গত বছরজুড়েই ধীরে ধীরে দাম বাড়ছে। মানুষ বাধ্য হয়ে বাড়তি দামে পণ্য কিনছে। কেউ ছয় মাস পর বাজারে এলে পণ্যের দাম দেখে ভিরমি খাবেন।
কলমিলতা বাজারের মুদি দোকানি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘জিনিসপত্রের দাম কিন্তু একদিনে বাড়েনি। গত বছরজুড়েই ধীরে ধীরে দাম বাড়ছে। মানুষ বাধ্য হয়ে বাড়তি দামে পণ্য কিনছে। কেউ ছয় মাস পর বাজারে এলে পণ্যের দাম দেখে ভিরমি খাবেন। যেমন, ছয় মাস আগে হুইল পাউডারের কেজি ছিল ৭০ টাকার মতো; এখন তা ১১০ টাকা। এভাবে সব জিনিসেই দাম একটু একটু করে বেড়ে আকাশচুম্বী হয়ে গেছে।’
মুরগির দামের বর্তমান অবস্থা দেখে বোঝার উপায় নেই যে গত তিন মাস কী অবস্থায় ছিল। ব্রয়লার মুরগির দাম ২০০ টাকায় উঠেছিল। এখন তা ১৫০ টাকায় নেমেছে। যদিও স্বাভাবিক সময়ে ব্রয়লার মুরগির কেজি থাকে ১২০-১২৫ টাকার মধ্যে।
সব সময় ১৮০-১৯০ টাকা কেজিতে ঘোরাফেরা করা সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৬০-২৭০ টাকায়। কিছুদিন আগেই তা ছিল ৩০০ টাকার ওপর। মাংস ছেড়ে ডিম খাবেন সে উপায়ও নেই। ডিমের হালি ৩৮-৪০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করছে কয়েক মাস ধরেই।
সবজির বাজারের অবস্থাও সুবিধার নয়। শীত মৌসুমে সবজির দাম সব শ্রেণির ভোক্তার নাগালে থাকার কথা। অথচ বাজারে গ্রীষ্ম মৌসুমের চিত্র।
বাড্ডার সবজি বিক্রেতা মাসুদ হোসেন জানান, ‘শিম ৪৫-৫০ টাকা কেজি বেচতাছি। ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৩৫-৪০, শসা ও ক্ষীরা ৫০-৫৫, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০, মাঝারি আকারের লাউ প্রতিটি ৭০-৮০ টাকা।
‘এ ছাড়া করলা, বেগুন ও বরবটির কেজি ৮০ টাকা, গাজর ও মুলা ৩০-৪০ টাকা, কাঁচামরিচের কেজি ৫০ টাকা, লেবুর হালি ৩০ টাকা।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যবাজারের এই পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের কর্তাব্যক্তিদের বক্তব্যে কোনো উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বা পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস নেই।
পরিসংখ্যান ব্যুরো মূল্যস্ফীতির যে তথ্য প্রকাশ করে, তার সঙ্গে বাজারের পণ্যমূল্যের যথেষ্ট ফারাক থাকে। এ ক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য বিবিএসকে বাস্তবভিত্তিক তথ্য প্রকাশে মনোযোগ দিতে হবে।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম মঙ্গলবার প্রবৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয়ের হিসাব তুলে ধরা অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমাদের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আছে। এ নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই।’
আগের দিন সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘চালের দাম কিছুটা হলেও কমেছে। ১০ টাকা কেজি দরে গরিবদের ওএমএসে চাল দেয়া হচ্ছে। এ কারণে খাবারের হাহাকার নেই। তবে দাম একটু বেশি, সেটা ঠিক। পিঁয়াজের দাম কম। কিছুটা মুদ্রাস্ফীতি আর আন্তর্জাতিক বাজারেই ভোজ্যতেলের দাম বেশি হওয়ায় দেশের বাজারে তার প্রভাব পড়েছে।’
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের পরিসংখ্যান ব্যুরো মূল্যস্ফীতির যে তথ্য প্রকাশ করে, তার সঙ্গে বাজারের পণ্যমূল্যের যথেষ্ট ফারাক থাকে। এ জন্য পণ্যমূল্য নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন করেন। এ ক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য বিবিএসকে বাস্তবভিত্তিক তথ্য প্রকাশের দিকে মনোযোগ দিতে হবে।’
জলদস্যুর কবল থেকে মুক্ত জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ চট্টগ্রাম বন্দরে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে। জাহাজে বহন করা ৫৫ হাজার টন কয়লা খালাস ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এটি এখন দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দর থেকে আমিরাতের আরেক বন্দর মিনা সাকার উদ্দেশে যাত্রা করেছে। সেখানে পণ্য লোড করার পর জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে রওনা করবে।
মে মাসের মাঝামাঝিতে ২৩ নাবিকসহ জাহাজটি চট্টগ্রামে পৌঁছবে বলে ধারণা করছে মালিক পক্ষ কেএসআরএম গ্রুপ।
২৩ নাবিকসহ জাহাজটি ২১ এপ্রিল বিকেলে আল হামরিয়া বন্দরের বহির্নোঙরে নোঙর করে। জেটিতে নোঙর ফেলে ২২ এপ্রিল। এরপর শুরু হয় কয়লা খালাসের প্রক্রিয়া।
কেএসআরএম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আল হামরিয়া বন্দরে পণ্য খালাস করে শনিবার রাতে জাহাজটি মিনা সাকার নামে আরেকটি বন্দরের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। সেখান থেকে নতুন পণ্য নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে এমভি আবদুল্লাহ। মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ২৩ নাবিকসহ জাহাজটি চট্টগ্রামে নোঙর করবে বলে আমরা আশা করছি।’
প্রসঙ্গত, ১২ মার্চ সোমালিয়ার দস্যুরা ভারত মহাসাগর থেকে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি জিম্মি করে। পরে মুক্তিপণ দিয়ে জাহাজটি ১৩ এপ্রিল রাতে ছাড়া পায়। অর্থাৎ জিম্মি করার ৩২ দিন পর জাহাজটি মুক্তি পায়।
দেশের তিন জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র এবং পাঁচ জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ নিয়ে বলা হয়, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র দাবদাহ এবং টাঙ্গাইল, বগুড়া, বাগেরহাট, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলার পাশাপাশি রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগ এবং ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে, যা অব্যাহত থাকতে পারে।
দেশের কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেখানে মৃদু তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বইছে ধরা হয়।
তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তীব্র দাবদাহ ধরা হয়। অন্যদিকে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে বলা হয় অতি তীব্র দাবদাহ।
চুয়াডাঙ্গায় শুক্রবার বেলা তিনটায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ। একই দিনে পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
তাপমাত্রার বিষয়ে অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:দেশের বিভিন্ন স্থানে যেভাবে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা অব্যাহত থাকতে পারে। এর মধ্যে কোথাও কোথাও বৃষ্টিরও সম্ভাবনা রয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এতে বলা হয়, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল, বগুড়া, বাগেরহাট, যশোর, কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়োহাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।
অধিদপ্তর বলছে, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।
আবহাওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। আগামী পাঁচ দিনেও আবহাওয়াও প্রায় একই থাকতে পারে।
শুক্রবার দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়া ২০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশের কোথাও বৃষ্টি হয়নি বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
থাইল্যান্ডে রাষ্ট্রীয় সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির গভর্নর হাউসে শুক্রবার থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে তিনি এ মন্তব্য করেন বলে বার্তা সংস্থা ইউএনবির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, খাদ্য নিরাপত্তা, পর্যটন, জনস্বাস্থ্য, জ্বালানি ও আইসিটি খাতে সহযোগিতা জোরদারের সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে অনুভব করি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, খাদ্য নিরাপত্তা, পর্যটন, জনস্বাস্থ্য, জ্বালানি, আইসিটি, জনগণ থেকে জনগণে যোগাযোগ ও সংযোগের ক্ষেত্রে এবং বিমসটেকের অধীনে আমাদের সহযোগিতা জোরদার করার সুযোগ রয়েছে।’
এর আগে দুই নেতা গভর্নর হাউসে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে যোগ দেয়ার আগে ১৫ মিনিটের জন্য একান্ত বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি—একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও একটি লেটার অফ ইনটেন্ট (এলওআই) সই করা হয়।
মধ্যাহ্নভোজে শেখ হাসিনা বলেন, নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বন্ধুত্ব আমাদের ঐতিহাসিক, ভাষাগত ও অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, টেকসই উন্নয়ন, জনগণ থেকে জনগণে যোগাযোগ ও সংযোগসহ সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে আমাদের দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী থাভিসিন ও তিনি পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা করতে এবং দুই দেশের সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার মধ্যে আরও আলাপ-আলোচনাকে উৎসাহিত করতে সম্মত হয়েছি। একইভাবে দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগের প্রসার ও সুবিধার্থে আমাদের সব রকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘শুক্রবার ঢাকা ও ব্যাংকক যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই করেছে, তা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একটি দৃঢ় কাঠামো প্রদান করবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, সফরটি ‘প্রতিবেশী’ নীতির বৃহত্তর ফোকাসের অংশ, যা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গতি আরও নবায়নের জন্য দুই দেশকে চমৎকার সুযোগ করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে, এই সফর আমাদের দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীর করতে সাহায্য করবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, এই সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পূর্ণ সম্ভাবনায় অত্যন্ত প্রয়োজনীয় গতি সঞ্চার করবে।
তিনি বলেন, ‘এই সরকারি সফর আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে, যা আমাদের দুই দেশের মধ্যে ফলপ্রসূ অংশীদারত্বের এক নতুন যুগের সূচনা করেছে।
‘আগামী দিনগুলোয় আমাদের জনগণ ও দেশের পারস্পরিক সুবিধার জন্য আমাদের সম্পর্কের নতুন গতি বজায় রাখতে হবে।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণ করতে থাইল্যান্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কেও থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ কামনা করেছেন।
বার্তা সংস্থা ইউএনবির প্রতিবেদনে জানানো হয়, থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে শুক্রবার গভর্নমেন্ট হাউসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশি চিকিৎসাকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি তাকে বাংলাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণেরও প্রস্তাবও দিয়েছি।’
বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি, একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও একটি লেটার অফ ইনটেন্টে (এলওআই) সই করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ককে বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। আমাদের বন্ধুত্ব আমাদের ঐতিহাসিক, ভাষাগত ও অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত।
‘সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে আমাদের দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
এ নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গতিশীল অর্থনীতির সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে থাইল্যান্ডকে আমরা এক গুরুত্বপূর্ণ ও গতিশীল অংশীদার হিসেবে দেখি।’
বাণিজ্য সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের বর্তমান পরিসর বাড়ানোর জন্য দীর্ঘ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও ব্যবসা সহজীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমি প্রধানমন্ত্রীকে (থাভিসিন) আশ্বস্ত করেছি। আমি থাই পক্ষকে আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ করার ও শুধু থাইল্যান্ডের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছি।’
আরও পড়ুন:দেশের দুটি জেলায় অতি তীব্র ও ১৬টিতে তীব্র দাবদাহ চলছে জানিয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, সেটি অব্যাহত থাকতে পারে।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
বৃষ্টিপাতের বিষয়ে জানানো হয়, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ নিয়ে বলা হয়, চুয়াডাঙ্গা ও যশোর জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলা এবং খুলনা বিভাগের অন্যান্য জেলার (১০ জেলার মধ্যে বাকি আটটি) ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ঢাকা, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, বগুড়া, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
দেশের কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেখানে মৃদু তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বইছে ধরা হয়।
তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তীব্র দাবদাহ ধরা হয়। অন্যদিকে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে বলা হয় অতি তীব্র দাবদাহ।
তাপমাত্রার বিষয়ে অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ইউএনবি জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গভর্নমেন্ট হাউসে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান থাই প্রধানমন্ত্রী।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই পক্ষ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ও আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।
বৈঠকের পর দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এশিয়ার দুই দেশের মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় নথিতে সই করা হয়। দুই নেতার মধ্যে প্রায় ১৫ মিনিট একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
গভর্নমেন্ট হাউসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাই সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দলের দেয়া গার্ড অফ অনার পরিদর্শন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভর্নমেন্ট হাউসের অতিথি বইয়ে সই করার আগে স্রেথা থাভিসিন তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে তাকে পরিচয় করিয়ে দেন।
গভর্নমেন্ট হাউস ত্যাগ করার আগে শেখ হাসিনা সেখানে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে ছয় দিনের সরকারি সফরে বুধবার ব্যাংককে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য