× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Torture of immigrants 2 Bangladeshis jailed in Italy
google_news print-icon

অভিবাসনপ্রত্যাশী নির্যাতন: ইতালিতে ২ বাংলাদেশির জেল

অভিবাসনপ্রত্যাশী-নির্যাতন-ইতালিতে-২-বাংলাদেশির-জেল--
লিবিয়ার একটি বন্দিশিবিরে আশ্রিত অভিবাসনপ্রত্যাশীরা। ছবি: এএফপি
ইনফো মাইগ্রেশন বলছে, পাজরুল ও হারুন ২০২০ সালের ২৮ মে নৌকায় ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে সিসিলিতে পৌঁছান। এর পরই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান কয়েকজন অভিবাসনপ্রত্যাশী। সেখানে বলা হয়, মাসের পর মাস তাদের আটকে নির্যাতন করেন পাজরুল ও হারুন।

অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আটকে নির্যাতনের অভিযোগে দুই বাংলাদেশিকে ২০ বছর করে কারদণ্ড দিয়েছে ইতালির একটি আদালত। দণ্ড পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন পাজরুল এস এবং হারুন এম। তাদের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।

পালেরমো শহরের প্রিলিমিনারি হেয়ারিং জজ ক্লেলিয়া মেল্টেসের আদালত স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার এ রায় দেয়।

ইনফো মাইগ্রেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দোষীদের একজনের বয়স ৩৭; অন্যজনের ৩৩ বছর।

লিবিয়ার একটি বন্দিশিবিরে ২০২০ সালে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আটকে মারধরের অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে। ২০২০ সালের বছরের ৬ জুলাই তাদের আটক করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার আদালতে দোষী প্রমাণিত হন তারা।

পালেরমোর সরকারি কৌঁসলি (পিপি) গ্রে ফেরেরা মামলাটি পরিচালনা করেন।

ইনফো মাইগ্রেশন বলছে, পাজরুল ও হারুন ২০২০ সালের ২৮ মে নৌকায় ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে সিসিলিতে পৌঁছান। এর পরই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান কয়েকজন অভিবাসনপ্রত্যাশী। সেখানে বলা হয়, মাসের পর মাস তাদের আটকে নির্যাতন করেন পাজরুল ও হারুন।

গৃহযুদ্ধ আর অর্থনৈতিক মন্দা এড়াতে এশিয়া ও আফ্রিকার হাজারও মানুষ উত্তাল ভূমধ্যসাগর রাবারের নৌকায় পাড়ি দিয়ে লিবিয়া থেকে ইতালি পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। এদের সাহায্য করছে একটি শক্তিশালী চক্র।

গত মাসের শেষে ইতালি যাওয়ার পথে ঝোড়ো বাতাস ও তীব্র ঠান্ডায় ভূমধ্যসাগরের তিউনিসিয়া অঞ্চলে প্রাণ হারান সাত বাংলাদেশি যুবক।

তাদের পাঁচজনই মাদারীপুরের। বাকি দুজন সুনামগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জের। ইতালিতে বাংলাদেশ দূতাবাস গত রোববার তাদের পরিচয় প্রকাশ করে।

আরও পড়ুন:
‘ইতালি যাওয়ার পথে’ ৩ যুবক নিখোঁজ, বাবা-ছেলে গ্রেপ্তার
সীমান্তে ঠান্ডায় ৪ মৃত্যু, পরিবারটি ভারতীয়
দালালের ফাঁদে পড়ে বন্দি লিবিয়ায়
রোমানিয়ায় বন্দি: মুক্তিপণের টাকা দিতে ভিডিওবার্তায় আকুতি
একের পর এক বিয়ে করে ইরাকে পাচার, অবশেষে ধরা

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Eighth class pass doctor was doing surgery

অষ্টম শ্রেণি পাস ‘চিকিৎসক’ করছিলেন অস্ত্রোপচার

অষ্টম শ্রেণি পাস ‘চিকিৎসক’ করছিলেন অস্ত্রোপচার শুক্রবার ক্লিনিকটিতে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান চালান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ইউএনও আব্দুল্যাহ আল মামুন। ছবি: নিউজবাংলা
প্রতিষ্ঠানটি ক্লিনিক হিসেবে নিবন্ধনই করেননি তিনি। অপারেশন থিয়েটারের অবস্থাও তথৈবচ। তারপরও এই ক্লিনিকে রোগী নিয়ে ছুটে আসতেন স্বজনরা।

নওগার সাপাহার উপজেলা সদরে অবস্থিত সততা ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোম নামের একটি ক্লিনিক। ক্লিনিকটিতে সিজারিয়ান অপারেশনসহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসা দেয়া হয়। হাতের কাছেই একটি ক্লিনিক থাকায় আশপাশের মানুষ ছিলেন খানিকটা চিন্তামুক্ত। হঠাৎ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে অন্তত জেলা শহর পর্যন্ত যাওয়ার আগেই সেবা পাওয়া যাবে। তবে চিকিৎসা সেবার নামে ক্লিনিকটিতে চলছিল ভয়াবহ কর্মকাণ্ড।

ক্লিনিকটিতে যাবতীয় অপারেশন ও চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করতে মনিরুল ইসলাম স্বপন নামের চিকিৎসক পরিচয়দানকারী এক ব্যক্তি। তবে তার শিক্ষাগত যোগ্যতার তথ্যে সকলের চক্ষু ছানাবড়া। অষ্টম শ্রেণি পাস করে আর লেখাপড়া করেননি তিনি। তারপরও চিকিৎসকের ভূমিকায় দীর্ঘদিন অস্ত্রোপচার করে চলেছেন।

শুধু তাই নয়, প্রতিষ্ঠানটি ক্লিনিক হিসেবে নিবন্ধনই করেননি তিনি। অপারেশন থিয়েটারের অবস্থাও তথৈবচ। তারপরও এই ক্লিনিকে রোগী নিয়ে ছুটে আসতেন স্বজনরা।

শুক্রবার ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে উঠে এসেছে ভয়াবহ এসব তথ্য। পরে ক্লিনিকটি বন্ধ করে দিয়েছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আব্দুল্যাহ আল মামুনের পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালত। সেইসঙ্গে চিকিৎসক পরিচয়দানকারী মনিরুল ইসলাম স্বপনকে আটক করে একমাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ছয় হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও ৭ দিন কারাদণ্ড বর্ধিত করে তাকে থানায় নেয়া হয়।

অভিযান শেষে ইউএনও আব্দুল্যাহ আল মামুন সাংবাদিকদের জানান, সাপাহার উপজেলার তিলনা রোডের সরফতুল্ল্যাহ মাদ্রাসার সামনে সততা ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিলেন ক্লিনিকের পরিচালক ও ‘চিকিৎসক’ পরিচয়দানকারী মনিরুল ইসলাম স্বপন। কিন্তু ক্লিনিকের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও অপারেশন থিয়েটারের ফিটনেস দেখাতে পারেননি তিনি। তাছাড়া চিকিৎসক হিসেবে তার যোগ্যতা যাচাইয়ে দেখা যায় তিনি ডাক্তারই নন। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন তিনি। তাই ক্লিনিকটি বন্ধ করে তাকে কারা ও অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।

অভিযানের সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) শারমিন জাহান লুনা, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ রুহুল আমিনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন:
সকালে বন্ধ ঘোষণা, সন্ধ্যায় রাজশাহীর ক্লিনিকগুলোতে অস্ত্রোপচার শুরু
ভাঙ্গায় ব্যাংকের কার্ড প্রতারণা চক্রের ৫ সদস্য আটক
ডিজিটাল দরবেশ বাবার পকেটে প্রতারণার কোটি কোটি টাকা
বড় মাছের ‘টোপ’ দিয়ে ২৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেন চেয়ারম্যান
ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে অন্যের স্ত্রীকে বিয়ে করার অভিযোগ

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Canal filled roads waterlogging illegal connections torn wires electrified water
মিরপুরে ৪ প্রাণহানি

খাল ভরাটে সড়কে জলাবদ্ধতা, অবৈধ সংযোগের তারে বিদ্যুতায়িত পানি

খাল ভরাটে সড়কে জলাবদ্ধতা, অবৈধ সংযোগের তারে বিদ্যুতায়িত পানি অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের তার বেড়িয়েছে এসেছে, দুর্ঘটনার সময় পানি জমেছে সড়কে এবং বস্তিতে অবৈধ বিদ্যুতের লাইন (বাঁ থেকে) । ছবি: নিউজবাংলা
সড়কটির পাশে খাল ভরাট করায় বৃষ্টি হলেই ওই এলাকায় পানি আটকে থাকে। জলাবদ্ধ হয়ে থাকে পুরো এলাকা। আর যে বিদ্যুতের লাইনের লিকেজ তার এই পানিতে পড়ে পানি বিদ্যুতায়িত হয়েছে, সেই বিদ্যুতের সংযোগই অবৈধ।

রাজধানীর মিরপুর কমার্স কলেজসংলগ্ন ঝিলপাড় বস্তির বিপরীত পাশে হাজী রোডে বি ব্লকের মুক্তা ফার্মেসির সামনে বৃষ্টির পানিতে বিদ্যুতায়িত হয়ে মৃত্যু হয়েছে চারজনের। অবৈধভাবে নেয়া বিদ্যুৎ সংযোগের লিকেজ থেকে এ সড়কে জমে থাকা পানি বিদ্যুতায়িত হওয়ার খবর হয়তো জানতেন না এদের কেউই। তবে যারা সেখানকার স্থানীয়, তারা অনেক দিন ধরেই ধারণা করতেন এমন বড় বিপদের।

সড়কটির পাশে খাল ভরাট করায় বৃষ্টি হলেই ওই এলাকায় পানি আটকে থাকে। জলাবদ্ধ হয়ে থাকে পুরো এলাকা। আর যে বিদ্যুতের লাইনের লিকেজ তার এই পানিতে পড়ে পানি বিদ্যুতায়িত হয়েছে, সেই বিদ্যুতের সংযোগই অবৈধ।

বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীতে মুষলধারে বৃষ্টিতে পানি জমে যায় অনেক সড়কে। এর মধ্যে একটি হলো মিরপুরের ওই এলাকা। রাত ১০টার দিকে ওই সড়ক দিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান ৩০ বছরের মো. মিজান, তার স্ত্রী ২৫ বছরের মুক্তা বেগম, মেয়ে ৭ বছরের লিমা। তাদের বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছ ২০ বছর বয়সী মো. অনিকের। তবে পানি থেকে উদ্ধার করা মিজানের ৭ মাস বয়সী ছেলে হোসাইন প্রাণে বেঁচে গেছে।

নিউজবাংলার অনুসন্ধানে এই চারজনের মৃত্যুর জন্য দুটি কারণ পাওয়া যায়। একটি বিদ্যুতের অবৈধ সংযোগ ও অন্যটি খাল ভরাট।

খাল ভরাটে সড়কে জলাবদ্ধতা, অবৈধ সংযোগের তারে বিদ্যুতায়িত পানি
অবৈধভাবে নেয়া সংযোগের তার লিকেজ বেরিয়ে এসেছে ড্রেন দিয়ে । ছবি: নিউজবাংলা

অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঝিলপাড় বস্তির সামনে ও হাজী রোডের পেছনে মিরপর-২ ডুইপ আবাসিক এলাকার বি ব্লকের দুই নম্বর রোডে থাকা বিদ্যুতের পিলার থেকে ওই বস্তির অবৈধ বিদ্যুতের লাইন নেয়া হয়েছে। যে দুটি পিলার থেকে এই অবৈধ সংযোগ নেয়া হয়েছে, সেখানে গিয়ে সংযোগের তার কাটা অবস্থায় দেখা যায়। এই দুই পিলারের একটির অবস্থান মুক্ত ফার্মেসি ভবনের পেছনে।

মুক্তা ফার্মেসির ভবনের লাগোয়া সিরাজিয়া ইসলামিয়া মাদরাসার ছাদ দিয়ে লাইন টানা হয়েছে। এই লাইন ভবনের দেয়াল দিয়ে নামানো হয়েছে ভবনের সামনের ড্রেনে। কেউ যাতে না বুঝতে পারে এই কারণে মাদরাসার ছাদে ও ভবনের যে দেয়াল দিয়ে তার টানা হয়েছে; এই অংশ সিমেন্ট-বালু দিয়ে প্লাস্টার করে ঢাকা হয়েছে। এই প্লাস্টারের ভেতর দিয়ে এখনো তার দেখা যাচ্ছে।

প্লাস্টার পার হয়ে সামনের ড্রেনের ভেতর দিয়ে বস্তিতে তার টানা হয়েছে। ড্রেনের ভেতরের তার কসটেপ দিয়ে পেঁচানো হয়েছে। আর এই তারের লিকেজেই বিদ্যুতায়িত হয় সড়কের পানি, যাতে হয়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

মুক্তা ফার্মেসি ও ভবনটির মালিক জসিম উদ্দিন পাটোয়ারী। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীও তিনি।

চোরাই লাইনের বিষয়ে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘বিদ্যুতের চোরাই লাইনগুলো আমার বাসার পেছনে ডুইপ আবাসিক এলাকার বি ব্লকের দুই নম্বর রোডের পিলার থেকে নেয়া হয়েছে। অধিক লোডের কারণে এই পিলারে মাঝে মাঝেই আগুন জলে ওঠে। পিলার থেকে লাইন টেনে আমার ভবনের লাগোয়া সিরাজিয়া ইসলামিয়া মাদরাসার ছাদ দিয়ে লাইন টানা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বিদ্যুতের অবৈধ লাইন টানার স্থান দিয়ে প্লাস্টার করে বিদ্যুতের লাইন ঢাকা হয়েছে। বস্তিবাসী মাঝে মাঝে গভীর রাতে প্লাস্টার ভেঙে লাইন ঠিক করে। আমার ছোট মেয়ে অসুস্থ। প্লাস্টার ভাঙার শব্দ ও পিলারে আগুন জলার কারণে আমার অসুস্থ ছোট মেয়ে ভয় পায়। তাই তাকে তার বড় বোনের বাসায় রেখেছি।’

জসিম উদ্দিন বলেন, ‘অবৈধ বিদ্যুতের লাইনের জন্য আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। কখন যে আগুন লেগে আমার বাসা পুড়ে যায়।’

ঝিলপাড় বস্তিতে যেসব বাসা ভাড়া দেয়া হয়, তার সঙ্গে বিদ্যুৎ বিলও যুক্ত করা হয়। এ কারণে যারা বাসা ভাড়া দেন তাদের বেশিরভাগই বিদ্যুতের চোরাই লাইন ব্যবহার করেন। অবশ্য এই বস্তিতে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) কিছু প্রিপেইড মিটার রয়েছে। এ ক্ষেত্রে এক মিটার থেকে একাধিক বাসায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া আছে।

খাল ভরাটে সড়কে জলাবদ্ধতা, অবৈধ সংযোগের তারে বিদ্যুতায়িত পানি
খাল দখল করে স্থাপনা। ছবি: নিউজবাংলা

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বস্তির একাধিক ব্যক্তি নিউজবাংলাকে বলেন, যারা বস্তি নিয়ন্ত্রণ করেন তারা ডেসকোর সঙ্গে যোগসাজসে বিদ্যুতের চোরাই লাইন বস্তিতে সংযোগ করেছেন। প্রতিমাসে ডেসকোর লোকজন চোরাই লাইন বাবদ টাকা নিয়ে থাকেন।

নিহত অনিকের মামা মোক্তার হোসেন বলেন, ‘ডেস্কোর লোকজন চাইলেই চোরাই লাইন বন্ধ করতে পারে। তারা করবে না। কেন করবে না সেটা আপনারা জানেন। ডেসকোর কাছে একটাই চাওয়া এরকম দুর্ঘটনা যেন আর না ঘটে।’

বস্তিতে বেশ কয়েকজন ঘর ভাড়া দিয়ে থাকেন। তারাই এই চোরাই লাইন ডেসকোর সহযোগিতায় চালিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর সঙ্গে লাইলি, মমিন, জাহাঙ্গীর, আলমগীর মোল্লার স্ত্রী ও শ্যালিকাসহ আরও অনেকে জড়িত বলে দাবি করে স্থানীয়রা।

যা বলছে ডেসকো

চোরাই লাইন ও বস্তির নিয়ন্ত্রকদের সঙ্গে ডেসকোর কর্মকর্তাদের যোগসাজশের অভিযোগের বিষয়ে জানার পর ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. কাওসার আমীর আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি অবশ্যই এই বিষয়ে তথ্য নেব। আমাদের কর্মকর্তাদের বিষয়ে যে অভিযোগ এ রকম তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে চোরাই লাইন থাকতে পারে। আমরা প্রতিনিয়ত এই সব জায়গায় দিনে ও রাতে অভিযান চালাই। ’

ঝিলপাড় বস্তি এলাকায় সুষ্ঠুভাবে বিদ্যুতের লাইন দেয়া যায় না এবং ভেতরে লাইন টানা যায় না- এ কারণেই এই ধরনের ঘটনা বলে জানান এই প্রকৌশলী। এ ছাড়া চোরাই লাইন এখানে চলে বলেও স্বীকার করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমাদের কারো জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে অবশ্যই আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। এ ছাড়া বস্তি এলাকা নিয়ন্ত্রণ করা কতটা কষ্টকর সেটা আপনারা জানেন। তবে প্রতিনিয়ত ম্যাজিস্ট্রেট পাঠিয়ে ও টিম পাঠিয়ে আমরা তদারকি করছি।’

মিরপর-২ ডুইপ আবাসিক এলাকার বি ব্লকের দুই নম্বর রোডের পিলার থেকে যে বিদ্যুতের অবৈধ লাইন টানা হয়েছে, এটা কি এতদিন জানতেন- এমন প্রশ্নে ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘আমি নিজে তো আর দেখি নাই। আমরা প্রতিনিয়ত টিম পাঠিয়ে তার কেটে নিয়ে আসি। প্রতি দিন তো আর যাওয়া হয় না।

‘সপ্তাহে একবার গিয়ে তার কেটে নিয়ে আসে। যখন কেটে নিয়ে আসি, তার পর আবার একই অবস্থা। এই ধরনের কাজে আমরা যাদের নাম পেয়েছি তাদের বিরুদ্ধে মামলাও করেছি।’

যারা অবৈধ লাইন টানেন তাদের কাউকে কি আপনারা এখনো আইনের আওতায় আনতে পেরেছেন- এমন প্রশ্নে এই প্রকৌশলী কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

তিনি বলেন, ‘আমরা চারজনের মৃত্যুর ঘটনায় একটা তদন্ত কমিটি করবো। আমাদের পক্ষ থেকে যত ধরনের ব্যবস্থা নেয়া দরকার আমরা সেটা করবো।’

খাল ভরাটে সড়কে জলাবদ্ধতা, অবৈধ সংযোগের তারে বিদ্যুতায়িত পানি
কান্নায় ভেঙে পড়েন মুক্তার মা। ছবি: নিউজবাংলা

খাল ভরাট

ঝিলপাড় বস্তি ও সামনের হাজী রোড ঢালু এলাকা। বৃষ্টিতে মিরপুর-২ এলাকার পানি গড়িয়ে এই হাজী রোডে নামে। ৩/৪ বছর আগে এই পানি ঝিলপাড় বস্তির পূর্ব পাশে থাকা ৪০ ফিট প্রশস্ত খাল দিয়ে চলে যেত। এতে এই এলাকা ও বস্তিতে জলাবদ্ধতা হতো না।

তবে দুই থেকে তিন বছর ধরে এই খাল ভরাট করা হয়েছে। ৮-৯ মাস আগে বস্তির পেছনে থাকা দারুল আমান গৃহ নির্মাণ সমিতি লিমিটেড কর্তৃপক্ষ খালটি ভরাট করে একটি মসজিদ নির্মাণ করে। মসজিদের সামনের অংশের কাজ এখনো চলমান।

অভিযোগ আছে, এই মসজিদে দারুল আমান গৃহ নির্মাণ সমিতি লিমিটেডের আওতায় থাকা ভবনের মানুষ ছাড়া বস্তিবাসীদের নামাজ আদায় করতে দেয়া হয় না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বস্তির একাধিক বাসিন্দা নিউজবাংলাকে বলেন, খালটা যখন চালু ছিল তখন মিরপুর-২ নম্বর এলাকা থেকে যে পানি আসতো এই পানি খাল দিয়ে চলে যেত। বস্তির পেছনে একটি ঝিল এখনো আছে। খাল দিয়ে এই ঝিল হয়ে পানি চলে যেত। কিন্তু ২-৩ বছর ধরে এই খাল ভরাট করেছে দারুল আমান গৃহ নির্মাণ সমিতি লিমিটেড কর্তৃপক্ষ। আর ৮ মাস আগে মসজিদ নির্মাণ করেছে তারা।

স্থানীয়রা বলেন, ৪০ ফিট প্রস্থের এই খালের ওপরে মসজিদ বানিয়ে খাল দখল করা হয়েছে। আমরা বস্তির লোকজন মিলে খাল দখল করার সময় অনেক বাধা দিয়েছিলাম।

খাল ভরাটে সড়কে জলাবদ্ধতা, অবৈধ সংযোগের তারে বিদ্যুতায়িত পানি
খাল দিয়ে পানি মেশার কথা এই স্থানে, অথচ তা আটেকে যায় সড়কে। ছবি: নিউজবাংলা

বস্তিবাসীরা অভিযোগ করে বলেন, খালটা বন্ধ না করলে রাস্তায় পানি জমতো না। আর পানি না জমলে চারটা মানুষকে মরতে হতো না।

এই হাউজিং ঘুরে এবং কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে এখানকার হাউজিং কর্তৃপক্ষের কারও ফোন নম্বর পাওয়া যায়নি।

দারুল আমান গৃহ নির্মাণ সমিতির সিকিউটিদের প্রধান মো. সামসুলের কাছে এই হাউজিংয়ের কর্তৃপক্ষের নম্বর চাইলে তিনি বলেন, ‘এই হাউজিংয়ে নতুন কমিটি হয়েছে। কারও নম্বর আমার কাছে নাই।’

খাল ভরাটের বিষয় ‘জানত না’ সিটি করপোরেশন

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) মো. সেলিম রেজা জানান, খাল ভরাটের বিষয়টি সিটি করপোরেশন জানত না।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এটা কয়েকটা ঘটনার সমাহার। ডেসকোর অবৈধ বিদ্যুতের লাইন মাদরাসার ভেতর দিয়ে নিয়েছে। এই তার সেখানে পড়ে ছিল। তা ছাড়া এখানে পানি প্রবাহ ডায়ভার্ট করা হয়েছে। খাল দখল করে মসজিদ তৈরি করেছে। মসজিদ রাতারাতি ভেঙে দেয়া যায় না।

‘আমাদের কাছে খাল দখল করে মসজিদ বানানোর বিষয়ে কেউ অভিযোগ দেয়নি। আমাদের অবগত করলে আমরা এলাউ করতাম না। লোকালি কারা কারা জড়িত এই খাল দখলে সেটা খতিয়ে দেখা হবে।’

খাল দখলের সময় বস্তিবাসী বিক্ষোভ করেছে- এমন প্রশ্নে সেলিম রেজা বলেন, ‘খতিয়ে দেখলে বোঝা যাবে অভিযোগের বিষয়তা কতটুকু ঠিক।’

২/৩ বছর ধরে খাল দখল করা হয়েছে। এটা তো রাতারাতি হয় নাই। এটা তো দেখভালের দায়িত্ব আপনাদের। উত্তরে তিনি বলেন, ঢাকা শহরের অনেক খাল ভরাট হয়ে গেছে। এই খাল কারা ভরাট করেছে, কিভাবে ভরাট করেছে, কেন উদ্ধার হয় নাই এটার জন্য যারা দাতিত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি তাদেরকে এর জবাব দিতে হবে।

এই এলাকার সিটি কর্পোরেশনের জনপ্রতিনিধি তার এলাকার খাল ভরাটের খবর রাখেন না, নাকি তিনিই জড়িত- এমন প্রশ্নের উত্তরে সেলিম রেজা বলে, এটা আমার নলেজে নাই। যাদের এই খাল ভরাটের বিষয়টি আমাদের নলেজে আনার কথা তারা নলেজে না আনলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

যাদের দায়িত্ব তারা আপনাকে জানালে অবশ্যই আপনি এই খাল ভরাটের বিষয়টি জানতে পারতেন, কিন্তু তারা আপনাকে তা জানায়নি- এমন প্রশ্নে সেলিম রেজা বলেন, ‘এটা তদন্ত করে দেখবো। কেউ এটার দায় এড়াতে পারবে না। মেয়র মহোদয়ের সঙ্গে আলাপ করে আমরা তদন্ত কমিটি করবো।’

খাল ভরাটে সড়কে জলাবদ্ধতা, অবৈধ সংযোগের তারে বিদ্যুতায়িত পানি
অবৈধভাবে নেয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। ছবি: নিউজবাংলা

কেমন আছে হোসাইন

শুক্রবার দুপুরে বস্তির ভেতরে একটি টিনশেড ও আধাপাকা বাসার দোতলায় গিয়ে এক নারীর কোলে দেখা যায় বাবা-মা-বোন হারানো হোসাইনকে। ওই নারীকে হোসাইনকে চামচে করে পানি খাওয়াচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘ডাক্তার প্রচুর পানি খাওয়াতে বলেছে।’

এ সময় হোসাইন ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেঁদে উঠতে থাকে। শিশুটিকে দেখে মনে হচ্ছিল সে তার মায়ের কোল চাচ্ছে। কিন্তু তার মা, বাবা ও বোন তখন মর্গের ফ্রিজে। হোসাইনকে ঘিরে ছিল অনেকেই। সবাই তার কান্না থামানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু সে থামছেই না। হোসাইনের কান্না শুনতে শুনতেই এই প্রতিবেদক ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

খাল ভরাটে সড়কে জলাবদ্ধতা, অবৈধ সংযোগের তারে বিদ্যুতায়িত পানি
শিশু হোসাইন শুধু কাঁদছে। ছবি: নিউজবাংলা

মুক্তার মায়ের বাসায় বেড়াতে এসে মৃত্যু

বস্তিতে গিয়ে দেখা যায়, পানিতে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যাওয়া মুক্তার মা কুলসুম বেগম কাঁদতে কাঁদতে চুপ হয়ে গেছেন। কারো সঙ্গে কথা বলছেন না। তিনি নিজেও অসুস্থ। কিছুক্ষণ পর পর কেঁদে উঠছেন। তাকে বস্তির অন্য নারীরা সান্ত্বনা দিচ্ছেন। কুলসুম বেগম তার স্বামী ও দুই বাচ্চাসহ বস্তিতে থাকেন।

পরে কথা হয় কুলসুম বেগমের প্রতিবেশী এবং ঘটনাস্থলের বিপরীত পাশে বস্তির সামনে গ্যাস সিলিন্ডারের দোকানি ও তার স্ত্রী লাবনীর সঙ্গে। তাদের সঙ্গেই শেষ কথা হয় মুক্তা ও তার স্বামীর।

লাবনী ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মুক্তা তার স্বামী ও দুই সন্তানসহ বুধবার গ্রাম থেকে ঢাকায় আসে। মুক্তিযুদ্ধ কমপ্লেক্সের পাশে তাদের বাসা। মুক্তার মা বাবা থাকে ঝিলপাড় বস্তিতে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় মুক্তা তার পরিবার নিয়ে বস্তিতে তার মায়ের বাসায় আসে। রাতে খাওয়াদাওয়া শেষ করে বৃষ্টির মধ্যেই তারা বের হয়। আমার স্বামীকে যাওয়ার সময় সালাম দেয় মুক্তা ও তার স্বামী মিজান। পরে খোঁজ খবর নিয়ে মিজান বলে, কাকা যাই গা। পরে রাস্তায় ওই পারে চলে যায়।’

তিনি বলেন, ‘মুক্তার মা ৫০ টাকা দিয়ে বলেছিল রিকশা দিয়ে যেও। এর কিছুক্ষণ পরই এই ঘটনা। পরে বাচ্চাটাকে একজন পানি থেকে টেনে তুলে একজনের হাতে দেয়। পরে ছোট বাচ্চাটা বাঁচছে। মিজান ফুচকা ও ঝালমুড়ি বিক্রি করতেন। মিজানের বাড়ি বরিশাল। মুক্তার বাড়ি ভোলা।’


মৃত্যুর এক দিন আগেই বিবাহবিচ্ছেদ হয় অনিকের

অনিক অটোরিকশাচালক ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে বৃষ্টি শুরু হলে কমার্স কলেজসংলগ্ন ঝিলপাড় বস্তির বিপরীত পাশে একটি দোকানের সামনে অপেক্ষা করছিলেন তিনি। বৃষ্টির কারণে সেখানকার রাস্তা তলিয়ে যায়। মৃত্যুর ফাঁদ ওয়ে ওঠা সড়কটিতে মিজান-মুক্তা দম্পতি ও সন্তানেরা বিদ্যুতায়িত হলে তাদের উদ্ধার করতে গিয়ে মারা যান অনিক।

অনিকের মামা মোক্তার হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অনিকের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোণার খালিয়াজুড়ি উপজেলার সাতগাঁও গ্রামে। এক বছর আগে অনিক বিয়ে করেছিল। বুধবার বিকেলেই অনিকের স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়। আর বৃহস্পতিবার রাতে সে মারা গেল। ঢাকাতে সে একাই থাকত। ’

খাল ভরাটে সড়কে জলাবদ্ধতা, অবৈধ সংযোগের তারে বিদ্যুতায়িত পানি

মামলা ও পুলিশের ভাষ্য

অবহেলাজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে উল্লেখ করে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিহত অনিকের বাবা বাবুল মিয়া মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন বলে জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে সব তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেছি। রাত থেকেই বিষয়টা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। বিকেলে মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে তাদের পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এই ঘটনায় যার-ই দায় পাওয়া যাবে তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

আরও পড়ুন:
শিশু হোসাইনকে বাঁচানোর গল্প শোনালেন আমেনা বেগম
বৃষ্টির পানিতে বাবা-মা-বোন হারানো শিশু হোসাইন হাসপাতাল ছেড়েছে
ঢাকায় জলমগ্ন সড়কে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৪ জনের মৃত্যু

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Amena Begum narrated the story of saving the child Hossain

শিশু হোসাইনকে বাঁচানোর গল্প শোনালেন আমেনা বেগম

শিশু হোসাইনকে বাঁচানোর গল্প শোনালেন আমেনা বেগম কোলে নিয়ে চামচে করে শিশু হোসাইনকে পানি খাওয়াচ্ছেন এক নারী। ছবি: নিউজবাংলা
আমেনা বেগম বলেন, ‘আমি (হোসেনকে) বাসায় নিয়ে ভিজা জামাকাপড় খুলে, তেল-পানি দিয়ে, কম্বল পেচিয়ে হাসপালে নিয়ে গেছি। প্রথমে মিরপুর ২ নম্বর শিশু হাসপালে নিলে সেখান থেকে ফেরত পাঠায়। পরে আরও তিন হাসপালে যাই। সব হাসপাতালগুলোতে একই কথা বলে- এটা পুলিশ কেস, আমরা ধরব না।’

মিরপুরের ঝিলপাড় বস্তির বিপরীত পাশে হাজী রোডের বি ব্লকে মুক্তা ফার্মেসির সামনে বৃহস্পতিবার রাতে রাস্তায় জমে থাকা পানিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক পরিবারের তিনজনসহ মোট চারজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছে নিহত মিজান-মুক্তা দম্পতির সাত মাস বয়সী হোসাইন নামের শিশু সন্তান।

চিকিৎসা শেষে শিশু হোসাইনকে বস্তিতে নিয়ে আসা হয়েছে। বস্তিবাসীই তার দেখাশোনা করছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বস্তির ভেতরে একটি আধাপাকা টিনশেড বাসার দোতলায় গিয়ে দেখা মেলে শিশু হোসাইনের। এক নারীর কোলে নিয়ে চামচে করে পানি খাওয়াচ্ছেন তাকে। কারণ ডাক্তার তাকে প্রচুর পানি খাওয়াতে বলেছেন।

পানি খাওয়ানোর সময় মাঝে মাঝেই ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠছিল হোসাইন। মনে হচ্ছিল যেন সে তার মায়ের কোল চাচ্ছে। কিন্তু তার মা, বাবা ও বোন তখন মর্গের ফ্রিজে।

হোসাইনকে ঘিরে রয়েছে অনেকেই। সবাই তার কান্না থামানোর চেষ্টা করছেন। তার কান্না শুনতে শুনতেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন নিউজবাংলার প্রতিবেদক।

বস্তিবাসীরা জানান, অমন দুর্যোগের রাতে তাকে (হোসাইন) বাঁচাতে অনেক ঝড়ঝাপটা পার করতে হয়েছে তাদের।

হোসাইন তার মায়ের কোলে ছিল। তার মা মুক্তা যখন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন, তখন তার কোল থেকে ছিটকে পানিতে খানিকটা দূরে গিয়ে পড়ে হোসাইন। পরে তাকে পানি থেকে একজন তুলে এনে এক নারীর হাতে দেন। ওই নারীর কাছ থেকে হোসাইনকে ঘরে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন বস্তির বাসিন্দা আমেনা বেগম।

ঘটনা বর্ণনা দিতে গিয়ে নিউজবাংলাকে আমেনা বেগম বলেন, ‘আমি (হোসেনকে) বাসায় নিয়ে ভিজা জামাকাপড় খুলে, তেল-পানি দিয়ে, কম্বল পেচিয়ে হাসপালে নিয়ে গেছি। প্রথমে মিরপুর ২ নম্বর শিশু হাসপালে নিলে সেখান থেকে ফেরত পাঠায়। পরে আরও তিন হাসপালে যাই। সব হাসপাতালগুলোতে একই কথা বলে- এটা পুলিশ কেস, আমরা ধরব না। সবখান থেকেই আমাদের ফেরত পাঠায়।’

তিনি বলেন, ‘পুলিশ কেস বলে কেউ চিকিৎসা দেয় নাই। পরে ঢাকা মেডিক্যালে গিয়ে চিকিৎসা দিছি। বৃষ্টিতে সারা রাস্তায় জ্যাম ছিল। কীভাবে যে বাচ্চাটাকে নিয়ে মেডিক্যাল থেকে মেডিক্যাল ঘুরছি, আল্লাহ ভালো জানেন।’

যারা একটা বাচ্চাকে এই অবস্থায়ও চিকিৎসা দিতে পারে না, তারা কেন মেডিক্যাল খুলেছে- প্রশ্ন আমেনা বেগমের।

প্রসঙ্গত, রাজধানীতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়। এ সময় বজ্রপাতের ঘটনাও ঘটে। টানা ৬ ঘণ্টার বৃষ্টিতে রাজধানীর প্রধান সড়কসহ অলিগলি তলিয়ে যায়। বেশির ভাগ জায়গায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে যান চলাচল ব্যাহত হয়।

আরও পড়ুন:
বৃষ্টির পানিতে বাবা-মা-বোন হারানো শিশু হোসাইন হাসপাতাল ছেড়েছে
ঢাকায় জলমগ্ন সড়কে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৪ জনের মৃত্যু

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Bus CNG workers clash in Naogaon 20 injured

নওগাঁয় বাস-সিএনজি শ্রমিকদের সংঘর্ষ, আহত ২০

নওগাঁয় বাস-সিএনজি শ্রমিকদের সংঘর্ষ, আহত ২০ শুক্রবার মান্দা ফেরিঘাট এলাকায় রাস্তার ওপর আড়াআড়িভাবে বাস রেখে যান চলাচল বন্ধ করে দিলে অটোরিকশা শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে। ছবি: নিউজবাংলা
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথমে অটোরিকশা শ্রমিকরা সাবাইহাট বাজার এলাকায় দুটি বাস ভাঙচুর করেন। পরে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের শ্রমিকরা সংঘবদ্ধ হয়ে ফেরিঘাট এলাকায় জড়ো হয়ে অটোরিকশা শ্রমিকদের ওপর হামলা ও অটোরিকশা ভাঙচুর করেন।

নওগাঁর মান্দায় বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। এ সময় দুটি বাস ও ১৫টি অটোরিকশা ভাঙচুর করে দুপক্ষের লোকজন।

উপজেলার সাবাইহাট ও ফেরিঘাট এলাকায় বিকেল ৩টার দিকে মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পর থেকে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে বাস ও তিন চাকার যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ফেরিঘাট এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মান্দা থানার ওসি মোজাম্মেল হক কাজী।

এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মতিউজ্জামান মতি বলেন, ‘সরকারি আইন অনুযায়ী মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল নিষিদ্ধ। প্রশাসন ও মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বারবার নিষেধ করা হলেও অটোরিকশা চালকরা নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে জোর করে গাড়ি চালিয়ে আসছিল। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এর জেরে আজ সাবাইহাট এলাকায় সিএনজি চালক ও মালিকেরা সংঘবদ্ধ হয়ে দুটি বাস ভাঙচুর করে। এসময় বাস দুটির চালক ও সহকারীদের মারধর করা হয়। পরে বাস শ্রমিকেরা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানানোর জন্য মান্দা ফেরিঘাট এলাকায় রাস্তার ওপর আড়াআড়িভাবে বাস রেখে যান চলাচল বন্ধ করে দেন।’

নওগাঁয় বাস-সিএনজি শ্রমিকদের সংঘর্ষ, আহত ২০
সংঘর্ষ চলাকালে দুটি বাস ও অন্তত ১৫টি অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়। ছবি কোলাজ: নিউজবাংলা

এ বিষয়ে সিএনজি-মালিক শ্রমিক সমিতি সাবাইহাট শাখার সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নওগাঁ বাস মালিক সমিতি ও মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন উপজেলার মোহাম্মদপুর সাইনবোর্ড এলাকায় অবৈধভাবে নতুন চেকপোস্ট বসিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে। এ নিয়ে অটোরিকশার মালিক ও শ্রমিকেরা প্রতিবাদ করলে গত ২৯ আগস্ট মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন তাদেরকে মারধর করেন।’

অভিযোগ করে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আজকে নামাজের পর ফেরিঘাট থেকে রাজশাহীতে যাওয়ার সময় নতুন চেকপোস্টে একটি অটোরিকশা থামিয়ে এর চালককে মারধর করে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন। পরে উপজেলার ফেরিঘাট এলাকায় বাস শ্রমিকেরা আবারও সিএনজি মালিক ও চালকদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ১৫/১৬টি অটোরিকশা ভাঙচুর করে তারা। হামলায় বেশ কয়েকজন জন অটোরিকশা শ্রমিক আহত হয়েছেন।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথমে অটোরিকশা শ্রমিকরা সাবাইহাট বাজার এলাকায় দুটি বাস ভাঙচুর করেন। পরে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের শ্রমিকরা সংঘবদ্ধ হয়ে ফেরিঘাট এলাকায় জড়ো হয়ে অটোরিকশা শ্রমিকদের ওপর হামলা ও অটোরিকশা ভাঙচুর করেন। বিকেল ৩টার দিকে ফেরিঘাট সেতুর মুখে ও ঢাকা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রাস্তার ওপর আড়াআড়িভাবে বাস রেখে অবরোধ সৃষ্টি করে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন।

বিষয়টি নিয়ে কথা হলে মান্দা থানার ওসি মোজাম্মেল হক কাজী বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ চলছে। পুনরায় সংঘর্ষ এড়াতে ফেরিঘাট এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক করতে এবং উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা চলছে।’

সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন:
চবি ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ৬
হাতীবান্ধায় আওয়ামীলীগ-বিএনপি সংঘর্ষ, ছাত্রলীগ সভাপতি আহত
কুমিল্লায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা, সংঘর্ষে আহত ১০
কুমিল্লায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত
আইনজীবীদের পদযাত্রায় পুলিশি বাধা, সংঘর্ষ

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Fakhrul wants nothing more than resignation of the government

বেশি কিছু না, শুধু সরকারের পদত্যাগ চান ফখরুল

বেশি কিছু না, শুধু সরকারের পদত্যাগ চান ফখরুল শুক্রবার ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: নিউজবাংলা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে ফখরুল বলেন, ‘তিনি (বেগম জিয়া) একজন হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা। তার ডাকে কোটি কোটি মানুষ বেরিয়ে আসত। অথচ এই ফ্যাসিস্ট সরকার তাকে গৃহবন্দি করে রেখেছ।’

বর্তমান সরকার কাউকে ভোট দিতে দেয় না, বরং সবকিছু জোর করে কেড়ে নেয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেছেন, ‘আমরা রাস্তায় নেমেছি, পদযাত্রা করছি, রোডমার্চ করছি। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে আছি। কথা পরিষ্কার, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। আমরা তো বেশি কিছু চাইনি। শুধু চেয়েছি সরকার পদত্যাগ করে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন দিক। যেন জনগণ ভোট দিতে পারে।’

শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। সরকারের পদত্যাগসহ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সমাবেশ করে দলটি।

সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শেখ হাসিনার কানের সমস্যার কারণে আমেরিকায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল- আমরা কিন্তু ভুলে যাইনি। আর আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এটা জীবন-মরণ বিষয়। কিন্তু সরকার তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে না।

‘এই মুহূর্তে দেশে যদি কেউ নির্যাতিত, বঞ্চিত থাকেন, তিনি বেগম খালেদা জিয়া। তাকে যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে আটকে রেখেছে সরকার, তা কিন্তু আমরা জানি। তিনি (বেগম জিয়া) একজন হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা। তার ডাকে কোটি কোটি মানুষ বেরিয়ে আসত। অথচ এই ফ্যাসিস্ট সরকার তাকে গৃহবন্দি করে রেখেছ।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্বের সকল গণতান্ত্রিক দেশ যখন নির্দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন চাচ্ছে, তখন সরকার সংবিধানের দোহাই দিয়ে যাচ্ছে। কীসের সংবিধান, যেটা তোমরা কাটাছেঁড়া করে শেষ করে দিয়েছ।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি টিম এসেছিল, দেশে নির্বাচনের ব্যবস্থা কেমন দেখতে, তারা দেশের রাজনীতিবিদ, কূটনৈতিক, পত্রিকার সম্পাদক ও জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে বসেছিল। তারা বলেছিল— দেশে গিয়ে বলব, এ দেশে নির্বাচনে পর্যবেক্ষক টিম পাঠাব কি না। তারা কী বলেছে? তারা বলেছে, বাংলাদেশে নির্বাচনের পরিবেশ নেই। তাই, তারা পর্যবেক্ষক টিম পাঠাবে না। আর নির্বাচন কমিশনের নির্লজ্জ সচিব বলে বাজেট ঘাটতির কারণে নাকি তারা নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠাবে না।’

তিনি বলেন, ‘একথা বিশ্বের সবাই জানে, এমনকি জাতীয় পার্টিও বলেছে- যদি সরকার পদত্যাগ না করে তবে এ দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হলে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। আন্দোলন, আন্দোলন ও আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে এ সরকারকে পরাজিত করতে হবে। একটা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যবস্থা করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মা-বোনেরা জেগেছে, তারা এ সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চান না। দয়া করে সংসদ বিলুপ্ত করে নির্বাচন দিন।’

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বকুল প্রমুখ।’

আরও পড়ুন:
তাপসের বক্তব্যে জমিদারি ও সন্ত্রাসী ভাব আছে: ফখরুল
শেখ হাসিনাকে মানুষ বিশ্বাস করে না: গয়েশ্বর
রাষ্ট্র এখন যন্ত্রণা আর নিপীড়নের কারখানা: ফখরুল

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Victory by two votes After two and a half years the court changed the result

দুই ভোটে জয়: আড়াই বছর পর ফল পাল্টাল আদালত

দুই ভোটে জয়: আড়াই বছর পর ফল পাল্টাল আদালত আদালতের রায়ে বিজয়ী মেয়র প্রার্থী ফারুক আহমদ। ছবি: সংগৃহীত
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বিজয়ী ফারুক আহমদ বলেন, ‘আদালত যে মানুষের শেষ ভরসা, তাই আজ প্রমাণ হলো। রায়ে জনগণের বিজয় হয়েছে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্যই আমি আইনি লড়াই করেছিলাম।’

২০২১ সালের ৩০ জানুয়ারি সিলেটের জকিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন ভোটগ্রহণ শেষে মাত্র দুই ভোটের ব্যবধানে আব্দুল আহাদকে মেয়র পদে বিজয়ী ঘোষণা করেন রিটানিং কর্মকর্তা। তবে ওই ফল মেনে নিতে পারননি পরাজিত মেয়র প্রার্থী ফারুক আহমদ। ভোট গণনায় অনিয়মের অভিযোগ আদালতে মামলা করেন তিনি।

অবশেষে নির্বাচনের প্রায় আড়াই বছর পর ফল পাল্টে পরাজিত মেয়র প্রার্থী ফারুক আহমদকে চার ভোটে বিজয়ী ঘোষণা করেছে আদালত।

বৃহস্পতিবার সিলেট যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালত এবং নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আরিফুজ্জামান এই রায় ঘোষণা করেন।

আব্দুল আহাদ ও ফারুক আহমদ দুজনই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন।

এসব তথ্য জানিয়ে মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী গোলাম রব্বানী চৌধুরী বলেন, ‘৫টি ভোট কেন্দ্রের ব্যালট পেপার পুনরায় গণনা চেয়ে আদালতে মামলা করেছিলেন ফারুক আহমদ। পরে আদালত বাদীপক্ষের সাক্ষী ও বিবাদীপক্ষের সাফাই সাক্ষী গ্রহণ শেষে পুনরায় ভোট গণনার নির্দেশ দেন। পুনর্গণনায় ফারুক আহমদ ৪ ভোট বেশি পান।’

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ফলাফলে কারচুপির অভিযোগে করা মামলা দীর্ঘদিন চলার পর উভয়পক্ষের আইনজীবীদের উপস্থিতিতে কয়েক দফায় আদালতে ভোট গণনা করা হয়। এতে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ফারুক আহমদের বৈধ ভোট হয় ২০৭১ আর আব্দুল আহাদের বৈধ ভোট হয় ২০৬৭। বৃহস্পতিবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বিচারক ফারুক আহমদকে বিজয়ী ঘোষণা করে রায় প্রদান করেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে আদালতের ওয়েবসাইটে রায়ের তথ্য প্রকাশ হয়।

এর আগে ভোটের দিন রিটার্নিং কর্মকর্তা ঘোষিত ফলাফলে আবদুল আহাদের বৈধ ভোট ঘোষণা করা হয় ২ হাজার ৮৩টি এবং নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ফারুক আহমদের বৈধ ভোট ঘোষণা করা হয় ২ হাজার ৮১টি।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বিজয়ী ফারুক আহমদ বলেন, ‘আদালত যে মানুষের শেষ ভরসা, তাই আজ প্রমাণ হলো। রায়ে জনগণের বিজয় হয়েছে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্যই আমি আইনি লড়াই করেছিলাম।’

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে জকিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আব্দুল আহাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে তার আইনজীবী সামসুল হক জানান, রায় প্রকাশের বিষয়ে তিনি অবগত নন। আব্দুল আহাদের বিরুদ্ধে রায় গেলে তিনি পরবর্তী করণীয় ঠিক করবেন। যদি তিনি মনে করেন উচ্চ আদালতে যাবেন, তাহলে সেটা তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৩০ জানুয়ারি জকিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আব্দুল আহাদ পান ২০৮৩ ভোট আর ফারুক আহমদ পান ২০৮১ ভোট। এরপর কারচুপির অভিযোগ তুলে জকিগঞ্জ সরকারি কলেজ কেন্দ্র, মধুদত্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়, আইডিয়াল কেজি স্কুল কেছরী, মাইজকান্দি মাদ্রাসা কেন্দ্র ও জকিগঞ্জ গার্লস হাইস্কুল কেন্দ্রের ভোট পুনরায় গণনার জন্য ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন তিনি।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The United States is banning the visas of those who obstructed the election process in Bangladesh

বাংলাদেশে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারীদের ভিসায় নিষেধাজ্ঞার প্রক্রিয়া শুরু: যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারীদের ভিসায় নিষেধাজ্ঞার প্রক্রিয়া শুরু: যুক্তরাষ্ট্র ফাইল ছবি
এই ব্যক্তিদের মধ্যে আইন প্রয়োগকারী, ক্ষমতাসীন দল এবং রাজনৈতিক বিরোধী দলের সদস্য রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয় তার সমর্থনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াতে বাধাদানের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ওপর ভিসা বিধি-নিষেধ আরোপের পদক্ষেপ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত থাকা বাংলাদেশি ব্যক্তিদের ওপর ভিসা বিধি-নিষেধ আরোপের পদক্ষেপ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

এতে বলা হয়, এই ব্যক্তিদের মধ্যে আইন প্রয়োগকারী, ক্ষমতাসীন দল এবং রাজনৈতিক বিরোধী দলের সদস্য রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয় তার সমর্থনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এসব ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারেন। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে প্রমাণিত অন্য ব্যক্তিরাও ভবিষ্যতে এই নীতির অধীনে ভিসার জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, যাদের ভিসার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে এর মধ্যে বর্তমান এবং সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা, বিরোধী ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা পরিষেবার সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত।

এতে বলা হয়, এই পদক্ষেপগুলো শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে বাংলাদেশের লক্ষ্যকে সমর্থন করার জন্য। যারা বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চায়, এর মাধ্যমে তাদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটছে।

মন্তব্য

p
উপরে