অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আটকে নির্যাতনের অভিযোগে দুই বাংলাদেশিকে ২০ বছর করে কারদণ্ড দিয়েছে ইতালির একটি আদালত। দণ্ড পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন পাজরুল এস এবং হারুন এম। তাদের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।
পালেরমো শহরের প্রিলিমিনারি হেয়ারিং জজ ক্লেলিয়া মেল্টেসের আদালত স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার এ রায় দেয়।
ইনফো মাইগ্রেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দোষীদের একজনের বয়স ৩৭; অন্যজনের ৩৩ বছর।
লিবিয়ার একটি বন্দিশিবিরে ২০২০ সালে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আটকে মারধরের অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে। ২০২০ সালের বছরের ৬ জুলাই তাদের আটক করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার আদালতে দোষী প্রমাণিত হন তারা।
পালেরমোর সরকারি কৌঁসলি (পিপি) গ্রে ফেরেরা মামলাটি পরিচালনা করেন।
ইনফো মাইগ্রেশন বলছে, পাজরুল ও হারুন ২০২০ সালের ২৮ মে নৌকায় ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে সিসিলিতে পৌঁছান। এর পরই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান কয়েকজন অভিবাসনপ্রত্যাশী। সেখানে বলা হয়, মাসের পর মাস তাদের আটকে নির্যাতন করেন পাজরুল ও হারুন।
গৃহযুদ্ধ আর অর্থনৈতিক মন্দা এড়াতে এশিয়া ও আফ্রিকার হাজারও মানুষ উত্তাল ভূমধ্যসাগর রাবারের নৌকায় পাড়ি দিয়ে লিবিয়া থেকে ইতালি পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। এদের সাহায্য করছে একটি শক্তিশালী চক্র।
গত মাসের শেষে ইতালি যাওয়ার পথে ঝোড়ো বাতাস ও তীব্র ঠান্ডায় ভূমধ্যসাগরের তিউনিসিয়া অঞ্চলে প্রাণ হারান সাত বাংলাদেশি যুবক।
তাদের পাঁচজনই মাদারীপুরের। বাকি দুজন সুনামগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জের। ইতালিতে বাংলাদেশ দূতাবাস গত রোববার তাদের পরিচয় প্রকাশ করে।
আরও পড়ুন:দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের বিশেষ নজর রয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর।
মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে এক বিফ্রিংয়ে তিনি বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ভোক্তা অধিদপ্তর মিলে দুটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে। তারা সবাই সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছে। আমরা আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি এটা কন্ট্রোলে চলে আসবে।’
অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে অনেকে আপসেট। সেদিকে সরকারের বিশেষ নজর রয়েছে। সাড়ে চার কোটি ডিম আমদানির জন্য সাত প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দেয়া হয়েছে।
এছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তর মিলে দুটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে। তারা বাজার মনিটরিং করছে। অনিয়ম হলে জরিমানা করা হচ্ছে। প্রতিটি জেলায় ১০ সদস্যবিশিষ্ট টাস্কফোর্স গঠন করা হবে। সেখানে দু’জন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি থাকবে। খুব তাড়াতাড়ি এটা কন্ট্রোলে চলে আসবে।’
উপ-প্রেস সচিব আরও বলেন, হিন্দু সম্প্রদায় থেকে যে নিরাপত্তার বিষয়ে চাহিদা দেয়া হয়েছে, সেগুলো নিয়ে সরকার বিশেষভাবে কাজ করছে। আইপি ক্যামেরার মাধ্যমে পূজা মণ্ডপগুলো ইউএনও অফিস ও থানার মাধ্যমে মনিটরিং করা হবে৷
‘সার্বক্ষণিক সেবা প্রদানের জন্য জরুরি সেবা ৯৯৯-এর বিশেষ একটি টিম কাজ করবে। পুলিশ ও র্যাবের টহল থাকবে। গোয়েন্দা সংস্থার একটি বিশেষ টিম কাজ করবে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা চীবরদান অনুষ্ঠান যাতে নির্বিঘ্নে করতে পারে, সেই ব্যবস্থাও সরকারের পক্ষ থেকে নেয়া হবে। তাদের সঙ্গে কথা হবে, তাদের মতামত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ব্রিফিংয়ে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের বিষয়ে অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, পঙ্গু হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিক্যাল থেকে তথ্য নেয়া হয়েছে। দু’দিনের মধ্যে কার্যকর করা হবে। জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন একটি হটলাইন নম্বর চালু করেছে, যেটার কার্যকারিতা দু’দিনের মধ্যে শুরু হবে। সেটির নম্বর হচ্ছে ১৬০০০।
এছাড়া, জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন একটি ওয়েবসাইট খুলেছে। সেটি হচ্ছে jssfbd.com।
নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদ। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব পদেও তাকে চুক্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
ড. শেখ আব্দুর রশিদকে দু’বছরের জন্য এই পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’ এর ৪৯ ধারা অনুযায়ী অন্য যেকোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সঙ্গে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে তিনি এ নিয়োগ পেয়েছেন। আগামী ১৪ অক্টোবর থেকে তার নিয়োগ কার্যকর হবে।
শেখ আব্দুর রশিদ দেশের ২৫তম মন্ত্রিপরিষদ সচিব। বিসিএস ১৯৮২ ব্যাচের এই কর্মকর্তা বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনের স্থলাভিষিক্ত হলেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেনের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ ১৩ অক্টোবর শেষ হবে। দুর্গাপূজা এবং সাপ্তাহিক ছুটির কারণে বৃহস্পতিবার থেকে আগামী রোববার পর্যন্ত টানা চারদিন বন্ধ থাকায় বুধবারই হবে মাহবুব হোসেনের শেষ কর্মদিবস।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। গত ১৭ আগস্ট চুক্তিতে দু’বছরের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব হিসেবে নিয়োগ পান অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব শেখ আব্দুর রশিদ। পরদিন তাকে সিনিয়র সচিব করা হয়।
আব্দুর রশিদ ১৯৫৭ সালের ৫ মে সাতক্ষীরা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি নেদারল্যান্ডসের দি হেগ শহরের ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল স্টাডিজ থেকে পাবলিক পলিসি অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিষয়ে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।
পরবর্তীতে তিনি ২০০৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোকপ্রশাসন বিষয়ে পিএইচডি অর্জন করেন। আব্দুর রশিদ এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় তৃতীয় স্থান অধিকার করেন। তিনি বিসিএসের ১৯৮২ ব্যাচের সম্মিলিত মেধা তালিকায় চতুর্থ ও প্রশাসন ক্যাডারে প্রথম স্থান অর্জন করেন।
আব্দুর রশিদ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, জেলা প্রশাসক হিসেবে মাঠ প্রশাসনে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক হন। এছাড়া তিনি পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ছিলেন।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের টেকনাফে শাহপরীর দ্বীপের অদূরে নৌকাসহ বাংলাদেশের পাঁচ জেলেকে ধরে নিয়ে মিয়ানমারের আরাকান আর্মি। সোমবার বিকেলে টেকনাফের নয়াপাড়া নাফ নদ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। তবে মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্তও জেলেদের ফেরত দেয়নি তারা।
ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেরা হলেন- রাশেদ হোসেন, বোরহান, সাইফুল ইসলাম, মোহাম্মদ রাশেল ও মোহাম্মদ আলম। তাদের মধ্যে তিনজন টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা।
টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুস সালাম বলেন, ‘আমার এলাকায় পাঁচ জেলে নাফ নদে মাছ শিকার করতে গেলে তাদেরকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের কোনো একটি গ্রুপ।
‘জেলেদের কারা ধরে নিয়ে গেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে মিয়ানমারে চলমান যুদ্ধে রাখাইন রাজ্যের সংশ্লিষ্ট অঞ্চল বিদ্রোহী আরাকান আর্মির দখলে। তাই ধারণা করা হচ্ছে আরাকান আর্মির সদস্যরাই আমাদের জেলেদের ধরে নিয়ে গেছে।’
স্থানীয় জেলেদের ভাষ্যমতে, সোমবার সকালে প্রতিদিনের মতো টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা আবদুল মজিদের মালিকাধীনসহ তিনটি নৌকা নাফ নদে মাছ শিকার মাছ শিকারে যান। এ সময় মিয়ানমারের আরাকান আর্মির সদস্যরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জেলেদের ধাওয়া করে। এতে দুটি নৌকাসহ মাঝিমাল্লারা পালিয়ে আসতে সক্ষম হলেও মজিদের নৌকাসহ পাঁচ জেলেকে তারা ধরে নিয়ে যায়।
অপহরণের শিকার জেলে মো. আলমের মা হামিদা খাতুন বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো আমার ছেলে অন্য জেলেদের সঙ্গে নাফ নদে মাছ শিকারে যায়। এ সময় ওপারের লোকজন তাদের ধাওয়া করে। অন্য জেলেরা পালিয়ে আসতে পারলেও আমার ছেলেসহ পাচঁ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মির লোকজন। এখন পর্যন্ত আমার ছেলের কোনো খোঁজখবর পাইনি।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। তাদেরকে ফেরত আনতে বিষয়টি নিয়ে কোস্টগার্ড ও বিজিবি’র সঙ্গে কথা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে টেকনাফ-২ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মহিইদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। আশা করছি তাদের দ্রুত ফেরত আনতে সক্ষম হবো।’
আরও পড়ুন:সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব আসন্ন দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকায় কোনো ধরনের ‘থ্রেট’ (হুমকি) নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. মাইনুল হাসান।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নেয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘শারদীয় দুর্গাপূজায় মণ্ডপ এলাকা, বিসর্জন শোভাযাত্রা ও বিসর্জনের সময় সব ধরনের মাদক ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে। একইসঙ্গে সব ধরনের পটকা ও আতশবাজির ব্যবহার না করার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
‘বিসর্জনের সময় উচ্চৈস্বরে সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করা যাবে না। যারা সাঁতার জানেন না তাদের বিসর্জনের সময় পানিতে না নামার অনুরোধ করছি।’
মাইনুল হাসান বলেন, ঢাকা মহানগরীতে এবার ২৫৩টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১৩১টি এবং উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৩১টি মণ্ডপ রয়েছে। ঢাকা মহানগরীতে শান্তি-শৃঙ্খল ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পূজা অনুষ্ঠানে আগে সমন্বয় সভা করেছি।’
পর্যায় নিরাপত্তার উল্লেখ করে কমিশনার বলেন, ‘প্রতিটি পূজামণ্ডপে ফিক্সড পুলিশ মোতায়েন থাকবে। পাশাপাশি থানা পুলিশের অধিক টহল ও চেকপোস্ট স্থাপন, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সিসি ক্যামেরা, আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে চেকিং ব্যবস্থা থাকবে।
‘সাদা পেশাকে ডিবি পুলিশ মোতায়েন থাকবে। পাশাপাশি প্রতিটি পূজামণ্ডপে আনসার বাহিনীর পর্যাপ্তসংখ্যক সদস্য মোতায়েন থাকবে। একইসঙ্গে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যসহ র্যাবের সদস্যরা টহল ও অন্যান্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘পূজা চলাকালীন যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পর্যাপ্তসংখ্যক ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যানজট এড়াতে পূজা কমিটিকে অনুরোধ করেছি মণ্ডপের আশপাশে কোনো মেলা যাতে না হয়।’
বিসর্জনে ঢাকা মহানগরীতে ১৫টি স্পট নির্ধারণ করা হয়েছে। বিসর্জন শোভাযাত্রায় ডিএমপির বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে বিসর্জনের জন্য সব পূজা কমিটি ও ভক্তদের প্রতি অনুরোধ জানান ডিএমপি কমিশনার।
পুলিশ সদস্যদের মনোবল ফিরিয়ে আনা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আগস্টের ৫-৬ তারিখে পুলিশের কার্যক্রম দেখেন। আর আজ ৮ অক্টোবরের পুলিশের কার্যক্রম দেখলে আপনারাই বুঝতে পারবেন পুলিশ কতটুকু মনোবল ফিরে পেয়েছে। যারা কর্মবিরতি দিয়েছিল তারাও পুরোদমে কাজে ফিরে আসছে। পূজার অনুষ্ঠানে দৃঢ় মনোবল নিয়ে দায়িত্ব পালন করবে পুলিশের প্রতিটি সদস্য। এতে কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না।’
আরও পড়ুন:সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইনসহ ১২ জন সদস্য পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার পিএসসি সচিবের কাছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বরাবর তারা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
পিএসসির এক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পিএসসির মোট সদস্য সংখ্যা ১৪ জন। তাদের মধ্যে পদত্যাগ করেছেন ফয়েজ আহম্মদ, ও এন সিদ্দিকা খানম, অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার সাহা, জাহিদুর রশিদ, অধ্যাপক ড. মুবিনা খোন্দকার, অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন, কে এম আলী আজম, মো. খলিলুর রহমান, অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক, মো. মাকছুদুর রহমান, ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খাতুন ও অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার পাণ্ডে।
বাকি দুই সদস্য হেলালুদ্দিন আহমদ ও মোহা. শফিকুল ইসলাম পদত্যাগ করেননি।
এ বিষয়ে পিএসসি সচিব আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, মঙ্গলবার যারা পদত্যাগপত্র জমা দেননি তারা আগামীকালের মধ্যে তা জমা দেবেন। যারা জমা দিয়েছেন তাদের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি বরাবর পাঠানো হয়েছে।
শনিবার পিএসসির সংস্কার নিয়ে কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘এ সপ্তাহের মধ্যে পিএসসি সংস্কার করে চাকরি প্রত্যাশীদের চাকরির পরীক্ষাগুলো শুরু করতে হবে। যে তরুণ প্রজন্ম এই অভ্যুত্থানের অগ্রনায়ক তাদের প্রায়োরিটির কথা ভুলে গেলে চলবে না।’
২০২০ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান মো. সোহরাব হোসাইন। তিনি সরকারের সাবেক সিনিয়র সচিব।
বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ১৯৮৪ ব্যাচের কর্মকর্তা মোহাম্মদ মো. সোহরাব হোসাইন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সরকারের বিভিন্ন পদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে আটজন নিহত হওয়ার ঘটনায় পৃথক আট হত্যা মামলায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের ৪৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
সাবেক এই পুলিশ প্রধানকে মঙ্গলবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
অপরদিকে চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহীন রেজা জামিন আবেদন না-মঞ্জুর করে বিভিন্ন মেয়াদে আসামির রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে সাকিব হাসান নিহত হওয়ার ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় করা মামলায় মামুনের সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
এরপর ইমন হোসেন গাজী নিহত হওয়ার ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় করা মামলায় পুলিশের সাবেক এই প্রধানকে সাতদিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত।
এছাড়া ইরফান ভুইয়া নিহত হওয়ার ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় করা মামলায় পাঁচ দিন, মুনতাসির রহমান হত্যা মামলায় পাঁচ দিন ও ভ্যানচালক সুজন হত্যা মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
এর বাইরে রফিকুল ইসলাম নিহত হওয়ার ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় করা মামলায় চারদিন, একই থানায় করা মাহমুদুল হাসান জয় হত্যা মামলায় চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে পাঁচদিনের রিমান্ড দেয়া হয়। আর নিউমার্কেট থানার একটি হত্যা মামলায় পৃথকভাবে তাকে আরও পাঁচদিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত।
সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গত ৩ সেপ্টেম্বর রাতে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মোহাম্মদপুরে মুদি দোকানদার আবু সায়েদ হত্যার অভিযোগে করা মামলায় ৪ সেপ্টেম্বর তএক আটদিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়।
এরপর ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় মোহাম্মদ ইসমামুল হক নামে এক কিশোরকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
আরও পড়ুন:ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী ছয়টি মামলায় জামিন পেয়েছেন। এর মধ্যে রাজধানীর খিলগাঁও থানার চারটি ও পল্টন থানার দুটি মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা না থাকায় মুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউশনের আইনজীবী।
জামিন পাওয়া মামলাগুলোর মধ্যে খিলগাঁও থানার দুটি হত্যা ও দুটি হত্যাচেষ্টা মামলা রয়েছে। এছাড়া পল্টন থানায় দায়ের হওয়া দুটি হত্যা মামলায় জামিন পেয়েছেন তিনি।
ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালত মঙ্গলবার শুনানি শেষে খিলগাঁও থানার মামলাগুলোতে সাবের হোসেন চৌধুরীকে জামিনের আদেশ দেন। আর পল্টন থানার দুটি মামলায় জামিন আদেশ দেন বিচারক জিয়াদুর রহমান।
প্রসিকিউশনের আসাদুল ইসলাম বলেছেন, সাবের হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে আর মামলা না থাকায় তার কারামুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই।
মন্তব্য