সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান আন্দোলনের সপ্তম দিনে মুখোমুখি অবস্থানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। বুধবার দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি করেন। এতে পরস্পরের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন তারা।
শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্যের অভিযোগে বুধবার দুপুরে বিক্ষোভ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক। প্রধান ফটকের সামনে এই কর্মসূচিতে অর্ধশতাধিক শিক্ষক যোগ দেন।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কর্মসূচিতে অংশ নেয়া শিক্ষকরা পুরো প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করেন না। তারা শিক্ষক সমিতি বা প্রশাসনিক দায়িত্বে নেই।
তারা বলছেন, উপাচার্যের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে সুবিধাপ্রাপ্ত ও সুবিধাপ্রত্যাশী কয়েকজন এই কর্মসূচি করেছেন। বিক্ষোভে অংশ নেয়া বেশির ভাগই কুমিল্লার বাসিন্দা।
উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের বাড়িও কুমিল্লায়। তার বিরুদ্ধে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কুমিল্লার লোকজনকে নিয়োগ ও ওই এলাকার শিক্ষকদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
আর বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আন্দোলন বানচাল করতে কোনো গোষ্ঠীর দ্বারা প্রলুব্ধ হয়ে এই কর্মসূচি।
পাল্টাপাল্টি এসব বক্তব্য ও কর্মসূচিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দূরত্ব বাড়ছে বলে মনে করছেন অনেকে। এর ছাপ মিলেছে বুধবার রাতেও।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে অন্তত ২০ শিক্ষক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অবস্থানস্থলে গিয়ে তাদের সঙ্গে রাতে কথা বলতে চান। তবে আন্দোলনকারীরা তাদের সুযোগ দেননি। সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, একাত্মতা না জানানো পর্যন্ত কোনো আলোচনা নয়।
এর আগে সকালে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য শিক্ষার্থীদের দায়ী করে বিবৃতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয়। বিবৃতি এসেছে আন্দোলনের সূত্রপাত সেই বেগম সিরাজুন্নেছা হলের প্রভোস্ট কমিটির পক্ষ থেকেও।
প্রভোস্ট কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীরা হলের অব্যবস্থাপনা নিয়ে যেসব অভিযোগ করেছে, তা অনেকাংশেই সত্য নয়। হল প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমদ লিজা করোনা আক্রান্ত থাকা অবস্থায় তাকে ফোন করে রাতের মধ্যেই ছাত্রাবাসে আসতে বলেন ছাত্রীরা। প্রাধ্যক্ষ প্রভোস্ট কমিটির অন্য সদস্যদের পাঠাতে চাইলে ছাত্রীরা রাজি হননি। পরে প্রভোস্ট কমিটির সদস্যরা হলে গেলে তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন ছাত্রীরা।
এদিকে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার দুপুর থেকে আন্দোলনকারী ২৪ শিক্ষার্থী উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশন শুরু করেন। চলমান আন্দোলনের সপ্তম দিনে এসে অনশনে বসলেন তারা।
এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। ২ ফেব্রুয়ারি এ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল।
আন্দোলনে শিক্ষকরা
শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্যের অভিযোগ এনে বুধবার বিক্ষোভ করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক শিক্ষক। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অবস্থান নেন তারা। এ সময় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করুচিপূর্ণ মন্তব্যের অভিযোগসংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে তাদের হাতে।
ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক হিমাদ্রি শেখর রায় বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবি নিয়ে আন্দোলন করতেই পারে। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নিশ্চিত এসবের একটি সমাধান হবে। কিন্তু আন্দোলনের নামে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য কাম্য নয়। আমরা আমাদের শিক্ষার্থী ও সন্তানদের এমন শিক্ষা কখনই দেইনি।’
শিক্ষক ফাহমিদা রহমান খান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এ রকম ভাষা কখনই কাম্য হতে পারে না। তারা যে ভাষা ব্যবহার করছে, তা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ণ করছে। শিক্ষকদের নিয়ে এমন ভাষা ব্যবহারের পর আমরা ঘরে বসে থাকতে পারি না। তাই প্রতিবাদে নেমেছি।’
সহকারী অধ্যাপক জাহিদ হাসান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের যে আন্দোলন তার সঙ্গে আমাদের দ্বিমত নেই। তাদের দাবিগুলো কতটুকু যৌক্তিক, তা প্রশাসন বিবেচনা করবে। তবে ক্ষোভের ভাষা ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের আরও পরিশীলিত হওয়া প্রয়োজন।’
শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্যের অভিযোগ এনে শিক্ষকদের কর্মসূচিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ আরও বেড়েছে। তাদের দাবি, এর মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থী মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়েছেন, যা তাদের সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী হালিমা আক্তার বলেন, ‘আমরা আন্দোলন শুরু করেছিলাম এক প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। আমাদের ওপর হামলার পর উপাচার্য ও প্রক্টরিয়াল কমিটির পদত্যাগ দাবি করছি। আর কোনো শিক্ষকের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান নেই। উনারা আমাদের কাছে সম্মানিত ব্যক্তি।’
দেলোয়ার হোসেন নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘শিক্ষকরা যে অভিযোগ করছেন, তার কোনো ভিত্তি নেই। কোনো শিক্ষককে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা হয়নি। এই অভিযোগের কোনো প্রমাণও তারা দেখাতে পারবেন না।
‘ভিসির অশালীন একটি বক্তব্যের অডিও মঙ্গলবার ভাইরাল হয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে তারা কিছু বলছেন না। উল্টো শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে আন্দোলনে নেমেছেন।’
দেলোয়ার আরও বলেন, ‘এই শিক্ষকরা কারও দ্বারা প্রলুব্ধ হয়ে কিংবা সুবিধাপ্রাপ্ত হয়ে আজকে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তবে কোনো অপতৎপরতা আন্দোলন দাবিয়ে রাখতে পারবে না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
অন্যদিকে শিক্ষকদের এই কর্মসূচিতে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপক লায়লা আশরাফুনের একটি বক্তব্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
অধ্যাপক লায়লা বলেন, ‘সম্মানের জন্যই শিক্ষকতা পেশায় এসেছি। আমরা কোনো চাষাভুষা নই যে আমাদের যা খুশি তাই বলবে।’
শিক্ষকের ওই বক্তব্যে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ আরও উগড়ে দেয়। বুধবার দিনভর তাদের আন্দোলনের প্রধান স্লোগান হয়ে ওঠে - ‘চাষাভুষার সন্তান, আমরা সবাই সাস্টিয়ান।’
আন্দোলন যেভাবে শুরু
এক হল প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের আন্দোলন গত রোববার থেকে রূপ নিয়েছে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে। ওই প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের পর শিক্ষার্থীদের এখন একটাই দাবি, উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন লিজার বিরুদ্ধে খাবারের খারাপ মান, অব্যবস্থাপনা ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ আনেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। তারা প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে গত বৃহস্পতিবার রাত (১৩ জানুয়ারি) থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে সরে গেলেও দাবি পূরণ না হওয়ায় শনিবার সন্ধ্যায় ফের বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়ক আটকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন।
এরপর মধ্যরাতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন তারা। রোববার সকাল থেকে আবারও ক্যাম্পাসে শুরু হয় বিক্ষোভ।
বিকেলে তারা উপাচার্য ফরিদ উদ্দিনকে অবরুদ্ধ করলে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে। শিক্ষার্থীরাও ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। এরপর শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এ সময় পুলিশ রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে।
এর মধ্যেই পুলিশ উপাচার্যকে বের করে তার বাসভবনে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমেদ গুলিবিদ্ধ হন। আহত হন পুলিশ, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৫০ জন।
সে রাতেই জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। শিক্ষার্থীদের পরদিন দুপুর ১২টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ।
ওই সভা শেষে জানানো হয়, প্রাধ্যক্ষ জাফরিনের পদত্যাগ করেছেন।
এরপর পুলিশ ডেকে হামলা চালানোর অভিযোগ তুলে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে সেই রাত থেকে ফের বিক্ষোভে নামেন শিক্ষার্থীরা। তারা হল ছেড়ে যাবেন না বলেও জানান।
মঙ্গলবার রাতে তারা ঘোষণা দেন, বুধবার দুপুর ১২টার মধ্যে দাবি না মানা হলে আমরণ অনশনে বসবেন।
বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হওয়ায় ২৪ শিক্ষার্থী বুধবার বেলা ৩টা থেকে অনশন শুরু করেন। তাদের এই কর্মসূচিতে সমর্থন দেন আন্দোলনে থাকা অন্য শিক্ষার্থীরাও।
আরও পড়ুন:বরিশাল নগরীতে জমি নিয়ে বিরোধে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় গুরুতর আহত একজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর হাজেরা খাতুন স্কুল এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ও দেলোয়ারা বেগমের পরিবার হাজেরা খাতুন স্কুল এলাকায় ৭ শতাংশ করে ১৪ শতাংশ জমি ক্রয় করি। আমি প্রবাসে থাকায় জমি দেখাশোনা করে খালাতো ভাই সৈয়দ মিজান। ওই জমিতে মিজান বাসা করে বসবাস করেন।
‘তিন মাস আগে স্থানীয় শফিকুল ইসলাম ও দেলোয়ারা বেগমের ছেলে মাহাদি হাসান সাইমনসহ তার সহযোগীরা মিজানের কাছে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ কথা আমি এলাকার মুরুব্বিদের জানাই। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।’
নজরুল বলেন, ‘চাঁদা দাবি ও আমার জমি জবর দখল বিষয়ে সাবেক কাউন্সিলর আউয়াল মোল্লার ডাকে সকালে সালিশ বসে। সালিশের একপর্যায়ে দুপুরের দিকে সাইমন, দেলোয়ারা বেগম, ফারুক হোসেন, পান্না, টিটু, কাঞ্চন আলীর স্ত্রী লাল বরুসহ কয়েকজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে মিজানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন।’
স্থানীয়রা তাকে শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। মিজানকে সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সাইমন বলেন, ‘জমি নিয়ে আমাদের সঙ্গে একটি পক্ষের ঝামেলা রয়েছে। দুপুরে দেড় থেকে দুই শ লোক একটি রিভলবার ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের জমির ভাড়া দেয়া দুইটি ঘরে হামলা চালায় প্রথমে। পরে আমার মোটরসাইকেল ও বসতঘর ভাঙচুর এবং বেশ কয়েকজনকে কুপিয়ে জখম করে।’
‘পুলিশের উপস্থিতিতে এই হামলায় আমার মা, মামী রহিমা বেগম, নানু লাল বরু ও মামা ফারুখ হাওলাদার আহত হয়েছে। তাদের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। আমরা কারো ওপর হামলা চালাইনি, তাদের হামলা প্রতিরোধেরও সুযোগ পাইনি। মিথ্যা অপবাদ দেয়া হচ্ছে আমাদের ওপর।’
বরিশাল এয়ারপোর্ট থানার ওসি কমলেশ চন্দ্র হালদার বলেন, ‘পুলিশের সামনে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে ঝামেলা হয়েছিলে। কয়েকজন আহত আছে শুনেছি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার-পাঁচ জনকে আটক করা হয়েছে।
মানিকগঞ্জের শিবালয়ে বাসের চাপায় সচিবসহ দুইজন নিহতের ঘটনায় করা মামলায় এক বাস চালকের ৯ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক উৎপল ভট্টাচার্য্য মঙ্গলবার বেলা ৪টার দিকে এ রায় দেন।
নিউজবাংলাকে রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত আইনজীবী (এপিপি) মথুরনাথ সরকার জানান, আসামিকে একই সঙ্গে ২ লাখ ৭ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৫ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
দণ্ডিত ৩৫ বছরের চালক আনোয়ার হোসেনের বাড়ি ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার কামারখোলা এলাকায়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১০ সালে ৩১ জুলাই প্রাইভেটকারে করে গোপালগঞ্জ যাচ্ছিলেন মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়ের সচিব রাজিয়া বেগম ও বিসিকের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমানসহ চারজন। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের শিবালয়ের উথুলী সংযোগ মোড়ে এলে একটি বাস প্রাইভেটকারটিকে চাপা দেয়।
এতে গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদরে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক রাজিয়া ও সিদ্দিকুরকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় বিসিকের এজিএম শামসুল হক শিবালয় থানায় মামলা করেন। মামলার পর চাপা দেয়া বাসের চালক আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এরপর জামিনে বের হয়ে পালিয়ে যান তিনি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বরংগাইল হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুল ইসলাম ভূইয়া ২০১০ সালের ১৯ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় ১০ জনের স্বাক্ষ গ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক এ রায় দেন।
এপিপি মথুরনাথ সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তিনটি ধারায় আসামিকে ৯ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিচারক জরিমানার টাকা দুই নিহতের পরিবারকে দেয়ার নির্দেশও দিয়েছেন।’
আরও পড়ুন:চার লাখ টাকা দাদন নিয়ে নতুন ট্রলার আর জাল দিয়ে সাগরে ইলিশ ধরায় ব্যস্ত ছিলেন মো. জাকির হাওলাদার। আগামী জুন-জুলাইয়ের মধ্যে ইলিশের বিনিময়ে দাদন পরিশোধ করার পরিকল্পনা ছিল তার। এ জন্য দিন-রাত পরিশ্রমও করছিলেন তিনি। কিন্তু আশানুরূপ ইলিশ পাওয়া যায়নি এবার। এর মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে আবার সাগরে মাছ ধরায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা।
নিষেধাজ্ঞার জন্য এখন মহাদুশ্চিন্তায় জাকির। পটুয়াখালীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের মৃত সামু হাওলাদারের ছেলে তিনি।
কোনো প্রশ্ন করার আগেই ৫০ বছরের জাকির বলে উঠলেন, ‘তুফানের বাড়ি খাই আমরা আর চাউল পায় আইরারা।’
অর্থাৎ ট্রলার চালাতে গিয়ে প্রতিনিয়ত সাগরের ঢেউয়ের ঝাপটা সামলাতে হিমশিম খেতে হয় জেলেদের। অথচ নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারি খাদ্যসহায়তা থেকে বঞ্চিত হন তারা।
জাকির হাওলাদার বলেন, ‘কী কমু কন। টাহার চিন্তায় রাইতে ঘুমাইতে পারি না। পাঁচজনের সংসার। মরণ ছাড়া উপায় নাই। গত কয়েক দিন কিছু ইলিশ পাইছি, হয়তো কয়দিন পরে বৃষ্টি হইলে আরও অনেক পাইতাম। কিন্তু এহন দিল নিষেধাজ্ঞা। সরকারি নিষেধাজ্ঞা মানলেও জ্বালা, না মানলেও জ্বালা।’
জাকির মনে করেন, মাছ ধরায় সাগরে ঘন ঘন নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং প্রকৃত জেলেরা সরকারি সহযোগিতা না পেলে অনেকেই এই পেশাটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হবেন।
সম্প্রতি রাঙ্গাবালী উপজেলার কোড়ালিয়া খেয়াঘাট এলাকায় খালের পাড়ে তুলে রাখা ট্রলারের পাশে দাঁড়িয়ে কথা হয় জাকিরের সঙ্গে। এ সময় তার মতো আরও বেশ কয়েকজন জেলে নিজেদের হতাশার কথা জানান।
রাঙ্গাবালীর ভাঙনকবলিত চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন। উত্তাল আগুনমুখা নদী পাড়ি দিয়ে যেতে হয় সেখানে। এই ইউনিয়নে বিবিরহাওলা গ্রামের ২০-২৫ জন জেলে সাগরে মাছ ধরেন। গ্রামের লঞ্চঘাট এলাকায় একটি গাছের নিচে বসেছিলেন তাদেরই একজন রিপন মিয়া।
নোঙ্গর করা নিজের ট্রলার দেখিয়ে রিপন বলেন, ‘তিন দিন আগে বাজার-সদাই নিয়া সাগরে গেছিলাম। খরচ হইছিল ১৭ হাজার টাহা। গতকাইল আইছি। মাছ পাইছি মাত্র আট হাজার টাহার। এহন আবার ৬৫ দিন ঘরে বইয়া থাকতে অইবে। সাতজন শ্রমিক রাখছি, অগ্রিম টাহা দিয়া। ওগো তো ছাড়তেও পারমু না।’
রিপন বলেন, ‘এইডাই মোগো জীবন। এ আর নতুন কিছু না। এই যে দেহেন নদীর ঢেউ রাস্তার পাশে আইসা পড়ে, আবার ভাডার টানে সব শুকায় যায়। মোগো জীবনও এমন। যহন মাছ পাই, তহন আল্লার নামে খালি পাইতেই থাহি। আর যহন পাই না, তহন খালি হাতেই ফিরতে হয়।’
নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারি খাদ্যসহায়তার বিষয়ে রিপন বলেন, ‘মোর ট্রলারে মোরা আটজন। এর মধ্যে চারজনে চাউল পাই। হেই চাউল আনতে আনতে মোগো জান শেষ। আর বাকি চাইরজনের তো হেই সুযোগও নাই।’
তবে মাছের উৎপাদন বাড়াতে সরকারি নিষেধাজ্ঞার প্রয়োজন আছে বলেও মনে করেন রিপন।
বিবিরহাওলা গ্রামের ওই লঞ্চঘাট থেকে প্রায় ১৫ কিলোমটিার দূরে চরলতা গ্রাম। সেই গ্রামেই কথা হয় আইয়ুব গাজী নামে আরেক জেলের সঙ্গে।
আইয়ুব বলেন, ‘সবেমাত্র মাছ পড়া শুরু করেছে, ঠিক সেই মুহূর্তেই সাগরে অবরোধ দিল। এর কোনো মানে অয়? ১২ লোক মোর ট্রলারে। আগেই হেগো টাহা-টোহা দিয়া রাখছি।’
আইয়ুব জানান, গত বছর অবরোধের আগে ভালো মাছ পাওয়া গেলেও এবার তেমন পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, ‘চল্লিশ বছর ধইরা এই পেশায় আছি। ইচ্ছা করলেই ছাড়তে পারমু না। সরকারি আইন মেনেই মোরা মাছ ধরা বন্ধ রাখছি। আল্লাহ ভরসা। ৬৫ দিন যেভাবেই হোক ধারদেনা করে হলেও চালাইতে অইবে। এ ছাড়া তো আর কোনো উপায় দেহি না।’
সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা কেন?
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ জানান, মেরিন ফিশারিজ অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, প্রতি বছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই মোট ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
২০১৫ সালে এই নিষেধাজ্ঞা চালু হলেও ২০১৯ সাল পর্যন্ত শুধু ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রলার এর আওতায় ছিল। কিন্তু ২০২০ সালে ২৫ হাজার স্থানীয় ট্রলার ও নৌকাকেও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়।
মোল্লা এমদাদুল্লাহ বলেন, ‘মূলত হারিয়ে যাওয়া কিছু মাছের বংশবৃদ্ধির পাশাপাশি সামুদ্রিক ৪৭৫ প্রজাতির মাছের অবাধ প্রজননের জন্যই এই অবরোধ। এত বছর শুধু ইলিশ মাছের নিরাপদ প্রজননের জন্য নির্দিষ্ট কয়েকটি স্থানকে অভয়াশ্রম হিসেবে চিহ্নিত করে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হতো। এতে আমরা সফলও হয়েছি। প্রতি বছরই ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে।’
তিনি জানান, অতীতের সফলতা মাথায় রেখেই মৎস্য গবেষকদের পরামর্শে গভীর সাগরে দেশীয় জলসীমায় ৬৫ দিন মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। গত দুই বছরে এই উদ্যোগে ইলিশসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের উৎপাদনও অনেক বেড়েছে।
তিনি আরও জানান, পটুয়াখালী জেলায় বিভিন্ন নদনদী এবং সাগরে ৭০ থেকে ৮০ হাজার জেলে মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত থাকলেও জেলা মৎস্য অফিস কর্তৃক নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা মোট ৬৭ হাজার। এর মধ্যে সমুদ্রগামী নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৪৭ হাজার ৮০৫ জন। নিষেধাজ্ঞা চলার সময় সমুদ্রগামী নিবন্ধিত প্রত্যেক জেলেকে ৮৬ কেজি চাল সরকারি খাদ্যসহায়তা দেয়া হবে।
আরও পড়ুন:ফেসবুক ও টিকটকের মাধ্যমে পরিচয়। পরে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের সূত্রে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয় তরুণীকে। সেখানে তাকে দিয়ে করানো হয় যৌন ব্যবসা।
কিছুদিন পর দেশে ফিরে বিয়ে করেন দুজন। পরে আবারও তরুণীকে কৌশলে ভারতে পাচার করে দেয়া হয়। সেখানে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে কিছুদিন পর দেশে পালিয়ে এসে পাঁচ যুবকের নামে মামলা করেন তরুণী।
হবিগঞ্জে মঙ্গলবার দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানান র্যাব-৯-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট নাহিদ হাসান।
তিনি জানান, মামলার পর পুলিশ লালমনিরহাট থেকে তিনজনকে এবং র্যাব হবিগঞ্জ থেকে প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করে। মঙ্গলবার সকালে প্রধান আসামি সোহেল মিয়াকে মৌলভীবাজার থেকে গ্রেপ্তার করেন র্যাব সদস্যরা। সোহেলের বাড়ি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জের বেতাপুর গ্রামে।
লেফটেন্যান্ট নাহিদ হাসান জানান, সোহেল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, ৩ বছর আগে ফেসবুক ও টিকটকের মাধ্যমে তার সঙ্গে পরিচয় হয় পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ডেমরা গ্রামের এক তরুণীর। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
প্রেমিক সোহেল গত বছরের মার্চ মাসে সাতক্ষীরার সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতের কলকাতায় নিয়ে যান ওই তরুণীকে। এ সময় সেখানে তাকে আটকে রেখে যৌন ব্যবসা করতে বাধ্য করা হয়।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দেশে ফিরে সোহেল ওই তরুণীকে বিয়ে করেন। পরে তরুণীকে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্ত দিয়ে কৌশলে ভারতে পাচার করে দেন সোহেল। পাচারের আগে তাকে ধর্ষণ করেন সোহেল ও চার সহযোগী।
ভারতে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে ১৫ মে দেশে পালিয়ে আসেন তরুণী।
২১ মে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানায় পাঁচ যুবকের নামে পাচার, ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেন তরুণী।
আরও পড়ুন:গৃহবধূ হত্যা মামলায় একজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে রংপুরের একটি বিচারিক আদালত।
রায়ে আসামিকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
রংপুরের বিশেষ জজ আদালতের বিচারক রেজাউল করিম মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১ টার দিকে এই রায় দেন।
নিউজবাংলকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জয়নাল আবেদীন।
তিনি জানান, শংকরপুর মধ্যপাড়া গ্রামের খোরশেদ আলমের মা রেহেনা বেগম ২০১৫ সালের ২৬ জুলাই রাতে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। এ সময় তার ঘরে চুরি করতে ঢোকেন লাভলু।
ঘরে মাত্র ১০০ টাকা পেয়ে রেহেনা বেগমের কানে থাকা সোনার দুল ছিনিয়ে নেন। তখন লাভলুকে চিনে ফেলেন রেহেনা।
এ কারণে তাকে হত্যা করে বাড়ির অদূরে বাঁশ ঝাড়ে ফেলে চলে যান লাভলু ।
আইনজীবী আরও বলেন, এ ঘটনায় রেহেনার ছেলে খোরশেদ আলম বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় মামলা করেন। পরে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন লাভলু।
২০১৬ সালের ১৫ জুন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ২১ জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও জেরা শেষে আদালত মঙ্গলবার আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে।
রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট প্রকাশ করলেও উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছে আসামিপক্ষের আইনজীবী।
আরও পড়ুন:সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন কপোতাক্ষপাড়ের মানুষ।
‘ত্রাণ চাই না, পরিত্রাণ চাই’ স্লোগানে সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবের সামনে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে মানববন্ধন করেছেন তারা।
জেলা নাগরিক কমিটি, নারী কমিটি, আশাশুনি সদর ও শ্রীউলা ইউনিয়নবাসী এই কর্মসূচির আয়োজন করেন।
জেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আনিসুর রহিমের সভাপতিত্বে ও যুগ্মসচিব আলী নুর খান বাবলুর সঞ্চালনায় মানববন্ধন হয়।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আবুল কালাম আজাদ, পানি কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ আশেক ই এলাহী, আশাশুনি সদর ইউপি চেয়ারম্যান এস এম হোসেনুজ্জামান, জাসদ নেতা অধ্যাপক ইদ্রিস আলী।
আনিসুর রহিম বলেন, ‘আমরা ত্রাণ চাই না, টেকসই বেড়িবাঁধ চাই। নদনদীর ভাঙন আর দেখতে চাই না। আশাশুনির নদনদী খনন প্রয়োজন। জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকারের বরাদ্দের অর্থ যথাযথভাবে ব্যয় করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, সাতক্ষীরা পৌরসভার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা জলাবদ্ধ। অনেকের ঘরের মধ্যে পানি। জলাবদ্ধতায় জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
মানববন্ধন শেষে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে স্মারকলিপি পাঠিয়েছেন নাগরিক নেতারা।
আরও পড়ুন:মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় দুই শিক্ষার্থীকে অপহরণের অভিযোগে চারজনকে আটক করেছে র্যাব।
মানিকগঞ্জের র্যাব-৪-এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আরিফ হোসেন মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ধামরাইয়ের বারোবাড়িয়া এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
তারা হলেন, ধামরাইয়ের দক্ষিণ হাতকোড়া এলাকার আল আমিন, কৃষ্ণপুরা এলাকার পিন্টু মিয়া, বারোবাড়িয়া এলাকার আবু বকর সিদ্দিক ও চরিপাড়া এলাকার আরিফুল ইসলাম।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার রাত ৯টার দিকে সাটুরিয়ায় কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের এক ছাত্র ও এক ছাত্রী বাড়ি ফিরছিলেন। ধামরাইয়ের বারোবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ডে বাস থেকে নামার পর তাদের অপহরণ করা হয়। তাদের নিয়ে রাখা হয় বারোবাড়িয়া এলাকার পুরোনো একটি বাড়িতে।
সে রাতেই ওই শিক্ষার্থীদের পরিবারের কাছে ফোন করে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বাড়িতে ফোন করার কথা বলে র্যাবকে ফোন করে ওই শিক্ষার্থীদের একজন।
র্যাব কর্মকর্তা আরিফ জানান, ফোন পেয়ে র্যাবের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে। আটক করা হয় চারজনকে। তাদের কাছ থেকে একটি মোটরসাইকেল, ৩২ হাজার টাকা ও ৫টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
ধামরাই থানায় মামলা দিয়ে তাদের সেখানে হস্তান্তর করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য