সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান আন্দোলনের সপ্তম দিনে মুখোমুখি অবস্থানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। বুধবার দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি করেন। এতে পরস্পরের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন তারা।
শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্যের অভিযোগে বুধবার দুপুরে বিক্ষোভ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক। প্রধান ফটকের সামনে এই কর্মসূচিতে অর্ধশতাধিক শিক্ষক যোগ দেন।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কর্মসূচিতে অংশ নেয়া শিক্ষকরা পুরো প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করেন না। তারা শিক্ষক সমিতি বা প্রশাসনিক দায়িত্বে নেই।
তারা বলছেন, উপাচার্যের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে সুবিধাপ্রাপ্ত ও সুবিধাপ্রত্যাশী কয়েকজন এই কর্মসূচি করেছেন। বিক্ষোভে অংশ নেয়া বেশির ভাগই কুমিল্লার বাসিন্দা।
উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের বাড়িও কুমিল্লায়। তার বিরুদ্ধে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কুমিল্লার লোকজনকে নিয়োগ ও ওই এলাকার শিক্ষকদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
আর বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আন্দোলন বানচাল করতে কোনো গোষ্ঠীর দ্বারা প্রলুব্ধ হয়ে এই কর্মসূচি।
পাল্টাপাল্টি এসব বক্তব্য ও কর্মসূচিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দূরত্ব বাড়ছে বলে মনে করছেন অনেকে। এর ছাপ মিলেছে বুধবার রাতেও।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে অন্তত ২০ শিক্ষক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অবস্থানস্থলে গিয়ে তাদের সঙ্গে রাতে কথা বলতে চান। তবে আন্দোলনকারীরা তাদের সুযোগ দেননি। সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, একাত্মতা না জানানো পর্যন্ত কোনো আলোচনা নয়।
এর আগে সকালে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য শিক্ষার্থীদের দায়ী করে বিবৃতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয়। বিবৃতি এসেছে আন্দোলনের সূত্রপাত সেই বেগম সিরাজুন্নেছা হলের প্রভোস্ট কমিটির পক্ষ থেকেও।
প্রভোস্ট কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীরা হলের অব্যবস্থাপনা নিয়ে যেসব অভিযোগ করেছে, তা অনেকাংশেই সত্য নয়। হল প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমদ লিজা করোনা আক্রান্ত থাকা অবস্থায় তাকে ফোন করে রাতের মধ্যেই ছাত্রাবাসে আসতে বলেন ছাত্রীরা। প্রাধ্যক্ষ প্রভোস্ট কমিটির অন্য সদস্যদের পাঠাতে চাইলে ছাত্রীরা রাজি হননি। পরে প্রভোস্ট কমিটির সদস্যরা হলে গেলে তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন ছাত্রীরা।
এদিকে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার দুপুর থেকে আন্দোলনকারী ২৪ শিক্ষার্থী উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশন শুরু করেন। চলমান আন্দোলনের সপ্তম দিনে এসে অনশনে বসলেন তারা।
এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। ২ ফেব্রুয়ারি এ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল।
আন্দোলনে শিক্ষকরা
শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্যের অভিযোগ এনে বুধবার বিক্ষোভ করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক শিক্ষক। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অবস্থান নেন তারা। এ সময় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করুচিপূর্ণ মন্তব্যের অভিযোগসংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে তাদের হাতে।
ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক হিমাদ্রি শেখর রায় বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবি নিয়ে আন্দোলন করতেই পারে। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নিশ্চিত এসবের একটি সমাধান হবে। কিন্তু আন্দোলনের নামে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য কাম্য নয়। আমরা আমাদের শিক্ষার্থী ও সন্তানদের এমন শিক্ষা কখনই দেইনি।’
শিক্ষক ফাহমিদা রহমান খান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এ রকম ভাষা কখনই কাম্য হতে পারে না। তারা যে ভাষা ব্যবহার করছে, তা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ণ করছে। শিক্ষকদের নিয়ে এমন ভাষা ব্যবহারের পর আমরা ঘরে বসে থাকতে পারি না। তাই প্রতিবাদে নেমেছি।’
সহকারী অধ্যাপক জাহিদ হাসান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের যে আন্দোলন তার সঙ্গে আমাদের দ্বিমত নেই। তাদের দাবিগুলো কতটুকু যৌক্তিক, তা প্রশাসন বিবেচনা করবে। তবে ক্ষোভের ভাষা ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের আরও পরিশীলিত হওয়া প্রয়োজন।’
শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্যের অভিযোগ এনে শিক্ষকদের কর্মসূচিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ আরও বেড়েছে। তাদের দাবি, এর মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থী মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়েছেন, যা তাদের সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী হালিমা আক্তার বলেন, ‘আমরা আন্দোলন শুরু করেছিলাম এক প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। আমাদের ওপর হামলার পর উপাচার্য ও প্রক্টরিয়াল কমিটির পদত্যাগ দাবি করছি। আর কোনো শিক্ষকের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান নেই। উনারা আমাদের কাছে সম্মানিত ব্যক্তি।’
দেলোয়ার হোসেন নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘শিক্ষকরা যে অভিযোগ করছেন, তার কোনো ভিত্তি নেই। কোনো শিক্ষককে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা হয়নি। এই অভিযোগের কোনো প্রমাণও তারা দেখাতে পারবেন না।
‘ভিসির অশালীন একটি বক্তব্যের অডিও মঙ্গলবার ভাইরাল হয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে তারা কিছু বলছেন না। উল্টো শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে আন্দোলনে নেমেছেন।’
দেলোয়ার আরও বলেন, ‘এই শিক্ষকরা কারও দ্বারা প্রলুব্ধ হয়ে কিংবা সুবিধাপ্রাপ্ত হয়ে আজকে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তবে কোনো অপতৎপরতা আন্দোলন দাবিয়ে রাখতে পারবে না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
অন্যদিকে শিক্ষকদের এই কর্মসূচিতে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপক লায়লা আশরাফুনের একটি বক্তব্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
অধ্যাপক লায়লা বলেন, ‘সম্মানের জন্যই শিক্ষকতা পেশায় এসেছি। আমরা কোনো চাষাভুষা নই যে আমাদের যা খুশি তাই বলবে।’
শিক্ষকের ওই বক্তব্যে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ আরও উগড়ে দেয়। বুধবার দিনভর তাদের আন্দোলনের প্রধান স্লোগান হয়ে ওঠে - ‘চাষাভুষার সন্তান, আমরা সবাই সাস্টিয়ান।’
আন্দোলন যেভাবে শুরু
এক হল প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের আন্দোলন গত রোববার থেকে রূপ নিয়েছে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে। ওই প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের পর শিক্ষার্থীদের এখন একটাই দাবি, উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন লিজার বিরুদ্ধে খাবারের খারাপ মান, অব্যবস্থাপনা ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ আনেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। তারা প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে গত বৃহস্পতিবার রাত (১৩ জানুয়ারি) থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে সরে গেলেও দাবি পূরণ না হওয়ায় শনিবার সন্ধ্যায় ফের বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়ক আটকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন।
এরপর মধ্যরাতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন তারা। রোববার সকাল থেকে আবারও ক্যাম্পাসে শুরু হয় বিক্ষোভ।
বিকেলে তারা উপাচার্য ফরিদ উদ্দিনকে অবরুদ্ধ করলে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে। শিক্ষার্থীরাও ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। এরপর শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এ সময় পুলিশ রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে।
এর মধ্যেই পুলিশ উপাচার্যকে বের করে তার বাসভবনে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমেদ গুলিবিদ্ধ হন। আহত হন পুলিশ, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৫০ জন।
সে রাতেই জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। শিক্ষার্থীদের পরদিন দুপুর ১২টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ।
ওই সভা শেষে জানানো হয়, প্রাধ্যক্ষ জাফরিনের পদত্যাগ করেছেন।
এরপর পুলিশ ডেকে হামলা চালানোর অভিযোগ তুলে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে সেই রাত থেকে ফের বিক্ষোভে নামেন শিক্ষার্থীরা। তারা হল ছেড়ে যাবেন না বলেও জানান।
মঙ্গলবার রাতে তারা ঘোষণা দেন, বুধবার দুপুর ১২টার মধ্যে দাবি না মানা হলে আমরণ অনশনে বসবেন।
বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হওয়ায় ২৪ শিক্ষার্থী বুধবার বেলা ৩টা থেকে অনশন শুরু করেন। তাদের এই কর্মসূচিতে সমর্থন দেন আন্দোলনে থাকা অন্য শিক্ষার্থীরাও।
আরও পড়ুন:মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পূর্ব পূয়ালী গ্রামের আব্দুর রহিম হাওলাদারের একমাত্র ছেলে রাব্বি হাওলাদার।
২৫ বছর বয়সী রাব্বির দুটি কিডনিই নষ্ট। ডাক্তারের পরামর্শ তার কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে। বর্তমানে তার চিকিৎসার জন্য প্রায় ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
রাব্বির কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য এতো টাকা লাগবে শোনার পর থেকেই তার কৃষক বাবা সাহায্যের জন্য ছুটছেন চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ স্থানীয় বিত্তবানদের কাছে। কেন না তার সবকিছুই বিক্রি করে দিলেও এক থেকে দেড় লাখ টাকার বেশি জোগাড় করার সামর্থ্য হচ্ছে না।
রাব্বি বর্তমানে ঢাকার মিরপুর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এমন অবস্থায় কৃষক বাবা তার সন্তানকে বাঁচাতে দেশবাসীর কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন। দেশের বিত্তবানরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেই হয়ত বেঁচে যাবে তার সন্তান।
রাব্বির পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাব্বি হাওলাদার কয়েক মাস আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (সেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে যান তার পরিবার। সেখানে চিকিৎসক তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেন রাব্বির দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত চিকিৎসা চলছিল রাব্বির, কিন্তু কিছুদিন আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে মিরপুর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এরই মধ্যে প্রায় আড়াই লাখ টাকার ওপরে শুধু হাসপাতাল ও ওষুধের বিল দিতে হয়েছে। দরিদ্র এই পরিবারটি আত্মীয়স্বজনসহ সবার সহায়তায় ওই বিল দেয়া সম্ভব হয়।
রাব্বির মা রেভা বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘এভাবে আর কয়দিন চিকিৎসা করাতে পারব জানি না। কারণ আমাদের সামর্থ্য শেষ হয়ে এসেছে। শুধু টাকার অভাবে তাকে ভালো কোনো হাসপাতালেও নিতে পারছি না, কিন্তু কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য অপারেশনের ধকল সহ্য করার মতো সুস্থ অবস্থায় আনা খুব জরুরি।’
রাব্বির বাবা আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে অনুরোধ করা হচ্ছে আপনাদের ভালোবাসা ও সাহায্য আমাদের খুব প্রয়োজন। কারণ শুধু টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় আমার একমাত্র ছেলে অকালে ঝরে যাবে তা আমার জীবন থাকতে মানতে পারছি না।’
তাকে কেউ সাহায্য করতে চাইলে ০১৯৯৭-২২৮৯৭৫ ও ০১৯৮৭-৩৬৬৫৬৮ (বিকাশ-পার্সোনাল) নাম্বারে পাঠাতে পারেন ও যোগাযোগ করতে পারেন।
আরও পড়ুন:ময়মনসিংহের ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন।
এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উপজেলার উজানপাড়া এলাকায় বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ত্রিশাল থানার ওসি কামাল হোসেন জানান, বেলা ১১টার দিকে মাদানী সিএনজি পাম্প সংলগ্ন উজানপাড়ায় একটি বাস ইউটার্ন নেয়ার সময় অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই বছর বয়সী এক মেয়ের মৃত্যু হয়। ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে ৩৩ বছর বয়সী অটোরিকশার চালক শরিফুল ইসলাম ও অন্য একজনের মৃত্যু হয়।
তিনি জানান, এ দুর্ঘটনায় আহত চারজনের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে, যারা হলেন ত্রিশালের রুদ্র গ্রামের জালাল উদ্দিনের ৪৫ বছর বয়সী স্ত্রী মনি আক্তার ও একই গ্রামের শামীম আহমেদের ৪৫ বছর বয়সী স্ত্রী সাহিদা আক্তার।
ফরিদপুর সদরে যৌনপল্লি থেকে দুই তরুণীকে উদ্ধার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় ওই পল্লির এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মো. হাসানুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার রাতে এসব তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃত পারুল বেগম ওরফে পারু (৪৮) জেলার রথখোলা যৌনপল্লির বাসিন্দা।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন আপন (৩০), জহির (৩০) ও ববি (৩৮)।
গ্রেপ্তার না হওয়া এ তিনজনের মধ্যে ববি যৌনপল্লির সর্দারনি হিসেবে পরিচিত। আপন ও জহিরের পূর্ণাঙ্গ পরিচয় পাওয়া যায়নি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পার্লারে ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে চাঁদপুরের কচুয়া থানা এলাকা থেকে এক তরুণীকে গত ১০ মার্চ ঢাকায় নিয়ে আসেন আপন। দুই দিন সেখানে রেখে তাকে (তরুণী) তিন ব্যক্তির হাতে তুলে দেন তিনি। ওই তিন ব্যক্তি ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় তরুণীকে রথখোলা যৌনপল্লিতে এনে পারুর কাছে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। পরের দিন একটি সাদা কাগজে তরুণীর স্বাক্ষর নিয়ে জানানো হয়, এখন থেকে তিনি যৌনপল্লির লাইসেন্সধারী সদস্য।
এতে আরও বলা হয়, মেয়েটিকে পারুর বাসায় রেখে ববি ও অন্যদের মাধ্যমে জোর করে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হয়। এর মাঝে মেয়েটি বাড়িতে যোগাযোগের জন্য একজন খদ্দেরকে তার ছোট বোনের মোবাইল নম্বর দেন। পরে ওই খদ্দেরের মোবাইল কলের মাধ্যমে মেয়েটির সন্ধান পায় তার পরিবার। এরপর তার মা ও ফুফা রথখোলায় এসে তাকে দেখতে পেয়ে স্থানীয় থানা পুলিশকে জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পুলিশ যৌনপল্লিতে অভিযান চালানোর পর ফেনীর পূর্ব ছাগলনাইয়ার আরেক তরুণীও তাকে উদ্ধারে পুলিশের সাহায্য চান। ওই তরুণী জানান, তাকেও চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে ঢাকার মিরপুরের একটি বাসায় এক রাত রেখে রথখোলা যৌনপল্লিতে এনে পারুর কাছে বিক্রি করা হয়।
কোতোয়ালি থানার ওসি হাসানুজ্জামান জানান, যৌনপল্লিতে তরুণীকে নেয়ার ঘটনায় তার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফাহিম ফয়সাল মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে অভিযান চালিয়ে পারুল বেগম ওরফে পারুকে গ্রেপ্তার করে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে।
নোয়াখালীর কবিরহাটে পুকুরের পানিতে ডুবে সহোদর দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের রামেশ্বপুর গ্রামের ছর আলী মাঝি বাড়ির পুকুরে বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো দুই শিশু হলো সাত বছর বয়সী বিবি ফাতেমা বেগম ও তার চার বছরের ভাই আবিদ হোসেন। শিশুদ্বয় ছর আলী মাঝি বাড়ির আবদুল হাইয়ের সন্তান।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি হুমায়ন কবির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘দুই ভাই-বোন সকালে ঘরের পাশে পুকুরে দাঁত ব্রাশ করতে যায়। এ সময় হাত-মুখ ধোয়ার সময় একজন পুকুরে পড়ে গেলে আরেকজন উদ্ধার করতে পানিতে নামে।
‘পরে দুজনই পানিতে ডুবে যায়। একপর্যায়ে পরিবারের সদস্যরা দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত বলে জানান।’
তিনি আরও বলেন, ‘মরদেহ স্বজনরা নিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়।’
আরও পড়ুন:ইস্টার সানডে, শবে কদর ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১৯ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি)।
আগামী ৩১ মার্চ থেকে শুরু হওয়া ছুটি শেষ হবে ১৮ এপ্রিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো.মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার এ তথ্য জানানো হয়।
এতে উল্লেখ করে বলা হয়, ‘৩১ মার্চ থেকে ১৮ এপ্রিল ১৯ দিন সকল ধরনের ক্লাস কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ৩১ মার্চ ইস্টার সানডে উপলক্ষে এক দিন এবং ৭ থেকে ১৮ এপ্রিল ১২ দিন পবিত্র শবে কদর ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস বন্ধ থাকবে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকাকালীন সকল ধরনের সিকিউরিটি ও জরুরি সেবাসমূহ বহাল থাকবে।’
কুমিল্লার বরুড়ায় ঘর থেকে এক যুবকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পৌরসভার শালুকিয়া গ্রাম থেকে বুধবার উদ্ধার হওয়া ওই যুবকের নাম মোহাম্মদ শরীফ, যার বয়স ৩০ বছর।
স্থানীয় একজনের বরাতে পুলিশ জানায়, শরীফের ঘরের দরজা খোলা ছিল। তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়া হয়। পরে পুলিশের একটি টিম মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
বাহিনীটি আরও জানায়, কারা শরীফকে হত্যা করেছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির ভাষ্য, শরীফ দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। তিনি মাদক কারবারে জড়িত ছিলেন। তার নামে বরুড়া থানায় মাদকের একাধিক মামলা রয়েছে।
বরুড়া থানার ওসি রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা শরীফের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠাই। শরীরের বিভিন্ন ক্ষতের চিহ্ন দেখে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তাকে হত্যা করা হয়েছে।’
পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত।’
নওগাঁর পোরশা সীমান্তে ২৬ মার্চ গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবক আল আমিনের মরদেহ হস্তান্তর করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।
সীমান্তের হাঁপানিয়া এলাকায় ২৩৬ মেইন পিলারের কাছে বুধবার রাত ৯টার দিকে বিএসএফ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
ওই সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
নওগাঁ ১৬ বিজিবির নিতপুর ক্যাম্পের সুবেদার মাহফুজুর রহমান জানান, আল আমিনের মরদেহ ফেরত নিতে বিএসএফের সঙ্গে বুধবার দিনভর যোগাযোগ করেন তারা। এরপর সন্ধ্যায় পতাকা বৈঠকের পর রাতে আল আমিনের মরদেহ হস্তান্তর করে বিএসএফ। স্থানীয় পুলিশের মাধ্যমে পরিবারের কাছে দেয়া হয় আল আমিনের মরদেহ।
তিনি জানান, বিএসএফের পক্ষ থেকে ভারতের কেদারিপাড়া ক্যাম্পের কমান্ডার পরিদর্শক সুভাষ চন্দ্র মিনা উপস্থিত ছিলেন।
নীতপুর সীমান্ত এলাকায় ২৬ মার্চ ভোরে গরু আনতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে নিহত হন আল আমিন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য