× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Even in the expulsion vote BNPs Trinamool is in the fifth step
google_news print-icon

বহিষ্কারেও ভোটে বিএনপির তৃণমূল, পঞ্চম ধাপে চেয়ারম্যান ৮৩

বহিষ্কারেও-ভোটে-বিএনপির-তৃণমূল-পঞ্চম-ধাপে-চেয়ারম্যান-৮৩
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পঞ্চম ধাপেও বিএনপির অনেক নেতা স্বতন্ত্র ব্যানারে প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান হয়েছেন। গ্রাফিক্স: নিউজবাংলা
তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপের মতো পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও বিএনপির তৃণমূলের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে চমক দেখিয়েছেন। এই ভোট বর্জন করা বিএনপি আগের ধাপগুলোতে ভোটে অংশ নেয়া তৃণমূলের নেতাদের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নিলেও পঞ্চম ধাপের ভোটে অংশ নেয়ায় বেশ কয়েকজনের পদ কেড়ে নিয়েছে। তাতেও নেতারা ভোট থেকে দূরে থাকেননি।

বিএনপির বর্জনের মধ্যেও চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলটির নেতাদের ফলাফলের চমক অব্যাহত রয়েছে।

তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৯৬ জন এবং চতুর্থ ধাপে ৯৮ জনের পর পঞ্চম ধাপের নির্বাচনেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় দলটির ৮৩ জন তৃণমূল নেতা চেয়ারম্যান হয়েছেন।

বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে এই নির্বাচন বর্জন করলেও দলটির তৃণমূলের নেতারা ভোট থেকে দূরে থাকতে চাইছেন না। স্বতন্ত্র প্রার্থীর পরিচয়ে ভোটের মাঠে তারা অবস্থান ধরে রাখতে চাইছেন।

চলতি বছর পৌরসভা নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ আনার পর বর্তমান সরকার আর নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো ভোটে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। ফলে চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও তাদের কোনো প্রার্থী নেই।

তবে গত ২ নভেম্বর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের একটি বক্তব্যে স্পষ্ট হয়, বিএনপি আসলে এই নির্বাচন থেকে একেবারে দূরে নেই।

সেদিন ঠাকুরগাঁওয়ে নিজ বাসভবনে এক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে করাটা সঠিক নয়। তাই বিএনপি এ নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ নিচ্ছে না। তবে বিএনপি থেকে কেউ স্বতন্ত্র হয়ে অংশ নিলে সেখানে বাধা নেই।’

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পঞ্চম ধাপে ফলাফল ঘোষণা করা ৬৬২টি ইউনিয়নে নৌকার ৩০৮, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ১৯০, বিএনপি ৮৩ এবং অন্যান্য ৮১ জন চেয়ারম্যান হয়েছেন।

এরপর মোট তিনটি ধাপের নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনের আগে ভোটে দাঁড়ানোয় বিএনপি বেশ কয়েকজন নেতাকে দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। কারণ উল্লেখ না করলেও এটি বিএনপির সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জের কারণে, সেটি নিশ্চিত করেছেন নেতারা।

পঞ্চম ধাপে ৫ জানুয়ারিতে ৭০৮টি ইউনিয়নে ভোটের তফসিল ঘোষণা হয়। তবে বেশ কিছু ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত ভোট হয় ৬৬৪টি ইউনিয়নে ভোট হয়। এর মধ্যে ২টি ইউনিয়নে ফলাফল স্থগিত হয়, বাকি ৬৬২টি ইউনিয়নে ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩০৮টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান হয়েছেন নৌকা নিয়ে লড়াই করা আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়া নেতারা জিতেছেন ১৯০ ইউনিয়নে।

বহিষ্কারেও ভোটে বিএনপির তৃণমূল, পঞ্চম ধাপে চেয়ারম্যান ৮৩
বিএনপি নির্বাচন অংশ না নেয়ায় ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রতীক পায়নি দলটির নেতারা। ফাইল ছবি/নিউজবাংলা

এদিন চার জেলায় মোট ৪৬টি ইউনিয়নে ভোট হয়েছে দলীয় প্রতীক ছাড়া। এর মধ্যে ছিল কিশোরগঞ্জের ১৪টি, গোপালগঞ্জ ও শরীয়তপুরে ১৫টি করে এবং মাদারীপুরের দুটি।

বাকিদের মধ্যে বিএনপির রাজনীতি সম্পৃক্ত ৮৩ জন ছাড়া অন্যদের মধ্যে জামায়াতের রাজনীতিতে জড়িত ১৩ জন, জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে জড়িত ৪ জন আর ১৯ জন বিভিন্ন দলের রাজনীতি করেন, কেউ কেউ কোনো দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন।

বিএনপির রাজনীতিতে জড়িতরা সবচেয়ে ভালো করেছেন রাজশাহী বিভাগে। সেই বিভাগে দলটির সঙ্গে জড়িত ২০ জন পেয়েছেন জয়।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭ ইউনিয়নে জয় এসেছে সিলেট বিভাগে, রংপুর বিভাগে জয় এসেছে ১৫টিতে, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৪ টিতে, ঢাকা বিভাগে ৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে জয়ী ৬ জন এবং খুলনা বিভাগে জয়ী ৪ জন বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত। বরিশাল বিভাগে বিএনপির কেউ জিততে পারেননি।

চতুর্থ ধাপের নির্বাচনেও বিএনপির নেতারা সবচেয়ে বেশি ভালো করেছিলেন উত্তরের দুই বিভাগ রাজশাহী ও রংপুরে। ওই ধাপে সিলেট বিভাগেও তারা দারুণ করেছিলেন।

জানতে চাইলে বিএনপির মুখপাত্র ও সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেখুন আমার জানা নেই মহাসচিব ঠিক কী বলেছেন। কিন্তু আমার মনে হয় তিনি এটা বলতে চেয়েছেন যে, দলীয় পরিচয়ের বাইরে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী। এখন একজন তো দলের পদে থেকে হাঁস মার্কাতে নির্বাচন করতে পারবেন না। তিনি নির্বাচন করুক। সেটার ওয়েটাই তো এটা। যে দলীয় কার্যক্রম থেকে বেরিয়ে সেটা করতে হবে, স্বাধীনভাবে।’

বহিষ্কারেও ভোটে বিএনপির তৃণমূল, পঞ্চম ধাপে চেয়ারম্যান ৮৩

রাজশাহী বিভাগে ২০ জয়

এই বিভাগে ভোট হয়েছে মোট ১২২টি ইউনিয়নে। এর মধ্যে ২টিতে ফল ঘোষণা স্থগিত আছে। বাকিগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক জয় পেয়েছে ৬১টিতে। দলের বিদ্রোহী নেতারা জিতেছেন ৩৫টিতে আর বিএনপির নেতারা ২০ ইউনিয়নে এবং ৪টি ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন জামায়াত নেতারা।

এর মধ্যে বগুড়ায় সবচেয়ে বেশি ৬টি ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্তরা। এরা হলেন: দুপচাঁচিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নে মোয়াজ্জেম হোসেন, চামরুল ইউনিয়নে শাহজাহান আলী, জিয়ানগরে আনোয়ার হোসেন এবং গাবতলী উপজেলার রামেশ্বরপুর ইউনিয়নে আব্দুল ওহাব মণ্ডল, মহিষাবান ইউনিয়নে আব্দুল মজিদ মণ্ডল ও নশিপুর ইউনিয়নে রাজ্জাকুল আমিন তালুকদার রোকন।

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত ৫ জন পেয়েছেন জয়। এরা হলেন: বড়বিহানলী ইউনিয়নে মাহমুদুর রহমান মিলন, আউচপাড়ায় ডিএম শাফি, শুভডাঙ্গায় মোশারফ হোসেন, গণিপুরে মনিরুজ্জামান রঞ্জু ও গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নে হাবিবুর রহমান।

জয়পুরহাটের ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে তিনটিতেই জয় পেয়েছেন বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এরা হলেন: আটাপুর ইউনিয়নে আবু চৌধুরী, বাগজানা ইউনিয়নে নাজমুল হক এবং ধরঞ্জী ইউপিতে আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ১৪ ইউনিয়নের মধ্যেও তিনটিতে জয় পেয়েছেন বিএনপির রাজনীতিতে জড়িতরা। এরা হলেন: বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নে আতাউল হক কমল, রানিহাটি ইউনিয়নে রহমত আলী ও গোবরাতলা ইউনিয়নে রবিউল ইসলাম টিপু।

নওগাঁয় বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত ২ জন পেয়েছেন জয়। এরা হলেন: পত্নীতলা উপজেলার আমাইড়ে শহীদুল ইসলাম ও শিহাড়া ইউনিয়নে তোফাজ্জল হোসেন।

নাটোরের ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে নলডাঙ্গা উপজেলার বিপ্রবেলঘরিয়ায় জিতেছেন বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান আলী।

এই বিভাগের বাকি দুই জেলা পাবনা ও সিরাজগঞ্জে বিএনপি সংশ্লিষ্ট কেউ জয় পাননি।

বহিষ্কারেও ভোটে বিএনপির তৃণমূল, পঞ্চম ধাপে চেয়ারম্যান ৮৩

সিলেটে জয় ১৭ ইউনিয়নে

এই ইউনিয়নে ভোট হয়েছে মোট ৭৫টি ইউনিয়নে। অন্যগুলোর মধ্যে নৌকা জিতেছে ২৯ টিতে। ২১ ইউনিয়নে জিতেছেন আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীরা। স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিএনপির ১৭ জন, জামায়াতের ৪ জন জয়ী হয়েছেন। এছাড়া জাতীয় পার্টির ১ জন, জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের ২ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। আর নির্দলীয় ২ জন প্রার্থী এবার জয় পেয়েছেন।

এর মধ্যে হবিগঞ্জে সবচেয়ে বেশি ৭টি ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন বিএনপি নেতারা।

এরা হলেন মাধবপুরের নোয়াপাড়া ইউনিয়নে সৈয়দ মো. আতাউল মোস্তফা সোহেল, ছাতিয়াইন ইউনিয়নে মিনহাজ উদ্দিন চৌধুরী কাসেদ, আদাঐর ইউনিয়নে মীর খুরশেদ আলম, চৌমুহনী ইউনিয়নে মাহবুবুর রহমান সোহাগ ও শাহজাহানপুর ইউনিয়নে পারভেজ হোসেন চৌধুরী।

চুনারুঘাট উপজেলায় জিতেছেন গাজীপুর ইউনিয়নে মোহাম্মদ আলী ও উবাহাটা ইউনিয়নে এজাজ ঠাকুর চৌধুরী।

মৌলভীবাজারে বিএনপির রাজনীতিতে জয় পেয়েছেন ৬টি ইউনিয়নে। এরা হলেন শ্রীমঙ্গল ১নং মির্জাপুর ইউনিয়নে মিজলু আহমদ চৌধুরী, ৩নং শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নে দুদু মিয়া, ৪নং সিন্দুরখান ইউনিয়নে ইয়াছিন আরাফাত রবিন, কমলগঞ্জ পতনঊষার ইউনিয়নে অলি আহমদ খান, মুন্সিবাজার ইউনিয়নে নাহিদ আহমদ তরফদার এবং আদমপুর ইউনিয়নে আবদাল হোসেন (ঘোড়া)।

সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার বড়চতুলে জয়ী আবদুল মালিক চৌধুরী এবং, ঝিঙ্গাবাড়িতে জয়ী মাস্টার আবু বকর বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত।

সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা বাজার ইউনিয়নের মাসুক মিয়া ও ভীমখালী ইউনিয়নের আক্তারুজ্জামান তালুকদার বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত।

বহিষ্কারেও ভোটে বিএনপির তৃণমূল, পঞ্চম ধাপে চেয়ারম্যান ৮৩

রংপুর বিভাগে জয় ১৫ ইউনিয়নে

উত্তরের বিভাগ রংপুরে ফল ঘোষিত হয়েছে মোট ৬৮ ইউনিয়নে। এর মধ্যে নৌকা জয় পেয়েছে সর্বোচ্চ ৩৩ ইউনিয়নে। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পাওয়া বিদ্রোহীরা জয় পেয়েছেন ১৪টিতে। বিএনপির রাজনীতিতে জড়িতরা জয় পেয়েছেন ১৫টিতে।

বাকিগুলোর মধ্যে জামায়াতের রাজনীতিতে জড়িতরা ২টিতে, জাতীয় পার্টির রাজনীতে জড়িতরা ৩টিতে এবং একটিতে জয় পেয়েছেন এমন একজন, যিনি রাজনীতিতে জড়িত নন।

এর মধ্যে বিএনপির তৃণমূলের নেতারা একক জেলা হিসেবে সর্বোচ্চ ৬টিতে জয় পেয়েছেন দিনাজপুরে।

এরা হলেন চিরিরবন্দর উপজেলার সাতনালা ইউনিয়নে এনামুল হক শাহ, আব্দুলপুর ইউনিয়নে ময়েনউদ্দিন শাহ, ভিয়াইল ইউনিয়নে আব্দুর রাজ্জাক শাহ, তেঁতুলিয়া ইউনিয়নে আজগার আলী মাষ্টার, পার্বতীপুর উপজেলার মমিনপুর ইউনিয়নে নজরুল সরকার এবং মোস্তফাপুর বিএনপি মতিয়ার রহমান।

নীলফামারী ও কুড়িগ্রামে তিনটি করে ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন বিএনপির তৃণমূল নেতারা।

এর মধ্যে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়িতে উপজেলা বিএনপির সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম কালু, বামুনিয়া ইউনিয়নে উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মমিনুর রহমান মোটর সাইকেল ও জোড়াবাড়ি ইউনিয়নে ইউনিয়ন ছাত্রদলের প্রাক্তন সভাপতি সাখাওয়াত হাবিব বাবু জয় পেয়েছেন।

কুড়িগ্রামে রৌমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নে আব্দুল রাজ্জাক, যাদুরচরে সরবেশ আলী এবং রাজিবপুর উপজেলায় সদর ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন মিরন মো. ইলিয়াস।

পঞ্চগড়ের দুটি ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন বিএনপির নেতারা। এরা হলেন: দেবীগঞ্জ উপজেলার শালডাঙ্গায় ফরিদুল ইসলাম এবং চিলাহাটিতে হারুন অর রশীদ।

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার সদর ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত মোকছেদুর রহমান মোকছেদ।

গাইবান্ধায় বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত কেউ জয় পাননি।

বহিষ্কারেও ভোটে বিএনপির তৃণমূল, পঞ্চম ধাপে চেয়ারম্যান ৮৩

চট্টগ্রাম বিভাগের জয়ের অর্ধেকই চাঁদপুরে

চট্টগ্রাম বিভাগের ১৩৫টি ইউনিয়নে ভোট হয় সেদিন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭০টিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। দলের বিদ্রোহী নেতারা জয় পেয়েছে ৪০ ইউনিয়নে। বিএনপির নেতারা ১৫টিতে, একটিতে জামায়াত নেতা, ৬টিতে নির্দলীয় প্রার্থী এবং বিভিন্ন দলের সঙ্গে সম্পৃক্তরা জয় পেয়েছেন ৪টিতে।

এর মধ্যে বিএনপি সংশ্লিষ্টরা সবচেয়ে বেশি ৭টি ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন চাঁদপুরে।

এদের মধ্যে ৬ জনই ফরিদগঞ্জ উপজেলায়। এরা হলেন: ১নং বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নে জসিম উদ্দিন মিয়াজী স্বপন, ৩নং সুবিদপুর (পূর্ব) ইউনিয়নে বেলায়েত হোসেন, ৪নং সুবিদপুর ইউনিয়নে মহসীন হোসেন, ৫নং গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নে শাহজাহান পাটোয়ারী, ৭নং পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নে আবু তাহের এবং ১২নং চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নে শাহজাহান মাষ্টার।

হাইমচর উপজেলার ৩নং আলগী দক্ষিণ ইউনিয়নে সাবেক উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সরদার আব্দুল জলিল জয় পেয়েছেন।

কুমিল্লায় জয় পেয়েছেন দুই জন। এরা হলেন: চান্দিনা উপজেলার বাতাঘাসিতে সাদেকুর রহমান এবং বরকইটে নুরে আলম।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপিসংশ্লিষ্ট দুই জন জয় পেয়েছেন। এরা হলেন: সদর উপজেলার মজলিশপুরে কামরুল হাসান এবং আশুগঞ্জ উপজেলার চরচারতলা ইউনিয়নে ফাইজুর রহমান।

এছাড়া চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার আহলা করলডেঙ্গা ইউনিয়নে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হামিদুল হক মান্নান, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার জিরতলী ইউনিয়নে জিতেছেন বিএনপি সমর্থিত শামসুল আলম লাভলু এবং বান্দরবানের সুয়ালক ইউনিয়নে জিতেছেন উক্যনু মার্মা।

ঢাকা বিভাগে ৭ জন

ঢাকা বিভাগে সেদিন ভোট হয়েছে ১৪৪টি ইউনিয়নে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫৭টি ইউনিয়নে জয় পেয়েছে নৌকা। ৩৫ ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। ৭টি ইউনিয়নে বিএনপির নেতারা। আর চার জেলার ৪৬ ইউনিয়নে ভোট হয়েছে দলীয় প্রতীক ছাড়া।

এর মধ্যে তিনটিতেই জয় এসেছে মানিকগঞ্জে।

হরিরামপুরের গালা ইউনিয়নের উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শফিক বিশ্বাস, হরিরামপুরের দৌলতপুর খলশী ইউনিয়নের জিয়াউর রহমান এবং বাঘুটিয়া ইউনিয়নের যুবদলের সাবেক কর্মী আমজাদ হোসেন জয় পেয়েছেন।

টাঙ্গাইলে বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত দুই জন পেয়েছেন জয়। এরা হলেন: মির্জাপুর উপজেলার জামুর্কী ইউনিয়নে ডি এ মতিন, বানাইল ইউনিয়নে আব্দুল্লাহ আল মামুন।

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার সদর ইউনিয়নে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফাইয়াজ হাসান এবং ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ১ নং কামারখালী ইউনিয়নে জিতেছেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি রাকিব হোসেন চৌধুরী জয় পেয়েছেন।

ময়মনসিংহ বিভাগে ৬ জয়

এই বিভাগে ভোট হয়েছে মোট ৬১ ইউনিয়নে। এর মধ্যে নৌকা জয় পেয়েছে ৩১টিতে। দলের বিদ্রোহীরা জয় পেয়েছে ২৩টিতে। ৬ ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন বিএনপির রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা আর একটিতে নির্দলীয় প্রার্থী।

এই ৬টির মধ্যে তিনটি নেত্রকোণার এবং তিনটি শেরপুরের।

নেত্রকোনার মদন উপজেলার চানগাঁও ইউনিয়নে জয়ী নুরুর আলম তালুকদার, নায়েকপুর ইউনিয়নে জয়ী হাবিবুর রহমান ও ফতেপুর ইউনিয়নে জয়ী সামিউল হায়দার সফি বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত।

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার হাতিবান্ধা ইউনিয়নে জাহাঙ্গীর আলম, কাংশা ইউনিয়নে আতাউর রহমান ও নলকুড়া ইউনিয়নে জয়ী রুকুনুজ্জামান জামান বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত।

খুলনায় ৪ জয়

এই বিভাগে ভোট হয়েছে মোট ৫২ ইউনিয়নে। এই বিভাগে নৌকা মার্কা জয় পেয়েছে ২৪ ইউনিয়নে। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী নেতারা জয় পেয়েছেন ২১টিতে। বিএনপি জয় পেয়েছে ৪টিতে, দুটিতে জামায়াত এবং একটিতে অন্যান্য।

এই চার জনের মধ্যে তিন জনই কেশবপুর উপজেলার। এরা হলেন মজিদপুর ইউনিয়নের মুহাম্মদ পলাশ, সুফলকাঠি ইউনিয়নের মঞ্জুর রহমান এবং সাতবাড়িয়ায় রেজাউল করিম।

সাতক্ষীরায় আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নে বিজয়ী রুহুল কুদ্দুসও বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত।

এছাড়া ৬টি ইউনিয়নে ভোট হয়েছে বরিশাল বিভাগের পিরোজপুরে। এর মধ্যে ৩টি ইউনিয়নে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ, একটিতে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ও ২টিতে নির্দলীয় প্রার্থী।



** প্রতিবেদনটি তৈরিতে বিভিন্ন জেলায় নিউজবাংলার প্রতিনিধিদের সহায়তা রয়েছে।

আরও পড়ুন:
নৌকার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আ.লীগ নেতার যত অভিযোগ
নবনির্বাচিত মেম্বারকে গুলি করে হত্যা
ইউপিতে নৌকার পরাজয়ের দায় কেন্দ্রের: উবায়দুল মোকতাদির
ভোটে হেরে কার্যালয়ের চেয়ার বাড়ি নিয়ে গেলেন প্রার্থী
ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা ও ইসির দায়

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Another 120 people from Libya have been brought back home

লিবিয়া থেকে আরও ১২৩ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে

লিবিয়া থেকে আরও ১২৩ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে

লিবিয়া থেকে স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করা আরও ১২৩ অনিবন্ধিত বাংলাদেশি নাগরিককে গতকাল বৃহস্পতিবার দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসব বাংলাদেশির সবাই বুরাক এয়ারের একটি বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইটে (ইউজেড ০২২২) সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান।

উল্লেখ্য, প্রত্যাগতদের অধিকাংশই মানবপাচারের শিকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে, ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সমন্বিত উদ্যোগে প্রত্যাবাসন কার্যক্রমটি বাস্তবায়িত হয়েছে।

দেশে ফেরার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইওএম-এর প্রতিনিধিরা তাদের স্বাগত জানান ।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধিকাংশ বাংলাদেশি সমুদ্রপথে ইউরোপে পৌঁছানোর উদ্দেশে অনিবন্ধিতভাবে লিবিয়ায় প্রবেশ করেছিলেন। লিবিয়ায় অবস্থানকালে তাদের অনেকেই মানব পাচারকারীদের দ্বারা অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হন।

সরকারি কর্মকর্তারা এসব অভিবাসীকে পরামর্শ দেন, যেন তারা অন্যদের এই ধরনের বিপজ্জনক ও অবৈধ পথে বিদেশ গমনের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করেন এবং ভবিষ্যতে এমন যাত্রা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন।

পুনর্বাসন সহায়তার অংশ হিসেবে আইওএম প্রত্যেককে নগদ ৬ হাজার টাকা, জরুরি খাদ্য সহায়তা, প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা এবং প্রয়োজনে অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করেছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বর্তমানে লিবিয়ার বিভিন্ন বন্দিশিবিরে আটক থাকা অন্যান্য বাংলাদেশির নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের কাজ চলছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইওএম যৌথভাবে এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে।

মন্তব্য

তদন্ত কমিশনের সংবাদ সম্মেলন

গুমের শিকার ব‍্যক্তিদের চার ধরনের পরিণতি হতো

গুমের শিকার ব‍্যক্তিদের চার ধরনের পরিণতি হতো

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই গুম করা হতো বলে জানিয়েছেন গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। গুমের শিকার ব্যক্তিদের সম্ভাব্য ৪ ধরনের পরিণতি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে সংবাদ সম্মেলনে গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিটির সভাপতি এসব তথ্য জানান। কমিশনে দাখিল করা অভিযোগ বিশ্লেষণে এসব তথ্য দেন তিনি।

তিনি বলেন, গুমের শিকার ব্যক্তিদের সম্ভাব্য যে ৪ ধরনের পরিণতি হয়েছে, তা হলো: ১. গুমের শিকার ব্যক্তিকে হত্যা করা। ২. বিচারের আগেই মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করে জঙ্গি তকমা দিয়ে বাংলাদেশেই বিচারাধীন বা নতুন ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতার দেখানো।৩. তাকে সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাঠিয়ে সে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা করা। ৪. ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে, অল্পসংখ্যক ক্ষেত্রে মামলা না দিয়ে ছেড়ে দেওয়া।

গুম কমিশনের ২য় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন গত ৪ জুন প্রধান উপদেষ্টা বরাবর জমা দেওয়ার পর আজ দুপুরে রাজধানীর গুলশানে গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মইনুল ইসলাম চৌধুরী এ সব কথা বলেন।

গুম কমিশনের সভাপতি বলেন, বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকারের আমলে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি এবং ভিন্ন মতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে পদ্ধতিগত দমননীতির অংশ হিসেবে গুমকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরেও বহু অপরাধী ও তাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকায় অনেক জোরালো প্রমাণ ও নিদর্শন ধ্বংস, অনেক ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক অসহযোগিতা, সাক্ষীদের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানারকম ভীতিকর ও আতঙ্কজনক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। তবুও বহু ভুক্তভোগী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের অভিযোগ ও অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন। তারা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিস্তারিতভাবে সে কাহিনি তুলে ধরেছেন।

গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির সভাপতি আরো বলেন, বিগত সরকারের শাসনামলে গুম একটি সুশৃঙ্খল ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপে ‘জঙ্গিবাদবিরোধী’ অভিযানের ছায়াতলে ইসলামি উগ্রবাদের হুমকিকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করা, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন ও শাসন দীর্ঘায়িত করার উদ্দেশে পরিচালিত হয়েছিল। ভুক্তভোগীদের মধ্যে ছিলেন- মেধাবী শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক কর্মী ও সাংবাদিক থেকে সাধারণ জনগণ।

মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এ প্রক্রিয়ায় তারা ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাকে অস্ত্র বানিয়েছিল। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও নিরাপত্তা বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাবাধীন করে এবং নির্যাতন ও গোপন আটকের সংস্কৃতি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে চালু করেছিল। এমনকি সাধারণ নাগরিকদের বেআইনি পন্থায় বারবার ভারতীয় বাহিনীর হাতেও তুলে দেওয়া হয়েছিল।

কমিশন অফ ইনকোয়ারি অ্যাক্টের ধারা ১০ এ(১) ও (২) অনুযায়ী কমিশনে দাখিলকৃত ১৩১টি অভিযোগের বিষয়ে আইন মোতাবেক জিডি রেকর্ডপূর্বক ভিকটিমদের সন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পুলিশ মহাপরিদর্শক বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, গোপন আটক কেন্দ্রের অস্তিত্ব এখন আর অস্বীকার করা যায় না। সকল ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগীরা প্রায় একই ধরনের প্রক্রিয়ার শিকার হয়েছেন। পদ্ধতিগত নির্যাতন, সন্ত্রাসী হিসেবে প্রচার, একই ধরনের আইন অনুযায়ী অভিযোগ দায়ের ও একই ধরনের ভাষায় বর্ণনা। বিভিন্ন পটভূমি থেকে আসা ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতার এই সামঞ্জস্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে স্পষ্ট করে।

তিনি বলেন, প্রতিবেদনে ১৯ শতাংশ ফেরত না আসা ১২ জন ভিকটিমের বিষয়ে অগ্রগতি তুলে ধরেছি, যাদের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধান সম্পন্ন হয়েছে। তাদের গুমের জন্য কারা দায়ী, তা প্রাথমিকভাবে আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। চলমান অনুসন্ধানের স্বার্থে এই মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।

ফিরে না আসা ভিকটিমদের বিষয়ে অপরাধী ও গুমের অপরাধ সংঘটনের স্থানসহ নানাবিধ বিষয়ে তথ্যের ঘাটতি বা পুরোনো কললিস্ট না পাওয়াসহ নানারকম বিলম্বঘটিত প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হলেও কমিশন আন্তরিকতার সঙ্গে অনুসন্ধান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

প্রতিবেদনে কমিশন সন্ত্রাসবিরোধী যে সব মামলায় অপব্যবহার হয়েছে, তা ন্যায় বিচারের মানদণ্ড বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতনের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়ার মতো উপযুক্ত কাউন্টার টেরোরিজম মেথড বের করার জন্য দুটি সুপারিশ করা হয়।

এ সময় গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির সদস্য অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত বিচারক মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকার কর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কমিশনের সদস্য নাবিলা ইদ্রিস, মানবাধিকার কর্মী ও কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The accused in the murder case

আদালত থেকে পালাল হত্যা মামলার আসামি

আদালত থেকে পালাল হত্যা মামলার আসামি

ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের এজলাস থেকে হাজতখানায় নেওয়ার পথে পুলিশকে মারধর করে পালিয়েছেন হত্যা মামলার এক আসামি।

আসামি শরিফুল ইসলাম (২২) দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ থানার হরিপুর গ্রামের মৃত শফিক আহম্মেদের ছেলে। তিনি রাজধানীর খিলগাঁও থানার জিসান হোসেন (১৪) হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার পর সংশ্লিষ্ট আদালতের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কনস্টেবল শহিদুল্লাহকে মারধর করে ছুটে পালিয়ে যান আসামি শরিফুল। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার ইনচার্জ এসআই রিপন।

তিনি বলেন, আসামিকে আদালত থেকে হাজতখানায় নেওয়ার সময় পুলিশকে আঘাত করে তিনি পালিয়ে যায় আসামি শহিদুল।

ডিএমপির প্রসিকিশন বিভাগের এডিসি মাইন উদ্দিন বলেন, আসামির হাতে হাতকড়া পরানো ছিল। তিনি ধাতব কিছু দিয়ে হাতকড়া ঢিলা করে কৌশলে খুলে ফেলে। পরে পুলিশ কনস্টেবলের হাতে আঘাত করে পালিয়ে যায়।

তিনি বলেন, আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। কোতোয়ালি থানাকে জানানো হয়েছে আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য। তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলমান।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The 5th Annual Senate Meeting in the BUP

বিইউপিতে ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভা অনুষ্ঠিত

বিইউপিতে ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভা অনুষ্ঠিত

১৯ জুন ২০২৫ তারিখে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) এর ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভা বিইউপির বিজয় অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিইউপির উপাচার্য ও সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ মাহ্বুব-উল আলম, বিএসপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, এমফিল, পিএইচডি।

সভার শুরুতে বিইউপির উপাচার্য ও সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ মাহ্বুব-উল আলম বিদায়ী সদস্যদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং নবনিযুক্ত সদস্যদের স্বাগত জানান। পরে বিইউপির ট্রেজারার এয়ার কমডোর মোঃ রেজা এমদাদ খান, জিইউপি, বিইউপি, এনডিসি, পিএসসি, জিডি(পি), ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট ১৩৪ কোটি ৮ লক্ষ টাকা ও ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের ১৩৪ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন।

সিনেট সদস্যগণ ট্রেজারার এর বক্তৃতার ওপর আলোচনা করেন এবং সর্বসম্মতিক্রমে বাজেট প্রস্তাব অনুমোদন করেন। এছাড়াও সিনেট সভায় ১৭তম বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপিত ও সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়। ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভাটি সার্বিকভাবে সঞ্চালনা করেন বিইউপির রেজিস্ট্রার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ রাব্বি আহসান, এনডিসি, পিএসসি।

সভায় সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মাহ্বুব তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিইউপি বয়সে নবীন হলেও এর শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও গবেষকগণের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও গবেষণা ভিত্তিক কার্যক্রমের অর্জনসমূহ জাতীয় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সুনাম বয়ে আনছে। যুগোপযোগী শিক্ষা প্রদান, গবেষণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নিত হওয়ার লক্ষ্যে অত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক একটি সুনির্দিষ্ট Academic Strategic Plan –২০৫০ প্রণয়ন করা হয়েছে।

Academic Strategic Plan এর মাধ্যমে পাঠ্যক্রমের আধুনিক মান নির্ধারণ, Outcome Based Education (OBE) কারিকুলাম প্রনয়ণ, গবেষণা, উদ্ভাবন, প্রকাশনা ও গবেষণা সহায়তার সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

মাননীয় উপাচার্য সকলকে অবহিত করেন যে বিইউপি’র গবেষণাভিত্তিক অগ্রযাত্রায় BUP Research Centre (BRC) অংঙ্গীভূত ফ্যাকাল্টি ও অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহে গবেষণা, উদ্ভাবন ও পরামর্শমূলক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার লক্ষ্যে কাজ করছে। 'Inspiring Innovation for Advancing Knowledge' শ্লোগানকে ধারণ করে, BUP Research Centre, গবেষকদের মানসম্মত গবেষণায় উৎসাহ দিচ্ছে এবং শিল্প-প্রতিষ্ঠান ও একাডেমিয়ার মধ্যে সংযোগ স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

এছাড়াও তিনি উল্লেখ করেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষকদের গবেষণালব্ধ জ্ঞান প্রসারের উদ্দেশ্যে বিইউপি থেকে ৫টি জার্নাল প্রতিবছর নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে যা সকলের মাঝে সমাদৃত। সিনেট চেয়ারম্যান আরও উল্লেখ করেন যে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষার পাশাপাশি একজন সুশৃঙ্খল, নৈতিকতা সম্পন্ন সু-নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিইউপি বদ্ধপরিকর এবং সে লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের চারিত্রিক গুণাবলি ও আত্মিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সকল প্রোগ্রামের পাঠ্যক্রমে নৈতিক শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে Need Based Education - কেও গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হচ্ছে। তিনি বলেন যে, আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের মানসম্মত কারিকুলাম ও শিক্ষা পরিবেশের পাশাপাশি বৈচিত্র‍্যময় সাংস্কৃতিক সান্নিধ্যের গুরুত্বকে সামনে রেখে বিইউপি'তে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, নবপ্রজন্মের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সততা, চরিত্র গঠন ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং দেশপ্রেম জাগ্রত করতে পড়াশোনার পাশাপাশি বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য, জাতীয় দিবসগুলোর তাৎপর্য ও মাহাত্ম্য তুলে ধরে বিইউপি’র বিভিন্ন আলোচনা সভা, সিম্পোজিয়াম, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনের কথা উল্লেখ করেন।

এই সিনেট সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং বিইউপির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
BNP does not support the electoral college in the presidential election

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইলেকট্রোরাল কলেজব্যবস্থা সমর্থন করে না বিএনপি

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইলেকট্রোরাল কলেজব্যবস্থা সমর্থন করে না বিএনপি

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রস্তাবিত ইলেকট্রোরাল কলেজব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘জনগণের ভোটাধিকার হরণে এই ব্যবস্থাকে আরেকটি ছলচাতুরী হিসেবে দেখা হচ্ছে।’

গতকাল বুধবার বিকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য কমিশনের যে প্রস্তাব তাতে একটা ইলেক্টোরাল কলেজ করা হবে। এবং প্রায় ওনাদের ভাষ্য অনুযায়ী ৭০ হাজারের মতো ভোটার থাকবে। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার পর্যায়ের প্রতিনিধিগণ এখানে ভোটার হবেন। এবং রাষ্ট্রপতিকে সৎ, দক্ষ ও অভিজ্ঞ একজন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য ওখানে প্রস্তাব করা হয়েছে।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাবে আগের মতোই একমত নয় বিএনপি।

এই কাউন্সিলের জবাবদিহি না থাকায় সমর্থন করে না বিএনপি। এই কাউন্সিলে আরেকটি ভারসাম্যহীন অবস্থা তৈরি হবে বলে মনে করি আমরা।’

স্বাধীন বিচারব্যবস্থার দাবি জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘স্বাধীন বিচারব্যবস্থা হলে ভারসাম্যহীনতা দূর হবে, ফ্যাসিবাদ দমন করবে। প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য, অন্য সাংবিধানিক পদ, সংস্থা স্বাধীন করতে পারলে সমস্যা থাকবে না।’

বিএনপি মনে করে সুশাসন নিশ্চিত করতে ন্যায়পাল করা যেতে পারে। বিদ্যমান ব্যবস্থা বজায় রেখে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ হলে তাদের যোগ করা যেতে পারে, বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আইন সংশোধন করা যেতে পারে। জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। বিএনপি মনে করে, দুদক ও মানবাধিকার কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করতে বিদ্যমান আইনগুলো সংস্কারের প্রয়োজন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Bhawal Chandipur Agrakhola road is like a death

ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়ক যেন মরণফাঁদ

চরম দুর্ভোগে এলাকাবাসী   
ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়ক যেন মরণফাঁদ

কেরানীগঞ্জের শাক্তা ও তারানগর ইউনিয়নের বুক চিরে চলা ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়কের বেহাল দশায় নিত্যদিন ভোগান্তিতে পড়ছে হাজারো মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে সড়কজুড়ে এখন গর্ত আর ধুলাবালি। সামান্য বৃষ্টিতে কাদায় যানবাহন আটকে যায়, আর শুকনো মৌসুমে উড়ে ধূলোর ঝড়।

রাস্তাটির বেহাল অবস্থার কারণে প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচারী ও যানবাহনের চালকরা। ছোট-বড় গর্তে হোঁচট খেয়ে পড়ে আহত হন অনেক পথচারী। অন্যদিকে, যানবাহন চলাচলের অযোগ্য এই সড়কে প্রতিনিয়তই নষ্ট হয়ে পড়ে ভ্যান, অটোরিকশা, ট্রাকসহ বিভিন্ন গাড়ি। আকিজ ফাউন্ডেশন স্কুল, মেকাইল মাদ্রাসা ও অগ্রখোলা কমিউনিটি হাসপাতালের সামনের অবস্থা এতটাই খারাপ যে মাঝে মাঝেই উল্টে যায় যাত্রী বোঝাই যানবাহন ।

সড়কের করুণ অবস্থার কারণে অনেক চালক ও পথচারী এখন পাশের বেলনা, কলাতিয়া ও নয়াবাজার হয়ে বিকল্প রাস্তায় যাতায়াত করছেন। এতে সময়, অর্থ ও দুর্ভোগ বাড়ছে।

এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কেরানীগঞ্জ ছাড়াও নবাবগঞ্জ, দোহার, সিরাজদিখানসহ দক্ষিণবঙ্গের হাজার হাজার মানুষ মোহাম্মদপুর হয়ে রাজধানীতে প্রবেশ করে। অথচ বছরের পর বছর ধরে অবহেলায় পড়ে আছে সড়কটি।

স্থানীয় বাসিন্দা কবির হোসেন বলেন, ‘রাস্তাটার অবস্থা এমন যে, অটোরিকশা সিএনজিতে ওঠা মানেই কোমর ভাঙা। মাঝে মাঝেই যানবাহন পড়ে মানুষ আহত হয়। স্কুলের বাচ্চারা পর্যন্ত ভয়ে এই রাস্তায় যেতে চায় না। কোন এমপি-মন্ত্রী একবার এই রাস্তা দিয়ে গেলে বুঝত কষ্টটা কেমন।

একই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পণ্যবাহী ট্রাকচালক রাকিব হাওলাদার। তিনি বলেন, একবার গর্তে পড়লে গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায়। ট্রাকে থাকা জিনিসপত্র পড়ে যায়, এভাবে থাকলে এই রাস্তা দিয়ে আর চলাচল করা সম্ভব নয়। এটি দ্রুত সংস্কার করা উচিত।

এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ বলেন, সড়কটি ইতোমধ্যে ডিপিপিতে অনুমোদন পেয়েছে। তাই এখন সংস্কার করা হচ্ছেনা। বছরের শেষ দিকে ২০ ফুট প্রশস্ত করে এবং আরও শক্তিশালী করে কাজ শুরু হবে। তখন রাস্তাটি আরো টেকসই হবে।

এদিকে এলাকাবাসীর দাবি, সংস্কার কাজ শুরুর আগ পর্যন্ত অন্তত গর্ত ভরাট করে সাময়িক চলাচলের উপযোগী করে তুলতে হবে। নইলে প্রতিদিন দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Twenty four bucks the family of four runs a family of four

আড়াইশ টাকা আয়ে চারজনের সংসার চালায় কিশোর তোফাজ্জল!

আড়াইশ টাকা আয়ে চারজনের সংসার চালায় কিশোর তোফাজ্জল!

একটা ভাঙাচোরা বাইসাইকেলই তার ভরসা। এ সাইকেল চালিয়ে ১৫ কিলোমিটার দুরের দুর্গম খাসিয়া পল্লীতে কাজ করে দুই-আড়াইশ টাকা রোজগার করে কিশোর তোফাজ্জল (১৪)। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ৯নং ইসলামপুর ইউনিয়নের কাঁঠালকান্দী গ্রামের আলী আহমেদ (৬৫) এর ছেলে তোফাজ্জল হোসেন। পরিবারে সে একমাত্র উপার্জনক্ষম। বাবা হার্টের রোগী, বোন আয়েশা খাতুন (২৫) মানসিক ভারসাম্যহীন আর বয়োবৃদ্ধ দাদী সমিতা বিবি (৮২) দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী।

তোফাজ্জল কান্নাজড়িত কন্ঠে এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রতিদিনি সকালে ভাঙাচোরা একটি সাইকেল নিয়ে ১৫ কিলোমিটার দুরের খাসিয়া পল্লীতে কাজে যাই। সন্ধ্যায় ফিরি। যা রোজগার হয়, দুবেলাও খেতে পাইনা। এ দুনিয়ায় আল্লাহ ছাড়া আমাদের আর কেউ নাই। প্রতিবেশী ফজল মিয়া, আবু শহীদ এ পরিবারের দুরাবস্থার কথা জানিয়ে বলেন, প্রকৃতই তারা খুব অসহায় ও মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। তিনজনই অসুস্থ। মাঝে মধ্যে আমরা যতটা সম্ভব সহযোগিতা করার চেষ্টা করি।

সরেজমিন তোফাজ্জলদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি আবাসন প্রকল্পের ছোট্ট একটি ঘরে মেঝেয় জীর্ণ-শীর্ণ কাঁথায় শুয়ে আছেন সমিতা বিবি। অপুষ্টি আর ক্ষুধার যন্ত্রণায় ক্লান্ত। ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। যা বললেন বোঝা গেলো, ডালভাত খেয়ে ঈদের দিন পার করেছি। ক্ষিদের জ্বালায় রাতে ঘুম আসে না। একরত্তি নাতি আর কিইবা করবে। তবু যা করছে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। চাল ডাল আনলে ওষুধ আনতে পারে না। তবু প্রায়ই অনাহারে থাকতে হয়। ঈদে চান্দে প্রতিবেশীরা কেউ খাবার দেয়, কেউ সামান্য টাকা-পয়সা দেয়। এইভাবেই টিকে আছি।

স্থানীয়দের সহযোগিতাই একমাত্র ভরসা। মানুষের সাহায্যে দুমুঠো ভাত খেতে পারেন, যদি কেউ সাহায্যে না করে তাহলে না খেয়েই থাকতে হয়। তার বিলাপে চোখে জল চলে আসে। এ যেন দারিদ্র্যের এক করুণ চিত্র। এই অসহায় নারীর জীবন কাটছে অভাব আর কষ্টে। পা ভেঙে এক বছর ধরে শয্যাশায়ী। ছেলে আলী আহমেদও হার্টের রোগী। কোন কাজকর্ম করতে পারেন না। তাই ১৩/১৪ বছরের নাতি তোফাজ্জলের কাঁধেই সংসারের ভার। দুর্গম খাসিয়া পুঞ্জিতে কাজ করে দিনে আয় করে দুই-আড়াইশ টাকা মাত্র। এ টাকায় দুবেলা খাবার যোগানোই মুশকিল। তার ওপর অসুস্থ দাদি, বাবা আর মরার উপর খাঁড়ার ঘা মানসিক প্রতিবন্ধী বড় বোন আয়েশা খাতুন।

ইসলামপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক আহমেদ জানান, একসময় তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিলো না। কয়েক বছর আগে সরকারি আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে এ পরিবারের জন্য একটি ঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোফাজ্জলদের দুরাবস্থা জেনে অনেকে খাদ্য সামগ্রী দিয়ে তাদের সহায়তা করছেন। তবে বয়োবৃদ্ধ সমিতা বিবি ও মানসিক প্রতিবন্ধী আয়েশা খাতুনের সুচিকিৎসা ও তোফাজ্জলদের আত্মনির্ভরশীল হওয়ার ব্যবস্থা জরুরি।

মন্তব্য

p
উপরে