বিএনপির বর্জনের মধ্যেও চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলটির নেতাদের ফলাফলের চমক অব্যাহত রয়েছে।
তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৯৬ জন এবং চতুর্থ ধাপে ৯৮ জনের পর পঞ্চম ধাপের নির্বাচনেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় দলটির ৮৩ জন তৃণমূল নেতা চেয়ারম্যান হয়েছেন।
বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে এই নির্বাচন বর্জন করলেও দলটির তৃণমূলের নেতারা ভোট থেকে দূরে থাকতে চাইছেন না। স্বতন্ত্র প্রার্থীর পরিচয়ে ভোটের মাঠে তারা অবস্থান ধরে রাখতে চাইছেন।
চলতি বছর পৌরসভা নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ আনার পর বর্তমান সরকার আর নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো ভোটে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। ফলে চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও তাদের কোনো প্রার্থী নেই।
তবে গত ২ নভেম্বর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের একটি বক্তব্যে স্পষ্ট হয়, বিএনপি আসলে এই নির্বাচন থেকে একেবারে দূরে নেই।
সেদিন ঠাকুরগাঁওয়ে নিজ বাসভবনে এক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে করাটা সঠিক নয়। তাই বিএনপি এ নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ নিচ্ছে না। তবে বিএনপি থেকে কেউ স্বতন্ত্র হয়ে অংশ নিলে সেখানে বাধা নেই।’
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পঞ্চম ধাপে ফলাফল ঘোষণা করা ৬৬২টি ইউনিয়নে নৌকার ৩০৮, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ১৯০, বিএনপি ৮৩ এবং অন্যান্য ৮১ জন চেয়ারম্যান হয়েছেন।
এরপর মোট তিনটি ধাপের নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনের আগে ভোটে দাঁড়ানোয় বিএনপি বেশ কয়েকজন নেতাকে দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। কারণ উল্লেখ না করলেও এটি বিএনপির সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জের কারণে, সেটি নিশ্চিত করেছেন নেতারা।
পঞ্চম ধাপে ৫ জানুয়ারিতে ৭০৮টি ইউনিয়নে ভোটের তফসিল ঘোষণা হয়। তবে বেশ কিছু ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত ভোট হয় ৬৬৪টি ইউনিয়নে ভোট হয়। এর মধ্যে ২টি ইউনিয়নে ফলাফল স্থগিত হয়, বাকি ৬৬২টি ইউনিয়নে ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩০৮টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান হয়েছেন নৌকা নিয়ে লড়াই করা আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়া নেতারা জিতেছেন ১৯০ ইউনিয়নে।
এদিন চার জেলায় মোট ৪৬টি ইউনিয়নে ভোট হয়েছে দলীয় প্রতীক ছাড়া। এর মধ্যে ছিল কিশোরগঞ্জের ১৪টি, গোপালগঞ্জ ও শরীয়তপুরে ১৫টি করে এবং মাদারীপুরের দুটি।
বাকিদের মধ্যে বিএনপির রাজনীতি সম্পৃক্ত ৮৩ জন ছাড়া অন্যদের মধ্যে জামায়াতের রাজনীতিতে জড়িত ১৩ জন, জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে জড়িত ৪ জন আর ১৯ জন বিভিন্ন দলের রাজনীতি করেন, কেউ কেউ কোনো দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন।
বিএনপির রাজনীতিতে জড়িতরা সবচেয়ে ভালো করেছেন রাজশাহী বিভাগে। সেই বিভাগে দলটির সঙ্গে জড়িত ২০ জন পেয়েছেন জয়।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭ ইউনিয়নে জয় এসেছে সিলেট বিভাগে, রংপুর বিভাগে জয় এসেছে ১৫টিতে, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৪ টিতে, ঢাকা বিভাগে ৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে জয়ী ৬ জন এবং খুলনা বিভাগে জয়ী ৪ জন বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত। বরিশাল বিভাগে বিএনপির কেউ জিততে পারেননি।
চতুর্থ ধাপের নির্বাচনেও বিএনপির নেতারা সবচেয়ে বেশি ভালো করেছিলেন উত্তরের দুই বিভাগ রাজশাহী ও রংপুরে। ওই ধাপে সিলেট বিভাগেও তারা দারুণ করেছিলেন।
জানতে চাইলে বিএনপির মুখপাত্র ও সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেখুন আমার জানা নেই মহাসচিব ঠিক কী বলেছেন। কিন্তু আমার মনে হয় তিনি এটা বলতে চেয়েছেন যে, দলীয় পরিচয়ের বাইরে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী। এখন একজন তো দলের পদে থেকে হাঁস মার্কাতে নির্বাচন করতে পারবেন না। তিনি নির্বাচন করুক। সেটার ওয়েটাই তো এটা। যে দলীয় কার্যক্রম থেকে বেরিয়ে সেটা করতে হবে, স্বাধীনভাবে।’
রাজশাহী বিভাগে ২০ জয়
এই বিভাগে ভোট হয়েছে মোট ১২২টি ইউনিয়নে। এর মধ্যে ২টিতে ফল ঘোষণা স্থগিত আছে। বাকিগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক জয় পেয়েছে ৬১টিতে। দলের বিদ্রোহী নেতারা জিতেছেন ৩৫টিতে আর বিএনপির নেতারা ২০ ইউনিয়নে এবং ৪টি ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন জামায়াত নেতারা।
এর মধ্যে বগুড়ায় সবচেয়ে বেশি ৬টি ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্তরা। এরা হলেন: দুপচাঁচিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নে মোয়াজ্জেম হোসেন, চামরুল ইউনিয়নে শাহজাহান আলী, জিয়ানগরে আনোয়ার হোসেন এবং গাবতলী উপজেলার রামেশ্বরপুর ইউনিয়নে আব্দুল ওহাব মণ্ডল, মহিষাবান ইউনিয়নে আব্দুল মজিদ মণ্ডল ও নশিপুর ইউনিয়নে রাজ্জাকুল আমিন তালুকদার রোকন।
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত ৫ জন পেয়েছেন জয়। এরা হলেন: বড়বিহানলী ইউনিয়নে মাহমুদুর রহমান মিলন, আউচপাড়ায় ডিএম শাফি, শুভডাঙ্গায় মোশারফ হোসেন, গণিপুরে মনিরুজ্জামান রঞ্জু ও গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নে হাবিবুর রহমান।
জয়পুরহাটের ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে তিনটিতেই জয় পেয়েছেন বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এরা হলেন: আটাপুর ইউনিয়নে আবু চৌধুরী, বাগজানা ইউনিয়নে নাজমুল হক এবং ধরঞ্জী ইউপিতে আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ১৪ ইউনিয়নের মধ্যেও তিনটিতে জয় পেয়েছেন বিএনপির রাজনীতিতে জড়িতরা। এরা হলেন: বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নে আতাউল হক কমল, রানিহাটি ইউনিয়নে রহমত আলী ও গোবরাতলা ইউনিয়নে রবিউল ইসলাম টিপু।
নওগাঁয় বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত ২ জন পেয়েছেন জয়। এরা হলেন: পত্নীতলা উপজেলার আমাইড়ে শহীদুল ইসলাম ও শিহাড়া ইউনিয়নে তোফাজ্জল হোসেন।
নাটোরের ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে নলডাঙ্গা উপজেলার বিপ্রবেলঘরিয়ায় জিতেছেন বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান আলী।
এই বিভাগের বাকি দুই জেলা পাবনা ও সিরাজগঞ্জে বিএনপি সংশ্লিষ্ট কেউ জয় পাননি।
সিলেটে জয় ১৭ ইউনিয়নে
এই ইউনিয়নে ভোট হয়েছে মোট ৭৫টি ইউনিয়নে। অন্যগুলোর মধ্যে নৌকা জিতেছে ২৯ টিতে। ২১ ইউনিয়নে জিতেছেন আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীরা। স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিএনপির ১৭ জন, জামায়াতের ৪ জন জয়ী হয়েছেন। এছাড়া জাতীয় পার্টির ১ জন, জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের ২ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। আর নির্দলীয় ২ জন প্রার্থী এবার জয় পেয়েছেন।
এর মধ্যে হবিগঞ্জে সবচেয়ে বেশি ৭টি ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন বিএনপি নেতারা।
এরা হলেন মাধবপুরের নোয়াপাড়া ইউনিয়নে সৈয়দ মো. আতাউল মোস্তফা সোহেল, ছাতিয়াইন ইউনিয়নে মিনহাজ উদ্দিন চৌধুরী কাসেদ, আদাঐর ইউনিয়নে মীর খুরশেদ আলম, চৌমুহনী ইউনিয়নে মাহবুবুর রহমান সোহাগ ও শাহজাহানপুর ইউনিয়নে পারভেজ হোসেন চৌধুরী।
চুনারুঘাট উপজেলায় জিতেছেন গাজীপুর ইউনিয়নে মোহাম্মদ আলী ও উবাহাটা ইউনিয়নে এজাজ ঠাকুর চৌধুরী।
মৌলভীবাজারে বিএনপির রাজনীতিতে জয় পেয়েছেন ৬টি ইউনিয়নে। এরা হলেন শ্রীমঙ্গল ১নং মির্জাপুর ইউনিয়নে মিজলু আহমদ চৌধুরী, ৩নং শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নে দুদু মিয়া, ৪নং সিন্দুরখান ইউনিয়নে ইয়াছিন আরাফাত রবিন, কমলগঞ্জ পতনঊষার ইউনিয়নে অলি আহমদ খান, মুন্সিবাজার ইউনিয়নে নাহিদ আহমদ তরফদার এবং আদমপুর ইউনিয়নে আবদাল হোসেন (ঘোড়া)।
সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার বড়চতুলে জয়ী আবদুল মালিক চৌধুরী এবং, ঝিঙ্গাবাড়িতে জয়ী মাস্টার আবু বকর বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত।
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা বাজার ইউনিয়নের মাসুক মিয়া ও ভীমখালী ইউনিয়নের আক্তারুজ্জামান তালুকদার বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত।
রংপুর বিভাগে জয় ১৫ ইউনিয়নে
উত্তরের বিভাগ রংপুরে ফল ঘোষিত হয়েছে মোট ৬৮ ইউনিয়নে। এর মধ্যে নৌকা জয় পেয়েছে সর্বোচ্চ ৩৩ ইউনিয়নে। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পাওয়া বিদ্রোহীরা জয় পেয়েছেন ১৪টিতে। বিএনপির রাজনীতিতে জড়িতরা জয় পেয়েছেন ১৫টিতে।
বাকিগুলোর মধ্যে জামায়াতের রাজনীতিতে জড়িতরা ২টিতে, জাতীয় পার্টির রাজনীতে জড়িতরা ৩টিতে এবং একটিতে জয় পেয়েছেন এমন একজন, যিনি রাজনীতিতে জড়িত নন।
এর মধ্যে বিএনপির তৃণমূলের নেতারা একক জেলা হিসেবে সর্বোচ্চ ৬টিতে জয় পেয়েছেন দিনাজপুরে।
এরা হলেন চিরিরবন্দর উপজেলার সাতনালা ইউনিয়নে এনামুল হক শাহ, আব্দুলপুর ইউনিয়নে ময়েনউদ্দিন শাহ, ভিয়াইল ইউনিয়নে আব্দুর রাজ্জাক শাহ, তেঁতুলিয়া ইউনিয়নে আজগার আলী মাষ্টার, পার্বতীপুর উপজেলার মমিনপুর ইউনিয়নে নজরুল সরকার এবং মোস্তফাপুর বিএনপি মতিয়ার রহমান।
নীলফামারী ও কুড়িগ্রামে তিনটি করে ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন বিএনপির তৃণমূল নেতারা।
এর মধ্যে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়িতে উপজেলা বিএনপির সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম কালু, বামুনিয়া ইউনিয়নে উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মমিনুর রহমান মোটর সাইকেল ও জোড়াবাড়ি ইউনিয়নে ইউনিয়ন ছাত্রদলের প্রাক্তন সভাপতি সাখাওয়াত হাবিব বাবু জয় পেয়েছেন।
কুড়িগ্রামে রৌমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নে আব্দুল রাজ্জাক, যাদুরচরে সরবেশ আলী এবং রাজিবপুর উপজেলায় সদর ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন মিরন মো. ইলিয়াস।
পঞ্চগড়ের দুটি ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন বিএনপির নেতারা। এরা হলেন: দেবীগঞ্জ উপজেলার শালডাঙ্গায় ফরিদুল ইসলাম এবং চিলাহাটিতে হারুন অর রশীদ।
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার সদর ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত মোকছেদুর রহমান মোকছেদ।
গাইবান্ধায় বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত কেউ জয় পাননি।
চট্টগ্রাম বিভাগের জয়ের অর্ধেকই চাঁদপুরে
চট্টগ্রাম বিভাগের ১৩৫টি ইউনিয়নে ভোট হয় সেদিন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭০টিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। দলের বিদ্রোহী নেতারা জয় পেয়েছে ৪০ ইউনিয়নে। বিএনপির নেতারা ১৫টিতে, একটিতে জামায়াত নেতা, ৬টিতে নির্দলীয় প্রার্থী এবং বিভিন্ন দলের সঙ্গে সম্পৃক্তরা জয় পেয়েছেন ৪টিতে।
এর মধ্যে বিএনপি সংশ্লিষ্টরা সবচেয়ে বেশি ৭টি ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন চাঁদপুরে।
এদের মধ্যে ৬ জনই ফরিদগঞ্জ উপজেলায়। এরা হলেন: ১নং বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নে জসিম উদ্দিন মিয়াজী স্বপন, ৩নং সুবিদপুর (পূর্ব) ইউনিয়নে বেলায়েত হোসেন, ৪নং সুবিদপুর ইউনিয়নে মহসীন হোসেন, ৫নং গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নে শাহজাহান পাটোয়ারী, ৭নং পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নে আবু তাহের এবং ১২নং চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নে শাহজাহান মাষ্টার।
হাইমচর উপজেলার ৩নং আলগী দক্ষিণ ইউনিয়নে সাবেক উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সরদার আব্দুল জলিল জয় পেয়েছেন।
কুমিল্লায় জয় পেয়েছেন দুই জন। এরা হলেন: চান্দিনা উপজেলার বাতাঘাসিতে সাদেকুর রহমান এবং বরকইটে নুরে আলম।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপিসংশ্লিষ্ট দুই জন জয় পেয়েছেন। এরা হলেন: সদর উপজেলার মজলিশপুরে কামরুল হাসান এবং আশুগঞ্জ উপজেলার চরচারতলা ইউনিয়নে ফাইজুর রহমান।
এছাড়া চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার আহলা করলডেঙ্গা ইউনিয়নে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হামিদুল হক মান্নান, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার জিরতলী ইউনিয়নে জিতেছেন বিএনপি সমর্থিত শামসুল আলম লাভলু এবং বান্দরবানের সুয়ালক ইউনিয়নে জিতেছেন উক্যনু মার্মা।
ঢাকা বিভাগে ৭ জন
ঢাকা বিভাগে সেদিন ভোট হয়েছে ১৪৪টি ইউনিয়নে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫৭টি ইউনিয়নে জয় পেয়েছে নৌকা। ৩৫ ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। ৭টি ইউনিয়নে বিএনপির নেতারা। আর চার জেলার ৪৬ ইউনিয়নে ভোট হয়েছে দলীয় প্রতীক ছাড়া।
এর মধ্যে তিনটিতেই জয় এসেছে মানিকগঞ্জে।
হরিরামপুরের গালা ইউনিয়নের উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শফিক বিশ্বাস, হরিরামপুরের দৌলতপুর খলশী ইউনিয়নের জিয়াউর রহমান এবং বাঘুটিয়া ইউনিয়নের যুবদলের সাবেক কর্মী আমজাদ হোসেন জয় পেয়েছেন।
টাঙ্গাইলে বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত দুই জন পেয়েছেন জয়। এরা হলেন: মির্জাপুর উপজেলার জামুর্কী ইউনিয়নে ডি এ মতিন, বানাইল ইউনিয়নে আব্দুল্লাহ আল মামুন।
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার সদর ইউনিয়নে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফাইয়াজ হাসান এবং ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ১ নং কামারখালী ইউনিয়নে জিতেছেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি রাকিব হোসেন চৌধুরী জয় পেয়েছেন।
ময়মনসিংহ বিভাগে ৬ জয়
এই বিভাগে ভোট হয়েছে মোট ৬১ ইউনিয়নে। এর মধ্যে নৌকা জয় পেয়েছে ৩১টিতে। দলের বিদ্রোহীরা জয় পেয়েছে ২৩টিতে। ৬ ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন বিএনপির রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা আর একটিতে নির্দলীয় প্রার্থী।
এই ৬টির মধ্যে তিনটি নেত্রকোণার এবং তিনটি শেরপুরের।
নেত্রকোনার মদন উপজেলার চানগাঁও ইউনিয়নে জয়ী নুরুর আলম তালুকদার, নায়েকপুর ইউনিয়নে জয়ী হাবিবুর রহমান ও ফতেপুর ইউনিয়নে জয়ী সামিউল হায়দার সফি বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত।
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার হাতিবান্ধা ইউনিয়নে জাহাঙ্গীর আলম, কাংশা ইউনিয়নে আতাউর রহমান ও নলকুড়া ইউনিয়নে জয়ী রুকুনুজ্জামান জামান বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত।
খুলনায় ৪ জয়
এই বিভাগে ভোট হয়েছে মোট ৫২ ইউনিয়নে। এই বিভাগে নৌকা মার্কা জয় পেয়েছে ২৪ ইউনিয়নে। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী নেতারা জয় পেয়েছেন ২১টিতে। বিএনপি জয় পেয়েছে ৪টিতে, দুটিতে জামায়াত এবং একটিতে অন্যান্য।
এই চার জনের মধ্যে তিন জনই কেশবপুর উপজেলার। এরা হলেন মজিদপুর ইউনিয়নের মুহাম্মদ পলাশ, সুফলকাঠি ইউনিয়নের মঞ্জুর রহমান এবং সাতবাড়িয়ায় রেজাউল করিম।
সাতক্ষীরায় আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নে বিজয়ী রুহুল কুদ্দুসও বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত।
এছাড়া ৬টি ইউনিয়নে ভোট হয়েছে বরিশাল বিভাগের পিরোজপুরে। এর মধ্যে ৩টি ইউনিয়নে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ, একটিতে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ও ২টিতে নির্দলীয় প্রার্থী।
** প্রতিবেদনটি তৈরিতে বিভিন্ন জেলায় নিউজবাংলার প্রতিনিধিদের সহায়তা রয়েছে।
আরও পড়ুন:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, এসব নির্বাচন নিয়ে কোনো উদ্বেগ নেই, ভালোভাবেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করছি। এজন্য আপনাদের (সাংবাদিক) সাহায্য ও সহযোগিতা দরকার।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে রাকসু ও চাকসু নির্বাচন-২০২৫ উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিষয়ক সভা শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি রাকসু ও চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আজ তাদের সঙ্গে আলাপ করেছি। তারা দেশের সবচেয়ে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত, শুধু দেশেই না বিদেশেও উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত । যারা ভোট দেবে তারাও উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত।
তিনি বলেন, ‘তাদের অভিজ্ঞতা আজ শেয়ার করলাম। যেহেতু আমাদের একটা জাতীয় নির্বাচন আছে ফেব্রুয়ারিতে, এই নির্বাচনগুলো দেখে আমাদের কিছু অভিজ্ঞতা হচ্ছে। সেটা আমরা জাতীয় নির্বাচনে কীভাবে প্রয়োগ করতে পারবো সেজন্য আজকে বসেছিলাম।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তারা আজ ভালো ভালো সাজেশন দিয়ে গেছে। সেই সাজেশন আমরা ভবিষ্যতে কাজে লাগাবো। একইসঙ্গে নিজেদের মধ্যে আলোচনায় তাদেরও উপকার হয়েছে। যেহেতু দুইটা নির্বাচন হয়েছে। সেখানে নির্বাচনে কী করতে হবে, ছোটখাটো ভুল-ত্রুটি থাকলে সেগুলো কীভাবে সমাধান করা হবে, এসব নিয়ে বিস্তারিত কথা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সভায় তারা কোনো ধরনের শঙ্কার কথা জানায়নি।
আজকের সভায় কি ধরনের সাজেশন এসেছে-এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে তারা বলেছে- কতগুলো সেন্টার হওয়া দরকার, ভোট গণনা কীভাবে হবে, কালি কীভাবে ব্যবহার করতে হবে, এসব নিয়ে কথা হয়েছে। দ্রুত ফল ঘোষণার জন্যও কি ব্যবস্থা নেয়া যায়, আলোচনা হয়েছে। ভোটারদের ছবিযুক্ত আইডি কার্ড ও ভোটার তালিকা যেন স্বচ্ছ থাকে এসব বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে।
ব্রিফিংয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার বলেন, রাকসু ও চাকসু নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হয়, এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ডাকসু ও জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ দুটি নির্বাচন থেকে অনেক কিছু শনাক্ত হয়েছে। এসব নির্বাচনে কোন বিষয়গুলো কাজ করেছে বা কোন বিষয়গুলো কাজ করেনি, তার একটি ধারণা পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে আমরা এখানে এসেছি। আজকের সভায় ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। এ দুটি নির্বাচন নিয়ে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা আছে। ভালো নির্বাচন হবে বলে আশা করছি।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ৪৭ তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি পেশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া নাহিদ ইসলাম।
বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আজ জবানবন্দি পেশ শেষ করেন নাহিদ। তিনি গতকাল জবানবন্দি পেশ শুরু করেন।
আজ বিকেলে তাকে জেরা করবেন এই মামলায় পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।
এ মামলায় প্রসিকিউসন পক্ষে আজ চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এসএইচ তামিম শুনানি করেন। সেই সাথে অপর প্রসিকিউটররা শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন।
উক্ত মামলায় পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। এ মামলায় গ্রেফতার হয়ে পরে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
একপর্যায়ে এ মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আবেদন মঞ্জুর করেন ট্র্যাইব্যুনাল। পরবর্তীকালে এ মামলার ৩৬ তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন রাজসাক্ষী পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
এ মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, পরিবারে পুরুষের সঙ্গে নারী জেলেদেরও কার্ড থাকতে হবে। তিনি বলেন, সরকারের দেওয়া জেলে কার্ডে পুরুষ জেলেদের নামই আসে, মাত্র ৪ শতাংশ সেখানে নারী। পরিবারে একজন চাকরি করলে তিনিই চাকরিজীবী হোন কিন্তু যারা মাছ ধরে তার পুরো পরিবার এ কাজে যুক্ত। এ প্রক্রিয়ায় বেশিরভাগ সময় নারীদের বেশি কাজ করতে হয়। তাই পুরুষ জেলেদের সঙ্গে নারীদেরও কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
উপদেষ্টা আজ বুধবার সকালে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বেসরকারি গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্স স্টাডিজ (সিএনআরএস) আয়োজিত “টেকসই মৎস্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক জাতীয় নীতি সংলাপ”-এ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, এ সেমিনার এসে দায়িত্ব বেড়ে গেছে। আমাদের জেলেদের বিশেষ করে নারী জেলেদের নিয়ে আরো বেশি কাজ করতে হবে। এখন পর্যন্ত নারীদেরকে কৃষকের স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য লড়াই করতে হচ্ছে। আর নারী জেলেদের কথা তো বলাই বাহুল্য। অথচ নারী জেলেরা তার পরিবার পরিজনের জন্য নদীতে মাছ ধরে। স্বামীর অবর্তমানে সংসার চালায়।
মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, "এ পেশায় পুরো পরিবারকে নিয়ে কাজ করতে হয়। মান্তা সম্প্রদায়ের দুঃখ দুর্দশার কথা শুনে খুব কষ্ট পেলাম।" জেলে সম্প্রদায়ের আইনগত সমস্যা নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ঝড় তুফানে অনেক জেলে মারা যায়, কেউ হারিয়ে যায়, সেসব পুরুষের হদিস না থাকায় ব্যাংকের টাকাও তুলতে পারে না তাদের স্ত্রীরা। তা ছাড়া নারীকে বিধবা ভাতাও দেওয়া যায় না। এসব আইনি জটিলতা দূর করতে হবে।
তিনি বলেন, "আমাদের আইনগুলো পুরুষদের কথা চিন্তা করে করা। সেখানে নারীদের স্থান খুব কম। আর আগের মৎস্য আইনও একই ধরনের। তাই মৎস্য আইনের খসড়া ২০২৫ -এ আমরা এসকল সমস্যার সমাধানে দৃষ্টি দিয়েছি। আর নারীদের স্বীকৃতি দিলে হলে সংখ্যার স্বীকৃতি দিতে হবে। অথচ আমাদের তালিকায় নারীজেলের সংখ্যা খুবই নগন্য, মাত্র ৪ শতাংশ। কিন্তু সমাজে অসংখ্য নারী জেলে রয়েছে। এসব ঘাটতি পূরণে আমরা কাজ করছি। "
অমৎস্যজীবীরা মৎস্যজীবীর কার্ড নিয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা আগের তালিকা অনুসন্ধান করে দেখেছি অমৎস্যজীবীরা মৎস্যজীবীর কার্ড নিয়ে গেছে। এখন সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। আমরা চাই যেন প্রকৃত জেলেরা কার্ড পেতে পারে। সেইসঙ্গে যে পরিবারে পুরুষ জেলের কার্ড থাকবে সেখানে নারীদেরও থাকতে হবে।
কাঁকড়া ও ঝিনুক মানুষের খাদ্যের অংশ এটিকে বন অধিদপ্তরের সংজ্ঞা থেকে বের করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তা ছাড়া যারা কীটনাশক ব্যবহার করে মাছ ধরছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জলমহাল ইজারা সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, জলমহালের কাছের মানুষের নামে অন্যরা জলমহাল ইজারা নেয়। এক্ষেত্রে জৈবভিত্তিক ইজারা দিতে হবে, অর্থাৎ এ পেশার সঙ্গে জড়িত জেলেদের দিতে হবে। বাওড়ে ইজারা জেলেদের দেওয়ার কথা নিশ্চিত হচ্ছে, তবে হাওর নিয়েও ভূমি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা চলছে। যাতে প্রকৃত জেলেরা তা পায়।
নিজেদের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা সময়ে যতজনকে ভিজিএফ কার্ডের আওতায় সহযোগিতা দেওয়া দরকার তা দেওয়া সম্ভব হয় না। এর পরিমাণ ও সংখ্যা বাড়ানোর জন্য আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা একটি বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে তুলতে চাই।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুর রউফ। তিনি বলেন, নারী শ্রমিকরা পুরুষের চেয়ে ৩০ শতাংশ কম মজুরি পায়। তা ছাড়া আমাদের জলমহাল ইজারা রাজস্বভিত্তিক দেওয়া হয়। এটি বাতিল করে জাল যার জলা তার নীতিতে নিতে হবে। জন্মনিবন্ধন ও এনআইডি কার্ড নিশ্চিত করে জেলে কার্ড দেওয়া হবে। বর্তমানে আমাদের নিবন্ধনে ১৭ লাখ জেলের মধ্যে ৪৪ হাজার রয়েছে নারী। এ সংখ্যা আমরা বৃদ্ধি করতে হবে।
এসময় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিএনআরএস এর পরিচালক মি. এম. আনিসুল ইসলাম। এমপাওয়ারিং উমেন থ্রু সিভিল সোসাইটি অ্যাক্টর্স ইন বাংলাদেশ (ইডাব্লিউসিএসএ) প্রকল্পের পরিচিতি উপস্থাপন করেন অক্সফাম বাংলাদেশের প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর শাহজাদী বেগম।
সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিএনআরএস-এর পরিচালক ড. এম. আমিনুল ইসলাম এবং জাগো নারী টিম লিডার রিসার্চ আহমেদ আবিদুর রেজা খান।
সংলাপ শেষে মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে নারী মৎস্যজীবীদের ক্ষমতায়ন ও টেকসই মৎস্য ব্যবস্থাপনা জোরদারে বিভিন্ন সুপারিশ উপস্থাপিত হয়।
সংলাপে সরকারি কর্মকর্তা, গবেষক, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, সিভিল সোসাইটি, শিক্ষাবিদ এবং উপকূলীয় অঞ্চলের মৎস্যসম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, গত বছরের চেয়ে এবার পূজা শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে করতে সরকার বদ্ধপরিকর।
তিনি বলেন, পূজা উপলক্ষে হামলার কোনো হুমকি নেই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আজ বুধবার রমনা কালী মন্দির পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। এ সময় রমনা কালী মন্দির কমিটির সভাপতি অপর্ণা রায়সহ কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জাহাঙ্গীর বলেন, পূজা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠানের জন্য ২৪ ঘণ্টা মনিটরিং করা হবে। সে কারণে একটি নতুন অ্যাপ খোলা হয়েছে। কোথাও কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পূজা শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি পূজা উদযাপন কমিটিকে নজরদারি করার আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান, সে কারণে ধর্মীয় নিয়ম মেনে সবাই এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বিগত সরকারের সময় ২ কোটি টাকা পূজা উপলক্ষে বরাদ্দ দেওয়া হতো। বর্তমান সরকার তা থেকে বাড়িয়ে গত বছর এ লক্ষ্যে ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল; এবার সেটি থেকে বাড়িয়ে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। পূজা মণ্ডপের সংখ্যাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরো সহায়তা করা হবে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোঃ মাহফুজ আলম বলেছেন, যেসব শিশু জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ হয়েছে, তাদের লেখা ও স্মৃতিচিহ্ন নিয়ে 'নবারুণ' পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করতে হবে। এ বিষয়ে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করতে উপদেষ্টা চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান। বুধবার (১৭ই সেপ্টেম্বর) ঢাকার তথ্য ভবনে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর প্রকাশিত কিশোর মাসিক পত্রিক 'নবারুণ'-এর লেখকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এই আহ্বান জানান।
'নবারুণ' পত্রিকা নিয়ে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, এই পত্রিকায় শিশু-কিশোরদের আঁকা ছবি ও লেখা গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করতে হবে। 'নবারুণ' পত্রিকায় শিশু-কিশোরদের লেখা ও ছবি বেশি পরিমাণে প্রকাশিত হলে তারা অনুপ্রাণিত হবে। এতে তাদের সৃজনশীলতা বিকশিত হবে।
মাহফুজ আলম বলেন, "যে সরকারই দায়িত্বে আসুক না কেন, শিশু-কিশোরদের ব্যাপারে নিরপেক্ষ থাকা উচিত।" তিনি ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান-সহ আর্থসামাজিক বিভিন্ন বিষয়ের ওপর লেখালিখি করার জন্য লেখকদের প্রতি অনুরোধ জানান।
'নবারুণ' পত্রিকা ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, প্রকাশনার শুরু থেকে (১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দ) এ পর্যন্ত 'নবারুণ' পত্রিকার সকল সংখ্যা ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করতে হবে এবং তা জনগণের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে। এতে পাঠক অনলাইনে পুরাতন সংখ্যা পড়ে সমৃদ্ধ হতে পারবেন।
'নবারুণ' পত্রিকার কলেবর বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, 'নবারুণ' পত্রিকায় নতুন লেখকদের জন্য আলাদা বিভাগ চালু করা উচিত। পত্রিকার প্রতি সংখ্যায় কমপক্ষে পাঁচ জন নতুন লেখকের লেখা প্রকাশের জন্য তিনি কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দেন। তিনি শিশু-সাহিত্যিকদের নিয়ে দিনব্যাপী একটি কর্মশালা আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
সভায় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, যেসব লেখক ৪০-৫০ বছর ধরে লিখছেন, তাঁদের লেখা 'নবারুণ' পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করতে হবে। এতে পত্রিকা আরও সমৃদ্ধ হবে। তিনি 'নবারুণ' পত্রিকার লেখক-সম্মানি বাড়াতে কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দেন।
সভায় 'নবারুণ' পত্রিকার লেখকরা তাঁদের মতামত তুলে ধরেন। তাঁরা 'নবারুণ'-কে একটি অসাধারণ ও সাহসী পত্রিকা হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তাঁরা পত্রিকাটির মানোন্নয়নে বেশ কিছু প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদা বেগম। সভার শুরুতে 'নবারুণ' পত্রিকা বিষয়ে তথ্যচিত্র উপস্থাপনা করেন পত্রিকার সম্পাদক ইসরাত জাহান। মতবিনিময় সভাটি সঞ্চালন করেন চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের সিনিয়র সম্পাদক শাহিদা সুলতানা।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
আজ বুধবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য (এমইপি) মুনির সাতোরির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা প্রতিনিধিদলকে জানান, ‘আমরা ইতোমধ্যেই নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করেছি। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ফেব্রুয়ারির শুরুতে, রমজানের ঠিক আগে।’
তিনি উল্লেখ করেন, জনসাধারণ বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে নির্বাচনী উৎসাহ বাড়ছে, কারণ দীর্ঘদিন পর—কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন দশকেরও বেশি সময় পর—ছাত্র সংসদ নির্বাচন আবার শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন হবে শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর।’ তিনি যোগ করেন, কিছু শক্তি এখনো নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে, তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
প্রধান উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, তরুণ ভোটাররা এবার রেকর্ড সংখ্যায় ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে, কারণ ১৫ বছরেরও বেশি সময় পর অনেকেই প্রথমবারের মতো ভোট দেবে।
তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য এক নতুন সূচনা বয়ে আনবে। এটি আমাদের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে—জাতির জন্য এক নতুন যাত্রা।’
এক ঘণ্টাব্যাপী আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা ও ইউরোপীয় আইনপ্রণেতারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার উদ্যোগ, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অব্যাহত সমর্থন এবং চলমান রোহিঙ্গা মানবিক সংকট নিয়ে মতবিনিময় করেন।
আগামী নির্বাচন বাংলাদেশে এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হয়ে উঠতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন ইউরোপীয় আইনপ্রণেতারা। একজন আইনপ্রণেতা প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সরকারের গত ১৪ মাসের ‘অসাধারণ’ প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
একজন ডাচ আইনপ্রণেতা মন্তব্য করেন, বাংলাদেশ কতিপয় দেশের মধ্যে অন্যতম, যেখানে ‘ঘটনাগুলো সঠিক পথে এগোচ্ছে।’
প্রধান উপদেষ্টা ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য বাড়তি তহবিল প্রদানের আহ্বান জানান।
বিশেষ করে সম্প্রতি অর্থাভাবের কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের স্কুলগুলো পুনরায় চালু করতে সহায়তা প্রদানের অনুরোধ জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ শ্রম সংস্কারগুলো তুলে ধরে বলেন, এসব পদক্ষেপ বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে ওয়েস্টিন পারনাস হোটেলে আজ থেকে ০৩(তিন) দিনব্যাপী (১৬-১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫) গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার কো-অপারেশন কনফারেন্স (জিআইসিসি)-২০২৫ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আজ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সেতু বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন। সম্মেলনে সেতু সচিব সেতু বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্পের উপর প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। সেতু সচিব প্রেজেন্টেশনে উল্লেখ করেন সেতু বিভাগের কয়েকটি প্রকল্পে কোরিয়ান ইডিসিএফ/ইডিপিএফ (EDCF/EDPF) অর্থানয়ের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের পরিবহন খাতে দক্ষিণ কোরিয়ার কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে।
জিআইসিসি-২০২৫ সম্মেলনের লক্ষ্য কোরিয়ান নির্মাণ সংস্থাগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে সম্প্রসারণের সুযোগ তৈরি করা এবং বিভিন্ন দেশের প্রকল্প বাস্থবায়নকারীদের সাথে কৌশলগত সম্পর্ক স্থাপন করা। এটি মূলত একটি বিজনেস-টু-বিজনেস প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে, যেখানে কোরিয়ান কোম্পানিগুলো বিদেশী সরকার, প্রজেক্ট ডেভেলপার এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারে। সম্মেলনে প্রায় ৫০০ জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে ৩০টি দেশের মন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এবং কোরিয়ান শীর্ষস্থানীয় নির্মাণ সংস্থাগুলির কর্মকর্তারা রয়েছেন।
এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্যগুলো হলো: বিভিন্ন দেশের আসন্ন অবকাঠামো প্রজেক্ট সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও আদান-প্রদান, বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন, নতুন প্রজেক্টে অংশগ্রহণের জন্য চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং কোরিয়ান উন্নত প্রযুক্তি যেমন স্মার্ট সিটি, হাই-স্পিড রেল, এবং স্মার্ট পোর্ট সিস্টেমের সাথে পরিচিতি করা।
এছাড়াও সম্মেলনের বাকী অংশে বিভিন্ন দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের প্যানেল আলোচনা, বিভিন্ন দেশের প্রজেক্ট ব্রিফিং, ব্যক্তিগত বিজনেস মিটিং, কোরিয়ান শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলো তাদের নতুন প্রযুক্তি প্রদর্শন করবে।
মন্তব্য