বাংলাদেশের বয়স ৫০ পার হওয়ার পর বিএনপি তার নেত্রী বেগম খলেদা জিয়াকে হঠাৎ করেই মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে।
দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একদিন একটি বক্তব্যে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তিযোদ্ধা উল্লেখ করে প্রথমবার যখন বক্তব্য রাখেন, সে সময় বিষয়টি যে দলটির এজেন্ডায় পরিণত হবে সেটা বোঝা যায়নি। কিন্তু এরপর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এবং ফখরুল নিজে যখন একাধিক বক্তব্যে বিষয়টি আবার উল্লেখ করেন, তখন এটা স্পষ্ট যে বিএনপি ইচ্ছে করেই বিষয়টি তুলতে চাইছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের সেনানিবাসে দুই পুত্রকে নিয়ে অবস্থান করা খালেদা জিয়ার মুক্তিযুদ্ধকালীন ভূমিকা নিয়ে বিএনপি কখনও গর্বভরে কিছু বলেছে এমন নয়, বরং রাজনীতিতে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের এ বিষয়ে নানা সময় কটাক্ষকর বক্তব্যেও বিএনপি কোনো জবাব দেয়নি।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বিএনপির এই দাবিকে ‘তামাশা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। সেক্টর কমান্ডার বীর উত্তম খেতাব পাওয়া রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সেনানিবাস থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে যেতে লোক পাঠিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। কিন্তু বিএনপি নেত্রী যাননি। উল্টো যারা তাকে নিতে এসেছিলেন, তারাই প্রাণ হারিয়েছেন পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে।
আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করেছে। আমাদের নেত্রী তখন যুদ্ধও করেছেন। তিনি (বেগম খালেদা জিয়া) দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা। এখন তো কত ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আছেন, সনদ নিয়ে ঘোরেন। তবে সনদের অপেক্ষায় তো আর ইতিহাস বদলে যাবে না। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা, অবশ্যই সেটা মানতে হবে।
এর মধ্যে বিজয়ের ৫০তম বার্ষিকীর আগে কেবল দলের নেত্রীকে নয়, সে সময় তার দুই শিশুপুত্র তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোকেও মুক্তিযোদ্ধা বলতে ছাড়েননি নেতারা।
তবে মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে তারেক রহমানের বয়স ছিল ৪ বছরের কম আর কোকোর বয়স ২ বছরের কম।
একজন নেতা এমনও বলেন, বেগম খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ নিয়েছেন।
তবে মুক্তিযোদ্ধার যে সংজ্ঞা, তাতে কোনোভাবেই এদেরকে মুক্তিযোদ্ধা বলার সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য হলো, এই সংজ্ঞা সরকার তাদের ইচ্ছামতো তৈরি করেছে।
তবে কোন যুক্তিতে খালেদা জিয়াকে মুক্তিযোদ্ধা বলতে হবে- সে বিষয়টি তুলে ধরছেন না বিএনপি নেতারা।
জানতে চাইলে বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া অবশ্যই একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ৭১ সালে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তা ছাড়া উনি পাকহানাদার বাহিনীর কাছে বন্দি ছিলেন। এটা সবারই জানা। এতে সন্দেহ নেই।’
বিএনপি কি এখন তার নেত্রীর জন্য মুক্তিযোদ্ধা সনদ চাইবে?
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘সব মুক্তিযোদ্ধা কি তালিকাভুক্ত হয়েছেন? এখনও অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছেন যারা স্বেচ্ছায় আবেদন করেননি। তারা দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন।’
বেগম খালেদা জিয়া অবশ্যই একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ৭১ সালে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তা ছাড়া উনি পাকহানাদার বাহিনীর কাছে বন্দি ছিলেন। এটা সবারই জানা। এতে সন্দেহ নেই
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সেনাশাসক জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর বিএনপি তাকে ‘মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক’ আখ্যা দিয়ে দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে রাজনৈতিক বিতর্ক করেছে।
এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের একটি রায়ও হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্রের ওপর ভিত্তি করে সেই রায়ে উল্লেখ করা হয়, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি বাহিনীর অপারেশন সার্চলাইট শুরুর পর প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে প্রতিরোধ যুদ্ধের ডাক দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে ২৭ মার্চ যে ঘোষণা দেন, তার আগেও সেখান থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তবে সেনা-কর্মকর্তাদের হিসাবে জিয়াউর রহমানের ঘোষণাটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং সেটিই বেশি আলোচিত হয়েছে।
উচ্চ আদালতের রায়ের পরও বিএনপি তাদের প্রতিষ্ঠাতাকে ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ আখ্যা দিয়ে আসছে। এর মধ্যে তাদের নেত্রীকে এবার ‘প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা’ উল্লেখ করল।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরুদ্দিন সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া একজন মুক্তিযোদ্ধা তাতে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। জিয়াউর রহমানের অনুপস্থিতিতে তখন আমাদের নেত্রী প্রয়োজনীয় সব পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন। স্বামীর অনুপস্থিতিতে শিশুসন্তানদের নিয়ে পালিয়ে বেরিয়েছেন। তারপরে তো কারাবন্দিই ছিলেন।
খালেদা জিয়া সরাসরি যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন বলেও দাবি দলের স্থায়ী কমিটির আরেক নেতার। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করেছে। আমাদের নেত্রী তখন যুদ্ধও করেছেন। তিনি (বেগম খালেদা জিয়া) দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা। এখন তো কত ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আছেন, সনদ নিয়ে ঘোরেন। তবে সনদের অপেক্ষায় তো আর ইতিহাস বদলে যাবে না। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা, অবশ্যই সেটা মানতে হবে।‘
মুক্তিযুদ্ধের সময় খালেদা জিয়া ছিলেন ক্যান্টনমেন্টে। অনেকবার বলেছি, খালেদা জিয়াকে আমি নিতে এসেছিলাম। আমার বন্ধু শহীদ জুয়েলসহ আরও দুইজন। তখন গভীর রাত ছিল। কথা ছিল, আমাদের সঙ্গে তিনি যাবেন ওইপার (সীমান্তের ওপারে)। পরের দিন গিয়ে দেখলাম, তিনি চলে গেছেন ক্যান্টনমেন্টে। দীর্ঘ ৯ মাস ক্যান্টনমেন্টে ছিলেন।
মন্ত্রী কী বলছেন
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা (খালেদা জিয়াকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি) আসলে একটা তামাশা। বিএনপি ভালো তামাশা করতে পারে তা নতুন কিছু না। তবে স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে সেই তামাশার এমন দশা তা আর কী বলব? শেষ পর্যন্ত তারা স্বাধীনতা নিয়ে, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে তামাশা করতে ছাড়েনি। এটা মুক্তিযোদ্ধাদের কটাক্ষ করার সমান, দেশকে কটাক্ষ করার সমান।’
মন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার যে সংজ্ঞা, তা অনুযায়ী যারা পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে নির্যাতিত হয়েছেন তারাই মুক্তিযোদ্ধা। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, বিএনপি কি বলতে চায় যে খালেদা জিয়া পাকিস্তানি বাহিনীর দ্বারা নির্যাতিত হয়েছেন? এটা তো তারা খোলাসা করছেন না।’
এটা (খালেদা জিয়াকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি) আসলে একটা তামাশা। বিএনপি ভালো তামাশা করতে পারে তা নতুন কিছু না। তবে স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে সেই তামাশার এমন দশা তা আর কী বলব? শেষ পর্যন্ত তারা স্বাধীনতা নিয়ে, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে তামাশা করতে ছাড়েনি। এটা মুক্তিযোদ্ধাদের কটাক্ষ করার সমান, দেশকে কটাক্ষ করার সমান।
‘তিনি স্বেচ্ছায় ক্যান্টনমেন্টে গিয়েছেন আরামে থাকার জন্য। ইতিহাস কী বলে, সেটা দেশবাসীর বিবেকের কাছে প্রশ্ন রাখলাম’-বলেন একাত্তরের রণাঙ্গনের যোদ্ধা মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি যদি তাদের নেত্রীকে আদর করে ভালোবেসে কোনো উপাধি দিতে চায়, সেটা আলাদা কথা। তবে সেখানেও আমার আপত্তি আছে, আদর করে মা ডাকেন, মুক্তিযোদ্ধা না।’
‘খালেদা জিয়া স্বেচ্ছায় সেনানিবাসে ছিলেন’
সেক্টর কমান্ডার মেজর রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দি ছিলেন, এই যে এসব কথা, এগুলো কি তাদের (বিএনপি) কল্পনা? যখন জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধাদের পাঠিয়েছেন খালেদা জিয়াকে নিয়ে যেতে, তখন কয়জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন? এসব ইতিহাস ঘাঁটলে বিএনপি কোথায় পালাবে তা জানা নেই। উনি মুক্তিযোদ্ধার মধ্যেই পড়েন না।’
মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে নানা আলোচিত অভিযান চালানো অপারেশন ক্র্যাক প্লাটুনের যোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এক আলোচনায় ১৯৭১ সালের ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরে বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় খালেদা জিয়া ছিলেন ক্যান্টনমেন্টে। অনেকবার বলেছি, খালেদা জিয়াকে আমি নিতে এসেছিলাম। আমার বন্ধু শহীদ জুয়েলসহ আরও দুইজন। তখন গভীর রাত ছিল। কথা ছিল, আমাদের সঙ্গে তিনি যাবেন ওইপার (সীমান্তের ওপারে)। পরের দিন গিয়ে দেখলাম, তিনি চলে গেছেন ক্যান্টনমেন্টে। দীর্ঘ ৯ মাস ক্যান্টনমেন্টে ছিলেন।’
মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় যা রয়েছে
মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী তারাই মুক্তিযোদ্ধা, যারা ১৯৭১ সালে যুদ্ধে অংশ নিতে বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করে ভারতের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন অথবা বিদেশে অবস্থানকালে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশেষ অবদান রেখেছেন, বিশ্বে জনমত গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন অথবা যুদ্ধকালে মুজিবনগর সরকারের অধীনে কর্মকর্তা বা কর্মচারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন অথবা সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, ইপিআর, আনসার বাহিনীর সদস্য যারা মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশ নিয়েছেন অথবা পাকিস্তানি বাহিনীর দ্বারা নির্যাতিত নারী।
যেভাবে সামনে আসে প্রসঙ্গটি
গত ১১ ডিসেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘খালেদা জিয়া হচ্ছেন সেই নেতা, ১৯৭১ সালে জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার পর থেকে যার ভূমিকা একজন মুক্তিযোদ্ধার। তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে বন্দি ছিলেন। আর আমাদের (বিএনপির) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আরেকজন মুক্তিযোদ্ধা, তিনি শিশু মুক্তিযোদ্ধা। তিনিও তখন মায়ের সঙ্গে কারাগারে ছিলেন।’
দুই দিন পর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনায় তিনি বলেন, ‘এই দেশের অন্যতম নারী মুক্তিযোদ্ধা, প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় তারা আটক করে রেখেছে। তিনি এখন অত্যন্ত অসুস্থ, গুরুতর অসুস্থ।’
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে সাভার স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের এই কথা বলেন।
তারেক রহমান ও আরাফাত রহমানের জন্মের বয়স হিসাব করলে তাদের যুদ্ধ বা রাজনীতি বোঝার কথা নয়। তারেকের জন্ম ১৯৬৭ সালের ২০ নভেম্বর। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে তার বয়স ছিল সাড়ে তিন বছরের কম। অন্যদিকে কোকোর জন্ম ১৯৬৯ সালের ১২ আগস্ট। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে তার বয়স দেড় বছরের কিছু বেশি।
২০ ডিসেম্বর মহানগর নাট্যমঞ্চে আরেক আলোচনায় ফখরুল বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এ দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে দুই শিশুর হাত ধরে, আজকে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর হাত ধরে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।’
তারেক রহমান ও আরাফাত রহমানের জন্মের বয়স হিসাব করলে তাদের যুদ্ধ বা রাজনীতি বোঝার কথা নয়।
তারেক রহমানের জন্ম ১৯৬৭ সালের ২০ নভেম্বর। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে তার বয়স ছিল সাড়ে তিন বছরের কম।
অন্যদিকে কোকোর জন্ম ১৯৬৯ সালের ১২ আগস্ট। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে তার বয়স দেড় বছরের কিছু বেশি।
শুধু মির্জা ফখরুল নন, দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানও একাধিক আলোচনায় খালেদা জিয়াকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে বক্তব্য রেখেছেন।
গত বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৮ ডিসেম্বর এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণী বেগম খালেদা জিয়াসহ তার দুই সন্তানকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কারাগারে মাসের পর মাস কাটাতে হয়েছে। তারা মুক্তিযোদ্ধা। তাদের প্রতিও আমাদের শ্রদ্ধা।‘
শিশু-কিশোরদের উদ্দেশে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘তোমরা সত্য জানার চেষ্টা করো। মনে রাখবে জ্ঞান তাই যা সত্য। মিথ্যা জানা জ্ঞান নয়। যারা মিথ্যা জানাতে চায় তারা আমাদেরকে অজ্ঞানতার অভিশাপে আবদ্ধ করতে চায়। কাজেই সত্য জানার আবেগ ও উৎসাহ আরও জাগ্রত হোক।’
আরও পড়ুন:আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে সরকারের প্রস্তুতি রয়েছে বলে পুনরায় জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, “আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। সরকারের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে।”
আজ সোমবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক কোর কমিটির সভা শেষে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের সফল আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা, বিশেষ করে গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বডিওর্ন ক্যামেরা কেনা হবে এবং এ বিষয়ে সরকার ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।
তিনি আরও বলেন, বিগত তিনটি সাধারণ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের আগামী সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডসহ সাম্প্রতিক কিছু বড় অগ্নিকাণ্ডের পেছনে নাশকতা আছে কিনা- এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, এসব ঘটনা তদন্তের জন্য একাধিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশি মিশনগুলোতে ই-পাসপোর্ট সেবা চালু করা হবে।
প্রবাসীদের জন্য পাসপোর্ট ফি কমানো এবং বিমান ও বিমানবন্দরে সর্বোত্তম সেবা প্রদানের বিষয়টি সরকার বিবেচনা করছে বলেও তিনি জানান। সূত্র: বাসস
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার ইসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
তিনি বলেন, ‘আইনগতভাবে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। স্থগিত দল হওয়া মানে তাদের যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত। তাই আগামী নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করতে পারবে না।’
তিনি আজ রোববার সকালে সিলেটে সাংবাদিকদের এই কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার জেলা পুলিশ লাইনে নির্বাচনী দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আয়োজিত প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র প্রতীক সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রতীক নির্ধারণ সংবিধান ও নির্বাচনী বিধিমালার আওতায় করা হয়। শাপলা প্রতীক সেই তালিকায় নেই।
তাই তা বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগও নেই।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে না হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
নির্বাচনকে সামনে রেখে সব বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোনো চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ইসি আনোয়ারুল বলেন, ‘অতীতের মতো বিতর্কিত নির্বাচন আর হবে না। সবার সহযোগিতায় একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিতর্কিত বা প্রশ্নবিদ্ধ কোনো কর্মকর্তা যাতে নির্বাচনী দায়িত্বে না থাকেন, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’ সূত্র: বাসস
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটওয়ারীকে।
অন্য সদস্যরা হলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব মুঃ রইচ উদ্দিন খান ও মোঃ তারেক হাসান এবং ঢাকা কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার মুহাম্মদ কামরুল হাসান। কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের উপসচিব পঙ্কজ বড়ুয়া।
কমিটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডও বিশেষ ব্যবস্থায় ঢাকা কাস্টম হাউসে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম অব্যাহত রাখার উদ্যোগ নিয়েছে। সূত্র: বাসস
গত ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড SRO No-404-Law/2025 এর মাধ্যমে বাংলা ভাষায় প্রণীত আয়কর আইন, ২০২৩ এর Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে।
আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ বাতিল করে ২০২৩ সালে বাংলা আয়কর আইন, ২০২৩ প্রণয়ন করার পর হতেই বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ সরকারি গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আয়কর আইনের Authentic English Text প্রকাশের দাবি জানাচ্ছিলেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text না থাকায় বিদেশী বিনিয়োগকারীগণ আইনের সঠিক ব্যাখ্যা ও অনুশীলনের বিষয়ে সংশয়ের মধ্যে থাকতেন এবং বিভিন্ন আইনি জটিলতার সম্মুখীন হতেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text সরকারী গেজেটে প্রকাশ হবার ফলে দেশী-বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ আয়কর আইন সম্পর্কে স্বচ্ছ ব্যাখ্যা পাবেন বিধায় করদাতাগণের আস্থা অধিকতর বৃদ্ধি পাবে এবং আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে দ্ব্যর্থবোধকতা দূর করে স্বচ্ছতা ও সঠিকতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
কাস্টমস আইন, ২০২৩ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর Authentic English Text সরকারি গেজেটে প্রকাশের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অচিরেই এই দুটি আইনের Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশের মাধ্যমে দেশি-বিদেশী বিনিয়োগকারীগনের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের আওতাধীন পদ্মা সেতুতে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ক্যাশলেস, টোল কালেক্টর ব্যতীত ননস্টপ ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন (ETC) সিস্টেম চালু করা হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের টোল পরিশোধ প্রক্রিয়া আরও দ্রুত, স্বচ্ছ ও ডিজিটাল ব্যবস্থার আওতায় এসেছে।
বর্তমানে বিকাশ, ট্রাস্ট ব্যাংকের TAP অ্যাপ এবং মিডল্যান্ড ব্যাংকের অ্যাপ এর মাধ্যমে পদ্মা সেতুর টোল পরিশোধ করা যাচ্ছে। ব্যবহারকারীরা বিকাশ অ্যাপে গিয়ে “টোল” অপশনের অধীনে “মোটরযান রেজিস্ট্রেশন করুন” এ প্রবেশ করে গাড়ির নম্বর ও চেসিস নম্বরের শেষ ৪ (চার) ডিজিট প্রদান করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন। সফল রেজিস্ট্রেশনের পর ফিরতি এসএমএসে একটি Ekpass ID প্রেরণ করা হবে।
এই Ekpass ID ব্যবহার করে বিকাশ অ্যাপের “Pay Bill” অপশনের “D-Toll Top-Up” সেবার মাধ্যমে রিচার্জ করতে হবে। এরপর পদ্মা সেতুর মাওয়া টোল প্লাজার নিকটস্থ রেজিস্ট্রেশন বুথে বিআরটিএ অনুমোদিত RFID ট্যাগ প্রথমবারের মতো যাচাই করে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। একবার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে, যানবাহন কমপক্ষে ৩০ কিলোমিটার/ঘণ্টা গতিতে ETC লেন ব্যবহার করে নির্বিঘ্নে পারাপার হতে পারবে।
১৮ অক্টোবর সেতু বিভাগের সচিব এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ পদ্মা সেতুর ইটিসি বুথ পরিদর্শন করেন এবং ইটিসি সেবা ব্যবহার করে পদ্মা সেতু পারাপার করেন।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে ট্রাস্ট ব্যাংকের TAP অ্যাপের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর ETC সিস্টেমের লাইভ পাইলটিং কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর থেকে ধীরে ধীরে এই সেবার পরিসর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতোমধ্যে ETC সিস্টেমের মাধ্যমে মোট ১,৮১৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে এবং মোট ৩৪,৯১,৭০০ টাকা টোল আদায় সম্পন্ন হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান মহোদয়ের বিশেষ নির্দেশনা ও দিকনির্দেশনায় পদ্মা সেতুতে এই ETC সিস্টেম বাস্তবায়িত হয়েছে। এটি দেশের টোল ব্যবস্থাপনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, যা সময়, জ্বালানি ও মানবসম্পদের অপচয় হ্রাসে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
ভবিষ্যতে আরও বিভিন্ন ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাপ এই সেবার আওতায় যুক্ত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ-এর a2i (এটুআই) কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং নতুন ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডারদের সাথে সংযুক্তির কাজ অব্যাহত রয়েছে।
এই টোল কালেক্টর ব্যতীত নন স্টপ ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন সিস্টেমের মাধ্যমে পদ্মা সেতু ব্যবহারকারীরা দ্রুত, নিরাপদ ও স্বচ্ছভাবে টোল পরিশোধ করতে পারবেন—যা বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরের যাত্রায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ এবং ২০২১ সালের মার্চ মাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি দমনে পরিচালিত হত্যাকাণ্ডে শাহাদাতবরণকারী শহিদ পরিবারের সদস্যদের মাঝে চেক বিতরণ অনুষ্ঠান ২০২৫ আজ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে এবং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা ডা. আ ফ ম খালিদ হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞে শহিদ ৫৮ টি পরিবার এবং ২০২১ সালের মার্চ মাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি দমনে পরিচালিত হত্যাকাণ্ডে শহিদ ১৯টি পরিবারের সদস্যদের মাঝে পরিবার প্রতি ১০ লক্ষ টাকা করে, মোট ৭ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার চেক প্রদান করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, "শহীদদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না। ঐতিহাসিক শাপলা চত্বর এবং মোদি বিরোধী আন্দোলনে শহীদদের আজকের এই স্বীকৃতি তারই প্রমাণ।" শহীদ পরিবারদেরকে স্বীকৃতি দিতে পেরে সরকার গর্বিত উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন ইতিহাস থেকে যেনো কেউ ঐতিহাসিক শাপলা চত্বরের শহীদদের নাম মুছতে না পারে, এজন্য শাপলা চত্বরেই খোদাই করে লেখা হবে শহীদদের নাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ডা. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন,"শাপলা চত্বর এবং মোদি বিরোধী আন্দোলনে শহিদদের আর্থিক সহায়তা প্রদান স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এক ঐতিহাসিক উদ্যোগ।" এই উদ্যোগের মাধ্যমে দুই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার স্বীকৃতি দেওয়ার প্রক্রিয়ার সূচনা হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের হত্যাযজ্ঞ এবং ২০২১ সালের মোদি বিরোধী বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে শাহাদতবরণকারী শহিদ পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে আন্তরিক সাধুবাদ জানিয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মাওলানা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, "স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার এই মহতী উদ্যোগে সারা বাংলার আলেম সমাজ সম্মানিত হয়েছে। "
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব জনাব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, এবি পার্টির চেয়ারম্যান জনাব মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি জনাব নুরুল হক নুর, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা সাজিদুর রহমান এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক জনাব মোঃ শাহজাহান মিয়া।
‘জুলাই সনদ’ স্বাক্ষরকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঐক্য ও সংস্কারের পথে বড় ধরনের অগ্রগতি হিসেবে অভিহিত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার।
তিনি আরও বলেন, এটি ২০২৬ সালের নির্বাচনের প্রস্তুতিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে।
শুক্রবার ফেসবুক পোস্টে মিলার লেখেন, ‘জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে আমি আনন্দিত। এই দলিল মৌলিক সংস্কার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গড়ে ওঠা ব্যাপক ঐকমত্যের প্রতিফলন।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালাবদলের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। ২০২৬ সালের নির্বাচনের পথে দেশটি ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাচ্ছে এটি তারই প্রমাণ।
‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ মোট ২৫টি রাজনৈতিক দল যোগ দেয়।
অনুষ্ঠানে মিলারের উপস্থিতি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও শাসনব্যবস্থা সংস্কারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগীতা অব্যাহত রাখার ইঙ্গিত বহন করে।
সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহিতা বাড়াতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছে।
সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিতের পক্ষে তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে।
এ লক্ষ্যে ইইউ কারিগরি সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনে নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর প্রস্তাবও দিয়েছে। এসব উদ্যোগ গণতান্ত্রিক চর্চা ও টেকসই উন্নয়নের প্রতি ইইউর প্রতিশ্রুতির অংশ। সূত্র: বাসস
মন্তব্য