× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
The OTC return company has no control over the SME board
google_news print-icon

ওটিসি-ফেরত কোম্পানির দাপট নেই এসএমই বোর্ডে

ওটিসি-ফেরত-কোম্পানির-দাপট-নেই-এসএমই-বোর্ডে
মূল মার্কেটে ওটিসি-ফেরত দুটি কোম্পানির শেয়ার দর ১৫ গুণের বেশি বাড়লেও এসএমই বোর্ডে টানা দর বাড়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে না। যে চারটি কোম্পানি ওটিসি থেকে ফিরেছে, তার মধ্যে দুটির শেয়ার যে দর নিয়ে ফিরেছে, এখন দাম তার চেয়ে কম। বাকি দুটির দাম বেড়েছে কিছুটা। নতুন তালিকাভুক্ত দুটি কোম্পানির শেয়ার দরেও উল্লম্ফন হয়নি, যা মূল মার্কেটের এক সাধারণ প্রবণতা। পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, এসএমই বোর্ডের প্রাতিষ্ঠানিক ও বড় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিনিয়োগ শিক্ষা বেশি থাকায় তারা গুজবে ছোটেন না। কোম্পানির মৌলভিত্তির বিবেচনায় শেয়ার কেনেন। তাই এমনটা ঘটছে।

ওভার দ্য কাউন্টার বা ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে ফেরার পর চারটি কোম্পানির শেয়ার দর ক্রমাগত বাড়তে থাকলেও প্রাতিষ্ঠানিক ও বড় বিনিয়োগকারীদের এসএমই বোর্ডে সেটা হচ্ছে না।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন হওয়া এসএমই বোর্ডে কোম্পানির সংখ্যা মোট ছয়টি। এর মধ্যে ওটিসি থেকে ফেরা কোম্পানি চারটি। বাকি দুটি নতুন তালিকাভুক্ত।

এই ছয়টি কোম্পানির মধ্যে প্রথম দিন একটির লেনদেন হয়নি। বাকি পাঁচটির সবগুলোর দর ১৮ থেকে ২০ শতাংশ বাড়ে।

সেদিন যে কোম্পানির লেনদেন হয়নি, সেটির দামও পরে ২০ শতাংশ বাড়ে।

তবে পরে দুটি কোম্পানির শেয়ার দর অনেকটাই কমে যায়। একটি দর ধরে রাখে আর একটির দর সেদিনের তুলনায় বাড়ে।

ঠিক বিপরীত চিত্র দেখা যায় মূল মার্কেটে। গত ১৩ জুন ওটিসি মার্কেট থেকে মূল মার্কেটে ফেরা চার কোম্পানির দর বাড়ে ১০ শতাংশ করে। এরপর টানা বাড়তে বাড়তে একপর্যায়ে দুটির দর ১৫ গুণের বেশি, একটির দর প্রায় চার গুণ, একটির দর পাঁচ গুণের মতো হয়ে যায়।

পরে এই অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির তদন্ত শুরু হওয়ার পর সেখান থেকে ব্যাপক দরপতন ঘটে। এতে বিনিয়োগকারীরা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন।

এর আগেও দুটি কোম্পানি ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে ফেরার পর একই ধরনের ঘটনা ঘটে। বাধাহীন গতিতে শেয়ার দর বাড়তে বাড়তে আকাশচুম্বী হয়ে যায়। পরে পড়তে পড়তে ক্ষতির মুখে পড়েন শেয়ারধারীরা।

মূল মার্কেটে এক দিনে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ দর বাড়ার সুযোগ থাকলেও এসএমই বোর্ডে দর বৃদ্ধি বা হ্রাসের সার্কিট ব্রেকার ২০ শতাংশ। এ কারণে লেনদেন শুরু হওয়ার আগে যাদের মনে ধারণা ছিল যে, সেখানে শেয়ারের দর আরও বেশি গতিতে বাড়বে, সেটি ভুল প্রমাণ হয়ে গেছে এরই মধ্যে।

কেবল ওটিসি মার্কেট নয়, নতুন তালিকাভুক্ত দুটি কোম্পানির শেয়ার দরও বাড়েনি এসএমই বোর্ডে। অথচ মূল মার্কেটে কোনো কোম্পানি তালিকাভুক্ত হলেও শেয়ার দর দ্বিগুণ, তিন গুণ, চার গুণ এমনকি আট গুণ হয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা গেছে।

এসএমই বোর্ডে যারা শেয়ার কিনতে পারেন, তারা হয় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বা কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ আছে, এমন বিনিয়োগকারী।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বড় বিনিয়োগারীদের সঙ্গে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের বিশ্লেষণ আর হিসাব-নিকাশের পার্থক্য এখানেই। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা যাচাই-বাছাই ছাড়াই শেয়ার কিনে থাকেন। যেগুলোর দাম বাড়ছে, সেগুলোর শেয়ার বেশি কেনেন। আর তাদের এই প্রবণতার সুযোগ নিয়ে চতুর বিনিয়োগকারীরা শেয়ারের দর কৃত্রিমভাবে বাড়িয়ে দিতে পারেন। কিন্তু সেটি এসএমই বোর্ডে ঘটছে না।

যে দুটি কোম্পানি এসএমই বোর্ডে নতুন তালিকাভুক্ত হয়েছে, সেগুলোর একটির দর ছয় কর্মদিবসে বেড়েছে ৩০ শতাংশ, একটির ৩৫ শতাংশ।

অথচ মূল মার্কেটে দেখা গেছে, নতুন তালিকাভুক্ত হওয়ার পর তিন থেকে সাত গুণ হতে সময় লাগেনি মোটেও। সম্প্রতি এক দিনে নতুন শেয়ারও সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বাড়তে পারবে বলে সিদ্ধান্ত হওয়ার পরেও দ্বিগুণের বেশি হওয়ার আগ পর্যন্ত সাউথবাংলা ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়নি বললেই চলে।

আর সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর প্রায় প্রতিদিনই ১০ শতাংশ বাড়তে বাড়তে পরে লভ্যাংশ ঘোষণার পর মূল্যসীমা না থাকার দিন এক দিনে বেড়ে অভিহিত মূল্যের ৮ গুণ ছাড়িয়ে যায়।

এসএমই বোর্ড চালুর পর এখন পর্যন্ত লেনদেন হয়েছে ছয় দিন। এর মধ্যে প্রথম দিন বাড়লেও পরে একটি কোম্পানির দর প্রথম দিনের তুলনায় ৪০ শতাংশ কমে যায়।

একটি যত টাকায় ওটিসি থেকে ফিরেছিল, সেখান থেকে ১০ শতাংশ কমে গেছে, যদিও প্রথম দিন বেড়ে গিয়েছিল ২০ শতাংশ।

কেবল একটি কোম্পানির শেয়ার দর ওটিসি থেকে ফেরার দিনের দামের তুলনায় ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এসএমই প্ল্যাটফর্মে লেনদেনে অংশগ্রহণ করছে প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। তারা সব জেনে-বুঝে শেয়ার কেনাবেচা করে। ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে নিয়ে গেলেই দাম বাড়বে, কেবল শেয়ার সংখ্যা কম বলেই দাম বাড়বে- এমন হিসাব-নিকাশ তারা করে না।’

তিনি বলেন, ‘মূল মার্কেটে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করে। তাদের একটি বড় অংশ গুজবে কান দেয়। মূল মার্কেটে আসার ফলে কোম্পানি ভালো হবে, এমন কথা ছড়ানো হয়। কিন্তু বাস্তবে এর কিছুই হয় না।’

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক শাকিল রিজভী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিনিয়োগ শিক্ষার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। ওটিসি মার্কেট থেকে ফিরলেই সেই কোম্পানির শেয়ার দর বাড়বে, সেটি ঠিক নয়। বরং কোম্পানির ফান্ডামেন্টাল অনুযায়ী শেয়ার দর নির্ধারিত হবে, সেটিই গুরুত্বপূর্ণ। এসএমই বোর্ড থেকে শিক্ষা নিয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিষয়ে আরও সচেতন হওয়ার উচিত।’

ওটিসি-ফেরত কোম্পানির দাপট নেই এসএমই বোর্ডে

ওটিসি থেকে ফেরা এসএমই চার কোম্পানি

বেঙ্গল বিস্কুট

এই কোম্পানিটি ফেরার দিন সবচেয়ে বেশি দাম নিয়ে এসেছে। ওটিসিতে শেষ লেনদেন হয়েছিল ১৮০ টাকায়।

লেনদেনের প্রথম দিন দাম বেড়ে হয়ে যায় ২১৩ টাকা ৩০ পয়সা। পরে সর্বোচ্চ ২৫২ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন হয়। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার ষষ্ঠ কর্মদিবসে সেখান থেকে দাম কমে দাঁড়ায় ১২০ টাকায়।

খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের এই কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৭ কোটি ৯৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। শেয়ার সংখ্যা ৭৯ লাখ ৩৮ হাজার। এর মধ্যে আবার ৩০ দশমিক ৬০ শতাংশ আছে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে, যা বিক্রি করা যাবে না। ফলে বাজারে লেনদেনযোগ্য শেয়ার সংখ্যা খুবই কম।

বাজারে লেনদেনযোগ্য শেয়ারের সংখ্যা ৫২ লাখ ৭০ হাজার ৮৩২টি।

ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়েজ

একমাত্র এই কোম্পানিটির শেয়ার দর প্রথম দিনের দরের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে।

এই কোম্পানিটি লেনদেন শুরু করে ১৬ টাকা ৬০ পয়সায়। প্রথম দিনে দিনের সর্বোচ্চ ১৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ বেড়ে হয় ১৯ টাকা ৯০ পয়সা। পরে আরও কয়েক দিন বেড়ে সর্বোচ্চ দর হয়েছে ৩৪ টাকা ২০ পয়সা।

তবে বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ার দর ৪ দশমিক ৪৮ শতাশ কমে ২৯ টাকা থেকে হয়েছে ২৭ টাকা ৭০ পয়সা।

কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ১০ কোটি টাকা। শেয়ার সংখ্যা ১ কোটি। এর মধ্যে ৪৭ শতাংশ শেয়ার আছে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে। যা এই মুহূর্তে বিক্রিতে আছে বিধিনিষেধ। ফলে বাজারে বিক্রয়যোগ্য শেয়ারের সংখ্যা ৫৩ লাখের কিছু কম।

অ্যাপেক্স ওয়েভিং

বস্ত্র খাতের এই কোম্পানিটি এসএমই বোর্ডে আসে ১২ টাকা দর নিয়ে। প্রথম দিনই সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১৪ টাকা ৪০ পয়সা। এই দরে সেদিন হাতবদল হয়েছিল ৫টি শেয়ার। পরে সর্বোচ্চ দর উঠেছিল ২০ টাকা ৬০ পয়সা।

তবে গত বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ার দর কমে হয়েছে ৯ টাকা। অর্থাৎ যে দর নিয়ে ওটিসি থেকে এসেছিল, এখন কমে গেছে তার চেয়ে বেশি।

হিমদ্রি

এই কোম্পানিটি এসেছে ৮ টাকা দর নিয়ে। প্রথম দিন লেনদেনই হয়নি। পরে এক দিন ২০ শতাংশ বেড়ে ৯ টাকা ৬০ পয়সা হয়।

কোম্পানিটির পরিশোধিত ‍মূলধনের পরিমাণ ৭৫ লাখ টাকা। শেয়ার সংখ্যা ৭ লাখ ৫০ হাজার। তবে বাজারে বিক্রয়যোগ্য শেয়ারের পরিমাণ খুবই কম।

কারণ, মোট শেয়ারের ৯৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ আছে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে। সরকারের শেয়ার আছে ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ আছে। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে আছে মাত্র শূন্য দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ, অর্থাৎ ৬৭৫টি। এখানে হতে পারে, এই শেয়ারের মালিকরা কেউ বিক্রি করতে রাজি নন।

বিবিধ খাতের এই কোম্পানিটির রিজার্ভে জমা আছে ১৩৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা। অর্থাৎ শেয়ারপ্রতি ১ হাজার ৮০৫ টাকা।

নতুন তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানির যে চিত্র

নতুন তালিকাভুক্ত হয়ে এসএমই বোর্ডে নাম লিখিয়েছে অরিজা অ্যাগ্রো ও মাস্টার ফিড।

এর মধ্যে অরিজার শেয়ার সংখ্যা ৬ কোটি ৭১ লাখ ৫০ হাজার ৫০০। এর মধ্যে ৪৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ অর্থাৎ ৩ কোটি ৪১ লাখ ৬৪ হাাজর ১৬টি শেয়ার সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে আছে।

প্রথম দিন এই কোম্পানির শেয়ার দর অভিহিত মূল্যের ২০ শতাংশ বেড়ে হয় ১২ টাকা। পরে দাম বাড়তে বাড়তে সর্বোচ্চ দর দাঁড়ায় ২০ টাকা ৬০ পয়সা। তবে বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছে ১৩ টাকায়।

কোম্পানিটিও প্রাতিষ্ঠানিক বা যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কাছে ১ কোটি শেয়ার ছেড়ে ১০ কোটি টাকা উত্তোলন করেছে।

গত ৩০ ডিসেম্বর সমাপ্ত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ০২ পয়সা।

মাস্টার ফিড অ্যাগ্রোটেকের শেয়ার দরও বেড়ে গিয়ে একইভাবে কমেছে। এটিও ১০ টাকায় তালিকাভুক্ত হয়ে প্রথম দিনই শেয়ার দর হয়ে যায় ১২ টাকা। এটিরও সর্বোচ্চ দর ছিল ২০ টাকা ৬০ পয়সা। আর বৃহস্পতিবারের দর ছিল ১৩ টাকা ২০ পয়সা।

কোম্পানিটি ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের ১ কোটি শেয়ার ছেড়ে ১০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে।

গত ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৬৮ পয়সা।

এই কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা ৬ কোটি ৭১ লাখ ৫০ হাজার ৫০০। এর মধ্যে ৪ কোটি ১০ লাখ ২ হাজার ৯৫টি আছে সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর হাতে।

ওটিসি-ফেরত কোম্পানির দাপট নেই এসএমই বোর্ডে

মূল মার্কেটে ওটিসি ফেরা কোম্পানির উল্টো চিত্র

ইলেকট্রনিক শেয়ারে রূপান্তর না করা, লোকসানসহ নানা অনিয়মের কারণে চার কোম্পানিকে মূল মার্কেট থেকে সরিয়ে ওটিসিতে পাঠানো হয়। সুশাসনের দিক থেকে উন্নতি ও মুনাফায় ফেরার কারণে গত ১৩ জুন সেখান থেকে মূল মার্কেটে আনা হয় কোম্পানিগুলোকে।

এই স্থানান্তরের পর থেকে পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটছে কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর।

তবে দর বৃদ্ধি নিয়ে তদন্তের ঘোষণা আর দুটি কোম্পানির আগের শতভাগের বেশি বোনাস শেয়ার যুক্ত হওয়ার পর শেয়ার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার খবরে ক্রমেই কমছে।

মূল মার্কেটে ফেরার দিন তমিজউদ্দিন টেক্সটাইলের শেয়ার দর ছিল ১৩ টাকা। এ সময় পর্যন্ত সর্বোচ্চ দর উঠেছে ২০২ টাকা। অর্থাৎ শুরুর দিনের তুলনায় দাম এখন প্রায় ১৫ গুণ।

বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৩৮ টাকা ৪০ পয়সা। ফরে সর্বোচ্চ দরে যারা শেয়ার কিনেছেন, তাদের এখন শেয়ারপ্রতি লোকসান ৬৩ টাকা ৬০ পয়সা।

৩০ কোটি টাকার কিছু বেশি পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিতে শেয়ার সংখ্যা ৩ কোটি ৬৪ হাজার ৭৬৭। এর মধ্যে ৫৬ দশমিক ২২ শতাংশ ধারণ করে আছেন উদ্যোক্তা-পরিচালকরা। ফলে বাজারে লেনদেনযোগ্য শেয়ারের সংখ্যা ১ কোটি ৩১ লাখ ৬২ হাজার ৩৫৫টি।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেড়েছে পেপার প্রসেসিংয়ের। এই কোম্পানিটি মূল মার্কেটে ফিরেছে ১৬ টাকায়। গত ১০ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির সর্বোচ্চ দর উঠেছিল ২৪৭ টাকা। অর্থাৎ দাম বাড়ে ১৫ গুণের বেশি।

বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ১৫৬ টাকা ৮০ পয়সা।

মূল মার্কেটে ফেরার সময় কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন দেখানো হয় ৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। শেয়ার সংখ্যা ৩৩ লাখ ৬০ হাজার।

তবে মূল মার্কেটে ফেরার আগে ২০০ শতাংশ বোনাস যোগ করে ২০ সেপ্টেম্বর রোববার মূলধন দেখানো হয় ১০ কোটি ৪৫ লাখ। শেয়ার সংখ্যা বেড়ে হয় ১ কোটি ৪৪ লাখ ৯৬ হাজার।

এরপর থেকে টানা কমছে শেয়ার দর। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১৫৬ টাকা ৮০ পয়সা। অর্থাৎ দাম ৯০ টাকার বেশি কমেছে।

৫০ টাকা নিয়ে ফেরা মনোস্পুল পেপারের সর্বোচ্চ দর উঠেছিল ২৪৯ টাকা ৮০ পয়সা। এখন লেনদেন হচ্ছে ১৬০ টাকা ৪০ পয়সা।

এই কোম্পানিটির ক্ষেত্রেও পরিশোধিত মূলধন হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার পর দরপতন ঘটতে থাকে।

এই কোম্পানিটিও মূল মার্কেটে ফেরার আগে ঘোষণা করা লভ্যাংশ সমন্বয়ের কারণে এ ঘটনা ঘটে।

এই কোম্পানিটি মূল মার্কেটে ফেরার সময় পরিশোধিত মূলধন দেখানো হয় ৩ কোটি ৪ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। শেয়ার সংখ্যা ছিল ৩০ লাখ ৪৮ হাজার ৩২০টি।

কিন্তু ২০ সেপ্টেম্বর মূলধন উল্লেখ করা হয় ৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। শেয়ার সংখ্যা দেখানো হয় ৯৩ লাখ ৮৮ হাজার ৮২৫টি।

কোম্পানি দুটির সচিব মোস্তাফিজুর রহমান জানান, দুটি কোম্পানিই ২০১৮ সালে ২০০ শতাংশ বোনাস ঘোষণা করেছিল। কিন্তু বিএসইসির নির্দেশনা অনুসারে, তাদের অনুমোদন ছাড়া ওটিসির কোনো কোম্পানির বোনাসের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা যায় না। তাই মূল মার্কেটে ফেরার সময় ওই বোনাসের আলোকে শেয়ার সংখ্যা দেখানো যায়নি। সম্প্রতি বিএসইসি তাদের বোনাস অনুমোদন করায় এ তথ্য হালনাগাদ করা হয়েছে।

এই তিনটি কোম্পানির তুলনায় মুন্নু ফেব্রিক্সের শেয়ার সংখ্যা বেশি। আর এটির দামও বেড়েছে তুলনামূলক কম।

কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ১১৫ কোটি টাকা। শেয়ার সংখ্যা ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

ফেরার দিন কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ১০ টাকা। প্রায় প্রতিদিন ১০ শতাংশ করে বাড়তে বাড়তে ৩০ জুন ৩৭ টাকা ২০ পয়সা হয়ে যায়। কিন্তু পরে কমতে কমতে এখন দাঁড়িয়েছে ২৪ টাকা ৬০ পয়সায়।

আরও পড়ুন:
এসএমই বোর্ড: শেয়ারদরে লাফ, লেনদেন খুবই কম
ওটিসি থেকে ফিরেই ধামাকা, পরে হতাশা
ওটিসি থেকে ফিরেই নাগালের বাইরে চার কোম্পানি
সোনালী পেপার: ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে ফিরেই চমক

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Three arrested for destabilizing the capital market

পুঁজিবাজার অস্থিতিশীল করার অভিযোগে তিনজন গ্রেপ্তার

পুঁজিবাজার অস্থিতিশীল করার অভিযোগে তিনজন গ্রেপ্তার রাজধানীতে শুক্রবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। ছবি: নিউজবাংলা
ডিবির আইসিটি বিভাগের উপকমিশনার শহিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, ডিএমপি ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে সর্বদা কাজ করে চলেছে। এ বিষয়ে নিয়মিতভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো মনিটরিং এবং সাইবার পেট্রলিং পরিচালনা হচ্ছে। পুঁজিবাজারকে অস্থিতিশীল করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের উসকানি দিয়ে কেউ যাতে স্বার্থ হাসিল করতে না পারে, সে বিষয়ে অভিযান চলছে।

অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে পুঁজিবাজার, পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও বিভিন্ন শেয়ারের দাম নিয়ে কারসাজি ও গুজব রটিয়ে মার্কেটকে অস্থিতিশীল করার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

রাজধানীতে শুক্রবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন আমির হোসাইন ওরফে নুরনুরানী (৩৭), নুরুল হক হারুন (৫২) ও আবদুল কাইয়ুম (৩৯)।

ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে শনিবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপি ডিবির প্রধান হারুন অর রশিদ।

তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজার একটি স্পর্শকাতর জায়গা; দেশের অর্থনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এখানে অনেক সাধারণ বিনিয়োগকারী তাদের সর্বস্ব নিয়ে এসে বিনিয়োগ করে থাকেন। অল্পতেই এখানে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক থাকে। একটি স্বার্থান্বেষী চক্র দীর্ঘদিন ধরে পুঁজিবাজার এবং দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, কমিশনের চেয়্যারম্যানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রামে গোপনীয় গ্রুপ খুলে বিভিন্ন মিথ্যা, ভুয়া এবং প্রতারণামূলক তথ্য সরবরাহ করে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রতারিত করে আসছে। ‘সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ব্যবহার করে আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে আসছে। এ বিষয়ে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন রমনা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় উক্ত মামলায় তদন্ত করে মামলা সংশ্লিষ্ট তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে।’

হারুন বলেন, ‘বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন রমনা মডেল থানায় মামলা করার পর থানা ও গোয়েন্দা পুলিশ এই চক্রটির সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য কাজ করতে থাকে। গ্রেপ্তারের পর গোয়েন্দাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য ছড়ানোর জন্য ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রামে গোপনীয় গ্রুপ ব্যবহারের কথা স্বীকার করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রুপগুলোতে আসামিরা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, কমিশনের চেয়ারম্যান, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ও পুঁজিবাজারের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার নামে মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য প্রদান করে বিভিন্ন প্রকার প্রাইস সেনসেটিভ ইনফরমেশন (মূল্য সংবেদনশীল তথ্য) আগেভাগে প্রকাশ করে দেয়, যা বেশির ভাগ সময় বানোয়াট ও মিথ্যা, যার ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিভিন্ন সময় আন্দোলনের নামে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ব্যবহার করে রাস্তা দখল করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে।

‘তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিভিন্ন ইস্যুতে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে ওইসব কোম্পানি সম্পর্কে অনলাইনে অপপ্রচার শুরু করে। এমনকি কোম্পানির অফিসগুলোতেও হামলা করে।’

ডিবির আইসিটি বিভাগের উপকমিশনার শহিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, ডিএমপি ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে সর্বদা কাজ করে চলেছে। এ বিষয়ে নিয়মিতভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো মনিটরিং এবং সাইবার পেট্রলিং পরিচালনা হচ্ছে। পুঁজিবাজারকে অস্থিতিশীল করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের উসকানি দিয়ে কেউ যাতে স্বার্থ হাসিল করতে না পারে, সে বিষয়ে অভিযান চলছে।

ডিএমপি ডিবিপ্রধান বলেন, ‘পুঁজিবাজার ও দেশের অর্থনীতি ধ্বংসের জন্য দেশের চার থেকে পাঁচজন ব্যক্তি জড়িত, যারা এই চক্রের বিভিন্ন গ্রুপে সক্রিয়।

‘চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন কৌশলে চাঁদাবাজি করে আসছে। এদের সঙ্গে যুক্ত আট থেকে ১০টি গ্রুপ শনাক্ত করা হয়েছে, যাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

আরও পড়ুন:
পুঁজিবাজারে অস্থিরতার নেপথ্যে গুটিকয়েক ট্রেডারের কারসাজি
শেয়ারের দাম দিনে ৩ শতাংশের বেশি কমবে না
ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে পুঁজিবাজার
পুঁজিবাজারে সূচক ১৫ মাসে সর্বোচ্চ
পুঁজিবাজারে সুবাতাস, ‘ফ্লোর প্রাইস’মুক্ত আরও ২৩ কোম্পানি

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The manipulation of a few traders behind the instability in the capital market

পুঁজিবাজারে অস্থিরতার নেপথ্যে গুটিকয়েক ট্রেডারের কারসাজি

পুঁজিবাজারে অস্থিরতার নেপথ্যে গুটিকয়েক ট্রেডারের কারসাজি ফাইল ছবি
শেয়ারবাজারের সাম্প্রতিক সময়ের টানা পতন ঠেকাতে আবারও শেয়ারের মূল্যসীমায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন থেকে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর এক দিনে ৩ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না। দেশের পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে বিএসইর আদেশে জানানো হয়েছে।

কোভিড-১৯ মহামারির অভিঘাতে সমগ্র বিশ্ব যখন টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে পতিত হয়, ঠিক সেই সময় বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে টেনে তুলতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। তার নেতৃত্বে বিভিন্ন যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিশ্বের দরবারে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যায়।

যদিও একটি শ্রেণি বাজারে নেতিবাচক ভূমিকা রাখতে বরাবরই সক্রিয় ছিল। তবে দূরদর্শী নেতৃত্বগুণে বিনিয়োগকারীদের অর্থের সুরক্ষা দিতে বারবার বহুমাত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে সেই উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হতে দেননি অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

সম্প্রতি বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে অস্বাভাবিক আচরণ করছে পুঁজিবাজার। নিয়ন্ত্রক সংস্থাও এ পরিস্থিতি সামাল দিতে এরই মধ্যে অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করে বাজারকে স্থিতিশীল করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এমনকি পরিস্থিতি অনুকূলে আনতে গতকাল ফ্লোর প্রাইসমুক্ত সব শেয়ারে একদিনের দর কমার নিম্নসীমা (সার্কিট ব্রেকার) ৩ শতাংশে বেঁধে দিয়েছে সংস্থাটি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএসইসির সময়োপযোগী এমন পদক্ষেপ বাজারকে আবারও টেনে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে সন্দেহভাজন বেশকিছু লেনদেন পরিলক্ষিত হয়েছে বাজারে। এতে বিশেষ একটি শ্রেণি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য বাজারকে ম্যানিপুলেট করার চেষ্টা করছে। কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসও এতে জড়িত রয়েছে। বাজারে অবাঞ্ছিত বিক্রির আদেশ দিয়ে তারা অস্থিরতা তৈরি করছে। তাছাড়া বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে বাজারে একটা শ্রেণি স্বার্থ আদায়ের চেষ্টা করছে। ফলে বেশ কিছুদিন ধরে বাজার কিছুটা অস্বাভাবিক আচরণ করছে।

এ বিষয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে বেশ কিছু ট্রেডার নিজেদের মধ্যে যোগশাজসের মাধ্যমে প্রথমে কম দরে শেয়ার বিক্রি করত। পরে তাদের দেখাদেখি সাধারণ বিনিয়োগকারীরা যখন প্যানিক হয়ে শেয়ার বিক্রি করত তখন তারা আবার কম দরে শেয়ারগুলো কিনে নিত। এভাবে তারা নিজেদের মধ্যে শেয়ার লেনদেন করে প্যানিক সৃষ্টির মাধ্যমে ভালো শেয়ারগুলোর দাম কমাত। এই কাজে তাদের বেশ কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসও সহযোগিতা করত।’

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে শেয়ারের দর কমার কথা নয়। গুটি কয়েক অসাধু ট্রেডারের কারসাজিতে বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এতে বড় বড় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আল-আমিন বলেন, ‘এক শ্রেণির অসাধু বিনিয়োগকারী চাচ্ছেন বর্তমান কমিশন বিদায় হয়ে নতুন কেউ দায়িত্বে আসুক, যাতে তারা নতুন করে আরও সুযোগ নিতে পারেন। তারাই বিভিন্ন দুর্বল শেয়ারে কারসাজি করে সুবিধা নিচ্ছেন।

‘ফোর্সড সেলের মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার তারা কম দরে কিনে নিচ্ছেন। কমিশনের উচিত হবে কারসাজিকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা, যাতে তারা বারবার বাজারকে ম্যানিপুলেট করার সাহস না পায়।’

এদিকে শেয়ারবাজারের সাম্প্রতিক সময়ের টানা পতন ঠেকাতে আবারও শেয়ারের মূল্যসীমায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে বিএসইসি এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেছে।

ওই আদেশে বলা হয়, এখন থেকে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর এক দিনে ৩ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না। বর্তমানে দরভেদে কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত দরপতন হতে পারে।

দেশের পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে আদেশে জানানো হয়েছে। সার্কিট ব্রেকারের এ সিদ্ধান্ত বুধবার থেকে কার্যকর করতে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে নির্দেশও দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘আজকের এই সার্কিট ব্রেকার আরোপ বাজারে কারসাজি রোধ করবে। এটি সন্দেহভাজন লেনদেন বন্ধ করবে। আর এ সিদ্ধান্তের ফলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও উচ্চ সম্পদশালী একক বিনিয়োগকারীরা আরও বেশি সক্রিয় হবে বলে আশা করছি।’

তিনি বলেন, ‘অনেক ভালো শেয়ার বর্তমানে আন্ডারভ্যালুতে আছে। এখানে তারা বিনিয়োগ করবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।’

সার্কিট ব্রেকার বাজারের দরপতন ফেরাতে ব্যর্থ হলে আবারও ফ্লোর প্রাইস দেয়ার কোনো সিদ্ধান্ত আছে কি না জানতে চাইলে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আশা করছি, আমাদের বাজারে আর কখনও ফ্লোর প্রাইস দিতে হবে না। শিগগিরই বাজার একটা স্থিতিশীল অবস্থানে ফিরবে।’

আরও পড়ুন:
শেয়ারের দাম দিনে ৩ শতাংশের বেশি কমবে না
ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে পুঁজিবাজার

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The share price will not fall more than 3 percent in a day
পুঁজিবাজার

শেয়ারের দাম দিনে ৩ শতাংশের বেশি কমবে না

শেয়ারের দাম দিনে ৩ শতাংশের বেশি কমবে না
শেয়ারের দাম কমার ক্ষেত্রে আগে মূল্যসীমা নির্ধারণ করা ছিল ১০ শতাংশ। তবে ঊর্ধ্বসীমা অর্থাৎ কোনো শেয়ারের দাম বাড়ার সীমা ১০ শতাংশ অপরিবর্তিত রেখেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিএসইসি।

দেশের পুঁজিবাজারে শেয়ারের দরপতনের গতি কমিয়ে আনার চেষ্টার অংশ হিসেবে এবার মূল্যসীমায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন থেকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ার আগের দিনের শেষ হওয়া দরের ভিত্তিতে ৩ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না।

শেয়ারের দাম কমার ক্ষেত্রে আগে মূল্যসীমা ছিল ১০ শতাংশ। তবে ঊর্ধ্বসীমা অর্থাৎ কোনো শেয়ারের দাম বাড়ার সীমা ১০ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বুধবার এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেছে। বৃহস্পতিবার থেকেই এ আদেশ কার্যকর হবে বলে আদেশে জানানো হয়েছে।

বিএসইসি জানিয়েছে, যেসব শেয়ার ফ্লোর প্রাইসের আওতায় আছে সেসব শেয়ারের ক্ষেত্রে নতুন আদেশ প্রযোজ্য হবে না।

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে বাজার সূচকের অবাধ পতন ঠেকাতে এর আগে ২০২২ সালের জুলাই শেষে প্রতিটি শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দিয়েছিল বিএসইসি। ফ্লোর প্রাইস ছিল ২০২২ সালের ২৮ জুলাই ও তার আগের চার দিনের ক্লোজিং প্রাইসের গড়।

বর্তমানে বেক্সিমকো, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি, মেঘনা পেট্রোলিয়াম ও শাহজীবাজার পাওয়ার কোম্পানির ক্ষেত্রে ওই ফ্লোর প্রাইস কার্যকর রয়েছে।

আরও পড়ুন:
লেনদেন ও সূচকে হতাশার মাঝে শেষ দিনে আশা
‘বিনিয়োগকারীদের ধারাবাহিক লভ্যাংশ দিতে সক্ষম বেস্ট হোল্ডিংস’
বাংলাদেশের পুঁজিবাজার দৃঢ় ও সম্ভাবনাময়: বিএসইসি চেয়ারম্যান
পুঁজিবাজারে ৮ বছরে বিনিয়োগকারী কমেছে ১৪ লাখ
পুঁজিবাজারে বিমা খাতের দাপট, সূচকের উত্থান

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The capital market is indicating to turn around

ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে পুঁজিবাজার

ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে পুঁজিবাজার ডিএসইর একটি ব্রোকারেজ হাউসে বিনিয়োগকারীরা। ফাইল ছবি
পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মেলে বুধবার। তিন শতাধিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বাড়ে ৫৮ পয়েন্ট। আর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে এসে মূল্যসূচকের বড় উত্থানের পাশাপাশি লেনদেনেও বাড়তি গতি এসেছে। ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে।

ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে পুঁজিবাজার। বুধবারের ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবারও দেশের পুঁজিবাজারে বড় উত্থান হয়েছে। সে সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের গতি।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার পাশাপাশি সবক’টি মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। ডিএসইতে দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে হাফ ডজনের বেশি প্রতিষ্ঠান।

পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মেলে বুধবার। তিন শতাধিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বাড়ে ৫৮ পয়েন্ট। তবে লেনদেন কমে সাড়ে ৪০০ কোটি টাকার নিচে নেমে আসে।

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে এসে মূল্যসূচকের বড় উত্থানের পাশাপাশি লেনদেনের গতিও কিছুটা ফিরে এসেছে। ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে।

এদিন পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ১৩ পয়েন্ট বেড়ে যায়। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দাম বাড়ার তালিকাও বড় হতে থাকে।

এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৩০৩টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৪টির। আর ৫০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

দাম বাড়ার তালিকায় থাকা ৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম একদিনে যতটা বাড়া সম্ভব ততটাই বেড়েছে। দিনের সর্বোচ্চ দামে এ সাত প্রতিষ্ঠানের বিপুল পরিমাণ শেয়ার ক্রয়ের আদেশ এলেও বিক্রিয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়ে। এর মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিস, শাহিনপুকুর সিরামিক, পেপার প্রসেসিং, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং এবং পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্স।

দাম বাড়ার ক্ষেত্রে এ সাত প্রতিষ্ঠান দাপট দেখানোর পাশাপাশি আরও প্রায় এক ডজনের প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার সর্বোচ্চসীমার কাছাকাছি চলে আসে। আর ৪৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ৪ শতাংশের ওপরে বেড়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৬৯ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৯৪১ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২৫ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৫৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৯৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণ বেড়ে ৬০০ কোটি টাকার ওপরে চলে এসেছে। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৬১০ কোটি ৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪২২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ১৮৭ কোটি ১৫ লাখ টাকা।

এই লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে বেস্ট হোল্ডিংয়ের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশের ২৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে গোল্ডেন সন।

এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, ফু-ওয়াং সিরামিক, মালেক স্পিনিং, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিস, রবি, গোল্ডেন হার্ভেস্ট এবং ওরিয়ন ফার্মা।

অপরদিকে সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৭৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া ২৩৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৭৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৭টির এবং ১৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১৭ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।

আরও পড়ুন:
‘বিনিয়োগকারীদের ধারাবাহিক লভ্যাংশ দিতে সক্ষম বেস্ট হোল্ডিংস’
বাংলাদেশের পুঁজিবাজার দৃঢ় ও সম্ভাবনাময়: বিএসইসি চেয়ারম্যান
পুঁজিবাজারে ৮ বছরে বিনিয়োগকারী কমেছে ১৪ লাখ
পুঁজিবাজারে বিমা খাতের দাপট, সূচকের উত্থান
পুঁজিবাজারে কারসাজি রোধে তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করা জরুরি

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Good news index in the capital market is the highest in 15 months

পুঁজিবাজারে সূচক ১৫ মাসে সর্বোচ্চ

পুঁজিবাজারে সূচক ১৫ মাসে সর্বোচ্চ ফাইল ছবি।
সপ্তাহের শেষ দিনে বৃহস্পতিবার ডিএসইতে বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে প্রধান মূল্যসূচক। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) মূল্যসূচক বেড়েছে। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসেই প্রধান মূল্যসূচক বাড়লো।

পুঁজিবাজারে সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বৃহস্পতিবার লেনদেন বেড়ে এক হাজার ৮৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। ২০২২ সালের ২০ সেপ্টেম্বরের পর এটাই সর্বোচ্চ লেনদেন হলো।

সপ্তাহের শেষ দিনে ডিএসইতে বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে প্রধান মূল্যসূচক। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) মূল্যসূচক বেড়েছে। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসেই প্রধান মূল্যসূচক বাড়লো। একই সঙ্গে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ২০২২ সালের ৮ নভেম্বরের পর বা ১৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে এসেছে।

বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়ে যায়। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকায় লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ৪২ পয়েন্ট বেড়ে যায়।

অবশ্য লেনদেনের শেষদিকে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমে যায়। পাশাপাশি দাম বাড়ার তালিকায় থাকা বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার হার কমে আসে। একই সঙ্গে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতাও কমে। এমনকি ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়া কোম্পানি নিয়ে গঠিত সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে।

লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ২১০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। দাম কমেছে ১৪০টির। দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৪টির।

দাম বাড়ার তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৩০টির দাম ৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে। এর মধ্যে হল্টেড হয়েছে ৭ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার।

ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২০ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৩৭৩ পয়েন্টে উঠে এসেছে। এর মাধ্যমে ২০২২ সালের ৮ নভেম্বরের পর সূচকটি সর্বোচ্চ অবস্থানে অবস্থান করছে। ২০২২ সালের ৮ নভেম্বর ডিএসইর প্রধান সূচক ছিল ৬ হাজার ৩৮৪ পয়েন্ট।

অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৩৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় শূন্য দশমিক ১৮ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৩৮৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

প্রধান মূল্যসূচক বাড়ার দিনে ডিএসইতে এক হাজার ৮৫৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় এক হাজার ৭৩০ কোটি ৪৩ লাখ টাকার। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ১২৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ২০২২ সালের ২০ সেপ্টেম্বরের পর সর্বোচ্চ লেনদেন হলো। ২০২২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে ২ হাজার ৮৩২ কোটি ৩০ লাখ টাকার লেনদেন হয়। এরপর আর দুই হাজার কোটি টাকার লেনদেনের দেখা মেলেনি।

এই লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার। কোম্পানিটির ৬৫ কোটি ৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আইএফআইসি ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬২ কোটি ৪৮ লাখ টাকার। ৫৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- মালেক স্পিনিং, ফরচুন সুজ, ফু-ওয়াং সিরামিক, ফু-ওয়াং ফুড, অলিম্পিক এক্সেসরিজ, এডভেন্ট ফার্মা এবং বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম।

অপর সিএসই-তে সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১২০ পয়েন্ট। এখানে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩০৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৫১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২০টির এবং ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৩৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ২৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা।

আরও পড়ুন:
লেনদেন ও সূচকে হতাশার মাঝে শেষ দিনে আশা
‘বিনিয়োগকারীদের ধারাবাহিক লভ্যাংশ দিতে সক্ষম বেস্ট হোল্ডিংস’
বাংলাদেশের পুঁজিবাজার দৃঢ় ও সম্ভাবনাময়: বিএসইসি চেয়ারম্যান
পুঁজিবাজারে বিমা খাতের দাপট, সূচকের উত্থান
পুঁজিবাজারে কারসাজি রোধে তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করা জরুরি

মন্তব্য

বাংলাদেশ
23 more Subatas floor price free returns to the capital market

পুঁজিবাজারে সুবাতাস, ‘ফ্লোর প্রাইস’মুক্ত আরও ২৩ কোম্পানি

পুঁজিবাজারে সুবাতাস, ‘ফ্লোর প্রাইস’মুক্ত আরও ২৩ কোম্পানি ফাইল ছবি।
ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারে বিএসইসি’র পদক্ষেপ যে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত, তা এক কার্যদিবসের ব্যবধানেই প্রমাণ হয়ে গেছে। ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। সোমবার সূচক বাড়ার পাশাপাশি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ছয় মাসের বেশি সময় পর লেনদেন হাজার কোটি টাকার ঘর ছাড়িয়েছে।

শেয়ারের ওপর থেকে বেঁধে দেয়া সর্বনিম্ন দর বা ‘ফ্লোর প্রাইস’ তুলে নেয়ার সুফল মিলতে শুরু করেছে দেশের পুঁজিবাজারে। ৩৫টি কোম্পানি বাদে বাকি সব শেয়ারের ওপর থেকে ‘ফ্লোর প্রাইস’ তুলে নেয়ার এক কার্যদিবস পরই সোমবার লেনদেন হাজার কোটি টাকার ঘর ছুঁয়েছে।

ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পরবর্তী কার্যদিবসে রোববার পুঁজিবাজারে সূচক ও লেনদেনে বড় নিম্নমুখিতা দেখা যায়। অবশ্য বাজার-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলের সক্রিয় ভূমিকায় ওইদিন আরও বড় পতনের হাত থেকে রক্ষা পায় স্টক এক্সচেঞ্জ।

তবে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিএসইসি’র পদক্ষেপ যে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত, তা প্রমাণ হয়ে গেছে পরবর্তী কার্যদিবসেই। ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাজার। সোমবার সূচক বাড়ার পাশাপাশি দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ছয় মাসেরও বেশি সময় পর লেনদেন হাজার কোটি টাকার ঘর স্পর্শ করেছে।

এমন পরিস্থিতিতে ফ্লোর প্রাইস বহাল রাখা ৩৫ কোম্পানির মধ্যে আরও ২৩ কোম্পানির সর্বনিম্ন দরসীমা সোমবার তুলে নিয়েছে বিএসইসি।

সংস্থাটির এমন সিদ্ধান্ত বাজারকে আগামী কয়েক দিনের জন্য কিছুটা নিম্নমুখী করতে পারে- এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বাজারে আরও সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক মো. আল-আমিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় ভূমিকার কারণে গত দুদিন আমাদের ধারণার তুলনায় মার্কেট অনেকটা ভালো আচরণ করেছে। ধারণা ছিল যে, এতগুলো শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস যেহেতু একবারে তোলা হয়েছে, সেহেতু কয়েক দিনের মধ্যেই ৫০০ পয়েন্ট পর্যন্ত সূচক কমতে পারে। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সাপোর্ট মার্কেটকে একটা স্ট্যাবল অবস্থানে রাখতে সাহায্য করেছে।’

নতুন চ্যালেঞ্জের জন্য তাদের আরও বেশি সক্রিয় হতে হবে বলে তিনি মনে করেন।

তবে নতুন করে ২৩ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়ার নেতিবাচক একটা দিক আগামী কয়েক দিন বাজারে দেখা যেতে পারে বলে মনে করেন বিশ্লেষক মো. আল-আমিন। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের আরও বেশি সংক্রিয় ভূমিকা অব্যাহত থাকলে এ ক্ষেত্রে বাজারের জন্য সহায়ক হতে পারে বলে মনে করেন এই বিশ্লেষক।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সোমবার লেনদেন শুরুর ২ মিনিট পর অতিরিক্ত বিক্রির চাপে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স প্রায় ৬০ পয়েন্ট কমে যায়। পরে অবশ্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণে সূচক বাড়তে থাকে। দিন শেষে সূচকটি ১৪ দশমিক শূন্য ৫ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৫৪ পয়েন্টে অবস্থান নেয়। এর আগের কার্যদিবস রোববার লেনদেন শেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ৬ হাজার ২৪০ পয়েন্টে।

ডিএসইএক্স সূচকটিকে পতনের দিকে ঠেলে দিতে সোমবার সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে জিপিএইচ ইস্পাত, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, ফরচুন সুজ, বিবিএসই ক্যাবলস ও সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড। তবে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, খান ব্রাদার্স পিপি, নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি), লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেডের ইতিবাচক ভূমিকায় সূচক দিন শেষে বেড়েছে।

ডিএসইর অন্য সূচকগুলোর মধ্যে এদিন লেনদেন শেষে শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ৬ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৬০ পয়েন্টে। আগের দিন লেনদেন শেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ১ হাজার ৩৭৪ পয়েন্টে।

বাছাইকৃত শেয়ারের সমন্বয়ে গঠিত ব্লু-চিপ সূচক ডিএস ৩০ দিনের ব্যবধানে ১০ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৪৮ পয়েন্টে। আগের দিন শেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ২ হাজার ১৩৭ পয়েন্টে।

ডিএসইতে সোমবার মোট ১ হাজার ৪২ কোটি ২১ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে। এর আগে এক্সচেঞ্জটিতে সবশেষ ১ হাজার কোটি টাকার ঘরে লেনদেন হয়েছিল গত বছরের ১৮ জুলাই। ওইদিন ডিএসইতে লেনদেন হয় ১ হাজার ৪৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ।

সোমবারের লেনদেন আগের কার্যদিবসের (রোববার) চেয়ে ৭৭ শতাংশ বেশি। ডিএসইতে এদিন লেনদেন হওয়া ৩৯২টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ২০৭টির, কমেছে ১৪৫টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৪০টি সিকিউরিটিজের বাজার দর।

এদিকে বাজারকে সক্রিয় রাখতে দেশের শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন ‘সিইও ফোরাম’ থেকে সাপোর্ট অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সোমবার পুঁজিবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার পর এমন সিদ্ধান্ত নেয় সংগঠনটি।

সিদ্ধান্ত অনুসারে, পুঁজিবাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রত্যেক ডিলার অ্যাকাউন্টে ১ থেকে ৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে। ডিলার অ্যাকাউন্ট থেকে কোনো শেয়ার বিক্রি করা হবে না। বিনিয়োগকারীদেরকে ইতিবাচকভাবে বোঝানোর চেষ্টা করা হবে। যেসব শেয়ারের ক্রেতা থাকবে না, সেখানে বিক্রির আদেশ বসানো হবে না। ট্রেডারদের এ বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হবে। ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের কারণে যাতে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত না হন বা বাজারে বিক্রির চাপ তৈরি না করেন, সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতেও বলা হবে সংগঠনটির পক্ষ থেকে।

১২ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস বহাল

পুঁজিবাজারে এখন তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের সংখ্যা ৩৯২টি। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার ৩৫৭টি শেয়ারদরের সর্বনিম্ন সীমা তুলে নেয় বিএসইসি। আর নতুন করে আজ আরও ২৩ কোম্পানির ওপর থেকে সীমা তুলে নেয়ার পর কেবল ১২ কোম্পানির ওপর ফ্লোর প্রাইস বহাল থাকল। নতুন এই ২৩ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হবে। ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার হওয়া সব কোম্পানির শেয়ারদর ওঠানামার সার্কিট ব্রেকার আগের মতোই ১০ শতাংশ রাখা হয়েছে। অর্থাৎ কোনো শেয়ারের দাম ১০ শতাংশের বেশি কমতে বা বাড়তে পারবে না।

যে ১২ কোম্পানির ওপর ফ্লোর প্রাইস বহাল থাকছে- আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি (বিএটিবিসি), বেক্সিমকো লিমিটেড, বিএসআরএম লিমিটেড, গ্রামীণফোন, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস, রেনাটা লিমিটেড, রবি আজিয়াটা ও শাহজীবাজার পাওয়ার লিমিটেড।

এই ১২ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস কবে তুলে নেয়া হতে পারে এমন প্রশ্নে বিএসইসির মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, ‘আগামী কয়েক দিনের লেনদেন ও বাজার পরিস্থিতি দেখে কমিশন এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। ফ্লোর ধরে রাখা কোম্পানিগুলোতে বিদেশি বিনিয়োগকারীও রয়েছেন। বাজারের প্রতি তারা যেন নেতিবাচক না হন, তাই পরের ধাপে এসব কোম্পানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

আরও পড়ুন:
পুঁজিবাজারে তারল্য বৃদ্ধিতে গভর্নরের সহযোগিতা চাইলেন বিএসইসি চেয়ারম্যান
লেনদেন ও সূচকে হতাশার মাঝে শেষ দিনে আশা
‘বিনিয়োগকারীদের ধারাবাহিক লভ্যাংশ দিতে সক্ষম বেস্ট হোল্ডিংস’
বাংলাদেশের পুঁজিবাজার দৃঢ় ও সম্ভাবনাময়: বিএসইসি চেয়ারম্যান

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Finally the capital market is free from floor price barriers but

অবশেষে ফ্লোর প্রাইসের বাধামুক্ত হলো পুঁজিবাজার, তবে…

অবশেষে ফ্লোর প্রাইসের বাধামুক্ত হলো পুঁজিবাজার, তবে…
বিএসইসি বৃহস্পতিবার এক আদেশ জারি করে পুঁজিবাজার থেকে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করে নেয়। একইসঙ্গে তাতে বলা হয়, দৈনিক লেনদেনের সার্কিট ব্রেকার অর্থাৎ সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন দরসীমা কার্যকর থাকবে। আর ৩৫টি কোম্পানি এখনও ফ্লোর প্রাইস-এর আওতায় থাকবে।

ফ্লোর প্রাইসের বাধামুক্ত হয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার পর অবশেষে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে এই পদক্ষেপ। তবে নির্দিষ্ট ৩৫টি কোম্পানি ফ্লোর প্রাইজের এই শর্তের মধ্যেই থেকে গেছে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ারের সর্বনিম্ন দরসীমা বেঁধে দেয়ার ফ্লোর প্রাইজ জারি হয়েছিলো প্রায় দেড় বছর আগে। অবশ্য এর আগে ২০২০ সালে আরও একবার ফ্লোর প্রাইস দিয়ে তা ২০২১ সালে তুলে নেয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-বিএসইসি। তবে বিনিয়োগকারীদের পুঁজির সুরক্ষা দিতে এতো দীর্ঘ সময় ধরে ফ্লোর প্রাইস এর আগে দেখা যায়নি দেশের পুঁজিবাজারে।

বিএসইসি বৃহস্পতিবার এক আদেশ জারি করে পুঁজিবাজার থেকে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করে নেয়। ওই আদেশে একইসঙ্গে জানানো হয়, ৩৫টি কোম্পানি এখনও ফ্লোর প্রাইস-এর আওতায় থাকবে। কবে নাগাদ ওইসব কোম্পানির ওপর ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা হবে তা জানায়নি কমিশন।

আদেশে কমিশন জানিয়েছে, ৩৫টি প্রতিষ্ঠান ছাড়া বাকি কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে আগের মতোই স্বাভাবিক লেনদেন হবে। তবে দৈনিক লেনদেনের সার্কিট ব্রেকার অর্থাৎ সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন দরসীমা কার্যকর থাকবে। বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী একদিনে কোনো শেয়ারের দর সর্বোচ্চ দশ শতাংশ বাড়তে পারে, কমার ক্ষেত্রেও সমপরিমাণ দর কমতে পারে।

জাতীয় নির্বাচন ঘিরে পুঁজিবাজার নিয়ে শঙ্কায় ছিলেন অনেক বিনিয়োগকারী। তবে নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়ে নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর তাদের সেই শঙ্কা অনেকাংশেই কেটেছে। সুদিন ফিরতে শুরু করেছে দেশের দুই পুঁজিবাজারেই।

সদ্য শেষ হওয়া সপ্তাহে আগের সপ্তাহের চেয়ে লেনদেন বেড়েছে প্রায় ৬৫ শতাংশ। পাশাপাশি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ-ডিএসই ও চট্টগ্রাম স্টক একচেঞ্জ-সিএসইতে বেড়েছে সবগুলো সূচক। পুঁজিবাজার নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠতে শুরু করেছেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরাও।

ইতোমধ্যে বুধবার ঘোষণা করা হয়েছে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের মুদ্রানীতি। টানা কয়েকদিন বাড়তে থাকা পুঁজিবাজারে বৃহস্পতিবার অবশ্য কিছুটা দর সংশোধন হয়েছে। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছে প্রায় সাড়ে ৯ পয়েন্ট।

বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম সম্প্রতি নিউজবাংলাকে এক সাক্ষাৎকারে জানান, যে কোনো সময় প্রত্যাহার হতে পারে ফ্লোর প্রাইস। যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, বাজার তার স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারবে বলে মনে করে নিয়ন্ত্রণ কমিশন।

অবশেষে তার সেই কথারই প্রতিফলন ঘটলো ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে।

এদিকে বিনিয়োগকারীরা ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। শিমুল আহমেদ নামের এক বিনিয়োগকারীর মন্তব্য, এতে সাময়িকভাবে সূচকের কিছুটা পতন হলেও দীর্ঘমেয়াদে লাভবান হওয়া যাবে। তিনি বলেন, ‘ফ্লোর প্রাইস আজ হোক কাল হোক প্রত্যাহার করতে হতোই। এখানে বহু বিনিয়োগকারীর মূলধন আটকে আছে। তবে আমার কাছে মনে হয় কমিশন যথাসময়েই সিদ্ধান্তটা নিয়েছে’।

এছাড়া ৩৫টি কোম্পানির ওপর এখনও বহাল থাকা ফ্লোর প্রাইসও দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি এই বিনিয়োগকারীর।

বিএসইসির আদেশে যে কোম্পানিগুলোর ওপর ফ্লোরপ্রাইস বলবৎ থাকার কথা বলা হয়েছে সেগুলো হলো- আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, বারাকা পাওয়ার, বিএটিবিসি, বেক্সিমকো, বিএসসিসিএল, বিএসআরএম লিমিটেড, বিএসআরএম স্টিল, কনফিডেন্স সিমেন্ট, ডিবিএইচ, ডোরিন পাওয়ার, এনভয় টেক্সটাইল, গ্রামীণফোন, এইচআর টেক্সটাইল, আইডিএলসি, ইনডেক্স অ্যাগ্রো, ইসলামী ব্যাংক, কেডিএস লিমিটেড, কেপিসিএল, কট্টালি টেক্সটাইল, মালেক স্পিনিং, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল পলিমার, ওরিয়ন ফার্মা, পদ্মা অয়েল, রেনাটা, রবি, সায়হাম কটন, শাশা ডেনিমস, সোনালী পেপার, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, শাইনপুকুর সিরামিকস, শাহজীবাজার পাওয়ার, সামিট পাওয়ার ও ইউনাইটেড পাওয়ার।

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং শ্রীলঙ্কার দেউলিয়া ঘোষণাজনিত পরিস্থিতিতে দেশের পুঁজিবাজারে বড় ধরনের দরপতনের শঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ২৮ জুলাই দ্বিতীয়বারের মতো ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে বিএসইসি। তার আগে কোভিড-১৯ এর প্রকোপ শুরু হওয়ার পর ২০২০ সালের মার্চে একবার ফ্লোর প্রাইস আরোপ করা হয়েছিল।

তবে দ্বিতীয় ধাপের ফ্লোর প্রাইসের কারণে পুঁজিবাজারে শেয়ার কেনাবেচা তলানিতে নেমে আসে। দীর্ঘদিন ধরে ফ্লোর প্রাইস বহাল থাকায় বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি ব্রোকার হাউজ, মার্চেন্ট ব্যাংক এবং অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলোও সংকটে পড়ে।

আরও পড়ুন:
পুঁজিবাজারে তারল্য বৃদ্ধিতে গভর্নরের সহযোগিতা চাইলেন বিএসইসি চেয়ারম্যান
লেনদেন ও সূচকে হতাশার মাঝে শেষ দিনে আশা
‘বিনিয়োগকারীদের ধারাবাহিক লভ্যাংশ দিতে সক্ষম বেস্ট হোল্ডিংস’
বাংলাদেশের পুঁজিবাজার দৃঢ় ও সম্ভাবনাময়: বিএসইসি চেয়ারম্যান
পুঁজিবাজারে ৮ বছরে বিনিয়োগকারী কমেছে ১৪ লাখ

মন্তব্য

p
উপরে