চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত খেলাপি ঋণ সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধির কারণ ২০টি ব্যাংক। এর মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১৪টি ব্যাংক। বাকিগুলোর মধ্যে একটি সরকারি ও ছয়টি বেসরকারি, যেগুলো এখনও তালিকাভুক্ত হয়নি।
মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৪ হাজার ৬২৮ কোটি টাকা। এর মধ্যেও ২৮টি সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকে খেলাপি ঋণ কমেছে। এর মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মোট ১৮টি।
তার পরও খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংক বা এনবিএল। এই একটি ব্যাংকেই খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ হাজার কোটি টাকার বেশি।
তিন মাসে এই একটি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ হাজার ৯১ কোটি টাকা। হঠাৎ করে এত বেশি খেলাপি কেন বাড়ল, সে বিষয়ে ব্যাংকটির পক্ষ থেকে কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন পর্যালোচনায় উঠে এসেছে এমন তথ্য।
মোট ঋণ ও খেলাপি কত
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, জুন পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১২ লাখ ১৩ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৯৯ হাজার ২০৫ কোটি টাকা। বিতরণকৃত ঋণের ৮ দশমিক ১৮ শতাংশ খেলাপি হয়ে গেছে।
এর মধ্যে পুঁজিবাজারের বাইরে থাকা ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে মোট ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৯৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি মোট ৫২ হাজার ৪৭৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ এসব ব্যাংকে খেলাপির হার ১৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
অন্যদিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩২ ব্যাংক বিতরণ করেছে ৮ লাখ ৭৬ হাজার ৬৮ কোটি টাকার ঋণ। এর মধ্যে খেলাপির পরিমাণ ৪৬ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা। শতকরা হার ৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
অর্থাৎ পুঁজিবাজারের ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ তালিকাভুক্ত নয়, এমন ব্যাংকের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশ।
খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়া ২০ ব্যাংকের মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক ১৪টি।
যেসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণ বেড়েছে
ন্যাশনাল
জুন শেষে মোট ঋণ ৪২ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ১০ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
মার্চে তাদের মোট ঋণ ছিল ৪৩ হাজার ২০৯ কোটি টাকা। আর ঋণের বিপরীতে খেলাপি ছিল ২ হাজার ৩০৪ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ হাজার ৯১ কোটি টাকা। শতকরা হিসাবে এটি ৫ দশমিক ০২ শতাংশ।
এবি
জুন পর্যন্ত ব্যাংকটি মোট বিতরণ করেছে ২৮ হাজার ২১২ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৫ হাজার ২৮৪ কোটি টাকা, যা ঋণের ১৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
মার্চ শেষে ব্যাংকটি ২৭ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছিল। এর মধ্যে খেলাপি ছিল ৪ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা, যা ঋণের ১৬ দশমিক ৭০ শতাংশ।
তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ দশমিক ০৩ শতাংশ।
ঢাকা
জুন পর্যন্ত ব্যাংকটি মোট বিতরণ করেছে ১৯ হাজার ৬৪৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৮৮৩ কোটি টাকা, যা ঋণের ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ।
মার্চ শেষে ব্যাংকটি ১৯ হাজার ৫৩৩ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছিল। এর মধ্যে খেলাপি ছিল ৬১৬ কোটি টাকা, যা ঋণের ৩ দশমিক ১৫ শতাংশ।
তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
যমুনা
খেলাপি ঋণ বাড়লেও ঋণ বিতরণ কমেছে। জুন পর্যন্ত ব্যাংকটি মোট বিতরণ করেছে ১৫ হাজার ৯৫৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৬০০ কোটি টাকা, যা ঋণের ৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
মার্চ শেষে ব্যাংকটি ২০ হাজার ২৩২ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছিল। এর মধ্যে খেলাপি ছিল ৫৬৩ কোটি টাকা, যা ঋণের ২ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ০ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
ইউসিবি
জুন পর্যন্ত ব্যাংকটি মোট বিতরণ করেছে ৩৮ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ১ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা, যা ঋণের ৩ দশমিক ৭২ শতাংশ।
মার্চ শেষে ব্যাংকটি ৩৬ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছিল। এর মধ্যে খেলাপি ছিল ১ হাজার ১১২ কোটি টাকা, যা ঋণের ৩ দশমিক ০৬ শতাংশ।
তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ০ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
ইস্টার্ন
জুন পর্যন্ত ব্যাংকটি মোট বিতরণ করেছে ২৩ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৮৬৪ কোটি টাকা, যা ঋণের ৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
মার্চ শেষে ব্যাংকটি ২১ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছিল। এর মধ্যে খেলাপি ছিল ৬৫৪ কোটি টাকা, যা ঋণের ২ দশমিক ৯৮ শতাংশ।
তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ০ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
ওয়ান
জুন পর্যন্ত ব্যাংকটি মোট বিতরণ করেছে ২২ হাজার ২১২ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ২ হাজার ৪৮ কোটি টাকা, যা ঋণের ৯ দশমিক ২২ শতাংশ।
মার্চ শেষে ব্যাংকটি ২২ হাজার ৬৯ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছিল। এর মধ্যে খেলাপি ছিল ১ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা, যা ঋণের ৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ০ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
স্ট্যান্ডার্ড
জুন পর্যন্ত ব্যাংকটি মোট বিতরণ করেছে ১৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৯৩৬ কোটি টাকা, যা ঋণের ৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ।
মার্চ শেষে ব্যাংকটি ১৬ হাজার ১২০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছিল। এর মধ্যে খেলাপি ছিল ৮৬৪ কোটি টাকা, যা ঋণের ৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ০ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
উত্তরা
জুন পর্যন্ত ব্যাংকটি মোট বিতরণ করেছে ১৩ হাজার ৪৩৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ১ হাজার ৪০ কোটি টাকা, যা ঋণের ৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
মার্চ শেষে ব্যাংকটি ১৩ হাজার ৮৪ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছিল। এর মধ্যে খেলাপি ছিল ৯৫০ কোটি টাকা, যা ঋণের ৭ দশমিক ২৬ শতাংশ।
তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ০ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
সিটি
জুন পর্যন্ত ব্যাংকটি মোট বিতরণ করেছে ২৯ হাজার ১৩৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ১ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা, যা ঋণের ৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
মার্চ শেষে ব্যাংকটি ২৯ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছিল। এর মধ্যে খেলাপি ছিল ১ হাজার ১৮৭ কোটি টাকা, যা ঋণের ৪ দশমিক ০৩ শতাংশ।
তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ০ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
এমটিবি
জুন পর্যন্ত ব্যাংকটি মোট বিতরণ করেছে ২১ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ১ হাজার ১৭৮ কোটি টাকা, যা ঋণের ৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
মার্চ শেষে ব্যাংকটি ১৯ হাজার ১৮৭ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছিল। এর মধ্যে খেলাপি ছিল ১ হাজার ৯ কোটি টাকা, যা ঋণের ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ।
তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ০ দশমিক ২৩ শতাংশ।
ব্যাংক এশিয়া
জুন পর্যন্ত ব্যাংকটি মোট বিতরণ করেছে ২৪ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৬৮৭ কোটি টাকা, যা ঋণের ২ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
মার্চ শেষে ব্যাংকটি ২৪ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছিল। এর মধ্যে খেলাপি ছিল ৬১৮ কোটি টাকা, যা ঋণের ২ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ০ দশমিক ১৭ শতাংশ।
ফার্স্ট সিকিউরিটি
জুন পর্যন্ত ব্যাংকটি মোট বিতরণ করেছে ৪৪ হাজার ৯৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ১ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা, যা ঋণের ৩ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
মার্চ শেষে ব্যাংকটি ৪৩ হাজার ৫৩২ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছিল। এর মধ্যে খেলাপি ছিল ১ হাজার ৬৬৩ কোটি টাকা, যা ঋণের ৩ দশমিক ৮২ শতাংশ।
তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ০ দশমিক ১৭ শতাংশ।
সাউথইস্ট
জুন পর্যন্ত ব্যাংকটি মোট বিতরণ করেছে ৩২ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ১ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা, যা ঋণের ৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
মার্চ শেষে ব্যাংকটি ৩২ হাজার ২৮৪ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছিল। এর মধ্যে খেলাপি ছিল ১ হাজার ৪১২ কোটি টাকা, যা ঋণের ৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ০ দশমিক ০৯ শতাংশ।
পুঁজিবাজারের বাইরে যেসব ব্যাংক
বাংলাদেশ কমার্স
জুন পর্যন্ত ব্যাংকটি মোট বিতরণ করেছে ২ হাজার ২৬৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ১ হাজার ২৩২ কোটি টাকা, যা ঋণের ৫৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
মার্চ শেষেও ব্যাংকটির ঋণ বিতরণ একই ছিল। ওই সময় খেলাপি ছিল ১ হাজার ১৪০ কোটি টাকা, যা ঋণের ৫০ দশমিক ৩১ শতাংশ।
তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
এনআরবি
জুন পর্যন্ত ব্যাংকটি মোট বিতরণ করেছে ৩ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ২৮৭ কোটি টাকা, যা ঋণের ৭ দশমিক ২৩ শতাংশ।
মার্চ শেষে ব্যাংকটি ৪ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছিল। এর মধ্যে খেলাপি ছিল ১৯৩ কোটি টাকা, যা ঋণের ৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
অগ্রণী
জুন পর্যন্ত ব্যাংকটি মোট বিতরণ করেছে ৪৯ হাজার ৮৬২ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৭ হাজার ৩০৪ কোটি টাকা, যা ঋণের ১৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
মার্চ শেষে ব্যাংকটি ৪৭ হাজার ৮৭৯ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছিল। এর মধ্যে খেলাপি ছিল ৬ হাজার ৫৬৬ কোটি টাকা, যা ঋণের ১৩ দশমিক ৭১ শতাংশ।
তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ০ দশমিক ৯৮ শতাংশ।
গ্লোবাল ইসলামী
জুন পর্যন্ত ব্যাংকটি মোট বিতরণ করেছে ৯ হাজার ৮২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ২১৬ কোটি টাকা, যা ঋণের ২ দশমিক ২১ শতাংশ।
মার্চ শেষে ব্যাংকটি ৯ হাজার ৬০১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছিল। এর মধ্যে খেলাপি ছিল ১০৫ কোটি টাকা, যা ঋণের ১ দশমিক ১০ শতাংশ।
তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১ দশমিক ১১ শতাংশ।
মধুমতি
জুন পর্যন্ত ব্যাংকটি মোট বিতরণ করেছে ৩ হাজার ৮৬৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ১০৬ কোটি টাকা, যা ঋণের ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
মার্চ শেষে ব্যাংকটি ৩ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছিল। এর মধ্যে খেলাপি ছিল ৬৬ কোটি টাকা, যা ঋণের ১ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১ দশমিক ০৫ শতাংশ।
মিডল্যান্ড
জুন পর্যন্ত ব্যাংকটি মোট বিতরণ করেছে ৪ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৭৩ কোটি টাকা, যা ঋণের ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
মার্চ শেষে ব্যাংকটি ৪ হাজার ৯৮১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছিল। এর মধ্যে খেলাপি ছিল ৭২ কোটি টাকা, যা ঋণের ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ০ দশমিক ৩০ শতাংশ।
আরও পড়ুন:পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
মন্তব্য