হেফাজতে ইসলামের সকাল-সন্ধ্যা হরতালে অনেকটা আতঙ্ক বিরাজ করছে রাজধানী ঢাকায়। সড়কগুলোকে মানুষের চলাফেরা যেমন কম লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তেমনি যানবাহনও চলছে কম।
সায়েদাবাদ-সাইনবোর্ড
সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল দেখা যায়, সকাল থেকে দূর পাল্লার বাস ছেড়েছে কমই। তবে হরতালকারীদের আধিপত্য বেশি নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায়। পৌনে একটার দিকেও এলাকাটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ ছিল হরতালকারীদের। এই এলাকায় কোনো যানবাহন চলাচল দেখা যায়নি।
সকাল থেকে যান চলাচল বন্ধ থাকার পর বেলা সাড়ে ১০টার দিকে কিছুটা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আটকে পড়া গাড়িগুলো সামনে গার্ড দিয়ে সাইনবোর্ড মোড় থেকে কাঁচপুরের দিকে কিছুটা এগিয়ে যায়। সানারপাড় পর্যন্ত আসার পর হরতাল সমর্থকদের বাধায় থামতে হয়।
গাড়িগুলো আটকে পড়ার পর ইট পাটকেল ছুড়া শুরু করে হরতাল সমর্থকরা। বিজিবি পাল্টা গুলি ছুড়ে। হরতাল সমর্থকদের অন্তত ১০টি বাস ও প্রাইভেটকার ভাঙচুর করতে দেখা গেছে।
গুলি ছোড়ার শব্দও শোনা গেছে। হরতাল সমর্থকদের দাবি, গুলিতে দুজন আহত হয়েছে।
অবশ্য সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল কালাম জানালেন, হরতালের কারণে বাসস্ট্যান্ড থেকে কোনো রুটের বাস চলাচল থেমে নেই।
তিনি বলেন, ‘আমরা পরিবহন মালিক শ্রমিকরা এই অবৈধ হরতাল প্রত্যাখ্যান করেছি। সকাল থেকে সাইনবোর্ড এলাকা অবরুদ্ধ থাকায়, ঢাকা চট্টগ্রাম রুটের বাসগুলো আটকা পড়ে আছে। ঢাকা সিলেট রুটের বাস চলছে ডেমরা রাস্তা ধরে। অন্যদিকে খুলনা বরিশালের বাসগুলো নির্বিঘ্নে চলাচল করছে।’
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড়ে সড়কে টহলরত বিজিবির সাঁজোয়া যান। ছবি: সাইফুল ইসলাম
মহাখালী
বাস ও যাত্রী চলাচলও কম দেখা গেছে মহাখালী বাস টার্মিনালে। আশপাশের দোকানপাটও বন্ধ। এই এলাকার ফিলিং স্টেশনগুলোতে অন্যান্য দিন ভিড় থাকলেও এদিন দেখা গেল অনেকটা ফাঁকা।
আবেদিন সুলতান নামে এক পথচারী নিউজবাংলাকে বলেন, টিভিতে দেখে ভাবলাম রাস্তাতেই বের হওয়া যাবেনা। বাট ইমার্জেন্সি হওয়ায় ভয়ে ভয়েই বের হলাম। দেখলাম যে পরিস্থিতি মোটামোটি স্বাভাবিকই আছে।
পল্টন-শাহবাগ
একই চিত্র পল্টন, বায়তুল মোকাররম প্রেস ক্লাব, শাহবাগ ও সায়েন্সল্যাব এলাকায়। যান চলাচল স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা কম। আর হরতাল থাকায় প্রেস ক্লাব ঘিরেও নেই তেমন কোনো কর্মসূচি। জনমনে যেন আতঙ্ক। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।
শাহবাগ মোড়ে প্রতিদিন তীব্র যানজট লেগে থাকলেও হরতালে অনেকটাই ফাঁকা। যাত্রীদের ভিড়ও খুব বেশ দেখা যায়নি ৷
তবে সকাল থেকে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে নিউজবাংলাকে জানান দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য।
নাম প্রকামে অনিচ্ছুক এই পুলিশ সদস্য বলেন, ‘ভোর থেকেই দায়িত্ব পালন করছি৷ এখন পর্যন্ত খারাপ কিছু ঘটতে দেখিনি ৷ তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় গাড়ি কম চলছে।’
অফিসের উদ্দেশে শাহবাগ মোড়ে গাড়ির অপেক্ষায় থাকা কামরুল ইসলাম নামের এক কর্মজীবী বলেন, ‘আমার কাজ তো বন্ধ হয়নি৷ হরতাল, তারপরও রিস্ক নিয়ে যেতে হচ্ছে।’
হেফাজতের হরতালে বিরক্ত প্রকাশ করেন দেওয়ান গাড়ির চালক নুরুল ইসলাম। বলেন, ‘তাদের লোক মারা গেছে ঠিক আছে৷ কিন্তু এটির প্রতিবাদ তারা অন্যভাবেও করতে পারতো। এখন আমাদের রিস্ক নিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। যাত্রীও তেমন নেয়।’
হাতিরঝিল থেকে মিরপুর
মোটরসাইকেলে করে হাতিরঝিল, ফার্মগেট, সংসদ ভবন, শ্যামলী, টেকনিক্যাল হয়ে মিরপুর এলাকা ও গাবতলী এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে যান ও যাত্রী চলাচল অনেক কম। কিছু বাস চলতে দেখা গেলেও তেমন যাত্রী ছিল না। মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
টেকনিক্যাল মোড়ে অপেক্ষমান শহিদুল ইসলাম নামে এক পাঠাও চালক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হরতাল তেমন বেশি দেখা না গেলেও মানুষ আতঙ্কে বের হচ্ছে না। ফলে যাত্রীও পাচ্ছি না। অন্যদিন দাঁড়াতেই যাত্রী পেয়ে যাই। আজ দাঁড়িয়ে থেকেও যাত্রী পাচ্ছি না।’
গাবতলী বাস টার্মিনাল
গাবতলী বাস টার্মিনালে দেখা গেছে দূর পাল্লার রুটের যাত্রী সংখ্যা খুবই কম। ফলে কম সংখ্যায় গাড়ি ছাড়ছেন বলে জানালেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
মাগুরা মোহাম্মদপুর রুটে চলাচল করে গোল্ডেন লাইন পরিবহন। ওই পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার জসিমউদ্দিন জানান, ‘আজকে গাড়ি অন্য স্বাভাবিক দিনের চেয়ে কম, কারণ যাত্রী সংখ্যা কম। না হলে আমরা গাড়ি ছাড়তাম। সকালে একটি গাড়ি গাবতলী ছেড়ে গেছে। তবে দুপুর থেকে গাড়ি আছে।’
সোহাগ পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার মো. উজ্জ্বল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজকে অন্য স্বাভাবিক দিনের চেয়ে কম। এ কারণে গাড়িও আমরা কম ছেড়েছি।’
ঢাকা থেকে কুড়িগ্রামের যাত্রী রফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে তবে কম। তিনি বলেন, ‘হরতালে কোনো জরুরি কাজ ছাড়া আসলে কেউ কোথাও যেতে চায় না। মানুষের মধ্যে তো আতঙ্ক রয়েছেই।’
সদরঘাট
মাঝেমধ্যে দু একটি লোকাল পাবলিক বাস চলাচল করলেও তেমন কোনো যানবাহন চলাচল করছে না। রাস্তা-ঘাট অনেকটাই ফাঁকা। সদরঘাট এলাকা থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যেতে দেখা যায়নি।
তবে বাবুবাজার ব্রিজের নিচে থেকে বেড়িবাঁধ দিয়ে লোকাল বাস, লেগুনা, সিএনজি চলাচল সাভাবিকভাবেই করছে। তবে সদরঘাট থেকে খুবই কম সংখ্যক পরিবহন গাজীপুর বা গাবতলীর দিকে ছেড়ে গেছে বলে জানলেন বাংলা বাজারের বইয়ের ব্যবসায়ী নিরুপ ঘোষ।
নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যে মানুষ অনেকটা শঙ্কার যায়গা থেকেই সাভাবিক চলাচল বন্ধ করেছে। কারণ, হরতালকারীরা যদি হঠাৎ করে আক্রমণ চালায় তাতে সমস্যা বা ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।’
তবে আদালতের কার্যক্রম সাভাবিকভাবেই চলছে।
সদরঘাট এলাকায় বিভিন্ন মোড়ে কড়া পুলিশ পাহারা চলছে। যদিও সকাল থেকে হরতালকারীদের কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি। তবে সাধারণ মানুষ বিষয়টি নিয়ে খানিকটা আশঙ্কায় রয়েছে।
গুলশান রামপুরা বাড্ডা
রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা, গুলশান-১ পুলিশ প্লাজা, রামপুরা, মেরুল বাড্ডা, মধ্যবাড্ডা, উত্তর ও দক্ষিণ বাড্ডা এলাকায় যান চলাচল অন্য দিনের তুলনায় কম দেখা গেছে। যাত্রীও কম।
এসব এলাকায় অন্যান্য দিন যানজট দেখা গেলেও এদিন ছিল অনেকটাই ফাঁকা। মোড়ে মোড়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবস্থান দেখা যায়। তবে সকাল থেকে এসব এলাকায় কোথাও হরতালে সমর্থনে কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি।
মালিবাগ বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী আশরাফুল ইসলাম, ‘আমার কর্মস্থল গুলশান প্রতিদিন মগবাজার পার হয়ে হাতিরঝিল মধ্যে দিয়ে অফিসে যেতে হয়। অন্যদিন মগবাজার মোড়ে ১৫ মিনিট জ্যামে বসে থাকতে হয়। তবে আজ হরতাল থাকার কারণে জ্যাম ছিল না। যানবাহন অন্য দিনের তুলনায় কম ছিল। ফলে ১৫ মিনিট আগেই তিনি অফিসে পৌঁছেছেন তিনি।’
এয়ারপোর্ট-উত্তরা
এয়ারপোর্ট ও উত্তরা এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে স্থানীয় পর্যায়ে সিএনজি চালিত অটো রিকশা অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিক। তবে টঙ্গী, গাজীপুর রোডে বাস চলাচল তুলনামূলক কম। রাস্তাঘাট অনেকটাই ফাঁকা।
রাস্তার মোড়ে মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দেখা গেলেও হরতালের কোনো আলামত চোখে পড়েনি।
ফুডপান্ডার এককর্মী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অন্যদিন সাইকেলে চলাচল করলে জ্যামের কারণে মোড়ে মোড়ে থেমে যেতে হয়। আজ যানবাহন কম থাকায় রাস্তা ফাঁকা। চলাচলে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।’
হরতালে বাস চলাচলে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি বলে দাবি করলেন পরিবহন মালিক সমিতির ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. আবুল কালাম। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘সকাল ছয়টা থেকে নিয়মিত আমাদের মহাখালী টার্মিনাল থেকে সকল রুটের বাস চলাচল করছে। যাত্রীরা আসছেন আমরাও যাত্রীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
‘গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখার এমন কোনো সিদ্ধান্ত আমাদের নেই। আমরা হরতালের সঙ্গে সম্পৃক্ত না। সকাল থেকে এখন পযর্ন্ত আমাদের গাড়ি চলাচলে কোনো বিঘ্ন সৃষ্টি হয়নি। তবে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চুরখাই বাজারে ঢিল ছুড়ে আমাদের চার-পাঁচটি গাড়ির গ্লাস ভেঙে দিয়েছে।’
আরও পড়ুন:ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হবে। সবাই ভোট দিতে পারবেন। ভোট হবে দিনের বেলা, রাতের বেলা নয়। নতুন নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পুরোনো ঠিকানায় চলে যাব। আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। সুযোগ সব সময় আসে না। একবার সুযোগ আসতে ৫৪ বছর লেগে যায়। আবার কবে সুযোগ আসবে জানি না। তাই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ঐক্যবদ্ধ হই। ঐক্যই শক্তি, শক্তিই শান্তি।’
রাজধানীর বকশিবাজারে গতকাল বুধবার সকালে সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার ২৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে ৫৪ বছর পর সুযোগ এসেছে। এ সুযোগ কোনোভাবেই হাতছাড়া করা যাবে না।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘অতি আধুনিক শিক্ষার নামে মাদ্রাসা শিক্ষায় কোরান-হাদিস থেকে সরে গিয়ে কোণঠাসা হয়ে গেছে। মনে রাখতে হবে মাদ্রাসা শিক্ষা বিশেষায়িত শিক্ষা। আধুনিকতার পাশাপাশি মাদ্রাসা শিক্ষার মূল ভিত্তি থাকতে হবে কোরান এবং হাদিস, ফেকাহ।’
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশে আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি মাদ্রাসার ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। আলিয়া পদ্ধতির মাদ্রাসার অবদান স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মতো। অনেক যোগ্য ব্যক্তি এখানে তৈরি হয়েছেন। আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি মাদ্রাসার ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। আরবি, ইংরেজি জানলে বিভিন্ন দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও বৃত্তি পাবেন।’
রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনে যুগ যুগ ধরে আলিয়া মাদ্রাসা ভূমিকা রাখছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ধারা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা করি। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতির নামে দুর্বৃত্তপনা বন্ধ করতে হবে। এ সময় ঐক্যের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমদের আল্লাহ এক, কোরান এক, কেবলা এক। এই মিল আমাদের এক প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসবে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, বাহিরের ইন্ধনে দুষ্কৃতকারীরা পূজাকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছিল। তারা সফল হতে পারেনি।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের ইছাপুরায় শ্রী শ্রী সার্বজনীন দুর্গাপূজা মণ্ডপ পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, পূজার শুরুতে ধর্ষণের ঘটনা প্রচার করে পূজাকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হয়েছে। এ কাজে বাহিরের ইন্ধন ছিল কিন্তু দুষ্কৃতকারীরা সফল হতে পারেনি।
এবার বাংলাদেশের সব জায়গায় ভালোভাবে উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে পূজা সম্পন্ন হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিতিশীল বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, দুর্গাপূজা ও বৌদ্ধদের বিজু উৎসব যাতে ভালোভাবে হতে না পারে তার জন্য পার্শ্ববর্তী দেশের সহযোগিতায় কিছু সন্ত্রাসী এ ধরনের কাজ করেছে।
তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসন এবং বিশেষ করে পূজা কমিটির সহযোগিতায় এ বছর শান্তিপূর্ণভাবে পূজা সম্পন্ন হয়েছে। এ জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা আক্তার, সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল ) মো. ইব্রাহিম, পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বাদর পাল। সূত্র : বাসস
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দ্রুত প্রত্যাহার হবে এমন কোন সম্ভাবনা নেই।
বরিশাল নগরীর শংকর মঠ পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আজ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যখন একটা দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়, স্থায়ী কি অস্থায়ী এ ধরনের প্রশ্ন থাকে। আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের উপর দেয়া নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়া হবে এরকম কোনো সম্ভাবনা আমি দেখছি না।
বিদেশি গণমাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা বলেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অশান্ত পাহাড় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পাহাড়কে যারা অশান্ত করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সরকার।
তিনি আজ দুপুরে বরিশাল সার্কিট হাউজে পৌঁছে নগরীর নতুন বাজার সংলগ্ন শংকর মঠ পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সাঙ্গে সাক্ষাৎ ও কুশল বিনিময় করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- বরিশাল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, পুলিশ সুপার মো. শরীফ উদ্দীন, শংকর মঠ পূজা মণ্ডপ কমিটির সভাপতি কানু লাল সাহা ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক তম্ময় তপু প্রমুখ।
বিদেশে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থের একটি অংশ আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আশাবাদী অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি মঙ্গলবার এ কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মাধ্যমে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়া ক্রমান্বয়ে এগোচ্ছে। এটি সময়সাপেক্ষ বিষয়, একদিনে সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, যারা বিদেশে টাকা পাচার করে তারা সাধারণত খুব কৌশলী ও প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষ হয়। ফলে ফেরত আনার কাজ দীর্ঘমেয়াদি ও জটিল হয়ে পড়ে।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘অর্থ ফেরত আনা মানে সুইস ব্যাংকে ফোন দিয়ে টাকা নিয়ে আসা নয়। আন্তর্জাতিক আইনি ও আর্থিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই এটি করতে হয়। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে কিছু অগ্রগতি হয়েছে এবং বেশ কিছু বিখ্যাত আইনি সংস্থার সঙ্গে আলোচনা চলছে। কিছু নির্দিষ্ট বিচার ব্যবস্থার সঙ্গেও আলোচনা এগোচ্ছে। আমরা আশা করি ফেব্রুয়ারির মধ্যে কিছু ফল পাওয়া যাবে।’
অর্থ উপদেষ্টা জানান, সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ইতোমধ্যে ১১-১২ টি মানিলন্ডারিং মামলা চিহ্নিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট সম্পদের তদন্ত অব্যাহত আছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক সম্পদ জব্দ করেছে, বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করেছে এবং সংশ্লিষ্টদের পাসপোর্ট ও বসবাসের তথ্য সংগ্রহ করেছে। এসব মামলা আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই এগোচ্ছে।’
আগামী নির্বাচনের পর নতুন সরকার আপনাদের ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে কি না-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘বাধ্য হয়ে তাদের চালিয়ে যেতে হবে। কারণ আমরা প্রক্রিয়াগুলো চালু করে গেলাম, সেটা অব্যাহত না থাকলে তো টাকা ফেরত আনতে পারবে না। তারা বসে থাকলে টাকা ফেরত আসবে না। আর যদি আনতে হয় এই প্রক্রিয়াগুলো মানতে হবে। এটা তো ইন্টারন্যাশনাল প্র্যাকটিস। আমরা যে প্রক্রিয়া শুরু করেছি তা বজায় রাখতে হবে।’
খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘পর্যাপ্ত মজুত থাকা সত্ত্বেও সরকার সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে চাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা আতপ চালের একটি বাফার মজুত রাখি। অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটলে যাতে সংকট না হয় সে জন্য নীতিগতভাবে আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, সার বিশেষ করে-ডিএপি ও ইউরিয়া আমদানিতে সরকার অগ্রাধিকার দিচ্ছে। সুখবর হচ্ছে-আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম কিছুটা কমেছে। আমরা বাজার স্থিতিশীল রাখতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করছি, পাশাপাশি যথেষ্ট চাল ও সারের মজুদও রাখছি।
সাম্প্রতিক বিবিএস প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সরকার শিশু ও মাতৃকল্যাণ বিষয়ে সতর্ক। তাই ভিজিএফ কর্মসূচি এবং উপকূলীয় ও হাওর অঞ্চলের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, আসন্ন মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞাকালে জেলেদের প্রতিটি পরিবারকে ২০ কেজি চাল দেওয়া হবে।’
বর্তমান বাজার পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মজুত ভালো থাকায় চালের দাম সম্প্রতি কমেছে। তবে শাকসবজি ও অন্যান্য দ্রুত নষ্ট হওয়া পণ্যের দাম মৌসুমি কারণে ওঠানামা করে। পাইকারি ও খুচরা বাজারে এক শ্রেণির ব্যবসায়ীর কারসাজি এখনো অব্যাহত রয়েছে। ‘ এ কারণেই আমরা এখনো পূর্ণ সাফল্য দাবি করতে পারছিনা,’ স্বীকার করেন তিনি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন সিটি লেভেল কো-অর্ডিনেশন কমিটি (সিএলসিসি) এর প্রথম সভা আজ নগর ভবন অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ডিএসসিসি প্রশাসক জনাব মোঃ শাহজাহান মিয়া এঁর সভাপতিত্বে স্থানীয় সরকার বিভাগের "সিটি কর্পোরেশন নাগরিক সম্পৃক্ততকরণ নির্দেশিকা" এর আলোকে গঠিত সিএলসিসির ৭১ জন সদস্য উপর্যুক্ত সভায় অংশগ্রহণ করেন।
সিটি লেভেল কো-অর্ডিনেশন কমিটি (সিএলসিসি) সভায় আলোচনাপূর্বক উন্নয়ন ও সেবামূলক কর্মপরিকল্পনা সুপারিশ করতে পারে। এ সভায় সিটি কর্পোরেশনের বার্ষিক বাজেট ও উন্নয়ন পরিকল্পনা, আর্থিক বিবরণীসহ বার্ষিক অর্জন সম্পর্কিত প্রতিবেদন, নাগরিক জরিপ, সামাজিক সমস্যাবলি সমাধানের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ, সিটি কর্পোরেশনের সেবাসমূহের মান উন্নয়ন, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন ও নাগরিকদের যথাযথভাবে সেবা প্রদানে চ্যালেঞ্জসমূহ আলোচিত হতে পারে।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে ডিএসসিসি প্রশাসক বলেন, "জুলাই পরবর্তী নাগরিক প্রত্যাশা পূরণে সিএলসিসি কমিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কেননা তাদের মাধ্যমে সরাসরি নাগরিকদের মতামতের প্রতিফলন হয়।" এ সময় প্রশাসক ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ ও জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিএসসিসির গৃহীত পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরে জনগণকে এ বিষয়ে আরও সচেতন ও সম্পৃক্ত করতে সিটি লেভেল কো-অর্ডিনেশন কমিটির সদস্যদের সহযোগিতা কামনা করেন।
সভায় সদস্যবৃন্দ ডিএসসিসির সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে আলোচনা ও সুপারিশ প্রদান করেন এবং সিটি কর্পোরেশন নাগরিক জরিপে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে ডিএসসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মোঃ জহিরুল ইসলাম, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, সকল বিভাগীয় প্রধান এবং মিস নাউকু আনজাই, টিম লিডার, সিফরসি২ উপস্থিত ছিলেন।
তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত নারী শ্রমিকদের মধ্যে বাল্যবিয়ে ও কিশোরী অবস্থায় গর্ভধারণের প্রবণতা উদ্বেগজনক আকারে বেড়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, এই শ্রমিকদের দুই-তৃতীয়াংশের বেশি (৬৬ শতাংশ) ১৮ বছরের আগেই বিয়ে হয়েছে। তাদের অধিকাংশই অপ্রাপ্ত বয়সে প্রথমবারের মতো গর্ভধারণ করেছেন। একই সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ ও গর্ভপাতের হারও এ জনগোষ্ঠীর মধ্যে তুলনামূলক বেশি।
গতকাল সোমবার রাজধানীর মহাখালীতে আইসিডিডিআরবি মিলনায়তনে ‘তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত নারী শ্রমিকদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার’ শীর্ষক সেমিনারে এসব তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়।
গবেষণা বলছে, প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নারী শ্রমিক অন্তত একবার অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন এবং প্রতি চারজনের একজন গর্ভপাত বা মেনস্ট্রুয়াল রেগুলেশন করেছেন।
জানা গেছে, গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার সহায়তায় আইসিডিডিআরবি প্রায় ২৪ মাসব্যাপী এই গবেষণা পরিচালনা করে, যা বাংলাদেশে পরিচালিত প্রথম এমন কোনো গবেষণা। ২০২২ সালের আগস্ট থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত গবেষণাটি কড়াইল ও মিরপুর বস্তি এবং গাজীপুরের টঙ্গী বস্তিতে আইসিডিডিআরবির আর্বান হেলথ অ্যান্ড ডেমোগ্রাফিক সার্ভেইলেন্সের আওতাধীন এলাকায় পরিচালিত হয়। ১৫-২৭ বছর বয়সি মোট ৭৭৮ জন বিবাহিত নারী গার্মেন্ট শ্রমিককে এই গবেষণাটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর এদের ওপর জরিপ পরিচালনা করা হয়।
সেমিনারে গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে জানানো হয়, গার্মেন্টস কর্মীদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি সম্পর্কে সচেতন ছিলেন ৪৯ শতাংশ শ্রমিক, যা দুই বছর শেষে বেড়ে দাঁড়ায় ৭০ শতাংশে। জরুরি গর্ভনিরোধক বড়ি সম্পর্কে জ্ঞান ছিল মাত্র ১৫ শতাংশ নারীর; গবেষণা শেষে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ শতাংশে। একই সময়ে পরিবার পরিকল্পনায় লিঙ্গ সমতার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব ৫৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭১ শতাংশে পৌঁছেছে।
গবেষণায় দেখা যায়, নারী শ্রমিকরা ঘর ও কর্মস্থল দুই জায়গাতেই সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। গত ১২ মাসে স্বামীর সহিংসতার হার ছিল উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। যৌন সহিংসতা ছাড়া অন্য সব ধরনের সহিংসতা গত দুই বছরে বেড়েছে। কর্মক্ষেত্রেও সহিংসতার প্রবণতা উল্টোদিকে গেছে— গবেষণার শুরুতে যেখানে প্রায় ৪৮ শতাংশ শ্রমিক কর্মক্ষেত্রে মানসিক সহিংসতার শিকার হয়েছিলেন, গবেষণার শেষ দিকে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৫ শতাংশে।
তবে সহিংসতার শিকার হওয়ার পরও খুব কম সংখ্যক নারী আনুষ্ঠানিকভাবে সাহায্য চাইছেন। গবেষণার শুরুতে যেখানে ৩৫ শতাংশ নারী অনানুষ্ঠানিকভাবে (পরিবার বা বন্ধুদের কাছে) সাহায্য চাইতেন, গবেষণার শেষ দিকে তা কমে দাঁড়ায় মাত্র ২১ শতাংশে। কর্মক্ষেত্রের সহিংসতার ঘটনাতেও মাত্র এক-পঞ্চমাংশ নারী কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন, এবং দুই বছর পরেও এ হার অপরিবর্তিত থাকে।
তরুণ বয়সে গর্ভধারণের ঝুঁকি কমাতে কিছু নিয়ামকও চিহ্নিত হয়েছে গবেষণায়। দেখা গেছে, যারা সন্তান ধারণের আগেই গর্ভনিরোধক ব্যবহার শুরু করেছিলেন, তাদের কিশোরী অবস্থায় গর্ভধারণের ঝুঁকি ৪৭ শতাংশ কম। এছাড়া যারা প্রথম গর্ভধারণের আগে গার্মেন্ট খাতে কাজ শুরু করেছিলেন, তাদের ঝুঁকি আরও কম।
অন্যদিকে, স্বামী কর্তৃক সহিংসতার অভিজ্ঞতা থাকলে কিশোরী অবস্থায় গর্ভধারণের ঝুঁকি ২৬ শতাংশ বেড়ে যায় বলেও গবেষণায় উঠে এসেছে।
গবেষণার উপাত্ত বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, নারীর ক্ষমতায়নের বিভিন্ন মাত্রা স্বামীর সহিংসতাকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। যেমন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা বেশি থাকলে মানসিক ও যৌন সহিংসতা থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়। মতামত প্রকাশের ক্ষমতা থাকলে যৌন সহিংসতা কমে। আবার চলাচলে স্বাধীনতা থাকলে শারীরিক সহিংসতার ঝুঁকিও কমে যায়।
ঢাকার মহাখালীতে আইসিডিডিআরবি ক্যাম্পাসে আয়োজিত সেমিনারে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (পরিকল্পনা ও গবেষণা) সহকারী পরিচালক ডা. সেকেন্দার আলী মোল্লা, পপুলেশন কাউন্সিল বাংলাদেশের সাবেক পরিচালক ডা. উবাইদুর রব, বিকেএমইএর যুগ্ম সচিব ফারজানা শারমিন এবং মেরী স্টোপস বাংলাদেশের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও স্বতন্ত্র গবেষক ইয়াসমিন এইচ আহমেদ।
বিকেএমইএর যুগ্ম সচিব ফারজানা শারমিন বলেন, গার্মেন্টস কারখানাগুলোতে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে পরামর্শমূলক সেবা বৃদ্ধির কাজ চলছে। তবে আরও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।
এই গবেষণার প্রধান গবেষক ছিলেন আইসিডিডিআরবির ইমেরিটাস সায়েন্টিস্ট ড. রুচিরা তাবাসসুম নভেদ। তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি পেলে তারা শুধু পরিবারে নয়, কর্মক্ষেত্রেও সহিংসতা থেকে সুরক্ষিত হতে পারেন। গার্মেন্ট শ্রমিক নারীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, খাগড়াছড়ির বর্তমান পরিস্থিতি সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে।
তিনি বলেন, খাগড়াছড়িতে স্থিতিশীল পরিস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সোমবার রাজধানীর রমনায় ডিএমপি’র পাঁচটি থানার ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, খাগড়াছড়িতে কেউ যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, খাগড়াছড়িতে স্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সেখানে আছেন। তিনি বিষয়টি দেখাশোনা করছেন এবং স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন।
খাগড়াছড়িতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিতে প্রতিবেশী একটি দেশের অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি কোনো দেশের নাম উল্লেখ করতে চাই না, তবে পতিত ফ্যাসিস্টদের দল খাগড়াছড়িতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে।’
তিনি আরো বলেন, ফ্যাসিস্ট দলটি সারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। যাতে চলমান দুর্গাপূজা উৎসবমুখর ও বাধাহীনভাবে উদযাপন করা না যায়।
দুর্গাপূজা নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, গতকাল থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব শুরু হয়েছে। কেউ যেন কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করে ও পূজা নির্বিঘ্নে আয়োজিত হয়, সেজন্য সবাইকে সহায়তা করতে হবে।
পাহাড়ে আটকে পড়া পর্যটকদের বিষয়ে তিনি বলেন, আটকে পড়া পর্যটকদের অধিকাংশকেই নিরাপদভাবে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ডিএমপিতে ৫০টি থানা রয়েছে, যার অর্ধেক ভাড়া করা ভবনে আছে। আমরা সমস্ত থানাকে তাদের নিজস্ব ভবনে স্থানান্তর করার জন্য কাজ করছি।
খাগড়াছড়িতে সাম্প্রতিক অস্থিরতায় তিনজন নিহত এবং পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
মন্তব্য