কলাবাগানে বন্ধুর বাসায় গিয়ে নিহত কিশোরী তার ধানমন্ডির বাসা থেকে বের হয়েছিলেন ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে। দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে বাসা থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
ওই কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে অভিযোগে মামলা করেছে পরিবার। গ্রেপ্তার হয়েছেন কিশোরীর সঙ্গে সম্পর্ক থাকা তরুণ ফারদিন ইফতেখার দিহান।
মধ্যবর্তী এই দুই ঘণ্টায় কী ঘটেছিল নিউজবাংলার পক্ষ থেকে তা অনুসন্ধানের চেষ্টা করা হয়েছে।
পরিবার, চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে কলাবাগানে দিহানের বাসায় যান ইংরেজি মাধ্যমে ‘ও’ লেভেলে পড়া ওই কিশোরী। ফাঁকা বাসায় তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক ঘটে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে কলাবাগান লেক সার্কাস রোডের বাসা থেকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নেয়ার আগেই ওই ছাত্রী মারা যান।
ওইদিন রাত দেড়টার দিকে দিহানকে একমাত্র আসামি করে কলাবাগান থানায় মামলা করেন নিহত ছাত্রীর বাবা। শুক্রবার দুপুরে দিহানকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। সেখানে ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ডের পর কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত।
ছাত্রীর মা চাকরিজীবী। কর্মস্থলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে সকাল সাড়ে আটটায় তিনি বাসা থেকে বের হন। বাবা ব্যবসায়ী। তিনি বাসা থেকে বের হন সাড়ে ৯টার দিকে।
ছাত্রীর বাবা জানিয়েছেন, বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে মেয়েটি তার মাকে ফোন করে কোচিং থেকে কিছু কাগজ আনার জন্য যাবে বলে জানান। এরপর আর মেয়ের সঙ্গে বাবা-মা কারও কথা হয়নি।
নিহত ছাত্রী তার বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন ধানমন্ডিতে। ওই বাসায় বৃহস্পতিবার দারোয়ানের দায়িত্বে ছিলেন শাহাবুদ্দিন। তার সঙ্গে শনিবার দুপুরে কথা হয় নিউজবাংলা প্রতিবেদকের। শাহাবুদ্দিন জানান, ওই ছাত্রী বাসা থেকে বের হওয়া বা প্রবেশের সময় তার সঙ্গে সালাম বিনিময় হতো। ঘটনার দিনও বাসা থেকে বের হওয়ার সময় সালাম বিনিময় হয়।
তিনি বলেন, ‘ওইদিন আমি গেইটে ছিলাম। আপু পৌনে ১২টার দিকে বাসা থেকে বের হন। তিনি সালাম দিয়ে বেরিয়ে যান।’
তবে ধানমন্ডির বাসা থেকে বের হওয়ার সঠিক সময় জানা যায়নি। বাড়িতে সিসি ক্যামেরা লাগানো থাকলেও তা কয়েক দিন ধরে অকেজো রয়েছে জানিয়েছেন শাহাবুদ্দিন।
কোচিংয়ে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হলেও সেখানে যাননি ছাত্রী। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে দিহান বলেছেন, ধানমন্ডির বাসা থেকে বের হয়ে ওই শিক্ষার্থী সোবহানবাগের মেট্রো শপিং মলের সামনে এসে অপেক্ষা করছিলেন। দিহান নিজের গাড়িতে করে মেট্রোর সামনে অপেক্ষায় থাকা ছাত্রীকে নিয়ে লেকসার্কাস সড়কের মাথায় লাজ ফার্মার সামনে নামিয়ে দেন। অল্প দূরত্বে থাকা নিজের বাসায় দিহান তার নিজের গাড়ি নিয়ে একা প্রবেশ করেন এবং ওই ছাত্রীকে পরে একা বাসায় প্রবেশ করতে বলেন।
দিহানের পরামর্শ অনুযায়ী, ওই ছাত্রী একা দিহানের বাসায় প্রবেশ করেন। বাসার নিচে তখন দারোয়ানের দায়িত্বে ছিলেন দুলাল। কোনো বাধা ছাড়াই কলাবাগানের বাসায় প্রবেশ করেন ওই ছাত্রী।
ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দিহানের কলাবাগানের বাসা ঘুরে দেখা গেছে, তারা থাকেন ভবনটির তৃতীয় তলায়। মা, আপন ভাই ও এক চাচাতো ভাইয়ের সঙ্গে থাকেন দিহান।
তার মা জানান, দিহানের নানা অসুস্থ। তাকে দেখার জন্য বৃহস্পতিবার সকালে বগুড়ার উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। আপন ভাই অফিসের উদ্দেশে সকালেই বাসা থেকে বের হন এবং প্রায় একই সময়ে চাচাতো ভাই ব্যবসার কাজে বের হন।
বাসাটি সকাল ১০টার পর থেকে ফাঁকা থাকবে জেনেই দিহান ও ওই কিশোরী নিজেদের মধ্যে কথা বলে কলাবাগানে দিহানের বাসায় দেখা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জবানবন্দিতে জানিয়েছেন দিহান।
দুপুর ১২টার পর কলাবাগানে দিহানের বাসায় প্রবেশ করেন ওই ছাত্রী। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য জানিয়েছিলেন দিহান। কলাবাগান থানা পুলিশের এক জন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, বেলা ১২টার পর বাসায় আসেন ওই ছাত্রী। লাজ ফার্মার সামনে থেকে একাই বাসায় যান তিনি।
আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে দিহান জানিয়েছেন, শারীরিক মিলনের কোনো পরিকল্পনা তাদের ছিল না। কিন্তু ওই ছাত্রী বাসায় আসার পর তারা শারীরিক মিলনের সিদ্ধান্ত নেন। তবে শারীরিক মিলনের আগে ওই ছাত্রী ভীত ছিলেন বলে দাবি করেন দিহান। বাসার বেডরুমে দুজনের শারীরিক মিলনের একপর্যায়ে মেয়েটির রক্তক্ষরণ শুরু হয়।
দিহান জবানবন্দিতে বলেন, এরপর বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ানোর পর মেয়েটি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। তার মুখে পানি ছিটিয়ে জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করেন দিহান। কিন্তু কোনো কাজ না হওয়ায় অজ্ঞান অবস্থায় থাকা ছাত্রীকে সামনের কক্ষের সোফায় নিয়ে আসেন তিনি।
ইন্টারকমের মাধ্যমে বাসার নিচে গার্ডের দায়িত্বে থাকা দুলালকে বাসায় ডেকে আনেন দিহান। এরপর তিনি ও দুলাল অজ্ঞান অবস্থায় থাকা ভুক্তভোগী ছাত্রীকে ধরে তৃতীয় তলা থেকে বাসার নিচে নিয়ে আসেন এবং গাড়িতে তোলেন। এরপর দিহান নিজেই গাড়ি চালিয়ে ছাত্রীকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যান।
দুপুর দেড়টায় চেতনাহীন ছাত্রীকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয় বলে জানিয়েছেন দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ও সেখানকার স্টাফরা। তখন আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক হিসেবে আসির ছিলেন বলে জানান হাসপাতালের প্রেস সচিব শেখ নাজমুল হক সৈকত।
শেখ নাজমুল হক সৈকত বলেন, মেয়েটির ঘাড় কাত হয়ে ছিল, তার কোনো জ্ঞান ছিল না। তখনও ব্লিডিং হচ্ছিল। ডিউটি ডাক্তার তার পালস না পেয়ে, সিপিআর (কার্ডিও পালমোনারি রিসাসিটেশন) দেন। তবুও হার্ট চালু না হওয়ায়, সবশেষ ইসিজি করে নিশ্চিত হওয়া যায় কিশোরী মারা গেছেন। দুপুর ১টা ৪৩ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
হাসপাতাল থেকে দেয়া ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর সময় বলা হয়েছে ১টা ৪৫ মিনিট।
দিহান হাসপাতালেই আটক
ছাত্রী মারা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কলাবাগান থানাকে ফোন করে ঘটনা জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল থেকে কল পেয়ে কাছাকাছি থাকা পুলিশ সদস্যদের দ্রুত ঘটনাস্থলে যাওয়া জন্য থানা থেকে নির্দেশ দেয়া হয়।
থানা পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, খবর পাওয়ার পর হাসপাতালে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত যতজনকে সন্দেহভাজন মনে হয়েছে, তাদের সবাইকে থানায় নিয়ে আসার নির্দেশ দেয়া হয়। তাৎক্ষণিকভাবে দিহান ও তার তিন বন্ধুকে হাসপাতালে পাওয়া যায় এবং তাদের থানায় নিয়ে আসা হয়।
থানায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে নিজে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন দিহান। তবে থানায় নিয়ে আসা তার অপর তিন বন্ধুর কোনো সম্পৃক্ততা পায়নি পুলিশ।
কলাবাগান থানার পরিদর্শক (অপারেশন্স) ঠাকুর দাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে অন্যরাও জড়িত থাকতে পারে এই সন্দেহে আমরা দিহানের তিন বন্ধুকে থানায় এনেছিলাম। তাদের কোনো সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় শুক্রবার বিকেলে পরিবারের জিম্মায় তিন জনকে ছেড়ে দেয়া হয়।’
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এই তিন বন্ধু দিহানের কলে হাসপাতালে এসেছিলেন। তারা ভেবেছিলেন দিহান অসুস্থ। হাসপাতালে এসে জানতে পারেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাদেরকে আসার জন্য ফোন করেন দিহান।’
পুলিশ হাসপাতালে পৌঁছার পর নিহত ছাত্রীর সুরতহাল করে মরদেহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। থানা পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে অন্য আরেকটি টিম ঘটনাস্থলে (কলাবাগানে দিহানের বাসা) যায়।
আলামত হিসেবে যা জব্দ হয়েছে
স্কুলছাত্রীর নিহত হওয়ার ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজসহ গুরুত্বপূর্ণ আলামত জব্দ করেছে কলাবাগান থানা পুলিশ। সংবেদনশীল মামলা হওয়ায় বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে আলামত সংগ্রহ করা হয় বলে নিউজবাংলাকে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কলাবাগান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আ ফ ম আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘প্রথমে আমরা হাতের কাছে যে আলমত পেয়েছি, তা হলো দিহানের গাড়ি। সেটিতে করে দিহান রক্তাক্ত অবস্থায় আনোয়ার খান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে মেয়েটিকে নিয়ে এসেছিলেন। জব্দ তালিকায় আরও রয়েছে দিহানের ব্যবহৃত স্মার্টফোন, ভিকটিমের কাপড়, রক্তমাখা টিস্যু, একটি ছোট বালিশ (রক্তমাখা) ও হাসপাতালের বিছানার একটি চাদর।’
এ ছাড়া সিআইডির ক্রাইমসিন বিভাগ ঘটনাস্থল থেকে তাদের মতো করে আলামত সংগ্রহ করেছে বলে জানান আসাদুজ্জামান।
ঘটনার দুটি সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে কলাবাগান থানার একটি দায়িত্বশীল সূত্র। একটি আনোয়ার খান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের, অন্যটি ঘটনাস্থলের পাশের বাড়ির ক্যামেরায় ধারণ করা।
সূত্রটি জানায়, আনোয়ার খান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফুটেজে দেখা যায়, দিহান নিজে গাড়ি চালিয়ে ওই স্কুলছাত্রীকে নিয়ে আসেন। তার সঙ্গে সে সময় অন্য কেউ ছিল না।
অন্য ফুটেজে রয়েছে দিহানের গাড়ির বাসায় ঢোকা আর বের হওয়ার ছবি। সেখানে তার সঙ্গে অন্য কেউ ছিল কিনা তা বোঝা যায়নি। মামলার গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রমাণ হিসেবে দুটি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
এদিকে ঘটনার পর থেকে পলাতক আছেন দুলাল নামের নিরাপত্তাকর্মী। ওই কিশোরীকে বাড়ির তৃতীয় তলায় দিহানদের ফ্ল্যাট থেকে গাড়ি পর্যন্ত তুলতে দিহানকে সাহায্য করেছিলেন দুলাল।
শনিবার কথা হয় ওই বাড়ির অপর নিরাপত্তাকর্মী আব্দুল মোতালেবের সঙ্গে। মোতালেব এ বাড়িতে চাকরি করছেন সাড়ে চার বছর ধরে। আর দুলাল কাজ করছেন কয়েক মাস। তারা দুজন একসঙ্গে বাড়ির ছোট্ট একটি ঘরে থাকেন।
মোতালেব জানান, ঘটনার সময় গেটের দায়িত্ব ছিল দুলালের। ডিউটি না থাকায় ঘটনার পুরো সময়টা মোকাররম বাড়ির বাইরে ছিলেন। ফিরে এসে দেখে দুলাল নেই, গেট ফাঁকা, রোদে শুকাতে দেয়া আছে দুলালের ভেজা লুঙ্গি। ডিউটিতে থাকার সময় দুলাল সে লুঙ্গিটাই পরে ছিলেন বলে জানান মোতালেব। এর কিছুক্ষণ পরই বাড়িতে পুলিশ আসে। পুলিশসহ উপরে উঠে দিহানদের ফ্ল্যাটের সামনে রক্তের ছাপ দেখেছিলেন মোতালেব।
কথা বলার জন্য একাধিকবার ফোন করা হয় দুলালকে। রিং বাজলেও ফোন ধরেননি তিনি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, ‘দুলাল যেহেতু চাক্ষুস সাক্ষী, তাই তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা অব্যাহত আছে।’
আরও পড়ুন:হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে রপ্তানিকারকদের সংগঠন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি)। এই পরিস্থিতিতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের বিপরীতে বিমা দাবি দ্রুত নিষ্পত্তি ও বিমার বাইরে করা পণ্যের ক্ষেত্রে সরকারি বিশেষ তহবিল গঠন করে ক্ষতিপূরণ ও সহায়তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে হোটেল সোনারগাঁওয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান ইএবি সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। সংবাদ সম্মেলনে তৈরি পোশাক, বস্ত্রকল, ওষুধ, চামড়াসহ বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ব্যবসায়ীরা শঙ্কিত। এর মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যাপক দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকতে পারে।
তিনি বলেন, এই অগ্নিকাণ্ডে স্পষ্ট যে কার্গো ভিলেজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর নয়। নিরাপত্তা ঘাটতির কারণে কেবল ব্যবসায়িক ক্ষতি নয়, আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছেও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে রপ্তানিকারকরা কার্গো ভিলেজে নিরাপত্তাহীনতা, গুদাম ব্যবস্থাপনায় অব্যবস্থাপনা ও মালামাল চুরির অভিযোগ জানিয়ে আসলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে ইএবি বলেছে, ওষুধ, তৈরি পোশাক, কৃষিপণ্য, ফলমূল, হিমায়িত খাদ্য ও অন্যান্য রপ্তানিকারক খাত এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ঘটনায় বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হতে পারেন, যা ভবিষ্যতে রপ্তানি চুক্তি ও অর্ডারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইএবি সভাপতি বলেন, আগুনের ঘটনাটি যথাযথ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে এবং দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অঘটন আর না ঘটে।
এ সময় কার্গো ভিলেজের আধুনিকায়ন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন, ওষুধ শিল্পের জন্য আলাদা শীততাপনিয়ন্ত্রিত গুদাম স্থাপন, নিরাপদ দূরত্বে রাসায়নিক গুদাম নির্মাণ ও সম্পূর্ণ অটোমেটেড ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর গুদাম ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
উল্লেখ, গত শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো এলাকায় আকস্মিকভাবে আগুন লাগে।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে সরকারের প্রস্তুতি রয়েছে বলে পুনরায় জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, “আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। সরকারের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে।”
আজ সোমবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক কোর কমিটির সভা শেষে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের সফল আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা, বিশেষ করে গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বডিওর্ন ক্যামেরা কেনা হবে এবং এ বিষয়ে সরকার ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।
তিনি আরও বলেন, বিগত তিনটি সাধারণ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের আগামী সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডসহ সাম্প্রতিক কিছু বড় অগ্নিকাণ্ডের পেছনে নাশকতা আছে কিনা- এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, এসব ঘটনা তদন্তের জন্য একাধিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশি মিশনগুলোতে ই-পাসপোর্ট সেবা চালু করা হবে।
প্রবাসীদের জন্য পাসপোর্ট ফি কমানো এবং বিমান ও বিমানবন্দরে সর্বোত্তম সেবা প্রদানের বিষয়টি সরকার বিবেচনা করছে বলেও তিনি জানান। সূত্র: বাসস
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার ইসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
তিনি বলেন, ‘আইনগতভাবে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। স্থগিত দল হওয়া মানে তাদের যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত। তাই আগামী নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করতে পারবে না।’
তিনি আজ রোববার সকালে সিলেটে সাংবাদিকদের এই কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার জেলা পুলিশ লাইনে নির্বাচনী দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আয়োজিত প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র প্রতীক সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রতীক নির্ধারণ সংবিধান ও নির্বাচনী বিধিমালার আওতায় করা হয়। শাপলা প্রতীক সেই তালিকায় নেই।
তাই তা বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগও নেই।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে না হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
নির্বাচনকে সামনে রেখে সব বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোনো চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ইসি আনোয়ারুল বলেন, ‘অতীতের মতো বিতর্কিত নির্বাচন আর হবে না। সবার সহযোগিতায় একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিতর্কিত বা প্রশ্নবিদ্ধ কোনো কর্মকর্তা যাতে নির্বাচনী দায়িত্বে না থাকেন, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’ সূত্র: বাসস
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটওয়ারীকে।
অন্য সদস্যরা হলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব মুঃ রইচ উদ্দিন খান ও মোঃ তারেক হাসান এবং ঢাকা কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার মুহাম্মদ কামরুল হাসান। কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের উপসচিব পঙ্কজ বড়ুয়া।
কমিটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডও বিশেষ ব্যবস্থায় ঢাকা কাস্টম হাউসে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম অব্যাহত রাখার উদ্যোগ নিয়েছে। সূত্র: বাসস
গত ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড SRO No-404-Law/2025 এর মাধ্যমে বাংলা ভাষায় প্রণীত আয়কর আইন, ২০২৩ এর Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে।
আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ বাতিল করে ২০২৩ সালে বাংলা আয়কর আইন, ২০২৩ প্রণয়ন করার পর হতেই বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ সরকারি গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আয়কর আইনের Authentic English Text প্রকাশের দাবি জানাচ্ছিলেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text না থাকায় বিদেশী বিনিয়োগকারীগণ আইনের সঠিক ব্যাখ্যা ও অনুশীলনের বিষয়ে সংশয়ের মধ্যে থাকতেন এবং বিভিন্ন আইনি জটিলতার সম্মুখীন হতেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text সরকারী গেজেটে প্রকাশ হবার ফলে দেশী-বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ আয়কর আইন সম্পর্কে স্বচ্ছ ব্যাখ্যা পাবেন বিধায় করদাতাগণের আস্থা অধিকতর বৃদ্ধি পাবে এবং আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে দ্ব্যর্থবোধকতা দূর করে স্বচ্ছতা ও সঠিকতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
কাস্টমস আইন, ২০২৩ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর Authentic English Text সরকারি গেজেটে প্রকাশের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অচিরেই এই দুটি আইনের Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশের মাধ্যমে দেশি-বিদেশী বিনিয়োগকারীগনের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের আওতাধীন পদ্মা সেতুতে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ক্যাশলেস, টোল কালেক্টর ব্যতীত ননস্টপ ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন (ETC) সিস্টেম চালু করা হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের টোল পরিশোধ প্রক্রিয়া আরও দ্রুত, স্বচ্ছ ও ডিজিটাল ব্যবস্থার আওতায় এসেছে।
বর্তমানে বিকাশ, ট্রাস্ট ব্যাংকের TAP অ্যাপ এবং মিডল্যান্ড ব্যাংকের অ্যাপ এর মাধ্যমে পদ্মা সেতুর টোল পরিশোধ করা যাচ্ছে। ব্যবহারকারীরা বিকাশ অ্যাপে গিয়ে “টোল” অপশনের অধীনে “মোটরযান রেজিস্ট্রেশন করুন” এ প্রবেশ করে গাড়ির নম্বর ও চেসিস নম্বরের শেষ ৪ (চার) ডিজিট প্রদান করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন। সফল রেজিস্ট্রেশনের পর ফিরতি এসএমএসে একটি Ekpass ID প্রেরণ করা হবে।
এই Ekpass ID ব্যবহার করে বিকাশ অ্যাপের “Pay Bill” অপশনের “D-Toll Top-Up” সেবার মাধ্যমে রিচার্জ করতে হবে। এরপর পদ্মা সেতুর মাওয়া টোল প্লাজার নিকটস্থ রেজিস্ট্রেশন বুথে বিআরটিএ অনুমোদিত RFID ট্যাগ প্রথমবারের মতো যাচাই করে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। একবার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে, যানবাহন কমপক্ষে ৩০ কিলোমিটার/ঘণ্টা গতিতে ETC লেন ব্যবহার করে নির্বিঘ্নে পারাপার হতে পারবে।
১৮ অক্টোবর সেতু বিভাগের সচিব এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ পদ্মা সেতুর ইটিসি বুথ পরিদর্শন করেন এবং ইটিসি সেবা ব্যবহার করে পদ্মা সেতু পারাপার করেন।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে ট্রাস্ট ব্যাংকের TAP অ্যাপের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর ETC সিস্টেমের লাইভ পাইলটিং কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর থেকে ধীরে ধীরে এই সেবার পরিসর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতোমধ্যে ETC সিস্টেমের মাধ্যমে মোট ১,৮১৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে এবং মোট ৩৪,৯১,৭০০ টাকা টোল আদায় সম্পন্ন হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান মহোদয়ের বিশেষ নির্দেশনা ও দিকনির্দেশনায় পদ্মা সেতুতে এই ETC সিস্টেম বাস্তবায়িত হয়েছে। এটি দেশের টোল ব্যবস্থাপনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, যা সময়, জ্বালানি ও মানবসম্পদের অপচয় হ্রাসে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
ভবিষ্যতে আরও বিভিন্ন ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাপ এই সেবার আওতায় যুক্ত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ-এর a2i (এটুআই) কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং নতুন ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডারদের সাথে সংযুক্তির কাজ অব্যাহত রয়েছে।
এই টোল কালেক্টর ব্যতীত নন স্টপ ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন সিস্টেমের মাধ্যমে পদ্মা সেতু ব্যবহারকারীরা দ্রুত, নিরাপদ ও স্বচ্ছভাবে টোল পরিশোধ করতে পারবেন—যা বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরের যাত্রায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ এবং ২০২১ সালের মার্চ মাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি দমনে পরিচালিত হত্যাকাণ্ডে শাহাদাতবরণকারী শহিদ পরিবারের সদস্যদের মাঝে চেক বিতরণ অনুষ্ঠান ২০২৫ আজ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে এবং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা ডা. আ ফ ম খালিদ হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞে শহিদ ৫৮ টি পরিবার এবং ২০২১ সালের মার্চ মাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি দমনে পরিচালিত হত্যাকাণ্ডে শহিদ ১৯টি পরিবারের সদস্যদের মাঝে পরিবার প্রতি ১০ লক্ষ টাকা করে, মোট ৭ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার চেক প্রদান করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, "শহীদদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না। ঐতিহাসিক শাপলা চত্বর এবং মোদি বিরোধী আন্দোলনে শহীদদের আজকের এই স্বীকৃতি তারই প্রমাণ।" শহীদ পরিবারদেরকে স্বীকৃতি দিতে পেরে সরকার গর্বিত উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন ইতিহাস থেকে যেনো কেউ ঐতিহাসিক শাপলা চত্বরের শহীদদের নাম মুছতে না পারে, এজন্য শাপলা চত্বরেই খোদাই করে লেখা হবে শহীদদের নাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ডা. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন,"শাপলা চত্বর এবং মোদি বিরোধী আন্দোলনে শহিদদের আর্থিক সহায়তা প্রদান স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এক ঐতিহাসিক উদ্যোগ।" এই উদ্যোগের মাধ্যমে দুই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার স্বীকৃতি দেওয়ার প্রক্রিয়ার সূচনা হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের হত্যাযজ্ঞ এবং ২০২১ সালের মোদি বিরোধী বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে শাহাদতবরণকারী শহিদ পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে আন্তরিক সাধুবাদ জানিয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মাওলানা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, "স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার এই মহতী উদ্যোগে সারা বাংলার আলেম সমাজ সম্মানিত হয়েছে। "
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব জনাব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, এবি পার্টির চেয়ারম্যান জনাব মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি জনাব নুরুল হক নুর, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা সাজিদুর রহমান এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক জনাব মোঃ শাহজাহান মিয়া।
মন্তব্য