পছন্দের পোশাক বানানো হলো, ম্যাচিং করে জুতা, ব্যাগ সবই নেয়া হলো, তবুও ঈদের আনন্দ হাত রাঙানো মেহেদি ছাড়া অপূর্ণ থেকে যায়। তাই আবহমানকাল ধরে ঈদ আনন্দের সঙ্গে মেহেদি লাগানো যেন একাকার হয়ে আছে। চাঁদরাতে হাতে মেহেদি দেয়ার চল বহু আগে থেকে। এবারের ঈদেও তার ব্যতিক্রম হবে না। তবে গত কয়েক বছর ধরে এটি ফ্যাশনেও পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশ, ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে মেহেদির ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। এ ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে এবং আফ্রিকায় যেসব দেশের ভাষা অ্যারাবিক সেসব দেশেও ব্যবহৃত হয় মেহেদি।
মেহেদির প্রচলন ধর্মীয় দৃষ্টিকোণের জায়গা থেকে শুরু হলেও পরে এই প্রথাটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিচয় পেয়েছে। মানুষ এখন এটাকে সর্বজনীন রূপে গ্রহণ করেছে। তবে একেক দেশে একেক ধরনের কারণ আর উদ্দেশ্যে মেহেদি ব্যবহার হয়।
ঈদে মেহেদি লাগানোর জন্য আপনি নানা ডিজাইন ব্যবহার করতে পারেন। কোনোটা সাদামাটা, আবার কোনোটা গাঢ় ডিজাইন। কেউ এক হাতে, আবার কেউবা হাত ভরে মেহেদি লাগাতে ভালোবাসেন। তবে যে যেভাবেই পড়েন না কেন, সেটাকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারলেই আসল সৌন্দর্য। কেউ যান পারলারে, কেউ আবার ঘরে বসে নিজেই মেহেদিতে হাত রাঙিয়ে ফেলেন। মেহেদি পাতা বেটে হাত রাঙানোর দিন অনেক আগেই শেষ। সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে পাতা মেহেদির পরিবর্তে বাজারে নানা রকম টিউব মেহেদি এসেছে। এসব মেহেদির সঙ্গে নানা রকম ডিজাইন বইও পাওয়া যায়। আর মেহেদির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এর নকশারও অনেক পরিবর্তন এসেছে। এ ছাড়া অনলাইন, ইন্টারনেটে বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন পাওয়া যায়। তাই বৈচিত্র্যময় নকশায় হাত সাজানো আর কঠিন কোনো ব্যাপার নয়।
মেহেদির ডিজাইনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন ডিজাইনে মেহেদ পরে। তবে আরব দেশগুলোর মেহেদির স্টাইলগুলোই বেশি চলনসই। তাই আপনি মেহেদি লাগানোর সময় সেই ডিজাইনগুলো ফলো করতে পারেন। তবে আজকাল যে সবাই শুধু হাতে মেহেদি পরছে তা নয়, অনেকে পায়েও নজরকাড়া ডিজাইনে মেহেদি পরে।
নকশার বিভিন্ন ধরন রয়েছে। ছোট ছোট ডিজাইন করে নকশা করা যায়, কোনাকুনিভাবে নকশা করা যায়, হাতের এক কোনা থেকে শুরু করে আঙুল পর্যন্ত ফুল দিয়ে ডিজাইন করা হয়। তবে হালকা নকশা সব রকম পোশাকের সঙ্গে খুব ভালো মানায়। ছোটদের জন্য হালকা নকশা খুবই বেমানান। তাদের দুই হাত ভরে মেহেদি পরিয়ে ভালো লাগে আর তারাও অনেক খুশি হয়। হাত ভরে মেহেদি নকশা আবার তিন রকমের হয়ে থাকে। যেমন: ময়ূর, কলকা, ফুলের নকশা। হাতের পাশাপাশি অনেকে পায়েও মেহেদি লাগায়। লতা, ফুল ও বিভিন্ন ডিজাইন করে পা ও মেহেদি রঙে রাঙানো হয়ে থাকে।
বাজারের টিউব মেহেদিগুলো অল্প সময়ে খুব বেশি লাল হয়ে থাকে। আবার অল্প দিনেই মেহেদি ফিকে হয়ে যায়। হাতে মেহেদি বেশি সময় রাখতে কিছু কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে। যার জন্য আপনার হাতের মেহেদি অনেক দিন গাঢ় থাকবে।
হাতের কাছে যে-সে মেহেদি পেলেই কম মূল্যে কিনবেন না। এতে মারাত্মক বিপদ হতে পারে।
বেশ কয়েক বছর ধরেই ঈদের আগে অসাধু ব্যবসায়ীরা বাজারে কেমিক্যালযুক্ত নকল মেহেদি দেদার বিক্রি করে আসছেন। এসব মেহেদি হাতে দিলে ত্বক পুড়ে যাওয়া থেকে শুরু করে অ্যালার্জি, র্যাশ বা ফোসকা পরার আশঙ্কা থাকে।
বিগত বছরগুলোতে এমন অনেক ঘটনার খবর মিলেছে। তাই মেহেদি কেনার আগে সতর্ক হওয়া জরুরি। জেনে নিন মেহেদি নকল কি না তা চেনার উপায়-
খাঁটি মেহেদির রং কখনো কালো হয় না। সব ধরনের কালো মেহেদিতেই ভেজাল বা কেমিক্যাল মেশানো থাকে। আসল মেহেদি কখনই ৫ মিনিট বা তার কম সময়ে গাঢ় রং দেয় না। ২৪-৪৮ ঘণ্টা পর আসল মেহেদির রং গাঢ় হতে থাকে।
মেহেদির রং গাঢ় খয়েরি না হলে অনেকেরই মন খারাপ হয়ে যায়। তবে জানেন কি? আসল মেহেদির রং কখনই এতটা গাঢ় হয় না।
-
সতর্কতা
যাদের মেহেদিতে অ্যালার্জি থাকে তারা মেহেদি ব্যবহারের আগে সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে শিশুদের হাতে মেহেদি দেয়ার সময় বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বিভিন্ন ত্বকের সমস্যা থেকে বাঁচতে হলে ভালো মানের টিউব মেহেদি বাছাই করতে হবে।
মেহেদির কেনার সময় মেয়াদ দেখে কিনুন। বেশি পুরোনো হলে আবার রং না হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
পারলারে মেহেদি লাগাতে গেলে দেখে নিন নতুন মেহেদি দিচ্ছে কি না। প্রয়োজনে নিজেই মেহেদি কিনে নিয়ে যান।
ফ্রিজে রাখা মেহেদি ব্যবহারের আগে কিছুক্ষণ স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রেখে দিন। তারপর হাতে লাগান।
শিশুদের হাতে দেয়ার জন্য পাতা মেহেদি বেটে হাতে লাগাতে হবে। এতে শিশুর কোমল হাত সুরক্ষিত থাকবে।
মিনিটেই গাঢ় লাল রং পেতে এখন অনেকেই বিভিন্ন মেহেদি ব্যবহার করে থাকেন। এগুলো ত্বক এমনকি স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। এগুলোতে প্রচুর কেমিক্যাল থাকে।
মেহেদি দেয়ার পর অনেকে হাত ভিজিয়ে মেহেদি তুলে ফেলেন। আবার অনেকে হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলেন। এটা একদমই ঠিক নয়। কারণ সাবান ক্ষারীয় উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে। এটি মেহেদির রঙের সঙ্গে বিক্রিয়া করে হাত ফিকে করে তোলে।
মেহেদি শুকানোর জন্য কখনই হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করবেন না। এতে আপনার ডিজাইন নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। প্রাকৃতিকভাবে মেহেদি শুকাতে দিন। প্রয়োজন হলে ফ্যান ব্যবহার করতে পারেন মেহেদি শুকানোর জন্য।
চিনি ও লেবুর রস মেহেদির রং বেশি লাল করতে সাহায্য করে। কিন্তু এগুলোর ব্যবহার যদি বেশি হয়ে যায় তবে মেহেদির রং গাঢ় খয়েরি কালার হয়ে যায় তা দেখতে ভালো লাগে না।
মেহেদি হাতে পরার আগে খুব বেশি পানিজাতীয় খাবার খেতে হয় না।
হালকা আলোতে মেহেদি পরলে ডিজাইন ভালো হবে না। ভালো ডিজাইন তোলার জন্য পর্যাপ্ত আলোতে বসে মেহেদি লাগাতে হবে।
অনেকে অ্যালার্জির জন্য সরিষার তেল হাতে ব্যবহার করে মেহেদির রং বেশি লাল করে তোলে। কারণ তেল ব্যবহার করলে হাতের শুষ্কভাব অনেক কমে গিয়ে হাত লাল করতে সাহায্য করে থাকে।
শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা আবহাওয়ায় চুল হয়ে পড়ে শুষ্ক ও প্রাণহীন। এমন আবহাওয়ায় চুল কোমল ও স্বাস্থ্যকর রাখতে ত্বকের মতোই চুলেরও যত্নের প্রয়োজন।
তীব্র ঠান্ডার মধ্যে চুল স্বাস্থ্যকর রাখতে ও শীতে চুলের যত্নের কিছু প্রয়োজনীয় পরামর্শ জানিয়েছে বার্তা সংস্থা ইউএনবি।
টুপি বা স্কার্ফ দিয়ে আপনার মাথা ঢেকে রাখুন
শীতে টুপি ও স্কার্ফ দিয়ে চুল ঢেকে রাখুন। ঠান্ডা বাতাস থেকে আপনার চুল রক্ষায় প্রথমে সিল্ক বা সাটিন স্কার্ফ দিয়ে এবং এর পরে তুলা বা পশমি কাপড় দিয়ে মাথা ঢাকুন। সে ক্ষেত্রে সিল্ক বা সাটিন হলো আপনার সেরা বিকল্প। কারণ সরাসরি তুলা বা পশমি কাপড় দিয়ে ঢাকলে চুলে ঘর্ষণ লাগতে পারে; এতে চুলের ডগা ফেটে যেতে পারে, এমনকি চুল ভেঙে যেতে পারে।
চুল শুকাতে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার না করা
শুধু শীত নয়, স্ট্রেইটনার, হেয়ার ড্রায়ার ও চুলের স্টাইলিংয়ের অন্যান্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম চুলের ক্ষতি করে সব সময়। এগুলোর ব্যবহারে আপনার মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়তে পারে এবং খুশকি জন্ম দিতে করে। তাই শীতে এগুলোর ব্যবহারে সাবধান হতে হবে।
গরম পানি দিয়ে চুল না ধোয়া
গরম পানি আপনার চুলের আর্দ্রতা ছিনিয়ে নিতে পারে, এটি চুলকে ভঙ্গুর করে তোলে এবং ভেঙে পড়ার প্রবণতা তৈরি করতে পারে। তাই গরম পানি দিয়ে চুল ধোয়া উচিত নয়।
তেল ব্যবহার
শীতে আপনার চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে তেল ব্যবহার করুন। আপনার চুল শুষ্ক ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়লে দ্রুত প্রাণ ফেরানোর হাতিয়ার হতে পারে তেল। এ ছাড়া আপনি আরগান অয়েলযুক্ত হেয়ার ট্রিটমেন্ট ব্যবহার করতে পারেন।
এ ছাড়া প্রতিদিন আপনার চুলের আগায় তেল লাগান, এতে চুলের আর্দ্রতা বজায় থাকবে এবং সুরক্ষিত থাকবে।
ছত্রাক নির্মূল
এই ঋতুতে আপনার মাথার ত্বকে সাদা বা হলুদ রঙের ছত্রাক দেখতে পাবেন, এগুলো আপনার কাঁধে ঝড়ে পড়তেও পারে। শীতকালে প্রায়ই খুশকি হওয়ার অভিযোগ শোনা যায়। আর ছত্রাকের সংক্রমণ বা মাথার শুষ্ক ত্বক খুশকি সৃষ্টির প্রধান কারণ হতে পারে।
তাই শীতে এমন শ্যাম্পু ব্যবহার করুন যাতে স্যালিসিলিক অ্যাসিড, জিংক পাইরিথিওন, কেটোকোনাজল ও সেলেনিয়াম সালফাইডের মতো সক্রিয় রাসায়নিক রয়েছে; যেগুলো মাথার ত্বকের ছত্রাক ও খুশকি প্রতিরোধ করবে।
আরও পড়ুন:খাবারে ঘিয়ের ব্যবহার যেমন স্বাদ কয়েক গুণ বাড়িয়ে তোলে, তেমনি রূপচর্চায় ঘি ব্যবহারে রয়েছে নানান উপকারিতা। এনডিটিভি লাইফস্টাইলের রূপচর্চায় ঘি ব্যবহারের ৫ উপকারিতার কথা তুলে ধরা হলো নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য।
১. ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে: ঘিতে ভিটামিন এ এবং ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যার কারণে এটি একটি দুর্দান্ত প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসাবে কাজ করে। এটি ত্বকে দীর্ঘস্থায়ী হাইড্রেশন প্রদান করে এবং ত্বককে শুষ্ক হতে বাধা দেয়। গোসলের আগে আপনার ত্বকে আলতো করে ঘি ঘষতে পারেন। এটি ত্বককে কোমল এবং নরম করে তুলবে।
২. ঠোঁটের শুষ্কতা ও ফাটা দূর করে: অল্প একটু ঘি আঙুলে নিয়ে তারপর সেটা ঠোঁটে লাগান। কয়েকবার ব্যবহারের পরই দেখবেন ঠোঁটের শুষ্ক ও ফাটা ভাব দূর হয়ে গেছে।
৩. টক্সিন বের করে দেয়: ঘিতে রয়েছে ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড যা হজমপ্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। আর যখন হজম ভালো হয়, তখন আপনার শরীর থেকে সমস্ত টক্সিন বের হয়ে যায়, যার ফলে ত্বক পরিষ্কার হয়।
৪. চোখের নিচের কালো দাগ দূর করে: ঘুমানোর আগে ঘি চোখের নিচে দিয়ে রাখুন। সকালে উঠে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এই রুটিন মেনে চললে চোখের নিচের কালো দাগ দূর হবে।
৫. তারুণ্য ধরে রাখে: বয়সের কারণে শরীর ও ত্বক বুড়িয়ে যেতে থাকে। তবে প্রতিদিন যদি আপনার খাদ্যতালিকায় কিছুটা ঘি রাখেন, তাহলেই তার প্রভাব পড়বে ত্বকে। কারণ ঘিতে রয়েছে ভিটামিন এ, ডি, ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা বলিরেখা এবং বার্ধক্যের প্রাথমিক লক্ষণ প্রতিরোধে কার্যকর।
আরও পড়ুন:চলে এলো পবিত্র রমজান মাস। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেয়া যেমন জরুরি, তেমনি ত্বকের যত্ন নেয়াও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। রুক্ষ ত্বক আপনার মানসিক স্বাস্থ্য ও মেজাজের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।
এবার রোজা এসেছে গরমে। রোজায় দীর্ঘক্ষণ পানাহার বর্জন বা কম ঘুম আপনার বর্ণের উজ্জ্বলতা কেড়ে নিতে পারে। তার জায়গায় রেখে যেতে পারে নিস্তেজতা এবং পানিশূন্যতার ছাপ। তাই এ সময় ত্বকের একটু বিশেষ যত্ন নিতে হবে, তা না হলে ঈদের সময়ে আপনার ত্বক দেখাতে পারে শুষ্ক ও মলিন।
এ অবস্থায় কীভাবে আপনি রোজায়ও নিজের ত্বককে সতেজ রাখবেন তা নিয়ে জানিয়েছে দুবাইয়ের লুসিয়া ক্লিনিক। নিউজবাংলার পাঠকদের সামনে তা উপস্থাপন করা হলো।
পর্যাপ্ত তরল পান
ডিহাইড্রেশন আপনার বর্ণকে ক্লান্ত দেখায়, সূক্ষ্ম রেখার মতো অপূর্ণতাগুলিও যেন আরও বেশি লক্ষণীয় করে তোলে। আমরা সবাই জানি, পানিতে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্য এবং সৌন্দর্যের উপকারিতা রয়েছে, তবে রমজানে ত্বকের যত্ন সংরক্ষণে পানির ক্ষমতা আরও বেশি।
তাই ইফতার ও সেহরির মাঝামাঝি সময়ে অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করুন এবং বেশি পানিযুক্ত খাবার খান। ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়গুলি যেমন চা, কফি এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলো ডিহাইড্রেশনের ক্ষতিকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
এর বদলে খেতে পারেন বিভিন্ন মৌসুমি ফলের জুস।
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার
নিয়মিত ভালো মানের একটি ময়েশ্চারাইজার দিনে অন্তত দুইবার ব্যবহার করুন। আপনার ত্বক যত শুষ্ক হবে, আপনার পণ্য তত সমৃদ্ধ হওয়া উচিত। ফেসিয়াল মিস্ট বা তেল ব্যবহার করতে পারেন, সেই সঙ্গে টোনারও।
ত্বকের ধরন নির্বিশেষে আপনার রুটিনে সানস্ক্রিন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে কি না তা নিশ্চিত করুন। রমজানের সময় সূর্যের এক্সপোজার দুর্বল ত্বকের জন্য আরও বেশি চাপের হতে পারে।
বারবার ফেসওয়াশ করবেন না
শুষ্ক ত্বক বা গরমের জন্য অনেকে বারবার ফেসওয়াশ করেন, যা মোটেও ঠিক না। দিনে দুইবারের বেশি ফেসওয়াশ ব্যবহার করা উচিৎ না, এতে মুখ আরও শুকনা হয়ে যেতে পারে। তবে তিন, চারবার ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুতে পারেন।
খাদ্যতালিকায় ফলমূল ও শাকসবজি
সুন্দর ত্বকের যত্নের রেসিপিটি সঠিক উপাদান দিয়ে শুরু হয়। আপনি রোজা রাখার সময়ও যদি উজ্জ্বল, স্বাস্থ্যকর ত্বক চান তবে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিন, ফাইবার এবং ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খান।
চিনি, প্রক্রিয়াজাত এবং প্যাকেটজাত খাবার, অতিরিক্ত লবণাক্ত আইটেম পরিহার করুন যা আপনাকে ডিহাইড্রেটেড করতে পারে। এ ছাড়া দুগ্ধজাত পণ্য এড়িয়ে যান যদি আপনার স্কিনে ব্রেকআউটের প্রবণতা বেশি থাকে। সেই সঙ্গে তৈলাক্ত এবং ভাজা-পোড়া খাবার খাওয়া সীমিত করতে হবে।
ফল, শাকসবজি, বাদাম এবং মাছ আপনার খাদ্য তালিকায় অবশ্যই রাখা উচিৎ। এ খাবারগুলি উজ্জ্বল ত্বকের জন্য ভালো, তাছাড়া আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য দুর্দান্ত।
আরও পড়ুন:সব ঋতুতেই ত্বকের যত্ন নেয়া গুরুত্বপূর্ণ। তা না হলে ত্বকে ব্রণ, ব্ল্যাকহেডসসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এসব সমস্যার সমাধানে যত্ন নিতে পারেন ঘরোয়া উপকরণের সাহায্যে।
ঘরে থাকা উপকরণেই বানিয়ে নিতে পারেন ফেসপ্যাক, যা আপনাকে রাসায়নিক মেশানো ফেসপ্যাকের চেয়ে ভালো ফল দিতে পারে। আসুন জেনে নেয়া যাক কয়েকটি ফেসপ্যাক তৈরির পদ্ধতি।
ঘরোয়া টিপস দিয়েছেন জারা’স বিউটি লাউঞ্জের স্বত্বাধিকারী ও রূপ বিশেষজ্ঞ ফারহানা রুমি।
স্মুদি মাস্ক
মাস্কটি বানাতে একটি বাটিতে অর্ধেক কলা মিহিভাবে চটকে নিন। এর সঙ্গে দুই টেবিল চামচ মধু, তিন টেবিল চামচ তরল দুধ ভালোভাবে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। আপনার মুখ, গলা ও ঘাড়ে প্যাকটি লাগিয়ে রাখুন ৪০ মিনিট। শুকিয়ে এলে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। প্যাকটি ত্বককে উজ্জ্বল করার পাশাপাশি আর্দ্র রাখতে সাহায্য করবে।
পেঁপে ও টমেটোর প্যাক
একটি টমেটো ও সমপরিমাণ পেঁপে ব্লেন্ড করে নিন। মিশ্রণটি পুরো মুখ, ঘাড় ও গলায় লাগিয়ে রাখুন শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। পেঁপেতে থাকা এনজাইম ত্বকের মৃত কোষ ও দাগ দূর করতে সহায়তা করে। আর টমেটো ত্বকের জন্য সেরা প্রাকৃতিক অ্যাস্ট্রিনজেন্ট।
সাইট্রাস মাস্ক
তিন টেবিল চামচ মধুর সঙ্গে দুই টেবিল চামচ কমলার রস মিশিয়ে বানিয়ে নিন সাইট্রাস মাস্ক। এটি আপনার ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার পাশাপাশি ভিটামিন ‘সি’র ঘাটতি পূরণ করবে। সেই সঙ্গে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতেও এ প্যাকের জুড়ি নেই। মাস্কটি ৩০ মিনিটের জন্য পুরো মুখে লাগিয়ে রাখুন। এরপর স্বাভাবিক পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
হলুদ ও দইয়ের প্যাক
দ্রুত ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলুদ আর টক দই। এ দুটি উপকরণ আপনার ত্বকের দাগ দূর করে উজ্জ্বলতা বাড়াবে।
চালের গুঁড়া ও শসা
অতিরিক্ত রোদে ঘেমে গিয়ে মুখ তৈলাক্ত হয়ে যায়। এতে মুখে ব্ল্যাকহেডস তৈরি হয়। সেটি দূর করতে চালের গুঁড়ার সঙ্গে শসার রস মিশিয়ে মুখে স্ক্রাবিং করতে পারেন। এ ছাড়া ভালো ব্র্যান্ডের ফেসিয়াল স্ক্রাবও ব্যবহার করতে পারেন।
মনে রাখতে হবে ধরন যেমনই হোক, স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বক পেতে নিতে হবে সঠিক যত্ন।
ত্বক ভালো রাখতে বেশি বেশি মৌসুমি ফল খান। দিনে অন্তত তিন লিটার পানি পানের পাশাপাশি নিয়মিত ঘুমের বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
আরও পড়ুন:কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে দুধ দিয়ে গোসল করে সংগঠন থেকে বিদায় নিয়েছেন উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা মো. আরমিন মিয়া। তিনি দাবি করছেন, দুধ দিয়ে গোসল করে নিজেকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন।
২২ সেকেন্ডের এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। ভিডিওতে দেখা যায়, একটি শিশু জগ ভর্তি দুধ ছাত্রলীগ নেতার মাথায় ঢালছে আর তা সারা শরীরে মেখে নিচ্ছেন তিনি। যিনি ভিডিওটি ধারণ করছেন তিনি প্রশ্ন করছেন আরও রাজনীতি করবা? এ সময় হাত নেড়ে না করেন ওই ছাত্রলীগ নেতা।
ভারতীয় উপমহাদেশে দুধ দিয়ে গোসলের মাধ্যমে পবিত্র হওয়ার ধারণা প্রাচীনকাল থেকে বিদ্যমান। তবে বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিষয়ক বিভিন্ন ওয়েবসাইট ঘেঁটে ‘দুগ্ধস্নানের মাধ্যমে কলঙ্কমুক্ত’ হওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
দুধ মিশ্রিত পানিতে গোসলের বেশ কিছু স্বাস্থ্যগত উপকারিতা অবশ্য আছে। বহু শতাব্দী ধরে বিভিন্ন জনপদের মানুষ তাই এ ধরনের গোসলকে গুরুত্ব দিয়েছেন।
প্রাচীন রোমানরা মুখের ত্বক কোমল রাখতে নিয়মিত দুধ মিশ্রিত পানিতে গোসল করতেন। কিংবদন্তি আছে, ফারাও ক্লিওপেট্রা দুধ এবং মধু মিশ্রিত গরম পানিতে গোসল করে তার অপরূপ সৌন্দর্য ধরে রেখেছিলেন। চলতি শতাব্দীর শুরুতে আমেরিকায় ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল বাটারমিল্কে মুখ ধোয়া।
কেবল সৌন্দর্য বৃদ্ধি নয়, একজিমা, সোরিয়াসিস এবং শুষ্কতাসহ ত্বকের বেশ কয়েকটি রোগের জন্য দুধ মিশ্রিত পানি উপকারী বলে ধরা হয়। তবে দুধ দিয়ে গোসল সবার জন্য উপকারী নাও হতে পারে, বিশেষ করে স্পর্শকাতর ত্বকের অধিকারীরা ভুগতে পারেন অ্যালার্জিতে। তাই দুধ গোসলের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
শুষ্ক ত্বক
ত্বক শুষ্ক হলে দুধ মিশ্রিত পানিতে গোসল উপকারী হতে পারে। কারণ দুধে রয়েছে প্রোটিন, চর্বি, ভিটামিন, খনিজ এবং ল্যাকটিক অ্যাসিড। এসব ত্বকের হারানো আর্দ্রতা পূরণে সহায়ক।
প্রোটিন এবং চর্বি ত্বককে নরম ও প্রশমিত করতে সাহায্য করে। ল্যাকটিক অ্যাসিড মৃদু এক্সফোলিয়েটর। মৃত ত্বকের কোষ ঝড়িয়ে ফেলতে এক্সফোলিয়েশন গুরুত্বপূর্ণ; এতে ত্বক তুলতুলে হয়।
ত্বকের যত্ন নিয়ে ৬৫ ঊর্ধ্বে নারীদের ওপর চালানো এক গবেষণায় দেখা গেছে, দুধ মিশ্রিত পানিতে গোসলের পর প্রুরিটাস বা চুলকানি থেকে মুক্তি পেয়েছেন তারা।
একজিমা
একজিমার কারণে প্রায়ই ফুসকুড়ি, খসখসে ত্বক এবং জ্বালাপোড়া হতে পারে। একজিমা চিকিৎসায় দুধ স্নানের কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণা সীমিত।
একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, মানুষের বুকের দুধ থেকে তৈরি হাইড্রোকোর্টিসোন মলম একজিমায় আক্রান্ত শিশুর চিকিথসায় বেশ কার্যকর। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে আরও গবেষণা প্রয়োজন।
প্রাপ্তবয়স্কের একজিমা চিকিৎসায় দুধ মিশ্রিত পানি দিয়ে গোসলের কার্যকারিতার প্রমাণ নেই। তাই একে ওষুধের বিকল্প হিসেবে মনে করেন না চিকিৎসকেরা।
সোরিয়াসিস
সোরিয়াসিসের উপসর্গ যেমন চুলকানি, ত্বকের শুষ্কতা নিরাময়ে কার্যকর হতে পারে দুধের মিশ্রিত পানিতে গোসল; যদিও এ ব্যাপারে শক্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
পয়জন আইভি
পয়জন আইভির উপসর্গ, যেমন ত্বকে লালভাব, চুলকানি এবং প্রদাহ প্রশমিত করতে পারে দুধ গোসল।
রোদে পোড়া
দুধে থাকা প্রোটিন, চর্বি, অ্যামিনো অ্যাসিড এবং ভিটামিন এ এবং ডি রোদে পোড়া ত্বকের জন্য প্রশান্তিদায়ক হতে পারে। রোদ থেকে ঘুরে আসার পর ২০ মিনিট ধরে দুধ দিয়ে গোসল করুন। আরও ভালো ফলাফলের জন্য অ্যালোভেরা বা অন্য ময়েশ্চারাইজার যোগ করতে পারেন পানিতে।
দুধে গোসল কি সবার জন্য নিরাপদ?
দুধ মিশ্রিত পানিতে গোসল সবার জন্য নিরাপদ নয়। ত্বক সংবেদনশীল হলে, তা এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। কারণ দুধে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড ত্বকে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে।
শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকলেও দুধ গোসল এড়িয়ে যাওয়া উচিত। গর্ভবতীদের এই গোসল করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
এ ছাড়া মাথা ঘোরা বা অসুস্থবোধ করলে অবিলম্বে দুধ গোসলের চিন্তা ছেড়ে দিন। একটি কথা সব সময়েই মাথায় রাখতে হবে, দুধ গোসলের পানি কখনই পান করবেন না, এটি নিরাপদ নয়।
যে ধরনের দুধ ব্যবহার করা যেতে পারে
বিভিন্ন ধরনের দুধ যেমন : গাভীর দুধ, বাটারমিল্ক, নারিকেলের দুধ, ছাগলের দুধ, পাউডার দুধ, চাল বা সয়া দুধ পানিতে মিশিয়ে গোসল করা যেতে পারে।
এসব দুধের মধ্যে কোনটি বেশি কার্যকর তা নিশ্চিত নয়। এ কারণে বিভিন্ন ধরনের দুধের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে পরীক্ষা চালাতে পারেন। ত্বকের প্রতিক্রিয়া দেখে বুঝতে পারবেন কোনটি আপনার জন্য উপযুক্ত।
যেভাবে প্রস্তুত করবেন
কুসুম গরম পানি দিয়ে বাথটাব বা বালতি ভরুন। তারপর ১ বা ২ কাপ দুধ এবং ঐচ্ছিক উপাদানগুলো (তেল, গোসলের লবণ, মধু বা বেকিং সোডা মেশান। ভালো করে পানিতে মিশিয়ে ২০ থেকে ৩০ মিনিট ধরে নিজেকে ডুবিয়ে রাখুন।
শুষ্ক, চুলকানিযুক্ত ত্বকের অধিকারীরা এই গোসলে প্রশান্তি পেতে পারেন। তবে এটি কখনও স্বাভাবিক ত্বকের ওষুধের বিকল্প হিসেবে নেয়া উচিত নয়। সবচেয়ে ভালো হয়, দুধ গোসলের আগে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে নেয়া।
তরুণ-তরুণীদের মধ্যে রঙিন চুলের প্রতি আগ্রহ বেশি দেখা যায়। ঈদ ও অন্যান্য উৎসব ঘিরে পারলারগুলোতে চুল রং করার ভিড় জমে বেশি। এবার ঈদে চুলের রঙে ট্রেন্ড কী রূপ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানাচ্ছেন এস এম আতাউর রহমান
যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে হেয়ার কালারেও এসেছে নানা বৈচিত্র্য। লুকে পরিবর্তন আনতে, হাল ফ্যাশনে নতুনত্ব যোগ করতে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে চুল রং করার ঝোঁক বেশি। অনেকেই পাকা চুল থেকে মুক্তি পেতে হেয়ার কালার করেন। এ জন্য কারও পছন্দ রং, তো কারো পছন্দ মেহেদির ব্যবহার। তবে কোন কালারে কাকে মানাবে এটা জানা বেশি দরকারি। এ জন্য পারলারগুলোতে গিয়ে চুলে রং করা বেশি ভালো। বিন্দিয়া বিউটি কেয়ারের স্বত্বাধিকারী ও রূপ বিশেষজ্ঞ শারমিন কচি জানালেন, ‘সবাইকে সব রং মানায় না। এ জন্য মুখের গড়ন ও চুলের ধরন বুঝে রং বেছে নিতে হবে। এ জন্য হেয়ার এক্সপার্টরা নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জুতসই রং বেছে নেন। কেউ চুলে রং করতে চাইলে ভালো কোনো পারলারে যাওয়াই বুদ্ধিমানের।’
-
কোন রং ঈদে এগিয়ে
এবার ঈদে রেডিশ বাদামি, বন্ড কিংবা সোনালি, বারগ্যান্ডি, স্ট্রবেরি বন্ড, জেট ব্ল্যাক কিংবা চেরি লাল রং ট্রেন্ডে এগিয়ে রয়েছে জানালেন রূপ বিশেষজ্ঞ শারমিন কচি। তবে পুরো চুল না রাঙিয়ে হালকা শেড বা নির্দিষ্ট অংশের চুল রং করাও অনেকের কাছে প্রিয়। এর মধ্যে স্টিক হিসেবে হাইলাইট, লোলাইট বেশি পছন্দ তরুণ-তরুণীদের। এর পাশাপাশি অমব্রে, মেহগনি, কপারের মতো রঙের চাহিদাও বেশ। ট্রেন্ডি হেয়ার কালারের বেলায় এখন শুধু বাদামি কিংবা লাল রং আটকে নেই। বেগুনি, নীলচে সবুজ, ব্রুনেট, ডার্ক অবার্ন, চেস্টনাটসহ বিভিন্ন শেডযুক্ত রং বেশ এগিয়ে রয়েছে এবারকার ঈদে।
-
চুল রং করার আগে
চুলে রং করার আগে কিছু বিষয় মনে রাখা জরুরি। প্রথমেই চুলের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিন। রুক্ষ হলে চুল রং না করাই ভালো। এ ধরনের চুলে রং দীর্ঘস্থায়ী হয় না। বরং রঙের কারণে চুলের রুক্ষতা আরও বাড়ে। কোন রং মানানসই সে সম্পর্কে জেনে নিন। চুলের ধরন, স্টাইল, বয়সকে গুরুত্ব দিতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় চোখের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে চুল কালার করা। রং করানোর আগে চুলে নতুন কাট দিতে পারেন। চেহারায় নতুনত্ব আসবে। রংও মানানসই হবে। রং করার পরপরই চুল কাটার ঝামেলা পোহাতে হবে না। চুল রং করার আগে ভালো করে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনিং করে নেয়া জরুরি।
-
ঘরে বসেই রঙিন চুল
চুল রাঙাতে পারলারগুলোতে যাওয়াই ভালো। তবে চাইলে বাড়িতে বসেও পেতে পারেন রঙিন চুল। এ জন্য খুব বেশি এক্সপেরিমেন্ট করা যাবে না। সাদা বা কালো চুল রঙিন করার সময় খেয়াল রাখতে হবে রং যেন চুলের স্বাভাবিক রঙের কাছাকাছিই হয়। রুক্ষ বা কোঁকড়া চুলের জন্য একটু উষ্ণধাঁচের রং যেমন লাল, তামা, সোনালি বেশি মানানসই। চুল যদি সোজা হয় তবে একটু হালকা ও কোমল রং যেমন নীল, বাদামি বা ছাই রং বেছে নিতে হবে বলে জানালেন রেড বিউটি পারলারের স্বত্বাধিকারী আফরোজা পারভীন। ঘরে বসে চুল রং করার জন্য দরকার কিছু জিনিসপত্র। দোকান থেকে দুই বাক্স রং কিনতে হবে। রঙের প্যাকেটের গায়ের নির্দেশনা ভালোভাবে পড়ে দেখতে হবে। পুরোনো কাপড় পরতে হবে চুল রং করার আগে। এরপর দস্তানা বা গ্লাভস, চিরুনি, ক্লিপ, বাটি ও ড্রাই ব্রাশ নিয়ে আয়নার সামনে বসে পরতে হবে। চুলগুলো চারভাগে ভাগ করে নিন। এক ভাগে রং শেষ করে আরেক ভাগে শুরু করুন। কান ও কপালের পাশে ভ্যাসলিন মেখে নিন। এতে এসব জায়গায় রং লাগলেও ধোয়ার সময় সহজে উঠে যাবে। প্যাকেটের নির্দেশিত সময় পর চুল ধুয়ে ফেলতে হবে।
-
চুলের রং ধরে রাখতে
চুল তো রং করা হলো। কিন্তু কীভাবে বেশি দিন এই রং ধরে রাখবেন সেটাও তো জানা চাই। চুলে রং করার পর শ্যাম্পু করার সঠিক নিয়ম না মানলে রঙের স্থায়িত্ব বেশি দিন হবে না। অনেকেই চুল রঙের পর বাড়ি ফিরে দ্রুত শ্যাম্পু করেন। শোভন মেকওভারের রূপ বিশেষজ্ঞ শোভন সাহার মতে, ‘এটা করা উচিত নয়। এতে চুলে রং বসার আগেই তা ধুয়ে যায়। রং হালকা হয়ে যায়। চুলে রং করার পর কমপক্ষে ১৬ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করতে হবে। শ্যাম্পু না করে স্বাভাবিক পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলাই ভালো। এরপর কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে।’ সাধারণ চুল ও রঙিন চুলের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। দুই রকম চুলের যত্নআত্তিও দুই রকম। নিয়ম মেনে চললে চুলে দীর্ঘদিন রং ধরে রাখা যায়। রঙিন চুলে গরম পানিতে গোসল করা যাবে না। হেয়ার ড্রায়ারেও রঙিন চুল শুকানো উচিত নয়। গরম পানি চুলের ময়েশ্চারাইজার কমিয়ে চুলে রুক্ষতা তৈরি করে। রঙিন চুলে কিছুদিন পরপর ডিপ কন্ডিশনিং করতে হবে। চুলে সরাসরি সূর্যের আলো লাগানো যাবে না। রোদে গেলে স্কার্ফ বা ক্যাপ পরে থাকতে হবে।
-
রঙিন চুলের যত্ন
রং করা চুলে কালার শ্যাম্পু, কালার কন্ডিশনার ও কালার মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। মাসে এক বা দুইবার পারলারে গিয়ে প্রোটিন ট্রিটমেন্ট করাতে পারেন। সপ্তাহে অন্তত দুই থেকে তিন দিন তেল মালিশ করতে হবে। নারিকেল, আমলকী, জলপাই কিংবা বাদাম তেল রঙিন চুলে বেশি উপকারী। রঙিন চুলে রুক্ষতা কমাতে শ্যাম্পু করার পরে চায়ের লিকার ব্যবহার করা যেতে পারে। বছরে দুইবারের বেশি চুল রং করাবেন না। এতে চুলের স্বাভাবিক কোমলতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
-
কোথায় করবেন খরচ কেমন
পারসোনা, রেড বিউটি পারলার, শোভন মেকওভার, অরা বিউটি লঞ্জ থেকে শুরু করে ছোট-বড় যেকোনো পারলারে গিয়ে চুলে রং করাতে পারেন। তবে পারলারটি ভালো মানের হওয়া বেশি জরুরি। নইলে উল্টো ফল হতে পারে। অখ্যাত পারলারগুলো প্রায়ই কমদামি রং ও পণ্য ব্যবহার করে বলে চুলের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ জন্য খরচ একটু বেশি হলেও ভালো মানের পারলার থেকে চুল রং করা দরকার। রঙের মান, কতটুকু চুল রাঙাবেন ও অন্যান্য রাসায়নিক পণ্যের ওপর ভিত্তি করে একেক সেবার একেক রকম খরচ। বড় পারলারগুলোতে ৩ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকায় চুল রাঙাতে পারবেন।
আরও পড়ুন:আমরা সবাই চাই ঈদের দিনটিতে আমাদের একটু ভিন্ন লাগুক। অন্যান্য দিনের তুলনায় একটু বেশি সুন্দর লাগুক। ঈদের আগেই আমরা ব্যস্ত হয়ে যাই আমাদের পোশাক এবং সাজসজ্জা নিয়ে। তাই ঈদের দিনটিতে কোন পোশাকে কেমন সাজবেন তা নিয়ে ভাবনার শেষ নেই। ঈদ মানেই যেন খুশি, আনন্দ, সাজসজ্জা। আর সেই সৌন্দর্যের মাত্রাকে আরেকটু বাড়িয়ে তুলতে নতুন পোশাকের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চাই বিশেষ সাজ। ঈদের দিন তিন বেলা কীভাবে নিজেকে সাজাবেন তা জানিয়েছেন রূপ বিশেষজ্ঞ ফারহানা রুমি।
-
সকালের সাজ
চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সকালে গোসলের সময় চুলে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। এরপর সিরাম। নতুন পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে চাই হালকা সাজসজ্জা অর্থাৎ পরিপাটি লুক। যেহেতু তীব্র গরম বাইরে তাই মেকআপের আগে কিছুটা যত্ন নিতে হবে ত্বকের । টোনার দিয়ে ফেস ক্লিন করে একটি সিরাম নিয়ে কিছুক্ষণ রেখে তারপর একটি ময়েশ্চারও ব্যবহার করতে হবে। ফেস সেট হয়ে গেলে ফাউন্ডেশনের পরিবর্তে 'বিবি ক্রিম’ (BB Cream) ব্যবহার করতে পারেন ( যদি বাসাতেই থাকা হয়)। ন্যাচারাল লুক বজায় রাখতে ডাস্ট পাউডার বা ফেস পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। বেস তৈরি হয়ে গেলে আইব্রু এঁকে নিন যার যার স্কিন টোন বুঝে। আই লিডে কনসিলার দিয়ে সুন্দর একটি শেড নির্বাচন করুন পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে। হাইলাইটার ব্যবহার করুন। এতে চোখের মেকআপ ফুটবে খুব সুন্দর করে। চোখে মানানসই স্টাইলে আই লাইনারে লাইন ও হালকা মাসকারা ব্যবহার করতে পারেন। কড়া রোদে মেকআপ হালকা হলেই ভালো। হালকা টোনের ব্লাসন এবং তার ওপর হাইলাইটার ব্যবহারে ফেইস অনেক শার্প ও গর্জিয়াস দেখাবে। যেহেতু চোখের মেকআপ হালকা হবে তাই লিপস্টিক একটু ডিপ রাখতেই পারি। সকালের সাজে চুলটা রাখতে পারেন খোলা। তবে মাঝখানে সিঁথি করে চুল দুই ভাগ করে ফ্রনচ বেণি চিকন করে করে পেছনে ক্লিপ করে দিতে পারেন । এতে খাবার পরিবেশনের সময় সামনে চুল এসে অহেতুক ঝামেলা করবে না। আর এই মেকআপে দুপুর পর্যন্ত কেটে যাবে আশা করি ।
-
দুপুরের সাজ
ঈদের দিন দুপুরে সাজটা একটু ন্যাচারাল হলেই ভালো। কারণ দিনের কড়া আলোয় অতিরঞ্জিত মেকআপ দৃষ্টিকটু লাগে। তাই ঈদের দিনের দুপুরের সাজের ক্ষেত্রে ন্যাচারাল, ফ্রেস, স্নিগ্ধ লুকটাই রাখার চেষ্টা করুন।
দুপুরবেলার সাজে ম্যাটফিনিশ মেকআপ ব্যবহার করুন। অবশ্যই খেয়াল রাখবেন মেকআপটি স্কিনটোনের সঙ্গে ম্যাচ করছে কি না। দুপুরের সাজে ভালো মানের বিবি অথবা সিসি ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। এটা ত্বকে ইনস্ট্যান্ট গ্লো এনে দেবে। ঈদের দিনের দুপুরে যেহেতু সময়টা গরম তাই মানানসই ও আরামদায়ক হেয়ারস্টাইল করুন যেটা দেখতেও ভালো লাগবে, আরামদায়কও হবে। পরিবার-পরিজন ও অতিথি আপ্যায়নে চুলের কারণে যেন বিরক্তি না লাগে সেদিকেও নজর রাখুন।
-
রাতের সাজ
রাতের সাজটা গর্জিয়াস করতে পারেন। পোশাকের বেলায়ও গর্জিয়াস শাড়ি বা কামিজ পরতে পারেন। রাতের বেলার সাজে বেসকে ফোকাস করুন। ফাউন্ডেশন, প্যানকেক কিংবা প্যানস্টিক দিয়ে বেস করুন। মুখে দাগ থাকলে কনসিলার দিয়ে ঢেকে দিন। এরপর ব্যবহার করুন স্কিনটোন ফেস পাউডার। চাইলে লিকুইড বেসও করতে পারেন। পোশাকের সঙ্গে মানানসই রেখে চোখটা সাজাতে পারেন। চোখে স্মোকি লুক এনে চোখের পাতাজুড়ে একটু চকচকে (গ্লসি) শ্যাডো লাগিয়ে নিলেই পূর্ণ হবে রাতের সাজ। গাঢ় শেডের লিপস্টিক ব্যবহার করতে পারেন রাতে। দিন-রাত সব বেলার সাজেই লিপসেলার ব্যবহার করতে পারেন। লিপসেলার মেকআপ রিমুভার ছাড়া ওঠে না। খাবার সময় তাই নষ্ট হয় না। ঠোঁটের ওপর গ্লিটার ব্যবহারও এখন চলছে। রাতের সাজে ব্লাশন বেছে নিন গোলাপি কিংবা বাদামি। ঈদের রাতের সাজের সঙ্গে গোল্ড, স্টোন, ফ্রেন্সি, মেটাল, পুঁতিসহ সব ধরনের গয়নাই ভালো লাগবে।
মন্তব্য