গ্যাসলাইনের লিকেজ থেকে মগবাজারের তিনতলা ভবনের নিচতলার কোনো কক্ষে মিথেন গ্যাস জমা হয়েছিল। সেই গ্যাস কোনো দাহ্য পদার্থের সংস্পর্শে এসে মগবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই মনে করছেন একাধিক কর্মকর্তা।
বিস্ফোরণের ২৪ ঘণ্টা পরও ভবনটির নিচতলায় ১২ শতাংশ মিথেনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। আর এত বিপুল পরিমাণের মিথেন শুধু গ্যাসের পাইপলাইন থেকেই পাওয়া সম্ভব বলে মনে করছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে তিতাস গ্যাসের তদন্ত দল বলছে, ওই ভবনে বৈধ-অবৈধ কোনো গ্যাসের সংযোগই পাওয়া যায়নি। তাহলে এত মিথেনের উৎস কী?
ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেছেন, তারা ঘটনাস্থলে একটি চোরাই গ্যাসলাইনের অস্তিত্ব পেয়েছেন।
১২ শতাংশ মিথেন
ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর কারণ উদঘাটনে একাধিক সংস্থার তদন্তকারীরা আলামত সংগ্রহের কাজ শুরু করেন মগবাজারের তিনতলা ভবনটির নিচতলায়।
মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে পুলিশের তদন্ত কমিটির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান জানান, বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা নিচতলার কক্ষে ১২ শতাংশ মিথেন গ্যাসের উপস্থিতি পেয়েছেন, যা পাইপলাইনের প্রাকৃতিক গ্যাসের পাশাপাশি সেপটিক ট্যাংকেও জমা হয়।
সমপরিমাণ মিথেন পাওয়ার তথ্য জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত কমিটিও। তবে মিথেনের সঙ্গে আরও দুটি গ্যাসের অস্তিত্ব পাওয়ার কথা নিউজবাংলাকে জানান তদন্ত কমিটির সদস্য সহকারী পরিচালক ছালেহ উদ্দিন। এ দুটি গ্যাস হলো হাইড্রোজেন সালফাইড ও ফসজিন।
সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে যেসব গ্যাস জমা হয়, তার একটি হাইড্রোজেন সালফাইড। আর ফ্রিজ ও এসির কম্প্রেশারে ফসজিন গ্যাস পাওয়া যায়।
ওই ভবনের সেপটিক ট্যাংক দোকানের ভেতরে থাকায় আর বিস্ফোরণের কারণে এসি ফ্রিজ ধ্বংস হওয়ায় এই দুই ধরনের গ্যাসের অস্তিত্ব পাওয়া স্বাভাবিক বলে মনে করছেন তদন্তকারী একাধিক কর্মকর্তা।
মিথেনের ভয়াবহতা
মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও এ ঘটনা তদন্তে গঠিত পুলিশের কমিটির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান জানান, মিথেন গ্যাসের কারণেই এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে। তিনি বলেন, কোনো বদ্ধ জায়গার বাতাসে ১৫ শতাংশ মিথেন গ্যাস জমা হলে তা এমন বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে।
একই তথ্য দিলেন বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. সুলতানা রাজিয়া।
তিনি বলেন, ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পর ১২ শতাংশ মিথেন পাওয়া মানে ঘটনার সময় তার পরিমাণ আরো বেশি ছিল। কারণ বিস্ফোরণের পর সব দেয়াল ভেঙে গ্যাস বেরিয়ে যাওয়ার অনেক রাস্তা তৈরি হয়েছে।
যে মাত্রায় মিথেন পাওয়া গেছে, তাতে এর চেয়েও বড় বিস্ফোরণ ঘটা অস্বাভাবিক কিছু নয় বলে জানান সুলতানা রাজিয়া। ১০ শতাংশ মিথেনের প্রভাবে বিশ্বের অনেক দেশেই আরও বড় বিস্ফোরণের নজির রয়েছে।
কোথা থেকে এলো মিথেন
কেমিক্যাল বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. সুলতানা রাজিয়া জানান, মিথেন হলো প্রাকৃতিক গ্যাস, যার অস্তিত্ব পাওয়া যায় বাসাবাড়ির রান্নার গ্যাসে। সেপটিক ট্যাংকের আবর্জনা থেকেও এই গ্যাস পাওয়া যায়। তবে এত বিপুল পরিমাণ মিথেন সেপটিক ট্যাংক থেকে জমা হবে না বলে মনে করেন তিনি।
সুলতানা রাজিয়া বলেন, ‘পাইপলাইনে ধারাবাহিক সরবরাহ ছাড়া এত মিথেনের উপস্থিতি পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সেখানে গ্যাসের লাইন থাকতে পারে। যেখান থেকে ধারাবাহিকভাবে গ্যাস লিক করে ভবনের কোনো কক্ষে অল্প সময়ে জমা হয়ে থাকতে পারে। তা ছাড়া ভবনের সেপটিক ট্যাংকও অক্ষত আছে। তাই সেপটিক ট্যাংক এই গ্যাসের উৎস হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কম।’
চোরাই গ্যাসলাইন?
ঘটনার পর থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত কয়েক দফা ভবনটিতে গ্যাসলাইন-সংযোগ খোঁজার চেষ্টা করেছে তিতাস গ্যাসের তদন্ত কমিটি। মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর তাদের কাছে ভবনের গ্যাসলাইন সম্পর্কে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকে এড়িয়ে যান তারা।
ঘটনার পরদিন তিতাস গ্যাসের পক্ষ থেকে কয়েকটি গণমাধ্যমের কাছে দাবি করা হয়, ওই ভবেনে বৈধ বা অবৈধ কোনো গ্যাসের লাইনের সংযোগ নেই।
ভবনের গ্যাস-সংযোগের বিষয়ে পুলিশের তদন্ত কমিটির প্রধান মো. আসাদুজ্জামানকেও প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনি বলেন, তদন্তে শেষ না হলে কিছু জানা যাবে না।
অধ্যাপক সুলতানা রাজিয়ার মতো একই কথা জানালেন ফায়ার সার্ভিসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। তিনি বলেন, সুয়ারেজ লাইন ও সেপটিক ট্যাংক থেকে এত মিথেন গ্যাস আসা সম্ভব না। এটা অবশ্যই গ্যাসের লাইনের লিকেজ থেকে হয়েছে।
কিন্তু গ্যাসের লাইন কোথায়, জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, প্রথমে ধ্বংসস্তূপের কারণে চোখের আড়ালে থাকলেও অনুসন্ধানে ভবনে একটি চোরাই গ্যাসের লাইন আবিষ্কার করা গেছে। তবে সেটি দিয়ে গ্যাসের প্রবাহ ছিল কি না, তা তারা যাচাই করে দেখছেন।
ফায়ার সার্ভিসের ওই কর্মকর্তা জানান, ভবনটি প্রথমে আবাসিক ছিল। তখন মালিক হয়তো কারসাজি করে ভবনের পেছন থেকে মাটির নিচে দিয়ে এই চোরাই গ্যাসলাইন টেনেছিলেন। তারপর এটি যখন বাণিজ্যিক ভবন করে ফেলা হয়, তখন থেকে আর গ্যাস-সংযোগের প্রয়োজন পড়েনি। এমনও হতে পারে, লাইনটি তারা ম্যানুয়ালি বন্ধ করলেও এই চোরাই লাইন দিয়ে লিকেজ হয়ে গ্যাস নিচতলার কোথাও জমা হয়েছিল।
ওই কর্মকর্তার কথার সূত্র ধরে ভবনের নিচতলার মূল ফটকের ভেতরে একটি গ্যাসলাইন খুঁজে পাওয়া যায়। যার একটি অংশ প্রক্রিয়াজাত মাংসের চেইনশপ বেঙ্গল মিটের দেয়াল ঘেঁষে ভবনটির ওপরে চলে গেছে আর অপর অংশ ভবনের মাটির নিচে চলে গেছে। বিস্ফোরণের আঘাতে লাইনটি দুই ভাগ হয়ে আছে। তবে সেটি থেকে কোনো ধরনের গ্যাস লিকেজ হচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
নিউজবাংলার সঙ্গে কথা হয় ভবনের দ্বিতীয় তলার ইলেকট্রনিকস পণ্যের গোডাউনের এক কর্মচারীর সঙ্গে। তার নাম মো. তামজীদ। তিনি গোডাউনের মালামাল আনা-নেয়ার কাজ করেন।
তামজীদ বলেন, ‘আমি রেগুলার এখানে মাল আনা-নেয়া করি। ঘটনার দিন দুপুর থেকে এই লাইন দিয়ে গ্যাসের গন্ধ পাইছি। অনেক গন্ধ ছিল।’
আরও পড়ুন:চলমান তাপপ্রবাহে সারা দেশের সঙ্গে পুড়ছে রাজধানী ঢাকাও। প্রচণ্ড গরমে দুর্বিষহ নগর জীবন। এ অবস্থায় রাজধানীর সড়ক-মহাসড়কে পানি ছিটাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। ডিএনসিসির চিফ হিট অফিসারের পরামর্শে এমন উদ্যোগ নিয়েছে সিটি কর্তৃপক্ষ।
শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বায়ু দূষণ রোধ ও তীব্র দাবদাহে শহরকে ঠাণ্ডা রাখতে ডিএনসিসির ওয়াটার স্প্রে (পানি ছিটানো) কার্যক্রম পরিদর্শন করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।
এ সময় তিনি বলেন, ‘দুটি স্প্রে ক্যানন প্রধান সড়কে পানি ছিটাবে। এগুলো বেশ বড় হওয়ায় গলির সড়কে প্রবেশ করতে পারবে না৷ গলির সড়কে পানি ছিটানোর জন্য দশটি ব্রাউজার কাজ করবে। এগুলোর মাধ্যমে সড়কগুলো ভিজিয়ে ঠাণ্ডা রাখা হবে।
‘এছাড়াও ডিএনসিসির পার্কগুলোতে স্প্রে ক্যাননের মতো কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছি। এক সপ্তাহের মধ্যে পার্কগুলোতে কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থা করা হবে।’
এ সময় তিনি বলেন, ‘চিফ হিট অফিসার (সিএইচও) বুশরা আফরিনের পরামর্শে চলমান তীব্র দাবদাহে জনগণকে স্বস্তি দিতে সড়কে পানি ছিটানো এবং ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডে বিনামূল্যে খাবার পানি সরবরাহের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনটি বিশেষ ভ্যানগাড়ি (৫০০ লিটার পানির ট্যাংক সংবলিত) পথচারীদের পানি পান করানোর জন্য নামানো হয়েছে। ভ্যানগুলো বিশুদ্ধ খাবার পানি নিয়ে ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরবে। এই ভ্যানগুলো ছোট আকারে করা হয়েছে যেন শহরের অলিগলিতে প্রবেশ করতে পারে।’
চিফ হিট অফিসারের কার্যক্রম সম্পর্কে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘চিফ হিট অফিসার আমাদের পরামর্শ দিচ্ছেন। হিট অফিসার একজন একক ব্যক্তি। তিনি তো কাজগুলো বাস্তবায়ন করবেন না। তিনি পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু কাজগুলো আমাদের সবাইকে করতে হবে। তার পরামর্শেই জনগণকে স্বস্তি দিতে আমরা এই কাজগুলো করছি।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অনেকে বলছেন যে চিফ হিট অফিসার সিটি করপোরেশন থেকে বেতন পাচ্ছেন। বাস্তবে সিটি করপোরেশন থেকে তিনি একটি টাকাও পান না। এমনকি সিটি করপোরেশনে তার কোনো বসার ব্যবস্থাও নেই।
‘হিট অফিসার নিয়োগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান অ্যাড্রিয়েন আরশট-রকফেলার ফাউন্ডেশন রেসিলিয়েন্স সেন্টার (আরশট-রক)। প্রতিষ্ঠানটি সারা বিশ্বে সাতজন চিফ হিট অফিসার নিয়োগ করেছে এবং তারা সবাই নারী।’
ওয়াটার স্প্রে পরিদর্শনকালে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসি'র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী ও প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর বনানীতে মাঝ সড়কে চলন্ত অবস্থায় যাত্রীবাহী বাসে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নির্বাপনে কাজ করে।
জানা গেছে, শনিবার বিকেলে জে কে এন্টারপ্রাইজ পরিবহনের একটি বাস বনানী আর্মি স্টেডিয়ামের সামনে একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিলে মোটরসাইকেলের ট্যাঙ্কি বিস্ফোরিত হয়ে বাসটিতে আগুন ধরে যায়।
ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তা খালেদা ইয়াসমিন জানান, বিকেল ৪টা ২ মিনিটে যাত্রীবাহী একটি বাসে আগুন লাগার খবর আসে। পরে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নির্বাপন করে। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা-শেরপুর রুটে চলাচল করা জে কে এন্টারপ্রাইজ পরিবহনের বাসটি বনানী আর্মি স্টেডিয়ামের সামনে একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। পরে মোটরসাইকেলটিকে টেনে-হিঁচড়ে বাসটি অনেক দূর নিয়ে আসে। এতে মোটরসাইকেলের তেলের ট্যাঙ্ক বিস্ফোরিত হয়ে বাসটিতেও আগুন লেগে যায়। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলের চালক গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
বিএনপির সঙ্গে দাসত্বের তকমা লেগে আছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ক্ষমতা পাওয়ার জন্য বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করে সাবেক ক্ষমতাসীন দলটি।
জাতীয় নেতা শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তিন নেতার মাজারে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপির বিষয়ে কাদের বলেন, ‘তারা জনগণের সমর্থনকে মূল মনে করে না। তারা মনে করে যে, বিদেশি প্রভুরদের দাসত্ব করলে ক্ষমতা রক্ষা করা যায়, ক্ষমতায় যাওয়া যায়।’
তার অভিযোগ, দাসত্ব করে কীভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায়, সেই দুরভিসন্ধি করছে বিএনপি।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে বিএনপিকে গণতান্ত্রিক দল আমি মনে করি না। কারণ তাদের ইতিহাসটাই হলো গণতন্ত্র হত্যার। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো নজির নেই। তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, প্রহসনে পরিণত করেছে এবং গণতান্ত্রিক বিধি-বিধান তারা দলের মধ্যে কোনোদিন মানেনি।
‘আজকে দলটির যে নেতারা বড় কথা বলেন, তারা কবে দলীয় কাউন্সিল করেছে এবং তাদের কোথায় কাউন্সিল হয়েছে? সাত-আট বছর আগে লা মেরিডিয়ানে তাদের কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিং হয়েছে। ৫০১ জনের জাম্বুজেট মার্কা কমিটি। কাজেই যাদের নিজেদের দলের ভেতরেই গণতন্ত্র নেই, তারা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে, এ আশা আমরা করি না।’
তিন নেতার মাজারে শনিবার আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করে। প্রথমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে ও পরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ওই সময় উপস্থিত ছিলেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা।
পরে সাংবাদিকদের কাছে বাংলার সাধারণ মানুষের কল্যাণে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের অবদান তুলে ধরেন কাদের।
তিনি বলেন, ‘তিনি (শেরো বাংলা) আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন। এ দেশে সাধারণ মানুষের মাঝে যারা রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম জাতীয় নেতা শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক। সাধারণ মানুষকে এই দেশে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন সর্বকালের সবার সেরা বাঙালি জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। শেরে বাংলাকে গ্রাম- বাংলার কৃষকরা কোনোদিন ভুলতে পারবে না।
‘তিনি চিরদিন তাদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন প্রজাস্বত্ব আইন এবং ঋণ সালিশি বোর্ড গঠন করে তিনি মহাজনদের নিপীড়ন-অত্যাচার থেকে বাংলার কৃষককূলকে রক্ষা করেছিলেন। সে জন্য তিনি এখনও স্মরণীয় হয়ে আছেন। আজকের দিনে আমাদের যে প্রত্যয়, যে অঙ্গীকার, সেটা হচ্ছে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক—অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর খিলগাঁওয়ের গোড়ানে খেলতে গিয়ে একটি ভবনের ছাদ থেকে পড়ে এক শিশু নিহত হয়েছে।
শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে পাঁচ তলা ভবনটির ছাদ থেকে পড়ে নিহত হয় সে।
নিহত শিশুর নাম খাদিজা আক্তার (৫)। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শিশুটির ফুফা মোহাম্মদ ইসহাক মিয়া (২০ বছর)।
খাদিজার বাবা মোহাম্মদ ফয়সাল আহমাদ জানান, দুপুরে পাঁচ তলার ছাদে খাদিজা খেলাধুলা করার সময় ছাদ থেকে নিচে পড়ে যায়। এ সময় খাদিজার ফুফা দৌড়ে ধরতে গেলে তিনিও নিচে পড়ে যান।
তিনি জানান, পরে তাদেরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খাদিজা রাত সাড়ে ৮টার দিকে মারা যায় এবং ফারিয়ার ফুফাকে ভর্তি রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া থানা এলাকায়। খিলগাঁওয়ের গোড়ান নবাবীর মোড় বতর্মানে১৪৮ /১ রায়হান সাহেবের বাড়ির ভাড়াটিয়া আমরা।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মহম্মদ বাচ্চু মিয়া বলেন, শিশুটির মরদেহ ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত ছাড়া স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে বলে খিলগাঁও থানার সাথে কথা হয়েছে।
গ্যাস পাইপলাইনে জরুরি কাজের জন্য শনিবার সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে। খবর ইএনবির
তিতাস জানায়, যেসব এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে সেগুলো হলো- শনির আখড়া, বড়ইতলা, ছাপড়া মসজিদ, দনিয়া, জুরাইন, ধোলাইরপাড় ও কদমতলী।
এ সময় আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহে চাপ কম থাকতে পারে বলেও জানিয়েছে তিতাস। গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে কোম্পানি।
রাজধানীর মুগদায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একটি ময়লার গাড়ির ধাক্কায় এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে।
মুগদার বড়বাজারের সামনে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো মাহিন আহমেদ (১৩) মতিঝিল সরকারি আইডিয়াল স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল। সে পরিবারের সঙ্গে উত্তর মুগদার মদিনাবাগে একটি বাসায় থাকত।
মাহিনের খলাত ভাই হিমেল জানান, মাহিনের বাবা একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে মাহিন দ্বিতীয়। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল মাহিন, ওই সময় ময়লার গাড়িটি তাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়।
পরে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে মাহিনের মৃত্যু হয়।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মাসুদ মিয়া জানান, ময়নাতদন্তের জন্য শিশুটির মরদেহ ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে এবং বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।
এ ঘটনায় সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়িটি জব্দ করে চালককে আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:মেট্রোরেলের চলমান প্রকল্পটি সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় নাগরিক সমাজ।
বৃহস্পতিবার সকালে সাভার উপজেলা পরিষদের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় মেট্রোরেলের এমআরাটি-৫ ও এমআরটি-৬-এর চলমান প্রকল্পটি হেমায়েতপুর থেকে নবীনগর জাতীয় স্মৃতিসৌধ অথবা দিয়াবাড়ি থেকে সাভারের রেডিও কলোনি পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এই প্রকল্পে সরকার যদি কোনোরকম জটিলতা মনে করে তাহলে এমআরটি-৬ প্রকল্প উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে বিরুলিয়া হয়ে সাভার রেডিও কলোনি পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা যেতে পারে। পর্যায়ক্রমে তা নবীনগর জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবিও জানান তারা।
কর্মসূচিতে সড়কের উপর দিয়ে সম্ভব না হলে মাটির নিচ দিয়ে মেট্রোরেলের যে প্রকল্প রয়েছে, সেই প্রকল্পে সাভারকে যুক্ত করার দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধন কর্মসূচির সভাপতিত্ব করেন সাভার নাগরিক কমিটির সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সভাপতি কামরুজামান খান।
তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেলের প্রকল্প সাভার পৌর এলাকার শেষ সীমানা পর্যন্ত সম্প্রসারণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বরাবর আবেদন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিবকে এ ব্যাপারে অবগতপত্র দেয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে রেলমন্ত্রী, সচিব ও মহাপরিচালকে পত্র দিয়ে এবং সরাসরি সবকিছু অবগত করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সুবিধাবঞ্চিত সাভারবাসী রেলসেবা পাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছে। সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সাভারের লাখ লাখ মানুষ মেট্রেরেলের সুবিধা প্রত্যাশা করেন। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া হক, সাভার নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষানুরাগী সালাহউদ্দিন খান নঈম, সাভার পৌর আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মিজানুর রহমান মাসুদ, সংস্কৃতিকর্মী স্বরণ সাহা, প্রভাত ডি রোজারিও, বন্ধুরহাট যুব সংগঠনের আলোকুর রহমান, জাগরণী থিয়েটারের সভাপতি আজিম উদ্দিনসহ আরও অনেকে।
মন্তব্য