গত ২০ বছরে বিশ্বজুড়ে অন্তত এক হাজার ৭০০ সাংবাদিক খুন হয়েছেন। রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ)-এর একটি বিশ্লেষণে এ তথ্য উঠে এসেছে। এই হিসাবে বছরে গড়ে ৮০ জনের বেশি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।
সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা প্যারিসভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থাটি বলছে, ২০০৩ থেকে ২০২২ সালের দুটি দশক তথ্যের অধিকারের পরিষেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য মারাত্মক সময় ছিল।’
আরএসএফ মহাসচিব ক্রিস্টোফ ডেলোয়ার বলেন, ‘ব্যক্তিত্ববান, প্রতিভাবান এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ব্যক্তিরা তথ্য সংগ্রহ, সত্যের সন্ধান এবং সাংবাদিকতার প্রতি তাদের আবেগের মূল্য জীবন দিয়ে পরিশোধ করেছেন।’
আল জাজিরার টেলিভিশন সংবাদদাতা শিরিন আবু আকলেহ পশ্চিম তীরের জেনিনে একটি শরণার্থী শিবিরে সামরিক অভিযানের কভার করার সময় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হওয়ার ৭ মাস পর এ প্রতিবেদনটি আসে। ১৯৯৬ সালে আল জাজিরা প্রতিষ্ঠার পর চ্যানেলটির ১২ সাংবাদিক খুন হয়েছেন।
সবচেয়ে বিপজ্জনক ইরাক-সিরিয়া
আরএসএফ বলছে, সাংবাদিক হিসেবে কাজ করার জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ হচ্ছে ইরাক এবং সিরিয়া। এই দুই দেশে গত ২০ বছরে ৫৭৮ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন; যা বিশ্বব্যাপী মোটের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি।
এই দুই দেশের পর রয়েছে মেক্সিকো, যেখানে ২০ বছরে খুন হয়েছেন ১২৫ জন সাংবাদিক। এ ছাড়া ফিলিপাইন ১০৭, পাকিস্তানে ৯৩, আফগানিস্তান ৮১ এবং সোমালিয়া ৭৮ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন দুই দশকে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সংবাদমাধ্যমকর্মীর ৮০ শতাংশ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ১৫টি দেশে।
‘সিরিয়া যুদ্ধ তুঙ্গে থাকার কারণে ২০১২ এবং ২০১৩ সাল ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। ২০১২ সালে ১৪৪টি এবং তার পরের বছর ১৪২টি হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে।’
ভ্লাদিমির পুতিনের দায়
ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে ২০২২ সালে মৃত্যুর সংখ্যা আবার বেড়েছে। চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ৫৮ জন সাংবাদিক তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করার সময় খুন হন। ২০২১ সালে সংখ্যাট ছিল ৫১।
প্রতিবেশী ইউক্রেনে ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। ইউক্রেনে যুদ্ধ চলাকালীন ৮ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। যেখানে গত ১৯ বছরে দেশটিতে ১২ জন নিহত হয়েছিলেন।
রাশিয়ার পর সাংবাদিকদের জন্য ইউরোপের সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ এখন ইউক্রেন। পুতিনের দেশে গত ২০ বছরে ২৫ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন।
আরএসএফ বলছে, ‘ভ্লাদিমির পুতিন রশিয়ার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে দেশটির সংবাদপত্রের স্বাধীনতার উপর পরিকল্পিত আগ্রাসন চলেছে।
‘এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঘটনাটিতে ঘটে ২০০৬ সালের ৭ অক্টোবর। সাংবাদিক আনা পলিটকভস্কায়া ছিলেন পুতিনের ঘোর সমালোচক। পলিটকভস্কায়া রাশিয়ার বড় ধরনের দুর্নীতির খবর ফাঁস করেছিলেন। নিজের অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে চারবার গুলি করা হয় পলিটকভস্কায়াকে।’
সবচেয়ে মারাত্মক মহাদেশ আমেরিকা
বিশ্বব্যাপী যেসব এলাকায় সশস্ত্র সংঘাত হচ্ছে, সেখানে সাংবাদিকরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকবেন, এটাই স্বাভাবিক। তবে আরএসএফ বলছে অন্যকথা।
‘যেসব দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো যুদ্ধ সংঘটিত হয় না সে দেশগুলোও সাংবাদিকদের জন্য খুব একটা নিরাপদ নয়। যেসব দেশ সাংবাদিক হত্যায় শীর্ষে আছে, সেগুলোর বেশিরভাগেই যুদ্ধ চলছে না।
‘আসলে, গত দুই দশকে ‘যুদ্ধের অঞ্চলের’ তুলনায় ‘শান্তির অঞ্চলে’ বেশি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব সাংবাদিক সংগঠিত অপরাধ এবং দুর্নীতির তদন্ত করছিল।’
প্রায় অর্ধেক সাংবাদিক হত্যার জন্য আমেরিকায় দায়ী, মেক্সিকো, ব্রাজিল, কলম্বিয়া এবং হন্ডুরাস বেশিরভাগ মৃত্যুর জন্য দায়ী।
বছরে বিশ্বজুড়ে যতজন সাংবাদিক খুন হন তার অর্ধেক ঘটনা ঘটে আমেরিকায়। মহাদেশটির বেশিরভাগ হত্যাকাণ্ড ঘটে মেক্সিকো, ব্রাজিল, কলম্বিয়া এবং হন্ডুরাসে।
আরএসএফ জানায়, আমেরিকা এখন স্পষ্টভাবেই সাংবাদিকদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক মহাদেশ।
আমেরিকায় জব্দ হওয়া রুশ ব্যবসায়ীর অর্থ ইউক্রেনকে দিয়ে দেয়ার বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড।
সিএনএনের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ওয়াশিংটনে ইউক্রেনের আইনজীবী অ্যান্ড্রি কোস্টিনের সঙ্গে বৈঠকে গারল্যান্ড এমনটি জানান।
ওই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘ইউক্রেনে ব্যবহারের জন্য বাজেয়াপ্ত করা রুশ সম্পদ দেয়ার বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছি। ’
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর নিষেধাজ্ঞার দিয়ে গত বছরের এপ্রিলে রুশ ব্যবসায়ী কনস্ত্যান্তিন মালোফেয়েভের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে যুক্তরাষ্ট্র। সেই সম্পদ থেকেই ইউক্রেনকে অর্থ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল।
সিএনএনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়ে অর্থগুলো ইউক্রেনে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ইউক্রেনের আইনজীবী কোস্টিন। তার মতে, রুশ ব্যবসায়ীর জব্দ হওয়া ৫৪ লাখ ডলার ইউক্রেন পুনর্গঠনে সহায়তা করবে।
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অর্থায়নের অন্যতম উৎস হিসেবে দেখা হয় রুশ ব্যবসায়ী মালোফেয়েভেকে।
আরও পড়ুন:দখলকৃত পশ্চিম তীরে শুক্রবার ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিরস্ত্র এক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির বরাত দিয়ে আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, নাবলুসের দক্ষিণে হুওয়ারা শহরের কাছে শুক্রবার সন্ধ্যায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর গুলিতে ২৬ বছর বয়সী আবদুল্লাহ সামি কালালওয়েহ নিহত হন।
ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্টের মুখপাত্র আহমাদ জিব্রিল স্থানীয় বার্তা সংস্থা ওয়াফাকে জানায়, ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে গুরুতর আহত হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই কালালওয়েহর মৃত্যু হয়।
ওয়াফার তথ্য অনুযায়ী, কালালওয়েহের মৃত্যুতে এ বছর এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আট শিশু ও বয়স্ক এক নারীসহ ৩৬ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। এ সময়ে দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে এক শিশুসহ ইসরায়েলি ছয় বেসামরিক এবং ইউক্রেনের এক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, সন্দেহভাজন একজন হুওয়ারা এলাকায় সেনা ঘাঁটি সংলগ্ন সামরিক ফাঁড়ির দিকে হেঁটে যাওয়ার পর বাহিনীর সদস্যরা ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
সেনাবাহিনী আরও জানায়, কালালওয়েহ এক সেনাকে আক্রমণের চেষ্টা করেছিলেন। ওই স্থানে থাকা আরেক সেনা তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালান।
ফিলিস্তিনি ওই যুবক নিরস্ত্র ছিলেন বলে স্বীকার করেছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।
এর আগে শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক পূর্ব জেরুজালেমসহ দখলকৃত পশ্চিম তীরে নিরাপত্তা বাহিনীর সব কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে পরিচালনা করতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি এক বিবৃতিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অভিযানগুলোতে নিয়ম মেনে বলপ্রয়োগের ওপর জোর দেন।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে চীনের নজরদারি বেলুন ওড়ার খবরে যে রাজনৈতিক শোরগোল শুরু হয়েছে, তাতে আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের ঘোষিত বেইজিং সফরই শুধু বাতিল হয়নি, দুই দেশের ক্রমাবনতিশীল সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা ব্যাহত হওয়ার শঙ্কাও তৈরি হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, গুপ্তচরবৃত্তির উদ্দেশ্যে বেলুন পাঠানোর ঘটনাকে যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের ‘অগ্রহণযোগ্য লঙ্ঘন’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন আমেরিকার কর্মকর্তারা। দেশটির কিছু আইনপ্রণেতা চীনকে জবাবদিহির মুখোমুখি করতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিক্লেন শুক্রবার থেকে শুরু হতে যাওয়া সফর আপাতত বাতিলের ঘোষণা দিয়ে জানিয়েছেন, পরিস্থিতি অনুকূলে এলে তিনি বেইজিং সফরের প্রস্তুতি নেবেন, তবে নীতি বিশ্লেষকদের ভাষ্য, চীনের পক্ষ থেকে যথেষ্ট সদিচ্ছা দেখানো না হলে খুব দ্রুত দেশটিতে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই ব্লিঙ্কেনের।
আমেরিকার আকাশে উড়তে থাকা বেলুনটি আবহাওয়াসংক্রান্ত কাজের জন্য মোতায়েন করা হয় দাবি করে চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সেটি ভুলবশত যুক্তরাষ্ট্রের আকাশসীমায় ঢুকে পড়ে।
এ নিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ে এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ড্যানিয়েল রাসেল বলেন, চীনের এ ‘হাস্যকর অজুহাত’ কাজে আসবে না।
তার মতে, গত বছরের নভেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ বাড়ানোর বিষয়ে যে ঐকমত্য সৃষ্টি হয়েছিল, সে অবস্থায় ফেরা কঠিন হয়ে যাবে।
বৈশ্বিক দুই পরাশক্তির মধ্যে গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে সম্পর্কের অবনতি হচ্ছিল। গত বছরের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফরে যাওয়ার পর সে সম্পর্ক তলানিতে নেমে যায়। পেলোসির সফরের প্রতিক্রিয়ায় তাইওয়ান ঘিরে সামরিক মহড়া চালায় চীন।
এমন বাস্তবতায় বাইডেন প্রশাসনের আশা ছিল, সম্পর্ক মেরামতের একটি রাস্তা তৈরি হবে, যাতে করে সংঘাত ঠেকানো যাবে, কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি হয়ে দেখা দিল বেলুন ওড়ানোর ঘটনা।
আরও পড়ুন:ভারতের মধ্যপ্রদেশে প্রচলিত চিকিৎসার অংশ হিসেবে উত্তপ্ত রড দিয়ে ৫১ বার খোঁচা দেয়া হয়েছে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত এক শিশুকে।
এ ঘটনার দুই সপ্তাহ পর হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ৩ মাস বয়সী মেয়েটির।
রাজ্যের শাহদোল জেলার আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে এনডিটিভির শনিবারের প্রতিবেদনে জানানো হয়।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, সমাধিস্থ করার পর শিশুটির মরদেহ আবার তোলা হয়েছে। শনিবার শিশুটির ময়নাতদন্ত হবে।
শাহদোল জেলা প্রশাসক বন্দনা বৈধ জানান, নারী ও শিশু উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ হাসপাতালে পৌঁছার পর দেখতে পায়, অন্ধ বিশ্বাস থেকে ১৫ দিন আগে এমন ঘটনা ঘটানো হয়। নিউমোনিয়ার চিকিৎসা না করানোয় শিশুটির অবস্থার অবনতি হয়।
তিনি আরও জানান, স্থানীয় এক স্বাস্থ্যকর্মী শিশুটিকে গরম রড দিয়ে খোঁচা না দিতে তার মাকে অনুরোধ করেছিলেন।
মধ্যপ্রদেশের অনেক আদিবাসী-অধ্যুষিত এলাকায় নিউমোনিয়ার চিকিৎসা করার জন্য উত্তপ্ত রড দিয়ে খোঁচা দেয়ার রীতি প্রচলিত।
স্থানীয় চিকিৎসক ও যুব কংগ্রেসের সভাপতি বিক্রান্ত ভুরিয়া জানান, রড দিয়ে খোঁচা দিলে মৃত্যু হতে পারে, এটি ব্যথা কমানোর একটি উপায়, কিন্তু সমস্যা হলো সংক্রমণটি ছড়িয়ে মৃত্যু হতে পারে।
বিজেপির মুখপাত্র ডা. হিতেশ বাজপেয়ি বলেন, ‘এই ধরনের রীতি এখনও প্রচলিত এবং আমি এলাকার প্রধান মেডিক্যাল অফিসারকে একটি অভিযোগ নথিভুক্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করছি।’
আরও পড়ুন:ভারতের শীর্ষস্থানীয় ধনী ব্যবসায়ী গৌতম আদানির বাণিজ্যিক সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ এনে প্রতিবেদন প্রকাশের পর এই ইস্যুতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গন।
বিরোধী রাজনৈতিক দলের এমপিরা এই অভিযোগের ব্যাপারে তদন্তের দাবি জানিয়ে সংসদের অধিবেশন শুক্রবারও দ্বিতীয় দিনের মতো ভণ্ডুল করে দিয়েছেন। সূত্র: বিবিসি বাংলা
অনেকের অভিযোগ, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে গৌতম আদানি দ্রুত সময়ের মধ্যে বিপুল ধন-সম্পদের মালিক হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক হিনডেনবার্গ রিসার্চ নামের গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে গত সপ্তাহে গৌতম আদানির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে কারসাজি ও আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়। এই অভিযোগ ওঠার পর থেকেই আদানি গ্রুপের সব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দরপতন অব্যাহত রয়েছে।
অবশ্য আদানি গ্রুপের পক্ষ থেকে সব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
ভারতীয় সংসদ লোকসভায় শুক্রবার সকালের অধিবেশনে বিরোধী নেতারা অভিযোগের তদন্ত দাবি করলে উভয় কক্ষের অধিবেশন মুলতবি হয়ে যায়।
আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তের জন্য যৌথ সংসদীয় কমিটি অথবা সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে একটি প্যানেল গঠনের দাবি জানায় বিরোধীরা।
আরও পড়ুন:অর্থনীতিসহ নানা সংকটে জর্জরিত পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমেছে। কমতে কমতে দেশটির রিজার্ভ নেমেছে ৩১০ কোটি ডলারে। এই পরিমাণ রিজার্ভ দিয়ে দেশটির তিন সপ্তাহেরও কম সময়ের আমদানি খরচ মেটানো সম্ভব।
স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তানের (এসবিপি) সর্বশেষ ২৭ জানুয়ারির তথ্যের বরাতে বিশ্লেষকরা এমন ধারণা করছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ডন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারির পর এই মুহূর্তে পাকিস্তানের রিজার্ভ সবচেয়ে কম। এখন যে রিজার্ভ আছে তাতে সবমিলিয়ে হয়তো ১৮ দিনের আমদানি ব্যয়ের খরচ মেটানো যাবে।
স্থানীয় বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আরিফ হাবিব লিমিটেডের (এএইচএল) গবেষক তাহির আব্বাস রয়টার্সকে বলেছেন, দেশের সঙ্কট এড়াতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নতুন অর্থপ্রবাহ এবং আইএমফের সহায়তা দরকার।
অর্থাভাবে বিদেশ থেকে আমদানি যখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে, সে সময় বাজারে অনেক নিত্যপণ্য নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। এর কারণ, বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির জন্য পর্যাপ্ত ডলার পাওয়া যাচ্ছে না।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ব্যাংকগুলো এলসি খুলতে চাইছে না। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, তারা এই ধরনের কোনো নির্দেশ দেয়নি। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ সুনির্দিষ্ট, আর সেই বিষয়টি কেবল একজন বলেননি, বহু ব্যবসায়ীই দিচ্ছেন একই তথ্য।
সম্প্রতি স্থবিরতা কাটিয়ে আর্থিক সহায়তার ব্যাপারে আইএমএফের সঙ্গে পাকিস্তানের আলোচনা শুরু হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সংস্থাটির একটি প্রতিনিধি দল পৌঁছেছে পাকিস্তানে।
এ অবস্থায় শুক্রবার টেলিভিশনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘আমরা অকল্পনীয় অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছি। আইএমএফের যেসব শর্ত, সেগুলো ধারণাতীত। তবে আমাদের শর্তগুলো মেনে নিতে হবে।’
রিজার্ভে নতুন অর্থ যোগ না হলে এই মজুদ দিয়ে যে আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে তা সত্যিকার অর্থেই আশঙ্কাজনক। অবশ্য একটি দেশের আমদানির জন্য তিন মাসের রিজার্ভকে ধরা হয় নিরাপদ।
রিজার্ভে প্রতিনিয়ত অর্থ যোগ হতে থাকে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের কারণে। পাকিস্তানে এই দুটি আয়েও দেখা দিয়েছে ভাটা।
বিপদের এই সময়ে রেমিট্যান্স গতি হারিয়েছে দেশটিতে। ব্যাংকিং চ্যানেলের বদলে হুন্ডিতেই অর্থ পাঠাচ্ছে প্রবাসীদের একটি বড় অংশ। কারণ, ব্যাংকের চেয়ে সেখানে দর পাওয়া যায় বেশি। খোলাবাজারে এক ডলারে এখন বিক্রি হচ্ছে ২৭১ রুপিতে।
যদি আইএমএফ হাত বাড়িয়ে না দেয় এবং আরও কিছু সহায়তা না আসে, তাহলে শ্রীলঙ্কার পর দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পাকিস্তানও। চলতি বছরও কয়েক বিলিয়ন ডলারের ঋণ পরিশোধ করতে হবে তাদের। কিন্তু রিজার্ভ যেভাবে কমছে, তাতে নিত্যপণ্য আমদানিতেই তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা, সেখানে ঋণ পরিশোধ হবে বিলাসিতা।
দুর্বল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ইতোমধ্যেই পাকিস্তানে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ কমিয়ে দিয়েছে। গত জুলাই-নভেম্বর অর্থবছরে পাকিস্তানে ৪৩০ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ হয়েছে; যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫১ শতাংশ কম।
আরও পড়ুন:চীনের একটি গুপ্তচর বেলুন কয়েক দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশসীমায় উড়ছে জানিয়ে দেশটির এক কর্মকর্তা বলেছেন, নিরাপত্তা ঝুঁকির শঙ্কায় বস্তুটিকে গুলি না করতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে পরামর্শ দিয়েছেন সামরিক কর্মকর্তারা।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক কর্মকর্তা বেলুনের অবস্থানের বিষয়ে জানান বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
আমেরিকার কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, আকাশসীমায় বেলুন দেখে একে ধ্বংস করতে উদ্যত হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক যুদ্ধবিমান, তবে জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা বাইডেনকে পরামর্শ দেন, বেলুনের ধ্বংসাবশেষ নাগরিকদের জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে, যা মেনে নেন প্রেসিডেন্ট।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কর্মকর্তাদের একজন সাংবাদিকদের বলেন, আকাশসীমায় প্রবেশের পর বেলুনটিকে ‘হেফাজতে’ নেয় যুক্তরাষ্ট্র। চালকসহ সামরিক বিমান দিয়ে একে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।
এদিকে ‘বেশি উচ্চতার নজরদারি বেলুন’ শনাক্তের কথা জানিয়েছে কানাডার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও।
ওই বেলুনটি চীনের কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এ বিষয়ে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে শুক্রবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের দাবি যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য