পাকিস্তানের ধ্বংস ঠেকাতে সেনাবাহিনী প্রধান (সিওএএস) জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়াকে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইসলাম (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান। হত্যাচেষ্টার পর শুক্রবার সন্ধ্যায় লাহোরের শওকত খানুম হাসপাতাল থেকে দেয়া প্রথম ভাষণে এ আহ্বান জানান ইমরান।
তিনি বলেন, ‘আপনি (সিওএএস) যদি কুলাঙ্গারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেন তবে জাতি ভেঙে পড়তে শুরু করবে।’
পিটিআই প্রধান ইমরান খান দাবি করেন, সেনাবাহিনীর সহায়তায় পাকিস্তানকে কেবল তার দল পিটিআই ঐক্যবদ্ধ করতে পারবে।
ইমরান বলেন, ‘সামরিক বাহিনী যদি দেশকে একত্রিত করতে পারত, তবে পূর্ব পাকিস্তান ভেঙে যেত না। শুধু রাজনৈতিক দলগুলো দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে, সেনাবাহিনী তাদের সহায়তা করে। আমরা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিইনি।’
পাঞ্জাব প্রদেশের ওয়াজিরাবাদে আগাম নির্বাচনের দাবিতে আয়োজিত ইসলামাবাদ অভিমুখী লং মার্চে বৃহস্পতিবার ইমরান খানের ওপর বন্দুক হামলা হয়। তার পায়ে গুলি লাগলেও, তা অপসারণ করা হয়েছে। তিনি এখন শঙ্কামুক্ত। ভর্তি আছেন লাহোরের শওকত খানুম হাসপাতালে।
হত্যার পরিকল্পনার বিষয়ে আগেই জানতেন বলে দাবি করে ভাষণে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, ‘হামলার আগের দিন জানতে পারি গুজরাটের ওয়াজিরাবাদে তারা আমাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছে।’
ওই ঘটনার পেছনে যে তিনজনের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন, তাদের পদত্যাগ দাবি করেন ইমরান।
তিনি বলেন, ‘একটি জাতি ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত স্বাধীন হয় না। হামলায় জড়িত তিন জনেরই পদত্যাগ করা উচিত। অন্যথায়, তদন্ত এগুবে না।’
এক পর্যায়ে পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি উমর আতা বন্দিয়ালকে উদ্দেশ্য করে ইমরান বলেন, ‘দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দলের নেতা ‘ন্যায়বিচার পাচ্ছেন না’। গত ছয় মাসে আমার সঙ্গে যা হয়েছে, তা কখনও শত্রুর সঙ্গে কোনো রাষ্ট্র করেনি।
‘আমি সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার জিতেছি। ক্রিকেটে পাকিস্তানের সম্মান বাড়িয়েছি। শওকত খানম হাসপাতাল আন্তর্জাতিকভাবে বিখ্যাত। দুটি বিশ্ববিদ্যালয় করেছি। তারপর দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল গঠন করেছি।’
অতীতের সরকারের ওপর বিরক্ত হওয়ার কারণেই জনগণ পিটিআইকে ভোট দিয়েছে বলে দাবি করেন ইমরান খান। পিএমএল-এন এবং পিপিপিকে কটাক্ষ করে ইমরান বলেন, ‘দুই দল ব্যাপক দুর্নীতি করে দেশের ঋণ বাড়িয়েছে।’
‘জনগণ আমাকে ভোট দিয়েছে কারণ তারা ওদের ওপর বিরক্ত ছিল। কিন্তু কমিশন এখন বলছে, পরিবর্তনের সময় এসেছে। তাদের ফিরিয়ে আনা হবে।’
গত ছয় মাসের ঘটনা স্মরণ করে ইমরান বলেন, ‘কোনো সরকারই আস্থা ভোটে পরাজিত হয় না। কারণ সরকারের কাছে অর্থ থাকে।
‘এমনটা হয়েছে কারণ আমেরিকার কূটনীতিক ডোনাল্ড লু আমাদের রাষ্ট্রদূতকে হুমকি দিয়েছিলেন। তাকে বলা হয়েছিল, ইমরান খানকে সরিয়ে না দিলে পাকিস্তান সমস্যায় পড়বে। তারপর অর্থের বিনিময়ে আমাদের আইনপ্রণেতাদের আনুগত্য কিনে নেয়া হয়।
‘ক্ষমতাসীন পিটিআই এসব দর কষাকষিতে না জড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কারণ এটার অর্থ জাতি এবং জনগণের অর্থ চুরি করা। তারপর সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। অনেকেই ভেবেছিলেন ইমরান শেষ হয়ে গেছে, আর ফিরতে পারবে না। তবে পাকিস্তানিরা এমন এক জাতি, যারা অসম্ভবকে সম্ভব করে।’
পিপিপি এবং পিএমএল-এনের মতো নিজের দল কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তৈরি হয়নি জানিয়েছে ইমরান দাবি করেন, জনগণের সমর্থনে তার দল ক্ষমতায় এসেছিল।
পিটিআই প্রধান বলেন, ‘জনগণ যেভাবে আমাকে সমর্থন করেছিল, আমি অবাক হয়েছিলাম। আমরা ২৫ মে লং মার্চ ঘোষণা করি। আমার মেয়াদে তারা তিনটি লং মার্চ করেছে। এটা করতে পেরেছে কারণ আমরা আইন ও সংবিধানে বিশ্বাস করি।
‘আমরা ভেবেছিলাম তারা আমাদের অনুমতি দেবে। কারণ আমরা তাদের অনুমতি দিয়েছিলাম। কিন্তু এর পরিবর্তে আমাদের নেতাকর্মীরা সহিংসতার শিকার হচ্ছে।’
সরকারি সংস্থাগুলো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ইমরান। তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ে উপনির্বাচনের সময় সবগুলো রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার হয়েছিল, ব্যাপক কারচুপি হয়েছিল। তারপরও পিটিআই নির্বাচনে জয়লাভ করে।
‘এরপর শুরু হয় হুমকি-ধমকি। ইসলামাবাদ থেকে মেজর জেনারেল ফরসাল নামে একজন এসেছিলেন। পিটিআইকে কীভাবে সোজা করা যায়, সেটি তিনি দেখবেন বলে শাসান।
‘পিটিআইপন্থী মিডিয়া এবং সাংবাদিকদের ওপর কড়াকড়ি আরোপ হয়। আমাকে ছেড়ে যেতে এমপিদের ভয় দেখানো হয়। তাদের ব্ল্যাকমেইল করা হয়।’
তোশাখানা রেফারেন্সে অযোগ্য ঘোষণা করতে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনকে (ইসিপি) ‘ব্যবহার’ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ইমরান খান। তিনি বলেন, ‘তোশাখানার পুরো রেকর্ড তোশাখানার কাছে আছে। এখানে চুরির কোনো সুযোগ নেই। তারপরও আমাকে অযোগ্য করে দিয়েছে। তারা আমাকে এমন একজনের সঙ্গে তুলনা করছে, যার বিদেশে কোটি কোটি টাকার সম্পদ আছে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিকান্দার সুলতান রাজাকে ‘শরিফ পরিবারের সেবক’ দাবি করে ইমরান বলেন, ‘ইসিপির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমরা আদালতে যাব।’
২৩ অক্টোবর কেনিয়ায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন পাকিস্তানের অনুসন্ধানী সাংবাদিক আরশাদ শরীফ। তার প্রসঙ্গ টেনে ইমরান বলেন, ‘আরশাদ শরীফের সঙ্গে যা হয়েছে, জাতি কখনই তা ভুলবে না।
‘সাংবাদিকরা এবং আরশাদের পরিবার জানে কেন তাকে দুবাই আশ্রয় নিতে হয়েছিল। কারণ তাকে কেনা যায়নি, ভয় দেখিয়েও কাজ হয়নি। তার শাহাদাৎ পাকিস্তানের অন্যতম মর্মান্তিক ঘটনা।’
পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান দাবি করেছেন, তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল চারজন।
তিনি বলেন, ‘আমি একটি ভিডিও তৈরি করেছি। সেখানে তাদের নাম দিয়েছি। ভিডিওটি বিদেশে লুকিয়ে রেখেছি, কিছু হলে এটি প্রকাশ করা হবে। ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এই চক্রান্তের তথ্য পেয়েছিলাম।’
ভাষণের শেষে পিটিআই প্রধান ইমরান খান সুস্থ হয়ে ফের রাস্তায় নামার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, ‘সুস্থ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইসলামাবাদমুখী লং মার্চের ডাক দেব। আপনারা স্বাধীনতার সঙ্গে আপস করবেন না। কারণ ক্রীতদাস জাতিকে বিশ্বে সম্মান দেয়া হয় না। তারা কখনো উন্নতি করতে পারে না।’
আরও পড়ুন:‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানের প্রখ্যাত শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায় আর নেই, যার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে শনিবার তার মৃত্যু হয়।
গত সপ্তাহ থেকেই এ শিল্পী হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিলেন। জানুয়ারিতে হাসপাতালে ভর্তি করানোর সময় তার নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তাই স্নায়ু এবং নাক-কান ও গলা বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা হয় তার।
ফেব্রুয়ারির শুরুতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, প্রতুলের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। দ্রুত তাকে কার্ডিওলজি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালে শিল্পীর ফুসফুসেও সংক্রমণ দেখা দেয়। দ্রুতই শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।
প্রতুলের গাওয়া অন্যতম জনপ্রিয় গান হলো ‘আমি বাংলায় গান গাই’, ‘ডিঙ্গা ভাসাও সাগরে সাথী রে’। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তার গানের গুণমুগ্ধ ছিলেন। মমতার তত্ত্বাবধানেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাকে।
বাংলাদেশের বরিশাল জেলায় ১৯৪২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। বাবা ছিলেন সরকারি স্কুলের শিক্ষক। শৈশব থেকেই গান লিখে তাতে সুর দিয়ে গাওয়ার ঝোঁক ছিল তার।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে পাদপ্রদীপের আলোয় আনে তার গাওয়া ‘আমি বাংলায় গান গাই’। এ ছাড়া সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের গল্প অবলম্বনে তৈরি ‘গোঁসাইবাগানের ভূত’ ছবির নেপথ্য শিল্পী ছিলেন তিনি।
তার মতে, সৃষ্টির মুহূর্তে লেখক-শিল্পীকে একা হতে হয়। তারপর সেই সৃষ্টিকে যদি মানুষের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া যায়, কেবল তাহলেই সেই একাকিত্বের সার্থকতা। সেই একক সাধনা তখন সকলের হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন:পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় হারনাই জেলায় শুক্রবার শ্রমিক বহনকারী গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন।
দেশটির কোয়েটা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা শাহজাদ জাহরি এএফপিকে জানান, হারনাই জেলায় এ বোমা বিস্ফোরণে ১০ খনিশ্রমিক নিহত হন।
একই জেলার আরেক জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা সেলিম তারিন এএফপিকে বলেন, ‘শ্রমিকরা কাজের জায়গা থেকে বাজারে কেনাকাটার জন্য যাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই তাদের গাড়িটি আক্রমণের শিকার হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি ছিল একটি আইইডি বিস্ফোরণ।আমরা হামলার তদন্ত করছি।’
হারনাই দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটা থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি জেলা।
কোনো গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করেনি, তবে বেলুচ লিবারেশন আর্মি প্রায়ই অন্যান্য প্রদেশের নিরাপত্তা বাহিনী বা পাকিস্তানিদের, বিশেষ করে বেলুচিস্তানের পাঞ্জাবিদের বিরুদ্ধে মারাত্মক হামলার দাবি করে।
আরও পড়ুন:পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে সেনাবাহিনীর আলাদা তিন অভিযানে অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) শনিবার এক বিবৃতিতে জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নিরাপত্তা বাহিনী প্রদেশের লাক্কি মারওয়াত, কারাক ও খাইবার জেলায় অভিযান চালায়।
এতে আরও বিবৃতিতে বলা হয়, লাক্কি মারওয়াতে অভিযানে ১৮ সন্ত্রাসী নিহত ও ছয়জন আহত হন। কারাক জেলায় আরও ৮ সন্ত্রাসী নিহত হন।
সেনাবাহিনী আরও বলেছে, তাদের তৃতীয় অভিযানটিতে গোষ্ঠীটির নেতাসহ ৪ সন্ত্রাসী নিহত ও দুজন আহত হন।
অভিযানে বিপুল পরিমাণ সমরাস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।
এলাকায় অন্য সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি নির্মূল করতে একটি ক্লিয়ারেন্স অপারেশন চালানো হচ্ছে।
সেনাবাহিনী বলেছে, দেশ থেকে সন্ত্রাসবাদের বিপদ নির্মূল করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী।
আরও পড়ুন:ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরুতে ২৮ বছর বয়সী বাংলাদেশি এক নারীর মরদেহ পাওয়া গেছে।
তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ ধারণা করছে।
পুলিশ জানায়, একটি অ্যাপার্টমেন্টে গৃহকর্মীর কাজ করতেন ওই নারী। বৃহস্পতিবার কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে।
বাহিনীটি আরও জানায়, শুক্রবার সকালে স্থানীয়রা একটি নির্জন এলাকায় নারীর মৃতদেহ দেখতে পান। তারা তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে খবর দেন।
কর্ণাটক থেকে পিটিআই শনিবার এ খবর জানায়।
এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, প্রাণ হারানো নারী বাংলাদেশি নাগরিক, যিনি ছয় বছর ধরে ভারতে বসবাস করছিলেন।
তার কোনো বৈধ কাগজপত্র ছিল না। তবে তার স্বামীর বৈধ পাসপোর্ট রয়েছে এবং তিনি মেডিক্যাল ভিসায় ভারতে প্রবেশ করেছিলেন।
ওই নারী বৃহস্পতিবার তার সহকর্মীকে বলেছিলেন, তার কিছু ব্যক্তিগত কাজ আছে এবং দেরি হতে পারে। তাই সহকর্মীকে বলেন তাকে ছাড়াই চলে যেতে। তবে বাড়ি ফিরতে নারীর দেরি হলে তার স্বামী রামমূর্তি নগর থানায় অভিযোগ করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারী স্বেচ্ছায় কোনো নির্জন জায়গায় গিয়েছিলেন পরিচিত কারও সঙ্গে দেখা করার জন্য। শুক্রবার সকালে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তার মাথায় গুরুতর জখমের চিহ্ন ছিল।
তথ্য পাওয়ার পর ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ও ডগ স্কোয়াড নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পূর্ব বিভাগ পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (ডিসিপি) দেবরাজ।
আরও পড়ুন:ভারতের মধ্যাঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১২ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন।
নয়াদিল্লি মাওবাদীদের দীর্ঘস্থায়ী সহিংসতা দমনে পদক্ষেপ জোরদার করেছে। শুক্রবার পুলিশ এই খবর জানায়।
কয়েক দশকের মাওবাদী সহিংসতায় ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হন।
বিদ্রোহীদের দাবি, তারা প্রান্তিক আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।
সহিংসতার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছত্রিশগড়ের বিজাপুর জেলার বন-জঙ্গলে বৃহস্পতিবার এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা সুন্দররাজ পি. এএফপিকে বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ১২ মাওবাদী নিহত হয়েছে।’
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে দুই শতাধিক মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হন।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, সরকার আশা করছে ২০২৬ সালের মধ্যে বিদ্রোহীদের দমন করা সম্ভব হবে।
বিদ্রোহীরা গত কয়েক বছরে সরকারি সেনাদের টার্গেট করে বেশ কিছু প্রাণঘাতী হামলা চালায়।
চলতি মাসের গোডার দিকে রাস্তায় পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে ৯ ভারতীয় সেনা নিহত হন।
আরও পড়ুন:ভারতের মুম্বাইয়ে নিজ বাসায় অনুপ্রবেশকারীর ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা সাইফ আলী খান।
স্থানীয় সময় বুধবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, রাত আড়াইটায় একজন অনুপ্রবেশকারী বাসায় ঢুকে সাইফ আলীকে ছয়বার ছুরিকাঘাত করে। বর্তমানে মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার চলছে।
হাসপাতালকর্মীরা বলছেন, সাইফ আলী খান এখন বিপদমুক্ত। রাতে তার নিউরো সার্জারি করা হয়েছে। বর্তমানে প্লাস্টিক সার্জারি চলছে।
এ ঘটনায় বান্দ্রা থানায় একটি এজাহার করা হয়েছে। তাতে বলা হয়, সাইফ আলী যখন বাসায় ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন একজন অনুপ্রবেশকারী চুপিসারে তার বাসায় ঢোকেন। এ সময়ে ওই ব্যক্তির সঙ্গে সাইফের হাতাহাতি হয়।
এরপর সাইফ আলী খানকে ছয়বারের বেশি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান অনুপ্রবেশকারী।
এক বিবৃতিতে লীলাবতী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ছয়টি আঘাতের মধ্যে দুটি তার মেরুদণ্ডের কাছে গভীর ক্ষত তৈরি করেছে।
এরই মধ্যে তার বাসার তিন পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে তদন্ত করছে মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ।
এক বিবৃতিতে সাংবাদিক ও ভক্তদের ধৈর্য ধারণ করতে বলেছে সাইফ আলী খান টিম।
এতে বলা হয়, ‘এটি এখন পুলিশের কাজ। আমরা আপনাদের হালানাগাদ তথ্য জানিয়ে দেব।’
কারিনা কাপুর খান টিমও একই বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘পরিবারের অন্য সদস্যরা ভালো আছেন।’
আরও পড়ুন:নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই শনিবার বলেছেন, তিনি তার জন্মভূমি পাকিস্তানে ফিরে আসতে পেরে ‘অভিভূত’ ও ‘আনন্দিত’।
ইসলামি বিশ্বে নারী শিক্ষাবিষয়ক বিশ্বব্যাপী এক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি এখন পাকিস্তানে অবস্থান করছেন।
ইসলামাবাদ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ২০১২ সালে স্কুলছাত্রী মালালাকে পাকিস্তানি তালেবানরা গুলি করে এবং এরপর তিনি বিদেশে চলে যান। বিদেশে যাওয়ার পর মাত্র কয়েকবার তিনি দেশে আসেন।
রাজধানী ইসলামাবাদে সম্মেলনে পৌঁছে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানে ফিরে আসতে পেরে আমি সত্যিই সম্মানিত, অভিভূত ও আনন্দিত।’
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ দুই দিনব্যাপী এ শীর্ষ সম্মেলন উদ্বোধন করেন শনিবার সকালে। এতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর প্রতিনিধিরা একত্রিত হবেন।
স্থানীয় সময় রোববার ইউসুফজাইয়ের সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম এক্সে শুক্রবার তিনি বলেন, ‘আমি সকল মেয়ের স্কুলে যাওয়ার অধিকার রক্ষার বিষয়ে কথা বলব। আফগান নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য কেন তালেবান নেতাদের জবাবদিহি করতে হবে, সে ব্যাপারেও বলব।'
দেশটির শিক্ষামন্ত্রী খালিদ মকবুল সিদ্দিকী এএফপিকে জানান, আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে এ সম্মেলনে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তালেবান ইসলামাবাদের এ আমন্ত্রণে কোনো সাড়া দেয়নি।
আফগানিস্তান বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে মেয়ে ও নারীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যেতে বাধা দেওয়া হয়। ২০২১ সালে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে তালেবান সরকার আফগানিস্তানে কঠোরভাবে ইসলামী আইন আরোপ করেছে। জাতিসংঘ একে ‘লিঙ্গ বর্ণবাদ’ বলে অভিহিত করেছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, পাকিস্তান তীব্র শিক্ষা সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। দেশটিতে দুই কোটি ৬০ লাখের বেশি শিশু স্কুলের বাইরে রয়েছে। তাদের অধিকাংশই দারিদ্র্যের কারণে স্কুলে ভর্তি হওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
প্রত্যন্ত সোয়াত উপত্যকার একটি স্কুল বাসে ২০১২ সালে পাকিস্তান তালেবান জঙ্গিদের হামলার পর ইউসুফজাই বিশ্বব্যাপী পরিচিত হয়ে ওঠেন। এরপর তাকে যুক্তরাজ্যে পাঠানো হয়।
পরবর্তী সময়ে তিনি নারী শিক্ষার জন্য বিশ্বব্যাপী প্রবক্তা হয়ে ওঠেন। ১৭ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী হন তিনি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য