বেইজিংভিত্তিক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা জোট সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন বা সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) পূর্ণ সদস্য হতে ১৫ বছর ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশ ইরান। গত শুক্রবার এর ফল পেয়েছে দেশটি। ওই দিন জোটের স্থায়ী সদস্য সাত রাষ্ট্র ইরানকে এসসিওর পূর্ণ সদস্য করার পক্ষে সায় দেয়।
এসসিওর সিদ্ধান্তের পর আরও কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করতে হবে ইরানকে। প্রক্রিয়াগত ও আইনি ধাপগুলো পাড়ি দিতে দেশটির লেগে যেতে পারে দুই বছর। এরপরই এমন জোটে যোগ দেবে ইরান, যার সদস্য রাষ্ট্রগুলোর আয়তন বিশ্বের মোট ভূখণ্ডের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ।
এ রাষ্ট্রগুলো বছরে হাজার হাজার কোটি ডলার রপ্তানি করে। তাদের জোটসঙ্গী হওয়ার মধ্য দিয়ে এশিয়ার বিশাল অবকাঠামোয় যোগ দিল যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধে কোণঠাসা ইরান।
জোটের সদস্যদের মধ্যে চীন, রাশিয়া, ভারত ছাড়াও মধ্য এশিয়ার কিছু দেশ রয়েছে।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, তাজিকিস্তানের দুশানবেতে এসসিওর সম্মেলন শেষে দেশে ফিরে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এসসিওর অনুমোদনকে ‘কূটনৈতিক সাফল্য’ আখ্যা দেন।
এর আগে তাজিকিস্তানে দুই দিনের সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের ‘একতরফাবাদের’ নিন্দা জানান রাইসি। ওই সময় তিনি অবরোধের বিরুদ্ধে সমন্বিত লড়াইয়ের আহ্বান জানান।
এসসিও সম্মেলনের পার্শ্ববৈঠকে বেশ কিছু দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেন প্রেসিডেন্ট রাইসি। এগুলোর ফলও পেয়েছেন তিনি। তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্ট এমোমালি রাহমোনের সঙ্গে আটটি চুক্তিতে সই করেন ইরানের রাষ্ট্রপ্রধান।
এসব চুক্তির মাধ্যমে দেশ দুটি বার্ষিক বাণিজ্য ৫০ কোটি ডলারে উন্নীত করতে চায়, যা বর্তমান অঙ্কের প্রায় ১০ গুণ।
এসসিওর পূর্ণ সদস্য হওয়ার গুরুত্ব রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের চেয়েও বেশি ইরানের মর্যাদা ও কূটনৈতিক সাফল্যের প্রশ্ন।
জার্মান ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাফেয়ার্সের গবেষক হামিদরেজা আজিজি বলেন, ‘পশ্চিমা নয়, এমন পরাশক্তিগুলোর মঞ্চ হিসেবেই এসসিওর প্রতি আগ্রহ ইরানের। কোনো আধুনিক আন্তর্জাতিক সংগঠনের চেয়ে এটি পশ্চিমাবিরোধী বা যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী বেশি।
‘ভারত-পাকিস্তানের মতো দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র। কিন্তু তাও এসসিওর সদস্য দেশগুলো এবং এর কারণও তাদের যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাবিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি। আবার রাশিয়া আর চীন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধ পক্ষ বলে স্বীকৃত হলেও কখনোই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি প্রকাশ্য চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়নি। তারাও এসসিওর সদস্য।
‘এই দুটি ধারণার সমন্বয় এবং এশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের সবচেয়ে বড় শক্তি ইরানের এসসিওতে যোগ দেয়া মানে ইরানের জন্য পশ্চিমাবিরোধী শক্তিশালী একটি জোট গড়ে তোলা, যে জোট যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে।’
আজিজির মতে, ইরানের শত্রুতার মধ্যে অবশ্য নিজেদের জড়াতে চাইবে না অন্যান্য এসসিও সদস্যরা। সে কারণেই ভারসাম্য রক্ষায় শুক্রবারের বৈঠকে ‘আলোচনার অংশীদার’ হিসেবে সৌদি আরব, কাতার আর মিসরকেও রাখা হয়েছিল।
কূটনৈতিক দিক থেকেও এসসিওর পূর্ণ সদস্য হিসেবে ইরানের অনুমোদনপ্রাপ্তি তাৎপর্যপূর্ণ। ২০০৫ সাল থেকে এসসিওর ‘পর্যবেক্ষক সদস্য’ ছিল রাষ্ট্রটি।
গত মাসে ইরানের নিরাপত্তাপ্রধান আলি শামখানি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে জানান, এসসিওর পূর্ণ সদস্যপদ পাওয়ার ‘রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা’ দূর হয়েছে।
ফার্সি ভাষার সঙ্গে ইংরেজি, আরবি আর হিব্রুতেও বার্তাটি দেন তিনি, যার অর্থ পুরো মধ্যপ্রাচ্য আর পশ্চিমা বিশ্ব সম্পর্কিত বার্তা এটি।
জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা ছিল বলে এর আগে ইরানের এসসিও সদস্যপদ পাওয়ার পথ বন্ধ ছিল। তার ওপর কিছু সদস্য, যার অন্যতম তাজিকিস্তান, ইরানের এসসিও সদস্যপদের বিরুদ্ধে ছিল। কারণ তাজিকিস্তানে কট্টর ইসলামপন্থিদের পেছনে ইরানের সমর্থন আছে বলে অভিযোগ তাজিক প্রশাসনের।
১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পর এটাই ইরানের প্রথম কোনো আঞ্চলিক জোটের পূর্ণ সদস্যপদ পাওয়ার ঘটনা।
তেহরানের সেন্টার ফর মিডল ইস্ট স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের গবেষক আবাস আসলানি বলেন, ‘ইরানের ওপর একতরফা নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে। এসসিও সদস্যপ্রাপ্তির অর্থ হলো- এসব নিষেধাজ্ঞায় জোটের অন্য সদস্যদের সমর্থন নেই। সে জন্যই তারা ইরানকে পূর্ণ সদস্যপদ দিয়েছে।’
ইরান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক, বিশেষ করে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করতে চায় বলেও উল্লেখ করেন আসলানি। চলতি বছরের মার্চে চীনের সঙ্গে ২৫ বছর মেয়াদি একটি সহযোগিতামূলক চুক্তি করেছে ইরান। একই সঙ্গে রাশিয়ার সঙ্গেও আগের সহযোগিতামূলক চুক্তি পুনর্বহাল করতে চায়।
আসলানি বলেন, ‘এ ছাড়া মধ্য এশিয়ায় আরও বড় পরিসরে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে পারে ইরান। ইরানের রপ্তানি পণ্যের সম্ভাব্য বড় বাজার এ অঞ্চল। সময়ই বলে দেবে যে এসব সম্ভাবনার কতটা সদ্ব্যবহার করতে পারবে ইরান।’
আসলানির মতে, এ পথে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ইরানের জন্য বড় বাধা। কিন্তু ইরানের অর্থনৈতিক অগ্রগতি তাতে থমকে যাবে না।
২০১৫ সালের ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তিতে ফিরতে পশ্চিমা পরাশক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় ছয় দফা আলোচনায় বসেছে ইরান। আলোচনা শেষ পর্যন্ত সফল হলে শিথিল হবে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা।
ইরানে নতুন প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা গ্রহণ ও নতুন সরকার গঠনের পালাবদলের মধ্যে চলতি বছরের জুলাইয়ের পর আলোচনা থমকে আছে। তবে শিগগিরই শুরু হবে আলোচনা।
আসলানি বলেন, ‘পরমাণু চুক্তি পুনর্বহাল হলে তাতে ইরানের জয়ের মুকুটে একটি পালক যোগ হবে। এ ছাড়া পূর্বাঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গেও জোরদার সম্পর্ক গড়ে তোলার পথে অনেকটা এগিয়েছে ইরান। পশ্চিমাদের সঙ্গে আলোচনা সফল হোক বা না হোক, পূর্বে ইরানের অগগ্রতি নিশ্চিত।’
আরও পড়ুন:পশ্চিমা ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলোর ওপর হামলার পরিকল্পনা নেই রাশিয়ার। এমনকি এর বাইরে পোল্যান্ড, চেক রিপাবলিক বা বাল্টিক কোনো দেশের ওপরও হামলা চালাবে না তারা। তবে ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিলে তা ধ্বংস করা হবে বলে জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
স্থানীয় সময় বুধবার রাশিয়ার বিমান বাহিনীর পাইলটদের সঙ্গে কথা বলার সময় এসব কথা বলেছেন তিনি।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে পূর্ব দিক থেকে রাশিয়ার দিকে অগ্রসর হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট। তবে রাশিয়ার এসব অঞ্চলের ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর ওপর হামলার পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন পুতিন।
তিনি বলেন, ‘এ জোটভুক্ত দেশগুলোর প্রতিও কোনো আগ্রাসন দেখানো হবে না। পোল্যান্ড, চেক রিপাবলিক বা বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোকে ভয় দেখানো হচ্ছে বলে যেসব কথা রটানো হয়েছে, সেগুলো সম্পূর্ণ বাজে কথা।’
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে অর্থ, অস্ত্র ও বুদ্ধি দিয়ে সমর্থন করার অভিযোগ এনে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এ কারণেই ওয়াশিংটনের সঙ্গে মস্কোর যে সম্পর্ক, তা সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে।’
পশ্চিমারা ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দেয়ার বিষয়ে পুতিন বলেন, ‘এ ধরনের কর্মকাণ্ডে ইউক্রেনের পরিস্থিতি পাল্টাবে না। আর ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া যান ও রকেট লঞ্চারের মতো ওগুলোকেও (এফ-১৬) আমরা ধ্বংস করব।’
তিনি বলেন, ‘এসব যুদ্ধবিমান যদি ইউক্রেনের বাইরের কোনো দেশ থেকে যুদ্ধক্ষেত্রে আসে, তবে সেসব স্থানও আমাদের বৈধ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে, তা সে যে স্থানই হোক না কেন।’
এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কাও বাড়াবে বলে এ সময় সতর্ক করেন তিনি।
আরও পড়ুন:গাজা উপকূলে ইসরায়েলি সৈন্যরা দুজন নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যার পর তাদের মরদেহ বুলডোজার দিয়ে বালুর নিচে চাপা দেয়ার একটি ভিডিও ফুটেজ সম্প্রচার করেছে আল জাজিরা।
এ ঘটনা তদন্তের জন্য বুধবার জাতিসংঘকে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম নাগরিক অধিকার ও অ্যাডভোকেসি সংগঠন ‘দ্য কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন (সিএআইআর)’।
আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে বৃহস্পতিবার সিএআইআরের এ আহ্বানের কথা জানানো হয়।
আল জাজিরার দুই মিনিটের ওই ভিডিওটিতে দুই ফিলিস্তিনিদের মধ্যে একজনকে হাত উঁচু করে সাদা কাপড়ের টুকরো ওড়াতে দেখা যায়।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, সাদা কাপড় দেখিয়ে ওই ফিলিস্তিনি হয়ত বোঝাতে চাচ্ছিলেন তারা কোনো হুমকি নন। দুজনই উপকূল বরাবর একটি উন্মুক্ত এলাকায় হাঁটছিলেন, সম্ভবত তারা উত্তর গাজায় ফিরে যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন।
সিএআইআর জানায়, ইসরায়েলি বাহিনী গাজার উপকূলে দুই ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেছে, যারা কোনো হুমকি ছিল না। এরপর তাদের মৃতদেহ মাটিচাপা দেয়ার জন্য একটি সামরিক বুলডোজার ব্যবহার করা হয়।
এমন জঘন্য যুদ্ধাপরাধের আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়ে কাউন্সিল বলেছে, ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের ‘ইচ্ছে মতো’ হত্যা করছে এবং তাদের মৃতদেহগুলো ‘আবর্জনার মতো’ ব্যবহার করছে।
গণহত্যামূলক ইসরায়েলি সরকারকে জাতিসংঘের তদন্ত করা উচিত বলে মনে করছে সংগঠনটি।
আরও পড়ুন:ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের হায়দরাবাদে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা।
অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসির বিরুদ্ধে কংগ্রেস তাকে প্রার্থী করার কথা ভাবছে বলে সূত্রের বরাতে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
বুধবার গোয়া, তেলেঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড এবং দমন ও দিউ- এই চার রাজ্যের প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনার জন্য কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি (সিইসি) ১৮ জনের নাম অনুমোদন করেছে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, কংগ্রেস সানিয়া মির্জার জনপ্রিয়তা ও তার সেলিব্রিটি স্ট্যাটাসের দিকে নজর রেখে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। কংগ্রেস সর্বশেষ ১৯৮০ সালে হায়দরাবাদে জিতেছিল এবং কে এস নারায়ণ সাংসদ হয়েছিলেন।
সূত্রের খবর, সানিয়ার নাম প্রস্তাব করেছিলেন সাবেক ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক কংগ্রেস নেতা মহম্মদ আজহারউদ্দিন। ২০১৯ সালে সানিয়া মির্জার বোন আনাম মির্জার সঙ্গে বিয়ে হয় ক্রিকেটারের ছেলে মহম্মদ আসাদুদ্দিনের।
আজহারউদ্দিন সম্প্রতি অনুষ্ঠিত তেলেঙ্গানা বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, যেখানে তিনি জুবিলি হিলস আসন থেকে ভারত রাষ্ট্র সমিতির (বিআরএস) মাগন্তি গোপীনাথের কাছে ১৬০০০ ভোটে হেরে গিয়েছিলেন।
এআইএমআইএম-এর একটি শক্ত ঘাঁটি হায়দরাবাদ, এই অঞ্চলে ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ‘গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টির’ (কংগ্রেস) সাম্প্রতিক পুনরুত্থান এআইএমআইএমের আধিপত্যের কাছে একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। যা একটি তীব্র কঠিন লড়াইয়ের পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
১৯৮৪ সালে সুলতান সালাহউদ্দিন ওয়াইসি হায়দরাবাদ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং পরে ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত এআইএমআইএম প্রার্থী হিসেবে জিতেছিলেন।
এর পর আসাদ্দুদ্দিন ওয়াইসি ২০০৪ সাল থেকে এই আসনটি ধরে রেখে উত্তরাধিকার বহন করছেন। ২০১৯ সালে ওয়েইসির বিরুদ্ধে ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তিনি তার আধিপত্য বজায় রেখে মোট প্রদত্ত ভোটের ৫৮.৯৪% পেয়ে আসনটি জিতেছিলেন।
এই লোকসভা নির্বাচনের জন্য হায়দরাবাদে বিজেপি মাধবী লতাকে প্রার্থী করেছে, এবং বিআরএস গদ্দাম শ্রীনিবাস যাদবকে প্রার্থী করেছে।
৫৪৩টি সংসদীয় আসনের নির্বাচন সাত ধাপে অনুষ্ঠিত হবে, যা ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ১ জুন শেষ হবে। তেলেঙ্গানায় ভোট হবে ১৩ মে।
রাশিয়ার মস্কোতে গত শুক্রবার কনসার্ট হলে ব্যাপক প্রাণঘাতী হামলার দায় ইসলামিক স্টেট (আইএস) স্বীকার করলেও এ ধরনের আক্রমণের সামর্থ্য জঙ্গি সংগঠনটির আছে বলে বিশ্বাস করে না রাশিয়া।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বুধবার তার দেশের এ অবস্থান ব্যক্ত করেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
জাখারোভা বলেন, মস্কোর কনসার্ট হলে হামলা চালানোর মতো সামর্থ্য আইএসের আছে, এমনটি বিশ্বাস করা অত্যন্ত কঠিন।
সাম্প্রতিক ওই হামলায় নিহত হন কমপক্ষে ১৪৩ জন। আহত অনেককে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।
মস্কোর উপকণ্ঠে ক্রোকাস সিটি হলে হামলায় ইউক্রেনের জড়িত থাকার বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র। যদিও এ দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেননি তিনি।
রাশিয়ায় ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলার পর দায় স্বীকার করে আইএস। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা দাবি করেন, তাদের কাছে থাকা গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, হামলাটি চালায় আইএসের আফগান শাখা ইসলামিক স্টেট খোরাসান।
হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ বারবার নাকচ করেছে ইউক্রেন, তবে জাখারোভার ভাষ্য, ইউক্রেনকে হামলার দায় থেকে বাঁচাতে ত্বরিত গতিতে আইএসের ওপর দায় চাপায় পশ্চিমা দেশগুলো।
আরও পড়ুন:ফিলিস্তিন ও দেশটির অবরুদ্ধ উপত্যকা গাজার নির্যাতিত মানুষকে সমর্থন দেয়ার ক্ষেত্রে ইরান কখনও ইতস্তত বোধ করবে না বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।
গাজার শাসক দল হামাসের পলিট ব্যুরোর প্রধান ইসমাইল হানিয়ার নেতৃত্বে সংগঠনটির একটি প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার তেহরানে সাক্ষাৎ করতে গেলে আয়াতুল্লাহ এ মন্তব্য করেন বলে জানিয়েছে প্রেস টিভি।
খামেনিকে উদ্ধৃত করে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, ‘ফিলিস্তিনিদের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম এবং গাজার নিপীড়িত ও সহিষ্ণু জনগণকে সমর্থনের ক্ষেত্রে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান কখনও ইতস্তত বোধ করবে না।’
গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের ব্যাপক প্রাণঘাতী হামলার জবাবে ওই দিন থেকেই উপত্যকায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। প্রায় বিরতিহীন এ হামলায় গাজায় প্রাণ গেছে কমপক্ষে ৩২ হাজার ৪১৪ জনের।
এমন বাস্তবতায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের মুখে ‘ঐতিহাসিক ধৈর্য’ ধরার জন্য গাজাবাসীর প্রশংসা করে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা বলেন, এ ধৈর্য ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য মর্যাদা ও গর্বের উৎসে পরিণত হয়েছে।
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের শাংলা জেলার বিশাম এলাকায় মঙ্গলবার গাড়িবহরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় চীনের পাঁচ নাগরিকসহ কমপক্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
মালাকান্দ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ আলি গান্দাপুরের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসলামাবাদ থেকে খাইবার পাখতুনখোয়ার দুসু এলাকার ক্যাম্পে যাওয়ার পথে চীনের প্রকৌশলীদের গাড়িবহরে বিস্ফোরকভর্তি গাড়িটি উঠিয়ে দেয় আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী।
তিনি আরও বলেন, ‘হামলায় চীনের পাঁচ নাগরিক ও তাদের পাকিস্তানি চালক নিহত হন।’
হামলার পরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাটি ঘিরে ফেলেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঘটনার তদন্তে নামায় এ পথে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ইসলামাবাদে চীনা দূতাবাস গিয়ে রাষ্ট্রদূত জিয়াং জ্যায়দংয়ের কাছে শোক প্রকাশ করেন।
এক বিবৃতিতে শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘চায়না-পাকিস্তান ইকোনোমিক করিডরের (সিপিইসি) শত্রুরা আরও একবার এ ধরনের কাপুরুষোচিত কাজ করে একে ব্যাহত করার চক্রান্ত করেছে, কিন্তু অশুভ অভিলাষ পূরণে কখনই সফল হবে না তারা।’
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের বাল্টিমোরে পণ্যবাহী জাহাজের ধাক্কায় সেতু ধসের ঘটনায় নিখোঁজ হয়েছেন ছয় শ্রমিক, যারা নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রয়টার্স জানায়, সোমবার গভীর রাতে বিদ্যুৎবিহীন বিশাল কার্গো জাহাজটি সজোরে ধাক্কা দিলে বাল্টিমোর হারবারে ধসে পড়ে সেতুটি। এ দুর্ঘটনার ফলে বন্ধ হয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ব্যস্ত বন্দর।
যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড ও ম্যারিল্যান্ড অঙ্গরাজ্য পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, দুর্ঘটনার প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর অন্ধকারাচ্ছন্ন ও শ্বাপদসংকুল পরিবেশে উদ্ধার তৎপরতা স্থগিত করে ডুবুরি দল।
কোস্ট গার্ডের রিয়ার অ্যাডমিরাল শ্যানন গিলরিথ জানান, হিমশীতল পানি ও দুর্ঘটনার পর দীর্ঘসময় অতিবাহিত হওয়ায় নিখোঁজ শ্রমিকদের জীবিত পাওয়ার আশা ফুরিয়ে গেছে।
ম্যারিল্যান্ড অঙ্গরাজ্য পুলিশের কর্নেল রোল্যান্ড বাটলার জানান, নিখোঁজ শ্রমিকদের দেহাবশেষ উদ্ধারের আশায় স্থানীয় সময় বুধবার সূর্যোদয়ের পর ডুবুরিদল কাজ শুরু করবে বলে প্রত্যাশা করছে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়, সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী ‘ডালি’ নামের জাহাজটি বাল্টিমোর হারবার থেকে শ্রীলঙ্কার দিকে যাচ্ছিল। স্থানীয় সময় সোমবার রাত দেড়টার দিকে প্যাটাপস্কো নদীর মোহনায় ‘ফ্রান্সিস স্কট কি ব্রিজ’ নামের সেতুর একটি পিলারে ঢুকে পড়ে নৌযানটি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য