‘আওয়ামী লীগ শুধু একটা রাজনৈতিক দল নয়, একটা অনুভূতি’- দলের ২০তম কাউন্সিলে এভাবেই নিজেকে মেলে ধরেছিলেন সেদিনের বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
নিজের দলকে ‘অনুভূতি’ মেনে আসা মানুষটিকে মৃত্যুর দুই বছরের মধ্যেই যেন ভুলে গেছে সতীর্থরা।
রাজধানীর বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত ‘প্রিয় আশরাফ ভাই’ আওয়ামী লীগ নেতাদের মুখে মুখে। অথচ নিজের মৃত্যুবার্ষিকীর দিনটিতেও নিভৃতে থেকে গেলেন তিনি।
এদিন তার কবরের পাশে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন আর আত্মার শান্তি কামনার সময় হলো না আওয়ামী লীগের কোনো নেতার। কাণ্ডারী হয়ে দলকে উদ্ধার করা সৈয়দ আশরাফকে যেন ভুলেই গেল তার অনুভূতির সমার্থক আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকেও ছিল না কোনো আয়োজন।
এদিন তার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। তিনি আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে নন, মন্ত্রী হিসেবে গিয়েছিলেন সেখানে। তাজুল ইসলাম সৈয়দ আশরাফের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তার আত্মার মাগফেরাত কামনায় মোনাজাত করেন।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় দলের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়ার সঙ্গে। তিনি জানালেন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের জন্য দলের কোনো কর্মসূচি ছিল না।
তিনি বলেন, ‘প্রয়াত নেতাদের মৃত্যু দিবসে পরিবারের অনুষ্ঠানে আমরা শরিক হই। দলের পক্ষে আলাদা কোনো আয়োজন থাকে না।’
২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি। দেশের নির্বাচনি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয় নিয়ে সংসদ ভবনে শপথ নিচ্ছিলেন আওয়ামী লীগের টিকিট নিয়ে বিজয়ী সংসদ সদস্যরা। তখনও দূর দেশের হাসপাতালে ক্যান্সারের সঙ্গে প্রাণপন লড়াই করছিলেন সৈয়দ আশরাফ।
ওই নির্বাচনে সৈয়দ আশরাফও জয় পেয়েছিলেন। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে থেমে যায় তার হৃদস্পন্দন। বরণ করে নিতে হয় মৃত্যুর শীতল স্পর্শকে।
দুই বছর পর এই দিনটিতে রোববার সকাল ১১টার দিকে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সমসাময়িক ইস্যুতে কথা বলতে সাংবাদিকদের সামনে আসেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বক্তব্য শুরু করেন দলের প্রয়াত নেতা সৈয়দ আশরাফের প্রতি সম্মান জানিয়ে।
‘আমি প্রথমেই আমার পূর্বসূরি আওয়ামী লীগের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।’
সৈয়দ আশরাফকে নির্মোহ রাজনীতিবিদ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের লড়াকু সৈনিক হিসেবে অভিহিত করে কাদের আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার প্রতি তার আস্থা ছিল অবিচল।
‘সারাজীবন জনগণের জন্য রাজনীতি করে গেছেন। রাজনীতিতে তিনি বিনয় ভদ্রতা সৌজন্যবোধের এক উজ্জ্বল উদাহরণ স্থাপন করে গেছেন। আমি আজ তাকে স্মরণ করছি পরম শ্রদ্ধায়। আমি তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।’
ভূমিকা শেষ করতেই প্রশ্ন ছোড়া হয় মন্ত্রীর কাছে। জানতে চাওয়া হয়, শ্রদ্ধা জানাতে আপনি তো সৈয়দ আশরাফের কবরস্থানে যাননি? অন্য কেউ গিয়েছে কি?
সৈয়দ আশরাফের উত্তরসূরী ওবায়দুল কাদের বললেন, ‘গেছি, যায় আমাদের। গতবার আমি আমি গেছি। কিন্তু আমাদের পার্টিতে জেনারেল সেক্রেটারি এ পর্যন্ত… কারও মৃত্যুদিবসটা আমাদের পার্টির দিবস পালনের মধ্যে এটা থাকে না, নেই।
‘আব্দুস সামাদ আজাদেরটাও দিবস পালনের মধ্যেই… আব্দুল মালেক উকিল, এরিমধ্যে যারা আছেন জিল্লুর রহমান, আমাদের জলিল ভাই, কাজেই এখন নতুন করে আমি মরে গেলে আমারটাও অন্তর্ভুক্ত হবে। এরকম করতে করতে যদি দিবস পালন করি…
‘আমরা এমনে স্মরণ করি, আমাদের মধ্যে মিটিং টিটিং হয়, আলোচনা সভা হয়। সেগুলোতে আমরা অংশ নিই। যেমন আমি আজকে মৃত্যুদিবসে স্মরণ করলাম তাকে, আনুষ্ঠানিকভাবে। এগুলো ঠিক আছে…’
সৈয়দ আশরাফের রাজনৈতিক চর্চা কি এখন দলে আছে?- ফের প্রশ্ন রাখা হয় কাদেরের কাছে। এবার তিনি বললেন, ‘তিনি ভদ্র লোক, নির্মোহ রাজনীতিবিদ এবং সৌজন্যবোধ, মূল্যবোধ এগুলো তার মধ্যে ছিল যথেষ্ট। সেটাই তো আমরা স্মরণ করছি এ কথাগুলো বলে, যাতে উত্তরসূরিরা এটা তাদের জীবনে চর্চা করে। সে জন্যই বলা হচ্ছে।’
রাজনীতিতে সবাইকে ঢালাওভাবে খারাপ বলতে নারাজ কাদের। তিনি বলেন, ‘ভালো মানুষ আছে যেমন, খারাপও আছে। ভালো-মন্দ মিলিয়েই আমরা রাজনীতি করি। সবার মধ্যে সব গুণ থাকে না। যারা ভালো গুণের অধিকারী, তাদের সে ভালো গুণ মৃত্যুর পরেও থেকে যায়। আশরাফের যেগুলো ভালো গুণ, সেটা আমরা এখনও স্মরণ করি।’
সংকটে সামনে আসেন আশরাফ
২০০৭ সাল। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার তখন রাষ্ট্রক্ষমতায়। দেশের রাজনীতি ভয়াবহ সংকটের মুখে। জাতির পিতার কন্যা, সে সময়কার বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা তখন কারাগারে। ওই ‘রং বদলের’ কালে আওয়ামী লীগের কাণ্ডারী হয়েছিলেন সৈয়দ আশরাফ।
২০১৩ সালে মৌলবাদের বিরুদ্ধে হুঙ্কার ছেড়েছিলেন তিনি। হেফাজত ইসলাম সমাবেশের নামে ঢাকা দখলের ঘোষণা দিলে, তিনি বলেছিলেন, ‘আমি আহ্বান করব, আজকে সন্ধ্যার আগেই আপনারা ঢাকা শহর ত্যাগ করুন। যদি না ত্যাগ করেন, সরকার তার ব্যবস্থা করবে।’
আশরাফের সে সময়ের ভূমিকা আর বক্তব্য নতুন করে ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। বহু মানুষ স্মৃতিচারণ করছেন বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘নিপাট ভদ্রলোক’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া মানুষটিকে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করে গ্রেপ্তার হওয়া আরও ২৬ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন।
ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে শুক্রবার বিকেল ৩টা ৫ মিনিটে তারা দেশে ফেরেন।
ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম ও ইয়ুথ প্ল্যাটফর্মের সহযোগী পরিচালক শরিফুল হাসান বলেন, প্রবাসীকল্যাণ ডেস্কের মাধ্যমে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে এই ২৬ বাংলাদেশিকে পরিবহন খরচসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড ও ব্র্যাক এই প্রবাসীদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পুনরেকত্রীকরণে কাজ করবে। এজন্য তাদের চাহিদা নিরূপণ করে প্রয়োজন অনুযায়ী মনো-সামাজিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা করা হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করায় গত জুলাই মাসে ৫৭ জন বাংলাদেশি গ্রেপ্তার ও শাস্তি পান।
পরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অনুরোধে ৫৭ বাংলাদেশির ক্ষমার আদেশ দেন আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান।
অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কারাদণ্ড প্রত্যাহার করা হয়। এরপর ৩১ জন তিন দফায় দেশে ফিরে আসেন। বাকি ২৬ জন শুক্রবার ফিরলেন।
আরও পড়ুন:ঐক্য ধরে রাখতে পারলেই ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে অর্জিত বিজয় সুসংহত হবে বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ‘বিজয় তখনই সুসংহত হবে যদি এটা আমরা ধরে রাখতে পারি। সুপরিকল্পিতভাবে আমাদের ঐক্য বিনষ্টের চেষ্টা চলছে, সেটিকে রুখে দিতে হবে।’
শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
ফ্যাসিস্ট সরকারের দীর্ঘ অপশাসন, দুঃশাসন, গুম, খুন, নির্যাতন ও প্রহসনের নির্বাচনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ ও হোয়াইট হাউসে উপস্থিত থেকে সাংবাদিকতার বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর, জাস্ট নিউজের সম্পাদক এবং ওয়াশিংটনভিত্তিক অধিকার সংস্থা রাইট টু ফ্রিডমের নির্বাহী পরিচালক মুশফিকুল ফজল আনসারীর বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাতীয় প্রেস ক্লাব, বিএফইউজে, ডিইউজে, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ও সাংবাদিক সমবায় সমিতি লিমিটেড।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলে অনেকেই নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। মুশফিকুল ফজল আনসারী তাদের মধ্যে অন্যতম। অনেকেই দেশে থাকতে পারেননি ফ্যাসিবাদী হাসিনার কারণে। অনেকে দেশের বাইরে থেকে সংগ্রামে অংশ নিয়েছেন। আমরা দেশের ভেতরে থেকে আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলাম।’
বিএনপি মহাসচিব বাংলাদেশের গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা ও ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পেছনে সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর অনন্য ভূমিকার উল্লেখ করেন। এ সময় তিনি মুশফিকুল ফজল আনসারীকে বাংলাদেশের ‘রিয়েল হিরো’ বলে আখ্যা দেন।
এ সময় সব সাংবাদিককে পেশাদারত্ব বজায় রেখে, নীতি-নৈতিকতার সঙ্গে সংবাদ সংগ্রহ, তৈরি ও পরিবেশনের আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
বিভিন্ন সংগঠনের দেয়া ফুলেল সংবর্ধনা শেষে বক্তব্য দেন সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী।
মজলুম এই সাংবাদিক বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের সৌভাগ্য যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতো একজন নোবেল লরিয়েটকে সরকার প্রধান হিসেবে পেয়েছেন। তিনি আপাদমস্তক একজন নির্লোভ ব্যক্তি। তিনি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করবেন।’
একইসঙ্গে সরকারের উপদেষ্টাদের প্রতি দেশের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী সুবিচার প্রতিষ্ঠা করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
মুশফিকুল ফজল বলেন, ‘কোনো গণমাধ্যম বন্ধ হোক এটা আমরা চাই না। তবে পতিত স্বৈরাচারের সুবিধাভোগী দোসররাই এখনও বেশিরভাগ মিডিয়া চালাচ্ছে। এক্ষেত্রে জনগণের পক্ষের এবং বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকদের দায়িত্ব দিতে হবে- যাতে সত্যিকার অর্থেই বাংলাদেশের মানুষের চাওয়া-পাওয়া, আশা-আকাঙ্ক্ষার ভাষা প্রতিফলিত হয়।’
তিনি বলেন, ‘অনেকটা নিরাপদ স্থানে থেকেই আমরা হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে গেছি। যদিও নানাভাবে আমাদের পরিবারকে হেনস্থা করা হয়েছিলো। তবে আমাদের ত্যাগের চেয়েও দেশে অবস্থান করে যারা লড়াই করে গেছেন তাদের অবদান ভোলার নয়।
‘শেখ হাসিনা সরকার নানাভাবে আমাকে প্রভাবিত করতে চেষ্টা করেছিল। প্রলোভন দেখিয়েছিল। কিন্তু নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করাটাই নিজের ব্রত মনে করেছি।’
এ সময় সংবর্ধনার ছবি ফেসবুকে না দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সময়টা আনন্দ-উৎসবের নয়। দয়া করে এসব ছবি দিয়ে শহীদ পরিবারগুলোর মনের কষ্ট বাড়িয়ে দেবেন না। এটা আপনাদের কাছে বিশেষ অনুরোধ। আল্লাহ যেন তাদের সবাইকে শহীদি মর্যাদা দান করেন।’
জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদেরে সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট গীতিকার মনিরুজ্জামান মনির, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি এম আব্দুল্লাহ, বিএফইউজে মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম, সাংবাদিক নেতা কবি আবদুল হাই শিকদার, এলাহি নেওয়াজ খান সাজু, মুরসালিন নোমানী, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন দৈনিক আমার দেশের বার্তা সম্পাদক জাহেদ চৌধুরী ও ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক এম সাঈদ খান। সূচনা বক্তব্য দেন সাংবাদিক শফিউল আলম দোলন।
অনুষ্ঠানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. কামরুল আহসান, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আব্দুল লতিফ মাসুম, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মোসলেহ উদ্দিন তারেক, সাবেক জাসাস নেতা মোশারফ হোসেন ঠাকুর, মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রেজা, সরকারি কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির নেতা ড. নেয়ামুত উল্ল্যাহ, গণঅধিকার পরিষদ নেতা তারেক রহমান, কবি রেজা উদ্দিন স্টালিনসহ বিপুলসংখ্যক সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া শিক্ষক, আইনজীবী, কৃষিবিদ, চিকিৎসকসহ নানা পেশার ব্যক্তিগণ উপস্থিত ছিলেন। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে নির্যাতনের শিকার অনেক সাংবাদিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। সে সঙ্গে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মুশফিকুল ফজল আনসারীর ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন তারা।
আরও পড়ুন:প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল ঢাকা সফরে আসছে। বাংলাদেশ তাদের স্বাগত জানানোর প্রস্তুতির পাশাপাশি বহুমাত্রিক আলোচনার জন্য অপেক্ষা করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি বর্তমানে ভারতের নয়াদিল্লি সফরে রয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলটি আজ শনিবার ঢাকায় পৌঁছবে। তারা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূস, পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ছাড়াও অন্যান্য কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেবে।
পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন একটি মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করবেন। এতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।
সফরের আগে পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র যে গুরুত্ব দেয়, (এই মেয়াদে) প্রথম প্রতিনিধি দলের আগমন তার একটি বড় উদাহরণ। এ থেকে বোঝা যায় যে এই আলোচনা হবে বহুমাত্রিক। এটি শুধু একটি বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। আলোচনায় শুধু একটি নয়, বিস্তৃত বিষয় থাকবে।’
যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দফতরের একজন মুখপাত্র জানান, আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়ন অগ্রাধিকারে অবদান রাখতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সফরকালে সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা জোরদারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করবেন।
লু ঢাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বৈঠকের জন্য একটি আন্তঃসংস্থা প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যোগ দেবেন।
প্রতিনিধি দলে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ, ইউএসএআইডি এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির কার্যালয়ের প্রতিনিধিরা থাকবেন। তাদের এই সফরে বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হবে।
আলোচনার সুনির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আলোচনা শুরুর আগে আমি কোনো ধরনের মন্তব্য করতে চাই না, যা আলোচনার স্বাভাবিকতাকে ক্ষুণ্ন করবে।’
তিনি বলেন, ‘ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশের মানুষের আন্তর্জাতিক বিষয়ে আগ্রহ রয়েছে। সফরে সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী লু আমাদের অংশীদারদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে স্থিতিশীলতার প্রচারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করবেন।’
পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের যেকোনো সফর সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ।’
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অব ডিফেন্স লিন্ডসে ডব্লিউ ফোর্ড এবং যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি/অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ফর ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স ব্রেন্ট নেইম্যান প্রতিনিধি দলে থাকবেন।
এই ভূমিকায়, ফোর্ড এই অঞ্চলের জন্য প্রতিরক্ষা কৌশল এবং পরিকল্পনার বিকাশ ও বাস্তবায়ন সম্পর্কিত সমস্ত নীতিগত বিষয়গুলোর জন্য প্রতিরক্ষা বিভাগের মধ্যে জ্যেষ্ঠ নেতৃত্বের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন।
তার দায়িত্বের ক্ষেত্রের মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান বাদে ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্য দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সুরক্ষা সম্পর্ক।
নেইম্যান যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের আন্তর্জাতিক অর্থের ডেপুটি-আন্ডার সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
আরও পড়ুন:সীমান্ত হত্যার বিষয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের কাছে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ী আইসিপিতে বিজিবির রংপুর রিজিয়ন এবং বিএসএফ নর্থ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের মধ্যে বৃহস্পতিবার সৌজন্য বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বিজিবি ঠাকুরগাঁও সেক্টর সদরদপ্তরের কমান্ডার কর্নেল মুহাম্মদ তৌহিদুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আজ ১২ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২ ঘটিকায় ভারতের অভ্যন্তরে ফুলবাড়ীতে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বিজিবির পক্ষে বিজিবির রংপুর রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খোন্দকার শফিকুজ্জামান, ঠাকুরগাঁও সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মুহাম্মদ তৌহিদুর রহমান এবং বিজিবির অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
‘অপরদিকে বিএসএফের পক্ষে বিএসএফ নর্থ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের আইজি শ্রী সুরিয়া কুমার শর্মা এবং শিলিগুড়ি ও কিষাণগঞ্জ সেক্টরের ডিআইজিগণসহ বিএসএফের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।’
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘বৈঠকে গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিক জয়ন্ত কুমার সিংহকে (১৫) গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে বিজিবির পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়। বিএসএফ নর্থ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের আইজি এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতে বিএসএফ কর্তৃক সীমান্তে কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের ওপর গুলি চালানো হবে না মর্মে বিজিবি প্রতিনিধিদলকে আশ্বস্ত করেন।
‘সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বসবাসরত উভয় দেশের নাগরিকদের মধ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম রোধ ও আন্তসীমান্ত অপরাধ দমনকল্পে বিজিবি-বিএসএফ যৌথভাবে কাজ করার ব্যাপারে একমত পোষণ করে। অত্যন্ত সৌহার্দ্য ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুপুর ১৩৩০ ঘটিকায় বৈঠকটি শেষ হয়।’
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানার সামনে লাশ পোড়ানোর ঘটনায় জড়িত পুলিশ পরিদর্শক আরাফাত হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৩ সদস্যরা।
গত ৫ আগস্ট আশুলিয়া থানার সামনে লাশ পোড়ানোর ঘটনায় জড়িত ছিলেন তিনি। ওই দিন ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের নির্বিচার গুলিতে নিহতদের একটি ভ্যানে তুলে পুলিশ সদস্যরা লাশ পুড়িয়ে দেয়।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখা থেকে শুক্রবার পাঠানো খুদেবার্তায় গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
এতে বলা হয়, ‘বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর আফতাবনগর এলাকা থেকে ইন্সপেক্টর আরাফাত হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
এর আগে একই ঘটনায় অভিযুক্ত ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফিকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
কক্সবাজার সদর উপজেলা ও উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসের ঘটনায় ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ ডিককূল এলাকায় পাহাড় ধসে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
উখিয়া উপজেলার ১৪ নম্বর হাকিমপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়।
সদরে প্রাণ হারানো তিনজন হলেন দক্ষিণ ডিককূলের মিজানুর রহমানের স্ত্রী আঁখি মনি (২১) এবং তার দুই শিশু মিহা জান্নাত নাঈমা (৫) ও লতিফা ইসলাম (১)।
উখিয়ায় নিহত তিনজন হলেন ১৪ নম্বর হাকিমপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ই-২ ব্লকের কবির আহমেদের ছেলে আবদুর রহিম, আবদুল হাফেজ ও আবদুল ওয়াহেদ।
ঝিলংজা ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মিজানুর রহমান সিকদার বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত দুইটার দিকে ভারি বৃষ্টি হওয়ার সময় মিজানুর রহমানের বাড়ির ওপর বিকট শব্দে আকস্মিক পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে। এতে গৃহকর্তাসহ পরিবারের চারজন মাটিচাপা পড়ে। পরে খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবেশীরা মিজানুরকে জীবিত উদ্ধার করে। এরপর স্থানীয়রা মাটি সরিয়ে অপর তিনজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে।’
এ ইউপি সদস্য আরও জানান, মিজানের বাড়িটি খাড়া পাহাড়ের পাদদেশে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া ভারি বৃষ্টিতে মাটি নরম হয়ে যায়। পরে মধ্যরাতে অব্যাহত ভারি বর্ষণের সময় পাহাড় ধসে বাড়ির ওপর চাপা পড়ে।
এদিকে পাহাড়ধসের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নীলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী।
তিনি ভুক্তভোগী পরিবারকে ৭৫ হাজার টাকা অনুদান দেন।
এ বিষয়ে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দৌজা নয়ন বলেন, ‘অব্যাহত ভারি বর্ষণে উখিয়ার ১৪ নম্বর হাকিমপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে তিনটি বসতঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে মাটি চাপায় একই পরিবারের তিন সহোদরের মৃত্যু হয়েছে। ‘পরে খবর পেয়ে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা বিধ্বস্ত ঘরবাড়িতে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে মাটি সরিয়ে তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে।’
অন্যদিকে গত বুধবার থেকে কক্সবাজারে মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। টানা বৃষ্টিতে বৃহস্পতিবার জেলা শহরসহ অর্ধশতাধিক গ্রামে মারাত্মক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
বৃষ্টি ও পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে অনেকের বাড়িঘর প্লাবিত হয়েছে। এতে এলাকায় দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান জানান, বৃহস্পতিবার ভোর ছয়টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৭ ঘণ্টায় মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৪০১ মিলিমিটার। চলতি মৌসুমে এটি এক দিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।
আরও পড়ুন:কক্সবাজার সদরে পাহাড় ধসে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার ঝিলংঝা ইউনিয়নের দক্ষিণ ডিককুল এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত দুইটার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো তিনজন হলেন দক্ষিণ ডিককুলের মিজানুর রহমানের স্ত্রী আঁখি মনি এবং তাদের দুই মেয়ে শিশু মিহা জান্নাত নাঈমা ও লতিফা ইসলাম।
পাহাড় ধসে প্রাণ হারানো আঁখির শ্বাশুড়ি জানান, রাত দুইটার দিকে ভারি বৃষ্টির সময় মিজানের বাড়ির দিক থেকে বিকট শব্দ শুনতে পান তারা। গিয়ে দেখেন পাহাড় ধসে সপরিবারে মাটিচাপা পড়েছেন মিজান।
তিনি আরও জানান, তাৎক্ষণিকভাবে মিজানকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও বাকিদের ক্ষেত্রে তা সম্ভব হয়নি। পরে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, মিজানের বাড়িটি পাহাড়ের পাদদেশে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া ভারি বৃষ্টিতে মাটি নরম হয়ে যায়। গভীর রাতে পাহাড় ধসে তার বাড়িতে পড়ে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল গনি ওসমানী জানান, পাহাড় ধসে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়।
তিনি ভারি বর্ষণের এ সময়ে পাহাড়ে বসবাসকারী সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার অনুরোধ করেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য