চলমান করোনাভাইরাস মহামারিতে ব্যয় কমানোর জন্য সব মন্ত্রণালয়ের অর্থ ব্যয়ে লাগাম টানতে বলা হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য খাতের খরচের হাত খুলে দেয় সরকার। তবে বরাবরের মতোই করোনার এসময় অর্থ ব্যয়ের সে সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছে স্বাস্থ্য খাত।
দক্ষতা ও সক্ষমতার অভাবে প্রায় সোয়া ৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করা যায়নি এ খাতে। অথচ করোনাভাইরাসের সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যুর সময় উন্নত সেবার জন্য সবচেয়ে বেশি কাজ ও অর্থ ব্যয়ের কথা ছিল স্বাস্থ্য খাতের।
টাকা পেয়েও সেটি খরচ করতে না পারায় এ খাতের অদক্ষতা, দুর্নীতিকে দায়ী করে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে স্বাস্থ্য খাতের অক্ষমতার চিত্রই ফুটে উঠে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, ২০২০-২১ অর্থ বছরে স্বাস্থ্য খাতের দুটি বিভাগের মোট বরাদ্দ ছিল ১৩ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে মধ্যে স্বাস্থ্য সেবা ১১ হাজার ৯৭৯ কোটি টাকা পেলেও পুরো সময়ে (জুলাই-জুন) এই বিভাগ খরচ করতে পেরেছে ৬ হাজার ৯৩৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকা, ৫৮ শতাংশের কম।
অপর দিকে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ ১ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা পেয়ে খরচ করেছে ১ হাজার ৫৭৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।
এ দুটি বিভাগ সম্মিলিতভাবে খরচ করতে পেরেছে ৮ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা। বরাদ্দ বাস্তবায়নের হার ৬১ দশমিক ৪০ শতাংশ। ফেরত গেছে ৫ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা। অথচ দুই বিভাগ মিলে উন্নয়ন বাজেটের ৬ দশমিক ৬২ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ পেয়েছিল।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন অনুবিভাগ) মো. সাইদুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত বছর আমাদের নানা সমস্যা ছিল, তাই এডিপি বাস্তবায়ন কম হয়েছে, খরচ কম হয়েছে। এ বছর আমরা চেষ্টা করছি শুরু থেকেই, জুলাই থেকেই কীভাবে বাস্তবায়ন ভালো করা যায়।’
টাকা অব্যয়িত থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু ক্ষেত্রে টাকা খরচ আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল, যেমন টিকা কেনার ক্ষেত্রে। আমরা এখন যেভাবে খরচ করতে পেরেছি, গত মাসে অবস্থা সে রকম ছিল না। যেসব জায়গায় আগে ব্যয় হয়নি, এখন সেসব জায়গায় কাজ করা হচ্ছে। যেন সব জায়গায় সঠিকভাবে ব্যয় করা যায়, সে চেষ্টা করা হচ্ছে। করোনার সরঞ্জাম ও টিকা কেনার প্রকল্পগুলোও মনিটরিং হচ্ছে।’
স্বাস্থ্য খাতের দুটি বিভাগের অধীনে ৬৮টি প্রকল্প চলছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার এখন পর্যন্ত দুটি বড় প্রকল্প অনুমোদন করেছে, যার একটিতে অর্থ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক, অন্যটিতে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক।
গত বছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা শনাক্তের পর তড়িঘড়ি করে দুটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। কিন্তু নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় গত অর্থ বছরে দুটি প্রকল্পে আশানুরূপ টাকা খরচ হয়নি।
অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনা মহামারিতে ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্য খাত। এই সময়ে চিকিৎসার অপ্রতুলতা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জামের অভাবে হাসপাতালগুলো ধুঁকছে। তখন বাজেটে স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কিনতে যে পরিমাণ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, সেটি খরচ করতে পারেনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এটি মেনে নেয়া যায় না।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতের ব্যবস্থাপনার যে ঘাটতি, করোনা সবার চোখে সেটি আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। এ খাতে উন্নয়ন প্রকল্পে যা বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে তার বেশিরভাগ তো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করে। এরা যদি বলে, যে কাজটা আগামী বছরের জন্য এডিপি এবং অপারেটিং বাজেটের মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে, সেটা আমরা করতে পারব না।
‘কিন্তু তারা না করবে না। তবুও তারা তা ঠিক মতো করতে পারছে কি না, তা তো টাকা ব্যবহারের মধ্যেই দেখাই যাচ্ছে। এমনকি যেটা ব্যবহার হচ্ছে সেখানেও তো দুর্নীতি অপচয় এগুলোর অভিযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘দশ টাকার জিনিস ৩০-৫০ টাকায় কেনা হচ্ছে। কেনা হলেও তা ঠিকমতো খালাস করা হচ্ছে না। পণ্য ঠিক মতো ব্যবহার হচ্ছে না। যেটা প্রয়োজন সেটা কেনা হচ্ছে কি না, যা কিনছে তা সত্যিই দরকার আছে কি না, যার দরকার আছে তাকে সময় মতো দেয়া হচ্ছে কি না, এমন অনেক প্রশ্নই রয়েছে।’
ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘এরকম একটা জাতীয় দুর্যোগের মধ্যে শুধুমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যেখানে পারছে না, তাদের ওপর একচেটিয়া নির্ভরশীলতা থেকে বের হওয়া ছাড়া কোনো উপায় দেখা যাচ্ছে না। সামাজিকভাবেই এসব সেবা গ্রাহকদের কাছে নিয়ে যেতে হবে। সেটি না করে ডিজিএইচএস এর ওপর শুধু নির্ভরশীল থাকলে হবে না। তাদের সক্ষমতার বাইরে তো পারবে না। তাদের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা রয়েছে, বিশেষ করে ব্যবস্থপনার ক্ষেত্রে। সোজা কথায় দুর্নীতির ক্ষেত্রে যদি দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন না আসে, তাহলে এ অবস্থার উন্নতি হবে না।’
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ও ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সবসময়ই হেলথ সেক্টরের ব্যয় তারা করতে পারতো না। আগে ব্যয়টা একটু কম ছিল, তাদের ওপর এতো চাপ ছিল না। কিন্তু এটা তো ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি। এই সিচুয়েশনে এটা হওয়া উচিত না, কিন্তু হচ্ছে। এখন ব্যয় করতে না পারা দুর্ভাগ্যজনক।
‘দুটি কারণে স্বাস্থ্য খাতের এ অবস্থা। একটি দুর্বলতা, অপরটি করাপশন। এ দুটি সমস্যা এক সঙ্গে আসে। প্রকল্পের দুর্ললতার কারণে প্রকল্পের টাকা ব্যয় করতে পারে না। এক দিকে টাকা খরচ করে পারে না, অপর দিকে আনফেয়ার ওয়েতে বিভিন্ন কন্ট্রাক্টগুলো যায়। যে কারণে প্রকিউরমেন্ট (কেনাকাটা) বন্ধ হয়ে যায়। এতে ডিসভার্সমেন্টও (অর্থ ছাড়) বন্ধ হয়ে যায়। এর সঙ্গে সক্ষমতার অভাব তো রয়েছেই।’
অর্থ প্রাপ্তিতে শীর্ষ পাঁচে, খরচে তলানির দশে স্বাস্থ্য
আইএমইডির প্রতিবেদন বলছে, গত অর্থ বছরের এডিপির বরাদ্দে শীর্ষ পাঁচটি মন্ত্রণালয়ের একটি ছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু বছর শেষে কাজের দিক দিয়ে সরকারের ৫৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে স্বাস্থ্যের অবস্থান ৪৯তম বা তলানিতে থাকা ১০টির একটি।
বরাদ্দে স্বাস্থ্যের ওপরে থাকা মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগে ৮৯ দশমিক ৭১ শতাংশ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে ৮৮ শতাংশ, স্থানীয় সরকার বিভাগ ৮১ দশমিক ৪৪ শতাংশ অর্থ খরচ করেছে।
শীর্ষ বরাদ্দ পাওয়াদের মধ্যে স্বাস্থ্যের চেয়ে কম বরাদ্দ পেয়েও রেলপথ মন্ত্রণালয় ৮৫ শতাংশ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ১০১ দশমিক ২৯ শতাংশ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রায় ৮২ শতাংশ এবং ১০৪ দশমিক ২৭ খরচ করেছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। এমনকি কৃষি মন্ত্রণালয়ও ৯৭ দশমিক ৫২ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন দেখিয়েছে।
খরচের সামর্থ্য না থাকলেও নিয়েছে বাড়তি অর্থ
বছরের শুরু থেকেই ভালো অবস্থায় ছিল না স্বাস্থ্য খাত। গত অর্থ বছরের মূল এডিপিতে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে বরাদ্দ ছিল ৯ হাজার ৭৩৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভাগটি খরচ করতে পেরেছিল মাত্র ২ হাজার ৮১ কোটি টাকা যা বরাদ্দের ২১ শতাংশ।
এরপরও মার্চ মাসে এডিপি সংশোধনের সময় আরও ২ হাজার ২৪৩ কোটি টাকা বাড়তি বরাদ্দ নেয় বিভাগটি। তবে বছর শেষে মূল বরাদ্দ থেকেই ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা কম খরচ করেছে তারা।
খরচের হাত খোলা ছিল স্বাস্থ্যের জন্য
করোনার সময় অর্থ ব্যয়ে লাগাম টানতে বিভিন্ন খাতের কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে খরচ কমানোর পাশাপাশি উন্নয়ন প্রকল্পের একটা অংশও সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছিল। গত ডিসেম্বরে করোনাভাইরাস মহামারিতে ব্যয় কমানো নীতিতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) সরকারি অংশ থেকে ২৫ শতাংশ অর্থ আটকে রাখার বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও কৃষি মন্ত্রণালয় এর আওতাভুক্ত ছিল না।
এ বছরের মার্চে অর্থ বিভাগের অপর নির্দেশনায় বলা হয়, উন্নয়ন প্রকল্পের সরকারি অংশের ১৫ শতাংশ অব্যয়িত রেখে বাকি ৮৫ শতাংশ খরচ করা যাবে। এখানেও স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতকে আওতার বাইরে রাখা হয়। এর আগে উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন খাতে গাড়ি কেনা স্থগিত করা হয় আগামী জুন পর্যন্ত।
আরও পড়ুন:‘মানবিক করিডর’ নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে কক্সবাজার হয়ে জাতিসংঘের ‘মানবিক করিডর’-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি গতকাল মঙ্গলবার বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, সরকার তথাকথিত মানবিক করিডর নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে কোনো আলোচনা করেনি।”
শফিকুল আলম বলেন, ‘আমাদের অবস্থান হলো, জাতিসংঘের নেতৃত্বে রাখাইনে যদি মানবিক সহায়তা প্রদান করা হয়, তবে বাংলাদেশ লজিস্টিক সহায়তা দিতে আগ্রহী থাকবে।’
তিনি জানান, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) তথ্য অনুযায়ী রাখাইন রাজ্যে তীব্র মানবিক সংকট চলছে।
দুর্যোগকালীন সময়ে বিভিন্ন দেশকে সহায়তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যার সাম্প্রতিক উদাহরণ ভূমিকম্প-পরবর্তী সময়ে মিয়ানমারকে সহায়তা প্রদান করা।
প্রেস সচিব সতর্ক করে বলেন, ‘এছাড়াও, আমরা উদ্বিগ্ন যে এ ধরনের মানবিক সংকট দীর্ঘ হলে রাখাইন থেকে আরও মানুষের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে, যা আমরা সামাল দিতে পারব না।’
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিশ্বাস করে যে জাতিসংঘ-সমর্থিত মানবিক সহায়তা রাখাইনকে স্থিতিশীল করতে এবং শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রাখাইনে সহায়তা পাঠানোর বাস্তবসম্মত একমাত্র পথ হলো বাংলাদেশ।
শফিকুল আলম বলেন, এই রুট ব্যবহার করে সহায়তা পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নীতিগতভাবে লজিস্টিক সহায়তা প্রদানে সম্মত রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তবে, রাখাইনে সহায়তা প্রদানের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। যথাসময়ে আমরা বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শ করব।’
বাংলাদেশের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিশ্বের বড় কোনো শক্তি এই করিডরের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে যে প্রতিবেদন করা হয়েছে, সেগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও প্রপাগান্ডা বলে তিনি দাবি করেন।
প্রেস সচিব বলেন, ‘বিগত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশকে লক্ষ্য করে একের পর এক বিদ্বেষপূর্ণ বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াতে আমরা দেখেছি, যা এখনো চলছে। এ ধরণের প্রচারণাও তার ব্যতিক্রম নয়।’
আমরা এমন এক বিশ্বে বাস করি যেখানে যুদ্ধের প্রস্তুতি না রাখাটা আত্মঘাতী। এ মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর কুর্মিটোলায় বিমান বাহিনীর বীর উত্তম এ কে খন্দকার ঘাঁটিতে ছিল বার্ষিক মহড়া। ‘আকাশ বিজয়’ নামে হয় এ বছরের বাৎসরিক মহড়া। সেখানে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমি যুদ্ধবিরোধী মানুষ। পৃথিবীতে যুদ্ধ হোক এটা আমরা কামনা করি না। যুদ্ধ প্রস্তুতি অনেক সময় যুদ্ধের দিকে নিয়ে যায়। কাজেই যুদ্ধ প্রস্তুতি নিয়েও একটা ঘোরতর আপত্তি। কিন্তু এমন বিশ্বে আমরা বাস করি, প্রতিনিয়ত যুদ্ধের হুমকি আমাদের ঘিরে থাকে। তো সেখানে প্রস্তুতি না নিয়ে থাকা এটা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
‘কাজেই এই পরিস্থিতির মধ্যে যুদ্ধের প্রস্তুতি না নেয়াটা আত্মঘাতী। প্রস্তুতি নিতে হলে আধা-আধি প্রস্তুতির কোনো জায়গা নাই।’ বলেন তিনি।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলছে বিমান বাহিনী। সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তৎপর থাকতে হবে। দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে আত্মনির্ভরতার প্রমাণ দিয়েছে বিমান বাহিনী। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির জন্য সরকার সহযোগিতা করছে বাহিনীটিকে। পেশাগত কারিগরি সক্ষমতা বজায় রাখতে হবে।
দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য যুগোপযোগী বিমান বাহিনী গড়ে তুলতে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে, সকালে প্রধান উপদেষ্টার তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে ঘরের চাবি তুলে দেয়া এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেন প্রধান উপদেষ্টা। চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লার বন্যাকবলিত পরিবারের মাঝে পুনর্বাসনকৃত ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়।
লন্ডনে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তাকে আনতে বিএনপির অনুরোধে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডন থেকে ঢাকায় ফেরত আনতে বিএনপির পক্ষ থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছিল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই অনুরোধ নিয়ে কাজ করছে। এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত করা হচ্ছে। জানা যায়, খালেদা জিয়াকে লন্ডন থেকে দেশে ফেরাতে কাতারের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের আয়োজন করতে গত সপ্তাহে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনকে চিঠি লিখেছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য বর্তমানে লন্ডনে রয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল, তবে ‘আশঙ্কামুক্ত’ নয়। তথাপি তিনি এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে দেশে ফিরতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় চিকিৎসক বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে দেশে ফেরাতে পরামর্শ দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিএনপির মহাসচিবের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার লন্ডন ও দোহার বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দেশে ফেরাতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বিএনপির চেয়ারপাসন খালেদা জিয়া ২০১৮ সালে একটি দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। কভিড-১৯ মহামারির সময় বিগত সরকার তাকে বিশেষ বিবেচনায় কারামুক্তি দেয়।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দীনের এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুটি মামলায় তিনি কারাবন্দি ছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত।
গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর লন্ডন ক্লিনিক থেকে গত ২৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে তারেক রহমানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। অর্ধযুগের বেশি সময় পর এবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন করেছেন খালেদা জিয়া। তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কারাবন্দি অবস্থায় চারটি ঈদ কেটেছে কারাগারে ও বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে।
বর্তমানে তারেক রহমানের বাসায় চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কাশ্মীরের পেহেলগামে প্রাণঘাতী হামলার পর সামরিক জবাবদিহির বিষয়ে সেনাবাহিনীকে ‘পদ্ধতি, লক্ষ্য ও সময় নির্ধারণে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে এনডিটিভি গতকাল মঙ্গলবার রাতে এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল ও প্রতিরক্ষাপ্রধান জেনারেল অনিল চৌহানের সঙ্গে বৈঠকে এই বার্তা দিয়েছেন মোদি।
প্রধানমন্ত্রী মোদি আবারও বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ধ্বংসাত্মক জবাব দেওয়াই আমাদের জাতীয় সংকল্প’ এবং তিনি ভারতের সেনাবাহিনীর প্রতি ‘সম্পূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা’ রাখেন।
এই বৈঠকের কিছুক্ষণের মধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও ভারতীয় জনতা পার্টির আদর্শিক অভিভাবক রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভগবত প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে পৌঁছন।
সূত্রের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর এই বার্তা পেহেলগামে হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর জড়িতদের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের সবুজ সংকেত দিয়েছে। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামা হামলার পর এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা। তখন ভারত পাকিস্তানের বালাকোটে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ পরিচালিত প্রশিক্ষণশিবিরে নিখুঁত বিমান হামলা চালিয়েছিল।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহায়তায় পরিচালিত সেই শিবিরগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।
ছয় বছর পর এই হামলার সঙ্গে আবারও পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সম্পৃক্ততার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। তাদেরই ছায়া সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে বলে এনডিটিভি জানিয়েছে।
এদিকে ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোও বলেছে, প্রাপ্ত প্রমাণ আবারও পাকিস্তানকেই ইঙ্গিত করছে।
এই প্রমাণ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের, যেমন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, জাপান ও কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের প্রতিনিধিদের দেখানো হয়েছে।
ভারত ইতোমধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কূটনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। প্রথম ধাপে নয়াদিল্লি পাকিস্তানিদের জন্য জারি করা ভিসা বাতিল করে দিয়েছে। তবে পাকিস্তানি হিন্দু ও দীর্ঘমেয়াদি অনুমোদনপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে এ সিদ্ধান্ত প্রযোজ্য নয়। চিকিৎসার উদ্দেশ্যে দেওয়া ভিসাও বাতিল করা হয়েছে।
গত রোববার সব কার্যকর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর সীমান্ত পয়েন্টগুলোতে, বিশেষ করে বিখ্যাত আটারি-ওয়াঘা চেকপয়েন্টে পাকিস্তানি নাগরিকদের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। সেদিন থেকে প্রায় এক হাজার পাকিস্তানি নাগরিক ভারত ছেড়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ব্যক্তিগতভাবে রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীদের এই সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আরও কূটনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে ভারত ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত ইন্দাস পানি চুক্তিও স্থগিত করেছে। এই পানি বণ্টন চুক্তির অধীনে পাকিস্তান তার প্রাপ্য মোট পানির প্রায় ৮৫ শতাংশ পেত। এই চুক্তি স্থগিত করাকে ‘যুদ্ধ ঘোষণার শামিল’ বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসলামাবাদ ভারতের সব ভিসা বাতিল করেছে ও শত শত ভারতীয়কে বহিষ্কার করেছে। পাকিস্তান আরও কিছু দ্বিপক্ষীয় চুক্তি, যেমন ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তিও স্থগিত রেখেছে।
এরই মধ্যে পাকিস্তানের এক শীর্ষ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সম্ভাবনার বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজকে দেওয়া এক মন্তব্যে প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ বলেন, আগামী কয়েক দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পেহেলগামে হামলা নিয়ে নিজের প্রথম প্রকাশ্য মন্তব্যে প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রতিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, তার সরকার সন্ত্রাসবাদের ভয়াবহ পরিকল্পনাকে সফল হতে দেবে না।
তিনি আরও বলেন, ‘এবার সময় এসেছে সন্ত্রাসের আখ্যানের শেষ চিহ্নও মুছে ফেলার। ১৪০ কোটি মানুষের ইচ্ছাশক্তি সন্ত্রাসের প্রভুদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেবে।’
এরপর তিনি একাধিক শক্ত বার্তা দিয়েছেন, যাতে তিনি বলেন, ভারত সন্ত্রাসকে ভয় পায় না এবং এই ভয়াবহ হামলার পরিকল্পনাকারীসহ প্রত্যেক জড়িত ব্যক্তিকে খুঁজে বের করে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।
সূত্র: এনডিটিভি
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ দেশের চারটি জেলার বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে ঘর বিতরণ করেছেন।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশেষ আবাসন প্রকল্পে নির্মিত মোট তিনশটি ঘর ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলায় বিতরণ করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসকরা সুবিধাভোগীদের মাঝে ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন।
অধ্যাপক ইউনূস ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি চারটি জেলায় অনুষ্ঠিত ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
ফেনীতে ১১০টি, নোয়াখালীতে ৯০টি, কুমিল্লায় ৭০টি এবং চট্টগ্রামে ৩০টি ঘর সুবিধাভোগীদের মাঝে বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে সুবিধাভোগীরা তাদের প্রতিক্রিয়া জানান।
প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে, বরাদ্দকৃত টাকার অর্ধেক দিয়েই সুষ্ঠু ভাবে প্রকল্প শেষ করায় প্রকল্পের সাথে যুক্ত সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, বীর প্রতীক এবং সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে জ্যেষ্ঠ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এই বিশেষ গৃহায়ন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে।
প্রচ্ছায়া লিমিটেডের আট পরিচালকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
দেশ ত্যাগে যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে তারা হচ্ছেন: প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক বুশরা সিদ্দিক, শেহতাজ মুন্নাসী খান, শহিদ উদ্দিন খান, শাহিন সিদ্দিক, শফিক আহমেদ শফিক, পারিজা পাইনাজ খান, নওরিন তাসমিয়া সিদ্দিক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারজানা আনজুম।
দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এই আদেশ দেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা ও তাঁর ছোট বোনের মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকী ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের নামে প্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ সংক্রান্ত অভিযোগ অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সাত সদস্য বিশিষ্ট অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে।
প্রচ্ছায়া লিমিটেড নামীয় প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারহোল্ডারগণ যাতে সপরিবারে গোপনে দেশ ত্যাগ করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি দেশত্যাগ করে বিদেশে পালিয়ে গেলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ডপত্র প্রাপ্তিতে ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে। তাছাড়া সার্বিক অনুসন্ধানকাজে বিঘ্ন সৃষ্টিসহ সমূহ ক্ষতির কারণ রয়েছে। এজন্য অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ যাত্রা রোধে আদালতের আদেশ দেয়া একান্ত প্রয়োজন। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
কক্সবাজার হয়ে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ‘মানবিক করিডোর’ স্থাপন নিয়ে জাতিসংঘ কিংবা অন্যকোনো সংস্থার সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) এক প্রশ্নের জবাবে তিনি ইউএনবিকে জানান, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে তথাকথিত ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে কোনো আলোচনা করেনি সরকার।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের অবস্থান হলো— যদি জাতিসংঘের নেতৃত্বে রাখাইনে মানবিক সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়, তবে বাংলাদেশ সেক্ষেত্রে যৌক্তিক সহায়তা দিতে প্রস্তুত।’
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) তথ্যমতে, রাখাইন রাজ্যে বর্তমানে চরম মানবিক সংকট বিদ্যমান।
শফিকুল আলম জানান, বাংলাদেশ সবসময়ই সংকটকালে অন্যান্য দেশকে সহায়তা করে এসেছে, সম্প্রতি মিয়ানমারে ভূমিকম্পের পরও সেখানে মানবিক সহায়তা পাঠানো হয়েছে।
রাখাইন রাজ্যে মানবিক সংকট অব্যাহত থাকলে তা বাংলাদেশে নতুন করে বাস্তুচ্যুত মানুষের ঢল নামার কারণ হতে পারে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রেস সচিব।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, জাতিসংঘের দেওয়া মানবিক ত্রাণ সহায়তা রাখাইনকে স্থিতিশীল করতে সাহায্য করবে এবং শরণার্থীদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করবে।’
শফিকুল আলম জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে রাখাইনে সহায়তা পৌঁছানোর একমাত্র কার্যকর রুট হচ্ছে বাংলাদেশ। এ পথে ত্রাণ পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ নীতিগতভাবে যৌক্তিক সহায়তা দিতে সম্মত।
তবে রাখাইনে মানবিক সহায়তা পাঠানোর বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। যথাসময়ে এ বিষয়ে দেশের সংশ্লিষ্ট স্বত্বভোগীদের (স্টকহোল্ডার) সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’
রাখাইন রাজ্যে যোগাযোগের জন্য মানবিক করিডর দেওয়ার বিষয়ে একটি বড় শক্তির সংশ্লিষ্টতা নিয়ে যা বলা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং কল্পিত অপপ্রচার বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
প্রেস সচিব বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে ধারাবাহিক মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারণা চালানো হয়েছে, এটি তারই অংশ। এ ধরনের অপপ্রচার আমরা আগেও দেখেছি, এখনো চলছে।
মন্তব্য