করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এরই মধ্যে তিনটি টিকা কিনতে হুড়োহুড়ি করছে বেশির ভাগ দেশ। বাজারে এখন মোট চারটি টিকা। কিন্তু যেসব টিকা এখনও আসেনি বা এখনও গবেষণার মধ্যে আছে, সেগুলোর ভাগ্যে কী হবে? বেশ কিছু টিকার গবেষণা প্রায় শেষ পর্যায়ে। টিকার দৌড়ে এসব টিকা কি হেরে গেছে?
ফাইজার ও বায়ো-এনটেক উদ্ভাবিত টিকার দিকেই সবচেয়ে বেশি ঝোঁক সবার। এরপরই উচ্চারিত হচ্ছে মডার্নার টিকা। অক্সফোর্ডের টিকা শুরুতে সবচেয়ে এগিয়ে থাকলেও এখন কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: ফাইজার, নাকি মডার্না: কোন টিকা ভালো?
গত বছরের শেষ দিকে চীনের উহান থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই এই ভাইরাস প্রতিরোধে টিকা উদ্ভাবনে উঠেপড়ে লাগে দেশগুলো। সাফল্য আসতে দেরি হয়নি।
সবার আগে আগস্টে করোনা প্রতিরোধী টিকা উদ্ভাবনের ঘোষণা দেয় রাশিয়া। কিন্তু ‘স্পুতনিক ভি’ নামের টিকাটি নজর কাড়তে পারেনি।
এই টিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে পশ্চিমা বিশ্ব। তাদের দাবি পর্যাপ্ত পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই ছাড়া হয়েছে টিকাটি। একই অবস্থা চীন উদ্ভাবিত সিনোভ্যাক টিকার ক্ষেত্রেও।
করোনার টিকা ইস্যুটি গরম হয়ে ওঠে নভেম্বরের মাঝামাঝিতে। সপ্তাহের ব্যবধানে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দুটি প্রতিষ্ঠান করোনারোধে কার্যকর দুটি টিকার ঘোষণা দেয়।
এর মধ্যে প্রথম টিকাটি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ফাইজার ও জার্মানভিত্তিক প্রতিষ্ঠান বায়ো-এনটেকের যৌথ প্রচেষ্টায় উদ্ভাবিত। অপরটি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওষুধ উৎপাদন প্রতিষ্ঠান মডার্নার একক প্রচেষ্টায় উদ্ভাবিত।
টিকা দুটির ডামাডোলের মধ্যে যেন হারিয়ে যেতে বসেছে পাইপলাইনে থাকা বাকি টিকাগুলোর খবর।
যুক্তরাষ্ট্রের টিকা প্রয়োগের পর্যায়ে আসতেও দেরি হয়নি। শুরুটা করে যুক্তরাজ্য। জনগণের মাঝে সবার আগে ফাইজারের টিকা প্রয়োগ শুরু করে ইউরোপের দেশটি। একই টিকা প্রয়োগ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল, মেক্সিকো, চিলি, সৌদি আরব, কুয়েতসহ অনেক দেশ। মডার্নার টিকা নিতেও আগ্রহ প্রকাশ করেছে অনেকে।
আর্জেন্টিনা নিয়েছে কেবল রাশিয়ার স্পুতনিক ভি টিকা। আর যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজারের টিকার পাশাপাশি চীন উদ্ভাবিত সিনোভ্যাক নিচ্ছে তুরস্ক।
তাহলে অন্যান্য টিকার চাহিদা কী শেষ হয়ে গেল?
আরও পড়ুন: করোনার টিকা নিলেন যুবরাজ সালমান
না, শেষ হয়ে যায়নি। বাকি টিকাগুলোও বাজারে আসার জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারে সব ধরনের টিকাই প্রয়োজন হবে। কারণ একেক টিকার কার্যকারিতা একেক রকম।
বাকি টিকাগুলোর মধ্যে ব্যবহার পর্যায়ের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড উদ্ভাবিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা। এটি করোনা ঠেকাতে ৯০ শতাংশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। এবার বিভিন্ন দেশে প্রয়োগের জন্য অনুমোদনের অপেক্ষায়।
এই টিকা পেতে অপেক্ষায় আছে অনেক দেশ। এই তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশও। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে অক্সফোর্ডের টিকার তিন কোটি ডোজ আনতে চুক্তি করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মা। নতুন বছরের শুরুতেই ব্যবহারের পর্যায়ে পাওয়া যেতে পারে এই টিকা।
বাজারে টিকা ছাড়ায় জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ উৎপাদনকারী জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান জনসন অ্যান্ড জনসন। এ জন্য ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পরিধি কমিয়ে আনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সরকারের চিন্তায় মডার্না ও ফাইজার নেই
ট্রায়ালের চূড়ান্ত তথা তৃতীয় ধাপে ৬০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর ওপর টিকাটির পরীক্ষা চালানোর কথা ছিল। সেটা কমিয়ে আনা হয়েছে ৪০ হাজারে। সবকিছু ঠিক থাকলে ফেব্রুয়ারি দিকে টিকাটি ব্যবহারে অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হতে পারে।
কার্যকর টিকা ছাড়ার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ উৎপাদনকারী আরেক প্রতিষ্ঠান নোভাভ্যাক্স। যুক্তরাজ্যে এ টিকার শেষ ধাপের একটি ট্রায়াল হয়েছে। এই ট্রায়ালের তথ্য-উপাত্ত হাতে চলে আসতে পারে নতুন বছরের শুরুর দিকে। এ ছাড়া চলতি মাসেই বড় পরিসরের ট্রায়ালে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।
চীনের রাষ্ট্রীয় ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিনোফার্ম তাদের টিকার তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল শেষ করেছে। নিজেদের দেশে ট্রায়ালের পর টিকাটি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইনও। মধ্য প্রাচ্যের দেশ দুটি জানিয়েছে, টিকাটি কোরোনা রোধে কার্যকর ৮৬ শতাংশ।
এই টিকা সীমিত পরিসরে ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয়েছে চীনে। যদিও সিনোফার্ম তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালের ফল এখনও ঘোষণা করেনি।
ভারতেও একাধিক টিকার ট্রায়াল চলছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের ছয়টি টিকা বিভিন্ন পর্যায়ের ট্রায়ালে আছে। এর মধ্যে দৌড়ে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন নামক টিকা।
নভেম্বরে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা চালু হয়েছে কোভ্যাক্সিনের। জরুরি প্রয়োজনে টিকাটি ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়ায় আবেদন করা হয়েছে।
এখন পর্যন্ত কোভ্যাক্সিনের কোনো ট্রায়ালের ফল প্রকাশ করা হয়নি। তবে ভারত বায়োটেক থেকে দাবি করা হচ্ছে টিকাটি করোনা রোধে ৬০ শতাংশ কার্যকর।
করোনাভাইরাসের সহজলভ্য টিকা উদ্ভাবনের চেষ্টায় আছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইনোভায়ো ফার্মাসিউটিক্যালস। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান আরএনএ জিনকাঠামোর টিকা উদ্ভাবন করলেও তারা করছে ডিএনএ জিনকাঠামোর টিকা। এই টিকা সাধারণ তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা যাবে এক বছরের বেশি সময়। কিন্তু টিকাটি মাত্র ট্রায়ালের দ্বিতীয় ধাপে আছে।
আরও পড়ুন: অ্যালার্জি থাকলে ফাইজারের টিকায় মানা
করোনার টিকার ট্রায়ালে দুঃসংবাদেরও ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে আছে ফ্রান্সের সানোফি ও ব্রিটেনের গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন। চলতি মাসের শুরুর দিকে তারা জানায়, টিকা উৎপাদনে একাধিকবার ট্রায়াল চালিয়েও সাফল্য আসেনি। ট্রায়ালে দেখা যায়, তাদের টিকা পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সাধারণত কোনো টিকার অন্তত ৭০ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকারিতা দেখতে চায়। আর যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান এফডিএ এই মাত্রা ঠিক করেছে ৫০ শতাংশ।
আরও পড়ুন:দেশে গত বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত একদিনে আরও ১০ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। ১৯৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে এই রোগী শনাক্ত হয়। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৫২ হাজার ৭৩ জনে। এ সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নতুন করে করোনা আক্রান্ত ১০ জনসহ চলতি বছর এখন পর্যন্ত মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২৮ জনে। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় একজনের মৃত্যু হওয়ায় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৯ হাজার ৫১৯ জনে দাঁড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশে করোনাভাইরাস মহামারির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ। আর গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৪ দশমিক ২ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। ২০২১ সালের ৫ ও ১০ আগস্ট দুদিন করোনায় সর্বাধিক ২৬৪ জন করে মারা যান।
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় দিন দিন বাড়ছে ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতো ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। গত ৩ দিনে ডেঙ্গুরোগী শনাক্ত হয়েছে ১০ জন। গত ২২ থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত এই ৩ দিনে ১০ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়।
কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. হাবিবুর রহমান জানান, গত রোববার থেকে আমরা সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গুরোগীর তথ্য সংগ্রহ করে জেলা সিভিল সার্জন অফিসে প্রেরণ করেছি। তিনি জানান, আমাদের কাছে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী গত রোববার কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১ জন, হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ডায়াবেটিক সেন্টারে ২ জন, রেডিয়াম ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ২ জন, হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ২ জন ডেঙ্গুরোগী পাওয়া গেছে।
কাপাসিয়া উপজেলার সরকারি - বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে অনেকেই রক্ত পরীক্ষা করেছেন। রক্ত পরীক্ষার পর এক দিনে ৫ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। ২৩ জুন, সোমবার কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১ জন, রেডিয়াম ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ১ জন, ইরাম ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ১জনসহ মোট ৩ জন ডেঙ্গুরোগী শনাক্ত হয়েছে। তাছাড়া গত মঙ্গলবার হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ডায়াবেটিক সেন্টারে ২ জন মহিলার রক্ত পরীক্ষার পর ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে।
করোনা সংক্রমণের নতুন ঢেউয়ের মধ্যে দেশে নতুন করে কারো মৃত্যু হয়নি। বুধবার (২৫ জুন) সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৯ জনের শরীরে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি শনাক্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪১২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ।
দেশে এখন পর্যন্ত ২০ লাখ ৫২ হাজার ৬৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১৯ জন। আর দেশে ভাইরাসটিতে মোট ২৯ হাজার ৫১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এডিশ মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মুত্যৃর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। চলতি বছরে ডেঙ্গু যেনো ভয়বহ রূপ ধারণ করতে যাচ্ছে।
এদিকে গত মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত একদিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩২৬ জন। সবচেয়ে বেশি ১১৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন বরিশাল বিভাগে। এই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বরিশাল বিভাগে ১১৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৩ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৩ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৪৫ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ২৬ জন, খুলনা বিভাগে ১৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৯ জন, ময়মনসিংহে ৫ জন ও সিলেট বিভাগে একজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩১৯ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৭ হাজার ৭৪৯ জন। চলতি বছরের ২৫ জুন পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৮৭০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩৬ জনের।
২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন মোট এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন এবং মৃত্যুবরণ করেন ৫৭৫ জন। এর আগের বছর ২০২৩ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়। ওই বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন মোট তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের হার বেড়েই চলেছে। সোমবার (২৩ জুন) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় কারো মৃত্যু হয়নি। আর এই সময়ের মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩৯৪ জন। আর চলতি সপ্তাহের এই কয়েকদিনে রোগটিতে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের।
সোমবার (২৩ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের ঘটনা ঘটে। এ সময়ের মধ্যে বিভাগটিতে আক্রান্ত হয় সর্বোচ্চ ১৫৭ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভর্তি হয়েছেন ৩৯৪ জন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৯২ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩০২ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫০ শতাংশ পুরুষ এবং ৫০ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৮ হাজার ৫৪৪ জন। এর মধ্যে ৫৫ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৪ দশমিক ৪ শতাংশ নারী।
বরিশাল বিভাগের বরগুনায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বৃদ্ধা রাবেয়া (১০০) মারা গেছেন। গতকাল সোমবার ভোরে তিনি বরগুনা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। সরকারি হিসাব অনুযায়ী এ নিয়ে বিভাগে ডেঙ্গুতে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে বরগুনার বাসিন্দাই রয়েছে ৬ জন। এদিকে গত রোববার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১২৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। একই সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ১২৯ জন।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সোমবার ভোরে মৃত্যু হওয়া শতবর্ষী রাবেয়া বেগম বরগুনা সদরের বাসিন্দা। তাকে গত রোববার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
স্বাস্থ্য বিভাগে তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ১৩ জন ভর্তি হয়েছে। এছাড়া বরিশাল জেলার বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে ৮ জন।
পটুয়াখালী জেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ৭ জন, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪ জন, ভোলা সদর হাসপাতালে ৫ জন ভর্তি হয়েছে। পিরোজপুরে ১৬ জন ও বরগুনায় ৭৩। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় ঝালকাঠিতে কেউ আক্রান্ত হয়নি।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা উদ্বেগ ও আশংকাজনক। এ পরিস্থিতি থেকে বেরুতে হবে। তাই মশার বিস্তার রোধ করতে বাড়ির আশে-পাশে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হবে। মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে হবে।
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে ঊর্ধ্বগতির আক্রান্তের হারের মধ্যে দেশে আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (২২ জুন) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এই মৃত্যু হয়। আর এই সময়ের মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩৯২ জন।
সোমবার (২৩ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা সিটি করপোরেশন ও বরিশাল বিভাগে এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। আর আক্রান্তের হারে সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে বরিশাল বিভাগ। এই সময়ের মধ্যে বিভাগটিতে নতুন করে মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১২৬ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভর্তি হয়েছেন ৩৯২ জন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮৬ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩০৬ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫০ শতাংশ পুরুষ এবং ৫০ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৮ হাজার ১৫০ জন। এর মধ্যে ৫৯ শতাংশ পুরুষ এবং ৪১ শতাংশ নারী।
মন্তব্য