হাতে বুম নিয়ে মুদি দোকানের দিকে এগিয়ে এলেন একজন। পরনে সালোয়ার কামিজ। তার পেছনে মোবাইল ক্যামেরা হাতে আছেন আরেকজন। লাইভ ভিডিও করছেন।
আগে এ ধরনের কাউকে এগিয়ে আসতে দেখলে দোকানদার বিরক্ত হতেন। তাড়িয়ে দিতে চাইতেন। বেশির ভাগ সময়ই তারা আসতেন টাকার দাবিতে। তবে এবার তারা এসেছেন ভিন্ন রূপে। তাদের এই রূপে দেখে দোকানদারও বিস্মিত।
ক্যামেরা-বুম হাতে আসা দুজনই ট্রান্সজেন্ডার। সমাজে যাদের পরিচয় ‘হিজড়া’ হিসেবে। তারা নিজেরা একটা ফেসবুক পেজ খুলেছেন। নাম দিয়েছেন ‘সিলেট হিজড়া টিভি’। এই ‘টিভি’র হয়েই শাটডাউনে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দুঃখ-কষ্টের কথা জানতে ক্যামেরা-বুম নিয়ে বের হয়েছেন তারা।
‘সিলেট হিজড়া টিভি’র স্লোগান- ‘আমরা আমাদের কথা বলব’। নিজেদের কথা তুলে ধরতেই এই ফেসবুক পেজ খুলেছেন সিলেটের ট্রান্সজেন্ডার কয়েকজন নাগরিক। বুধবার বিকেলে সিলেটের সুরমা নদীর তীরের চাঁদনীঘাটে নিজেরাই তাদের এই ‘টিভির’ উদ্বোধন করেন।
বুম হাতে দোকানে গিয়েছিলেন যিনি তার নাম কারিশমা। নিজেকে পরিচয় দেন ‘কারিশমা হিজড়া’ হিসেবে। বৃহস্পতিবার ‘সিলেট হিজড়া টিভি’ পেজে গিয়ে দেখা যায়- একাধিক লাইভ ভিডিও দেয়া রয়েছে পেজে। বুধবার বিকেল থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে এবং বিভিন্ন বিষয়ে এসব লাইভ করা হয়েছে। সবগুলোতেই ক্যামেরার সামনে রয়েছেন কারিশমা।
নিজেরা একটি ‘টিভি’ খোলা প্রসঙ্গে কারিশমা বলেন, ‘আমাদের কথা কেউ বলে না। আমরা মৌলিক চাহিদা থেকে বঞ্চিত। সাংবাদিকরা অনেক বিষয়ে লেখালেখি করে কিন্তু আমাদের বিষয় সেইভাবে তুলে ধরে না। তাই আমরা নিজেরাই একটি টিভি চালু করেছি। যেখানে আমরা আমাদের বিষষয়গুলো তুলে ধরব। আমাদের অধিকারের কথা বলব। আমাদের সম্পর্কে মানুষের মনে অনেক ভুল ধারণা আছে, এগুলো ভাঙার চেষ্টা করব। তবে কেবল আমাদের বিষয় না, আশপাশের সব বিষয় আমরা আমাদের টিভির মাধ্যমে তুলে ধরব।
কারিশমা বলেন, ‘আমরা সাংবাদিক না তবে সাংবাদিক হওয়ার চেষ্টা করব। আমরা লেখপড়া করে সাংবাদিক হইনি। আমাদের ভুলত্রুটি থাকবে। আপনারা ক্ষমা করবেন। সিলেটের যে হিজড়া আছে, আমরা তাদের জীবনমান তুলে ধরব।’
এই ফেসবুক পেজ, যাকে তারা টিভি বলছেন, এটির চেয়ারম্যান ‘রানী মুখার্জি হিজড়া’। নিজের শিষ্যদের নিয়ে সিলেট নগরের আম্বরখানা এলাকায় থাকেন রানী। ‘সিলেট হিজড়া বাউল সংগঠন’ নামে একটি সংগঠনেরও চেয়ারম্যান তিনি।
মাস দুয়েক ধরেই এই ‘টিভি’ চালুর পরিকল্পনা করছেন বলে জানান রানী। সিলেটে প্রায় ৫০০ ট্রান্সজেন্ডার রয়েছেন। এর মধ্যে ২০ জনের মতো এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত আছেন জানিয়ে রানী বলেন, ‘‘ট্রান্সজেন্ডারদের মধ্যে যারা শিক্ষিত তাদের এই ‘টিভির সাংবাদিক’ হিসেবে যুক্ত করা হবে।‘’
হঠাৎ টিভি চালুর পরিকল্পনা এলো কী করে, জানতে চাইলে রানী বলেন, ‘আমরা খুব কষ্টে আছি। আমাদের কথা কেউ বলে না। আমরা আমাদের কথা তুলে ধরতে চাই। এ কারণে এই চ্যানেল করেছি।
‘আমাদের কিছু সদস্য চাকরি, কয়েকজন ব্যবসা আর বেশির ভাগ সদস্যই ‘হিজড়া সংস্কৃতি’ পালন করে জীবিকা নির্বাহ করে। হিজড়া সংস্কৃতি হলো দোকানে দোকানে ঘুরে টাকা সংগ্রহ করা। কিন্তু শাটডাউনে দোকানপাট বন্ধ থাকায় তাদের আয়-রোজগার একেবারে বন্ধ। ফলে খেয়ে না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। বিকল্প আয়ের চিন্তা থেকেও এই টিভি করা হয়েছে।’
নিজেদের কথা, সমাজের কথা তুলে ধরা হলো, আবার কিছু আয়ও হলো- যুক্ত করেন রানী।
রানী বলেন, ‘এই টিভির মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রতিভার কথা তুলে ধরব। আমাদের ভয়েস রেইজ করতে হবে। না হলে হবে না।’
দর্শকদের তিনি বলেন, ‘সবাই আমাদের সহযোগিতা করবেন। আমরাও আপনাদের মতো মানুষ। আমাদের অবহেলা করবেন না।’
‘সিলেট হিজড়া টিভি’র বুধবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ফেসবুকে নিজেদের পেজ থেকে লাইভ সম্প্রচার করা হয়। এতে এর সাথে যুক্ত কয়েকজন কথা বলেন।
এতে ‘সূচনা হিজড়া’ পরিচয় দেয়া একজন বলেন, ‘দোকানপাট বন্ধ। আমরা এখন কী খাব? কোনো কালেকশন নাই। তাই আমরা টিভি খুলেছি। সাংবাদিক হয়েছি। আমরা ছোট ছোট সংবাদ তৈরি করব।’
ফেসবুকে সম্প্রচারিত ওই লাইভ ভিডিওতে অনেকেই তাদের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে উৎসাহমূলক মন্তব্য করেছেন।
লিয়াকত হোসেন নামে একজন লিখেছেন- ‘নিজেদের অধিকার আদায়ের পাশাপাশি মহৎ কাজে এগিয়ে চলো, শুভকামনা রইল আগামী দিনের পথ চলার।’
হাফিজ বাসিত নামে আরেকজন লিখেছেন- ‘সমাজ আপনাদের অনেক অবহেলা করে। আমি চাই আপনারা নিজে থেকে কোনো একটা কিছু করেন। যাতে সমাজের বোঝা না হয়ে সমাজের মানুষের গৌরব হতে পারেন। অনেক বাধাবিপত্তি আসবে কিন্তু থেমে থাকবেন না। সত্যি তোমাদের জন্য অনেক মায়া হয়। তোমাদের জীবন যাপন নিয়ে ভাবি। আল্লাহ চাইলে কি করতে পারেন। তোমাদের জীবন যাত্রার মান আরও উন্নত হোক এই দোয়াই করি। শুভ কামনা রইল।’
ওই ভিডিওর কমেন্টে আমিনুর রহমান নামে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন- ‘সবাই এখানে লাইক কমেন্ট এবং শেয়ার করেন। ওদের আয়- রোজগার বাড়লে সমাজের উপকার হবে।’
সিলেটে সম্প্রতি ফেসবুক পেজ খুলে তাকে টিভি চ্যানেল নাম দিয়ে নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে দাবি করার প্রবণতা বেড়েছে। এ নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া রয়েছে পেশাদার সাংবাদিকদের মধ্যে। ‘ফেসবুক টিভি’র কারণে পেশাগত দায়িত্ব পালনে গিয়ে নিজেরা বিপাকে পড়ার কথাও জানিয়েছেন অনেকে।
সম্প্রতি কাগজপত্রবিহীন মোটরসাইকেল আটকের পর ফেসবুকে লাইভ করে ব্যাপক সমালোচিত হন ‘পিকে টিভি’ নামে একটি ফেসবুক পেজের ‘সম্পাদক’ ফয়ছল কাদির। দুদিন পর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে সিলেটে ‘ফেসবুক টিভি’ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। এর মধ্যেই চালু হলো- ‘সিলেট হিজড়া টিভি’।
ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন সিলেটের সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান রিপন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন দেখা যাচ্ছে ফেসবুকে পেজ খুলেই অনেকে টিভি নাম দিয়ে দিচ্ছেন। কথা বলতে পারেন না, সাংবাদিকতার নীতিনৈতিকতা জানেন না- তারাও ফেসবুকের কল্যাণে টিভির মালিক-সম্পাদক হয়ে যাচ্ছেন। যা মূলধারার গণমাধ্যমের জন্যও বড় হুমকি। তারা অনেক সময় ভুল তথ্য প্রচার করছেন। যা রাষ্ট্র এবং সাংবাদিকতার জন্যও ক্ষতিকর।
‘আমি মনে করি, সরকারের এই বিষয়ে একটি নীতিমালা করা প্রয়োজন। যাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে কেউ গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে নিজেকে জাহির করতে না পারে।’
‘সিলেট হিজড়া টিভি’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ট্রান্সজেন্ডার মানুষের প্রতি আমাদের যথেষ্ট সহানুভূতি আছে। আমরা চাই তারা সমাজের মূল স্রোতে আসবেন। মূল ধারার গণমাধ্যমের সঙ্গে তারা যুক্ত হবেন। সেখানে আরও বেশি বেশি নিজেদের অধিকার ও বঞ্চনার কথা বলবেন।’
কেশবপুরের ঐতিহ্য কালোমুখো হনুমান খাদ্য সংকট ও বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় খাবার না পেয়ে মারাও যাচ্ছে। কালোমুখো হনুমান রক্ষার দাবি উঠেছে।
জানা গেছে, একসময় কেশবপুরে ছিল কালোমুখো হনুমানের অভয়ারণ্য। বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় এবং খাদ্য সংকটে সময়ের গতির সঙ্গে কমে যাচ্ছে হনুমান। বর্তমানে ১৮০ থেকে ২০০টি হনুমান কেশবপুরে রয়েছে বলে স্থানীয় বন বিভাগ জানায়। এখান থেকে ৪/৫ বছর আগে ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ টি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশ বিভক্তির আগে ভারতের মাড়োয়াররা ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য যশোরের কেশবপুরে বসবাসের পাশাপাশি আসা-যাওয়া করত। এ সময় তাদের যানবাহনে করে দুটি কালোমুখো হনুমান ভারত থেকে কেশবপুরে আসে। সেই থেকে হনুমানের এখানে পত্তন শুরু হয়। ওই এক জোড়া হনুমান থেকে এখানে শত শত হনুমানের কালের আবর্তনে ওরা আজ বিলুপ্তির পথে। একসময় কেশবপুর অঞ্চলে ঘন বনজঙ্গল ছিল। এসব বনের ফল ও লতাপাতা খেয়ে ওরা জীবিকা নির্বাহ করত। বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বন উজাড়সহ ঘনবসতি এবং এলাকায় অবৈধ ইটভাটায় গিলে খাচ্ছে এসব বনের কাঠ। এতে উজাড় হচ্ছে বন। এদিকে কেশবপুর উপজেলায় পল্লীবিদ্যুতের তারে কভার সিস্টেম না থাকায় প্রায়ই বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ওরা মারা যাচ্ছে। খাদ্য সংকটের কারণে কেশবপুরের হনুমান দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে।
উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন বলেন, কেশবপুর এলাকায় বনজঙ্গল কমে যাওয়ার কারণে হনুমানের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ওদের রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন বলেন, হনুমান রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন এনজিও ব্যক্তি গত ভাবেও অনেকেই খাদ্য দেয়, যার কারণে ওরা গ্রামাঞ্চল ছেড়ে বর্তমানে শহরে বেশি বিচরণ করছে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত জেবল হক (৮০) কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের লামছি গ্রামের মৃত গনু মিয়ার ছেলে।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তার মৃত্যু হয়।
ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ওই বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান তিনি। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের এক জনের নমুনা পরীক্ষায় একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা.মরিয়ম সিমি বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তি সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুপুরে তার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সেখানে রাতে তার মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত নোয়াখালীতে মোট ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কিট সল্পতার কারণে উপজেলা পর্যায়ে করোনা টেস্ট এখনো শুরু করা হয়নি।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি মাদকাসক্ত আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।
সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষণা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে পৌরসভা হলরুমে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। বাজেটে সর্বমোট আয় ৪২ কোটি ৯১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ও মোট ব্যয় ৩৬ কোটি ৭৪ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম তার প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাত থেকে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩১ টাকা ও উন্নয়ন খাত থেকে ২৯ কোটি ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৫ টাকা আহরনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বাজেটে উদ্ধৃত্ত ধরা হয়েছে ৬ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৩ শত ৭৮ টাকা।
এছাড়াও বাজেটে খাতওয়ারী ব্যয়ের হিসেবে দেখা যায় রাজস্ব খাতে ব্যয় ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান,পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, হিসাবরক্ষক শাহাদাত হোসেনসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তারা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদকাসক্ত হয়ে মাতলামি করার প্রতিবাদ করায় ইয়াছিন (৩৮) ও সিপন( ৩২) নামে দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অপরজনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মুড়াপাড়া টঙ্গীরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ ইয়াছিন মুড়াপাড়ার হাউলিপাড়া এলাকার ইদু মিয়ার ছেলে এবং সিপন টঙ্গীরঘাট এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, রাত ১১টার দিকে ইয়াছিন তার স্ত্রীকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে খালাতো বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে স্থানীয় সোহরাব নামের এক যুবক মাদকাসক্ত অবস্থায় তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ করলে ইয়াছিন প্রতিবাদ করেন। পরে তিনি খালাতো ভাই সিপনকে নিয়ে স্থানীয় অহিদুল্লার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। সেখানেই সোহরাব ক্ষিপ্ত হয়ে পিস্তল দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ইয়াছিনের মাথায় ও সিপনের পায়ে গুলি লাগে।
তাদের প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সিপনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইয়াছিনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
নোয়াখালীতে গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক সচরতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশ গ্রহণের সমন্বিত পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বুধবার সকাল ১১ টার দিকে (২৫ জুন) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় তৃতীয় তলায় মিনি কনফারেন্স হলরুমে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন,নোয়াখালী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইয়াসিন, গ্রাম আদালত নোয়াখালী ম্যানেজার আহসানুল্লাহ চৌধুরী মামুনসহ এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ,সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একটি বিচারাধীন মামলার নথি থেকে এজাহারের কপি রহস্যজনকভাবে গায়েব হয়ে গেছে। আদালতের নথি থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই কাগজ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে মামলার বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির ও আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুলকে শোকজ করেছেন বিচারক। তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ঘটনাটি ঘটে গত ২২ জুন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে। ওই দিন মামলাটির (এসসি-১৬৬৯/২০১৮) সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নির্ধারিত ছিল। আদালতে আসামি, রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ও আসামিপক্ষের আইনজীবী—সবাই উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে বিচারক মো. সালেহুজ্জামান মামলার নথি পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পান, নথিতে মামলার এজাহারের কপি নেই। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি জানান, সাক্ষ্য গ্রহণের আগে আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল তার কাছ থেকে নথি নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এজাহার দেখে প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে নিয়েছিলেন। এরপর তিনি আবার নথি বিচারকের কাছে জমা দেন।
এরপর এজলাসেই বিচারক আইনজীবীর কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারাসহ সিনিয়র আইনজীবীরা এজলাসে হাজির হন। একপর্যায় বিচারক ওই দুইজনকে শোকজ করে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিচারক এজলাসে ওঠার আগে আইনজীবী মামলার নথি নিয়েছিলেন। পরে ফেরত দেন। আমি নিজে নথিতে কোনো হেরফের করিনি। আইনজীবী কিংবা আইনজীবীর সহকারীর মাধ্যমে এই ঘটনা ঘটতে পারে।’
অন্যদিকে, আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল জানান, তিনি নথি নিয়েছিলেন ঠিকই, তবে বিচারক এজলাসে চলে আসায় তা যথাযথভাবে বেঞ্চ সহকারীর কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি আসামির চালান কপি থেকে তথ্য নিয়েছেন। এজাহার সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলেও দাবি করেন।
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ গফুর বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। একজন আইনজীবী এমন কাজ করতে পারেন না। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছি।’
আদালত ও আইনজীবী সমিতি সূত্র আরও জানায়, আদালতে থাকা মামলার মুল কপি থেকে মামলার এজাহারের কপি সরিয়ে নিয়ে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া এজাহার কপি হারিয়ে গেলেও মামলার বিচারের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ ওই মামলার এজাহারের ফটোকপি রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির কাছে সংরক্ষিত থাকে। এর বাইরেও অনেক মাধ্যমে মামলার এজাহারের কপি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তবে, মুল নথিতে এজাহারের কপি না থাকাটা সমীচীন নয়। এ বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানায় সূত্র।
মন্তব্য