হাতে বুম নিয়ে মুদি দোকানের দিকে এগিয়ে এলেন একজন। পরনে সালোয়ার কামিজ। তার পেছনে মোবাইল ক্যামেরা হাতে আছেন আরেকজন। লাইভ ভিডিও করছেন।
আগে এ ধরনের কাউকে এগিয়ে আসতে দেখলে দোকানদার বিরক্ত হতেন। তাড়িয়ে দিতে চাইতেন। বেশির ভাগ সময়ই তারা আসতেন টাকার দাবিতে। তবে এবার তারা এসেছেন ভিন্ন রূপে। তাদের এই রূপে দেখে দোকানদারও বিস্মিত।
ক্যামেরা-বুম হাতে আসা দুজনই ট্রান্সজেন্ডার। সমাজে যাদের পরিচয় ‘হিজড়া’ হিসেবে। তারা নিজেরা একটা ফেসবুক পেজ খুলেছেন। নাম দিয়েছেন ‘সিলেট হিজড়া টিভি’। এই ‘টিভি’র হয়েই শাটডাউনে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দুঃখ-কষ্টের কথা জানতে ক্যামেরা-বুম নিয়ে বের হয়েছেন তারা।
‘সিলেট হিজড়া টিভি’র স্লোগান- ‘আমরা আমাদের কথা বলব’। নিজেদের কথা তুলে ধরতেই এই ফেসবুক পেজ খুলেছেন সিলেটের ট্রান্সজেন্ডার কয়েকজন নাগরিক। বুধবার বিকেলে সিলেটের সুরমা নদীর তীরের চাঁদনীঘাটে নিজেরাই তাদের এই ‘টিভির’ উদ্বোধন করেন।
বুম হাতে দোকানে গিয়েছিলেন যিনি তার নাম কারিশমা। নিজেকে পরিচয় দেন ‘কারিশমা হিজড়া’ হিসেবে। বৃহস্পতিবার ‘সিলেট হিজড়া টিভি’ পেজে গিয়ে দেখা যায়- একাধিক লাইভ ভিডিও দেয়া রয়েছে পেজে। বুধবার বিকেল থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে এবং বিভিন্ন বিষয়ে এসব লাইভ করা হয়েছে। সবগুলোতেই ক্যামেরার সামনে রয়েছেন কারিশমা।
নিজেরা একটি ‘টিভি’ খোলা প্রসঙ্গে কারিশমা বলেন, ‘আমাদের কথা কেউ বলে না। আমরা মৌলিক চাহিদা থেকে বঞ্চিত। সাংবাদিকরা অনেক বিষয়ে লেখালেখি করে কিন্তু আমাদের বিষয় সেইভাবে তুলে ধরে না। তাই আমরা নিজেরাই একটি টিভি চালু করেছি। যেখানে আমরা আমাদের বিষষয়গুলো তুলে ধরব। আমাদের অধিকারের কথা বলব। আমাদের সম্পর্কে মানুষের মনে অনেক ভুল ধারণা আছে, এগুলো ভাঙার চেষ্টা করব। তবে কেবল আমাদের বিষয় না, আশপাশের সব বিষয় আমরা আমাদের টিভির মাধ্যমে তুলে ধরব।
কারিশমা বলেন, ‘আমরা সাংবাদিক না তবে সাংবাদিক হওয়ার চেষ্টা করব। আমরা লেখপড়া করে সাংবাদিক হইনি। আমাদের ভুলত্রুটি থাকবে। আপনারা ক্ষমা করবেন। সিলেটের যে হিজড়া আছে, আমরা তাদের জীবনমান তুলে ধরব।’
এই ফেসবুক পেজ, যাকে তারা টিভি বলছেন, এটির চেয়ারম্যান ‘রানী মুখার্জি হিজড়া’। নিজের শিষ্যদের নিয়ে সিলেট নগরের আম্বরখানা এলাকায় থাকেন রানী। ‘সিলেট হিজড়া বাউল সংগঠন’ নামে একটি সংগঠনেরও চেয়ারম্যান তিনি।
মাস দুয়েক ধরেই এই ‘টিভি’ চালুর পরিকল্পনা করছেন বলে জানান রানী। সিলেটে প্রায় ৫০০ ট্রান্সজেন্ডার রয়েছেন। এর মধ্যে ২০ জনের মতো এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত আছেন জানিয়ে রানী বলেন, ‘‘ট্রান্সজেন্ডারদের মধ্যে যারা শিক্ষিত তাদের এই ‘টিভির সাংবাদিক’ হিসেবে যুক্ত করা হবে।‘’
হঠাৎ টিভি চালুর পরিকল্পনা এলো কী করে, জানতে চাইলে রানী বলেন, ‘আমরা খুব কষ্টে আছি। আমাদের কথা কেউ বলে না। আমরা আমাদের কথা তুলে ধরতে চাই। এ কারণে এই চ্যানেল করেছি।
‘আমাদের কিছু সদস্য চাকরি, কয়েকজন ব্যবসা আর বেশির ভাগ সদস্যই ‘হিজড়া সংস্কৃতি’ পালন করে জীবিকা নির্বাহ করে। হিজড়া সংস্কৃতি হলো দোকানে দোকানে ঘুরে টাকা সংগ্রহ করা। কিন্তু শাটডাউনে দোকানপাট বন্ধ থাকায় তাদের আয়-রোজগার একেবারে বন্ধ। ফলে খেয়ে না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। বিকল্প আয়ের চিন্তা থেকেও এই টিভি করা হয়েছে।’
নিজেদের কথা, সমাজের কথা তুলে ধরা হলো, আবার কিছু আয়ও হলো- যুক্ত করেন রানী।
রানী বলেন, ‘এই টিভির মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রতিভার কথা তুলে ধরব। আমাদের ভয়েস রেইজ করতে হবে। না হলে হবে না।’
দর্শকদের তিনি বলেন, ‘সবাই আমাদের সহযোগিতা করবেন। আমরাও আপনাদের মতো মানুষ। আমাদের অবহেলা করবেন না।’
‘সিলেট হিজড়া টিভি’র বুধবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ফেসবুকে নিজেদের পেজ থেকে লাইভ সম্প্রচার করা হয়। এতে এর সাথে যুক্ত কয়েকজন কথা বলেন।
এতে ‘সূচনা হিজড়া’ পরিচয় দেয়া একজন বলেন, ‘দোকানপাট বন্ধ। আমরা এখন কী খাব? কোনো কালেকশন নাই। তাই আমরা টিভি খুলেছি। সাংবাদিক হয়েছি। আমরা ছোট ছোট সংবাদ তৈরি করব।’
ফেসবুকে সম্প্রচারিত ওই লাইভ ভিডিওতে অনেকেই তাদের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে উৎসাহমূলক মন্তব্য করেছেন।
লিয়াকত হোসেন নামে একজন লিখেছেন- ‘নিজেদের অধিকার আদায়ের পাশাপাশি মহৎ কাজে এগিয়ে চলো, শুভকামনা রইল আগামী দিনের পথ চলার।’
হাফিজ বাসিত নামে আরেকজন লিখেছেন- ‘সমাজ আপনাদের অনেক অবহেলা করে। আমি চাই আপনারা নিজে থেকে কোনো একটা কিছু করেন। যাতে সমাজের বোঝা না হয়ে সমাজের মানুষের গৌরব হতে পারেন। অনেক বাধাবিপত্তি আসবে কিন্তু থেমে থাকবেন না। সত্যি তোমাদের জন্য অনেক মায়া হয়। তোমাদের জীবন যাপন নিয়ে ভাবি। আল্লাহ চাইলে কি করতে পারেন। তোমাদের জীবন যাত্রার মান আরও উন্নত হোক এই দোয়াই করি। শুভ কামনা রইল।’
ওই ভিডিওর কমেন্টে আমিনুর রহমান নামে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন- ‘সবাই এখানে লাইক কমেন্ট এবং শেয়ার করেন। ওদের আয়- রোজগার বাড়লে সমাজের উপকার হবে।’
সিলেটে সম্প্রতি ফেসবুক পেজ খুলে তাকে টিভি চ্যানেল নাম দিয়ে নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে দাবি করার প্রবণতা বেড়েছে। এ নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া রয়েছে পেশাদার সাংবাদিকদের মধ্যে। ‘ফেসবুক টিভি’র কারণে পেশাগত দায়িত্ব পালনে গিয়ে নিজেরা বিপাকে পড়ার কথাও জানিয়েছেন অনেকে।
সম্প্রতি কাগজপত্রবিহীন মোটরসাইকেল আটকের পর ফেসবুকে লাইভ করে ব্যাপক সমালোচিত হন ‘পিকে টিভি’ নামে একটি ফেসবুক পেজের ‘সম্পাদক’ ফয়ছল কাদির। দুদিন পর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে সিলেটে ‘ফেসবুক টিভি’ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। এর মধ্যেই চালু হলো- ‘সিলেট হিজড়া টিভি’।
ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন সিলেটের সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান রিপন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন দেখা যাচ্ছে ফেসবুকে পেজ খুলেই অনেকে টিভি নাম দিয়ে দিচ্ছেন। কথা বলতে পারেন না, সাংবাদিকতার নীতিনৈতিকতা জানেন না- তারাও ফেসবুকের কল্যাণে টিভির মালিক-সম্পাদক হয়ে যাচ্ছেন। যা মূলধারার গণমাধ্যমের জন্যও বড় হুমকি। তারা অনেক সময় ভুল তথ্য প্রচার করছেন। যা রাষ্ট্র এবং সাংবাদিকতার জন্যও ক্ষতিকর।
‘আমি মনে করি, সরকারের এই বিষয়ে একটি নীতিমালা করা প্রয়োজন। যাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে কেউ গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে নিজেকে জাহির করতে না পারে।’
‘সিলেট হিজড়া টিভি’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ট্রান্সজেন্ডার মানুষের প্রতি আমাদের যথেষ্ট সহানুভূতি আছে। আমরা চাই তারা সমাজের মূল স্রোতে আসবেন। মূল ধারার গণমাধ্যমের সঙ্গে তারা যুক্ত হবেন। সেখানে আরও বেশি বেশি নিজেদের অধিকার ও বঞ্চনার কথা বলবেন।’
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে ফিশিং বোটের ইঞ্জিন বিস্ফোরণে চারজন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পতেঙ্গা থানাধীন ১৫ নম্বর ঘাটে নোঙর করা একটি ফিশিং বোটে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
দগ্ধরা হলেন- ৫৫ বছর বয়সী জামাল উদ্দিন, ৪৫ বছর বয়সী মাহমুদুল করিম ও মফিজুর রহমান এবং ২৮ বছর বয়সী এমরান। এদের মধ্যে প্রথম তিনজনের শরীরের ৮০-৮৫ শতাংশ পর্যন্ত পুড়ে গিয়েছে। অন্যজনের শরীর পুড়েছে অন্তত ২০ শতাংশ।
চমেক হাসপাতালে বার্ন ও ক্যাজুয়ালটি ইউনিটের প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আহত চারজনের মধ্যে তিনজনের বড় ধরনের বার্ন হয়েছে। এই ধরনের রোগীদের অবস্থা ভালো থাকে না।’
চট্টগ্রাম সদরঘাট নৌ-থানার ওসি একরাম উল্লাহ বলেন, ‘মাছ ধরার ট্রলারে ইঞ্জিন থেকে সৃষ্ট আগুনে ৪ জন দগ্ধ হয়েছে। তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
স্বাধীনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ প্রকাশ্যে দুর্নীতি করার ঘোষণা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার সকালে লালপুর উপজেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যের এক পর্যায়ে দুর্নীতি করার ঘোষণা দেন এ সংসদ সদস্য।
তার বক্তব্যের অংশবিশেষের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।
প্রকাশিত ওই ভিডিওতে আবুল কালাম আজাদকে বলতে শোনা যায়, ‘পাঁচটা বছর (২০১৪-২০১৮) বেতন ভাতার টাকা ছাড়া আমার কোনো সম্পদ ছিল না; আগামীতেও থাকবে না। এবার (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ) নির্বাচনে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সেই টাকা আমি তুলব। যেভাবেই হোক তুলবই। এতটুক অনিয়ম আমি করবই। এটুকু অন্যায় করব, আর করব না।’
প্রকাশ্যে সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্য বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শারমিন আখতার। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। উনার বক্তব্য উনি বলেছেন, এখানে আমার কোনো কথা নেই।’
বক্তব্যর বিষয়ে সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমার বক্তব্যে এটা বোঝাতে চেয়েছি যে, অনেকেই এরকম করে। আমার বক্তব্য বিকৃত করে প্রচার করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি জেলা শাখার সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সরকারি অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে একজন সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্য খুব দুর্ভাগ্যজনক। সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্যে তার সহকারী এবং দলীয় নেতা-কর্মীরা দুর্নীতিতে উৎসাহিত হবেন। এটা একদিকে যেমন পরিষ্কারভাবে শপথের লংঘন, অন্যদিকে নির্বাচনি বিধিরও লংঘন।
‘নির্বাচনি আচরণবিধি অনুযায়ী, নির্বাচনি প্রচারকাজে একজন সংসদ সদস্য ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারেন না।’
সংসদ সদস্যের কাছে গঠনমূলক বক্তব্যেরও প্রত্যাশার কথা জানান তিনি।
মানিকগঞ্জ শহরের প্রবেশপথে যানজট নিরসনে ও পথচারীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
পৌরসভা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড ও পৌর সুপার মার্কেটের সামনের সড়ক ও ফুটপাত থেকে শতাধিক হকার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান করা হয়।
প্যানেল মেয়র তসলিম মিয়া জানান, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অস্থায়ী কিছু ব্যবসায়ীরা ফুটপাত ও সড়কের একাংশ দখল করে ব্যবসা করে আসছেন। এতে করে শহরে যানজটের সৃষ্টি হয় এবং পথচারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। পথচারীদের সুবিধার্থে যানজট দূর করতেই এই উচ্ছেদ অভিযান।
উচ্ছেদ অভিযানে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জহিরুল আলম, পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ মো. তসলিম মিয়া ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রাজিয়া সুলতানাসহ থানা পুলিশ ও পৌরসভার কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠির রাজাপুরে নদীর তীর থেকে এক ভ্যানচালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো যুবকের মামুন হোসেন, যার বয়স ২৫ বছর। তিনি রাজাপুরের পশ্চিম সাতুরিয়া গ্রামের মোকসেদ আলীর ছেলে।
ভ্যানচালক মামুন দুই দিন আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন জানিয়ে রাজাপুর থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, ‘স্থানীয়দের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে সাতুরিয়া গ্রামের ইদুরবাড়ি এলাকায় কচা নদীর তীর থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেয়া হয়। লাশের ময়নাতদন্তসহ পরবর্তী সময়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে, তবে এটি হত্যা নাকি দুর্ঘটনা, সেটি তদন্তে বের হবে।’
এ পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কেউ অভিযোগ করেনি। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পূর্ব পূয়ালী গ্রামের আব্দুর রহিম হাওলাদারের একমাত্র ছেলে রাব্বি হাওলাদার।
২৫ বছর বয়সী রাব্বির দুটি কিডনিই নষ্ট। ডাক্তারের পরামর্শ তার কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে। বর্তমানে তার চিকিৎসার জন্য প্রায় ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
রাব্বির কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য এতো টাকা লাগবে শোনার পর থেকেই তার কৃষক বাবা সাহায্যের জন্য ছুটছেন চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ স্থানীয় বিত্তবানদের কাছে। কেন না তার সবকিছুই বিক্রি করে দিলেও এক থেকে দেড় লাখ টাকার বেশি জোগাড় করার সামর্থ্য হচ্ছে না।
রাব্বি বর্তমানে ঢাকার মিরপুর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এমন অবস্থায় কৃষক বাবা তার সন্তানকে বাঁচাতে দেশবাসীর কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন। দেশের বিত্তবানরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেই হয়ত বেঁচে যাবে তার সন্তান।
রাব্বির পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাব্বি হাওলাদার কয়েক মাস আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (সেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে যান তার পরিবার। সেখানে চিকিৎসক তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেন রাব্বির দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত চিকিৎসা চলছিল রাব্বির, কিন্তু কিছুদিন আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে মিরপুর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এরই মধ্যে প্রায় আড়াই লাখ টাকার ওপরে শুধু হাসপাতাল ও ওষুধের বিল দিতে হয়েছে। দরিদ্র এই পরিবারটি আত্মীয়স্বজনসহ সবার সহায়তায় ওই বিল দেয়া সম্ভব হয়।
রাব্বির মা রেভা বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘এভাবে আর কয়দিন চিকিৎসা করাতে পারব জানি না। কারণ আমাদের সামর্থ্য শেষ হয়ে এসেছে। শুধু টাকার অভাবে তাকে ভালো কোনো হাসপাতালেও নিতে পারছি না, কিন্তু কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য অপারেশনের ধকল সহ্য করার মতো সুস্থ অবস্থায় আনা খুব জরুরি।’
রাব্বির বাবা আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে অনুরোধ করা হচ্ছে আপনাদের ভালোবাসা ও সাহায্য আমাদের খুব প্রয়োজন। কারণ শুধু টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় আমার একমাত্র ছেলে অকালে ঝরে যাবে তা আমার জীবন থাকতে মানতে পারছি না।’
তাকে কেউ সাহায্য করতে চাইলে ০১৯৯৭-২২৮৯৭৫ ও ০১৯৮৭-৩৬৬৫৬৮ (বিকাশ-পার্সোনাল) নাম্বারে পাঠাতে পারেন ও যোগাযোগ করতে পারেন।
আরও পড়ুন:ফরিদপুর সদরে যৌনপল্লি থেকে দুই তরুণীকে উদ্ধার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় ওই পল্লির এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মো. হাসানুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার রাতে এসব তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃত পারুল বেগম ওরফে পারু (৪৮) জেলার রথখোলা যৌনপল্লির বাসিন্দা।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন আপন (৩০), জহির (৩০) ও ববি (৩৮)।
গ্রেপ্তার না হওয়া এ তিনজনের মধ্যে ববি যৌনপল্লির সর্দারনি হিসেবে পরিচিত। আপন ও জহিরের পূর্ণাঙ্গ পরিচয় পাওয়া যায়নি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পার্লারে ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে চাঁদপুরের কচুয়া থানা এলাকা থেকে এক তরুণীকে গত ১০ মার্চ ঢাকায় নিয়ে আসেন আপন। দুই দিন সেখানে রেখে তাকে (তরুণী) তিন ব্যক্তির হাতে তুলে দেন তিনি। ওই তিন ব্যক্তি ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় তরুণীকে রথখোলা যৌনপল্লিতে এনে পারুর কাছে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। পরের দিন একটি সাদা কাগজে তরুণীর স্বাক্ষর নিয়ে জানানো হয়, এখন থেকে তিনি যৌনপল্লির লাইসেন্সধারী সদস্য।
এতে আরও বলা হয়, মেয়েটিকে পারুর বাসায় রেখে ববি ও অন্যদের মাধ্যমে জোর করে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হয়। এর মাঝে মেয়েটি বাড়িতে যোগাযোগের জন্য একজন খদ্দেরকে তার ছোট বোনের মোবাইল নম্বর দেন। পরে ওই খদ্দেরের মোবাইল কলের মাধ্যমে মেয়েটির সন্ধান পায় তার পরিবার। এরপর তার মা ও ফুফা রথখোলায় এসে তাকে দেখতে পেয়ে স্থানীয় থানা পুলিশকে জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পুলিশ যৌনপল্লিতে অভিযান চালানোর পর ফেনীর পূর্ব ছাগলনাইয়ার আরেক তরুণীও তাকে উদ্ধারে পুলিশের সাহায্য চান। ওই তরুণী জানান, তাকেও চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে ঢাকার মিরপুরের একটি বাসায় এক রাত রেখে রথখোলা যৌনপল্লিতে এনে পারুর কাছে বিক্রি করা হয়।
কোতোয়ালি থানার ওসি হাসানুজ্জামান জানান, যৌনপল্লিতে তরুণীকে নেয়ার ঘটনায় তার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফাহিম ফয়সাল মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে অভিযান চালিয়ে পারুল বেগম ওরফে পারুকে গ্রেপ্তার করে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে।
নোয়াখালীর কবিরহাটে পুকুরের পানিতে ডুবে সহোদর দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের রামেশ্বপুর গ্রামের ছর আলী মাঝি বাড়ির পুকুরে বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো দুই শিশু হলো সাত বছর বয়সী বিবি ফাতেমা বেগম ও তার চার বছরের ভাই আবিদ হোসেন। শিশুদ্বয় ছর আলী মাঝি বাড়ির আবদুল হাইয়ের সন্তান।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি হুমায়ন কবির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘দুই ভাই-বোন সকালে ঘরের পাশে পুকুরে দাঁত ব্রাশ করতে যায়। এ সময় হাত-মুখ ধোয়ার সময় একজন পুকুরে পড়ে গেলে আরেকজন উদ্ধার করতে পানিতে নামে।
‘পরে দুজনই পানিতে ডুবে যায়। একপর্যায়ে পরিবারের সদস্যরা দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত বলে জানান।’
তিনি আরও বলেন, ‘মরদেহ স্বজনরা নিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য