সশস্ত্র তালেবানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে অস্ত্র তুলে নিচ্ছেন আফগানিস্তানের নারীরা।
দেশটির উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের সড়কে রাইফেল কাঁধে তুলে কুচকাওয়াজ করছেন শত শত নারী।
আফগানিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চল দখলে তালেবানের তৎপরতা বাড়তে থাকার মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে অস্ত্র হাতে ছবি প্রকাশ করছেন নারীরা।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানানো হয়, সম্প্রতি মধ্যাঞ্চলীয় ঘোর প্রদেশে হয়েছে আফগান নারীদের অন্যতম বড় অস্ত্র মিছিলটি। তালেবানবিরোধী স্লোগানে মুখর ছিলেন তারা।
রক্ষণশীল সমাজব্যবস্থা আর অনভিজ্ঞতার কারণে এখনই তালেবানের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে নামছে না এই নারীরা।
তালেবানের শাসনে ফিরে গেলে নারী ও স্বজনদের কী হাল হতে পারে অদূর ভবিষ্যতে, তা মনে করিয়ে দেয়াই মিছিলের লক্ষ্য।
ঘোর প্রদেশে মিছিলের আয়োজক দলের প্রধান ও কুচকাওয়াজে অংশ নেয়া হালিমা পারাসতিশ বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের উৎসাহ জোগাতে চান অনেক নারী, প্রতীকীরূপে। কিন্তু এমন অনেক নারীও আছেন যারা যুদ্ধক্ষেত্রে যেতে চান।
‘আমিও তাদের একজন। আমি ও আরও অনেক নারী বিষয়টি প্রায় এক মাস আগে গভর্নরকেও জানিয়েছি। আমরা যুদ্ধক্ষেত্রে যেতে এবং লড়াই করতে প্রস্তুত।’
প্রদেশটির গভর্নরও একজন নারী। তার নাম আব্দুলজহির ফাইজজাদা। ফোনে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, প্রাদেশিক রাজধানী ফিরোজকোহের সড়কে এরই মধ্যে তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন কিছু নারী; গোষ্ঠীটির সহিংসতার বলিও হয়েছেন তারা।
ফাইজজাদা বলেন, ‘এই নারীদের বেশিরভাগই তালেবান নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে সম্প্রতি পালিয়েছেন। নিজ নিজ গ্রামে যুদ্ধ দেখে এসেছেন তারা। যুদ্ধে সন্তান, ভাইদের হারিয়ে ক্ষুব্ধ তারা।’
আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি না পেলে অস্ত্র চালনায় অনভিজ্ঞ নারীদের নিজে প্রশিক্ষণ দেবেন বলেও জানান ফাইজজাদা।
তালেবানের রক্ষণশীল শাসনব্যবস্থার বিরোধী ঘোর প্রদেশের বড় অংশ। সেখানকার নারীদের মধ্যে মাথায় কাপড় দেয়ার চল থাকলেও বোরকা পরেন না তারা। গ্রামে, মাঠে পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেন তারা।
অন্যদিকে প্রদেশটির তালেবান নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলোতে কৃষিকাজ, পশুপালনেও নারীদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মেয়েদের স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে গোষ্ঠীটি; পুরুষ অভিভাবক ছাড়া নারীদের বাইরে বের না হওয়ার আদেশ দিয়েছে। এমনকি বিয়ের অনুষ্ঠান বা অন্য আয়োজনেও নারীদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করে কেবল পুরুষদের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
এমন অনেক এলাকা ছেড়ে পালানো নারীরা তালেবানের বিরুদ্ধে সশস্ত্র মিছিলে অংশ নিচ্ছেন স্বেচ্ছায়।
তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে ঘোরের গভর্নর ফাইজজাদা আরও বলেন, “এই নারীরা বলেছেন, ‘আত্মরক্ষার সুযোগ ছাড়াই আমাদের হত্যা করা হচ্ছে, আঘাত করা হচ্ছে। তাহলে কেন আমরা লড়াই করবো না?’”
আফগানিস্তানের শতাধিক জেলার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সশস্ত্র রাজনৈতিক সংগঠন তালেবান। এর বেশিরভাগই গ্রামাঞ্চল। যেমন উত্তরের বাদাখশান প্রদেশ।
২০ বছর আগে তালেবানশাসিত আফগানিস্তানেও এসব অঞ্চলে তালেবানবিরোধীরাই ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ ও শক্তিশালী।
বর্তমানে এমন অনেক প্রদেশের রাজধানী দখল করেছে তালেবান।
দখলকৃত অঞ্চলগুলোতে এরই মধ্যে নারীদের শিক্ষা গ্রহণ, অবাধ চলাচল, তাদের পোশাক-আশাকে কড়াকড়ি আরোপ করেছে তালেবান। একটি এলাকায় নারীদের আপাদমস্তক ঢেকে বোরখা পরারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আফগানিস্তান অ্যানালাইসিস নেটওয়ার্কের নতুন এক জরিপে উঠে এসেছে দেশটিতে চরম রক্ষণশীল গ্রামাঞ্চলের নারীরা শিক্ষা গ্রহণ, স্বাধীন চলাচল ও পরিবারে বৃহত্তর ভূমিকা রাখতে আগের চেয়ে বেশি উৎসাহী। প্রান্তিক ও উপেক্ষিত জনগোষ্ঠীর নারীদের নিয়ে জরিপটি করা হয়।
তালেবানের শাসন তাদের নিয়ে যাবে উল্টো পথে।
উত্তরের জওজযান প্রদেশে নারীদের যুদ্ধে অংশ নেয়ার ঘটনা নতুন নয়। সেখানকার এক সাংবাদিক বলেন, ‘শখ করে কোনো নারী লড়াই করতে চায় না। আমি শুধু চাই পড়াশোনা চালিয়ে যেতে আর সহিংসতা থেকে অনেক অনেক দূরে থাকতে।
‘যুদ্ধে যেতে আমাকে আর আমার মতো অনেক নারীকে বাধ্য করেছে পরিস্থিতি।’
প্রাদেশিক রাজধানীতে অস্ত্র চালনার একটি প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন এই তরুণী। শহরটি বর্তমানে তালেবানের কবজায়। তাই তালেবানের হাতে তথ্য যাওয়ার ভয়ে নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননি তিনি।
তিনি বলেন, ‘যারা নারীদের সঙ্গে এমন পশুর মতো আচরণ করে, আমি চাই না যে তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাক আমার দেশ। আমরা অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছি এটাই জানাতে যে যদিও আমাদের লড়তে হয়, তো আমরা লড়ব।’
বিশোর্ধ্ব এই তরুণী জানান, তার সঙ্গে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন অর্ধশত নারী। অনভিজ্ঞ হলেও তালেবানের মুখোমুখি হলে একটি সুবিধা পুরুষের চেয়ে নারীদের বেশি।
তিনি বলেন, ‘নারীদের সঙ্গে লড়াইয়ে মৃত্যুকে ভয় পায় তালেবান। তালেবান সদস্যদের কাছে এটা লজ্জার।’
ধর্মভিত্তিক উগ্রবাদীদের কাছে যুদ্ধে নারীদের কাছে পরাজয়ের চেয়ে বড় অপমান কিছু নেই। সিরিয়ায় জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের সদস্যরাও পুরুষের হাতে মৃত্যুকে নয়; বরং কুর্দি নারী সেনাদের হাতে মৃত্যুকে ভয় পেত।
অস্ত্র তুলে নেয়া আফগান নারীদের ক্ষেত্রে কিছুটা বিরল হলেও নতুন কিছু নয়; বিশেষ করে দেশটির তুলনামূলক কম রক্ষণশীল এলাকাগুলোতে।
গত বছর বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসেন কামার গুল নামে এক আফগান কিশোরী। চোখের সামনে তার মা-বাবাকে হত্যা করেছিল তালেবানরা। ঘাতক তালেবান সদস্যদের মধ্যে একজন ছিল ওই কিশোরীর স্বামীও।
নিজের ছোট ভাইকে বাঁচাতে ওই সময় অস্ত্র হাতে তুলে নেয় কামার গুল। একা লড়াই করে কয়েক তালেবান সদস্যকে হত্যা করে; বাকিরা পালিয়ে যায়।
বাঘলান প্রদেশের নারী বিবি আয়শা হাবিবি। আশির দশকে সোভিয়েত আগ্রাসন ও তারপরে গৃহযুদ্ধের সময় আফগানিস্তানের একমাত্র নারী যোদ্ধা ছিলেন তিনি। কমান্ডার কাফতার বা কবুতর নামে সুপরিচিত তিনি।
বালখ প্রদেশের উত্তরে চারকিন্ত জেলায় যুদ্ধক্ষেত্রের সম্মুখসারির একজন লড়াকু সেনা ৩৯ বছর বয়সী নারী সেলিমা মাজারি। জেলাটির গভর্নরও তিনি।
তবে আফগানিস্তানের নারীদের এসব ঐতিহাসিক অর্জনকে ধুলোয় মিশিয়ে দিতে চায় তালেবান।
গোষ্ঠীটির মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘নারীরা কোনোদিন আমাদের বিরুদ্ধে বন্দুক তুলবে না। তারা অসহায়। পরাজিত শত্রুপক্ষ তাদের উসকে দিচ্ছে। তারা লড়াই করতে পারে না।’
তালেবানের দাবি, আফগান নারী যোদ্ধাদের গল্পগুলো শুধুই অপপ্রচার। পুরুষরা যেন পরিবারের নারী সদস্যদের যুদ্ধের অনুমতি না দেয়, সে বিষয়েও কঠোর নির্দেশনা রয়েছে গোষ্ঠীটির।
গত দুই দশকে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীতে যোগ দিয়েছেন অনেক নারী। প্রশিক্ষণ নিয়েছেন হেলিকপ্টারের পাইলট হিসেবে।
তবে পুরুষ সহকর্মীদের হয়রানি আর বৈষম্যের শিকার হয়ে যুদ্ধক্ষেত্রের সম্মুখসারিতে নারী সেনাদের উপস্থিতি বিরল।
আরও পড়ুন:গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর আগে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে এক ইসরায়েলি সেনা ব্যাটালিয়নের ওপর সহায়তা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় যুক্তরাষ্ট্র। তবে সেই সিদ্ধান্ত এখনই কার্যকর করতে চান না দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন।
এ বিষয়ে অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের স্পিকার মাইক জনসনের কাছে লেখা ব্লিংকেনের এক চিঠির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
শুক্রবার এপির হাতে আসা ওই চিঠিতে জনসনকে ব্লিংকেন বলেছেন, নিজেদের অন্যায় সংশোধনের জন্য তিনি ওই সামরিক ইউনিটটিকে (ব্যাটালিয়ন) আরও সময় দিতে চান।
চিঠিতে ব্লিংকেন জোর দিয়ে বলেছেন, ইসরায়েলের একটি সেনা ইউনিটের ওপর নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই হামাস বা অন্য যেকোনো হুমকি মোকাবিলায় ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক সহায়তায় প্রভাব ফেলবে না।
চলতি সপ্তাহে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ও গাজায় ক্রমবর্ধমান মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় ২৬ বিলিয়ন ডলার সহায়তা তহবিল প্রদানে সম্মত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিল পাস করতে মাইক জনসন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ইসরায়েলের ঠিক কোন সেনা ইউনিটের ওপর যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা স্থগিতের সিদ্ধান্তটি আপাতত স্থগিত করছে, ব্লিংকেনের চিঠিতে তা স্পষ্ট করা হয়নি। তবে এপির প্রতিবেদনে ধারণা করা হয়েছে, ‘নেটজাহ ইয়েহুদা’ নামের একটি ইউনিট যুক্তরাষ্ট্রের কোপে পড়েছে। এই সেনা ইউনিটটি ঐতিহাসিকভাবে অধিকৃত পশ্চিম তীরে অবস্থান করে আসছে।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের গৃহীত সহায়তা স্থগিতের প্রাথমিক সিদ্ধান্তের ঘোষণায় উল্লেখ করা হয়, হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধ শুরুর আগে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ওই ইউনিট ও এর কিছু সদস্য ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর মানবিক আইনের অপব্যবহারের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে, যার মধ্যে ২০২২ সালে ওই ইউনিটের হাতে আটক হওয়া এক ফিলিস্তিনি-আমেরিকান নাগরিকের নিহত হওয়ার ঘটনাও অন্তর্ভুক্ত।
চিঠিতে ব্লিংকেন বলেন, ‘ওই ব্যাটালিয়নের অন্যায়ের ব্যাপারে ইসরায়েলি সরকারও এখনও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তবে ইউনিটটির অবস্থা সম্পর্কে প্রতিনিয়ত তারা আমাদের তথ্য দিয়ে চলেছে এবং আমরাও ব্যাটালিয়নটির সংশোধনী কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ ও তা করার (সংশোধনের) পথ চিহ্নিত করতে সর্বদা নিযুক্ত থাকব।’
আন্তর্জাতিক আইন বা মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে একটি আইন পাস করে। ব্যাত্যয় ঘটলে ‘লেহি আইন’ নামের ওই আইনটি যুক্তরাষ্ট্রকে যেকোনো বিদেশি সেনা ইউনিটকে সামরিক সহায়তা বন্ধ করতে বাধ্য করে। তবে সেই দেশের সেনাবাহিনী যদি ওই ইউনিটের করা অপরাধের বিচার করে এবং তাদের সংশোধনের চেষ্টা করে, তাহলে তাদের ওপর এই আইন কার্যকর হবে না বলেও আইনটির একটি ধারায় উল্লেখ রয়েছে। ব্লিংকেন এই বিষয়টি উল্লেখ করেই মূলত এখনই সহায়তা বন্ধ করার সিদ্ধান্তে যেতে নারাজ।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিরাজমান। দুই বাহিনী নিয়মিত নিজেদের মধ্যে প্রশিক্ষণ ও গোয়েন্দা তথ্যের আদান-প্রদান করে থাকে। তবে সম্প্রতি অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের অবস্থান ও ইসরায়েলকে সহযোহিতা করায় সমালোচিত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
এরই ধারাবাহিকতায় ফিলিস্তিনে আগ্রাসনের ব্যাপারে সম্প্রতি ইসরায়েলকে সমালোচনার কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন জো বাইডেন। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগে বেশ কয়েকটি উগ্রবাদী সেটেলারের ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন:গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর আগে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে এক ইসরায়েলি সেনা ব্যাটালিয়নের ওপর সহায়তা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় যুক্তরাষ্ট্র। তবে সেই সিদ্ধান্ত এখনই কার্যকর করতে চান না দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন।
এ বিষয়ে অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের স্পিকার মাইক জনসনের কাছে লেখা ব্লিংকেনের এক চিঠির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
শুক্রবার এপির হাতে আসা ওই চিঠিতে জনসনকে ব্লিংকেন বলেছেন, নিজেদের অন্যায় সংশোধনের জন্য তিনি ওই সামরিক ইউনিটটিকে (ব্যাটালিয়ন) আরও সময় দিতে চান।
চিঠিতে ব্লিংকেন জোর দিয়ে বলেছেন, ইসরায়েলের একটি সেনা ইউনিটের ওপর নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই হামাস বা অন্য যেকোনো হুমকি মোকাবিলায় ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক সহায়তায় প্রভাব ফেলবে না।
চলতি সপ্তাহে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ও গাজায় ক্রমবর্ধমান মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় ২৬ বিলিয়ন ডলার সহায়তা তহবিল প্রদানে সম্মত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিল পাস করতে মাইক জনসন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ইসরায়েলের ঠিক কোন সেনা ইউনিটের ওপর যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা স্থগিতের সিদ্ধান্তটি আপাতত স্থগিত করছে, ব্লিংকেনের চিঠিতে তা স্পষ্ট করা হয়নি। তবে এপির প্রতিবেদনে ধারণা করা হয়েছে, ‘নেটজাহ ইয়েহুদা’ নামের একটি ইউনিট যুক্তরাষ্ট্রের কোপে পড়েছে। এই সেনা ইউনিটটি ঐতিহাসিকভাবে অধিকৃত পশ্চিম তীরে অবস্থান করে আসছে।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের গৃহীত সহায়তা স্থগিতের প্রাথমিক সিদ্ধান্তের ঘোষণায় উল্লেখ করা হয়, হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধ শুরুর আগে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ওই ইউনিট ও এর কিছু সদস্য ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর মানবিক আইনের অপব্যবহারের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে, যার মধ্যে ২০২২ সালে ওই ইউনিটের হাতে আটক হওয়া এক ফিলিস্তিনি-আমেরিকান নাগরিকের নিহত হওয়ার ঘটনাও অন্তর্ভুক্ত।
চিঠিতে ব্লিংকেন বলেন, ‘ওই ব্যাটালিয়নের অন্যায়ের ব্যাপারে ইসরায়েলি সরকারও এখনও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তবে ইউনিটটির অবস্থা সম্পর্কে প্রতিনিয়ত তারা আমাদের তথ্য দিয়ে চলেছে এবং আমরাও ব্যাটালিয়নটির সংশোধনী কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ ও তা করার (সংশোধনের) পথ চিহ্নিত করতে সর্বদা নিযুক্ত থাকব।’
আন্তর্জাতিক আইন বা মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে একটি আইন পাস করে। ব্যাত্যয় ঘটলে ‘লেহি আইন’ নামের ওই আইনটি যুক্তরাষ্ট্রকে যেকোনো বিদেশি সেনা ইউনিটকে সামরিক সহায়তা বন্ধ করতে বাধ্য করে। তবে সেই দেশের সেনাবাহিনী যদি ওই ইউনিটের করা অপরাধের বিচার করে এবং তাদের সংশোধনের চেষ্টা করে, তাহলে তাদের ওপর এই আইন কার্যকর হবে না বলেও আইনটির একটি ধারায় উল্লেখ রয়েছে। ব্লিংকেন এই বিষয়টি উল্লেখ করেই মূলত এখনই সহায়তা বন্ধ করার সিদ্ধান্তে যেতে নারাজ।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিরাজমান। দুই বাহিনী নিয়মিত নিজেদের মধ্যে প্রশিক্ষণ ও গোয়েন্দা তথ্যের আদান-প্রদান করে থাকে। তবে সম্প্রতি অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের অবস্থান ও ইসরায়েলকে সহযোহিতা করায় সমালোচিত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
এরই ধারাবাহিকতায় ফিলিস্তিনে আগ্রাসনের ব্যাপারে সম্প্রতি ইসরায়েলকে সমালোচনার কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন জো বাইডেন। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগে বেশ কয়েকটি উগ্রবাদী সেটেলারের ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন:বাবা জেমি স্পিয়ার্সের সঙ্গে চলা আইনি বিরোধ মিটিয়ে ফেলছেন আমেরিকান পপ আইকন ব্রিটনি স্পিয়ার্স। বিষয়টির নিষ্পত্তি করা নিয়ে দু’পক্ষ একটি সমঝোতায় পৌঁছেছেন বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন ব্রিটনির অ্যাটর্নিরা।
লস অ্যাঞ্জেলেস সুপিরিয়র কোর্টে নিষ্পত্তিটি দায়ের করা হযয়েছে। তাদের চলমান আইনি বিরোধের বিষয়ে চুক্তির কোনো শর্ত প্রকাশ করা হয়নি।
আদালত ২০২১ সালের শেষের দিকে পপ তারকার ১৩ বছরের কনজারভেটরশিপ অবসানের পক্ষে রায় দেয়। এর ফলে তার ব্যক্তিগত ও আর্থিক লেনদেনের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারান তার বাবা। তবে জেমি স্পিয়ার্স মেয়ে ব্রিটনির কাছে প্রায় দুই মিলিয়ন ডলার আইনি ফি দাবি করে বসেন। এ নিয়ে নতুন করে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন বাবা ও মেয়ে।
বিরোধ নিষ্পত্তির ফল সম্পর্কে উভয় পক্ষের অ্যাটর্নিরা ইতিবাচক কথা বলেছেন।
গায়িকার অ্যাটর্নি ম্যাথিউ রোজেনগার্ট সিএনএনকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলেন, ‘তিনি বিষয়টি নিয়ে আদালতে উপস্থিত হতে বা জড়িত থাকতে চাননি। তার স্বাধীনতার ইচ্ছা এখন সত্যিকার অর্থেই পূর্ণতা পেয়েছে।’
জেমি স্পিয়ার্সের অ্যাটর্নি অ্যালেক্স উইনগার্টেন বলেন, ‘এসব শেষ হয়ে যাওয়ায় আমি আনন্দিত। আমার মেয়েকে আমি খুব ভালোবাসি। তাকে রক্ষা করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছি। ব্রিটনির জন্য সেরাটা আশা করি।’
আদালতের নির্দেশিত কনজারভেটরশিপের আওতায় ২০০৮ সালে ব্রিটনির বাবা ১৩ বছর তার কনজারভেটর হিসেবে কাজ করেন। তিনি তার প্রাপ্তবয়স্ক কন্যার সব আর্থিক ও চিকিৎসা সংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলো তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ করেন।
তবে ২০২১ সালের জুনে ব্রিটনি বিচারকের কাছে কনজারভেটরশিপকে অপমান হিসেবে উল্লেখ করে এর থেকে তাকে মুক্ত করার অনুরোধ জানান।
তিনি অভিযোগ করেন, কনজারভেটরশিপ চলাকালীন ম্যানেজমেন্ট তাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে সফরে যেতে বাধ্য করে। তাকে লিথিয়াম দেয়া হয়, যার কারণে তিনি মাতাল বোধ করেন এবং তাকে বিয়ে করার বা সন্তান নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি। এ কারণে তিনি জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য আইইউডি ব্যবহার করতে বাধ্য হন।
ব্রিটনির কনজারভেটরশিপ শেষ হওয়ার দু’মাস আগে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে একজন বিচারক স্পিয়ার্সের বাবা জেমিকে তার মেয়ের সংরক্ষকের দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত করেন।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে হাশ মানি ট্রায়ালের অষ্টম দিনের কার্যক্রম শেষ হয়েছে। এদিন ট্রাম্পের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের অভিযোগ থাকা পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ট্রাম্পের কার্যালয়ে দেখেছেন বলে আদালতে দাবি করেছেন ট্রাম্পের সাবেক সহকারী রোনা গ্রাফ।
এবিসি জানিয়েছে, ট্রাম্পের ফৌজদারি মামলার শুনানি কার্যক্রমে শুক্রবার দ্বিতীয় সাক্ষী হিসেবে হাজির করা হয় রোনা গ্রাফকে।
ট্রাম্প অর্গানাইজেশনে ৩৪ বছর কাজ করা গ্রাফ আদালতকে জানান, তার অস্পষ্টভাবে মনে আছে যে তিনি স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ট্রাম্প টাওয়ারের ২৬ তলার রিসেপশনে দেখেছেন।
ট্রাম্পের আইনজীবী অবশ্য এ দাবিকে খারিজ করে দিয়ে আদালতকে বলেন, ওই সময় ট্রাম্প রিয়েলিটি টিভি শো ‘দ্য অ্যাপ্রেনটিস’ নিয়ে কাজ করছিলেন। ওই শো-র জন্য অনেককেই নিজের অফিসে ডাকতেন ট্রাম্প।
গ্রাফের পর সাক্ষ্য দিতে আসেন ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংকের সিনিয়ন ম্যানেজিং ডিরেক্টর গ্যারি ফারো। তিনি জানান, ট্রাম্পের আইনজীবী মাইকেল কোহেনকে রেসোল্যুশন কনসালট্যান্টস এলএলসি নামে নতুন একটি বিজনেস অ্যাকাউন্ট খুলে দিতে সাহায্য করেন তিনি।
সরকার পক্ষের আইনজীবীদের দাবি, ট্রাম্পের যৌন সম্পর্ক নিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে এই কোম্পানির মাধ্যমেই কোহেন ট্রাম্পের হয়ে ড্যানিয়েলসকে ১৩০ হাজার ডলার দিয়েছেন। এটিই ‘হাশ মানি’ হিসেবে পরিচিত।
এদিন শুনানির শুরুতে চতুর্থবারের মতো আদালতে হাজির হন ট্যাবলয়েড ন্যাশনাল এনকোয়্যারারের প্রকাশক ডেভিড পেকার। তাকেও নানাভাবে প্রশ্ন করেন দু’পক্ষের আইনজীবীরা।
পেকার জানান, ২০১৫ সালে ট্রাম্প টাওয়ারে এক আলোচনার পর তিনি এনকোয়্যারার ম্যাগাজিনে প্রকাশিত নেতিবাচক প্রতিবেদন সম্পর্কে আগে থেকেই কোহেনকে অবহিত করতে রাজি হন।
পেকার এও দাবি করেন যে ট্রাম্প টাওয়ারের ওই বৈঠকে তারা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রতিবেদন অর্থের বিনিময়ে না ছাপতে দেয়া বা ‘ক্যাচ অ্যান্ড কিল’ কৌশল নিয়ে আলোচনা করেননি।
তিনদিন বিরতি শেষে মঙ্গলবার পুনরায় এই মামলার শুনানি শুরু হবে।
আরও পড়ুন:ইউক্রেনের পার্লামেন্টের মানবাধিকারবিষয়ক কমিশনারের কার্যালয়কে ৩০ ডলার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে কাতার।
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে বিধ্বস্ত দেশটির ‘কল্যাণ ও সুরক্ষা’য় সহায়তার জন্য এ অর্থ দেয়া হচ্ছে বলে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানায়, শিশু, সহিংসতায় আক্রান্ত নাগরিকসহ ইউক্রেনের সর্বসাধারণের জীবনমান উন্নয়নের উদ্যোগে সহায়তার অংশ হিসেবে কাতার এ অর্থ দিচ্ছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়টির এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইউক্রেনে সংঘাতপীড়িত পরিবারগুলোকে সাহায্যের জন্য ক্রমবর্ধমান আইনি সহায়তা ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে এ অর্থ।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, মানুষের মর্যাদাকে সম্মান করা হয় এবং প্রত্যেক ব্যক্তির অধিকারের সুরক্ষা দেয়া হয়, এমন বিশ্ব গড়ে তোলার প্রয়াসের বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেছে ইউক্রেনের মানবাধিকার সংস্থাটি।
এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি জানান, কাতারে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে ইউক্রেনে ২০২২ সালে রুশ হামলার পর জোর করে রাশিয়ায় পাঠানো ইউক্রেনীয় ১৬ শিশু।
জেলেনস্কি বুধবার জানান, কাতারের মধ্যস্থতা প্রচেষ্টার সুবাদে শিশুরা মুক্ত হয়ে তাদের পরিবারের কাছে ফিরতে পেরেছে।
আরও পড়ুন:ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরের বিষ্ণুপুর জেলায় হামলায় সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) দুই সদস্য নিহত ও দুজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় শুক্রবার গভীর রাতে এ হামলা চালানো হয়, যেটি জঙ্গিরা করেছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে এনডিটিভির খবরে বলা হয়, সন্দেহভাজন কুকি জঙ্গিদের একটি দল নারানসেইনা গ্রামের পাহাড়ি অংশ থেকে উপত্যকা অঞ্চলের দিকে সিআরপিএফের চৌকি লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এর জবাবে সিআরপিএফ সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালায়। এরই মধ্যে চৌকিতে বোমা বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হন বাহিনীর চার সদস্য।
এ চারজনকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হলেও দুজনের মৃত্যু হয়। অপর দুজনকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের সূত্রগুলো জানায়, মণিপুরে সংকট শুরুর প্রথম বার্ষিকীর ছয় দিন আগে এ হামলা হলো। পাহাড়ে লুকিয়ে থাকা জঙ্গিদের হামলা আগামী দিনগুলোতে বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রাণ হারানো দুই সিআরপিএফ সদস্য ১২৮ ব্যাটালিয়নের হয়ে দায়িত্ব পালন করছিলেন, যাদের কর্মস্থল ছিল নারানসেইনা এলাকায়। এ দুজন হলেন উপপরিদর্শক এন সরকার ও প্রধান কনস্টেবল অরূপ সাইনি।
আহত দুজন হলেন পরিদর্শক যাদব দাস ও কনস্টেবল আফতাব দাস।
হামলাকারীরা শুক্রবার মধ্যরাতে হামলা শুরু করে বলে খবর পাওয়া যায়, যেটি চলে রাত সোয়া দুইটা পর্যন্ত।
আরও পড়ুন:ভারতের ১৩ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৮৮টি আসনে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ।
স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
এর আগে ভারতের ২১ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১০২টি আসনে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপে ভোট শুরু হয় ১৯ এপ্রিল।
দ্বিতীয় দফার ভোটে সবচেয়ে বেশি ও সবচেয়ে কম সম্পদ নিয়ে যারা প্রার্থী হয়েছেন, তাদের তথ্য দিয়ে শুক্রবার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে সবচেয়ে ধনী প্রার্থী হলেন কর্নাটকের কংগ্রেস প্রার্থী ভেঙ্কটরমন গৌড়া। জাতীয় নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া হলফনামা অনুযায়ী, ৬২২ কোটি রুপি সমমূল্যের সম্পদ রয়েছে তার। তিনি এ নির্বাচনে এইচডি কুমারস্বামীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন।
দ্বিতীয় ধনী প্রার্থী হলেন কংগ্রেসের ডিকে সুরেশ। তার মোট সম্পদের পরিমাণ ৫৯৩ কোটি রুপি। ডিকে সুরেশ বেঙ্গালুরু গ্রামীণ আসন থেকে তৃতীয়বারের মতো প্রার্থী হয়েছেন।
তৃতীয় ধনী প্রার্থী হলেন বিজেপি নেত্রী এবং অভিনেত্রী হেমা মালিনী। তিনি মথুরা লোকসভা আসন থেকে লড়ছেন। তার সম্পদের পরিমাণ ২৭৮ কোটি রুপি। মধ্য প্রদেশের কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় শর্মা চতুর্থ ধনী প্রার্থী, তার সম্পদের পরিমাণ ২৩২ কোটি রুপি।
সম্পদের পরিমাণ সবচেয়ে কম যাদের
লোকসভা নির্বাচনে সবচেয়ে কম সম্পদ নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন নাগোরাও পাটিল। মহারাষ্ট্রের নান্দেদ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়েছেন তিনি। তার সম্পদ রয়েছে ৫০০ রুপি এবং তার কোনো স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি নেই।
এরপরেই আছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজেশ্বরী কেআর। তিনি কেরালার কাসারাগড় আসন থেকে লড়ছেন। তার সম্পদের পরিমাণ ১০০০ রুপি।
২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে লোকসভায় ৩৫৩টি আসন পায় এনডিএ, যেখানে বিজেপির একক আসনের সংখ্যা ৩০৩টি।
ভারতে এবার ১৮তম লোকসভা নির্বাচন হচ্ছে, যার ব্যাপ্তিকাল ৪৪ দিন। দেশটিতে মোট সাত দফায় এ ভোট হবে। লোকসভা নির্বাচনের শেষ ধাপের ভোট ১ জুন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য