সশস্ত্র তালেবানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে অস্ত্র তুলে নিচ্ছেন আফগানিস্তানের নারীরা।
দেশটির উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের সড়কে রাইফেল কাঁধে তুলে কুচকাওয়াজ করছেন শত শত নারী।
আফগানিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চল দখলে তালেবানের তৎপরতা বাড়তে থাকার মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে অস্ত্র হাতে ছবি প্রকাশ করছেন নারীরা।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানানো হয়, সম্প্রতি মধ্যাঞ্চলীয় ঘোর প্রদেশে হয়েছে আফগান নারীদের অন্যতম বড় অস্ত্র মিছিলটি। তালেবানবিরোধী স্লোগানে মুখর ছিলেন তারা।
রক্ষণশীল সমাজব্যবস্থা আর অনভিজ্ঞতার কারণে এখনই তালেবানের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে নামছে না এই নারীরা।
তালেবানের শাসনে ফিরে গেলে নারী ও স্বজনদের কী হাল হতে পারে অদূর ভবিষ্যতে, তা মনে করিয়ে দেয়াই মিছিলের লক্ষ্য।
ঘোর প্রদেশে মিছিলের আয়োজক দলের প্রধান ও কুচকাওয়াজে অংশ নেয়া হালিমা পারাসতিশ বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের উৎসাহ জোগাতে চান অনেক নারী, প্রতীকীরূপে। কিন্তু এমন অনেক নারীও আছেন যারা যুদ্ধক্ষেত্রে যেতে চান।
‘আমিও তাদের একজন। আমি ও আরও অনেক নারী বিষয়টি প্রায় এক মাস আগে গভর্নরকেও জানিয়েছি। আমরা যুদ্ধক্ষেত্রে যেতে এবং লড়াই করতে প্রস্তুত।’
প্রদেশটির গভর্নরও একজন নারী। তার নাম আব্দুলজহির ফাইজজাদা। ফোনে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, প্রাদেশিক রাজধানী ফিরোজকোহের সড়কে এরই মধ্যে তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন কিছু নারী; গোষ্ঠীটির সহিংসতার বলিও হয়েছেন তারা।
ফাইজজাদা বলেন, ‘এই নারীদের বেশিরভাগই তালেবান নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে সম্প্রতি পালিয়েছেন। নিজ নিজ গ্রামে যুদ্ধ দেখে এসেছেন তারা। যুদ্ধে সন্তান, ভাইদের হারিয়ে ক্ষুব্ধ তারা।’
আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি না পেলে অস্ত্র চালনায় অনভিজ্ঞ নারীদের নিজে প্রশিক্ষণ দেবেন বলেও জানান ফাইজজাদা।
তালেবানের রক্ষণশীল শাসনব্যবস্থার বিরোধী ঘোর প্রদেশের বড় অংশ। সেখানকার নারীদের মধ্যে মাথায় কাপড় দেয়ার চল থাকলেও বোরকা পরেন না তারা। গ্রামে, মাঠে পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেন তারা।
অন্যদিকে প্রদেশটির তালেবান নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলোতে কৃষিকাজ, পশুপালনেও নারীদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মেয়েদের স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে গোষ্ঠীটি; পুরুষ অভিভাবক ছাড়া নারীদের বাইরে বের না হওয়ার আদেশ দিয়েছে। এমনকি বিয়ের অনুষ্ঠান বা অন্য আয়োজনেও নারীদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করে কেবল পুরুষদের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
এমন অনেক এলাকা ছেড়ে পালানো নারীরা তালেবানের বিরুদ্ধে সশস্ত্র মিছিলে অংশ নিচ্ছেন স্বেচ্ছায়।
তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে ঘোরের গভর্নর ফাইজজাদা আরও বলেন, “এই নারীরা বলেছেন, ‘আত্মরক্ষার সুযোগ ছাড়াই আমাদের হত্যা করা হচ্ছে, আঘাত করা হচ্ছে। তাহলে কেন আমরা লড়াই করবো না?’”
আফগানিস্তানের শতাধিক জেলার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সশস্ত্র রাজনৈতিক সংগঠন তালেবান। এর বেশিরভাগই গ্রামাঞ্চল। যেমন উত্তরের বাদাখশান প্রদেশ।
২০ বছর আগে তালেবানশাসিত আফগানিস্তানেও এসব অঞ্চলে তালেবানবিরোধীরাই ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ ও শক্তিশালী।
বর্তমানে এমন অনেক প্রদেশের রাজধানী দখল করেছে তালেবান।
দখলকৃত অঞ্চলগুলোতে এরই মধ্যে নারীদের শিক্ষা গ্রহণ, অবাধ চলাচল, তাদের পোশাক-আশাকে কড়াকড়ি আরোপ করেছে তালেবান। একটি এলাকায় নারীদের আপাদমস্তক ঢেকে বোরখা পরারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আফগানিস্তান অ্যানালাইসিস নেটওয়ার্কের নতুন এক জরিপে উঠে এসেছে দেশটিতে চরম রক্ষণশীল গ্রামাঞ্চলের নারীরা শিক্ষা গ্রহণ, স্বাধীন চলাচল ও পরিবারে বৃহত্তর ভূমিকা রাখতে আগের চেয়ে বেশি উৎসাহী। প্রান্তিক ও উপেক্ষিত জনগোষ্ঠীর নারীদের নিয়ে জরিপটি করা হয়।
তালেবানের শাসন তাদের নিয়ে যাবে উল্টো পথে।
উত্তরের জওজযান প্রদেশে নারীদের যুদ্ধে অংশ নেয়ার ঘটনা নতুন নয়। সেখানকার এক সাংবাদিক বলেন, ‘শখ করে কোনো নারী লড়াই করতে চায় না। আমি শুধু চাই পড়াশোনা চালিয়ে যেতে আর সহিংসতা থেকে অনেক অনেক দূরে থাকতে।
‘যুদ্ধে যেতে আমাকে আর আমার মতো অনেক নারীকে বাধ্য করেছে পরিস্থিতি।’
প্রাদেশিক রাজধানীতে অস্ত্র চালনার একটি প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন এই তরুণী। শহরটি বর্তমানে তালেবানের কবজায়। তাই তালেবানের হাতে তথ্য যাওয়ার ভয়ে নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননি তিনি।
তিনি বলেন, ‘যারা নারীদের সঙ্গে এমন পশুর মতো আচরণ করে, আমি চাই না যে তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাক আমার দেশ। আমরা অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছি এটাই জানাতে যে যদিও আমাদের লড়তে হয়, তো আমরা লড়ব।’
বিশোর্ধ্ব এই তরুণী জানান, তার সঙ্গে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন অর্ধশত নারী। অনভিজ্ঞ হলেও তালেবানের মুখোমুখি হলে একটি সুবিধা পুরুষের চেয়ে নারীদের বেশি।
তিনি বলেন, ‘নারীদের সঙ্গে লড়াইয়ে মৃত্যুকে ভয় পায় তালেবান। তালেবান সদস্যদের কাছে এটা লজ্জার।’
ধর্মভিত্তিক উগ্রবাদীদের কাছে যুদ্ধে নারীদের কাছে পরাজয়ের চেয়ে বড় অপমান কিছু নেই। সিরিয়ায় জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের সদস্যরাও পুরুষের হাতে মৃত্যুকে নয়; বরং কুর্দি নারী সেনাদের হাতে মৃত্যুকে ভয় পেত।
অস্ত্র তুলে নেয়া আফগান নারীদের ক্ষেত্রে কিছুটা বিরল হলেও নতুন কিছু নয়; বিশেষ করে দেশটির তুলনামূলক কম রক্ষণশীল এলাকাগুলোতে।
গত বছর বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসেন কামার গুল নামে এক আফগান কিশোরী। চোখের সামনে তার মা-বাবাকে হত্যা করেছিল তালেবানরা। ঘাতক তালেবান সদস্যদের মধ্যে একজন ছিল ওই কিশোরীর স্বামীও।
নিজের ছোট ভাইকে বাঁচাতে ওই সময় অস্ত্র হাতে তুলে নেয় কামার গুল। একা লড়াই করে কয়েক তালেবান সদস্যকে হত্যা করে; বাকিরা পালিয়ে যায়।
বাঘলান প্রদেশের নারী বিবি আয়শা হাবিবি। আশির দশকে সোভিয়েত আগ্রাসন ও তারপরে গৃহযুদ্ধের সময় আফগানিস্তানের একমাত্র নারী যোদ্ধা ছিলেন তিনি। কমান্ডার কাফতার বা কবুতর নামে সুপরিচিত তিনি।
বালখ প্রদেশের উত্তরে চারকিন্ত জেলায় যুদ্ধক্ষেত্রের সম্মুখসারির একজন লড়াকু সেনা ৩৯ বছর বয়সী নারী সেলিমা মাজারি। জেলাটির গভর্নরও তিনি।
তবে আফগানিস্তানের নারীদের এসব ঐতিহাসিক অর্জনকে ধুলোয় মিশিয়ে দিতে চায় তালেবান।
গোষ্ঠীটির মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘নারীরা কোনোদিন আমাদের বিরুদ্ধে বন্দুক তুলবে না। তারা অসহায়। পরাজিত শত্রুপক্ষ তাদের উসকে দিচ্ছে। তারা লড়াই করতে পারে না।’
তালেবানের দাবি, আফগান নারী যোদ্ধাদের গল্পগুলো শুধুই অপপ্রচার। পুরুষরা যেন পরিবারের নারী সদস্যদের যুদ্ধের অনুমতি না দেয়, সে বিষয়েও কঠোর নির্দেশনা রয়েছে গোষ্ঠীটির।
গত দুই দশকে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীতে যোগ দিয়েছেন অনেক নারী। প্রশিক্ষণ নিয়েছেন হেলিকপ্টারের পাইলট হিসেবে।
তবে পুরুষ সহকর্মীদের হয়রানি আর বৈষম্যের শিকার হয়ে যুদ্ধক্ষেত্রের সম্মুখসারিতে নারী সেনাদের উপস্থিতি বিরল।
আরও পড়ুন:পশ্চিমা ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলোর ওপর হামলার পরিকল্পনা নেই রাশিয়ার। এমনকি এর বাইরে পোল্যান্ড, চেক রিপাবলিক বা বাল্টিক কোনো দেশের ওপরও হামলা চালাবে না তারা। তবে ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিলে তা ধ্বংস করা হবে বলে জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
স্থানীয় সময় বুধবার রাশিয়ার বিমান বাহিনীর পাইলটদের সঙ্গে কথা বলার সময় এসব কথা বলেছেন তিনি।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে পূর্ব দিক থেকে রাশিয়ার দিকে অগ্রসর হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট। তবে রাশিয়ার এসব অঞ্চলের ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর ওপর হামলার পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন পুতিন।
তিনি বলেন, ‘এ জোটভুক্ত দেশগুলোর প্রতিও কোনো আগ্রাসন দেখানো হবে না। পোল্যান্ড, চেক রিপাবলিক বা বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোকে ভয় দেখানো হচ্ছে বলে যেসব কথা রটানো হয়েছে, সেগুলো সম্পূর্ণ বাজে কথা।’
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে অর্থ, অস্ত্র ও বুদ্ধি দিয়ে সমর্থন করার অভিযোগ এনে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এ কারণেই ওয়াশিংটনের সঙ্গে মস্কোর যে সম্পর্ক, তা সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে।’
পশ্চিমারা ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দেয়ার বিষয়ে পুতিন বলেন, ‘এ ধরনের কর্মকাণ্ডে ইউক্রেনের পরিস্থিতি পাল্টাবে না। আর ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া যান ও রকেট লঞ্চারের মতো ওগুলোকেও (এফ-১৬) আমরা ধ্বংস করব।’
তিনি বলেন, ‘এসব যুদ্ধবিমান যদি ইউক্রেনের বাইরের কোনো দেশ থেকে যুদ্ধক্ষেত্রে আসে, তবে সেসব স্থানও আমাদের বৈধ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে, তা সে যে স্থানই হোক না কেন।’
এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কাও বাড়াবে বলে এ সময় সতর্ক করেন তিনি।
আরও পড়ুন:গাজা উপকূলে ইসরায়েলি সৈন্যরা দুজন নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যার পর তাদের মরদেহ বুলডোজার দিয়ে বালুর নিচে চাপা দেয়ার একটি ভিডিও ফুটেজ সম্প্রচার করেছে আল জাজিরা।
এ ঘটনা তদন্তের জন্য বুধবার জাতিসংঘকে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম নাগরিক অধিকার ও অ্যাডভোকেসি সংগঠন ‘দ্য কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন (সিএআইআর)’।
আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে বৃহস্পতিবার সিএআইআরের এ আহ্বানের কথা জানানো হয়।
আল জাজিরার দুই মিনিটের ওই ভিডিওটিতে দুই ফিলিস্তিনিদের মধ্যে একজনকে হাত উঁচু করে সাদা কাপড়ের টুকরো ওড়াতে দেখা যায়।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, সাদা কাপড় দেখিয়ে ওই ফিলিস্তিনি হয়ত বোঝাতে চাচ্ছিলেন তারা কোনো হুমকি নন। দুজনই উপকূল বরাবর একটি উন্মুক্ত এলাকায় হাঁটছিলেন, সম্ভবত তারা উত্তর গাজায় ফিরে যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন।
সিএআইআর জানায়, ইসরায়েলি বাহিনী গাজার উপকূলে দুই ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেছে, যারা কোনো হুমকি ছিল না। এরপর তাদের মৃতদেহ মাটিচাপা দেয়ার জন্য একটি সামরিক বুলডোজার ব্যবহার করা হয়।
এমন জঘন্য যুদ্ধাপরাধের আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়ে কাউন্সিল বলেছে, ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের ‘ইচ্ছে মতো’ হত্যা করছে এবং তাদের মৃতদেহগুলো ‘আবর্জনার মতো’ ব্যবহার করছে।
গণহত্যামূলক ইসরায়েলি সরকারকে জাতিসংঘের তদন্ত করা উচিত বলে মনে করছে সংগঠনটি।
আরও পড়ুন:ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের হায়দরাবাদে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা।
অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসির বিরুদ্ধে কংগ্রেস তাকে প্রার্থী করার কথা ভাবছে বলে সূত্রের বরাতে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
বুধবার গোয়া, তেলেঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড এবং দমন ও দিউ- এই চার রাজ্যের প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনার জন্য কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি (সিইসি) ১৮ জনের নাম অনুমোদন করেছে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, কংগ্রেস সানিয়া মির্জার জনপ্রিয়তা ও তার সেলিব্রিটি স্ট্যাটাসের দিকে নজর রেখে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। কংগ্রেস সর্বশেষ ১৯৮০ সালে হায়দরাবাদে জিতেছিল এবং কে এস নারায়ণ সাংসদ হয়েছিলেন।
সূত্রের খবর, সানিয়ার নাম প্রস্তাব করেছিলেন সাবেক ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক কংগ্রেস নেতা মহম্মদ আজহারউদ্দিন। ২০১৯ সালে সানিয়া মির্জার বোন আনাম মির্জার সঙ্গে বিয়ে হয় ক্রিকেটারের ছেলে মহম্মদ আসাদুদ্দিনের।
আজহারউদ্দিন সম্প্রতি অনুষ্ঠিত তেলেঙ্গানা বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, যেখানে তিনি জুবিলি হিলস আসন থেকে ভারত রাষ্ট্র সমিতির (বিআরএস) মাগন্তি গোপীনাথের কাছে ১৬০০০ ভোটে হেরে গিয়েছিলেন।
এআইএমআইএম-এর একটি শক্ত ঘাঁটি হায়দরাবাদ, এই অঞ্চলে ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ‘গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টির’ (কংগ্রেস) সাম্প্রতিক পুনরুত্থান এআইএমআইএমের আধিপত্যের কাছে একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। যা একটি তীব্র কঠিন লড়াইয়ের পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
১৯৮৪ সালে সুলতান সালাহউদ্দিন ওয়াইসি হায়দরাবাদ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং পরে ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত এআইএমআইএম প্রার্থী হিসেবে জিতেছিলেন।
এর পর আসাদ্দুদ্দিন ওয়াইসি ২০০৪ সাল থেকে এই আসনটি ধরে রেখে উত্তরাধিকার বহন করছেন। ২০১৯ সালে ওয়েইসির বিরুদ্ধে ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তিনি তার আধিপত্য বজায় রেখে মোট প্রদত্ত ভোটের ৫৮.৯৪% পেয়ে আসনটি জিতেছিলেন।
এই লোকসভা নির্বাচনের জন্য হায়দরাবাদে বিজেপি মাধবী লতাকে প্রার্থী করেছে, এবং বিআরএস গদ্দাম শ্রীনিবাস যাদবকে প্রার্থী করেছে।
৫৪৩টি সংসদীয় আসনের নির্বাচন সাত ধাপে অনুষ্ঠিত হবে, যা ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ১ জুন শেষ হবে। তেলেঙ্গানায় ভোট হবে ১৩ মে।
রাশিয়ার মস্কোতে গত শুক্রবার কনসার্ট হলে ব্যাপক প্রাণঘাতী হামলার দায় ইসলামিক স্টেট (আইএস) স্বীকার করলেও এ ধরনের আক্রমণের সামর্থ্য জঙ্গি সংগঠনটির আছে বলে বিশ্বাস করে না রাশিয়া।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বুধবার তার দেশের এ অবস্থান ব্যক্ত করেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
জাখারোভা বলেন, মস্কোর কনসার্ট হলে হামলা চালানোর মতো সামর্থ্য আইএসের আছে, এমনটি বিশ্বাস করা অত্যন্ত কঠিন।
সাম্প্রতিক ওই হামলায় নিহত হন কমপক্ষে ১৪৩ জন। আহত অনেককে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।
মস্কোর উপকণ্ঠে ক্রোকাস সিটি হলে হামলায় ইউক্রেনের জড়িত থাকার বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র। যদিও এ দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেননি তিনি।
রাশিয়ায় ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলার পর দায় স্বীকার করে আইএস। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা দাবি করেন, তাদের কাছে থাকা গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, হামলাটি চালায় আইএসের আফগান শাখা ইসলামিক স্টেট খোরাসান।
হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ বারবার নাকচ করেছে ইউক্রেন, তবে জাখারোভার ভাষ্য, ইউক্রেনকে হামলার দায় থেকে বাঁচাতে ত্বরিত গতিতে আইএসের ওপর দায় চাপায় পশ্চিমা দেশগুলো।
আরও পড়ুন:ফিলিস্তিন ও দেশটির অবরুদ্ধ উপত্যকা গাজার নির্যাতিত মানুষকে সমর্থন দেয়ার ক্ষেত্রে ইরান কখনও ইতস্তত বোধ করবে না বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।
গাজার শাসক দল হামাসের পলিট ব্যুরোর প্রধান ইসমাইল হানিয়ার নেতৃত্বে সংগঠনটির একটি প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার তেহরানে সাক্ষাৎ করতে গেলে আয়াতুল্লাহ এ মন্তব্য করেন বলে জানিয়েছে প্রেস টিভি।
খামেনিকে উদ্ধৃত করে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, ‘ফিলিস্তিনিদের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম এবং গাজার নিপীড়িত ও সহিষ্ণু জনগণকে সমর্থনের ক্ষেত্রে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান কখনও ইতস্তত বোধ করবে না।’
গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের ব্যাপক প্রাণঘাতী হামলার জবাবে ওই দিন থেকেই উপত্যকায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। প্রায় বিরতিহীন এ হামলায় গাজায় প্রাণ গেছে কমপক্ষে ৩২ হাজার ৪১৪ জনের।
এমন বাস্তবতায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের মুখে ‘ঐতিহাসিক ধৈর্য’ ধরার জন্য গাজাবাসীর প্রশংসা করে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা বলেন, এ ধৈর্য ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য মর্যাদা ও গর্বের উৎসে পরিণত হয়েছে।
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের শাংলা জেলার বিশাম এলাকায় মঙ্গলবার গাড়িবহরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় চীনের পাঁচ নাগরিকসহ কমপক্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
মালাকান্দ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ আলি গান্দাপুরের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসলামাবাদ থেকে খাইবার পাখতুনখোয়ার দুসু এলাকার ক্যাম্পে যাওয়ার পথে চীনের প্রকৌশলীদের গাড়িবহরে বিস্ফোরকভর্তি গাড়িটি উঠিয়ে দেয় আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী।
তিনি আরও বলেন, ‘হামলায় চীনের পাঁচ নাগরিক ও তাদের পাকিস্তানি চালক নিহত হন।’
হামলার পরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাটি ঘিরে ফেলেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঘটনার তদন্তে নামায় এ পথে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ইসলামাবাদে চীনা দূতাবাস গিয়ে রাষ্ট্রদূত জিয়াং জ্যায়দংয়ের কাছে শোক প্রকাশ করেন।
এক বিবৃতিতে শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘চায়না-পাকিস্তান ইকোনোমিক করিডরের (সিপিইসি) শত্রুরা আরও একবার এ ধরনের কাপুরুষোচিত কাজ করে একে ব্যাহত করার চক্রান্ত করেছে, কিন্তু অশুভ অভিলাষ পূরণে কখনই সফল হবে না তারা।’
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের বাল্টিমোরে পণ্যবাহী জাহাজের ধাক্কায় সেতু ধসের ঘটনায় নিখোঁজ হয়েছেন ছয় শ্রমিক, যারা নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রয়টার্স জানায়, সোমবার গভীর রাতে বিদ্যুৎবিহীন বিশাল কার্গো জাহাজটি সজোরে ধাক্কা দিলে বাল্টিমোর হারবারে ধসে পড়ে সেতুটি। এ দুর্ঘটনার ফলে বন্ধ হয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ব্যস্ত বন্দর।
যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড ও ম্যারিল্যান্ড অঙ্গরাজ্য পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, দুর্ঘটনার প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর অন্ধকারাচ্ছন্ন ও শ্বাপদসংকুল পরিবেশে উদ্ধার তৎপরতা স্থগিত করে ডুবুরি দল।
কোস্ট গার্ডের রিয়ার অ্যাডমিরাল শ্যানন গিলরিথ জানান, হিমশীতল পানি ও দুর্ঘটনার পর দীর্ঘসময় অতিবাহিত হওয়ায় নিখোঁজ শ্রমিকদের জীবিত পাওয়ার আশা ফুরিয়ে গেছে।
ম্যারিল্যান্ড অঙ্গরাজ্য পুলিশের কর্নেল রোল্যান্ড বাটলার জানান, নিখোঁজ শ্রমিকদের দেহাবশেষ উদ্ধারের আশায় স্থানীয় সময় বুধবার সূর্যোদয়ের পর ডুবুরিদল কাজ শুরু করবে বলে প্রত্যাশা করছে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়, সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী ‘ডালি’ নামের জাহাজটি বাল্টিমোর হারবার থেকে শ্রীলঙ্কার দিকে যাচ্ছিল। স্থানীয় সময় সোমবার রাত দেড়টার দিকে প্যাটাপস্কো নদীর মোহনায় ‘ফ্রান্সিস স্কট কি ব্রিজ’ নামের সেতুর একটি পিলারে ঢুকে পড়ে নৌযানটি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য