নারায়ণগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আদেশে ত্রাণ দিতে বাধ্য হওয়া ব্যবসায়ী ফরিদ আহমেদকে তার খরচের ৬০ হাজার টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে।
তবে প্রশাসনের কেউ নয়, ফরিদকে টাকা পৌঁছে দেয়া হয়েছে অন্য একজনের মাধ্যমে। তিনি দাবি করেছেন, ব্যক্তিগত তহবিল থেকে টাকা দিযেছেন।
যদিও জেলা প্রশাসক নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, সরকারি তহবিলের টাকা গেছে ফরিদ আহমেদের কাছে।
প্রশ্ন উঠেছে, টাকা প্রশাসন দিয়ে কেন এই লুকোচুরি কেন করছে।
সদর উপজেলার কাশীপুর ইউনিয়নের দেওভোগ নাগবাড়ি এলাকার ফরিদ আহমেদ গত বৃহস্পতিবার ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে খাদ্য সহায়তা চান।
ফোন পেয়ে ত্রাণ নিয়ে তার বাড়িতে গিয়ে হতবাক হয়ে যান উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন, অফিস সহকারী কামরুল ইসলাম। পরে তারা ভবন দেখে ইউএনওকে জানান।
তারা গিয়ে দেখেন ফরিদ আহমেদ চার তলা ভবনে থাকেন। জানতে পারেন, তার একটি গেঞ্জি কারখানা আছে।
এই তথ্য তারা জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফা জহুরাকে। তিনি ঘটনাস্থলে এসে ফরিদকে বলেন, ১০০ মানুষকে ত্রাণ দিতে হবে। শনিবার বিকেলে ত্রাণ বিতরণের সময় তিনি নিজেও থাকবেন।
শনিবার ত্রাণ বিতরণের আয়োজনে গিয়ে নিউজবাংলা জানতে পারে ফরিদ আহমেদের জীবনের কঠিন কাহিনি। তিনি যে বাড়িটিতে থাকেন, তার পুরোটার মালিকানা তার নয়। তার যে গেঞ্জি কারখানা আছে, সেটি ২০২০ সালে করোনার প্রাদুর্ভাবের পর বন্ধ হয়ে গেছে।
বিপাকে পড়া মানুষটি অন্য একটি কারখানায় কাটিং এর কাজ করতেন। কিন্তু চোখের সমস্যার কারণে সেটিও আর করতে পারেন না।
এর মধ্যে ইউএনওর আদেশে তিনি পড়েন দুশ্চিন্তায়। তাকে একজন বলেছেন, আদেশ না মানলে তিন মাসের কারাদণ্ড হবে।
পরে স্ত্রীর অলঙ্কার বন্ধক রেখে টাকা যোগাড় করেন ফরিদ। তৈরি করেন ত্রাণের ১০০ প্যাকেট। শনিবার ইউএনও ঘটনাস্থলে এসে সেগুলো বিতরণ করেন।
এর মধ্যে নিউজবাংলায় প্রকাশ হয় ত্রাণ সত্যিই দরকার ছিল ফরিদের, ভুল ইউএনওর-শিরোনামে সংবাদ। শুরু হয় সমালোচনা।
রোববার সকালে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ নিউজবাংলাকে জানান, টাকা ফেরত দেয়া হবে ফরিদ আহমেদকে।
এরপর দিনভর ফরিদের বাসার আশেপাশে অবস্থান করেন নিউজবাংলার প্রতিনিধি। সকাল থেকে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি তার বাসায় এসেছেন। কথা বলে গেছেন।
গোপনে দেয়া হলো টাকা
বিকেলে ফরিদকে ঘর হতে বের হতে দেখা যায়।
কোথায় যাচ্ছেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সামনে যাই।’
কিছুক্ষণ পর বোরকা পরে তার স্ত্রী হিরন বেগম বের হন। আধা ঘণ্টা পরে তারা ফেরেন। এর আগে সকাল থেকে বেশ কয়েকবার নিউজবাংলার সঙ্গে কথা বললেও তখন আর কিছু বলতে চাননি। দরজাও বন্ধ করে দেন।
কিছুক্ষণ পর বাসায় ডাকেন ফরিদ আহমেদ। বলেন, ‘আমারে টাকা দিছে, ৬০ হাজার।’
কে দিয়েছে- এমন প্রশ্নে বলেন, সাহিনুর ভাই টাকা দিছে।
টাকা দেয়ার সময় কি সই নিয়েছে?
ফরিদ বললেন, ‘হ’। পরে বলেন, ‘বাবা এখন যাও। যা হওয়ার হইছে আমি টাকা পাইছি।’
তার স্ত্রী হিরন বেগম বলেন, ‘আমগো ডাইকা নিয়া সাহিনুর ভাই টাকা দিছে। আমাগো আর কোনো কথা নাই।’
টাকার আনার সময় আপনাদেরকে কিছু বলা হয়েছে কি না-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ভুল আমাদের।’
কী ভুল- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাবা যান তো।’
পঞ্চায়ের কমিটির নেতার দাবি, টাকা দিয়েছেন তিনি
যিনি টাকা দিয়েছেন তার পুরো নাম সাহিনুর আলম। তিনি দেওভোগ নাগবাড়ি পঞ্চায়েত কমিটির উপদেষ্টা।
সাহিনুর আলম বলেন, ‘ফরিদ আহমেদের বাড়িটি তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। তারা সব ভাইবোন মিলে থাকে। তিনি দুই বার স্ট্রোক করছেন। এই এলাকায় একটি হোসিয়ারি দোকানে কাটিং মাস্টার। ইউএনও সাহেব যখন আসছে তখন উনি উনার তথ্যটা সঠিক ভাবে বলতে পারে নাই। পরে উনারে ১০০ প্যাকেট ত্রাণ দিতে বলা হয়। কিন্তু উনি অসহায়। তাই টাকার ব্যবস্থা করতে স্বর্ণ বন্ধক রাখছে। এ হইলো অবস্থা।’
আপনার হাত দিয়ে কেন টাকা দেয়া হলো- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমারে প্রশাসন থেকে ফোন করছে। বলছে বলেন এটার যখন যা হয়ে গেছে গা, আপনি একটা ব্যবস্থা করেন। তাই আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ফরিদ আহমদ ও তার স্ত্রীর হাতে ৬০ হাজার টাকা দিছি।’
প্রশাসন থেকে টাকা দিতে বলা হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘না, প্রশাসন থেকে বলে নাই। আমি আমার ব্যক্তিগত টাকা দিছি।’
ডিসি বললেন সরকারি তহবিলের টাকা
তবে সাহিনুরের বক্তব্যের সঙ্গে জেলা প্রশাসকের কথার মিল নেই।
জেলা প্রশাসন মোস্তাইন বিল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (আরিফা জহুরা) আমাকে জানিয়েছেন ফরিদ আহমদকে টাকা দেয়া হয়েছে।’
এই টাকা কে দিয়েছে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘উনি (ইউএনও) আমাকে জানিয়ে অফিস ফান্ড থেকে টাকা দেয়া হয়েছে। বিস্তারিত ইউএনও বলতে পারবেন।’
তবে দিনভর ফোন ধরছেন না ইউএনও।
নিজেকে আড়াল করেছেন ইউএনও
ইউএনও আরিফা জহুরা সকাল থেকেই ফোন ধরছেন না। ১৯ বার কল করার পর তিনি না ধরায় সদর উপজেলা ভবনে তার কার্যালয়ে যান নিউজবাংলার প্রতিনিধি। কিন্তু তার কক্ষে যাওয়ার অনুমতি মেলেনি।
আরিফা বসেন ভবনের দোতলার একটি কক্ষে। নিচতলা দিয়ে ঢুকতে গেলেই বাধা দেন নিরাপত্তাকর্মী। বলেন, ‘অনুমতি লাগবে ভেতরে যেতে।’
এই অনুমতি দেবেন ইউএনও নিজে। কিন্তু তিনি ফোন ধরছেন না, এই বিষয়টি জানালে নিরাপত্তাকর্মী বলেন, ‘ফোন ধরলে আইসেন।’
তবে এ ঘটনার আগে ইউএনও ফোন ধরেছিলেন, তার কক্ষে গিয়ে সাংবাদিকরা বক্তব্যও নিয়ে এসেছেন। এমনকি ফরিদের বাড়িতে গিয়ে ত্রাণ বিতরণ করে আসার পর শনিবার সন্ধ্যায়ও সাংবাদিকরা তার কক্ষে ঢুকেছেন অবাধে। তিনি কথা বলেছেন হাসিমুখেই।
যে প্রশ্ন নাগরিক কমিটির নেতার
নাগরিক সংগঠন সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজনের নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েল করের টাকায় ক্ষতিপূরণ দেয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
তিনি বলেন, ‘প্রশাসন বলছে ক্ষতিপূরণের টাকা ফিরিয়ে দেবে। কিন্তু আমাদের দাবি হলো ইউএনও ভুল করেছেন। এর মাশুল কেন সরকার দেবে?
‘কারণ, সরকারের টাকা জনগণের। যিনি ভুল করেছেন তিনিই টাকা দেবেন। একই সঙ্গে আমরা দাবি জানাই, ফরিদ আহমেদকে ত্রাণ সহায়তা করা হোক।’
এমন প্রশ্নে জেলা প্রশাসক সকালে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যাদের সাহায্য করা হয়েছে তারাও ওই এলাকার অসহায় মানুষই। তারা এমনিতেও সহায়তা পাওয়ার যোগ্য। তাই সরকারি অনুদান টাকা থেকেই দেয়া হবে।’
তদন্ত কমিটি
ফরিদ আহমেদকে ত্রাণ বিতরণে বাধ্য করার ঘটনায় তদন্ত কমিটি করেছে জেলা প্রশাসন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শামিম ব্যাপারীকে প্রধান করে গঠিত তিন সদস্যের এই কমিটিকে বুধবারের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মুস্তাইন বিল্লাহ।
তিনি বলেন, ‘তদন্তে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে আসবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে।’
ঘটনার শুরু যেভাবে
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কাশীপুর ইউনিয়নের দেওভোগ নাগবাড়ি এলাকায় বাসা ফরিদ আহমেদের।
বৃহস্পতিবার ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে খাদ্য সহায়তা চান তিনি। খাবার নিয়ে আসেন উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন, অফিস সহকারী কামরুল ইসলাম। পরে তারা ভবন দেখে ফোন দিলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফা জহুরা আসেন ঘটনাস্থলে। দেন শাস্তির ঘোষণা।
ইউএনও জানান, সরকার প্রতি প্যাকেটে যে পরিমাণ খাবার দেয় দুস্থদের, সেই পরিমাণ খাবারসহ ১০০ প্যাকেট করে বিতরণ করতে হবে।
নির্দেশমতো শনিবার বিকেলে ফরিদ আহমেদ সেই খাবার বিতরণও করেন। আর সেখানে উপস্থিত ছিলেন ইউএনও স্বয়ং।
ঘটনাস্থলে গিয়ে ফরিদের জীবনের কাহিনি জেনেছে নিউজবাংলা। কিন্তু জানেননি ইউএনও।
ফরিদ আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাগো বাড়ি আছে। কিন্তু এই বাড়ি ছয় ভাই ও এক বোনের। আমাগো সবার আংশিক ভাগ আছে। এর মধ্যে আমি নিচ তলায় থাকি। আমার ১৬ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী ছেলে আছে। মেয়ে মহিলা কলেজে পড়ে। তাদের নিয়া আমার সংসারে অনেক টানাটানি।’
৩৩৩ নম্বরে কেন ফোন
ইউএনও আরিফা জহুরা দাবি করেছেন, ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে আসলেই খাবার পাওয়া যায় কি না, সেটি যাচাই করতেই ফোন করেছিলেন ফরিদ।
তবে ফরিদ বলেন উল্টো কথা।
তিনি বলেন, ‘প্রতি ঘণ্টা আমি এফএম রেডিও শুনি। সেখানে শুনছি ৩৩৩ নম্বরে ফোন করলে খাবার আসে। এ জন্য ফোন করছি কিন্তু জানতাম না এটা নিম্ন আয়ের মানুষের। আমিও তো পেটের দায়ে অভাবে পইড়াই ফোন করছি।
‘আমার খাদ্য প্রয়োজন ছিল বলেই ফোন করছি। সেখান থেকে তারা বলছে আপনার আবেদন গ্রহণ করা হইল। পরে তারা ফোন করে নাম, ঠিকানাসহ আমার ব্যক্তিগত তথ্য জিজ্ঞাসা করছে, আমি সব বলছি। এরপর তারা আইসা খাদ্য না দিয়া বরং আমারে ফাইন করে দিয়ে গেছে।’
জরিমানার আদেশের বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘কাশিপুর ইউনিয়নে পরিষদের (ইউপি) সদস্য আইয়ুব আলী আমাকে ডেকে নিয়ে বলেন, আপনি এই খাদ্য পাওয়ার উপযুক্ত নন। এই কথা বলে আমাকে নানাভাবে ধমকাতে থাকেন।
‘পরে আমি ভুলও স্বীকার করেছি। তার কিছুক্ষণ পর ইউএনও স্যার আসেন এবং আমাকে ডেকে নিয়ে নানা প্রশ্ন করার পর ১০০ মানুষকে খাদ্য সহায়তা করার জন্য নির্দেশ দেন। ইউএনও স্যার চলে যাওয়ার পর ইউপি সদস্যসহ অনেক খাদ্য সহায়তা করা না হলে তিন মাসের সাজা হবে বলে জানানো হয়।’
এ ঘটনায় রোববার দুপুরে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। বিকেলে সাড়ে ৫ টার দিকে ৬০ হাজার টাকা বুঝিয়ে দেয়া হয় ফরিদ আহমেদকে।
আরও পড়ুন:দেশের মৎস্যসম্পদের সম্প্রসারণ, সংরক্ষণ, উন্নয়ন এবং টেকসই ব্যবহারে জনসচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ‘অভয়াশ্রম গড়ে তুলি, দেশি মাছে দেশ ভরি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ১৮ থেকে ২৪ আগস্ট জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫ দেশব্যাপী উদ্যাপিত হতে যাচ্ছে।
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠান ১৮ আগস্ট সোমবার সকাল ১০টায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে সভাপতিত্ব করবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মৎস্য খাতে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৬ জন ব্যক্তি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় মৎস্য পদক ২০২৫ প্রদান করা হবে। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে যথাক্রমে স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জের পদক বিতরণ করা হবে।
২০২৫ সালের মৎস্য সপ্তাহের কর্মসূচিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে সারাদেশে সপ্তাহব্যাপী র্যালি, সেমিনার, প্রযুক্তি প্রদর্শন, আলোচনা সভা, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, মতবিনিময় সভা, সমাপনী এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচি হিসেবে থাকছে: ১৮ আগস্ট বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে সকাল ১০টায় জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫ এর আনু্ষ্ঠানিক শুভ উদ্বোধন ও মৎস্য পদক বিতরণ অনুষ্ঠান। ১৯ আগস্ট সকাল ৮:৩০টায় মানিক মিয়া এভিনিউ-এ সড়ক র্যালি, সকাল ১০টায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে প্রযুক্তি প্রদর্শন ও ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলোচনা সভা। ২০ আগস্ট সকাল ১০টায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি)-এ মৎস্য অভয়াশ্রমের গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ করণীয় বিষয়ক সেমিনার। ২১ আগস্ট সকাল ১০টায় কারওয়ান বাজার মৎস্য আড়তে মৎস্য বিষয়ক আলোচনা সভা ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন। ২২ আগস্ট সকাল ১০টায় চট্টগ্রামে মৎস্য ও মৎস্যপন্য রপ্তানি বৃদ্ধিতে সম্ভাবনা ও করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা। ২৩ আগস্ট সকাল ১০টায় মৎস্যভবনে মৎস্যজীবী, মৎস্যচাষী, জেলে এবং আড়ৎদারদের সাথে মতবিনিময় সভা ও ভ্রাম্যমাণ প্রচার প্রচারণা। ২৪ আগস্ট বিকাল ৪টায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি)-এ জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫ এর মূল্যায়ন, সমাপনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫ এর সমাপ্তি হবে।
জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মসূচি হিসেবে থাকছে: প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় র্যালি, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, সফল মৎস্য উদ্যোক্তাদের পুরস্কার প্রদান, পোনা অবমুক্তকরণ, মতবিনিময় সভা, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, নিরাপদ মাছ চাষ ক্যাম্পেইন, তরুণদের অংশগ্রহণে কর্মশালা, কুইজ ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং মৎস্যজীবীদের নিয়ে ক্রীড়া আয়োজনসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সপ্তাহের শেষ দিনে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫ এর মূল্যায়ন, সমাপনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫ এর সমাপ্তি হবে।
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫ সফলভাবে উদ্যাপনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সকল সংগঠন, মৎস্যজীবী, উদ্যোক্তা ও জনগণের সহযোগিতা কামনা করছে।
উল্লেখ্য, রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে সংঘটিত মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার কারণে ২২ জুলাই জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানসহ সকল কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। এ ঘটনায় নিহতদের প্রতি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় গভীর শোক ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি কোনো বিভাজনের রাজনীতি করে না। বিএনপি সব ধর্মের মানুষ, বর্ণের মানুষকে নিয়ে সুখী ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তোলবে। নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে কোনো বিভাজন করা যাবে না।
গতকাল শনিবার জেএমসেন হলে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন ধর্ম সম্মেলন ও সাধু সন্ত ঋষি বৈষ্ণব মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান মানলে অবশ্যই অসাম্প্রদায়িক হতে হবে। বাংলাদেশের সংবিধান অসাম্প্রদায়িক চেতনার কথা পুরোপুরি বলা আছে। সুতরাং অসাম্প্রদায়িক মুখে নয়, প্রকৃত অসাম্প্রদায়িক হলে দেশে কোনো হানাহানি থাকবে না। একইভাবে সংখ্যালঘু শব্দও আমি মানি না। সংখ্যালঘু বলতে কোনো শব্দ নেই। আমরা সবাই বাংলাদেশি এবং বাংলাদেশি হিসেবে সবার অধিকার নিশ্চিত করা যেকোনো সরকারের দায়িত্ব।
তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে আমরা একটা জাতি, একটা দেশ, একটা সমাজ। যারা সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে তারা বারবার ধ্বংস হয়েছে, আবার বারবার নতুনভাবে শুরু করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এ দেশের সাধারণ মানুষ সাম্প্রদায়িকতাকে মনেপ্রাণে ঘৃণা করে। আজকের বাংলাদেশে আমরা যেখানে দাঁড়িয়ে আছি সেখানে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করছে সবাই। মানুষের মধ্যে অনেক দাবি সৃষ্টি হয়েছে, অনেক প্রত্যাশা জাগ্রত হয়েছে।
“যদি নতুন বাংলাদেশ গড়তে হয় তবে কোনো বিভাজন করা যাবে না। দেশে সবার ধর্ম থাকবে, সংস্কৃতি থাকবে। সবাই তাদের নিজ নিজ ধর্মীয় উৎসব পালন করবে। এটার সঙ্গে গণতন্ত্রের কোনো সংঘর্ষ থাকতে পারে না। জাতি হিসেবে, রাজনীতিবিদ হিসেবে আমাদের সহনশীল হতে হবে। ধর্ম যেমন মানুষের ভিন্ন ভিন্ন হয় রাজনৈতিক মতভেদও ভিন্ন ভিন্ন হবে। কিন্তু দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে সবাইকে এক হতে হবে।
শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লায়ন আর কে দাশ রুপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বালন করেন বাঁশখালী ঋষিধামের মোহন্ত শ্রীমৎ স্বামী সচিদানন্দ পুরি মহারাজ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব দে পার্থ।
মাচার ওপরে সবুজ পাতা। নিচে ঝুলে আছে কালো রঙের তরমুজ। গাছ থেকে ছিঁড়ে না পড়ে সেজন্য প্রতিটি তরমুজে দেওয়া হয়েছে জালি। এমন দৃশ্য নওগাঁর পত্নীতলা, মহাদেবপুর, রাণীনগর ও সদর উপজেলার মাঠে মাঠে। এসব জমিতে আগে পটল ও করলা চাষ করলেও এখন বর্ষা মৌসুমে 'মার্সেলো’ জাতের তরমুজ চাষ করেছেন চাষিরা।
মাচায় ও মালচিং পদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড মার্সেলো জাতের তরমুজ চাষে সফলতা পেয়েছেন নওগাঁর চাষিরা। এই পদ্ধতিতে চাষ করা তরমুজের অধিক ফলনে তারা খুশি।
জানা গেছে, এসব তরমুজ অত্যন্ত সুস্বাদু ও সুমিষ্ট হওয়ায় বাজারে চাহিদা বেশি। সঙ্গে লাভও বেশি। লম্বাটে ডিম্বাকৃতির এই তরমুজের ভেতরের অংশ গাঢ় লাল রঙের। মার্সেলো জাতের প্রতিটি তরমুজের ওজন হয়ে থাকে ৩-৫ কেজি। আর প্রতি বিঘায় দেড় থেকে দুই হাজারটি তরমুজ পাওয়া যায়।
এছাড়া মার্সেলো জাতের এই তরমুজ উচ্চমাত্রায় ভাইরাস সহনশীল। প্রতিদিনই আগ্রহী চাষিরা বর্ষাকালীন তরমুজের ক্ষেত দেখতে ভিড় করছেন জমিতে। গত জুন মাসে তরমুজের চারা রোপণ করা হয়েছে। গাছ লাগানোর ৬৫-৭০ দিনের মধ্যে ফল উঠানো যায়।
রাণীনগরের মার্সেলো তরমুজ চাষি নিরাঞ্জন চন্দ্র প্রামানিক জানান, তিনি প্রতিবছর উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে নতুন নতুন ফসল চাষ করে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় এবার কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় ২৫ শতক জমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার ছাড়াই বিষমুক্ত মার্সেলো তরমুজ চাষ করেছেন। বাজারে প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকায়। কম পরিশ্রমে ভালো দাম পেয়ে খুশি তিনি।
তিনি বলেন, আমরা জানি তরমুজ চাষ হয়ে থাকে গ্রীষ্মকালে। কিন্তু আমাদের এ বরেন্দ্র জেলায় বর্ষাকালে তরমুজের চাষ করা দেখে প্রতিদিন তার তরমুজের ক্ষেত দেখতে ও পরামর্শ নিতে আসছেন নতুন নতুন কৃষি উদ্যোক্তারা। তাদের পরামর্শসহ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি।
তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা কামাল মাহমুদ শিপন বলেন, নিরাঞ্জন দাদার তরমুজের ক্ষেত দেখে খুবই ভালো লাগছে। তার সঙ্গে অনেক কথা হলো এই তরমুজের বিষয়ে। খেয়ে দেখলাম খুব সুস্বাদু ও মিষ্টি। আগামী বছর দুই বিঘা জমিতে এই তরমুজ চাষ করবো আশা করি।
উপজেলার কাশিমপুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের দম্পতি আলেক বেগ ও কুলসুম বানু বলেন, আগে আমরা বাজার থেকে তরমুজ কিনে আনতাম। এখন দেখি গ্রীষ্মকালের তরমুজ বর্ষাকালে ধরেছে থোকায় থোকায়। অবাক করা বিষয়। খুব সুন্দর লাগছে দেখে। দুটি তরমুজ কিনলাম ৫০ টাকা কেজি দরে। দুটি তরমুজের ওজন ৮ কেজি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিষমুক্ত তরমুজ চাষ করতে মাচায় ও মালচিং পদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল মার্সেলো জাতের তরমুজ চাষ করা হয়েছে জেলার ৪টি উপজেলায়। ভেতরে গাঢ় লাল রঙের এ তরমুজের স্বাদ খুব ভালো। কম খরচের পাশাপাশি বর্ষাকালে এই তরমুজ চাষ হওয়ায় কৃষকরা বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাই কৃষকরা বর্ষাকালীন তরমুজ চাষের দিকে ঝুঁকছেন। তাদের আরও উৎসাহ দিতে আমরা কাজ করছি। তাদের সার্বিক সহযোগিতা করছে কৃষি বিভাগ। সূত্র: বাসস
ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরে দুদিনের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলিতে দেশীয় পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ১০ টাকা করে। সরবরাহের এমন ধারা অব্যাহত থাকলে ও ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির পরিমাণ বাড়লে দাম আরো কমবে বলে দাবি বিক্রেতাদের। এদিকে পেঁয়াজের দাম কমায় খুশি নিম্ন আয়ের মানুষ।
সরেজমিন হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রতিটি দোকানেই আগের তুলনায় দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। সেই সঙ্গে দাম পূর্বের তুলনায় কমতির দিকে রয়েছে। দুদিন পূর্বে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ টাকা দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কমে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে আগের তুলনায় ক্রেতা সমাগম বেশি, এছাড়া ক্রেতারা পরিমাণে বেশিও কিনছেন।
হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা হায়দায় আলী বলেন, গত কয়েকদিন ধরে হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করেছে। ৫০ টাকা কেজির পেঁয়াজ দাম বাড়তে বাড়তে ৭৫ টাকা কেজিতে উঠে যায়। পেঁয়াজ খুবই জরুরি নিত্যপ্রয়োজনীয় হওয়ায় বাধ্য হয়ে এক কেজির জায়গায় হাফ কেজি কিনছিলাম। তবে দুদিন ধরে পেঁয়াজের দাম কিছুটা নিম্নমুখী হতে শুরু করেছে, বর্তমানে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় নেমেছে। হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা আবুল হাসনাত বলেন, বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকলেও পর্যাপ্ত পরিমাণে দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ থাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই দাম স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু বর্তমানে মৌসুম শেষের দিকে হওয়ায় বাজারে দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ কমতে শুরু করেছে। এতে মোকামে প্রতিদিনই পেঁয়াজের দাম বাড়ছিল। আর তাই বাজারেও পণ্যটির দাম বাড়ছিল। দাম নিয়ন্ত্রণে সম্প্রতি সরকার পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিতে শুরু করেছে। গত বৃহস্পতিবার সোনা মসজিদ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। রোববার থেকে হিলিসহ দেশের অন্যান্য বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হবে। এমন খবরে মোকামে যারা দেশীয় পেয়াজ মজুদ করছিল তারা সেসব পেঁয়াজ বাজারে ছাড়তে শুরু করেছে। এতে সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। দু'দিন আগেও যেখানে মোকামে প্রতি মণ পেঁয়াজ আমাদের কিনতে হয়েছিল ৩ হাজার ২শ টাকা সেটি এখন কমে ২ হাজার ২শ টাকা হয়েছে। আমদানির খবরেই পেঁয়াজের দাম মণপ্রতি ১ হাজার টাকা করে। কমে গেছে। কম দামে কিনতে পারায় আমরাও এখন কম দামে বাজারে বিক্রি করতে পারছি।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর দিনাজপুরের সহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন বলেন, কেউ যাতে কোনো পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে দাম বাড়াতে না পারেন সেজন্য আমরা নিয়মিতভাবে বাজারগুলোয় অভিযান পরিচালনা করছি। তারা কী দামে পণ্য কিনছেন কী দামে বিক্রি করছেন সে সম্পর্কিত তথ্য যাচাইবাছাই করছি। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আর্থিক জরিমানা করা হচ্ছে।
দেশে প্রতিদিন প্রায় ছয় কোটি ডিম উৎপাদন হলেও তা দিয়ে চাহিদা পূরণ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
পুষ্টি নিরাপত্তা প্রসঙ্গে এই উপদেষ্টা বলেন, ‘বর্তমানে দেশে মাথাপিছু গড় মাংস খেতে পারে মাত্র ২০০ গ্রাম। এখনো বহু পরিবার আছে যারা সপ্তাহে বা মাসে একদিন মাংস খায়।”
গতকাল শনিবার সকালে ঢাকা সেন্ট্রাল গার্লস হাই স্কুলে নবনির্মিত ছয় তলা একাডেমিক ভবনের উদ্বোধন ও এসএসসি-২০২৫ সালের কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, মাছ উৎপাদনের ক্ষেত্রে
বাংলাদেশ তুলনামূলক ভালো অবস্থানে আছে। মাছ, মাংস, দুধ, ডিম আমাদের পুষ্টির উৎস। তাই শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি পুষ্টির দিকটিও বিবেচনায় রাখতে হবে।'
তিনি বলেন, ‘চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বহু তরুণ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ শহীদ হয়েছেন। অনেকে হাত-পা-চোখ হারিয়ে আজীবন পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। তাদের ত্যাগকে স্মরণ রেখে এমন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে, যেখানে মানুষের অধিকার কখনো ক্ষুণ্ণ হবে না।'
তিনি বলেন, “বেগম রোকেয়া মুসলিম মেয়েদের জন্য স্বাধীন পরিবেশ দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন, সেখানে পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালিত হতো। কেবল বই পড়া দিয়ে সবকিছু জানা সম্ভব নয়, কারণ ইতিহাস বারবার বিকৃত হয়েছে। তাই শিক্ষকদের দায়িত্ব হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের প্রকৃত শিক্ষা দিয়ে দেশ ও জাতি সম্পর্কে সচেতন করে তোলা।”
নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, 'স্কুলের ভেতরে ও বাইরে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্ব নিতে হবে। ইভটিজিংয়ের কারণে মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে—নতুন বাংলাদেশে এটা হতে দেওয়া যাবে না।
পরিবেশ সুরক্ষায় শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'সপ্তাহে অন্তত একদিন স্কুল ও এলাকায় পরিবেশ রক্ষায় কার্যক্রম চালাতে হবে। পাশাপাশি পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে হবে। কারণ এগুলো মানব স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।'
নারী শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসী আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে ওঠার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'নারী নির্যাতন আইন সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে এবং বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে শিক্ষক, অভিভাবক ও সমাজকে একসঙ্গে সচেতন হতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে আজ পরিকল্পনা কমিশনে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কক্সবাজার বিমানবন্দরে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে আংশিকভাবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল শুরুর হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিকী।
রবিবার দুপুরে কক্সবাজার বিমানবন্দর পরিদর্শন শেষে এ কথা জানান তিনি।
চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিকী বলেন, 'আমরা আজকে বিমানবন্দরের দ্বিতীয় টার্মিনাল ও সাগরের বুকে নির্মিত হওয়া রানওয়ের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেছি। তাতে মনে হয়েছে আগামী অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে আংশিকভাবে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করা সম্ভব হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, 'কত শতাংশ কাজ শেষে তা বলা না গেলেও তবে মাঝামাঝি সময়ে শুরু করা সম্ভব। যার জন্য আমাদের প্রস্তুতি শেষের পথে।
পরিদর্শনকালে কক্সবাজার বিমানবন্দরের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ ইউনূছ ভুঁইয়া, বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক গোলাম মোর্তজা হাসানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য