‘হায়রে হায়রে হায়, ও মুজা খালি গান গাইতে থাকো, সারা সিলেটোর লাগি একটা গান গাও না কেনে বা?’ সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় এই কথাগুলোর পরই শোনা যায় একটি নারীকণ্ঠ গেয়ে ওঠে, ‘আইলারে নয়া দামান আসমানেরও তেরা/ বিছানা বিছাইয়া দেও শাইল ধানের নেড়া/ দামান বও দামান বও।’
‘সারা সিলেটোর লাগি’ গাওয়ার কথা বলা হলেও এই গান আর শুধু ‘সারা সিলেটোর লাগি’ থাকেনি। বরং প্রবাসী মিউজিশিয়ান মুজার সংগীতায়োজনে এই গানটি এখন ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে সিলেট অঞ্চলে গীত হয়ে আসা ‘নয়া দামান’ গানে এখন মজেছে সবাই।
‘নয়া দামানের’ এই পুনর্জাগরণের নেপথ্যে রয়েছেন সিলেটেরই এক তরুণী। তার কণ্ঠে ভর করেই সিলেট অঞ্চলের এই বিয়ের গানটি এখন ভাইরাল। গানের সঙ্গে সেই তরুণীও এখন সবার পরিচিত। তার নামও আর কারও অজানা নয়। তিনি তোশিবা বেগম।
সিলেটি তরুণী তোশিবা সদ্য এইচএসসি পাস করেছেন। গান গাইতে ভালো লাগলেও শেখা হয়নি কখনো। তবে দরদ দিয়ে গাওয়ায় গানগুলো হৃদয় কাড়ছে সবার। তার গায়কীতে মুগ্ধ শ্রোতারা।
নিউজবাংলার প্রতিবেদকের কথা হয় তোশিবার সঙ্গে। জানতে চাওয়া হয় তার গানের জনপ্রিয়তার পেছনের গল্প।
তোশিবা জানান, গান না শিখলেও ছোটবেলা থেকেই নিজের মতো করে গান করেন। মূলত সিলেট অঞ্চলের লোকগানই করে থাকেন। বছর দুয়েক ধরে ফেসবুকে খালি গলায় গাওয়া নিজের কিছু কিছু গান আপলোড করা শুরু করেন। অনেকে তা পছন্দ করে।
ধীরে ধীরে তার গাওয়া গান ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। এরপর ৭-৮ মাস আগে থেকে টিকটক ব্যবহার শুরু করেন। টিকটকে পছন্দের কিছু গানের ২ থেকে ৩ লাইন গাইতেন। দ্রুতই টিকটকে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের তিন চিকিৎসকের নাচের সেই ভাইরাল ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে তোশিবার গাওয়া গানটি। মুজার সংগীতায়োজনে এই গানে বাঁশি বাজিয়েছেন মীম।
তোশিবা বলেন, ‘প্রায় দুই মাস আগে ‘আইলারে নয়া দামান’ গানের দুই লাইন গেয়ে টিকটকে দিয়েছিলাম। অনেক মানুষ এটা পছন্দ করে। এটি দেখে মুজা ভাই (প্রবাসী মিউজিশিয়ান মুজা) যোগাযোগ করেন। তিনি তার সঙ্গে এই গানটি করার প্রস্তাব দেন। আমি এতে সম্মত হই।’
মাসখানেক আগে নয়া দামান গানের ‘মুজা ফিচারিং তোশিবা’ ভার্সন নিজের ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করেন মুজা।
এরপরের গল্প তো সবার জানা। নেটিজেনদের মাঝে রীতিমতো হইচই পড়ে যায়।
শনিবার পর্যন্ত মুজার ইউটিউব চ্যানেলে এই গান শুনেছেন অর্ধকোটি শ্রোতা। এই গানের সঙ্গে খুলনার এক কনের নাচের ভিডিও ধারণ করে ইউটিউবে আপলোড করে ছায়াছবি নামের একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান। সেই ভিডিও দেখেছেন কোটি খানেক দর্শক।
আর করোনা রোগীদের সেবায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীদের উৎসাহ দিতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের তিন চিকিৎসকের নাচের ভিডিও তো সবার মোবাইলে মোবাইলে।
আগেকার দিনে শিল্পীদের তারকা হওয়ার মাধ্যম ছিল শুধু রেডিও-টেলিভিশন। জনপ্রিয় শিল্পীদের অনেকগুলো অ্যালবাম বের হতো। বছরজুড়ে তারা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে গান গাইতেন।
কয় বছর আগেও এটিই ছিল বাস্তবতা। কিন্তু এখন সেই চিত্র বদলে গেছে। এখন আর শিল্পী হওয়ার জন্য রেডিও-টেলিভিশনের আশায় বসে থাকতে হয় না, প্রযোজকদের দ্বারে-দ্বারে ঘুরতে হয় না।
প্রতিভা ও ইচ্ছা থাকলে সহজেই নিজের গান পৌঁছে দিতে পারেন মানুষের কাছে। পেয়ে যেতে পারেন তারকাখ্যাতি।
যেমন, তোশিবার কথাই ধরা যাক। রেডিও-টেলিভিশন তো দূরে থাক, জীবনে কোনো দিন কোনো অনুষ্ঠানেও গান করেননি। বের হয়নি কোনো অ্যালবাম। শুধু সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই তার সামনে সম্ভাবনার দুয়ার খুলে গেছে।
তোশিবার নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেল আছে। ‘তোশিবা বেগম’ নামের ওই ইউটিউব চ্যানেলে তিনি নিজের গাওয়া গান আপলোড করেন।
এ ছাড়া জনপ্রিয় ইউটিউবার ইমরানের চ্যানেল ‘মেড ইন বাংলাদেশের’ জন্য ৪-৫টা গান গেয়েছেন। এগুলোর মধ্যে ‘দুই আনার পিরীত’ গানটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
তোশিবাদের মূল বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতকে। এখন থাকেন সিলেটের খাদিমপাড়ায়। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে মেজো তোশিবার লক্ষ্য সিলেটের গান সারা বিশ্বে তুলে ধরা।
তোশিবা বলেন, ‘আমি সিলেটের পুরোনো গানগুলি গাইতে চাই। সারা বিশ্বের মানুষের কাছে সিলেটের গানের বিপুল ভান্ডার তুলে ধরতে চাই। তবে ঠিক রাখতে চাই মূল সুর ও কথা, যাতে এগুলো বিকৃত হতে হতে হারিয়ে না যায়।
তবে কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, তোশিবার গাওয়া এই রিমিক্সে তিনি গানের মূল সুর নষ্ট করেছেন।
এই অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমি মূল সুর নষ্ট করিনি। রিমিক্স করা হয়েছে কিন্তু গানের সুর ঠিক রাখা হয়েছে।’
হঠাৎ করে পাওয়া এই তারকাখ্যাতি কেমন লাগে জানতে চাইলে তোশিবা বলেন, ‘সবাই নাম জানছে, গান শুনছে, প্রশংসা করছে। এটা ভালো লাগে। তবে আগামীতে আরও ভালো করতে চাই।’
তবে এই গান নিয়ে আক্ষেপও আছে তোশিবার। গানটি তার কণ্ঠে জনপ্রিয়তা পেলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে তার নাম তেমন আসছে না।
তোশিবার অভিযোগ, ‘টেলিভিশনে নিউজ হয়েছে কিন্তু আমার নাম সেভাবে বলা হয়নি। বলা হয়েছে, ছায়াছবি নাকি বিখ্যাত করেছে। অথচ ছায়াছবি আমার গান ব্যবহার করেছে।
‘ছায়াছবির অনেক আগে আমি টিকটকে গানের মাত্র দুই লাইন দিয়েছিলাম। সেটায় দুই লাখ ভিউ হয়েছে। মুজার চ্যানেলেও প্রচুর ভিউ হয়েছে। তোশিবা-মুজার মাধ্যমেই এই গান জনপ্রিয় হয়েছে।’
পুনশ্চ: ‘নয়া দামানের’ উৎসের সন্ধানে
গত ৩০ এপ্রিল ‘নয়া দামানের’ উৎসের সন্ধানে শিরোনামে নিউজবাংলায় সংবাদ প্রকাশ করা হয়। সেখানে নয়া দামান গানের উৎস, গীতিকার, সুরকার, শিল্পী, সময়কাল এই তথ্যগুলো খোঁজার চেষ্টা করা হয়।
প্রতিবেদনে লোকসংস্কৃতি গবেষক সুমনকুমার দাশ ‘গীতিকারের নাম না থাকায় এটি লোকগান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে’ উল্লেখ করে বলেন, ‘তবে ২০১৩ সালে আমাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সংগীতজ্ঞ রামকানাই দাশ গানটি তার মা দিব্যময়ী দাশের রচনা বলে জানিয়েছিলেন। অবশ্য সে গানের কথায় দামান শব্দের বদলে জামাই শব্দ রয়েছে।’
পণ্ডিত রামকানাই দাশের মেয়ে কাবেরী দাশও এমন তথ্য জানিয়েছেন, যা ওই প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে রামকানাই দাশের বড় বোন শিল্পী সুষমা দাশ বলেছেন, এই গান কার লেখা তা তিনি জানেন না।
এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর বেশ আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
প্রতিবেদনটি পড়ে শুক্রবার রাতে প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলেন রামকানাই দাশের কানাডাপ্রবাসী ছেলে পিনুসেন দাশ।
তিনি বলেন, ‘এই গানটি আমার ঠাকুরমা দিব্যময়ী দাশের। আমি ছোটবেলা থেকেই এটা শুনে আসছি। আমার বাবা রামকানাই দাশ বিভিন্ন বই ও সাক্ষাৎকারে তা বলে গেছেন। বাবা গীতিকার হিসেবে দিব্যময়ী দাশের নাম উল্লেখ করে বিভিন্ন জায়গায় এই গান গেয়েছেনও। ফলে এ নিয়ে বিতর্ক বা কোনো প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই।’
দিব্যময়ী দাশের মেয়ে সুষমা দাশের না জানা প্রসঙ্গে পিনুসেন বলেন, ‘তার (সুষমা দাশ) অনেক ছোটবেলায় বিয়ে হয়ে যায়। এরপর তিনি স্বামীর বাড়ি চলে যান। ফলে ঠাকুরমার সব গান সম্পর্কে তিনি না-ও জানতে পারেন। এ ছাড়া ঠাকুরমার গানগুলো আমার বাবাই খুঁজে খুঁজে বের করেছেন।’
নিজের বড় বোনের বরাত দিয়ে পিনুসেন বলেন, ‘আমি তখন খুব ছোট ছিলাম। তবে আমার বড় বোনের কাছে শুনেছি, আমার বাবার ছাত্রী এয়ারুন্নেছা খানম আমাদের বাড়ি থেকে গানটি নিয়ে এসে রেডিওতে গেয়েছিলেন।’
সুমনকুমার দাশকে দেয়া সাক্ষাৎকারে রামকানাই দাশ বলেছেন, দিব্যময়ী দাশের লেখা গানের প্রথম লাইন ছিল ‘আইলারে নয়া জামাই’। এয়ারুন্নেছা গেয়েছেন ‘আইলারে নয়া দামান’। বর্তমানে দামান শব্দটিই গানে বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে।
শব্দ বদলে ফেলা হলেও তখন কেন কোনো প্রতিবাদ করা হলো না, এমন প্রশ্নের জবাবে পিনুসেন বলেন, ‘তখন বাবা আপত্তি করেছিলেন। তবে আরও জোরালো প্রতিবাদ করা দরকার ছিল।’
রেডিওর আর্কাইভে এই গানের গীতিকারের জায়গায় সংগৃহীত লেখা থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘রেডিওর তালিকাভুক্ত না হলে গীতিকারের নাম লেখা থাকে না।’
তোশিবাও বলেন, ‘এই গানটি দিব্যময়ীর বলে আমি শুনেছি। গান গাওয়ার সময় তার নাম উল্লেখ করা উচিত।’
তবে তোশিবাও জামাইয়ের পরিবর্তে দামান শব্দ ব্যবহার করেই গান গেয়েছেন।
আরও পড়ুন:শতভাগ পদোন্নতি যোগ্য দ্বিতীয় শ্রেণির পদে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তাকে প্রেষণে নিয়োগের প্রতিবাদে দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের স্থায়ী কর্মচারীরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান কার্যালয়ে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
বিক্ষোভকালে কর্মচারীরা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের মূল দাবি হলো, অবিলম্বে প্রেষণে দেওয়া ওই কর্মকর্তার নিয়োগ বাতিল করে শতভাগ পদোন্নতি যোগ্য এই পদে যোগ্য দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মচারীকে পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগ দিতে হবে। বিক্ষোভে বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড কর্মচারী ইউনিয়ন-এর সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মো. মওদুদুল করিম (বাবু), মুজাহিদুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মচারীরা। তারা বলেন, যে পদটি সম্পূর্ণভাবে বোর্ডের দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের পদোন্নতির জন্য নির্ধারিত, সেখানে প্রেষণে প্রথম শ্রেণির একজন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের দাবি, এটি দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের ন্যায্য অধিকার ক্ষুণ্ন করছে এবং পদোন্নতির সুযোগকে সীমিত করে দিচ্ছে।
অন্যদিকে, বিক্ষোভ চলাকালীন মো. আহসান হাবিবের সমর্থকেরা শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যানকে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত অবরুদ্ধ করে মব সৃষ্টি করার চেষ্টা করেন। তবে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ নিয়ে দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মহা. তৌহিদুল ইসলাম জানান, মো. আহসান হাবীব তিনি আজ সহকারী কলেজ পরিদর্শক পদে যোগদান করতে এসেছিলেন, সেটি ১০ম গ্রেডের পদ, তিনি ৯ম গ্রেডে চাকরি করেন। তিনি স্পষ্ট করেন যে পদটি প্রথম শ্রেণির পদ নয়। তিনি বলেন, এই ইস্যুতে আমাদের কর্মচারীরা বাঁধা সৃষ্টি করে। আমরা প্রশাসনের সাথে কথা বলি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।
চেয়ারম্যান আরও জানান, আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। ঘটনার জেরে শিক্ষাবোর্ডে সাময়িক উত্তেজনা সৃষ্টি হলেও বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
ঝালকাঠির পৌর শ্মশানঘাটে রোববার সন্ধ্যায় সনাতন ধর্মালম্বীদের মৃত স্বজনদের আত্মার শান্তি কামনায় মোমবাতি ও প্রদীপ প্রজ্বালন করেছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এ সময় মৃত স্বজনদের পছন্দের খাবার তাদের সমাধিতে উৎসর্গ করা হয়।
ঝালকাঠি পৌর শ্মশান কমিটির সভাপতি নির্মল চন্দ্র দে তরনী জানান, কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের তিথিকে ভূতচতুর্দশী তিথি বলা হয়ে থাকে। রোববার সন্ধ্যায় তিথি শুরু হয়েছে এবং আজ সোমবার বিকেল পর্যন্ত চলবে।
তিনি আরো বলেন, ‘বিকেল থেকেই সনাতনসহ অন্য ধর্মাবলম্বীরাও শ্মশানঘাট প্রাঙ্গণে জমায়েত হতে থাকে। দিপাবলী উপলক্ষে প্রতি বছর এই দিনে হাজারো মানুষের পদচারণ থাকে এখানে।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অলোক সাহা জানিয়েছেন, ‘দীপালি উৎসবকে কেন্দ্র করে কয়েক হাজার সমাধির এই শ্মশানে নিরাপত্তা নিশ্চিতে এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সদর থানা পুলিশ, র্যাবসহ সাদাপোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করেছে। পাশাপাশি আছেন শ্মশান রক্ষা কমিটির স্বেচ্ছাসেবকরা।'
বিধান রায় নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘বাবার সমাধিতে মোমবাতি, আগরবাতি ও প্রদীপ জ্বালিয়ে তাকে স্মরণ করতে এসেছি। তিনি মিষ্টি খুব পছন্দ করতেন, তার সমাধিতে নানা ধরনের মিষ্টি সাজিয়ে উৎসর্গ করেছি।’
শ্মশান এলাকায় অনেককে কীর্তন করতে দেখা গেছে। কেউবা অশ্রুসজল চোখে স্মরণ করেন হারানো প্রিয় মানুষটিকে।
বিকেলে অল্প সংখ্যাক লোকজন থাকলেও রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সুগন্ধা নদীর তীরে পৌর শ্মশানঘাটে হিন্দু ধর্মালম্বীদের সমাগম বাড়তে থাকে।
রাতে দিপালী উৎসব পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক আশরাফুর রহমান এবং পুলিশ সুপার উজ্জল কুমার রায়। উৎসব চলাকালে নিরাপত্তা ব্যবস্থার খোঁজ নেন পুলিশ সুপার।
এছাড়াও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ হোসেন, সদস্য সচীব অ্যাডভোকেট শাহাদাত হোসেন, সদস্য অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান মুবিনসহ তারেক রহমানের পক্ষ থেকে জেলা বিএনপিরএকটি প্রতিনিধি দল দীপালি উৎসবে এসে উপস্থিত সকলের সাথে কুশল বিনিময় করেন।
পঞ্চগড়ের আটোয়ারী সীমান্তে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) ও ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মধ্যে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ের সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিজিবির আহ্বানে বেলা ১১ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত পঞ্চগড় ১৮ বিজিবির নিয়ন্ত্রণাধীন গিরাগাঁও বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার ৪০৯/২ এস সীমান্ত পিলার সংলগ্ন বাংলাদেশের অভ্যন্তরে রমজানপাড়া এলাকার শুন্যরেখায় এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
সৌজন্য সাক্ষাতে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন ১৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. মনিরুল ইসলাম ও বিজিবি, এমএস, পিএসসি, এসি ৫০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল তানজির আহমেদ।
তার সঙ্গে ছিলেন স্টাফ অফিসারসহ মোট ৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। অপরদিকে বিএসএফ-এর পক্ষে ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বিএসএফ ১৭ ব্যাটালিয়নের কমান্ডেন্ট শ্রী অজয় কুমার শুকলা ও বিএসএফ ১৩২ ব্যাটালিয়নের কমান্ডেন্ট রাজেশ বোহরা।
সৌজন্য সাক্ষাতে দুদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা, সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও স্বাভাবিক পরিস্থিতি রক্ষা, সীমান্ত হত্যা প্রতিরোধ, মানব পাচার, গরু পাচার রোধ এবং মাদক চোরাচালান প্রতিরোধ, পুশইনসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়।
এছাড়াও শীত মৌসুমে ঘন কুয়াশার কারণে চোরাকারবারীরা সুযোগ নিতে পারে। সাক্ষাতে সীমান্ত সংক্রান্ত দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। উভয় পক্ষই সীমান্ত এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা ও চোরাচালান রোধে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
সৌজন্য সাক্ষাতের শুরুতে বিজিবি- বিএসএফ কমান্ডার পর্যায়ে কুশলাদি বিনিময় করেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) শাপলা প্রতীক দিতে কোনো আইনগত বাঁধা নেই বলে মন্তব্য করেছেন দলটির (উত্তরাঞ্চল) মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেছি। নির্বাচন কমিশন কাউকে খুশি করার জন্য এ সিদ্ধান্ত দিচ্ছে। নির্বাচন কমিশন আমাদের দেখাক কোন আইনে শাপলা প্রতীক এনসিপিকে দেওয়া যাবে না। রোববার দিনাজপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে সমন্বয় সভা শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, যে নির্বাচন কমিশন একটি রাজনৈতিক দলকে তাদের প্রাপ্য মার্কা দেয়ার সৎ সাহস দেখাতে পারে না, আমরা মনে করি সেই কমিশনের অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন এই বাংলাদেশে হতে পারে না। এনসিপি আমাদের জায়গা থেকে অবশ্যই প্রত্যাশা করি, যে আমরা শাপলা প্রতীক পেয়েই আগামী নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবো। এটা যদি তারা আমাদের সাথে অন্যায় করে, তাহলে আমরা এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করবো।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পূর্বে বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলগুলো রাস্তাঘাটে নেমে হাহাকার করতো। কর্মসূচী দিয়ে হাহাকার করতো। আমরা অনেক অফিস দেখেছি যে, অফিসের সামনে ১০ জন লোক দাড়ানোর মতো ছিল না, বড় বড় রাজনৈতিক দলের অফিস। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে জনগণ তখনই রাস্তায় নেমেছে, যাদের ওপর জনগণ আস্থা রেখেছে। এখন যদি জনগণের ওই আস্থার প্রতিদান কেউ কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা রাজনৈতিক দল না দেয়, জনগণ তাদের মতো করে আগামীতে যখন সুযোগ হবে জনগণ তার সুফল দেখাবে। আমরা স্পষ্ট করে বলি, আপনারা ইতিহাস থেকে দয়া করে শিক্ষা নেন। জুলাই সনদ আপনারাও চান, আমরাও চাই। আপনারা যদি জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণা পত্রের মতো নাম কাওয়াস্তে একটি পেপার চান, ওই সনদ আমরা চাই না।
এর আগে তিনি জেলা এনপিসির সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। জেলা এনপির প্রধান সমন্বয়কারী ফয়সনাল করিম সোয়েবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ড. আতিক মুজাহিদ ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ডা. মো. আব্দুল আহাদসহ প্রমুখ নেতারা।
খুলনার বাজারে কমছে না সবজির দাম। মাছের দামও কমেনি। সবজি ও মাছের চড়া মূল্যের কারণে ক্রেতাদের অভিযোগেরও শেষ নেই। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি সরবরাহ না থাকায় সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে, শীতকালীন সবজি বাজারে উঠতে শুরু করলে দাম কমে যাবে। রোববার খুলনার নতুন বাজার, মিস্ত্রিপাড়া বাজার, খালিশপুর বাজার ও নিউমার্কেট বাজার ঘুরে এমনটা জানা যায়।
সবজির বাজার ঘুরে দেখা যায়, টমেটো ১২০, পটল ৬০, চিচিঙ্গা ৬০ ও কচুমুখী ৪০ টাকা কেজি, চায়না গাজর ১৪০, মোটা গোল বেগুন ১২০ ও শসা ৬০ টাকা, ধুন্দল ৬০, শিম ১২০-১৪০ টাকা, কাঁকরোল ৭০ ৮০ টাকা, ঝিঙে ৬০-৭০, চিকন বেগুন ৬০-৭০ টাকা, ঢেড়স ৭০-৮০, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচ ২৮০-৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাংসের বাজারে, ব্রয়লার মুরগি ১৮০-১৯০ টাকা কেজি দরে, সোনালি ২৭০-২৮০ টাকা কেজি দরে ও লেয়ার ২৯০-৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজি দরে ও খাসির মাংস ১,১৫০ টাকা থেকে ১,২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারে, রুই মাছ আকারভেদে ৩৫০-৪০০ টাকা, ভেটকি মাছ আকারভেদে ৬০০-৮০০ টাকা কেজি, তেলাপিয়া ২০০ টাকা, পাবদা ৪০০-৪৫০ টাকা দরে, ছোট মাছ ৩০০-৪০০ টাকা কেজি, পাঙাশ মাছ ১৬০-২০০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে সবজি বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টির হওয়ার সম্ভাবনা কমে গেছে। নতুন সবজি বাজারে উঠলেই দাম অনেকটা কমে যাবে। মাঝে সবজির দাম ১০-১৫ টাকা কেজিতে কমলেও বৃষ্টি হওয়ায় ফের দাম বেড়েছিল। তবে বাজারে সবজির সরবরাহ কম; কিন্তু চাহিদা অনেক বেশি।
মিস্ত্রিপাড়া বাজারের খুচরা সবজি ব্যবসায়ী সবুজ মোল্যা বলেন, ‘শীতকালীন কিছু সবজি উঠলেও এখন চড়া দাম। পাইকার বাজারেও দাম অনেক বেশি। এ জন্য অল্প-স্বল্প সবজি উঠাচ্ছি। দাম বেশি হওয়ায় অনেকে কম কম সবজি ক্রয় করছেন।’
নিউমার্কেট বাজারে আসা ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘সবজি কিনতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। আর মাছের দামে তো আগুন। সামুদ্রিক মাছের দামও হুহু করে বেড়েছে। এমন চড়া দামে মাছ-সবজি কেনা অনেক কষ্টকর। কোনো সবজি ৫০ টাকার নিচে নেই।’
পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ী কামাল মিয়া বলেন, ‘সবজির আমদানি কম থাকলে দাম একটু বেশি থাকে। আর গত কয়েক মাস ধরে তো বৃষ্টির কারণে সবজি নেই বললেই চলে বাজারে। শীতকালে একটু বাজারের পরিবেশ ঠাণ্ডা হতে পারে। তবে আমাদের সবজির দাম বেশি রাখার কোনো সুযোগ নেই।’
বাংলার গ্রামীণ কৃষিজীবনে একসময় ছিল দোন আর সেঁউতির রাজত্ব। বাঁশ, কাঠ, দড়ি ও মাটির কলস বা টিনের পাত্র দিয়ে তৈরি এই সেচযন্ত্রগুলো ছিল কৃষকের অমূল্য সম্পদ। খাল, পুকুর কিংবা নদী থেকে পানি তুলে উঁচু জমিতে ফসল ফলাতে দোন ও সেঁউতির বিকল্প ছিল না। কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় এখন সেই ঐতিহ্যবাহী সেচব্যবস্থা হারিয়ে গেছে সময়ের স্রোতে।
মাগুরার শালিখা উপজেলার আড়পাড়া, বুনাগাতী, গঙ্গারামপুরসহ মাগুরার বিভিন্ন অঞ্চলে একসময় দোন-সেঁউতি ছাড়া সেচ দেওয়ার কথা ভাবাই যেত না। ভোর কিংবা বিকেলে দল বেঁধে কৃষকরা যেতেন খাল বা নদীর ধারে। কেউ টানতেন সেঁউতি, কেউ চালাতেন দোন। দোলনার মতো দোন নড়াচড়া করত একদিক থেকে অন্যদিকে, আর তার সঙ্গে উঠত স্বচ্ছ পানি- যা ঢালা হতো ফসলি জমিতে।
দোনকল সাধারণত একটি লম্বা বাঁশ বা কাঠের সঙ্গে তৈরি হতো। এক প্রান্তে থাকত মাটির পাত্র বা টিনের কলস, অন্য প্রান্তে ভারসাম্য রাখার জন্য ভারী বস্তু। একজন মানুষ সহজেই এটি চালাতে পারতেন। অন্যদিকে সেঁউতি ছিল কিছুটা বড়, দোলনার মতো কাঠামো, যা দুই বা ততোধিক ব্যক্তি পা দিয়ে চালাতেন।
এখন আর গ্রামের মাঠে এই দৃশ্য দেখা যায় না। বিদ্যুৎচালিত পাম্প আর ডিজেল ইঞ্জিনের আগমনে দোন-সেঁউতি হারিয়েছে জীবনের বাস্তবতা, টিকে আছে শুধু স্মৃতিতে।
শালিখার আড়পাড়া ইউনিয়নের পুকুরিয়া গ্রামের প্রবীণ কৃষক শুকুর বিশ্বাস সেই দিনের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘আগেকার দিনে মেশিন তো ছিল না। আমরা দোনে পানি তুলে জমি ভরতাম। সেই সময়ের পরিশ্রম, মিলেমিশে কাজ করার আনন্দ- সব হারিয়ে গেছে। এখন মেশিনে সব হয়, কিন্তু মানুষের মধ্যে সেই একতা নেই।’
বুনাগাতীর দেশমুখপাড়া গ্রামের কৃষক লুৎফর বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের সময়ে খাল থেকে দোনে পানি তুলে পাতোর ভুঁইতে দিতাম। একজনের কাজ শেষ হলে অন্যজনের জমিতে যেতাম। কাজটা কঠিন ছিল, কিন্তু সবাই মিলেমিশে করতাম বলে ক্লান্তি লাগত না। এখন এসব দেখে না নতুন প্রজন্ম।’
শ্রীপুর উপজেলার প্রবীণ কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আগে যখন মোটর বা ডিজেল পাম্প ছিল না, তখন দোন আর সেঁউতি দিয়েই আমরা জমিতে পানি দিতাম। দুজন মিলে দিনভর সেঁউতি টানলে জমি ভিজে যেত, ক্লান্তি থাকত কিন্তু তৃপ্তিও ছিল।
দোন ও সেঁউতি কেবল সেচযন্ত্র নয়- এগুলো ছিল গ্রামীণ জীবনের এক অনন্য ঐতিহ্য, যা মানুষের পরিশ্রম, সহযোগিতা আর আনন্দের প্রতীক হয়ে বেঁচে ছিল প্রজন্মের পর প্রজন্ম। আজকের তরুণ কৃষকরা হয়তো জানেনই না। তাদের পূর্বপুরুষরা কীভাবে নিখুঁত দক্ষতায় জমিতে পানি দিতেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, মাগুরা খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ আলমগীর হোসেন বলেন, কৃষি যান্ত্রিকীকরণের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে প্রাচীন কৃষিযন্ত্র দোন-সেঁউতি। একসময় এগুলোর ব্যাপক ব্যবহার ছিল; কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তির কারণে তা এখন বিলুপ্তপ্রায়। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এই ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি।
এখন দোন-সেঁউতির শব্দ আর শোনা যায় না, দেখা যায় না খালের পাড়ে দোলায় দুলতে থাকা বাঁশের দণ্ড। তবু মাটির গন্ধে, পুরোনো কৃষকের কপালের ঘামে, আর তাদের স্মৃতিচারণে এখনো বেঁচে আছে সেই সোনালি দিনের কৃষি ঐতিহ্য।
মাগুরার মাটিতে তাই এখনো লুকিয়ে আছে এক চিরচেনা গল্প- যেখানে প্রযুক্তি জয় করেছে সময়কে; কিন্তু হারিয়ে গেছে গ্রামীণ জীবনের সোনালি এক অধ্যায়।
দোন-সেঁউতির ইতিহাস: দোন-সেঁউতির ইতিহাস মূলত বাংলার একটি ঐতিহ্যবাহী কৃষি সেচ পদ্ধতির ইতিহাস। অতীতে, যখন আধুনিক যন্ত্র ছিল না, তখন কৃষক এই হাতে তৈরি পদ্ধতি ব্যবহার করে নদী, খাল বা জলাশয় থেকে জমিতে জলসেচ দিত। এটি একটি সরল; কিন্তু কার্যকর পদ্ধতি ছিল যেখানে ‘দোন’ নামক বড় আকারের পাত্র ও ‘সেঁউতি’ নামক বিশেষ ধরনের নলের মাধ্যমে জল উত্তোলন করা হতো। প্রযুক্তিগত উন্নতির কারণে এখন এটি প্রায় বিলুপ্ত; কিন্তু গ্রামীণ ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে এটি এখনো কিছু স্মৃতিতে বেঁচে আছে।
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার ইসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
তিনি বলেন, ‘আইনগতভাবে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। স্থগিত দল হওয়া মানে তাদের যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত। তাই আগামী নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করতে পারবে না।’
তিনি আজ রোববার সকালে সিলেটে সাংবাদিকদের এই কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার জেলা পুলিশ লাইনে নির্বাচনী দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আয়োজিত প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র প্রতীক সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রতীক নির্ধারণ সংবিধান ও নির্বাচনী বিধিমালার আওতায় করা হয়। শাপলা প্রতীক সেই তালিকায় নেই।
তাই তা বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগও নেই।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে না হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
নির্বাচনকে সামনে রেখে সব বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোনো চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ইসি আনোয়ারুল বলেন, ‘অতীতের মতো বিতর্কিত নির্বাচন আর হবে না। সবার সহযোগিতায় একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিতর্কিত বা প্রশ্নবিদ্ধ কোনো কর্মকর্তা যাতে নির্বাচনী দায়িত্বে না থাকেন, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’ সূত্র: বাসস
মন্তব্য