কে আছে মজেনি এখনও, হৃদয়কাড়া সেই সুর আর সহজ কথার যাদুতে!
এখন তো সবার মুখে-মুখে, আর মোবাইল ফোনে ঘুরে বেড়াচ্ছে গানটি- ‘আইলারে নয়া দামান আসমানেরও তেরা/ বিছানা বিছাইয়া দেও শাইল ধানের নেড়া/ দামান বও দামান…’।
সিলেট অঞ্চলের এই গান একদল চিকিৎসকের মাধ্যমে ঝড় তুলছে সারা দেশে। ভাইরাল হয়েছে ফেসবুকে। দেশের ভেতরে তো বটেই, দেশের বাইরে থাকা বাঙালিদের হৃদয়ও কেড়েছে গানটি। আর ফেসবুক-ইউটিউব-টিকটকে তরুণদের মধ্যে এই গান গাওয়ার রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। রিমিক্স-ফিউশনের মাধ্যমে নেচে গেয়ে তারা পরিবেশন করেছেন- নতুন বরকে বরণের এই গান।
হালের ট্রেন্ড হয়ে ওঠা এই গানটি কবেকার? গানটি কে লিখেছিলেন? সুরই বা কার? কে গেয়েছিলেন প্রথম? একেবারেই মানুষের মুখে মুখে, বিশেষত গ্রামীণ নারীদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই গানের বিষয়ে এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া সহজ নয়। তবুও নিউজবাংলা খোঁজার চেষ্টা করেছে গানটির উৎস।
গানের কথাই বলে দিচ্ছে, এটি মূলত সিলেট অঞ্চলের বিয়ের গান। আঞ্চলিক ভাষায় রচিত গানটি অর্ধশতাধিক বছর ধরে গীত হয়ে আসছে সিলেটের বিভিন্ন বিয়ের আসরে। হাস্যকৌতুক মিশ্রিত সহজ কথা আর বাংলার লোকসুরের এই গানের মাধ্যমে নতুন বরকে বরণ করা হয়।
এ গানে বরকে আকাশের তারার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। আর তাকে বসার জন্য ধানের খড় বিছিয়ে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। পরের অন্তরাতেই নতুন বরকে পান খাওয়ার অনুরোধ করে কৌতুকচ্ছলে বলা হচ্ছে, যাওয়ার কথা বললে কান কেটে রাখা হবে।
সিলেটের ছেলে একুশ তাপাদার ঢাকার একটি পত্রিকার রিপোর্টার। তিনি বলেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকেই মায়ের মুখে এই গীত শুনে আসছি। বিয়ের আসরে কয়েকজন নারী মিলে এটি গাইতেন। হিন্দু-মুসলমান সবাই মিলেই গাইতেন।’
সিলেটের নানা বয়সের আরও অন্তত ১০ জনের সঙ্গে কথা হয় এই গান নিয়ে। সবাই জানালেন, বিয়ের আসরেই শুনেছেন এই গান। তবে এর গীতিকার বা সুরকার কে, তা কেউই বলতে পারেননি।
সিলেট অঞ্চলের বিয়ের অনুষ্ঠানে নৃত্য-গীত একটি আবশ্যিক অনুষঙ্গ। হিন্দু, মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের বিয়েতেই স্বজন ও প্রতিবেশী নারীরা সম্মিলিতভাবে গান গেয়ে পরিবেশ আরও উৎসবমুখর করে তোলেন।
হালের কমিউনিটি সেন্টারনির্ভর বিয়ের আধিক্য আর বিদেশি সংস্কৃতির প্রভাবে কিছুটা কমেছে যদিও, তবু গ্রামাঞ্চলে মুসলিম বিয়েতে নারীদের গানের আসর বসানোর দৃশ্য এখনও দুর্লভ নয়। আর বছর বিশেক আগে তো এটি প্রায় আবশ্যিকই ছিল।
এখন অবশ্য ভিন্ন ফর্মে আবার ফিরেছে তা। গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে, বিয়ের ভিডিওচিত্র নির্মাণে ফিরে এসেছে নৃত্য-গীতের আয়োজন।
সাম্প্রতিক সময়ে ‘নয়া দামান’ গানের এমন ভাইরাল হওয়ার পেছনেও ভূমিকা রেখেছে এরকম একটি ভিডিওচিত্র। ছায়াছবি নামের একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানের ইউটিউব পেজে দেয়া এই ভিডিওচিত্রে খুলনার এক কনের বন্ধু-স্বজন নারীদের এই গানে নাচতে-গাইতে দেখা যায়। এটা এরইমধ্যে কোটি দর্শক দেখে ফেলেছেন।
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. জফির সেতু সিলেট অঞ্চলের বিয়ের গান সংগ্রহ করে নিজ সম্পাদনায় বছর তিনেক আগে বের করেছিলেন ‘সিলেটের বিয়ের গীত’ নামে একটি বই।
বইটির ১৪৯তম পৃষ্ঠায় ‘বর-বরণ’ শিরোনামে ১৫ লাইনের পুরো ‘নয়া দামান’ গানটি তুলে ধরা হয়েছে। তবে এখানেও গানের গীতিকার-সুরকারের নাম নেই।
অধ্যাপক সেতু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই গানটি সিলেট অঞ্চলের মুসলিম সম্প্রদায়ের বিয়ের গান। অনেক তথ্য তালাশ করেও এই গানের গীতিকার কে তা জানতে পারিনি। তবে সময়ের পরিক্রমায় গানের কথায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। আবার সিলেটেরই বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে গানের কথা কিছু বদলে গেছে।’
তবে শুক্রবার সকালে সুষমা দাশ নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, এই গানটি কার লেখা তা তিনি জানেন না। মায়ের লেখা বলে তিনি কখনও শোনেননি।
নয়া দামানের গীতিকার হিসেবে অনেক জায়গায় হাছন রাজার নামও ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে লোকসংস্কৃতি গবেষক সুমনকুমার দাশ নিশ্চিত করেছেন, এটি হাছন রাজার নয়, এতটা পুরোনোও নয়।
তিনি বলেন, ‘গানের স্থায়ীটা (উৎসমুখ) একই রকম রেখে বাকি অন্তরাগুলোর বিভিন্ন সময় পরিবর্তন, পরিমার্জন ও পরিবর্ধন হয়েছে। একেকজন একেকভাবে গেয়েছেন।
‘এই গানটি খুব বেশি পুরানো নয়। ৫০-৬০ বছর আগের হবে। গানের ভণিতায় গীতিকারের নাম না থাকায় বিভ্রান্তি বেড়েছে। ফলে এটি এতকাল ধরে লোকগান হিসেবেই বিবেচিত হয়ে আসছে। লোকের মুখে মুখেই যা ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও ২০১৩ সালে আমাকে প্রদত্ত এক সাক্ষাৎকারে সংগীতজ্ঞ রামকানাই দাশ গানটি তার মায়ের রচনা বলে জানিয়েছিলেন। অবশ্য সে গানের পঙক্তিতে “দামান” শব্দের বদলে “জামাই” শব্দ রয়েছে।’
সিলেট বেতারের জন্য ১৯৭৩ সালের দিকে এয়ারুন্নেছা খানম নামের এক শিল্পীর কণ্ঠে গানটি প্রথম রেকর্ড হয় বলে জানান সুমন।
১৯৭৩-৭৪ সালের দিকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রথম এই গানটি সমবেত কণ্ঠে পরিবেশন করেন সিলেটের কয়েকজন শিল্পী। সেই দলে ছিলেন সিলেটের প্রবীণ সঙ্গীত শিল্পী হিমাংশু বিশ্বাস।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘১৯৭৩ কি ৭৪ সালে নওয়াজেশ আলী খানের পরিচালনায় ‘বর্ণালী’ অনুষ্ঠানে আমরা বিটিভিতে এই গানটি পরিবেশন করি। এর আগে সিলেট অঞ্চলের বাইরে এই গানটি পরিবেশন করা হয়েছে কি না তা আমার জানা নেই।’
গানের রচনাকাল সম্পর্কে হিমাংশু বলেন, ‘স্বাধীনতার পরে সিলেট নগরের মিরের ময়দানে বাংলাদেশ বেতারের সিলেট কেন্দ্র স্থাপন হয়। এর পরই বেতারে গানটি প্রথমবারের মতো রেকর্ড করা হয়। এর আগে এর কোনো রেকর্ড ছিল না। তখন সিলেট বেতার কেন্দ্রে এই অঞ্চলের অনেক বিয়ের গান প্রচারিত হতো।
‘বেতারের জন্য এই গানটির সুর করেছিলেন সিলেট বেতারের সঙ্গীত প্রযোজক আলী আকবর খান। এখন তার সুরেই গানটি গাওয়া হয়।’
তবে গানটির গীতিকারের নাম জানা যায়নি বলে জানান তিনিও।
হিমাংশুর কথার সত্যতা মিলল বাংলাদেশ বেতারের সিলেট কেন্দ্রে খোঁজ নিয়েও। বেতারে ৩৫ বছর আগে কয়েকজন নারী শিল্পীর সমবেত কণ্ঠে গাওয়া এই গানের একটি রেকর্ড রয়েছে।
বাংলাদেশ বেতারের সিলেট কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক প্রদীপ চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমাদের আর্কাইভে থাকা সবচেয়ে পুরোনো রেকর্ডে এই গানের সুরকার হিসেবে আলী আকবর খানের নাম রয়েছে। আর গীতিকারের জায়গায় লেখা রয়েছে অজ্ঞাত।’
আলী আকবর খান প্রয়াত হয়েছেন। তার ছেলে মতি খান বর্তমানে বাংলাদেশ বেতারে কর্মরত। তিনিও এই গানের গীতিকার কে তা জানাতে পারেননি।
আমেরিকা প্রবাসী মিউজিশিয়ান মুজার উদ্যোগে সিলেটের সংগীত শিল্পী তোশিবা বেগমের গাওয়া ‘নয়া দামান’-এর নতুন ভার্সনটি সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাতে বাঁশি বাজিয়েছেন মিম হক। অনেকেই তাদের গানের সঙ্গে নেচে ভিডিওচিত্র ধারণ করে ইউটিউবে ছাড়ছেন। সেগুলোও দর্শকদের আকৃষ্ট করছে। এই ভার্সনটিই গায়ে হলুদের ভিডিওতে ব্যবহার করেছে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান ‘ছায়াছবি’।
সম্প্রতি গানটির সবশেষ ভার্সনের সংগীত শিল্পী তোশিবা তার পোস্ট করা এক টিকটক ভিডিওতে অনুযোগ করে বলেন, গানটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার নাম সামনে আসলেও তার নাম রয়ে যায় আড়ালে। আবেগাপ্লুত কণ্ঠে তিনি বলেন, এই গান সিলেট থেকে ভাইরাল হয়েছে, তার গায়কীতে গানটি এখন নতুন করে জনপ্রিয় হয়েছে। কিন্তু আলোচনায় তার নাম কোথাও নেই। বরং আলোচিত হচ্ছে ছায়াছবির ভিডিও ও মুজা।
তবে এই গানটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি হইচই ফেলেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের তিন চিকিৎসক। করোনা রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীদের উৎসাহ দিতে ঢাকা মেডিক্যালের করিডোরে এই গানের সঙ্গে তারা নেচেছেন। সেই ভিডিওচিত্র ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে, ব্যাপক প্রশংসিতও হয়েছে।
এ নিয়ে কথাসাহিত্যিক স্বকৃত নোমান বৃহস্পতিবার ফেসবুকে লেখেন, ‘নয়া দামান। একটি লোকগান কী পরিমাণ নাড়া দিল মানুষকে! হাসপাতালের ডাক্তারদের নৃত্যসহযোগে গাওয়া গানটা যতবার দেখি মুগ্ধ হই। এটাই ফোকলোরের শক্তি। গ্রামগঞ্জের ওই হেঁদিপেদি জনগণের সংস্কৃতিই বাঙালির মূল সংস্কৃতি। গ্রামের আউল-বাউল-বয়াতি গায়েন-ফকিররাই শেষ পর্যন্ত বাঙাল মানুষের চিত্ত দখল করে নেয়।’
পুরো গানটির কথা
আইলারে নয়া দামান আসমানের তেরা
বিছানা বিছাইয়া দেও শাইল ধানের নেরা।।
দামান বও, দামান বও।
বও দামান কওরে কথা খাওরে বাটার পান।
যাইবার লাগি চাওরে যদি কাটিয়া রাখমু কান।।
দামান বও, দামান বও।
আইলারে দামান্দের ভাই হিজলের মোরা।
ঠুনকি দিলে মাটি পড়ে ষাইট-সত্তইর উড়া।।
দামান বও, দামান বও।
আইলারে দামান্দের বইন কইবা একখান কথা।
কইন্যার ভাইর চেরা দেইখ্যা অইগেলা বোবা।।
দামান বও, দামান বও।
আইলারে দামান্দের বইন মোটা ভাইবৌ মোটা বটর গাইল।
উঠতে বইতে সময় লাগে করইন আইল তাইল।।
দামান বও দামান বও।
(এই গানের নানা ভার্সন রয়েছে। বিভিন্ন সময় কথার পরিবর্তন-পরিবর্ধন হয়েছে। এই কথাগুলো জফির সেতু সম্পাদিত ‘সিলেটের বিয়ের গীত’বই থেকে সংগৃহিত।)
আরও পড়ুন:নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শপথ গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী আয়োজিত ‘লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই মাসে নিহত শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হয়।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ। তিনি উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, দুর্নীতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন অংশগ্রহণকারীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, "জুলাই পুনর্জাগরণ কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের চেতনার বাতিঘর। সেই শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। আজকের এই সম্মিলিত শপথ হোক দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার একটি নতুন অঙ্গীকার। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারে।"
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম উর্মি, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেতৃবৃন্দ সহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।
বক্তারা জুলাইয়ের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করে দেশের উন্নয়নে একযোগে কাজ করতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের এই সফল আয়োজনে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে এক নতুন মাত্রা দেয়। এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি কালীগঞ্জের মানুষের মধ্যে দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।
ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
মন্তব্য