যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির নির্বাচনি পরীক্ষার একটি প্রশ্নপত্র ছড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
সৃজনশীল এই প্রশ্নপত্রের প্রথম উদ্দীপকে বলা হয়েছে, ‘রহমান সাহেবের বয়স ৫০ বছর। তিনি সবসময়ই তার ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড নিয়ে টেনশনে থাকেন। একদিন হঠাৎ তার বুকের মাঝখানে কিছুটা বামদিকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন এবং প্রচুর ঘামতে থাকেন। দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিলে ডাক্তার তাকে ইসিজি করাতে বলেন এবং আপাতত বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলা দেখা থেকে বিরত থাকতে বলেন।‘
এই উদ্দীপকের আলোকে করা প্রশ্নগুলো হচ্ছে-
ক) স্ট্রোক কী?
খ) ধমনী ও শিরার মধ্যে ৪টি পার্থক্য লিখ।
গ) রহমান সাহেবের বুকে এমন ব্যথা হওয়ার সম্ভাব্য কারণ ব্যাখ্যা করো।
ঘ) “প্রতিকার অপেক্ষা প্রতিরোধ উত্তম।"- রহমান সাহেবের সমস্যার আলোকে বিশ্লেষণ করো।
এই উদ্দীপকে বুকে ব্যথার সম্ভাব্য কারণ হিসেবে স্ট্রোককে ইঙ্গিত ও এটি পরীক্ষায় চিকিৎসকের ইসিজি করানোর কথা বলা হয়েছে। তবে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলছেন স্ট্রোকের সঙ্গে হৃদরোগের সম্পর্ক নেই এবং কেউ স্ট্রোকে আক্রান্ত বলে সন্দেহ করা হলে সেটি ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম বা ইসিজির মাধ্যমে নির্ণয় করা হয় না।
তারা বলছেন হৃদযন্ত্র বিকল বা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট এবং হার্ট অ্যাটাকের বিষয়টি নিশ্চিত হতে ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম (ইসিজি), ইকোকার্ডিওগ্রাম বা ইকোর মতো পরীক্ষা করা হয়। হার্ট অ্যাটাকসহ হৃদযন্ত্রের আরও কিছু জটিলতায় রোগী বুকে ব্যথা অনুভব করতে পারেন। এ ছাড়া গ্যাস্ট্রিকসহ বিভিন্ন কারণেও বুকে ব্যথা হতে পারে, তবে স্ট্রোকের কারণে বুকে ব্যথা অনুভবের সুযোগ নেই।
আমেরিকার অলাভজনক অ্যাকাডেমিক মেডিক্যাল সেন্টার মায়ো ক্লিনিকের তথ্য অনুযায়ী, হৃৎপিণ্ডে রক্তের প্রবাহ মারাত্মকভাবে কমে গেলে বা বন্ধ হয়ে গেলে হার্ট অ্যাটাক হয়। সাধারণত হৃৎপিণ্ডের (করোনারি) ধমনিতে চর্বি, কোলেস্টেরল এবং অন্যান্য পদার্থ জমা হওয়ার কারণে হয় রক্তপ্রবাহে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়।
হার্ট অ্যাটাকের সাধারণ লক্ষণের মধ্যে রয়েছে, বুকে চাপ দিয়ে বসা ব্যথা; ব্যথার পাশাপাশি অস্বস্তি যা কাঁধ, বাহু, পিঠ, ঘাড়, চোয়াল, দাঁত বা কখনও কখনও পেটে ওপরের দিকে ছড়িয়ে পড়ে; ঠান্ডা ঘাম; ক্লান্তি অথবা বদহজম। হার্ট অ্যাটাক হলে হালকা মাথাব্যথা বা হঠাৎ মাথা ঘোরার অনুভূতিও তৈরি হতে পারে। এ ছাড়া, বমি বমি ভাব ও নিশ্বাসের দুর্বলতা দেখা যেতে পারে বলেও জানাচ্ছে মায়ো ক্লিনিক।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হার্ট, লাংস অ্যান্ড ব্লাড ইনস্টিটিউটের (এনআইএইচ) তথ্য অনুযায়ী, হৃৎপিণ্ড আকস্মিকভাবে রক্ত পাম্প করা বন্ধ করে দিলে সে অবস্থাকে বলা হয় কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট। হৃৎপিণ্ডের এই বিকল অবস্থায় মস্তিষ্ক এবং দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। হাসপাতালের বাইরে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে আক্রান্ত প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই কয়েক মিনিটের মধ্যে মারা যান।
কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে আক্রান্ত ব্যক্তির লক্ষণ হলো তিনি হঠাৎ চেতনা হারিয়ে ফেলেন, শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যাহত হতে পারে এবং বাতাসের জন্য তিনি তড়পাতে শুরু করেন; চিৎকার বা ঝাঁকুনিতে সাড়া দেন না এবং ধমনি নিশ্চল হয়ে যেতে পারে।
আর স্ট্রোক সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বলছে, স্ট্রোককে কখনও কখনও ব্রেন অ্যাটাক হিসেবেও বলা হয়। এমন অবস্থায় মস্তিষ্কের কিছু অংশে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় অথবা মস্তিষ্কের কোনো রক্তনালী ছিঁড়ে যায়। স্ট্রোকের ফলে মস্তিষ্কের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি, দীর্ঘমেয়াদি অক্ষমতা বা এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।
স্ট্রোকের লক্ষণ হিসেবে সিডিসি বলছে, মুখ, বাহু বা পা, বিশেষ করে শরীরের এক পাশ হঠাৎ অসাড় বা দুর্বল হয়ে যেতে পারে; হঠাৎ কথা বলতে সমস্যা হতে পারে; হঠাৎ এক বা দুই চোখেই দেখার সমস্যা তৈরি হতে পারে; হঠাৎ হাঁটতে সমস্যা, মাথা ঘোরা, ভারসাম্য হারানোর মতো অনুভূতি তৈরি হতে পারে বা কোনো হঠাৎ তীব্র মাথাব্যথা হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাক বা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট সম্পূর্ণ আলাদা রোগ, হৃদরোগের সঙ্গে স্ট্রোকের সম্পর্ক নেই এবং স্ট্রোকের কারণে হৃদযন্ত্রজনিত বুকে ব্যথা হওয়ারও কোনো কারণ নেই। স্ট্রোক শনাক্তের জন্য ইসিজি বা ইকোর পরামর্শও দেন না চিকিৎসকরা।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক নাজিবুর রহমান খন্দকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাক বা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট আলাদা বিষয়।’
‘স্ট্রোক হচ্ছে ব্রেনে যদি কোনো সমস্যা হয়; যেমন ধরুন ব্রেনে ব্লাড সাপ্লাই কমে গেল, ব্রেনে ব্লিডিং হলো। এতে রোগীর একদিক প্যারালাইজড হয়ে যায় বা মুখ বাঁকা হয়ে যায়। অনেকে পুরো অজ্ঞান হয়ে যাবে। এটাকে স্ট্রোক বলা হয়।’
ডা. নাজিবুর রহমান বলেন, ‘অন্যদিকে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হচ্ছে হার্ট হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাবে। ব্রেন স্ট্রোক হলে রোগী সঙ্গে সঙ্গে মারা যান না, তবে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে তার বুকে তাৎক্ষণিক ম্যাসাজ দিতে হয়। রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে মনিটর বসিয়ে কারেন্ট শক দিয়ে হার্টের ফাংশনটা নরমালে আনা গেলে তিনি বাঁচবেন। হার্ট তিন থেকে চার সেকেন্ড বন্ধ থাকলে ব্রেনে ব্লাড সাপ্লাই যাবে না, তখন রোগী সঙ্গে সঙ্গে মারা যাবে।’
কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের সঙ্গে ব্রেনের সম্পর্ক আছে, তবে স্ট্রোকের সঙ্গে হৃদযন্ত্রের কোনো সম্পর্ক নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মূলত হাইপ্রেসার, ডায়াবেটিস এসব কারণে ব্রেন স্ট্রোক হয়।’
তিনি বলেন, ‘ইজিসি, ইকো এগুলো সব হার্টের টেস্ট। এর সঙ্গে স্ট্রোকের সম্পর্ক নেই। স্ট্রোকের জন্য করতে হবে সিটিস্ক্যান বা এমআরআই।’
আলোচিত প্রশ্নটি নিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রশ্নটা সুন্দর হয়নি। রক্তনালী চিকন হয়ে গেলে অথবা ছিঁড়ে গেলে স্ট্রোক হতে পারে। ব্রেন স্ট্রোক হলে রোগী প্যারালাইজড হবে, মুখে খেতে পারবে না।’
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের হেমাটোলজিস্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হার্টের রক্তনালী বন্ধ হয়ে গেলে হার্ট অ্যাটাক হয়। হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস এবং অতিরিক্ত ধূমপানে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
‘স্ট্রোক হয় ব্রেন অর্থাৎ মস্তিষ্কে। সাধারণত দুই ধরনের স্ট্রোক রয়েছে। একটি মস্তিষ্কের রক্ত জমাটবাঁধা এবং আরেকটি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত স্ট্রোক। দুই কারণেই মস্তিষ্কের কিছু অংশ ঠিকমতো কাজ করতে পারে না।’
তবে যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ মনে করছে প্রশ্নপত্রে কোনো ভুল নেই।
প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মরিয়ম বেগম সোমবার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি প্রশ্ন দেখেছি। এটায় কোনো সমস্যা নেই। এটা বই রিলেটেড।’
স্ট্রোক হৃদযন্ত্র-সম্পর্কিত কোনো রোগ নয় জানানো হলেও তিনি বলেন, ‘বুকে ব্যথা থেকেই তো স্ট্রোক হয়। এইগুলা ফোনে আলাপের মতো বিষয় নয়। আপনি স্কুলে এসে আমার ওই বিষয়ের শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেন।’
আরও পড়ুন:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে রবিবার, যা চলবে ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
সকাল ৯টায় শুরু হয়ে মোট পাঁচ শিফটে ‘ডি’ ইউনিটের ছাত্রীদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
পরের দিন সোমবার প্রথম চার শিফটে ‘ডি’ ইউনিটের ছাত্রদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
তৃতীয় দিন মঙ্গলবার প্রথম দুই শিফটে ‘ই’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম শিফটে ছাত্রীদের এবং দ্বিতীয় শিফটে ছাত্রদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। একই দিন তৃতীয় শিফট থেকে পঞ্চম শিফট পর্যন্ত ‘এ’ ইউনিটের ছাত্রীদের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এ ছাড়াও বুধবার পাঁচ শিফটে ‘এ’ ইউনিটের ছাত্রদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তারপর বৃহস্পতিবার ছয় শিফটে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে প্রথম তিন শিফটে ছাত্রীদের এবং পরবর্তী তিন শিফটে ছাত্রদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
ভর্তি পরীক্ষার শেষ দিন সোমবার প্রথম শিফটে ‘সি১’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এবং পরের তিন শিফটে ‘বি’ ইউনিটের অন্তর্ভুক্ত সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা হবে। এর মধ্যে প্রথম দুই শিফটে ছাত্রী এবং তৃতীয় শিফটে ছাত্রদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে শনিবার বিকেল পাঁচটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে ভর্তি পরীক্ষা শৃঙ্খলা রক্ষা ও নিরাপত্তা কমিটির আহ্বায়ক ও প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম।
তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক রাখতে ভর্তি পরীক্ষা শৃঙ্খলা রক্ষা ও নিরাপত্তা কমিটি ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।’
সার্বিক নিরাপত্তা দিতে প্রক্টরিয়াল বডির সঙ্গে রোভার স্কাউট সদস্য, সার্বিক শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষায় ১৫০ জন পোশাকধারী সশস্ত্র ও সাদা পোশাকধারী পুলিশ ফোর্স এবং অতিরিক্ত ৬০ জন আনসার সদস্য ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে দায়িত্ব পালন করবেন।
ভর্তিচ্ছুদের সহায়তায় বিভিন্ন ভবনে ১২০ জন বিএনসিসি ও রোভার স্কাউট সদস্য শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক (ডেইরি গেট), জয় বাংলা ফটক (প্রান্তিক গেট) ও বিশমাইল ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ট্রাফিক পুলিশের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা (সিসিটিভি) চালু রাখা হয়েছে।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে রাতে পুলিশ টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি কমানো, পোষ্য কোটা বাতিল, চাকসু নির্বাচন ও গুপ্ত হামলার সুষ্ঠু বিচারসহ নয় দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। পরে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিতে গেলে তাদেরকে ওয়েটিং রুমে বসতে বলে বেরিয়ে যান উপাচার্য। তবে পরীক্ষার আবেদন ফি না কমিয়ে এক হাজার টাকা বহাল রাখার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
রোববার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দিতে প্রশাসনিক ভবনে যান তারা। তখন উপাচার্যের পিএস তাদেরকে ওয়েটিং রুমে বসিয়ে রেখে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহ্ইয়া আখতারকে অন্য দরজা দিয়ে বের করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
ছাত্র অধিকার পরিষদ চবি শাখার সদস্য সচিব মো. রোমান রহমান বলেন, ‘আজকে প্রশাসনিক ভবনে নয় দফা দাবিতে স্মারকলিপি দিতে গেলে ওয়েটিং রুমে আমাদের অপেক্ষা করতে বলা হয়। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা সেখানে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করি।
‘এক সময় দেখা যায় ভিসি স্যার প্রশাসনিক ভবন থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন। আমরা দ্রুত সিঁড়ি দিয়ে নেমে স্যারের গাড়ির সামনে দাঁড়াই। স্যারকে বিষয়টি অবগত করি। কিন্তু তিনি আমাদের কোনো কথাই শুনতে রাজি ছিলেন না। তার ভাষ্যমতে, তাকে এ ব্যাপারে কেউ জানায়নি।
তবে চবির ২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি কমানোর বিষয়ে উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দিন খান বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভায় ফি কমানোর বিষয়ে আলাপ হয়েছিলো। তবে আগের বছরের খরচ বিবেচনা করে এ বছর ফি কমানো সম্ভব হয়নি।’
পোষ্য কোটার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পোষ্য কোটা আমরা নির্দিষ্ট আসন থেকে দিচ্ছি না। কোনো বিভাগে ১০০ আসন থাকলে এই আসনগুলোতে পোষ্য কোটা প্রযোজ্য হবে না। বরং এর বাইরে গিয়ে অতিরিক্ত হিসেবে ওই বিভাগে দুই বা তিনটি আসন রেখে পোষ্যদের ভর্তি নেয়া হবে। সেক্ষেত্রে ওই বিভাগে ১০২ বা ১০৩ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হবেন।
শিক্ষার্থীদের নয় দফা দাবি হলো- ভর্তি আবেদন ফি ২০০ টাকা করতে হবে; মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনি কোটা, পোষ্য কোটাসহ সব ধরনের অযৌক্তিক কোটা বাতিল করতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্য বীমা চালু করতে হবে; বন্ধ হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের আর্থিক অবস্থা, বাড়ির দূরত্ব এবং মেধার ভিত্তিতে আসন বরাদ্দ ও অতিদ্রুত নতুন দুটি হল নির্মাণ করতে হবে; ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল এক্সট্রা কারিকুলার সংগঠনসমূহকে অফিস বরাদ্দ দিতে হবে; অনতিবিলম্বে টিএসসি নির্মাণ করতে হবে; অতি দ্রুত চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন দিতে হবে; প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল প্রদান ও অনলাইনে রেজাল্ট প্রকাশসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড অনলাইনভিত্তিক করতে হবে; সম্প্রতি ঘটে যাওয়া হামলার সুষ্ঠু বিচার ও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুন:গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে এসে স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষা নেবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)। ২০২৫ সালের ১৮, ২৫ ও ২৬ এপ্রিল তিনটি ইউনিটে এই ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এই সিদ্ধান্ত ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে কার্যকর করা হবে।
এর আগে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে ইউজিসির নির্দেশনা অনুযায়ী গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ায় অংশ নেয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)।
রোববার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড মো. হায়দার আলীর সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল, প্রক্টরিয়াল বডি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি অনুষদের ডিন ও ১৯টি বিভাগের বিভাগীয় প্রধানসহ অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যরা।
সভার সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন গুচ্ছ থেকে বের হয়ে আসার জন্য স্মারকলিপি দিয়েছে। অনেকে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এরপর আমরা আজ জরুরি অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভা আহ্বান করি। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, ‘গুচ্ছ থেকে বের হয়ে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, গুচ্ছ থেকে বের হয়ে এসে নিজস্ব পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়র জন্য গত ১১ ডিসেম্বর সাধারণ শিক্ষার্থীরা ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির উপাচার্যকে স্মারকলিপি দেন। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে শাখা ছাত্রদলও একই দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করে।
আরও পড়ুন:আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটি বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করেছে। সে অনুযায়ী ২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে আগামী বছরের ১০ এপ্রিল।
প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী, বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষার মাধ্যমে আগামী বছরের এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে ৮ মে। ১০ মে শুরু হবে ব্যবহারিক পরীক্ষা। ১৮ মে’র মধ্যে সবাইকে ব্যবহারিক পরীক্ষা শেষ করতে হবে।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে গত কয়েক বছর ধরে পুনর্বিন্যাস করা সিলেবাসে এসএসসি পরীক্ষা নেয়া হচ্ছিল। তবে আগামী বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা পূর্ণ সিলেবাস এবং পূর্ণমান ও পূর্ণ সময়ে অনুষ্ঠিত হবে।
৪৭তম বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষার আবেদন ফি ৭০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৩৫০ টাকা করা হয়েছে।
একই সঙ্গে মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ২০০ থেকে কমিয়ে ১০০ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)।
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিসিএস মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ২০০ থেকে কমিয়ে ১০০ করা হয়েছে। আর আবেদন ফি ৭০০ টাকার পরিবর্তে ৩৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে গত ২৮ নভেম্বর বিকেলে ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেখানে আবেদন ফি আগের মতো ৭০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীভুক্ত প্রার্থী, প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থীদের জন্য আবেদন ফি ধরা হয় ১০০ টাকা।
এর কয়েক ঘণ্টা পর আবেদন ফি কমানোর ঘোষণা দেয় পিএসসি।
৪৭তম বিসিএসের মাধ্যমে ৩ হাজার ৪৮৭টি ক্যাডার ও নন-ক্যাডারের ২০১টি পদে নিয়োগ দেয়া হবে।
আগামী ১০ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে শুরু হবে আবেদন, যা চলবে ৩১ ডিসেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত।
এবার সর্বনিম্ন ২১ বছর এবং সর্বোচ্চ ৩২ বছর বয়সীরা আবেদন করতে পারবেন।
আরও পড়ুন:২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৭ জানুয়ারি। আর ব্যাচেলর অফ ডেন্টাল সার্জারিতে (বিডিএস) ভর্তি পরীক্ষা হবে ২৮ ফেব্রুয়ারি।
সচিবালয়ে রোববার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক সভায় এমবিবিএস ও বিডিএস পরীক্ষা আয়োজনে এই তারিখ চূড়ান্ত করা হয়।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা-শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মাতুব্বর এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করেই আজকের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দেশে বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট ১১০টি মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ৩৭টি ও বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ৬৭টি।
এছাড়া একটি আর্মড ফোর্সেস মেডিক্যাল কলেজ ও পাঁচটি বেসরকারি আর্মি মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে। সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হতে হয় মেধাতালিকার ভিত্তিতে। অপরদিকে অটোমেশন পদ্ধতিতে বেসরকারি মেডিক্যালগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি নেয়া হয়।
কৃষিবিজ্ঞান বিষয়ে ডিগ্রি প্রদানকারী নয়টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে ওই ফল প্রকাশ করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তরের সিনিয়র উপ-পরিচালক খলিলুর রহমান ইউএনবিকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এবারের ভর্তি পরীক্ষায় সাধারণ মেধা তালিকায় উত্তীর্ণদের মধ্যে ১০০ নম্বরের মধ্যে সর্বোচ্চ প্রাপ্ত নম্বর ৯৬ দশমিক ৫০ এবং সর্বনিম্ন প্রাপ্ত নম্বর ৬৯ দশমিক ৫০। এবার মোট আসনসংখ্যার দ্বিগুণ শিক্ষার্থীকে অপেক্ষমাণ তালিকায় রাখা হয়েছে।
পূর্ণাঙ্গ ফলাফল ও ভর্তি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ওয়েবসাইটে (https://acas.edu.bd) পাওয়া যাবে।
ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণে আগ্রহী প্রার্থী অফেরতযোগ্য এক হাজার টাকা জমা দিয়ে ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত ওয়েবসাইটের নির্দিষ্ট পেজে ৩০ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর তারিখের মধ্যে আবেদন করতে পারবেন।
আগামী ২ নভেম্বর ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণের মাধ্যমে আবেদন নিষ্পত্তি করা হবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য