সরকারের জন্য আরেকটি সুখবর। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পর আরেক ঋণদাতা সংস্থা এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি) বাংলাদেশকে ২৫ কোটি ডলার ঋণ দিতে রাজি হয়েছে। বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে (প্রতি ডলার ১০০ টাকা) টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ আড়াই হাজার কোটি টাকা।
বুধবার এই ঋণ নিয়ে সরকারের সঙ্গে চীনের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা এআইআইবির একটি চুক্তি হয়েছে। বাজেট সহায়তা হিসেবে এই ঋণ দেবে সংস্থাটি। ভার্চুয়াল মাধ্যমে চুক্তি সইয়ের কথা জানিয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ডলার সংকটের মধ্যে আইএমএফের পর এআইআইবির এই ঋণ সরকারকে স্বস্তি দেবে বলে মনে করছেন অর্থনীতির গবেষক আহসান এইচ মনসুর।
সামাজিক উন্নয়নকে অধিক সংবেদনশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করার একটি প্রকল্প বাস্তবায়নে এই ঋণ দেবে এআইআইবি।
ইআরডি সচিব শরিফা খান এবং বেইজিংভিত্তিক এআইআইবির ভাইস প্রেসিডেন্ট (বিনিয়োগ কার্যক্রম অঞ্চল-১) উরিজিৎ আর প্যাটেল চুক্তিতে সই করেন।
তিন বছরের রেয়াতকালসহ ২৬ বছর ৬ মাসে ৩ শতাংশ সুদে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে বলে জানায় ইআরডি।
এই বাজেট সহায়তা দিয়ে সরকার করোনা মহামারি থেকে নিম্ন আয়ের মানুষকে রক্ষা ও দক্ষতা বাড়িয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ‘সামাজিক স্থিতিশীলতা কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ’ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে বলে জানিয়েছে ইআরডি।
এই কর্মসূচি দেশের সামাজিক উন্নয়নকে অধিক সংবেদনশীল করা, সুবিধা বঞ্চিতদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির উন্নয়ন ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো এবং চাহিদা অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়াতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছে সরকার।
এই ২৫ কোটি ডলার পাওয়া গেলে প্রথমবারের মতো এআইআইবির কাছ থেকে বাংলাদেশের ঋণের পরিমাণ ১০০ কোটি (১ বিলিয়ন) ডলার ছাড়িয়ে যাবে। ২০১৬ সালে এআইআইবির সদস্য হওয়ার পর এ পর্যন্ত বাংলাদেশ ৮০ কোটি ডলার পেয়েছে।
২০১৬ সালে কার্যক্রম শুরু করা এআইআইবি এ পর্যন্ত বাংলাদেশের সঙ্গে ২৭৯ কোটি ডলারের চুক্তি করেছে বলে জানায় ইআরডি।
এর মধ্যে গত তিন বছরে ১০৫ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা রয়েছে, যা দিয়ে করোনা মহামারি মোকাবিলা ও কোভিড-পরবর্তী অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার এবং টেকসই প্রবৃদ্ধির ধারা ধরে রাখতে ব্যয় করা হয়।
আড়াই বছরের করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিও বেশ চাপের মধ্যে পড়েছে। বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ ৩৪ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। এই চাপ সামাল দিতে সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে ৪৫০ কোটি (৪.৫ বিলিয়ন) ডলার, বিশ্বব্যাংকের কাছে ১০০ কোটি (১ বিলিয়ন) ডলার এবং এডিবির কাছে ১ বিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা চেয়েছিল। এ ছাড়া জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা-জাইকা এবং এআইআইবির কাছে ঋণ সহায়তা চেয়েছিল বাংলাদেশ।
এর মধ্যে আইএমএফের বহুল প্রতীক্ষিত সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণের বিষয়ে সুসংবাদ পাওয়া গেছে। ফেব্রুয়ারির মধ্যেই এই ঋণের প্রথম কিস্তির অর্থ পাবে সরকার। বিশ্ব আর্থিক খাতের আরেক মোড়ল সংস্থা বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ১ বিলিয়ন ডলার ঋণের ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। ম্যানিলাভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থা এডিবির ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়ে আলোচনার জন্য সংস্থটির ভাইস প্রেসিডেন্ট অশোক লাভাসা এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন।
এডিবি ঢাকা অফিসের বহিঃসম্পর্ক বিভাগের প্রধান গোবিন্দ বর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভাইস প্রেসিডেন্ট ঢাকায় অবস্থানকালে সরকারের কয়েকজন মন্ত্রীসহ নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকে বাংলাদেশ সরকার এডিবির কাছে বাজেট সহায়তা হিসেবে যে ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ চেয়েছিল, সে বিষয়ে আলোচনা হবে। সফর শেষে ম্যানিলায় ফিরে গিয়ে এডিবি সদর দপ্তরে রিপোর্ট করবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। তারপর সংস্থার বোর্ডসভায় এই ঋণের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’
আড়াই বছরের করোনাভাইরাস মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় তছনছ হয়ে গেছে বিশ্ব অর্থনীতি। ওলটপালট হয়ে গেছে সব হিসাব-নিকাশ, যার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। আমদানি বাড়ায় এবং রপ্তানি আয় ও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স কমায় রিজার্ভ কমছেই; বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (ব্যালান্স অফ পেমেন্ট) ঘাটতি বাড়ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে আমদানি বেশ কমেছে। রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্সও ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। কিন্তু এর পরও ব্যালান্স অফ পেমেন্টে বড় ঘাটতির মুখে পড়েছে বাংলাদেশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্যে দেখা যায়, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৫০ কোটি (৪.৫ বিলিয়ন) ডলার।
এই কঠিন পরিস্থিতি সামাল দিতেই সরকার দাতা সংস্থাগুলোর কাছে ঋণ চেয়েছিল।
সরকারের নীতিনির্ধারকদের একজন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আইএমএফ ঋণ দেয়ার ঘোষণা দেয়ার পর এখন অন্য সব দাতা সংস্থাও বাংলাদেশকে ঋণ দিতে চাইবে- এটিই স্বাভাবিক। কেননা ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে যেকোনো উন্নয়ন সংস্থা বা দাতা দেশ আইএমএফের মূল্যায়নকে একটি মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করে। আইএমএফ যেহেতু আমাদের ঋণ দিচ্ছে, এখন বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকাসহ অন্য সব দাতা সংস্থা ও দেশ বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়াবে। আমরা এখন করোনার মতো যুদ্ধের ধাক্কাও দ্রুত সামলে উঠতে পারব।’
অর্থনীতির গবেষক পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আইএমএফ ঋণ দেয়ার ঘোষণার পর থেকেই সরকার স্বস্তির মধ্যে রয়েছে। সংকট মোকাবিলা করার সাহসও পাচ্ছে। এরই মধ্যে সবচেয়ে উদ্বেগজনক সূচক আমদানি ব্যয় অর্ধেকে নেমে এসেছে। নভেম্বরে রপ্তানি আয়ে রেকর্ড হয়েছে; ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি এসেছে। রেমিট্যান্সও কিছুটা বেড়েছে। এ অবস্থায় আইএমএফের ঋণের প্রথম কিস্তি ফেব্রুয়ারিতে চলে এলে, এর মধ্যে এআইআইবি বিশ্বব্যাংক ও এডিবির ঋণও যদি পাওয়া যায়, সরকারের সংকট মোকাবিলা করা সহজ হবে। ২০২৩ সালকে নিয়ে যতটা ভয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছিল, তা আর মনে হয় থাকবে না।’
আরও পড়ুন:পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুরে অগ্রণী ব্যাংকের শাখা থেকে ১০ কোটি ১৩ লাখ টাকা লোপাটের অভিযোগে শাখা ম্যানেজারসহ তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
শুক্রবার তাদের বরখাস্ত করা হয় বলে শনিবার দুপুরে জানান অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী সার্কেলের জেনারেল ম্যানেজার আফজাল হোসেন।
বরখাস্ত হওয়া ব্যাংক কর্মকর্তারা হলেন- কাশিনাথপুর শাখার ব্যবস্থাপক (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) হারুন বিন সালাম, সিনিয়র অফিসার আবু জাফর ও ক্যাশ অফিসার সুব্রত চক্রবর্তী।
আফজাল হোসেন বলেন, ‘ব্যাংক পরিদর্শনে গিয়ে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা খোয়া যাওয়ার সত্যতা পাওয়া যায়। পরে পুলিশে অভিযোগ দিলে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে একটি তদন্ত দল পুরো বিষয়টির তদন্ত করছে। দলটির প্রধান হলেন সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার আনোয়ার হোসেন। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর অভিযুক্ত ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের শুক্রবার বিকেলে পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়। বিচারক আনোয়ার হোসেন সাগর গ্রেপ্তারকৃতদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশসহ ছয়টি দেশে ৯৯ হাজার ১৫০ টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। অন্য দেশগুলো হলো সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভুটান, বাহরাইন, মরিশাস ও শ্রীলঙ্কা। এ ছাড়া দুই হাজার টন সাদা পেঁয়াজ রপ্তানিরও অনুমোদন দিয়েছে ভারত সরকার।
দেশটির ভোক্তা বিষয়ক, খাদ্য ও জন বিতরণ মন্ত্রণালয় শনিবার এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি ও আগের বছরের তুলনায় ২০২৩-২৪ মৌসুমে নিম্ন খরিপ ও রবি ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার পেঁয়াজ রপ্তানির এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রপ্তানির জন্য দেশীয় উৎপাদনকারীরাই পেঁয়াজ সরবরাহ করবেন এবং এর উল্লেখযোগ্য একটি অংশ আসবে বৃহৎ পেঁয়াজ উৎপাদনকারী রাজ্য মহারাষ্ট্র থেকে।
ভারত সরকারের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্যে বলা হয়েছে, আগের বছরের তুলনায় ২০২৩-২৪ সালে নিম্ন খরিপ ও রবি মৌসুমে দেশের ভেতরে চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে অভ্যন্তরীণ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এতে আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এসব দেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করে ভারতীয় এজেন্সি ন্যাশনাল কো-অপারেশন এক্সপোর্টস লিমিটেড (এনসিইএল)।
সর্বনিম্ন দর (এল১) মূল্যে ই-প্লাটফর্মের মাধ্যমে তারা অভ্যন্তরীণ সূত্র থেকে পেঁয়াজ সংগ্রহ করে। তারপর শতভাগ আগাম মূল্য পরিশোধ ভিত্তিতে আলোচনার মাধ্যমে রেট নির্ধারণ করে গন্তব্য দেশগুলোতে এজেন্সি বা সরকার মনোনীত এজেন্সিকে সরবরাহ দিয়ে থাকে।
যেসব দেশ পেঁয়াজ কিনছে সেখানকার দাম, আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ দাম বিবেচনায় নিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে দর নির্ধারণ করে এনসিইএল।
বর্তমানে যে দেশগুলোতে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেয়া হয়েছে সেখানকার চাহিদা অনুযায়ী কোটা বরাদ্দ করা হয়েছে। ভারতে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদনকারী রাজ্য মহারাষ্ট্র। তারাই এনসিইএল-কে রপ্তানির জন্য সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ সরবরাহ দিয়ে থাকে।
এ ছাড়া দুই হাজার টন সাদা পেঁয়াজ রপ্তানিরও অনুমোদন দিয়েছে ভারত সরকার। এসব পেঁয়াজ বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের কিছু দেশে রপ্তানি করা হয়। সাধারণ পেঁয়াজের চেয়ে এই পেঁয়াজের উৎপাদন খরচ বেশি। কারণ এর বীজের দাম অনেক বেশি হয়। প্রয়োজন হয় উন্নত কৃষি রক্ষণাবেক্ষণের। দামেও এর প্রভাব থাকে।
ট্রেডিং করপোরেশন অফ বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, গত ১ মার্চ ভোক্তা পর্যায়ে দেশে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম উঠেছিল ১২০ টাকা। গত বছর একই সময়ে তা ছিল ৩৫ টাকা।
অভ্যন্তরীণ সরবরাহ বাড়াতে এবং মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে গত বছরের ডিসেম্বরে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত। এতে বাংলাদেশের পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। পরে ৮ ডিসেম্বর নিষেধাজ্ঞার সময়কাল ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়।এর মধ্যে ১ মার্চ বাংলাদেশে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছিল প্রতিবেশী দেশটি।
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে পাঁচ দিনে চতুর্থবারের মতো কমল স্বর্ণের দাম। শনিবার ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে ৬৩০ টাকা কমানো হয়েছে। সে হিসাবে ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের ভরি দাঁড়াচ্ছে এক লাখ ১২ হাজার ৯৩১ টাকা।
জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বাজুস এর আগে ২৩, ২৪ ও ২৫ এপ্রিল স্বর্ণের দাম কমানোর ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে ২৩ এপ্রিল তিন হাজার ১৩৮ টাকা, ২৪ এপ্রিল দুই হাজার ৯৯ টাকা এবং ২৫ এপ্রিল ৬৩০ টাকা কমানো হয় প্রতি ভরিতে।
এর আগে টানা তিন দফা স্বর্ণের দাম বাড়ায় বাজুস। এর মধ্যে ৬ এপ্রিল এক হাজার ৭৫০ টাকা, ৮ এপ্রিল এক হাজার ৭৫০ টাকা এবং ১৮ এপ্রিল দুই হাজার ৬৫ টাকা বাড়ানো হয়।
স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠনটি জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের দাম কমেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন নির্ধারিত এই দাম শনিবার বিকেল ৪টা ৫০ মিনিট থেকেই কার্যকর হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণ এক লাখ ১২ হাজার ৯৩১ টাকা, ২১ ক্যারেট এক লাখ সাত হাজার ৭৯৯ টাকা ও ১৮ ক্যারেট ৯২ হাজার ৪০২ টাকা। তবে সব ধরনের স্বর্ণের দাম কমলেও সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম বাড়িয়ে প্রতি ভরি ৭৬ হাজার ৮৪২ টাকা করা হয়েছে।
স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী বর্তমানে ২২ ক্যারেটে প্রতি ভরি রুপার দাম দুই হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের দাম দুই হাজার ছয় টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম দুই হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম এক হাজার ২৮৩ টাকা।
আরও পড়ুন:পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখায় প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগে শাখা ম্যানেজারসহ ৩ কর্মকর্তাকে আটকের পর কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আনোয়ার হোসেন সাগর। এদিন দুপুরে তাদের আদালতে প্রেরণ করে সাঁথিয়া থানা পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের জিআরও এএসআই মাহবুবুর রহমান জানান, বিকেলে সাঁথিয়া থানা থেকে এনে তাদের আদালতে তোলা হয়। এ সময় কেউ তাদের জন্য জামিন আবেদন করেননি। ফলে আদালত তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আটককৃতরা হলেন- অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার ব্যবস্থাপক (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) সুজানগর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা হারুন বিন সালাম, সিনিয়র অফিসার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর এলাকার বাসিন্দা আবু জাফর এবং ক্যাশিয়ার বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সুব্রত চক্রবর্তী।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী বিভাগীয় অফিস থেকে ৫ সদস্যবিশিষ্ট অডিট টিম কাশিনাথপুর শাখায় অডিটে আসে। দিনভর অডিট করে তারা ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আর্থিক অনিয়ম পান। এ বিষয়ে সাঁথিয়া থানায় ওই শাখার ম্যানেজার (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) হারুন বিন সালাম, ক্যাশ অফিসার সুব্রত চক্রবর্তী ও সিনিয়র অফিসার আবু জাফরকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দিলে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে তাদের তিনজনকে আটক করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অডিটে অনিয়ম ধরা পড়লে তাদের আটক করে সাঁথিয়া থানা পুলিশকে খবর দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আজ (শুক্রবার) দুপুরে জিডির ভিত্তিতে আটককৃতদের আদালতে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে দুদক আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আরডিআরএস বাংলাদেশ-এর ট্রাস্টি বোর্ডের নতুন চেয়ারপারসন নির্বাচিত হলেন ফারুক আহমেদ।
ট্রাস্টি বোর্ডের ৬৬তম সভায় এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ফারুক আহমেদ ২৭ এপ্রিল থেকে পরবর্তী তিন বছরের জন্য চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বাস্থ্য বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিপ্রাপ্ত ফারুক আহমেদের উন্নয়ন খাতে রয়েছে বিস্তৃত অভিজ্ঞতা।
তিনি এক সময় ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক ছিলেন এবং ঢাকায় বিশ্বব্যাংক কার্যালয়ে বিভিন্ন পদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জেনেভাভিত্তিক গ্যাভি, দ্যা ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স (এঅঠও)-এর বোর্ড সদস্য ছিলেন, এছাড়া তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং বিশ্বব্যাংকের বিভিন্ন কমিটিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ফারুক আহমেদ সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানি (এসএমসি) এন্টারপ্রাইজের পরিচালনা পরিষদের একজন সদস্য। তিনি বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ ওয়ার্কিং গ্রুপেরও একজন সদস্য।
ফারুক আহমেদ ২০২০ সালের ১৬ মার্চ থেকে আরডিআরএস-এর ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
আরডিআরএস বিশ্বাস করে, ফারুক আহমেদের নেতৃত্বে সংস্থাটি দেশজুড়ে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি অব্যাহত রাখতে এবং এ সম্পর্কিত কার্যক্রমকে বেগবান করতে সক্ষম হবে। প্রেস রিলিজ
উৎসবমুখর পরিবেশে বৃহস্পতিবার উদযাপন করা হয়েছে ১৩৭তম বন্দর দিবস।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে বন্দর ভবন চত্বরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য ও বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা উত্তোলন করেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল।
ওই সময় বোর্ড সদস্য (প্রকৌশল) কমোডর মোহাম্মদ মাহবুবুবর রহমানসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পতাকা উত্তোলনকালে চট্টগ্রাম বন্দরে অবস্থানরত সব জলযান ও জাহাজ থেকে একনাগাড়ে এক মিনিট হুইসেল বাজানো হয়। এরপর বন্দর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোহায়েল উপস্থিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে বন্দর দিবসের কেক কাটেন ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দর অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্মচারী পরিষদ, বন্দরের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার ও অন্যান্য সংগঠনের নেতারা।
কর্ণফুলীর মোহনায় ১৩৬ বছর আগে ২৫ এপ্রিল প্রতিষ্ঠা হয়েছিল দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর। ইংরেজ শাসনামলের প্রথম দিকে ইংরেজ ও দেশীয় ব্যবসায়ীরা বার্ষিক এক টাকা সালামির বিনিময়ে নিজ ব্যয়ে কর্ণফুলী নদীতে জেটি নির্মাণ করেন। পরে ১৮৬০ সালে প্রথম দুটি অস্থায়ী জেটি নির্মাণ করা হয়। ১৮৭৭ সালে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার গঠিত হয়।
১৮৮৮ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে দুটি মুরিং নির্মাণ হয়। একই বছরের ২৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার কার্যকর হয়। এরপর ১৮৯৯ থেকে ১৯১০ সময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার এবং আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে যুক্তভাবে চারটি স্থায়ী জেটি নির্মাণ করে। ১৯১০ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে রেলওয়ের সংযোগ সাধন হয়।
১৯২৬ সালে চট্টগ্রাম বন্দরকে মেজর পোর্ট ঘোষণা করা হয়। সেই থেকেই চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রেখে আসছে।
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে টানা তৃতীয় দিনের মতো কমেছে স্বর্ণের দাম। ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ভরিতে কমেছে ৬৩০ টাকা। সে হিসাবে স্বর্ণের ভরি দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫৬১ টাকা। আগের দিন বুধবার তা ছিল এক লাখ ১৪ হাজার ১৯১ টাকা।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়।
স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠনটি জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের দাম কমেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা ৫০ মিনিট থেকে স্বর্ণের নতুন নির্ধারিত দাম কার্যকর হবে।
বাজুস এর আগে চলতি এপ্রিল মাসের ৬, ৮ ও ১৮ তারিখ তিন দফা স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে ভালো মানের স্বর্ণের ভরিতে ৬ এপ্রিল ১ হাজার ৭৫০ টাকা, ৮ এপ্রিল ১ হাজার ৭৫০ টাকা ও ১৮ এপ্রিল দুই হাজার ৬৫ টাকা বাড়ানো হয়। মাঝে ২০ এপ্রিল ভরিতে ৮৪০ টাকা দাম কমানোর পরদিন ২১ এপ্রিল আবার ৬৩০ টাকা বাড়ায় বাজুস।
এবার শুরু হয় দাম কমানোর পালা। সবশেষ দাম বাড়ানোর দু’দিন পর ২৩ এপ্রিল ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে তিন হাজার ১৩৮ টাকা ও ২৪ এপ্রিল দু’হাজার ৯৯ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয় বাজুস। আর বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ভরিতে ৬৩০ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ টানা তিন দিনে স্বর্ণের দাম ভরিতে কমেছে পাঁচ হাজার ৮৬৮ টাকা।
সোনার দামে এমন উত্থান-পতনের কারণ জানতে চাইলে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা এখন নতুন পদ্ধতি বা পলিসি অনুসরণ করে গোল্ডের দাম নির্ধারণ করি। সেটি হচ্ছে বিশ্ব স্বীকৃত ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল পলিসি।
‘এতদিন আমরা আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে গোল্ডের দাম নির্ধারণ করতাম। সেক্ষেত্রে বিশ্ববাজারে যখন স্বর্ণের দাম কমত তখন আমরা কমাতাম। আর যখন বাড়ত তখন বাড়াতাম।’
তিরি আরও বলেন, ‘এখন আমরা আমাদের স্বর্ণের সবচেয়ে বড় বাজার তাঁতীবাজারের বুলিয়ান মার্কেট ফলো করে দর নির্ধারণ করি। এই বাজারে স্বর্ণের দাম ঘণ্টায় ঘণ্টায় উঠা-নামা করে। সেটা অনুসরণ করে আমরা নতুন দর নির্ধারণ করে থাকি। সেক্ষেত্রে দিনে দু’বারও গোল্ডের দাম বাড়ানো-কমানো হতে পারে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য