এক, দুই, তিন করে টানা চার কর্মদিবসে পতনে পুঁজিবাজারে চাপ বাড়ার বিষয়টি আরও স্পষ্ট হলো।
বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৮১টির, আর অপরিবর্তিত দরে লেনদেন হয়েছে ২২৬টির, যার প্রায়ই সবই ফ্লোর প্রাইসে। আগের দিনে এই সংখ্যাটা কিছুটা কম ছিল।
হঠাৎ পুঁজিবাজারে এই দরপতনের পর চেক ইস্যুটি সামনে এসেছে। ১১ অক্টোবর স্টক ব্রোকারদের প্রতি জারি করা বিএসইসির এক নির্দেশনায় বলা হয়, চেকের টাকা নগদায়নের আগে তা দিয়ে শেয়ার কেনা যাবে না।
এই নির্দেশনার পরই পুঁজিবাজারে লেনদেন কমতে দেখা গেছে উল্লেখযোগ্য হারে। একসময় যে লেনদেন ২ হাজার কোটির ঘরে ও এর কাছাকাছি হতো, সেটি চলে আসে হাজার কোটির ঘরে।
এদিকে চেক নগদায়ন করার সিদ্ধান্ত না পাল্টালে পুঁজিবাজারে চাপ আরও বাড়বে বলে স্টক ব্রোকাররা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিকে চিঠি দেয়। সোমবার বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রচারের পরদিনই পুঁজিবাজারে চাপ বাড়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এখন পর্যন্ত তাদের অবস্থানে অনড় আছে। সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কোনো আভাস নেই তাদের।
আরও পড়ুন: চেক নির্দেশনা না পাল্টালে ‘পুঁজিবাজারে চাপ বাড়বে’
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারে সত্যি সত্যি আরও বাড়ল চাপ
বুধবার শুরুতে চাপের আভাস ছিল না। লেনদেনের শুরু থেকে সূচক বাড়ছিল। ৪০ মিনিটে ৬২ পয়েন্ট সূচক বেড়ে তা ক্রমাগত ওপরের দিকে উঠছিল। হঠাৎ শুরু হয় দরপতন। শেষ পর্যন্ত আগের দিনের চেয়ে ১০ পয়েন্ট কমে শেষ হয় লেনদেন। ফলে দিনের সর্বোচ্চ অবস্থান থেকে দিন শেষের সূচকের অবস্থান কমে ৭২ পয়েন্ট।
এদিন যেসব কোম্পানির দর বেড়েছে, তার মধ্যে ১০০ কোটি টাকার বেশি পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানি আছে হাতে গোনা। যেসব কোম্পানির মূলধন ৩০ কোটি টাকার কম, সেগুলোর মধ্যে দুই-একটি ছাড়া বাকি সবগুলোর দর বেড়েছে।
লেনদেন অবশ্য আগের দিনের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। হাতবদল হয়েছে ১ হাজার ১৭৮ কোটি ৭১ লাখ ২ হাজার টাকার শেয়ার, যা আগের দিনের চেয়ে ১৭২ কোটি ৭৫ লাখ ৫৯ হাজার টাকা বেশি।
মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৫ কোটি ৯৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, যা এর আগের ৪৩ কর্মদিবসের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন লেনদেন।
গত ১৪ আগস্ট ৬৪৪ কোটি ৪৫ লাখ ৩১ হাজার টাকার পর ১২ অক্টোবরই এর চেয়ে কম লেনদেন হয়েছিল।
‘চাপ আছে ফ্লোর প্রাইস নিয়েও’
মিয়া আব্দুর রশিদ সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা শেখ ওহিদুজ্জামান স্বাধীন মনে করেন ফ্লোর প্রাইস ইস্যুতেও একটি চাপ আছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বেঁধে দেয়া সর্বনিম্ন দরে শেয়ার কিনতে চাইছে না। তারা আরও কমে শেয়ার কিনতে চায়। আর এটা না হওয়ায় তারা বিনিয়োগে যাচ্ছে না।
গত ২৮ জুলাই দ্বিতীয়বারের মতো সব শেয়ারের সর্বনিম্ন দর বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয় বিএসইসি। এরপর দুই মাসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাধারণ সূচক ৬০০ পয়েন্টের বেশি বাড়লেও বাজারে গতি ফেরেনি। অল্প কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়তে থাকাই এই সূচক বৃদ্ধির কারণ। অন্যদিকে শক্তিশালী মৌলভিত্তির বহু কোম্পানি ফ্লোর প্রাইসে পড়ে আছে।’
নিউজবাংলাকে শেখ ওহিদুজ্জামান স্বাধীন বলেন, ‘বাজারে এই মুহূর্তে মার্চেন্ট ব্যাংকসহ অন্যান্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কম। তারা শেয়ার কিনছেন না। এর কারণেই বাজারে এই মন্দাবস্থা।
‘প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা চাইলে যেগুলো ফ্লোরে যেসব আছে, সেগুলোতে বিনিয়োগ করতে পারেন। কিন্তু তারা করছেন না। এর কারণ হতে পারে তারা চান আরও কম দামে শেয়ার কিনতে।’
স্বল্পমূলধনি কোম্পানিগুলোর দর বৃদ্ধির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ থাকলে এসব শেয়ারের দাম হয়ত বাড়ত না। দরবৃদ্ধির পেছনে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কিছু অংশগ্রহণ থাকলেও মার্কেটে একটা গ্রুপ আছে, যারা এসবের দাম বাড়িয়ে ফায়দা লুটতে চায়। এটা তাদেরই কাজ।’
দরবৃদ্ধির সিংহভাগই স্বল্প মূলধনি
নতুন তালিকাভুক্ত একটি কোম্পানি ছাড়া দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় থাকা ১০টি কোম্পানির ৯টিরই পরিশোধিত মূলধন এক শ কোটি টাকার নিচে।
বাকিগুলোর মধ্যে একটির পরিশোধিত মূলধন ২ কোটি ৭১ লাখ কোটি টাকা, একটির ৬ কোটি, একটি ৮ কোটি, একটির ১০ কোটি, একটি ১৬ কোটি ৭৭ লাখ, একটি ৪৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
সবচেয়ে বেশি ৯.৯০ শতাংশ দর বেড়েছে নাভানা সিএনজির। শেয়ারটি লেনদেন হয়েছে ৩২ টাকা ২০ পয়সায়। আগের দিনের দর ছিল ২৯ টাকা ৩০ পয়সা।
৯.৮৪ শতাংশ দর বেড়েছে তালিকাভুক্তির পর দ্বিতীয় দিনের মতো লেনদেন হওয়া নাভানা ফার্মার। প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৯ টাকায়। আগের দর ছিল ২৬ টাকা ৪০ পয়সা।
এডিএন টেলিকমের শেয়ারদর ৮ দশমিক ৮১ শতাংশ বেড়ে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯০ টাকা ১০ পয়সায়। আগের দিনে লেনদেন হয়েছিল ৮২ টাকা ৮০ পয়সায়।
ছয় কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের অ্যারামিট লিমিটেডের দর ৮.৩৭ শতাংশ, ১০ কোটি টাকা মূলধনের রংপুর ফাউন্ড্রির দর ৭.৭১ শতাংশ, ২ কোটি ৭১ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের সোনালী আঁশের দর ৭.৪০ শতাংশ, প্রায় ১৭ কোটি টাকা মূলধনের আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের দর ৭.২৭ শতাংশ, ৪৩ কোটির বন্ধ থাকা কোম্পানি বিডি ওয়েল্ডিংয়ের দর ৭.২৬ শতাংশ ও ৮ কোটি টাকা মূলধনের আগ্রিকালচারাল মার্কেটিং কোম্পানি প্রাণ এর দর বেড়েছে ৬.৬৬ শতাংশ।
এই তালিকার একাদশ থেকে বিংশ পর্যন্ত ১০টি কোম্পানির ৯টিই স্বল্প মূলধনি কোম্পানি।
দর পতনের শীর্ষ ১০
পতনের তালিকার শীর্ষে রয়েছে ইস্টার্ন হাউজিং। ১০ শতাংশ কমে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ১২৪ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। আগের দিনে লেনদেন হয় ১৩৮ টাকা।
পতনের তালিকায় পরের স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস। ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ দর কমে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৫ টাকা ৭০ পয়সায়। আগের দিনের ক্লোজিং প্রাইস ছিল ২৮ টাকা ৫০ পয়সা।
তৃতীয় সর্বোচ্চ দর হারিয়েছে ইন্দো-বাংলা ফার্মা। ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ কমে শেয়ারটি সর্বশেষ ২০ টাকা ৯০ পয়সায় হাতবদল হয়। আগের দিনে লেনদেন হয়েছিল ২৩ টাকায়।
দর কমার শীর্ষ দশে থাকা অন্য কোম্পানিগুলো ছিল- জেএমআই হসপিটাল, বসুন্ধরা পেপার, অ্যাপেক্স ফুডস, ফারইস্ট নিটিং, অ্যাডভেন্ট ফার্মা, ওরিয়ন ফার্মা ও বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।
কোন খাত কেমন করল
ধারাবাহিকভাবে শীর্ষে থাকলেও লেনদেন কমেছে ওষুধ ও রসায়ন খাতে। হাতবদল হয়েছে ১৯৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকা বা ১৮.৮২ শতাংশ। আগের দিনে লেনদেন হয়েছিল ২১১ কোটি ১৯ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ২২.১২ শতাংশ।
খাতটিতে ১৩টি কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। ১২টি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে অপরিবর্তিত দরে। আর দরপতন হয়েছে ৭টির।
প্রকৌশল খাতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের প্রায় সমান। ৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ১৯টির লেনদেন হয়েছে আগের দরে। দরপতন হয়েছে ১৪টির।
তৃতীয় স্থানে থাকা বিবিধ খাতে লেনদেন হয়েছে ১৪২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। ৩টির দরবৃদ্ধি, ৭টির দরপতন ও আগের দরে লেনদেন হয়েছে ৩টি কোম্পানির।
আর কোনো খাতে ১০০ কোটি টাকা লেনদেন হয়নি।
চতুর্থ সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে কাগজ ও মুদ্রণ খাতে। খাতের ২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধি ও অপরিবর্তিত দরে লেনদেন হয়েছে ১টির। ৩টির লেনদেন হয়েছে দরপতনে। হাতবদল হয়েছে ৯০ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
সূচকে প্রভাব যাদের
সূচকের পতনে আগের দিনের মতোই প্রধান ভূমিকায় ওরিয়ন গ্রুপের দুটি কোম্পানি। এই গ্রুপের চারটি কোম্পানির শেয়ারদর অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গিয়ে আগস্টের প্রথম দিন থেকে সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত সূচক বেড়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি এই কোম্পানিগুলো দর হারাতে শুরু করেছে।
সবচেয়ে বেশি ৩ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট সূচক কমেছে বিকন ফার্মার দরপতনে। কোম্পানিটির দর কমেছে ২ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ১৪ পয়েন্ট কমেছে ওরিয়ন ফার্মার কারণে। শেয়ার প্রতি দাম কমেছে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ।
ইস্টার্ন হাউজিংয়ের দর ১০ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ২ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট।
এ ছাড়াও বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, জেএমআই হসপিটাল, বসুন্ধরা পেপার, ইউনিক হোটেল, লাফার্জ হোলসিম, বেক্সিমকো লিমিটেড ও ইসলামী ব্যাংকের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ২০ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট।
বিপরীতে ২ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে বেক্সিমকো ফার্মা। এদিন শেয়ারটির দর বেড়েছে ২ দশমিক ০২ শতাংশ।
সোনালী পেপারের দর ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ২ দশমিক ০৬ পয়েন্ট।
ওরিয়ন গ্রুপের কোহিনূর কেমিক্যালস সূচকে যোগ করেছে ১ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ৪ দশমিক ৮২ শতাংশ।
এর বাইরে আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, এডিএন টেলিকম, এসিআই, এসিআই ফর্মূলেশন, রহিমা ফুড, বিডি ফাইন্যান্স ও ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ১১ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট।
৮৮ কোটি ২০ লাখ টাকা লেনদেন করে তালিকার পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে খাদ্যখাত। ৬টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৯টির লেনদেন হয়েছে অপরিবর্তিত দরে ও ৪টির দরপতনে।
সেবা ও আবাসন খাতে ৭৫ কোটি ৯০ লাখ এবং প্রযুক্তি খাতে ৬৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। বাকি খাতের লেনদেন ছিল পঞ্চাশের নিচে।
আরও পড়ুন:পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি লিমিটেডের (বেক্সিমকো) শেয়ার কারসাজির দায়ে নয় বিনিয়োগকারীকে ৪২৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
মঙ্গলবার বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এই জরিমানা আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের শেয়ারবাজারের ইতিহাসে কোনো কোম্পানির শেয়ার কারসাজির দায়ে এতো বড় অঙ্কের অর্থ জরিমানা এর আগে আর করা হয়নি।
উল্লিখিত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মারজানা রহমানকে ৩০ কোটি, ট্রেড নেক্সট ইন্টারন্যাশনালকে চার কোটি এক লাখ, মুশফিকুর রহমানকে ১২৫ কোটি, মমতাজুর রহমানকে ৫৮ কোটি, জুপিটার ব্যবসাকে ২২ কোটি ৫০ লাখ, অ্যাপোলো ট্রেডিংকে ১৫ কোটি ১০ লাখ, এআরটি ইন্টারন্যাশনালকে ৭০ কোটি, আবদুর রউফকে ৩১ কোটি এবং ক্রিসেন্ট লিমিটেডকে ৭৩ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়াও কমিশন সভায় নয়টি কোম্পানির আইপিও/আরপিওর তহবিলের ব্যবহার পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত হয়।
কোম্পানিগুলো হলো- বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, বেস্ট হোল্ডিং, ইনডেক্স এগ্রো, জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং, লুব-রেফ (বাংলাদেশ) লিমিটেড, নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস, রিং শাইন টেক্সটাইল, সিকদার ইন্স্যুরেন্স ও সিলভা ফার্মাসিউটিক্যালস।
আরও পড়ুন:ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের (পিএলসি) শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধান করতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বুধবার বিএসইসির এক আদেশে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারের দাম ও পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে উঠা-নামা করেছে, যা অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক বলে মনে হচ্ছে।
বিএসইসির আদেশে বলা হয়, উল্লিখিত স্ক্রিপের ইউনিটের এমন অস্বাভাবিক উঠা-নামার পেছনে বাজার কারসাজি, অভ্যন্তরীণ লেনদেন, অন্যান্য বাজারের অপব্যবহারসহ বিভিন্ন কারণ উদঘাটনে ৬ আগস্ট থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার কেনাবেচা তদন্ত করবে ডিএসই।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, কিছু ব্যবসায়ী গ্রুপ ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক হওয়ার চেষ্টা করছে। তাই তারা বড় অঙ্কের শেয়ার কিনছে। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে এই ব্যাংকের শেয়ারের দাম হু হু করে বেড়েছে।
জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে পুঁজিবাজারে কারসাজির অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে। শেয়ার কারসাজিতে জড়িত থাকায় দেশসেরা এই ক্রিকেটারকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার নিয়ে এই কারসাজি করেন সাকিব আল হাসান।
সাকিব আল হাসানের পাশাপাশি শেয়ারবাজারের আলোচিত চরিত্র আবুল খায়ের ওরফে হিরু, তারা বাবা আবুল কালাম মাতবর, মো. জাহিদ কামাল, হিরুর প্রতিষ্ঠান মোনার্ক মার্ট, ইসহাল কমিউনিকেশন ও লাভা ইলেকট্রোডস ইন্ডাস্ট্রিজের বিরুদ্ধে কারসাজিতে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। এ কারণে এসব ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানকেও জরিমানা করা হয়েছে।
এর আগে একাধিক শেয়ার কারসাজির তদন্ত প্রতিবেদনে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের নাম উঠে আসে। তবে কারসাজির প্রমাণ পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে তাকে জরিমানা করেনি বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, ফরচুন সুজ, বিডিকম অনলাইন, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক ও ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার কারসাজির বিষয়ে করা তদন্ত প্রতিবেদনে সাকিব আল হাসানের নাম জড়ায়। তবে এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কারসাজির জন্য তাকে জরিমানা করা হয়নি। এবারই প্রথম সাকিবের বিরুদ্ধে শেয়ার কারসাজির প্রমাণ মিললো।
এর আগে শেয়ারবাজারে কারসাজির অভিযোগ তদন্তে সাকিবের নাম যতবার উঠে আসে সবগুলোতেই আলোচিত শেয়ার কারসাজিকারী আবুল খায়ের হিরুর নাম ছিল। সাকিবের বিরুদ্ধে কারসাজির প্রমাণ না মিললেও হিরুর বিরুদ্ধে কারসাজির প্রমাণ মেলে এবং তাকে জরিমানা করা হয়।
এবারও সাকিবের সঙ্গে শেয়ার কারসাজিতে হিরুর নামে উঠে এলো। প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজিতে জড়িত থাকায় হিরুকে ২৫ লাখ এবং সাকিব আল হাসানকে ৫০ লাখ টাকা জারিমানা করা হয়েছে।
এছাড়া হিরুর বাবা আবুল কালাম মাতবরকে ১০ লাখ, মো. জাহিদ কামালকে এক লাখ, হিরুর প্রতিষ্ঠান মোনার্ক মার্টকে এক লাখ, ইসহাল কমিউনিকেশনকে ৭৫ লাখ ও লাভা ইলেকট্রোডস ইন্ডাস্ট্রিজকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বিএসইসির এর আগে ‘দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম’-এর শুভেচ্ছা দূত হিসেবে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের নিয়োগ বাতিল করে। গত ২৮ আগস্ট জরুরি সভা করে এই সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।
আরও পড়ুন:ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ ২০ জনের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব জব্দ করেছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) নির্দেশে বৃহস্পতিবার তাদের বিও হিসাব স্থগিত করেছে বিএসইসি।
নির্দেশনায় বিএসইসি যাদের বিও হিসাব জব্দ করেছে তারা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তার স্ত্রী লুতফুল তাহমিনা খান, ছেলে সফি মুদাসসের খান ও মেয়ে শাফিয়া তাসনিম খান; সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, তার স্ত্রী নুরুন ফাতেমা হাসান ও মেয়ে নাফিসা জুমাইনা মাহমুদ; সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও তার স্ত্রী আরিফা জেসমিন কনিকা; সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত ও তার স্ত্রী শারমিন মুস্তারি; সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, তার স্ত্রী রুখমিলা জামান চৌধুরী, তার আত্মীয় জারা জামান, বোন রোকসানা জামান চৌধুরী, ভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরী ও মেয়ে জেবা জামান চৌধুরী।
এছাড়া পিরোজপুর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন মহারাজ, তার স্ত্রী উম্মে কুলসুম, ছেলে সাম্মাম জুনাইদ ইফতির বিও হিসাব জব্দ করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরদিন থেকে টানা চার দিন পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটতে দেখা যায় দেশের পুঁজিবাজারকে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও নতুন উদ্যমে শুরু করার প্রত্যয় চোখে পড়ে। অনেকে নতুন করে কিছু পুঁজি বিনিয়োগে এনেছেন। অনেকে আবার শেয়ার কিনে রাখতে অন্যদের পরামর্শ দিয়েছেন।
সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ধারণা হয়েছিল, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে পুঁজিবাজারে সুদিন ফিরবে। তবে সেই সুদিনের দেখা মিলছে না। ওই চার কর্মদিবসের পর থেকে পরের পাঁচ কর্মদিবসের গল্পটা পুরনো হতাশার।
গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ-ডিএসইতে চার কর্মদিবসে ৭৮৬ পয়েন্ট সূচক বাড়ার পর বিনিয়োগকারীরা উৎফুল্ল হয়ে উঠেছিল। এরপর ৮ কর্মদিবসে সূচক পড়ল ৪০৮ পয়েন্ট। এর মধ্যে পাঁচদিনেই পড়ল ৩৪৫ পয়েন্ট।
সবশেষ বুধবারের পতন ছিলো অনেকটাই অনাকাঙ্ক্ষিত। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক হারিয়েছে ১০৮ পয়েন্ট।
বর্তমান ডিএসইর প্রধান সূচকটি নেমে এসেছে পাঁচ হাজার ৬০৬ পয়েন্টে। তবে সবচেয়ে বেশি হতাশা ছড়াচ্ছে মোট লেনদেনের পরিমাণ। সরকার পতনের পর একদিনে লেনদেন উঠে এসেছিলো দুহাজার কোটি টাকা, যা বর্তমানে নেমে এসেছে চার ভাগের এক ভাগে। সবশেষ কর্মদিবসে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৫৩৬ কোটি টাকার।
হঠাৎ এমন দরপতনে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের। প্রতিদিনই তাদের বিনিয়োগের অর্থ কমে আসছে।
ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী জসিম উদ্দিনের ব্যাখা ছিলো এমন- ‘আমরা তো ভাবছিলাম আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন হবে না। গত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সেটা করেও দেখাতে পারেনি। একের পর এক দুর্নীতি আর লুটপাটে বাজার থেকে নিঃস্ব হতে হয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের।
‘সবার মধ্যে আশা ছিলো ওদের পতনের পর পুঁজিবাজার অনেক উপরে উঠবে। প্রথম কয়েকদিন হলোও তাই। তবে এখন কী যে হচ্ছে বুঝতে পারছি না। সকাল শুরু হলেই দেখি পতন আর পতন। এগুলো আর কত দেখতে হবে। নতুন সরকারের উচিত আগে পুঁজিবাজার ঠিক করা।’
বুধবার দেখা যায়, লেনদেনে অংশ নেয়া প্রায় সব প্রতিষ্ঠানের দর কমেছে। অংশ নেয়া কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১১টির, কমেছে ৩৭১টির। আর অপরিবর্তিত ছিলো ১২টি কোম্পানির শেয়ার দর।
হতাশ আরেক বিনিয়োগকারী আনিস বলেন, ‘আমাদের কী করা উচিত তা জানি না ভাই। হতাশ হয়ে সবাই মার্কেট ছাড়তেছে। ভাবলাম সরকার পরিবর্তন হইছে, তাই অনেক দিন পর কিছু শেয়ার কিনলাম। তবে যা হচ্ছে তাতে আবার হতাশ হলাম।’
অন্তর্বর্তী সরকারের বেছে নেয়া মাশরুর রিয়াজ বিএসইসির চেয়ারম্যান হওয়া নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর গত সোমবার নেতৃত্বে আসেন খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। তিনি নেতৃত্বে আসার পর টানা তিন কর্মদিবসেই দরপতন হল পুঁজিবাজারে।
আরও পড়ুন:পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন ড. এম মাশরুর রিয়াজ।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ড. এম মাশরুর রিয়াজকে বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল। তবে পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট দু-একটি গোষ্ঠী তার সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকার তথা সালমান এফ রহমানের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে মর্মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার শুরু করে।
গত ১৩ আগস্ট তার নিয়োগের প্রজ্ঞাপন হলেও মাশরুর রিয়াজকে বিএসইসিতে যোগ দিতে দেখা যায়নি। পরে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, তার বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখছেন। তবে সরকারের খতিয়ে দেখার আগেই মাশরুর রিয়াজ নিজে থেকেই বিএসইসি চেয়ারম্যান পদে যোগ না দেয়ার কথা জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়কে।
ড. এম মাশরুর রিয়াজ বাংলাদেশের একজন অর্থনীতিবিদ। তিনি পলিসি এক্সচেঞ্জ নামক একটি গবেষণা সংস্থার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি বিশ্বব্যাংকেও চাকরি করেছেন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান পদে যোগ না দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে সামনে বহু গবেষণার কাজ করার সুযোগ রয়েছে। আমি এই সময়টাকে কাজে লাগাতে চাই। দেশের অর্থনীতি নিয়ে একজন অর্থনীতিবিদ হিসেবে ভূমিকা রাখতে চাই।
‘বিশেষ করে সামষ্ট্রিক অর্থনীতি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও আর্থিক খাত নিয়ে নীতি প্রণয়ন ও সংস্কার বাস্তবায়নে ভূমিকা পালনের সুযোগ রয়েছে। এসব বিবেচনায় আমি বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এর আগে একটি ছবিকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাশরুর রিয়াজকে আগের সরকারের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে তুলে ধরেন অনেকে। এরপর বিএসইসির কিছু কর্মকর্তাও তাকে নিয়ে আপত্তি তোলে। তবে এরপর আবার তারা তাদের আপত্তি তুলে নেয়। এসব কারণে যোগদানে অনিচ্ছুক কিনা- এমন প্রশ্ন এড়িয়ে যান মাশরুর রিয়াজ।
এদিকে মাশরুর রিয়াজ যোগ দেবেন না জানতে পেরে নতুন করে বিএসইসির চেয়ারম্যান খুঁজতে শুরু করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে অনেকের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ শুরু হয়েছে বলেও জানা গেছে।
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরদিন থেকে টানা তিনদিন ব্যাপক উত্থান হয় দেশের দুই পুঁজিবাজারে। প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ-ডিএসইতে গত সপ্তাহের শেষ তিনদিনে সাধারণ সূচক বেড়েছে প্রায় ৭ শ’ পয়েন্ট। পাশাপাশি লেনদেনেও বেশ গতি দেখা গিয়েছিলো সেই কয়েক দিনে।
চলতি সপ্তাহের শুরুতেও বাজারে ছিলো তেজিভাব। রোববার প্রথম কর্মদিবসে লেনদেন ছাড়িয়ে যায় দুই হাজার কোটি টাকার ঘর। এদিনও ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে প্রায় ৯০ পয়েন্ট। টানা চারদিন উড়তে থাকা পুঁজিবাজার ধাক্কা খায় সোমবার এসে। সেদিন সকালে সূচকের উত্থান হলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে বিক্রির চাপে কমতে থাকে মূল্যসূচক। সোমবারের ধারা অব্যাহত ছিলো মঙ্গলবারেও।
এদিন সকাল থেকেই কমতে থাকে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স। দুপুরে কিছুটা উত্থান হলেও দিনশেষে সূচকটি ৬৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান নিয়েছে ৫ হাজার ৮ শ ৬৭ পয়েন্টে। এ নিয়ে টানা দুই দিনে সূচকটি কমেছে ১৪৭ পয়েন্ট।
ডিএসইতে এদিন মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১৫ কোটি টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট, যা তার আগের দিনের চেয়ে প্রায় ১ শ ২৮ কোটি টাকা কম। প্রধান সূচকের পাশাপাশি এদিন কমেছে অপর দুই সূচক ডিএস-৩০ ও ডিএসইএস।
লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির দরপতন হয়েছে এদিন। ১০৬ টি প্রতিষ্ঠানের দর বাড়ার বিপরীতে কমেছে ২৬৯ টির আর অপরিবর্তিত দেখা গেছে ২৪ টি কে।
পুঁজিবাজারের মঙ্গলবারের আচরণকে স্বাভাবিক দর সংশোধন বলে মনে করছেন সাধারণ বিনিয়োগকারিরা। অনেকেই গত কয়েকদিনে দর বাড়তে দেখে মুনাফার জন্য হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করেছেন বলেও জানিয়েছেন।
জাহিদ হোসেন নামে পুঁজিবাজারের এক বিনিয়োগকারী বলেন, ‘স্বাভাবিক নিয়মেই বাজার সংশোধন হয়েছে। এখানে ভয় পাওয়ার কারণ নাই। ৮০০ সূচক বাড়ার পর দুইশ কমবে এটাই স্বাভাবিক, বরং না কমলেই বুঝতাম ব্যাপারটা অস্বাভাবিক।’
আরেক বিনিয়োগকারী ইন্দ্রজিৎ বলেন, ‘অনেকদিন ধরে কোন শেয়ার বিক্রি করি না লোকসান ছিলো বলে। এখন দেখলাম কিছুটা হলেও লোকসান কমে এসেছে। আবার টাকারও দরকার ছিলো। তাই কিছু শেয়ার আজকে বিক্রি করলাম।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য