টানা বাড়তে থাকা পুঁজিবাজারে উত্থান পর্ব এক মাস ছাড়িয়ে গেল। এই কয়দিনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স বাড়ল মোট ৫২৮ পয়েন্ট। তবে পুঁজিবাজারে এই সুসময়েও ঘুমিয়ে ব্যাংক খাত, যদিও এই খাতের সার্বিক চিত্র আশা জাগানিয়া।
এই খাতে না বাড়লে শেয়ারদর, না আগ্রহ দেখা যাচ্ছে শেয়ার কেনায়।
বৃহস্পতিবার ৫১ পয়েন্ট সূচক বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে গত ১৩ কর্মদিবসের মধ্যে বাড়ল ১২ দিন। গত ২৯ জুলাই থেকে শুরু হওয়া উত্থান পর্বে ২২ কর্মদিবসের মধ্যে সব মিলিয়ে বাড়ল ১৭ দিন।
সূচকের অবস্থান এখন ৬ হাজার ৫০৮ পয়েন্ট, যা গত ১২ মের পর সর্বোচ্চ। সেদিন সূচকের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৫৬৫ পয়েন্ট।
ইউক্রেন যুদ্ধ, শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব, ডলারে বিপরীতে টাকার দরপতনসহ নানা ইস্যুতে পুঁজিবাজার গত ২৮ জুলাই ছয় হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে যাওয়ার পর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর দিন থেকে শুরু হয় উত্থান।
এই উত্থানের পেছনে প্রধাব ভূমিকায় ছিল ওষুধ ও রসায়ন, প্রকৌশল, সাধারণ ও জীবন বিমা, বস্ত্র আর্থিক প্রতিষ্ঠান, খাদ্য এবং বিবিধি খাতের কোম্পানিগুলো।
তবে শেয়ারদরের বিবেচনায় প্রতি বছর দারুণ লভ্যাংশ এবং কোম্পানিগুলোর মূল্য আয় অনুপাত আকর্ষণীয় অবস্থানে থাকলেও বিনিয়োগকারীরা এসব শেয়ারে ঝুঁকছেনই না।
বৃগস্পতিবার তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৭টির, কমেছে ৪টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১২টির। তবে যেসব কোম্পানির দর বেড়েছে তার মধ্যে ১২টিরই দর বেড়েছে কেবল ১০ পয়সা। অথচ এদিন একটি কোম্পানির দর ১০ শতাংশ, ৪টির ৯ শতাংশ, ৭টির ৮ শতাংশ, ৫টির ৬ ও ৫ শতাংশ করে, ৮টির ৪ শতাংশ, ৯টির দর বেড়েছে ৩ শতাংশ।
এদিন সব মিলিয়ে বেড়েছে ১৭২টির দর, কমেছে ১৩১টির আর আগের দিনের দরে লেনদেন হয়েছে ৭৮টি।
সূচক বাড়লেও লেনদেন আগের দিনের চেয়ে কিছুটা কমেছে। দিন শেষে হাতবদল হওয়া শেয়ারের মূল্য দাঁড়ায় এক হাজার ৮৮৯ কোটি ৫২ লাখ ৪ হাজার টাকা, যা আগের দিন ছাড়িয়েছিল দুই হাজার কোটি টাকার ঘর।
এ নিয়ে টানা পাঁচ দিন লেনদেন হলো পৌনে দুই হাজার কোটির বেশি।
খাতভিত্তিক লেনদেনের দিক দিয়ে এদিন সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। টানা শীর্ষে থাকা বস্ত্র থাকে লেনদেন এক দিনই কমেছে এ শ কোটি টাকার বেশি। তারপরও আড়াই শ কোটি টাকার বেশি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
দুই শ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে বিবিধ এবং প্রকৌশল খাতেও।
ছোট খাত হলেও শত কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে সেবা ও আবাসনে। এক শ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে। শত কোটি ছুঁই ছুঁই লেনদেন হয়েছে খাদ্য ও আনুষঙ্গিকে। ব্যাংক খাতে হাতবদল হয়েছে ৭০ কোটি টাকারও কম।
পুঁজিবাজারে চাঙাভাবের মধ্যেও ব্যাংক খাতে অনাগ্রহের বিষয়ে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, ‘সার্বিকভাবে বাজার ভালো। এর কারণ বিভিন্ন দিক থেকে বিনিয়োগ হচ্ছে, বাজার ভালো রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে সব পক্ষ থেকেই।
‘যেসব সেক্টরে বেশি গেইন হচ্ছে সেসব সেক্টরেই বিনিয়োগ বেশি হচ্ছে। ব্যাংকের দিকে আগ্রহ কম। কারণ, ব্যাংক নিয়ে মানুষের ধারণা নেতিবাচক। তবে ট্রানজেকশন দুই হাজার পার হতে থাকলে সব খাতেই আগ্রহ বাড়বে।’
সব দিক দিয়ে আকর্ষণীয়, তবে নেই আগ্রহ
ঢাকা ও চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত আছে মোট ৩৩টি ব্যাংক। এর মধ্যে গত বছর দুটি ছাড়া বাকি সবগুলো লভ্যাংশ দিয়েছে। চলতি বছর অর্ধবার্ষিকের প্রকাশিত হিসাব অনুযায়ী ৩২টি কোম্পানিই মুনাফায় আছে।
গত কয়েক বছর ধরেই মুনাফা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে ব্যাংক খাতে। এর মধ্যে চলতি বছর অর্ধবার্ষিকে ১৮টি ব্যাংক মুনাফা আরও বাড়াতে পেরেছে। দুটি ব্যাংকের মুনাফা একই আছে। আর কমেছে বাকি ১৩টির।
মূল্য আয়ের অনুপাত বা পিই রেশিও বিবেচনায় নিলে বোঝা যায় ব্যাংকের শেয়ারদর অন্যগুলোর তুলনায় কতটা কম। পুঁজিবাজারে কোনো কোম্পানির শেয়ারদরকে তার আয় দিয়ে ভাগ করলে এই অনুপাত পাওয়া যায়। অর্থাৎ যে হারে আয় করছে, সেটি বজায় থাকলে বর্তমান শেয়ারদর উঠে আসতে কত সময় লাগবে।
পুঁজিবাজারে পি ই রেশিও সাধারণত ১০ থেকে ১৫ কে আকর্ষণীয় বিবেচনা করা হয়। তবে ব্যাংক খাতে তা অনেকটাই কম। পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে কম সাউথইস্ট ব্যাংকের ২.৭। এছাড়া মার্কেন্টাইল ব্যাংকে এই অনুপাত ৩.২৯, যমুনা ব্যাংকে ৩.৬, শাহজালাল ব্যাংকে ৪.০৪, প্রিমিয়ার ব্যাংকে ৪.৪২ এবং এক্সিম ব্যাংকে ৪.৭৪।
৬ এর নিচে অনুপাত আছে যেগুলোর, সেগুলো হলো: ব্যাংক এশিয়ায় ৫.০৫, এনসিসি ব্যাংকে ৫.৩, উত্তরা ব্যাংকে ৫.৩৫, ঢাকা ব্যাংকে ৫.৩৮, সিটি ব্যাংকে ৫.৫৬, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে ৫.৫৭, ওয়ান ব্যাংকে ৫.৭১ এবং পূবালী ব্যাংকে ৫.৯৫।
৭ এর নিচে আছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ও ইউনিয়ন ব্যাংকের ৬.০৩ করে এবং প্রাইম ব্যাংকের ৬.১৯।
পিই রেশিও ১০ এর নিচে যেসব ব্যাংকে, তার মধ্যে ইউসিবির আছে ৭.১৮ ইস্টার্ন ব্যাংকেক ৭.৩১, ট্রাস্ট ব্যাংকে ৭.৮৬, ইসলামী ব্যাংকে ৭.৮৮ এবং ডাচ্-বাংলায় ৯.০৮।
আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে পিই রেশিও ১০.১৭, এনআরবিসিতে ১১.৪৭, এবি ব্যাংকে ১২.৫, আইএফআইসি ব্যাংকে ১২.৭৯, এসআইবিএলে ১২.৯৬ এবং ব্র্যাক ব্যাংক ১৩.১৩।
১৫ এর বেশি পিই রেশিও কেবল চারটি ব্যাংকের। এর মধ্যে সাউথবাংলা ব্যাংকের ১৭.০৩, স্ট্যান্ডার্ড ২৯.৩৩, রূপালী ব্যাংকের ৪৬.৭২। আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের পিই রেশিও ১৩৫ থাকাটাও উৎসাহ ব্যাঞ্জক এই কারণে যে, এই ব্যাংকটি প্রথমবারের মতো দুটি প্রান্তিক মিলিয়ে লোকসান থেকে বেরিয়ে এসেছে।
অন্যদিকে অর্ধবার্ষিকে শেয়ার প্রতি ৫৪ পয়সা লোকসান দেয়া এনবিএলের কোনো পিই রেশিও নেই।
তবে শেয়ারদরে ব্যাংকের আয়, লভ্যাংশ, পিই রেশিও তার কোনো কিছুরই প্রভাব নেই। বেশিরভাগ ব্যাংকের শেয়ারদর তার বেঁধে দেয়া সর্বনিম্ন মূল্য বা ফ্লোর প্রাইসের আসেপাশে আছে।
সবচেয়ে কম পিই রেশিওর সাউথইস্ট ব্যাংকের ফ্লোর প্রাইস ১৩ টাকা ৮০ পয়সাতেই লেনদেন হচ্ছে বেশ কয়েকদিন ধরে।
পিই রেশিওর দিক থেকে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন অবস্থানে থাকা মার্কেন্টাইলের শেয়ারদর এখন ১৪ টাকা ৬০ পয়সা। এর ফ্লোর প্রাইস ১৩ টাকা ৬০ পয়সা।
পিই রেশিওর দিক থেকে তৃতীয় স্থানে থাকা যমুনা ব্যাংকের ফ্লোর প্রাইস ২১ টাকা ৩০ টাকা আর শেয়ারদর ২১ টাকা ৯০ পয়সা।
কেবল চলতি বছরের হিসাব নয়, গত কয়েক বছরে ব্যাংকগুলোর শেয়ারদরের বিবেচনায় লভ্যাংশ এত ভালো ছিল যে, ব্যাংকে টাকা রাখার চেয়ে শেয়ার কিনে রেখেই বেশি লাভবান হয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
এত কিছুর পরও উত্থানের এক মাসে সর্বাধিক লেনদেন হওয়া ২০টি কোম্পানির মধ্যে ব্যাংক খাতের কোনো কোম্পানিকে দেখা যায়নি বললেই চলে।
সূচক বাড়াল যারা
সবচেয়ে বেশি ৭ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেড। শেয়ারটির দর ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ দর বেড়েছে।
গ্রামীণফোনের দর শূন্য দশমিক ৭৬ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ৪ দশমিক ৯ পয়েন্ট।
বেক্সিমকো ফার্মা সূচকে যোগ করেছে ৩ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ২ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
এ ছাড়া ইউনাইটেড পাওয়ার, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, কোহিনূর কেমিক্যাল, জেএমআই হসপিটাল, বিকন ফার্মা, ইস্টার্ন হাউজিং ও আরএকে সিরামিকস সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ২৭ দশমিক ০৫ পয়েন্ট।
বিপরীতে কোনো কোম্পানি এককভাবে এক পয়েন্ট সূচক কমাতে পারেনি।
সবচেয়ে বেশি শূন্য দশমিক ৯৩ পয়েন্ট সূচক কমেছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের দর পতনে। কোম্পানিটির দর কমেছে ২ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শূন্য দশমিক ৪৯ পয়েন্ট কমেছে বেক্সিমকো সুকুকের কারণে। বন্ডটির ইউনিট প্রতি দাম কমেছে ১ দশমিক ১৩ শতাংশ।
ডেল্টা লাইফের দর ১ দশমিক ০৭ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে শূন্য দশমিক ৩৭ পয়েন্ট।
এ ছাড়া নাহি অ্যালুমিনিয়াম, ন্যাশনাল টি, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস, আমান ফিড, ওরিয়ন ফার্মা, ব্র্যাক ব্যাংক ও রিং শাইনের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ৩ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
সবচেয়ে বেশি ১০ শতাংশ দর বেড়েছে জেএমআই হসপিটালের। শেয়ারটি সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৮৪ টাকা ৭০ পয়সায়। আগের দিনে লেনদেন হয়েছিল ৭৭ টাকায়।
ইস্টার্ন হাউজিং ছিল তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে। ২৮ জুলাই থেকে দর বাড়ছেই শেয়ারটির। ওই দিন ৫২ টাকায় লেনদেন হওয়া প্রতিটি শেয়ারের দর আজ ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ বেড়ে লেনদেন হয়েছে ১০১ টাকা ৪০ পয়সায়।
৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ দর বেড়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সোনারগাঁও টেক্সটাইল। সর্বশেষ শেয়ারটি লেনদেন হয়েছে ৬৬ টাকা ২০ পয়সায়।
আগের দিনে ক্লোজিং প্রাইস ছিল ৬০ টাকা ২০ পয়সা।
এ ছাড়া দর বৃদ্ধির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে- মেট্রো স্পিনিং, আএসআরএম স্টিল, মনোস্পুল, জেমিনি সি ফুড, সোনালী আঁশ, পেপার প্রসেসিং এবং কোহিনূর কেমিক্যালস।
দর পতনের শীর্ষ ১০
দরপতনের শীর্ষে রয়েছে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড। শেয়ারটির দর ৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ কমে সর্বশেষ ৪১ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হয়।
নাহি অ্যালুমিনিয়াম দর পতনের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ব্যবসা সম্প্রসারণে ২৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে নতুন ৫টি পণ্য উৎপাদনের ঘোষণা দেয় কোম্পানি। ইতিবাচক খবরের পরেও শেয়ারটির দর ৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ কমে লেনদেন হয়েছে ৭২ টাকা ৩০ পয়সায়।
তৃতীয় সর্বোচ্চ দর হারিয়েছে নূরানী ডায়িং। ৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ কমে শেয়ারটি সর্বশেষ ৭ টাকা ৩০ পয়সায় হাতবদল হয়।
দর কমার শীর্ষ দশে ছিল ন্যাশনাল টি, আমান ফিড, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, ডেল্টা স্পিনার্স, কুইন সাউথ টেক্সটাইল ও ফার কেমিক্যালস।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
মন্তব্য