করোনা নিয়ন্ত্রণে আসার পর অর্থনীতির চাকা সচল হওয়ার পর বেসরকারি ঋণপ্রবাহেও ফিরেছে গতি। সেই সঙ্গে বেড়েছে আমদানি-রপ্তানি, বেড়েছে রেমিট্যান্স-প্রবাহ, ডলার বাণিজ্য থেকেও বেশ ভালো আয় আসার কথা।
তবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো তাদের অর্ধবার্ষিকে আয়ের যে হিসাব দিয়েছে, তাতে ব্যাংকগুলোর ফুলে-ফেঁপে ওঠার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না।
গত বছর করোনার বিধিনিষেধের মধ্যেও ব্যাংকগুলো প্রায় প্রতি প্রান্তিকেই আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি ভালো আয় করলেও এবার তাদের প্রবৃদ্ধি কমেছে।
তালিকাভুক্ত বেশির ভাগ ব্যাংকের আয় আগের বছরের তুলনায় বাড়লেও প্রবৃদ্ধির হার অনেকটাই কম। আবার দুটি ব্যাংক এই প্রান্তিকে লোকসান দিয়েছে, যেগুলো আগের বছর বেশ খানিকটা মুনাফায় ছিল।
সব মিলিয়ে ৩৩টি ব্যাংকের মধ্যে ১৮টির আয় বেড়েছে। ২টির আয় রয়েছে আগের বছরের সমান। আর আয় কমেছে ১৩টি ব্যাংকের।
শতাংশের হিসাবে ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত আয় কমেছে আইএফআইসি, স্ট্যান্ডার্ড, ওয়ান, ইউনিয়ন, এনআরবিসি ও রূপালী ব্যাংকের।
বছরের পর বছর ধরে লোকসানে থাকা আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক তার বৃত্ত ভেঙে বের হয়ে এসেছে। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামিক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, এবি ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও যমুনা ব্যাংক আকর্ষণীয় প্রবৃদ্ধি করেছে। তবে বাকিগুলোর প্রবৃদ্ধি খুব একটা বেশি নয়।
সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মাসরুর আরেফিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ব্যাংকের মুনাফার হার সামান্য কমার কারণ হিসেবে তিনটি বিষয় উল্লেখ করা যায়। ১. ভবিষ্যতে কী হতে যাচ্ছে এই অনিশ্চয়তার কথা মাথায় রেখে ব্যাংকগুলোর প্রভিশন ধরে রাখার প্রবণতা রয়েছে। ২. ডিপোজিট কস্ট বেড়ে গেছে, সেটাও আয় কমার একটা কারণ। ৩. আর ব্যাংকগুলোর সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানগুলো, যেমন- ব্রোকারেজ হাউস, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো হয়তো আয় করতে পারেনি ভালো। যার কারণে ব্যাংকের সমন্বিত আয় কমেছে। তারপরও খুব বেশি কমেছে বলে মনে হয় না। প্রায় ২০টির মতো ব্যাংক ভালো আয়ে রয়েছে সম্ভবত।’
আমানতের সুদ ও ঋণের সুদহারের মধ্যে পার্থক্য বা মার্জিন কমা ব্যাংকের আয় কমার প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন। তিনি ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও।
তিনি বলেন, ‘ইন্ডাস্ট্রিতে আমাদের যে নেট ইন্টারেস্ট মার্জিন সেটা অনেক কমে গেছে। ব্যাংকিং খাতের বড় আয় যেখান থেকে, ব্যাংক ইন্টারেস্ট মার্জিন, সেটা অনেক কমে গেছে বেশির ভাগ ব্যাংকের। এটাই প্রধান কারণ। আরেকটা কারণ হতে পারে, তা হলো অনেক ব্যাংকের ব্যাক ডেট প্রভিশন বেড়েছে।‘
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ মনে করেন, প্রবৃদ্ধি ভালো না হলেও ব্যাংক খাতের যে আয়, সেটি অন্য খাতের তুলনায় ভালো।
তিনি বলেন, ‘এই প্রান্তিকে খুব বেশি ভালো হয়তো করেনি। তবে গত কয়েক বছর ধরে দেখে আসছি ব্যাংকগুলো ভালো মুনাফা করে। লভ্যাংশও দেয় ভালো । কিন্তু এগুলোর দাম কম।’
তিনি বলেন, ‘হাতে গোনা কয়েকটা ব্যাংক ছাড়া বেশির ভাগ ব্যাংকই প্রতি বছর ভালো মুনাফা করছে। অনেক টাকা আয় করে বলেই কর্মীদের ভালো বেতন দেয়। তারপরও যদি ব্যাংক ওই তুলনায় অল্প মুনাফাও করে এবং বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দেয় সেটাও অন্য অনেক শেয়ারের চেয়ে ভালো।’
অর্ধবার্ষিকে শেয়ার প্রতি সবচেয়ে বেশি ৩ টাকা ৫৮ পয়সা আয় করেছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩ টাকা ৪ পয়সা আয় করেছে যমুনা ব্যাংক।
তৃতীয় স্থানে থাকা শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ২ টাকা ৩৯ পয়সা, চতুর্থ স্থানে থাকা পূবালী ব্যাংক ২ টাকা ৩৬ পয়সা, পঞ্চম স্থানে থাকা উত্তরা ব্যাংক ২ টাকা ২৮ পয়সা, ষষ্ঠ স্থানে থাকা ট্রাস্ট ব্যাংক ২ টাকা ২২ পয়সা এবং সপ্তম স্থানে থাকা ইস্টার্ন ব্যাংক শেয়ারপ্রতি ২ টাকা ২১ পয়সা আয় করেছে।
এ ছাড়া শেয়ারপ্রতি দেড় টাকার বেশি আয় করেছে প্রাইম, ইসলামী, প্রিমিয়ার ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক।
ব্র্যাক ও ঢাকা ব্যাংকের আয় শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৩০ পয়সা থেকে দেড় টাকার ভেতরে।
শেয়ারপ্রতি ১ টাকার বেশি আয় করেছে ঢাকা এক্সিম এবং আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকও। অর্ধবার্ষিকে বাকি সব ব্যাংকের আয় শেয়ারপ্রতি ১ টাকার কম।
অন্যদিকে একমাত্র ব্যাংক হিসেবে লোকসানে আছে এনবিএল। আর দ্বিতীয় প্রান্তিকে এই ব্যাংকটির পাশাপাশি লোকসান করেছে এনআরবিসি।
সবচেয়ে ভালো করেছে যারা
এই তালিকায় তুলনামূলক হিসাবে নিঃসন্দেহে সবার চেয়ে এগিয়ে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক। ওরিয়েন্টাল ব্যাংক থাকাকালে ঋণ কেলেঙ্কারিতে ডুবে যাওয়ার পর প্রথমবারের মতো অর্ধবার্ষিক হিসাব ইতিবাচক দেখা গেছে।
এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১৫ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে লোকসান ছিল ১৭ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে প্রতি শেয়ারের বিপরীতে লোকসান ছিল ৩২ পয়সা।
এই হিসাবে অর্ধবার্ষিকীতে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় বেড়েছে ৩৪ পয়সা।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক
এই ব্যাংকটির আয়ও দুই প্রান্তিকেই বেড়েছে।
এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৩৪ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ২০ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ৮৭ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৪৯ পয়সা।
অর্থাৎ অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ৭৭ শতাংশ।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক
কয়েক বছর চাপে থাকলেও চলতি বছর ব্যাংকটি চাপ থেকে বেরিয়ে আসার আভাস দিচ্ছে।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ৭৯ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২৯ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৫০ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৯৬ পয়সা।
অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক
এই ব্যাংকটি আয়ে চমক দেখিয়েছে।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৪৫ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৫ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ৩৯ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৬৪ পয়সা।
অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ৪৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
উত্তরা ব্যাংক
এই ব্যাংকটিও দারুণ সময় কাটাচ্ছে।
চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৫৭ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৯২ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ২৮ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৫৭ পয়সা।
অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ৪৫ দশমিক ২২ শতাংশ।
এবি ব্যাংক
দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ২৪ পয়সা যা গত বছর একই সময় ছিল ১৬ পয়সা।
অর্ধবার্ষিকে ছয় মাসে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৪২ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল ৩১ পয়সা।
অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ৩৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
পূবালী ব্যাংক
আয়ের প্রবৃদ্ধিতে দুই বছর ধরেই চমক দেখাচ্ছে এই ব্যাংকটি।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ১৭ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৮২ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ৩৬ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৮০ পয়সা।
অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ৩১ দশমিক ১১ শতাংশ।
এক্সিম ব্যাংক
এই ব্যাংকটির আয় দুই প্রান্তিকেই বেড়েছে।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৮৯ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ৮২ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ১৪ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৮৭ পয়সা।
অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ৩১ দশমিক ০৩ শতাংশ।
যমুনা ব্যাংক
এই ব্যাংকটির আয়ও দুই প্রান্তিকেই বেড়েছে।
এর মধ্যে এপ্রিলে থেকে জুন পর্যন্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৩২ পয়সা আয় হয়েছে, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৪ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ৩ টাকা ৪ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২ টাকা ৬৪ পয়সা।
অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ২৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
ঢাকা ব্যাংক
এই ব্যাংকটির আয় দুই প্রান্তিকেই আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে। এর মধ্যে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে আয় হয়েছে ৫৭ পয়সা করে, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৪৮ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৩০ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ১৩ পয়সা।
অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ১৫ দশমিক ০৪ শতাংশ।
ব্যাংক এশিয়া
এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে এই ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৯৪ পয়সা, যা গত বছর একই সময় ছিল ৭০ পয়সা।
দ্বিতীয় প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় ২ টাকা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৭৫ পয়সা।
অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ১৪ দশমিক ২১ শতাংশ।
মার্কেন্টাইল ব্যাংক
এই ব্যাংকটি কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে আয় বাড়িয়ে চলছে।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৩৬ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৩২ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ২২ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৯৬ পয়সা।
অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ১৩ দশমিক ২৬ শতাংশ।
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক
এই ব্যাংকটির আয়ও দুই প্রান্তিকেই বেড়েছে।
এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ৯৭ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ১ টাকা ৯৫ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ৩ টাকা ৫৮ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৩ টাকা ২৫ পয়সা।
অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ১০ দশমিক ১৫ শতাংশ।
প্রিমিয়ার ব্যাংক
ব্যাংকটি তার আয় বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে, যদিও চলতি বছর প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা কম।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ৯৫ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৯৩ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৫৪ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৪৪ পয়সা।
অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক
দ্বিতীয় প্রান্তিকে আয় সামান্য কমলেও ছয় মাসের সমন্বিত আয় বেড়েছে ব্যাংকটির।
চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১০ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১৬ পয়সা।
তবে দুই প্রান্তিক মিলিয়ে অর্থাৎ বছরের প্রথম ছয় মাসের আয় আগের বছরের তুলনায় ১ পয়সা বেড়েছে। ছয় মাসের সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৩২ পয়সা, গত বছরের একই সময়ে ছিল ৩১ পয়সা।
অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ২২ শতাংশ।
ইসলামী ব্যাংক
দ্বিতীয় প্রান্তিকে কিছুটা কমলেও প্রথম প্রান্তিকে কিছুটা বাড়ার সুবাদে অর্ধবার্ষিকে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি আয় করেছে ব্যাংকটি।
এর মধ্যে জুনে সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৫৮ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৬১ পয়সা।
এই প্রান্তিকে প্রতি শেয়ারে ৩ পয়সা কমলেও দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ১০ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২ টাকা ৮ পয়সা।
অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ০ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
ট্রাস্ট ব্যাংক
দ্বিতীয় প্রান্তিকে ভাটা পড়লেও দুই প্রান্তিক মিলিয়ে আয় কিছুটা বাড়াতে পেরেছে এই ব্যাংকটি।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৩ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ২৮ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ২২ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২ টাকা ২০ পয়সা।
অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধিও ইসলামীর মতো ০ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক
দ্বিতীয় প্রান্তিকে এই ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৬৮ পয়সা, যা গত বছর একই সময় ছিল ৯০ পয়সা।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে কমলেও প্রথম প্রান্তিকের প্রবৃদ্ধির কারণে ছয় মাসে আয় কিছুটা বেড়েছে। এই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ১৭ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল ১ টাকা ১৬ পয়সা।
অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ০ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
সবচেয়ে খারাপ করেছে যারা
এই তালিকায় সবার ওপরে প্রথম প্রজন্মের বেসরকারি ব্যাংক এনবিএল।
এক দশক আগেও দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যাংকটির একটির এখন করুণ দশা। প্রথম প্রান্তিকে হতাশার পর দ্বিতীয় প্রান্তিকে হতাশা আরও বাড়িয়েছে ব্যাংকটি।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৩৬ পয়সা। গত বছর একই সময়ে এই আয় ছিল ১৬ পয়সা।
প্রথম প্রান্তিকে লোকসান ছিল এর অর্ধেক, শেয়ারপ্রতি ১৮ পয়সা।
অর্থাৎ দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৫৪ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে এই আয় ছিল ২৮ পয়সা।
অর্থাৎ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় শেয়ারপ্রতি ৮২ পয়সা আয় কমেছে ব্যাংকটির।
আইএফআইসি ব্যাংক
এই ব্যাংকের দুই প্রান্তিকেই আয় কমেছে।
এর মধ্যে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৩৪ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৪৫ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে অর্ধবার্ষিকে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ৫২ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৮৭ পয়সা।
অর্থাৎ অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ৪০ দশমিক ২২ শতাংশ।
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক
গত কয়েক বছর ধরে চাপে থাকা এই ব্যাংকটির আয়ে এবারও ভাটা পড়েছে।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ২ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৬ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ১৫ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২৩ পয়সা।
অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ৩৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
ওয়ান ব্যাংক
গত বছর আয় কমার ধারাবাহিকতা চলতি বছরও দেখা যাচ্ছে এই ব্যাংকটির ক্ষেত্রে।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ৫৩ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৬৭ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ৯৮ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৪৬ পয়সা।
অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ৩২ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
ইউনিয়ন ব্যাংক
এই ব্যাংকটির আয় দুই প্রান্তিকেই কমেছে।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ৪৪ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৬২ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ৮৭ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ১২ পয়সা।
অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ২৯ দশমিক ০৩ শতাংশ।
এনআরবিসি
দ্বিতীয় প্রান্তিকে লোকসান দেয়া দ্বিতীয় ব্যাংক এটি। এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে শেয়ারপ্রতি সাড়ে ৬ পয়সা লোকসান হয়েছে।
ফলে প্রথম প্রান্তিক শেষে আয় যতটা ছিল, ছয় মাস শেষের হিসাব থেকে কমে গেছে সেখান থেকে।
জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ৭৬ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে এই আয় ছিল শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৩ পয়সা।
অর্থাৎ অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ২৬ দশমিক ২১ শতাংশ।
রূপালী ব্যাংক
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটি হতাশ করেই চলেছে। এই ব্যাংকটির আয় চলতি বছর শতকরা হিসেবে সবচেয়ে বেশি কমেছে।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ৭ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২২ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২৯ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৩৯ পয়সা।
অর্থাৎ অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ২৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
ব্র্যাক ব্যাংক
এই ব্যাংকটির আয় দুই প্রান্তিকেই কমেছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৭০ পয়সা, যা গত বছর একই সময় ছিল ৯০ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে সমন্বিত আয় হয়েছে শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৪৭ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৭২ পয়সা।
অর্থাৎ অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ১৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
প্রাইম ব্যাংক
দারুণ দ্বিতীয় প্রান্তিক কাটিয়েও প্রথম প্রান্তিকের কারণে ব্যাংকটির আয় আগের বছরের তুলনায় কমেছে।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় ৭২ পয়সা। গত বছর একই সময়ে সমন্বিত ইপিএস হয়েছিল ৪২ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ৬১ পয়সা। গত বছরও প্রথম দুই প্রান্তিকে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস ১ টাকা ৭৯ পয়সা ছিল।
অর্থাৎ অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ১০ দশমিক ০৫ শতাংশ।
এসআইবিএল
এই ব্যাংকটি দ্বিতীয় প্রান্তিকে বেশ ভালো করলেও প্রথম প্রান্তিকে আয়ে ভাটার কারণে অর্ধবার্ষিকে আয় কমেছে।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ৩৫ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২১ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ৪৯ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৫৩ পয়সা।
অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
সিটি ব্যাংক
দ্বিতীয় প্রান্তিকে বাড়লেও প্রথম প্রান্তিকে কমে যাওয়ার কারণে ব্যাংকটির আয় কিছুটা কমেছে।
এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ২১ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ১ টাকা ১৯ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ৪ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২ টাকা ১৬ পয়সা।
অর্থাৎ অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
ইউসিবি
এই ব্যাংকটির আয় দ্বিতীয় প্রান্তিকে বাড়লেও অর্ধবার্ষিকে কিছুটা কমেছে।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ৬৮ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৬০ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ৯৪ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৯৮ পয়সা।
অর্থাৎ অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ।
ইবিএল
প্রথম প্রান্তিকে বাড়লেও দ্বিতীয় প্রান্তিকে কম হওয়ায় এই ব্যাংকটির আয় কিছুটা কমেছে।
এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ১০ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ১ টাকা ৩১ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ২১ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২ টাকা ২৮ পয়সা।
অর্থাৎ অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ৩ দশমিক ০৭ শতাংশ।
সমান আয় দুই ব্যাংকের
সাউথইস্ট ব্যাংক
দ্বিতীয় প্রান্তিকে এই ব্যাংকটির আয়েও ভাটা পড়েছে। তবে প্রথম প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির সুবাদে আয় কমেনি।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ২৬ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৩৪ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ৫৬ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল সমান।
এনসিসি ব্যাংক
দ্বিতীয় প্রান্তিকে কিছুটা কমলেও দুই প্রান্তিক মিলিয়ে সমান আয় করেছে এই ব্যাংকটি।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ৭৪ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৮২ পয়সা।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৩৩ পয়সা, যা আগের বছরও ছিল একই পরিমাণ।
আরও পড়ুন:
শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহ মোটেই ভালো কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনের পর নববর্ষের ছুটি শেষে দ্বিতীয় কার্যদিবসেও বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম—দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। মন্দাবস্থা চলছে বাকি দুই সূচকেও। শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১০ এবং বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগের দরপতন হয়েছে। আজ ৯৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই প্রধান্য পেয়েছে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা। বিশেষ করে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১১টির এবং কমেছে ৬৭টির; আর লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। মাত্র ৭টি কোম্পানির ইউনিটের দাম বৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টির।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে আজ ২৬টি কোম্পানির মোট ৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে মারিকো বাংলাদেশ।
ডিএসইতে সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। সারা দিনে মোট ৪৪৬ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যার পরিমাণ ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।
৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় আছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ১৪২.৯০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫৭.১০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে আজ একেবারে তলানিতে ঠাঁই হয়েছে খান ব্রাদার্সের। প্রতিটি শেয়ার ১৩৪.৫০ টাকা দরে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে দাম কমে ১২১.১০ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
চট্টগ্রামেও বড় পতন
.ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় পতন হয়েছে। সারা দিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১০০ পয়েন্ট।
লেনদেন অংশ নেওয়া ২১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৪টির, বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সূচকের পাশাপাশি সিএসইতি আজ লেনদেনও কমেছে। গত কার্যদিবসে ১৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা কমে ৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিন ৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে আর্থিক মূল্যে শীর্ষ শেয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। অপরদিকে ৯.৭৭ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকার পুঁজিবাজারে প্রধান সূচকের উত্থান হলেও সার্বিক সূচক কমেছে চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১ ও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক কমেছে ১১ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩১, কমেছে ৬৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৩০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১৩ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ৭০ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪০, কমেছে ১৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৭৩ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:টানা দুই দিন উত্থানের পর তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও ঢাকার পুঁজিবাজারে বইছে সুবাতাস।
সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় শেয়ার ও ইউনিট ক্রয়-বিক্রয় ছাড়িয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৭ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক ডিএসইএস এবং ব্লু-চিপ কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট করে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগেরই দাম বেড়েছে। ১০৯ কোম্পানির দরপতন এবং ৫৩ কোম্পানির দাম অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৩০ কোম্পানির।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও বইছে চনমনে হাওয়া। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১০২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৭ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৭, কমেছে ৫১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে সিএসইতে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবারের লেনদেনে সূচকের উত্থান হয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে; বেড়েছে সবকটি সূচক।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে পতন দিয়ে শুরু হয়েছে লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে এবং বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপ সূচকের উত্থান হয়েছে ৫ পয়েন্ট।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় দাম বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের। দরবৃদ্ধির ২৪৫ কোম্পানির বিপরীতে দর কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে দিনের শুরুতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৯০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৫ পয়েন্ট। সূচক কমলেও বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া ১০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৫, কমেছে ২৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম দুই ঘণ্টায় লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:গত সপ্তাহের উত্থানের ধারা ধরে রেখে এ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে থাকলেও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক বেড়েছে ৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৯, কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর ৩০ মিনিটে ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি টাকা। ঢাকার মতোই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২২, কমেছে ৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম আধা ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৩০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য