চট্টগ্রামে চারটি ট্রাকস্ট্যান্ড আছে। নিমতলা বিশ্বরোড, মাঝিরঘাট, মাদারবাড়ি ও ফকিরহাট। মাঝিরঘাট ট্রাকস্ট্যান্ডে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাকের যাতায়াত থাকলেও গত বুধবার বিকেল থেকে সংখ্যাটি প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে।
কাঁচামাল নিয়ে ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে আসার অপেক্ষায় ব্যবসায়ী জালাল মোল্লা। একে একে বেশ কয়েকটি ট্রাকের সঙ্গে কথাবার্তা হলো তার। ভাড়ায় মেলে না। দেখলেন ট্রাকস্ট্যান্ডে বিভিন্ন ধরনের পণ্য অপেক্ষমাণ। তবে লোডিংয়ের জন্য ওই সময় ট্রাকের ঘাটতি।
মঙ্গলবার রাতে পাঁচ টন ধারণক্ষমতার যে ট্রাকের ভাড়া ছিল ১৪ হাজার টাকা, সেটি বুধবার রাতে ঢাকায় আসতে দাম হাঁকায় ১৮ হাজার টাকা। দরদাম শেষে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত ১৭ হাজার টাকায় রফা হয়।
ক্ষোভ প্রকাশ করে যাত্রাবাড়ী কাঁচামালের আড়তের এই ব্যবসায়ী জানান, অসন্তোষ থাকলেও গণপরিবহন সেবায় বাস, লঞ্চ কিংবা রেলে যাত্রীপ্রতি ভাড়া নির্ধারিত। পণ্য পরিবহনে সেটি নেই। পণ্য পরিবহন দেশের অর্থনীতি সচল রাখলেও ভাড়া নির্ধারণের প্রক্রিয়াটি পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দিয়ে রাখা। সরকার এখানে হস্তক্ষেপ না করায় পণ্য পরিবহনে ভাড়া নির্ধারিত হয় চাহিদার ভিত্তিতে। ফলে সুযোগ পাওয়ামাত্র ট্রাকের ভাড়া বাড়িয়ে দেয়া হয়।
এই পরিস্থিতি শুধু ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কে নয়, সারা দেশে স্বল্প ও দূরপাল্লার সব ট্রাকস্ট্যান্ডে একই দশা। শুধু জালাল মোল্লা নন, পণ্য পরিবহনে এই বাড়তি খরচ সব ব্যবসায়ীকেই মেনে নিতে হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নতুন করে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার আগে ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডে পাঁচ টন ধারণক্ষমতার ট্রাকপ্রতি ভাড়া ছিল ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। এখন জ্বালানির দাম বাড়ায় ভাড়া বেড়েছে গড়ে ৫ হাজার টাকা। এখন সেই বাড়তি ভাড়ার সঙ্গে পরিবহনের (ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান) ঘাটতি তৈরি হলে অতিরিক্ত গুনতে হয় আরও তিন হাজার টাকা। শুধু তা-ই নয়, পরিবহনের ঘাটতি যত প্রবল হয়, ভাড়াও তত বাড়তে থাকে। এই বাড়তি ভাড়া ব্যবসায়ীরা সমন্বয় করে নেন সংশ্লিষ্ট পণ্যের দামের সঙ্গে। ফলে পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধির সরাসরি প্রভাব পড়ছে পণ্যের দামে। খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ ভোক্তাকে।
সংশ্লিষ্টদের তথ্য মতে, পণ্য পরিবহনে স্বল্প কিংবা দীর্ঘ কোনো দূরত্বে সরকার ভাড়া নির্ধারণ করে না দেয়ায় নিয়মে বাঁধা ছক এখানে চলে না। আবার বেসরকারিভাবেও কোনো একটি সংগঠনের একক নেতৃত্বে এটি পরিচালিত হচ্ছে না। এ খাতে ভাড়া নির্ধারণের ফয়সালা হয়ে থাকে চাহিদার ভিত্তিতে। চাহিদা যত বাড়ে, ভাড়াও তত বাড়ে। একইভাবে ডিজেলের দাম বৃদ্ধি হলে এ খাতের পরিবহন মালিকরা ভাড়াও বাড়ান তাদের ইচ্ছামতো।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সড়কপথে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে পণ্য পরিবহনে ছয় চাকার গাড়িতে ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি ৩৪ টাকা বাড়ানোয় খরচ বেড়েছে ২ হাজার ৪০ টাকা থেকে ২ হাজার ৩৮০ টাকা। কিন্তু পরিবহন কোম্পানিগুলো ভাড়া বাড়িয়েছে গড়ে পাঁচ হাজার টাকা। একইভাবে নৌপথে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় দেড় থেকে দুই হাজার টন পণ্যবাহী জাহাজে টনপ্রতি বাড়তি পরিবহন খরচ হচ্ছে ৫১ থেকে ৫৬ টাকা। কিন্তু ভাড়া বাড়ানো হয়েছে ১০৫ টাকা পর্যন্ত। এভাবে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির সুযোগে পরিবহন কোম্পানিগুলো প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া নিচ্ছে।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, ‘পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধির সঙ্গে ভোক্তার ভোগ ও ব্যবহার্যের সব কিছু জড়িত, যা চক্রাকারে পণ্যের দামে সমন্বয় হয়ে ভোক্তার কাঁধে চাপে। তাই সরকারকে পণ্য পরিবহনেও যৌক্তিক ভাড়া নির্ধারণে নজর দিতে হবে।’
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন মজুমদার জানান, পণ্য পরিবহনে ভাড়া নির্ধারণ সরকার করে না। এটা একেক রোডে একেক রকম। পরিবহনের ধরনেরও পার্থক্য আছে। যার যার সংগঠন উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ভাড়ার একটি ন্যূনতম হার নির্ধারণ করে, যার থেকে কম হতে পারবে না। সেটিই নিয়মিত ভাড়া হিসেবে বিবেচিত হয়।
বাংলাদেশ ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব বলেন, ‘ট্রাকভাড়া অনেকটা কাঁচামালের দামের মতো ওঠানামা করে। এটা নির্ধারিত হয় চাহিদার ভিত্তিতে। কারণ দেশে সড়ক যোগাযোগে যানজট নিত্যসঙ্গী। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় আটকে থাকতে হয়। এ কারণে পণ্যের আড়তগুলোর সামনে প্রায় সব সময় লোডিংয়ের চাহিদা অনুযাযী ট্রাক পাওয়া যায় না। তখন পণ্য লোডিংয়ে চাপ বাড়ে। সেই ক্ষেত্রে ট্রাকের ভাড়াও বাড়ে। এটা শুধু বাংলাদেশেই নয়, অন্যান্য দেশেও হচ্ছে।’
কাঁচামালের ক্ষেত্রেই যত বাড়তি চাহিদা
শাক-সবজি, ফলমূল থেকে মাছ-মাংস কিংবা দুধ, ডিম, পেঁয়াজ, আদা, রসুন ও মসলা– এ সবই হলো কাঁচামাল। দৈনন্দিন জীবনে সব শ্রেণি-পেশার ভোক্তার অতি আবশ্যকীয় পণ্য। সারা দেশ থেকে এসব পণ্যের প্রতিনিয়ত জোগান আসে ঢাকায়।
তবে এসব নিত্যপণ্যের ব্যবসায়ীরা সাধারণত প্রতি সপ্তাহে এক বা দুইবার দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকারি দরে পণ্য আড়তে তোলেন। এরপর তা দুই-তিন বা সপ্তাহজুড়ে বিক্রি করেন। ফলে তাদের নিয়মিত পরিবহনের দরকার পড়ে না। কোনো ট্রাক মালিকের সঙ্গে নিয়মিত চুক্তি না থাকায় ট্রাক মালিক বা চালকরাও তাদের ওপর এককভাবে নির্ভর করেন না। একজনের পণ্য সরবরাহ শেষ হওয়া মাত্র আরেকজনের পণ্য তুলতে ব্যস্ত থাকেন। ফলে এসব কাঁচামাল পরিবহনে ভাড়াও বেশি হয়ে থাকে।
এ কারণে ৩০ থেকে ৪০ টাকার সবজি এখন ৬০ থেকে ৮০ টাকায় উঠেছে। ২০০ টাকা কেজির মাছ ৩২০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। মুরগি ও ডিমের দামে চলছে অস্থিরতা। অন্যান্য ভোগ্যপণ্য ও ব্যবহার্য পণ্যেও দামের বৃদ্ধি ঘটেছে।
চাপ তুলনামূলক কম শিল্পপণ্যে
ব্যতিক্রম দেশে শিল্পোদ্যোক্তাদের বেলায়। তাদের ব্যবসার প্রাণ দেশের বিভিন্ন বন্দর কিংবা সারা দেশের ভোক্তা। শিল্প-কারখানায় ২৪ ঘণ্টাই চলে উৎপাদন। সারা দেশে অভ্যন্তরীণ গন্তব্যে উৎপাদিত পণ্য বা মালামাল সরবরাহ দেয়াই এসব কারখানার মূল লক্ষ্য থাকে।
তাই শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো পরিবহন কোম্পানির সঙ্গে বছরভিত্তিক চুক্তির মাধ্যমে পণ্য পরিবহন করে থাকে। এতে খোলাবাজারের তুলনায় ভাড়ার পরিমাণ কম থাকে। আবার ট্রাকস্ট্যান্ডে ট্রাকের যতই ঘাটতি দেখা দিক, তাতে কোম্পানির পণ্য আনা-নেয়ায় কোনো প্রভাব পড়ে না। নতুন করে দরদামও করতে হয় না।
তবে জ্বালানির দাম বৃদ্ধির কারণে শিল্পপণ্য পরিবহনের আগের চুক্তিতে পরিবর্তন এসেছে। এ ক্ষেত্রে চুক্তির ভাড়া কিছুটা বেড়েছে। তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের ক্ষেত্রে পরিবহন ভাড়া ৫ শতাংশ, খাদ্যপণ্য, রড, ইস্পাত, সিমেন্ট খাতে খরচ বেড়েছে ৫ থেকে ৭ শতাংশ। আমদানি ও রপ্তানিতে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য শিল্পপণ্যেরও একইভাবে দাম বেড়েছে।
নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ-এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম জানান, চট্টগ্রাম বন্দর ও নারায়ণগঞ্জের মধ্যে পণ্য পরিবহনে ছয় চাকার ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানের ভাড়া চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা বেড়েছে। ফলে তাদের নিয়মিত চুক্তিতেও বাড়তি ভাড়া সমন্বয় করতে হয়েছে।
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুরে অগ্রণী ব্যাংকের শাখা থেকে ১০ কোটি ১৩ লাখ টাকা লোপাটের অভিযোগে শাখা ম্যানেজারসহ তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
শুক্রবার তাদের বরখাস্ত করা হয় বলে শনিবার দুপুরে জানান অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী সার্কেলের জেনারেল ম্যানেজার আফজাল হোসেন।
বরখাস্ত হওয়া ব্যাংক কর্মকর্তারা হলেন- কাশিনাথপুর শাখার ব্যবস্থাপক (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) হারুন বিন সালাম, সিনিয়র অফিসার আবু জাফর ও ক্যাশ অফিসার সুব্রত চক্রবর্তী।
আফজাল হোসেন বলেন, ‘ব্যাংক পরিদর্শনে গিয়ে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা খোয়া যাওয়ার সত্যতা পাওয়া যায়। পরে পুলিশে অভিযোগ দিলে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে একটি তদন্ত দল পুরো বিষয়টির তদন্ত করছে। দলটির প্রধান হলেন সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার আনোয়ার হোসেন। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর অভিযুক্ত ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের শুক্রবার বিকেলে পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়। বিচারক আনোয়ার হোসেন সাগর গ্রেপ্তারকৃতদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশসহ ছয়টি দেশে ৯৯ হাজার ১৫০ টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। অন্য দেশগুলো হলো সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভুটান, বাহরাইন, মরিশাস ও শ্রীলঙ্কা। এ ছাড়া দুই হাজার টন সাদা পেঁয়াজ রপ্তানিরও অনুমোদন দিয়েছে ভারত সরকার।
দেশটির ভোক্তা বিষয়ক, খাদ্য ও জন বিতরণ মন্ত্রণালয় শনিবার এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি ও আগের বছরের তুলনায় ২০২৩-২৪ মৌসুমে নিম্ন খরিপ ও রবি ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার পেঁয়াজ রপ্তানির এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রপ্তানির জন্য দেশীয় উৎপাদনকারীরাই পেঁয়াজ সরবরাহ করবেন এবং এর উল্লেখযোগ্য একটি অংশ আসবে বৃহৎ পেঁয়াজ উৎপাদনকারী রাজ্য মহারাষ্ট্র থেকে।
ভারত সরকারের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্যে বলা হয়েছে, আগের বছরের তুলনায় ২০২৩-২৪ সালে নিম্ন খরিপ ও রবি মৌসুমে দেশের ভেতরে চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে অভ্যন্তরীণ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এতে আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এসব দেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করে ভারতীয় এজেন্সি ন্যাশনাল কো-অপারেশন এক্সপোর্টস লিমিটেড (এনসিইএল)।
সর্বনিম্ন দর (এল১) মূল্যে ই-প্লাটফর্মের মাধ্যমে তারা অভ্যন্তরীণ সূত্র থেকে পেঁয়াজ সংগ্রহ করে। তারপর শতভাগ আগাম মূল্য পরিশোধ ভিত্তিতে আলোচনার মাধ্যমে রেট নির্ধারণ করে গন্তব্য দেশগুলোতে এজেন্সি বা সরকার মনোনীত এজেন্সিকে সরবরাহ দিয়ে থাকে।
যেসব দেশ পেঁয়াজ কিনছে সেখানকার দাম, আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ দাম বিবেচনায় নিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে দর নির্ধারণ করে এনসিইএল।
বর্তমানে যে দেশগুলোতে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেয়া হয়েছে সেখানকার চাহিদা অনুযায়ী কোটা বরাদ্দ করা হয়েছে। ভারতে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদনকারী রাজ্য মহারাষ্ট্র। তারাই এনসিইএল-কে রপ্তানির জন্য সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ সরবরাহ দিয়ে থাকে।
এ ছাড়া দুই হাজার টন সাদা পেঁয়াজ রপ্তানিরও অনুমোদন দিয়েছে ভারত সরকার। এসব পেঁয়াজ বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের কিছু দেশে রপ্তানি করা হয়। সাধারণ পেঁয়াজের চেয়ে এই পেঁয়াজের উৎপাদন খরচ বেশি। কারণ এর বীজের দাম অনেক বেশি হয়। প্রয়োজন হয় উন্নত কৃষি রক্ষণাবেক্ষণের। দামেও এর প্রভাব থাকে।
ট্রেডিং করপোরেশন অফ বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, গত ১ মার্চ ভোক্তা পর্যায়ে দেশে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম উঠেছিল ১২০ টাকা। গত বছর একই সময়ে তা ছিল ৩৫ টাকা।
অভ্যন্তরীণ সরবরাহ বাড়াতে এবং মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে গত বছরের ডিসেম্বরে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত। এতে বাংলাদেশের পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। পরে ৮ ডিসেম্বর নিষেধাজ্ঞার সময়কাল ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়।এর মধ্যে ১ মার্চ বাংলাদেশে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছিল প্রতিবেশী দেশটি।
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে পাঁচ দিনে চতুর্থবারের মতো কমল স্বর্ণের দাম। শনিবার ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে ৬৩০ টাকা কমানো হয়েছে। সে হিসাবে ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের ভরি দাঁড়াচ্ছে এক লাখ ১২ হাজার ৯৩১ টাকা।
জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বাজুস এর আগে ২৩, ২৪ ও ২৫ এপ্রিল স্বর্ণের দাম কমানোর ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে ২৩ এপ্রিল তিন হাজার ১৩৮ টাকা, ২৪ এপ্রিল দুই হাজার ৯৯ টাকা এবং ২৫ এপ্রিল ৬৩০ টাকা কমানো হয় প্রতি ভরিতে।
এর আগে টানা তিন দফা স্বর্ণের দাম বাড়ায় বাজুস। এর মধ্যে ৬ এপ্রিল এক হাজার ৭৫০ টাকা, ৮ এপ্রিল এক হাজার ৭৫০ টাকা এবং ১৮ এপ্রিল দুই হাজার ৬৫ টাকা বাড়ানো হয়।
স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠনটি জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের দাম কমেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন নির্ধারিত এই দাম শনিবার বিকেল ৪টা ৫০ মিনিট থেকেই কার্যকর হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণ এক লাখ ১২ হাজার ৯৩১ টাকা, ২১ ক্যারেট এক লাখ সাত হাজার ৭৯৯ টাকা ও ১৮ ক্যারেট ৯২ হাজার ৪০২ টাকা। তবে সব ধরনের স্বর্ণের দাম কমলেও সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম বাড়িয়ে প্রতি ভরি ৭৬ হাজার ৮৪২ টাকা করা হয়েছে।
স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী বর্তমানে ২২ ক্যারেটে প্রতি ভরি রুপার দাম দুই হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের দাম দুই হাজার ছয় টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম দুই হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম এক হাজার ২৮৩ টাকা।
আরও পড়ুন:পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখায় প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগে শাখা ম্যানেজারসহ ৩ কর্মকর্তাকে আটকের পর কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আনোয়ার হোসেন সাগর। এদিন দুপুরে তাদের আদালতে প্রেরণ করে সাঁথিয়া থানা পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের জিআরও এএসআই মাহবুবুর রহমান জানান, বিকেলে সাঁথিয়া থানা থেকে এনে তাদের আদালতে তোলা হয়। এ সময় কেউ তাদের জন্য জামিন আবেদন করেননি। ফলে আদালত তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আটককৃতরা হলেন- অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার ব্যবস্থাপক (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) সুজানগর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা হারুন বিন সালাম, সিনিয়র অফিসার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর এলাকার বাসিন্দা আবু জাফর এবং ক্যাশিয়ার বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সুব্রত চক্রবর্তী।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী বিভাগীয় অফিস থেকে ৫ সদস্যবিশিষ্ট অডিট টিম কাশিনাথপুর শাখায় অডিটে আসে। দিনভর অডিট করে তারা ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আর্থিক অনিয়ম পান। এ বিষয়ে সাঁথিয়া থানায় ওই শাখার ম্যানেজার (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) হারুন বিন সালাম, ক্যাশ অফিসার সুব্রত চক্রবর্তী ও সিনিয়র অফিসার আবু জাফরকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দিলে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে তাদের তিনজনকে আটক করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অডিটে অনিয়ম ধরা পড়লে তাদের আটক করে সাঁথিয়া থানা পুলিশকে খবর দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আজ (শুক্রবার) দুপুরে জিডির ভিত্তিতে আটককৃতদের আদালতে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে দুদক আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আরডিআরএস বাংলাদেশ-এর ট্রাস্টি বোর্ডের নতুন চেয়ারপারসন নির্বাচিত হলেন ফারুক আহমেদ।
ট্রাস্টি বোর্ডের ৬৬তম সভায় এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ফারুক আহমেদ ২৭ এপ্রিল থেকে পরবর্তী তিন বছরের জন্য চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বাস্থ্য বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিপ্রাপ্ত ফারুক আহমেদের উন্নয়ন খাতে রয়েছে বিস্তৃত অভিজ্ঞতা।
তিনি এক সময় ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক ছিলেন এবং ঢাকায় বিশ্বব্যাংক কার্যালয়ে বিভিন্ন পদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জেনেভাভিত্তিক গ্যাভি, দ্যা ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স (এঅঠও)-এর বোর্ড সদস্য ছিলেন, এছাড়া তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং বিশ্বব্যাংকের বিভিন্ন কমিটিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ফারুক আহমেদ সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানি (এসএমসি) এন্টারপ্রাইজের পরিচালনা পরিষদের একজন সদস্য। তিনি বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ ওয়ার্কিং গ্রুপেরও একজন সদস্য।
ফারুক আহমেদ ২০২০ সালের ১৬ মার্চ থেকে আরডিআরএস-এর ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
আরডিআরএস বিশ্বাস করে, ফারুক আহমেদের নেতৃত্বে সংস্থাটি দেশজুড়ে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি অব্যাহত রাখতে এবং এ সম্পর্কিত কার্যক্রমকে বেগবান করতে সক্ষম হবে। প্রেস রিলিজ
উৎসবমুখর পরিবেশে বৃহস্পতিবার উদযাপন করা হয়েছে ১৩৭তম বন্দর দিবস।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে বন্দর ভবন চত্বরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য ও বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা উত্তোলন করেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল।
ওই সময় বোর্ড সদস্য (প্রকৌশল) কমোডর মোহাম্মদ মাহবুবুবর রহমানসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পতাকা উত্তোলনকালে চট্টগ্রাম বন্দরে অবস্থানরত সব জলযান ও জাহাজ থেকে একনাগাড়ে এক মিনিট হুইসেল বাজানো হয়। এরপর বন্দর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোহায়েল উপস্থিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে বন্দর দিবসের কেক কাটেন ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দর অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্মচারী পরিষদ, বন্দরের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার ও অন্যান্য সংগঠনের নেতারা।
কর্ণফুলীর মোহনায় ১৩৬ বছর আগে ২৫ এপ্রিল প্রতিষ্ঠা হয়েছিল দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর। ইংরেজ শাসনামলের প্রথম দিকে ইংরেজ ও দেশীয় ব্যবসায়ীরা বার্ষিক এক টাকা সালামির বিনিময়ে নিজ ব্যয়ে কর্ণফুলী নদীতে জেটি নির্মাণ করেন। পরে ১৮৬০ সালে প্রথম দুটি অস্থায়ী জেটি নির্মাণ করা হয়। ১৮৭৭ সালে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার গঠিত হয়।
১৮৮৮ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে দুটি মুরিং নির্মাণ হয়। একই বছরের ২৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার কার্যকর হয়। এরপর ১৮৯৯ থেকে ১৯১০ সময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার এবং আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে যুক্তভাবে চারটি স্থায়ী জেটি নির্মাণ করে। ১৯১০ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে রেলওয়ের সংযোগ সাধন হয়।
১৯২৬ সালে চট্টগ্রাম বন্দরকে মেজর পোর্ট ঘোষণা করা হয়। সেই থেকেই চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রেখে আসছে।
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে টানা তৃতীয় দিনের মতো কমেছে স্বর্ণের দাম। ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ভরিতে কমেছে ৬৩০ টাকা। সে হিসাবে স্বর্ণের ভরি দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫৬১ টাকা। আগের দিন বুধবার তা ছিল এক লাখ ১৪ হাজার ১৯১ টাকা।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়।
স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠনটি জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের দাম কমেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা ৫০ মিনিট থেকে স্বর্ণের নতুন নির্ধারিত দাম কার্যকর হবে।
বাজুস এর আগে চলতি এপ্রিল মাসের ৬, ৮ ও ১৮ তারিখ তিন দফা স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে ভালো মানের স্বর্ণের ভরিতে ৬ এপ্রিল ১ হাজার ৭৫০ টাকা, ৮ এপ্রিল ১ হাজার ৭৫০ টাকা ও ১৮ এপ্রিল দুই হাজার ৬৫ টাকা বাড়ানো হয়। মাঝে ২০ এপ্রিল ভরিতে ৮৪০ টাকা দাম কমানোর পরদিন ২১ এপ্রিল আবার ৬৩০ টাকা বাড়ায় বাজুস।
এবার শুরু হয় দাম কমানোর পালা। সবশেষ দাম বাড়ানোর দু’দিন পর ২৩ এপ্রিল ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে তিন হাজার ১৩৮ টাকা ও ২৪ এপ্রিল দু’হাজার ৯৯ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয় বাজুস। আর বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ভরিতে ৬৩০ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ টানা তিন দিনে স্বর্ণের দাম ভরিতে কমেছে পাঁচ হাজার ৮৬৮ টাকা।
সোনার দামে এমন উত্থান-পতনের কারণ জানতে চাইলে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা এখন নতুন পদ্ধতি বা পলিসি অনুসরণ করে গোল্ডের দাম নির্ধারণ করি। সেটি হচ্ছে বিশ্ব স্বীকৃত ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল পলিসি।
‘এতদিন আমরা আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে গোল্ডের দাম নির্ধারণ করতাম। সেক্ষেত্রে বিশ্ববাজারে যখন স্বর্ণের দাম কমত তখন আমরা কমাতাম। আর যখন বাড়ত তখন বাড়াতাম।’
তিরি আরও বলেন, ‘এখন আমরা আমাদের স্বর্ণের সবচেয়ে বড় বাজার তাঁতীবাজারের বুলিয়ান মার্কেট ফলো করে দর নির্ধারণ করি। এই বাজারে স্বর্ণের দাম ঘণ্টায় ঘণ্টায় উঠা-নামা করে। সেটা অনুসরণ করে আমরা নতুন দর নির্ধারণ করে থাকি। সেক্ষেত্রে দিনে দু’বারও গোল্ডের দাম বাড়ানো-কমানো হতে পারে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য