নতুন করে যে ৩০টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন দর বা তুলে নেয়া হয়েছে, তার প্রতিটিই দর হারিয়েছে। এসব কোম্পানির দর হারানোর প্রান্তসীমা ছিল দুই শতাংশ। আর একটি ছাড়া সবগুলোই এই পরিমাণ দর হারিয়েছে।
এর আগে ফ্লোর তুলে দেয়া ৬৬ কোম্পানির মতোই এই কোম্পানির ক্ষেত্রেও একটি প্রবণতা লক্ষ্যণীয়। আর তা হলে ফ্লোর প্রাইসে কোনো কোনোদিন একটি শেয়ারও হাতবদল না হলেও ‘মুক্ত’ হয়ে যাওয়ার পর সব কটি কোম্পানিই লেনদেন হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি দ্বিতীয় পর্যায়ে ৩০টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। এরপর প্রথম লেনদেন হয়েছে রোববার।
গত বছরের মার্চে দেশে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ার পর শেয়ার মূল্যে দেখা দেয়া ধস ঠেকাতে এই ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয়া হয় সবগুলো শেয়ারের। কিন্তু শেয়ারের আয়, মৌলভিত্তি বিবেচনায় না এনে কেবল বাজারমূল্যের ভিত্তিতে এই সর্বনিম্ন দাম দেয়া হয়।
পরে দেখা যায়, বহু কোম্পানি বিপুল পরিমাণ লোকসান দিচ্ছে। আর এ কারণে বেঁধে দেয়া সেই মূল্য অযৌক্তিক হয়ে যায় আর সেই দামে শেয়ার হাতবদল হচ্ছিল না বললেই চলে।
এই পরিস্থিতিতে প্রথমে ৭ এপ্রিল ৬৬টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়া হয়। সেই কোম্পানিগুলোর প্রায় অর্ধেক এখন বেঁধে দেয়া ফ্লোর প্রাইসের ওপরে উঠে গেছে। আর প্রতিদিনই বেশ ভালো পরিমাণে লেনদেন হচ্ছে।
এর পরেও আরও বেশ কিছু কোম্পানি থেকে যায়, যেগুলো লেনদেন হচ্ছিল না বললেই চলে। এর মধ্যে দ্বিতীয় ধাপে তোলা হয় ৩০টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, পুঁজিবাজারে কোনো ফ্লোর প্রাইস রাখা হবে না। কিন্তু একদিনে সবগুলো তুলে দিলে বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে, এই আশঙ্কায় তারা ধাপে ধাপে এই সিদ্ধান্ত নেবেন।
যেসব কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস কমানো হয়েছে, সেগুলোর একটি বিশেষ সুবিধা আছে। তা হলো অন্যগুলোর মতোই এগুলোর দাম ১০ শতাংশ বাড়তে পারবে, কিন্তু কমতে পারবে দুই শতাংশ।
কিন্তু শতকরা হিসাবের কারণে কোনো কোনো কোম্পানির দাম কমতে পারে দুই শতাংশের কম।
বিএসইসি চেয়ারম্যান নিউজবাংলার সঙ্গে আলাপকালে জানিয়েছিলেন, হঠাৎ করে এই সুবিধা উঠিয়ে দেয়া হলে তা পুঁজিবাজারের জন্য ক্ষতির কারণ হবে। এজন্য পুঁজিবাজার যখন স্বাভাবিক হবে, বিনিয়োগকারীরা বাজারের প্রতি আস্থাশীল হবে তখন আস্তে আস্তে এসব সুযোগ উঠিয়ে দেয়া হবে।
কোনটার দাম কত কমল
রেনউইক যগেশ্বর ফ্লোর প্রাইস ছিল ৯০০ টাকা। রোববার কোম্পানিটির শেয়ার দর দিনের সর্বোচ্চ ২ শতাংশ কমে হয়েছে ৮৮২ টাকা।
ফ্লোর উঠানোর আগে বৃহস্পতিবার লেনদেন ছিল আটটি। সেটি বেড়ে হয়েছে ২১টি।
মুন্নু এগ্রোর দর ফ্লোর প্রাইস ৭৯৪ টাকা ৮০ পয়সা থেকে দুই শতাংশ কমে হয়েছে ৭৭৮ টাকা ৯০ পয়সা।
ফ্লোরে থাকার শেষ দিন কোনো শেয়ার হাতবদল না হলেও আজ লেনদেন হয়েছে ৩১টি।
নর্দার্ন জুট কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস ছিল ৩২৪ টাকা ৯০ পয়সা। এটিও দর হারিয়েছে ২ শতাংশ। আজ ৩০৭টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে ৩১৮ দশমিক ৪০ পয়সায়। ফ্লোর উঠার আগে লেনদেন ছিল ১৮টি।
ইস্টার্ন কেবলের ফ্লোর প্রাইস ছিল ১৪০ টাকা ১০ পয়সা। দুই টাকা ৮০ পয়সা বা দুই শতাংশ কমে এখন দাম হয়েছে ১৩৭ টাকা ৩০ পয়সা।
ফ্লোর উঠার আগের দিন ১১৬টি শেয়ার হাতবদল হলেও সেটি এখন বেড়ে হয়েছে এক হাজার ৫৪৫টি
গত অর্থবছরে বিপুল পরিমাণ লোকসান দেয়া বাটা শুর ফ্লোর প্রাইস ৬৯৩ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হচ্ছিল না বললেই চলে।
ফ্লোর মুক্ত দিনে ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ কমে দাম হয়েছে ৬৭৯ দশমিক ৪০ পয়সা। লেনদেনও হয়েছে প্রায় তিন গুণ।
বৃহস্পতিবার হাতবদল হয়েছেল ৭৯৯টি। আর রোববার হয়েছে দুই হাজার ১৯৭টি।
কোহিনুর ক্যামিকেলের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৪৭২ টাকা ৮০ পয়সা। এর দরও ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ কমে হয়েছে ৪৬৩ টাকা ৪০ পয়সা।
ফ্লোরে থাকার শেষ দিন কোনো লেনদেন না হওয়া কোম্পানিটির জট খুলেছে। ৫১৬টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
ওয়াটা ক্যামিকেল ফ্লোর প্রাইস ছিল ৩০৬ টাকা ৮০ পয়সা। ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ কমে দাম হয়েছে ৩০০ টাকা ৭০ পয়সা।
আগের দিন ১১৬টি শেয়ার হাতবদল হলেও এর লেনদেন বেড়ে হয়েছে এক হাজার ৫৪৮টি।
এপেক্স স্পিনিং এর দর ১৩০ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ কমে হয়েছে ১২৮ টাকা ১০ পয়সা।
ফ্লোরের শেষ দিন কোনো লেনদেন না হওয়া কোম্পানিটিরও জট খুলেছে। দাম কমার পর হাতবদল হয়েছে ৪০০টি।
সিভিও পেট্রো ক্যামিকেলের দাম ১১৫ টাকা ৪০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ কমে হয়েছে ১১৩ টাকা ১০ পয়সা।
আগের দিন মাত্র তিনটি শেয়ার হাতবদল হলেও ফ্লোর থেকে মুক্ত হওয়ার পর হাতবদল হয়েছে ৪১১টি।
স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের দর ৩০৭ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমে হয়েছে ৩০১ টাকা ৮০ পয়সা।
তবে এটির লেনদেন কমেছে। আগের দিন ১২০টি শেয়া হাতবদল হলেও আজ হয়েছে ৯২টি।
সোনালী পেপারের দাম ২৭৩ টাকা থেকে ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমে হয়েছে ২৬৭ টাকা ৬০ পয়সা।
এটিরও লেনদেন কমেছে। আগের দিন ২০টি হাতবদল হলেও আজ হয়েছে দুটি।
কে অ্যান্ড এর দর ২০৭ টাকা ৪০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমে হয়েছে ২০৩ টাকা ৩০ পয়সা।
এটিরও লেনদেন কমেছে। আগের দিন লেনদেন হয় ৮৬৯টি। আজ হয়েছে একটি।
স্টাইলক্রাফটের দর ১৪৬ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমে হয়েছে ১৪৩ টাকা ৩০ পয়সা।
আগের দিন ফ্লোর প্রাইসে দুই হাজার ৯৩টি শেয়ার লেনদেন হলেও এটি আজ হাতবদল হয়েছে দ্বিগুণ। লেনদেন হয়েছে চার হাজার ২৯২টি।
বিডিঅটোকারের দর ১৪৭ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ কমে হয়েছে ১৪৪ টাকা ৪০ পয়সা।
ফ্লোর প্রাইসের শেষ দিন তিনটি শেয়ার হাতবদল হলেও মুক্ত হওয়ার পর হাতবদল হয়েছে ৩৩৫টি।
মুন্নু সিরামিকের দর ১২৬ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ কমে হয়েছে ১২৪ টাকা ৩০ পয়সা।
ফ্লোর প্রাইসের শেষ দিন ৭৪ শেয়ার হাতবদল হলেও মুক্ত হওয়ার পর হাতবদল হয়েছে এক হাজার ২৫১টি।
বঙ্গজের দাম ফ্লোর প্রাইস ১১৬ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ কমে হয়েছে ১১৪ টাকা ৬০ পয়সা।
এই কোম্পানিরও লেনদেন বেড়েছে। আগের দিন ফ্লোর প্রাইসে এক হাজার ৭২৬টি শেয়ার লেনদেন হলেও এটি আজ হাতবদল হয়েছে দুই হাজার ৪০৬টি।
এপেক্স ট্যানারির দাম ফ্লোর প্রাইস ১০৬ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ কমে হয়েছে ১০৪ টাকা ৮০ পয়সা।
ফ্লোর প্রাইসের শেষ দিন ১০০টি শেয়ার হাতবদল হলেও মুক্ত হওয়ার পর হাতবদল হয়েছে দুই হাজার ২২৯টি।
সমতা লেদারের দর ফ্লোর প্রাইস ১০৬ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ কমে হয়েছে ১০৪ টাকা ৮০ পয়সা।
আগের দিন ফ্লোর প্রাইসে একটি শেয়ার লেনদেন হলেও এটি আজ হাতবদল হয়েছে ১৭টি।
এপেক্স ফুটওয়্যারের দর ফ্লোর প্রাইস ২১৯ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ কমে হয়েছে ২১৫ টাকা।
এই কোম্পানির এটিরও লেনদেন কমেছে। আগের দিন তিন হাজার ৩৫১টি শেয়ার হাতবদল হলেও আজ হয়েছে দুই হাজার ৪৬৭টি।
আজিজ পাইপের দর ফ্লোর প্রাইস ৯৭ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৫ শতাংশ কমে হয়েছে ৯৫ টাকা ৬০ পয়সা।
ফ্লোরে থাকার শেষ দিন ৭১০ শেয়ার হাতবদল হলেও মুক্ত হওয়ার পর লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৪৯৫টি।
ন্যাশনাল টিউবের দর ১০৩ টাকা ১০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৪ শতাংশ কমে হয়েছে ১০১ টাকা ১০ পয়সা।
আগের দিন ১৪১টি শেয়ার হাতবদল হলেও আজ লেনদেন হয়েছে ৭০৮টি।
ওরিয়ন ইনফিউশনের দর ৭২ টাকা ১০ পয়সা থকে ১ দশমিক ৯৪ শতাংশ কমে হয়েছে ৭০ টাকা ৭০ পয়সা।
এটির লেনদেনও কমেছে। ফ্লোরে থাকার শেষ দিন ১০ হাজার শেয়ার হাতবদল হলেও দর কমার দিন লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ৩৭৪টি।
ন্যাশনাল পলিমারের দর ৫৬ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৪ শতাংশ কমে হয়েছে ৫৫ টাকা ৫০ পয়সা।
লেনদেন কমেছে এটিরও। ফ্লোরে থাকার শেষ দিন হাতবদল হয়েছে দুই লাখ ৫৩ হাজার ৩৫১টি। তবে আজ হাতবদল হয়েছে ৩৮ হাজার ১০৯টি।
জেমিনি সি ফুডের দর ফ্লোর প্রাইস ১৪৪ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৪ শতাংশ কমে হয়েছে ১৪১ টাকা ৫০ পয়সা।
এটির লেনদেনও কমেছে। ফ্লোরে থাকার শেষ দিন ৭১৮টি শেয়ার হাতবদল হলেও দর কমার দিন লেনদেন হয়েছে ৪৪৭টি।
এসকে ট্রিমসের দর ৬২ টাকা ২০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৩ শতাংশ কমে হয়েছে ৬১ টাকা।
ফ্লোরের শেষ দিন একটি শেয়ারও লেনদেন না হওয়া কোম্পানিটির ১৬টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
লিগ্যাসি ফুটওয়ারের দর ৬২ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯১ শতাংশ কমে হয়েছে ৬১ টাকা ৭০ পয়সা।
ফ্লোরে থাকার শেষ দিন এটিরও কোনো শেয়ার লেনদেন হয়নি। তবে আজ হাতবদল হয়েছে আট হাজার ১১৯টি।
সিপার্লের দর ফ্লোর প্রাইস ৭৯ টাকা ১০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯০ শতাংশ কমে হয়েছে ৭৭ টাকা ৭০ পয়সা।
ফ্লোরে থাকার শেষ দিন এটিরও কোনো শেয়ার লেনদেন হয়নি। তবে আজ হাতবদল হয়েছে ১১টি।
হাক্কানি পাল্পের দর ফ্লোর প্রাইস ৭৪ টাকা থেকে ১ দশমিক ৮৯ শতাংশ কমে হয়েছে ৭২ টাকা ৬০ পয়সা।
এটির লেনদেনও কমেছে। ফ্লোরে থাকার শেষ দিন এক হাজার ১০১টি শেয়ার হাতবদল হলেও দর কমার দিন লেনদেন হয়েছে ২২টি।
ডেফোডিল কম্পিউটারের দর ফ্লোর প্রাইস ৫৩ টাকা ৪০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৮৭ শতাংশ কমে হয়েছে ৫২ টাকা ৪০ পয়সা।
এটির লেনদেনও কমেছে। ফ্লোরে থাকার শেষ দিন ২৯ হাজার ৯০টি শেয়ার হাতবদল হলেও দর কমার দিন লেনদেন হয়েছে ১৭ হাজার ২১টি।
একমাত্র শেয়ার হিসেবে এটলাসের দর সর্বনিম্ন সীমা থেকে কম কমেছে। কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস ছিল ১০৯ টাকা ৪০ পয়সা। দাম কমতে পারত ১০৭ টাকা ৩০ পয়সা পর্যন্ত। কিন্তু দিন শেষে দাম হয়েছে ১০৮ টাকা ৯০ পয়সা।
তবে এর লেনদেন হয়েছে ন্যূনতম। আগের দিন দুটি শেয়ার হাতবদল হওয়া কোম্পানিটির তিনটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে এটি।
‘দাম কমাই স্বাভাবিক’
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক প্রধন গবেষণা কমর্কতা দেবব্রত সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এতদিন লেনদেন না হওয়ার কারণ কোম্পানিগুলোর ফ্লোর প্রাইস ছিল অতিমূল্যায়িত। এখন দর কমবে, বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কিনবে।’
আরও পড়ুন:পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুরে অগ্রণী ব্যাংকের শাখা থেকে ১০ কোটি ১৩ লাখ টাকা লোপাটের অভিযোগে শাখা ম্যানেজারসহ তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
শুক্রবার তাদের বরখাস্ত করা হয় বলে শনিবার দুপুরে জানান অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী সার্কেলের জেনারেল ম্যানেজার আফজাল হোসেন।
বরখাস্ত হওয়া ব্যাংক কর্মকর্তারা হলেন- কাশিনাথপুর শাখার ব্যবস্থাপক (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) হারুন বিন সালাম, সিনিয়র অফিসার আবু জাফর ও ক্যাশ অফিসার সুব্রত চক্রবর্তী।
আফজাল হোসেন বলেন, ‘ব্যাংক পরিদর্শনে গিয়ে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা খোয়া যাওয়ার সত্যতা পাওয়া যায়। পরে পুলিশে অভিযোগ দিলে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে একটি তদন্ত দল পুরো বিষয়টির তদন্ত করছে। দলটির প্রধান হলেন সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার আনোয়ার হোসেন। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর অভিযুক্ত ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের শুক্রবার বিকেলে পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়। বিচারক আনোয়ার হোসেন সাগর গ্রেপ্তারকৃতদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন:জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কাদের বলেছেন, ‘তিন বিদেশি বড় শক্তি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে কাজ করেছিল। আরও বেশ কয়েকটি বিদেশি শক্তি আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করার জন্য প্রস্তুত ছিল।’
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে শনিবার জাপার কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, ‘৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বিদেশি বন্ধুদের সঙ্গে বৈঠক করে পরিষ্কার বুঝেছি, তিনটি বিদেশি বড় শক্তি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে এবং নির্বাচন সফল করতে কাজ করে যাচ্ছে। শুধু তারা নয়, আরও বেশ কয়েকটি বিদেশি শক্তি আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করতে প্রস্তুত ছিল।’
নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রশ্নে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছিল জানিয়ে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, নির্বাচন বন্ধ করে কোনো দেশে সরকার পরিবর্তন সম্ভব নয়। তাই জাতীয় পার্টি নিয়মতান্ত্রিকভাবে রাজনীতি করছে।
‘নির্বাচনের আগে বর্ধিত সভায় নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মতামত দেয়া হয়েছিল। ভোটে না গেলে ভবিষ্যতে জাতীয় পার্টিকে টিকিয়ে রাখা যাবে কী না সন্দেহ ছিল। তাই নির্বাচনে গিয়েছি।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা আমার ওপর আস্থা রেখেছেন। ভোটের আগ মুহূর্তে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তখন সুষ্ঠুভাবে পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করেছি। মনে হয়েছে, বিভিন্ন বিদেশি শক্তি বিভিন্নভাবে নানা দিকে নিচ্ছিল।
‘আর বিএনপির আন্দোলন নিয়ে পরিষ্কার ধারণা ছিল, তারা সফল হবে না। আন্দোলন চলাকালে তৃতীয় শক্তি এসে সরকার পরিবর্তন করে- এমন ইতিহাস বাংলাদেশে নেই। ফলে বিএনপি এক কিংবা ১০ লাখ বা এক কোটি লোক নিয়ে রাস্তায় নামলেও তাদের আন্দোলন সফল হবে না, তা বুঝতে পেরেছিলাম।’
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিএনপি ও জামায়াত আন্দোলনে পরাস্ত হয়ে জাতীয় পার্টিকে দোষ দিচ্ছে। তবে এটা ঠিক যে নির্বাচন ভালো হয়নি। সরকার জাতীয় পার্টিকে গৃহপালিত দল হিসেবে দেখতে চায়। তবে তা কখনও সম্ভব নয়। জাতীয় পার্টি কখনোই অনুগত বিরোধী দল ছিল না এবং আমরা গৃহপালিত বিরোধী দল হতে রাজি নই।’
তীব্র গরম থেকে বাঁচতে ও বৃষ্টির আসায় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় নেচে গেয়ে ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করেছেন স্থানীয়রা। লোকজন।
উপজেলার চন্দ্রখানা বালাটারি গ্রামে শনিবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত বিয়ের অনুষ্ঠান চলে।
ওই এলাকার বাসিন্দা সাহাপুর আলীর স্ত্রী মল্লিকা বেগমের আয়োজনে বিয়েতে অসংখ্য নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। নাচ গানের মধ্যে দিয়ে ব্যাঙের বিয়ে শেষে বরণ ডালায় ব্যাঙ দুটিকে নিয়ে পুরো গ্রাম ঘুরে বেড়ান তারা। এ সময় গ্রামবাসীদের কাছ থেকে চাল ডাল সংগ্রহ করে বিয়েতে অংশগ্রহণকারীদের খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়।
বিয়ের আয়োজনকারী মল্লিকা বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কিছুদিন ধরে তীব্র গরম। তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কারণে আমরা কষ্টে রয়েছি; গ্রামের মানুষজন অস্তিত্বতে আছে। কেউই কোনো কাজ কামাই করতে পারছেন না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আগের যুগের মানুষরা ব্যাঙের বিয়ে দিলে বৃষ্টি হতো। সেই বিশ্বাস থেকেই আজ ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করেছি।’
বিয়ে দেখতে আসা জাহিদ নামের একজন বলেন, “আমার জীবনে প্রথম ব্যাঙের বিয়ে দেখলাম। খুবই ভালো লেগেছে। ‘বৃষ্টির জন্য ব্যাঙের বিয়ে’ বিষয়টি প্রথম জানলাম।”
বৃদ্ধ আজিজুল হক বলেন, ‘বৃষ্টি না হওয়ার কারণে আবাদের ক্ষতি হচ্ছে। তাই বৃষ্টির আশায় ব্যাঙের বিয়েতে অংশগ্রহণ করেছি।’
রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘কুড়িগ্রামে বেশ কিছুদিন ধরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। আজ (শনিবার) জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।’
আরও পড়ুন:মুন্সীগঞ্জ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে এক বছরের শিশু হুমাইরা আক্তারের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকালে সদর উপজেলার মদিনা বাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মদিনা বাজারের উত্তর পাশে খানকা শরীফের সামনের সড়কে দুটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে।
এ সময় রাস্তার পাশে এক বছরের শিশু সন্তান হুমাইরাকে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা হাবিবা বেগমের ধাক্কা খান অটোরিকশার সঙ্গে। এতে শিশু হুমাইরা মায়ের কোল থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। শিশুটিকে দ্রুত মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় অটোরিকশা দুটি আটক করা হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া দুই চালককে আটকের চেষ্টা চলছে।
চলমান তাপপ্রবাহে সারা দেশের সঙ্গে পুড়ছে রাজধানী ঢাকাও। প্রচণ্ড গরমে দুর্বিষহ নগর জীবন। এ অবস্থায় রাজধানীর সড়ক-মহাসড়কে পানি ছিটাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। ডিএনসিসির চিফ হিট অফিসারের পরামর্শে এমন উদ্যোগ নিয়েছে সিটি কর্তৃপক্ষ।
শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বায়ু দূষণ রোধ ও তীব্র দাবদাহে শহরকে ঠাণ্ডা রাখতে ডিএনসিসির ওয়াটার স্প্রে (পানি ছিটানো) কার্যক্রম পরিদর্শন করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।
এ সময় তিনি বলেন, ‘দুটি স্প্রে ক্যানন প্রধান সড়কে পানি ছিটাবে। এগুলো বেশ বড় হওয়ায় গলির সড়কে প্রবেশ করতে পারবে না৷ গলির সড়কে পানি ছিটানোর জন্য দশটি ব্রাউজার কাজ করবে। এগুলোর মাধ্যমে সড়কগুলো ভিজিয়ে ঠাণ্ডা রাখা হবে।
‘এছাড়াও ডিএনসিসির পার্কগুলোতে স্প্রে ক্যাননের মতো কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছি। এক সপ্তাহের মধ্যে পার্কগুলোতে কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থা করা হবে।’
এ সময় তিনি বলেন, ‘চিফ হিট অফিসার (সিএইচও) বুশরা আফরিনের পরামর্শে চলমান তীব্র দাবদাহে জনগণকে স্বস্তি দিতে সড়কে পানি ছিটানো এবং ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডে বিনামূল্যে খাবার পানি সরবরাহের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনটি বিশেষ ভ্যানগাড়ি (৫০০ লিটার পানির ট্যাংক সংবলিত) পথচারীদের পানি পান করানোর জন্য নামানো হয়েছে। ভ্যানগুলো বিশুদ্ধ খাবার পানি নিয়ে ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরবে। এই ভ্যানগুলো ছোট আকারে করা হয়েছে যেন শহরের অলিগলিতে প্রবেশ করতে পারে।’
চিফ হিট অফিসারের কার্যক্রম সম্পর্কে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘চিফ হিট অফিসার আমাদের পরামর্শ দিচ্ছেন। হিট অফিসার একজন একক ব্যক্তি। তিনি তো কাজগুলো বাস্তবায়ন করবেন না। তিনি পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু কাজগুলো আমাদের সবাইকে করতে হবে। তার পরামর্শেই জনগণকে স্বস্তি দিতে আমরা এই কাজগুলো করছি।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অনেকে বলছেন যে চিফ হিট অফিসার সিটি করপোরেশন থেকে বেতন পাচ্ছেন। বাস্তবে সিটি করপোরেশন থেকে তিনি একটি টাকাও পান না। এমনকি সিটি করপোরেশনে তার কোনো বসার ব্যবস্থাও নেই।
‘হিট অফিসার নিয়োগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান অ্যাড্রিয়েন আরশট-রকফেলার ফাউন্ডেশন রেসিলিয়েন্স সেন্টার (আরশট-রক)। প্রতিষ্ঠানটি সারা বিশ্বে সাতজন চিফ হিট অফিসার নিয়োগ করেছে এবং তারা সবাই নারী।’
ওয়াটার স্প্রে পরিদর্শনকালে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসি'র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী ও প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান উপস্থিত ছিলেন।
মুন্সীগঞ্জে হিটস্ট্রোকে সাখাওয়াত হোসেন মুকুল নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি প্রাণ-আরএফএল কোম্পানির মাঠ পর্যায়ের বিপনন বিভাগে কর্মরত ছিলেন।
২৭ বছর বয়সী মুকুলের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলায়।
প্রাণ-আরএফএল কোম্পানির মুন্সীগঞ্জ শহরের সেলস রিপ্রেজেনটেটিভ মোহাম্মদ রোকন জানান, শনিবার দুপুরে মুন্সীগঞ্জ শহরের অদূরে মুন্সীরহাট এলাকায় মাঠ পর্যায়ে কর্মরত অবস্থায় তীব্র গরমের কারণে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন মুকুল। সঙ্গে সঙ্গে তাকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালে নিয়ে এলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. ফেরদৌস হাসান জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগে পথেই তার মৃত্যু হয়েছে। নিহতের হিটস্ট্রোকের লক্ষণ রয়েছে বলে জানান তিনি।
নিহতের মরদেহ তার নিজ জেলায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
আকস্মিক কালবৈশাখীর তাণ্ডবে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ও শমশেরনগর ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে আরও বেশ কিছু বাড়িঘর। ঝড়ের পর খোলা আকাশের নিচে দিনযাপন করছে অর্ধশতাধিক পরিবার।
এ ছাড়াও গাছপালা উপড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙেছে এবং তার ছিঁড়ে পড়ে। এতে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে ওই অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
শুক্রবার রাত ৩টার দিকে এই ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হয়। প্রায় সাড়ে ১৫ ঘণ্টা পর শনিবার বিকেল ৪টার দিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কালবৈশাখীর তাণ্ডবে উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের পতনঊষার, ধূপাটিলা, উসমানগড়, ব্রাহ্মণঊষারসহ ৮টি গ্রামের প্রায় শতাধিক ঘর এবং শমশেরনগর ইউনিয়নের কেছুলুটি, ভাদাইরদেউল গ্রামে আরও কয়েকটি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। অসংখ্য গাছ-বাঁশ উপড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ও লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
পতনঊষার ইউনিয়নের নেছার মিয়া, ময়নুল মিয়া, খুশবা বেগম, লিপি বেগম, রহমান মিয়া, সুফিয়ান মিয়া, কালাম মিয়া, আনু মিয়া, ফখরুল মিয়াসহ অসংখ্য পরিবার দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন।
ক্ষতিগ্রস্তরা বলেন, গতরাতে কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে তীব্র শিলাবৃষ্টি হয়। মুহুর্তের মধ্যে তাদের ঘরবাড়ি উড়িয়ে নিয়ে যায়। আমরা এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি। সহোযোগিতা না পেলে আমাদের রাস্তায় থাকতে হবে।’
পতনঊষার ইউপি সদস্য তোয়াবুর রহমান জানান, আকস্মিক ঝড়ে পতনঊষার গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যাদের বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে সেসব দরিদ্র পরিবারের জীবনধারণ কঠিন হয়ে পড়েছে।
পতনঊষার ইউপি চেয়ারম্যান অলি আহমদ খান বলেন, ‘কালবৈশাখী ঝড়ে আমার ইউনিয়নে প্রচুর পরিমাণ বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। অনেক পরিবার খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। তাদের দ্রুত সহায়তার প্রয়োজন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাহেবকে অবহিত করা হয়েছে।’
মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কমলগঞ্জ জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক গোলাম ফারুক মীর বলেন, ‘ঝড়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কয়েকটি খুঁটি ভেঙে পড়েছে। অনেক স্থানে তার ছিঁড়ে গেছে। এসব জায়গায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার জন্য কাজ চলছে।’
এ বিষয়ে কমলগঞ্জ ইউএনও জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘পতনঊষার ইউপি চেয়ারম্যান বাড়িঘর বিধ্বস্তের কথা বলেছেন। তবে পরিপূর্ণ হিসাব জানা যায়নি। চেয়ারম্যানদেরকে বলা হয়েছে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে দেয়ার জন্য। দ্রুত তাদের সহোযোগিতা করা হবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য